EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ১৬,১৭

# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ১৬,১৭
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ১৬

আমি ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে পিছনে ফিরে নতুন ম্যামের দিকে
তাকাতেই অবাক হয়ে গেলাম।আমার মুখ দিয়ে আর কোনো
কথা বের হচ্ছে না। গায়ের লোম গুলি খাড়া হয়ে গেল।এ আমি
কাকে দেখছি ? এটা কি করে সম্ভব ? ম্যাম আর কেউ নয় ম্যাম
হলো আমার EX গার্লফ্রেন্ড সামিয়া।

সামিয়া আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।সামিয়াও হয়তো
ভাবতেছে যে, আমি এখানে কেন ?

প্রিন্সিপাল স্যারঃ সাহিদ হাসান কে আমি আবারো অনুরোধ করতেছি
নতুন টিচারকে বরণ করে নেওয়ার জন্য।

প্রিন্সিপাল স্যারের কথায় আমার ধ্যান ভাঙলো। আমি কাঁপা কাঁপা
হাতে সামিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়েছে
স্টেজে থেকে নেমে আসলাম।

আমাকে এভাবে নেমে আসতে দেখে উপস্থিত শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা
কিছুটা অবাক হয়ে গেল।

আমি স্টেজ থেকে নেমে এসে ক্যাম্পাসের বকুল গাছের নিচে বসে
পড়লাম। এখানে কেউ নেই এখন। তেমন নিরিবিলি পরিবেশ নয়।
একটু দূরেই সাউন্ড বক্সে বাজতেছে। আর এই সাউন্ড বক্সের
মাধ্যমে ভেসে আসতেছে সামিয়া নামের অবিশ্বাসীর কথা।

সামিয়া লেকচার দেওয়ার পরে প্রিন্সিপাল স্যার কিছুক্ষণ লেকচার
দিলেন। তারপরে অনুষ্ঠান শেষ করে দিলেন।

আমি বসে থেকে ভাবতেছি যে, সামিয়া এখানে কেন? সামিয়ায় কী
আমাদের ইংলিশ ম্যাম। আর সে এখানেই বা কেন জয়েন করলো।
সেই স্বার্থপর শহরেই তো ভালো ভালো কলেজ ছিল।
[ EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖 লেখকঃ Sahid Hasan
Sahi]

না আর ভাবতে পারছি না। মাথাটা ব্যাথা করতে শুরু করলো।
হঠাৎ করে কে যেন আমার কাঁধে হাত রাখল। পিছনে ফিরে দেখি
ইকবাল আমার কাঁধে হাত রেখে আছে। শাকিব আর রিয়াদ
ইকবালের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ইকবাল আমাকে বলল,,,,

ইকবালঃ সাহিদ তোর কী হয়েছে? এখানে একাই বসে আছিস কেন?

আমিঃ নারে দোস্ত তেমন কিছু হয়নি। মাথাটা একটু ব্যাথা করতেছে।
( সত্যটা বলা যাবে না এদের)

রিয়াদঃ আচ্ছা চল তোকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই।

আমিঃ আমি ঠিক আছি।

রিয়াদঃ সাহিদ তোকে প্রিন্সিপাল স্যার দেখা করতে বলেছেন।

আমিঃ যাচ্ছি। আমার সাথে তোরাও চল?

শাকিবঃ চল্।

ওদের সাথে নিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেলাম। দরজায় যায়ে
বললামঃ মে আই কাম ইন স্যার।

প্রিন্সিপাল স্যারঃ হুমমম,, এসো।

আমি রুমের ভেতরে ঢুকে গেলাম। স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ কী ব্যাপার সাহিদ তুমি তখন স্টেজে থেকে
নেমে গেলে আর আসলে না কেন?
[ EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖 লেখকঃ Sahid Hasan Sahi]

আমি বললামঃ স্যার তখন আমার মাথার ব্যাথা শুরু হয়েছিল।আর
আপনি তো জানেন আমার মাথায় প্রবলেম আছে।

প্রিন্সিপাল স্যারঃ হুমম ঠিক আছে। তবে তুমি আমাকে বললেই ডাক্তার কে
বলতাম।

আমিঃ সমস্যা নেই স্যার।আর কোনো কাজ আছে কী?

প্রিন্সিপাল স্যারঃ না নেই তুমি বাসায় যাও।আর কালকে একটু
তাড়াতাড়ি কলেজে এসো।

আমিঃ আচ্ছা স্যার।

স্যারের রুম থেকে বের বন্ধুদের বিদায় দিয়ে নেহার কাছে গেলাম।
নেহার কাছে যেতেই দেখি নেহা আর ওর কিছু বান্ধবী বসে থেকে
আড্ডা দিচ্ছে।

আমি নেহাকে বললামঃ আপু বাসায় যাবি না এখন?

নেহাঃ হ্যাঁ ভাইয়া চল।

তারপরে ওকে নিয়ে ক্যান্টিনে যায়ে কিছু খাইয়ে দিয়ে বাসায় চলে
আসলাম। বাসায় এসে গোসল করলাম। যোহরের নামাজ পড়ে দুই
ভাই বোন একসাথে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। বিকেলে নেহার ডাকে
ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে আসরের নামাজ পড়ে একটু ফেসবুকে
ঢুকলাম। কিছুক্ষণ পরে লগআউট করে রেখে দিলাম।
[ EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖 লেখকঃ Sahid Hasan Sahi]

সন্ধ্যায় এতিমখানায় গেলাম। সেখানে আমার
মেয়েকে নিয়ে কিছু সময় আড্ডা দিলাম। আমার মেয়েকে ঘুম
পাড়িয়ে দিয়ে উঠে আসতে যাবো ঠিক তখনি মেয়ে দুই হাতে
আমার ডান হাত জড়িয়ে ধরে বললঃ বাবাই আমি
থোমাল কাথে থাদবো।থুমি দেওনা।

আমিঃ আম্মু আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে
দেই আর তুমি ঘুমিয়ে যাও।

আমার মেয়েঃ না থুমিও আমাল থাতে দুমাবে,,,,বলেই কান্না
করতে লাগলো।

আমি আমার মেয়ের কান্না সহ্য করতে না পেরে ওকে নিয়ে আমার
বাসায় আসলাম।আর আমি এই এতিম খানায় ঘুমাতে পারবো না।
এটার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। আরেকটা কথা আমি যদি
আমার মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে আসি তাহলে সকালে ওঠে
কান্না করে দিবে।কারণ সকালে দেখবে যে আমি ওর পাশে নেই।
আর আমার মেয়ের এই বয়সে আল্লাহর রহমতে ব্রেন শক্তিটা বেশি।
{( আসলে বাস্তবে আমি জানি না এই বয়সের ছেলে মেয়েগুলো
এতোটা মেধাবী হয় কিনা?তবে গল্পের ক্ষেত্রে এটা লিখলাম,
সো ফ্রি মাইন্ডে পড়বেন,, লেখকঃ Sahid Hasan Sahi)}

মিমকে নিয়ে এতিমখানা থেকে বাহির হয়ে বাইকের
কাছে আসলাম। আজকে নেহা আসেনি আমার সাথে।ওর নাকি
শরীর খারাপ।তাই আমিও নিয়ে আনিনি।

যাইহোক, আমি বাইকে উঠে আমার মেয়েকে আমার সামনে বসিয়ে
নিলাম । ছোট বাচ্চা পিছনে বসিয়ে রাখা টা উচিত নয়।

এরপরে মেয়ের সাথে গল্প করতে করতে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতেই নেহা এসে দরজা খুলে দিলো।
মিম নেহাকে দেখে আমার কোল থেকে নেমে ওর আন্নি কে জড়িয়ে
ধরে বললোঃ আন্নি আদকে আমি তোমাদেল কাতে থাদবো।

নেহাঃ ঠিক আছে আম্মু এসো।

এরপরে সবাই একসাথে মানে নেহা,মিম আর আমি একসাথে ডিনার
করতে বসলাম।মিম আগেই খেয়েছে তারপরেও নাকি আমার
সাথে খাবে। আমার মেয়ে তো খাবে না আমার সাথে শুধু দুষ্টামি করবে।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে নেহা ওর রুমে ঘুমাতে গেল। আর
আমি আমার মেয়েকে নিয়ে আমার রুমে ঘুমাতে আসলাম।

রুমে এসে আমি শুয়ে পড়তেই আমার মেয়ে আমার বুকে মাথা
রেখে শুয়ে পড়লো। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বিভিন্ন
গল্প শুনাচ্ছি। আর সে আমার গল্প শুনে ফোকলা দাঁত দিয়ে
হাসতেছে। একটু পরে দেখি আমার মেয়ে আর হাসতেছে না।
নড়াচড়া করতেছে না। ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে দেখি মেয়ে
আমার পরম সুখে ঘুমাচ্ছে। আমি ওর মাথায়
হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।এর মাঝে এক অজানা সুখ মনের গহিনে
অনুভব করলাম।

হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেল সামিয়ার কথা মনে পড়তেই।
আমি তো এখানে একাই ভালো আছি। কেনো তুমি আবার সেই
পুরোনো ক্ষত টাকে জাগিয়ে দিচ্ছ। আমি তো আর চাইনা
তোমাদের মতো অবিশ্বাসীদের কাছে ফিরে যেতে। আমি তো
এখানে একটা বোন আর একটা টুকটুকে মেয়ে পেয়েছি তোমাদেরকে
আর আমি চাই না, তোমাদেরকে আর আমি চাইনা।

মা-বাবার কথাটা ভাবতেই বালিশটা ভিজে গেল। ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে আমার মেয়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম।

মিমঃ বাবাই ও বাবাই ওতো থতাল হয়েতে।

আমিঃ হুম্মাম আম্মু উঠেতেছি।

উঠে ফ্রেশ হয়ে তিনজন নাস্তা করলাম। নাস্তা করার সময়
নেহা বললোঃ ভাইয়া আজকে আমার আম্মুটাকে কলেজে
নিয়ে চলো।

আমিঃ আম্মু তুমি আমার কলেজে যাবে?

মিমঃ দাবো তবে আমালে তকলেত তিনে দিতে হবে।

নেহাঃ আচ্ছা আম্মু দিবো চলো।

এরপরে আমার মেয়েকে ভালো কাপড়। পড়িয়ে দিলাম। হাজার
হলেও আমার প্রিন্সেস বলে কথা। যাইহোক, আমার মেয়ে আর
বোন কে নিয়ে কলেজে গেলাম।

কলেজে পৌঁছে ওদের নামিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বললাম।
আমি বাইক পার্ক করে ওদের কাছে গেলাম। এরপরে ওদের নিয়ে
ক্যান্টিনে গেলাম। আমার বন্ধুরা এখনো আসেনি।

আমরা একটা টেবিলে বসলাম।আমি আর নেহা দুজনে দুই পাশে
আর আমার প্রিন্সেস মাঝখানে। অপরিচিত কেউ দেখলে আমাদেরকে
একটা ফ্যামিলি ভাববে।

অনেক সময় ধরে আমরা তিনজন বসে থেকে খাওয়া দাওয়া
আর আড্ডা দিতে লাগলাম। ওঠে আসতে যাবো তখন আমার
মেয়েকে বললামঃ আম্মু তুমি আর কিছু খাবে?

মিমঃ আইততিম,,(আইসক্রিম) থাবো।

আমি ওয়েটারকে বলে আইসক্রিম আনাই।
আইসক্রিম এনে আমার মেয়েকে দিলাম।সে পরম আনন্দে
খাচ্ছে। আমি আর নেহা ওর খাওয়া দেখে হাসতেছি।কারণ,
আমার মেয়ের গাল ও নাক মেখে গেছে আইসক্রিমে।

আমার মেয়ে আমাকে বললঃ বাবাই থুমি আমাল আইততিম
থাবে?

আমিঃ না আম্মু তুমি খাও।

আমার মেয়েঃ আততা বাবাই।

আমরা তিনজন এমন টেবিলে বসে আছি যেখানে কলেজের
ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে গেটের সব ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা
অনায়াসে আমাদের দেখতে পাবে।

আমি আমার মেয়েকে বললামঃ মামনি আর কিছু খাবে?

আমার মেয়েঃ না বাবাই আর থাবো না।

“বাহ,, ভালোই তো সংসার শুরু করেছে।”
হঠাৎ করে কথাটা পিছন থেকে কে যেন বললো।

পিছনে ফিরে দেখল তো আমার হাত পা অবশ হয়ে গেল।
কারণ,পিছন থেকে সামিয়া এই কথা বললো। হাঁটতে হাঁটতে
আমাদের টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালো।

সামিয়া কে দেখে নেহা সালাম দিলো কিন্তু সামিয়া সালামের
জবাব দিলো না।

সামিয়া আবার বলতে শুরু করলঃ তাহলে বিয়েও করে ফেলেছো।
মেয়েও একটা হয়েছে খুব কিউট তো।আর এটা ( নেহাকে
উদ্দেশ্য করে) তোমার বউ।বেশ ভালোই মানাচ্ছে দুজনকে।
কবে বিয়ে করলে?

সামিয়ার কথা শুনে নেহা আর আমি অবাক হলাম। সামিয়ার
কথা গুলো শুনে বুঝা যাচ্ছে সে খুব কষ্টে কথা গুলো বললো।
তাহলে কী সামিয়া আমাকে ভালোবাসে না না এ হতে পারে না।

আমি চুপ করে এসব ভাবতেছি। আবার নেহা বললোঃ কী
হলো বললে না যে, কবে বিয়ে করেছো?

নেহা এবার বলতে লাগলোঃ ম্যাম আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে?

সামিয়াঃ আমার আবার কোথায় ভুল? তোমাদের পারিবারিক কথা
জিজ্ঞাসা করে?

নেহাঃ না ম্যাম আপনি যা ভাবছেন তা নয়। উনি আমার
হাজবেন্ড নয় উনি আমার ভাইয়া। আমাকে রাস্তা থেকে তুলে
এনে বোনের মর্যাদা দিয়েছে।

সামিয়া নেহার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো। তারপরেও
নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বললোঃ তাহলে এই বাচ্চাটা কে?

নেহাঃ ভাইয়ার একটি এতিমখানা আছে।আর সেখানে প্রায়
বছর আগে একটা মহিলা এই বাচ্চাটা কে ভাইয়ার কাছে দিয়ে
যায় আর,,,,,,,

আমি আর নেহাকে বলতে না দিয়ে বললামঃ আহহ নেহা চুপ কর।
আর কাউকে যেন বলবি না মিম আমার মেয়ে নয়।মিম আমার
মেয়ে।বুঝলি?(রেগে)

নেহাঃ আচ্ছা ভাইয়া।

আমিঃ হুম্মাম চল। আম্মু তুমি আন্নির সাথে যাবে নাকি
আমার সাথে?

মিমঃ বাবাই আমি তোমাল থাতে দাবো।

আমিঃ চলো আম্মু।

এরপরে নেহাকে ওর বান্ধবীদের কাছে দিয়ে আমি আমার মেয়েকে
নিয়ে আমার বন্ধুদের কাছে গেলাম। ওদের কাছে যেতেই ইকবাল
মিমকে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগলো।

মিমঃ তেমন আথেন আনতেল?( কেমন আছেন আংকেল?)

ইকবালঃ আমি ভালো আছি। আমার ভাতিজী কেমন আছে?

মিমঃ বাবাই ভাতিদি তি?( বাবাই ভাতিজি ক? আমার মেয়ে
জানে না ভাতিজি কি)

আমিঃ তুমি আমার মেয়ে আর তোমার আংকেলের কাছে
ভাতিজি।বুঝেছো আম্মু?

মিমঃ হুম বাবাই।

কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে গেলাম। ক্লাসের সবাই মিমকে চিনে।
মিম বলতে ওরা পাগল। যাইহোক, প্রথম ক্লাস করলাম। দ্বিতীয়
ক্লাসে নাকি ইংলিশ হবে।

একটু পরে প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে সামিয়া ক্লাসে ঢুকলো।
সরি। এখন তো আর সামিয়া বলা যাবে না।এখন ম্যাম বলতে
হবে।

ক্লাসে ঢুকেই স্যার পরিচয় করিয়ে দিলেন।এরপর সামিয়াও
কিছু বললো। তবে আমি একটা বিষয়ে অবাক হলাম। আর তা
হলো সামিয়া নাম বলার সময় বললো আমার নাম মিস
সামিয়া। তারমানে সিংগেল।

আহহ সে সিংগেল হোক আর মিংগেল হোক তা আমার
দেখার বিষয় নয়।

এরপরে সামিয়া মানে ম্যাম আমাকে যেই প্রশ্ন করলো
তা শুনে আমি সহ ক্লাসের,,,,,,

(চলবে)

# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ১৭

প্রিন্সিপাল স্যার সামিয়াকে সরি নতুন ম্যাম কে সঙ্গে নিয়ে ক্লাসে আসলেন। এরপরে প্রিন্সিপাল স্যার কিছু নীতি কথা
চলে গেলেন। চলে যাওয়ার সময় বললেনঃ মিস সামিয়া
আপনার যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে সেটা আপনি
সাহিদ হাসান কে বলবেন।সাহিদ হাসান হলো এই ক্লাসের
ফার্স্ট বয়।

ম্যামঃ ওকে স্যার।

প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে আমার আমার খুব খারাপ
লাগলো। আমার কথা কেন তাকে বলতে হবে। আমি ছাড়া কী আর কেউ নেই? তবে, এটা যদি অন্য কোনো টিচারের জন্য বলতেন তাহলে আমার মনে আনন্দ জাগতো। কিন্তু সামিয়ার জন্য আনন্দটা বেদনায় পরিণত হয়েছে। কেননা,
আমি আর চাইনা ওর মতো অবিশ্বাসীর মায়ায় নিজেকে
জড়াতে।

যাইহোক, এইবার ইংলিশ ম্যাম তাঁর পরিচয় দিতে লাগলেন।নিজের পরিচয় দেওয়ার পর তিনি সকল ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয় নিচ্ছেন।

এবার আমার পালা। আমি সামনের বেঞ্চে বসেছিলাম।আর ম্যাম পিছনের বেঞ্চ থেকে পরিচয় নিয়ে শুরু করেছেন।

ম্যাম আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেনঃ এই ছেলে তোমার নাম কী?

আমি কিছুটা অবাক হলাম, আমার নাম জানার পরেও জিজ্ঞাসা করতেছে। হয়তোবা ভুলে গেছে আমার মতো
চরিত্রহীনের কথা।

এসব ভাবতেছি তখন আবার বললোঃ কী হলো নাম বলো?

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বললামঃ সাহিদ হাসান সাহি। তবে কেউ চরিত্রহীন উপাধিও দিয়েছিলো।

আমার এই কথা শুনে ম্যাম কিছুটা অনুশোচনা বোধ করলো। ম্যামঃ তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে ?

ম্যামের প্রশ্ন শুনে আমি সহ ক্লাসের সকল ছাত্র-ছাত্রী অবাক হয়ে গেলাম।ম্যাম বলে কি?

আমিঃ ছিলো কিন্তু এখন নেই।

ম্যামঃ নাই কেন?

আমিঃ হা হা হা জানতে চাচ্ছেন নাই কেন? তাহলে শুনুন, একটা মেয়েকে আমি খুব ভালোবাসতাম। সে ছিলো একজন অবিশ্বাসী।

ম্যামঃ কিহহ আমি অবিশ্বাসী?(একদম রেগে)

ম্যামের এমন আচরণ দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা কিছুটা আশ্চর্য হয়ে গেল।

ইকবাল আমার পাশেই বসেছিল। ইকবাল বললঃ ম্যাম আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন?

ম্যাম কিছুটা অপমান বোধ করলো।

আমি আবার বলতে শুরু করলাম।কারণ, আজকে আমি সামিয়া কে বলতে চাই তার প্রতি আমার জমানো অভিমানের কথা গুলো।

আমিঃ বলতে গেলে সেই ছিলো আমার বর্তমান সেই ছিলো আমার ভবিষ্যৎ।
তাকে ছাড়া আমি অন্য কোনো মেয়ের প্রতি চোখ তুলে তাকাই নি। সে আমাকে ভালোবাসাতো কি না জানি
না।তবে আমার প্রতি তার বিশ্বাস টা ছিলো খুবই ক্ষুদ্র পরিমাণে। যেটা দ্বারা আমার জন্য তার ভালোবাসাটাকে
টিকিয়ে রাখতে পারেনি। কোন এক অপবাদে সে আমাকে চরিত্রহীন উপাধি দেয়। সেই থেকে আমি আর কোনো মেয়েকে বিশ্বাস করিনি। যদি এই মেয়েও আমাকে সেই অবিশ্বাসী, প্রতারকের মতো চরিত্রহীন উপাধি দেয়।(এক নিঃশ্বাসে নিচের দিকে তাকিয়ে বলে দিলাম)
ম্যাম আমি বসতে পারি কী?

ম্যামঃ হুমম বসো।(নরম সুরে)

ম্যাম তাঁর চেয়ারে যায়ে বসতেই আমার মেয়ে বললোঃ বাবাই এতা (সামিয়া কে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে) তোমাল তে হয়?

আমার মেয়ের কথা শুনে তো আমি বোকা বুনে গেলাম।কী বলবো আমার মেয়েকে? এসব ভাবতেই রিয়াদ বললোঃ মামনি এটা তোমার বাবাইয়ের ম্যাম হয়।

যাক বাঁচলাম। শালা রিয়াদ তুইতো আর জানিস না ভাই এটা আমার সেই EX গার্লফ্রেন্ড।

যাইহোক, সামিয়ার ক্লাসটা কোনো মত শেষ করলাম। ক্লাসের সময় বারবার সামিয়া আমার দিকে তাকাচ্ছিলো।
আর আমি আঁড় চোখে তা দেখতেছি।

ক্লাস শেষ করে মিমকে নিয়ে নেহার ক্লাসে গেলাম। যায়ে দেখি স্যার ক্লাস নিচ্ছেন।

আমি আমার মেয়েকে নিয়ে ক্লাসের বাহিরে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পরে নেহা বের হয়ে আসলো।নেহা আমার মেয়েকে কোলে নিলো।এর পরে আমরা তিনজন ক্যান্টিনে গেলাম। সেখানে কিছু খাওয়ার পরে বাসায় আসলাম। তবে সামিয়ার সাথে আর দেখা হয়নি।

বাসায় এসে আমার মেয়েকে গোসল করে দিয়ে আমিও গোসল করলাম।এর পরে নামাজ পড়লাম। নামাজ পড়ার সময় আমার মেয়েও আমার পাশে এসে নামাজ পড়তে লাগলো।

নামাজ পড়ে তিনজন মিলে লাঞ্চ করতে বসলাম। লাঞ্চ করার পরে দুপুরে ঘুমিয়ে গেলাম।

এভাবে কেটে গেল পনেরো দিন।এই পনেরো দিনে প্রতিদিন ক্লাসে সামিয়া আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো। আর এই

সন্ধ্যায় এতিমখানায় গেলাম। সেখানে একটা নতুন মহিলাকে বাচ্চাদের দেখাশুনা করার জন্য রেখেছি।তার সঙ্গে কিছু কথা বলে আমার মেয়েকে নিয়ে আমার বাসায় আসলাম।এখন থেকে আমার বাসায় মিমকে রাখবো। আর আমার আর নেহার কলেজ টাইমে এতিম খানায় রেখে আসবো। বাসায় তো আর ছোট বাচ্চাকে একায় রেখে যাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া সেখানে কিছু সময় ছেলে মেয়েদের সাথে থাকলে একাকিত্ব টা আর থাকবে না।আর আমার মেয়েকে আমার বাসায় নিয়ে আসার কারণ হলো, কয়েক দিন আগে এতিমখানার খালাটা মারা গেছে। আসলে তার লেভার ক্যান্সার ছিলো।যেটা মৃত্যুর দুদি আগে ধরা পরেছে।

তিনি ছিলেন খুব নরম এবং মিশুক মানুষ। তার কোনো সন্তান না থাকায় সে এতিমখানার ছেলে মেয়েদের নিজের সন্তানের মতোই দেখতেন।আর আমার মেয়েই ছিল এতিম
খানায় বয়সের দিক থেকে সবচেয়ে ছোট। এখন এই মহিলা( বর্তমানের) যদি আগের মহিলার তুলনায় বিপরীত হয় তাহলে মুশকিল।

আর এজন্য আমার মেয়েকে আমার বাসায় নিয়ে আসলাম।

অপরদিকে সামিয়া ভাবতেছে, আসলেই কী সাহিদ রিপার সাথে এরকম কাজ করার চেষ্টা করেছিলো? আর সাহিদ এখানে কেন? না এটার রহস্য আমাকে বের করতে হবে।
এটা জানার জন্য আমার নেহাকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন। কালকে কলেজে যায়ে জিজ্ঞাসা করবো।

আমি, নেহা আর আমার মেয়ে একসাথে ডিনার করে রাতে ঘুমিয়ে গেলাম। পরের দিন সকালে নাস্তা করে কলেজের জন্য বের হলাম। মিমকে সাথে নিয়ে ওকে এতিমখানায় বাচ্চাদের কাছে রেখে এসে নেহা আর আমি কলেজে গেলাম।

কলেজে পৌঁছে নেহাকে ওর বান্ধবীদের কাছে দিয়ে আমি আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে ক্লাসে গেলাম।

সামিয়া নেহাকে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান। হঠাৎ দেখে নেহা আসতেছে।,এই তো নেহা এসেছে।
সামিয়াঃ নেহা তোমার সাথে আমার একটা পার্সোনাল কথা আছে।

নেহাঃ জ্বি ম্যাম বলুন।

সামিয়াঃ নেহা তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলবে।

নেহাঃ আমার ভাইয়ের সম্পর্কে (অবাক হয়ে)।
কী জানতে চাইছেন আপনি।

সামিয়াঃ এখানে নয়। আমার তুমি আমার অফিস রুমে এসো।

নেহাঃ আচ্ছা ম্যাম চলুন।

সামিয়ার অফিস রুমে যায়ে।

সামিয়াঃ আচ্ছা নেহা আমার জানা মতে তোমার ভাইয়ের কোনো বোন নেই তাহলে,,,

সামিয়া কে আর বলতে না দিয়ে নেহাঃ আপনি জানতে চাচ্ছেন আমি তাহলে কোথায় থেকে আসলাম?
হুমম আপনি ঠিকই ভেবেছেন, আমার ভাইয়া আমাকে একটা হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে বোনের মর্যাদা দিয়েছে।

সামিয়াঃ ওহহ,, তোমার ভাইয়ের মা বাবা কে? (যদিও জানে)

নেহাঃ আমার ভাইয়ার বাবা হলেন এদেশের টপ ব্যবসায়ী।আর তাঁর একটি হাসপাতালও আছে।আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগে ভাইয়ার বাবা মৃত্যু বরণ করে।আর সেই সময় থেকে ভাইয়া এসব দেখাশোনা করে।

সামিয়াঃ তুমি কবে থেকে তোমার ভাইয়ের সাথে আছো?

নেহাঃ একবছরের বেশি থেকে। কিন্তু ম্যাম আপনি এসব কেন জানতে চাচ্ছেন?

সামিয়াঃ না তেমন কিছু নয়।(মুচকি হেসে)

নেহাঃ কী ব্যাপার ম্যাম সামথিং সামথিং নাকি।( হেসে হেসে)

সামিয়াঃ বেশি পেকেছো,,,।(মাথা নিচু করে)

নেহাঃ আপনার যদি সাহায্য প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে বলবেন।আর জানেন কি ম্যাম, আমার ভাইয়া খুব ভালো।এই রকম একটা ভাই পেয়ে আমি খুশি। কোনো দিন কোনো মেয়ের সাথে বাজে বিহেভ করে নি। আপনি যদি আমার ভাইয়াকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পান তাহলে আপনি খুব লাকি হবেন।(এক নিঃশ্বাসে)

সামিয়াঃ আমার তো মনে বলে তোমার ভাইয়া খারাপ নয়। তারপরে সেদিন কেন যে এমন ব্যবহার করতে গিয়েছিলাম (বিরবির করে)

নেহাঃ ম্যাম কিছু বললেন?

সামিয়াঃ না,, তুমি যাও সাহায্য লাগলে বলবো।আর তোমার ফোন নাম্বার দাও।

নেহাঃ আচ্ছা ম্যাম। ফোন নাম্বার তুলুন ০১৭২৯৭৬****
আসি তাহলে ম্যাম।

সামিয়াঃ আচ্ছা যাও।

নেহা সামিয়ার রুমে থেকে যাওয়ার পরে সামিয়া হাতে কলম ঘুরাচ্ছে আর ভাবতেছে,, নেহার কাছে তো আমি কিছু জানতে পারলাম। তবে সাহিদের বাবা কে? কীভাবে আসলো এখানে? এটা জানতে হবে।আর এটা জানার জন্য এমন কারো কাছে যাতে হবে যে সাহিদের ব্যপারে সবকিছুই জানে।কে হতে পারে এটা কে হতে পারে?ওহ প্রিন্সিপাল স্যার বলতে পারবে। কারণ শুনেছিলাম সাহিদ এই কলেজে তিন বছর আগে ভর্তি হয়েছে। তারমানে আমার আর সাহিদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির পর থেকেই এখানে আছে।

সামিয়া আর দেরি না করে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেল।
সামিয়াঃ মে আই কাম ইন স্যার।

স্যারঃ ইয়েস আসো মিস সামিয়া।

সামিয়াঃ স্যার আপনার সাথে জরুরী কথা ছিল।

স্যারঃ হুমম বলো।

সামিয়াঃ স্যার সাহিদ কবে থেকে এখানে লেখাপড়া করতেছে আর ওর বাবা কে?

স্যারঃ কেন? তা জেনে তুমি কি করবে?

সামিয়াঃ আমার খুব প্রয়োজন বলুন স্যার।

স্যারঃ তাহলে শোনো,,,,,,(সব বললেন)

সামিয়াঃ ঠিক আছে স্যার তাহলে আমি আসি।

স্যারঃ ঠিক আছে যাও।

সামিয়া নিজের রুমে এসে ভাবতে লাগলো,, সব ক্লিয়ার এখন শুধু আমাকে জানতে হবে সাহিদ কী সত্যিই রিপার সাথে না না আমার মন বলে সাহিদ এরকম কিছু করে নি।
এটা জানতে হলে আমাকে আবার রাজশাহী যেতে হবে সাহিলের বাবা মায়ের কাছে। এর জন্য দুদিন আমাকে কলেজ ছুটি নিতে হবে যে করেই হোক। আর দেরি করলে চলবে না।[ আপনাদের হয়তো আগে বলা হয়নি যে,রাজশাহী আমার আর সামিয়ার বাসা]

সামিয়া আর দেরি না করে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেল।

সামিয়াঃ স্যার আমার দুই দিন ছুটি প্রয়োজন ।

স্যারঃ কেন?

সামিয়াঃ স্যার রাজশাহী যাবো।

স্যারঃ কিন্তু তোমার তো এখানো একমাস হয়নি।

সামিয়াঃ প্লিজ স্যার।(করুন সুরে)

স্যারঃ ওকে। তবে দুদিনের বেশি নয়।

সামিয়াঃ ধন্যবাদ স্যার।

এরপরে সামিয়া তার অফিস রুমে এসে বাসায় ফোন করে বলল যে,সে আজকে বাসায় যাবে।

আমি ক্লাস শেষ করে নেহাকে নিয়ে ক্যান্টিনে গেলাম।নেহাকে নিজ হাত দিয়ে ফুচকা খাইয়ে দিচ্ছি।আর অন্য দিকে সামিয়া এটা দেখে রাগে ফোসতেছে আর মনে মনে বলতেছেঃকোই আমাকে তো একদিনো তুলে খাওয়াই নি আর আজকে বোনকে পেয়ে,,,😡😡😡। দোয়া করি তুই বউ যেন না হয়।ছিঃ ছিঃ এটা কি বললাম আমি ওর যদি বউ না হয় তাহলে আমার কি হবে।করলো আমি পাগল হয়ে গেলাম।

আমি নেহাকে নিয়ে এতিমখানায় গেলাম। সেখানে যায়ে মিমকে নিয়ে বাসায় আসলাম।

লাঞ্চ করে অফিসে গেলাম। সেখান থেকে হাসপাতালে গেলাম। সবকিছু দেখা শুনা করে বাসায় ফিরলাম।

নিত্য দিনের ন্যায় পরের দিন আবার কলেজে গেলাম। আজকে সামিয়া কে দেখলাম না। প্রিন্সিপাল স্যার এসে বললো ম্যাম নাকি দুদিন ছুটি নিয়েছে।এই দুদিন অন্য স্যার ক্লাস নিবেন ‌
ওফফ বাবা বাঁচলাম এই দুদিন।

এদিকে সামিয়া বাসায় পৌছে আর দেরি না করে সাহিদের বাসায় গেলো।সাহিদের বাসায় যায়ে যা শুনলো,তা শুনে তো,,,,,

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here