EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ২৫

# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ২৫
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi

প্রিন্সিপাল স্যারের রুমের ভিতরে ঢুকে দেখি সামিয়া স্যারের সামনের চেয়ারে বসে আছে। আমি স্যারের কাছে যায়ে বললামঃ স্যার আপনি নাকি আমাকে ডেকেছেন?

প্রিন্সিপাল স্যারঃ হ্যাঁ।

আমিঃ তো স্যার বলুন কি করতে হবে আমাকে।

প্রিন্সিপাল স্যারঃ সাহিদ তোমাকে আমি মিস সামিয়ার এসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত করে দিয়েছিলাম কিন্তু তুমি নাকি উনাকে ঠিক মতো সময় দিচ্ছো না।

আমিঃ স্যার আপনি কি চাচ্ছেন আমি টিসি নিয়ে এই কলেজ থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়।

প্রিন্সিপাল স্যারঃ না। তবে এটার জন্য কলেজ থেকে টিসি নিয়ে বের হওয়ার কি আছে? ( অবাক হয়ে)

আমিঃ আমি এসব আর বলতে চাচ্ছি না। আর হ্যাঁ, আমার মতো একজন চরিত্রহীন লুচ্চা কী করে একজন টিচারের এসিস্ট্যান্ট হতে পারে? তারপরেও তিনি আবার ম্যাম। আমি সেদিনই আপনাকে বলেছিলাম আমি কোনো টিচারের এসিস্ট্যান্ট হতে পারবো না। কিন্তু আপনি আমাকে জোর করে এসিস্ট্যান্ট হতে বাধ্য করেছেন। আর এখন যদি আপনি আমাকে এইসবের মধ্যে জড়ান তাহলে আমি এই কলেজ ছাড়তে বাধ্য হবো বলে দিলাম।

এই কথা বলে আমি স্যারের রুম থেকে বের হয়ে আসলাম। মেজাজ টা বিগড়ে গেলো। শালা যার জন্য দূরে থাকতে চাচ্ছি সে আমাকে তার দিকে টানতেছে। ক্লাসে এসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতেই সামিয়া ক্লাস নেওয়ার জন্য ক্লাসে ঢুকলো।

আমিও ক্লাসে করতে লাগলাম। আজকেও আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে ছিলো। আমাকে বিষয় টা খুব খারাপ লাগতেছে। কারণ ক্লাসের প্রায় সব স্টুডেন্ট আমাদের নিয়ে সমালোচনা করে বা করতেছে।

সব ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে বসলাম। আড্ডা দিতে দিতে রিয়াদ আমাকে বললোঃ দোস্ ম্যাম মনে হয় তোকে সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে।

আমিঃ দেখ এটা ভালোবাসা নয়, এটা হলো আবেগ। যেটা কয়েকদিন পর শেষ হয়ে যাবে।

শাকিবঃ কিন্তু সাহিদ একটা বিষয় ভাব, ম্যাম অন্য কাউকে কিন্তু এসিস্ট্যান্ট না করে তোকেই করলো। আবার ট্যুরে যাওয়ার সময় বাসে তোর পাশে মিমিকে দেখে ম্যাম কি বিহেভ টাই না করলো।
আর ক্লাসে তো সব সময় তোর দিকে তাকিয়ে থাকেই। এখন এটাকে তুই যদি আবেগ বলিস তাহলে তো ভুল হবে।

আমিঃ আমি এসব শুনতে চাচ্ছি না। সো এই টপিক টা বাদ দে।

ইকবালঃ ঠিক আছে। কিন্তু একটা। কথা তুই আমাকে সত্যি করে বলবি?

আমিঃ হ্যাঁ বল।

ইকবালঃ তোর সাথে ম্যামের কি সম্পর্ক?

আমিঃ মানে কী বুঝাতে চাচ্ছিস তুই?

ইকবালঃ মানে টা হলো সহজ, সেই দিন কক্সবাজার বিচে ম্যাম যখন তোকে মিমির সাথে দেখেছিলেন তখন তোকে বলেছিলেন ” তুই আগেও চরিত্রহীন ছিলি এখনো আছিস। আবার তোকে লুচ্চাও বলেছিলেন।” আবার ম্যাম কে বরণ করে নেওয়ার সময় তুই ম্যাম কে দেখে চমকে উঠেছিলিস আর ম্যাম ও তোর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। যেটা কেউ লক্ষ্য না করলেও আমি করেছি।আরো অনেক প্রমাণ আছে যার মাধ্যমে বুঝা যায় তুই আর ম্যাম একে অপরকে আগে থেকেই চিনতিস। এবার সত্যিটা বল প্লিজ।

আমি কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না। মাথা নিচু করে বসে আছি।
আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে রিয়াদ বললঃ প্লিজ ভাই তুই আমাদের বন্ধু ভেবে থাকলে বল।

আমি আর না বলে পারলাম না। আমি বললামঃ তোরা আমার সম্পর্কে কি জানিস?

রিয়াদঃ কি জানি মানে? তুই এই পৃথিবীতে এতিম ছিলি আর তোর বাবা (যিনি মারা গেছেন) তোকে রাস্তায় থেকে নিয়ে এসে নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে তোকে লালন পালন করেন। আর তিনি মৃত্যুবরণ করার সময় তার সব সম্পত্তি তোর নামে লিখে দিয়ে যায়।
এটাই তো আমরা জানি।

আমিঃ আমি এতিম নই‌।

ওরা সবাইঃ মানে?(অবাক হয়ে)

আমিঃ হুমম আমি এতিম না। আমি তোদের মিথ্যা বলেছিলাম। এই পৃথিবীতে তোদের মতো আমার মা-বাবা,ভাই-ভাবি সবাই আছে।

ইকবালঃ কিন্তু তারা কোথায় আছে? আর তুই বা তাদের ছেড়ে এখানে একাই আছিস কেন?(উত্তেজিত হয়ে)

আমিঃ তাহলে শোন তোরা,,,,,(এর পরে কলেজ লাইফ থেকে শুরু করে বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকায় আসা পর্যন্ত সব কিছু তাদের বললাম)

আমার সব কথা শুনে ওদের তিনজনের চোখে পানি চলে এসেছে। ইকবাল তার আবেগ কে ধরে রাখতে না পেরে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ দোস্ত তোর উপর দিয়ে এতো কষ্ট গেছে আর তুই সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করেছিস। তুই আমাদের জানানোর প্রয়োজন মনে করিস নি।(কান্না করতে করতে)

আমি কিছু না বলে চুপচাপ বসে থাকলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর পরিবেশ টা ঠান্ডা হলে আমি ইকবাল কে বললামঃ দোস এবার তুই বল কীভাবে আমি সামিয়া কে মেনে নিবো। সব কিছু ভুলে মেনে নিতাম। কিন্তু সেদিনের তার ব্যবহারে আমাকে আবার বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আমার প্রতি তার যে ভালোবাসা ছিলো সেটা তার আবেগ। আর যদিও ভালোবাসা হয় তাহলে আমি তাকে প্রচুর পরিমাণে কষ্ট দিবো। যেটা আমাকে দেওয়া কষ্টের চেয়ে হাজার গুনে বেশি। যাতে সে বুঝতে পারে ভালোবাসার মানুষ কে কষ্ট দিলে কেমন লাগে।

ইকবালঃ হুমম। কিন্তু আমার মনে হয় না এটা তার আবেগ। তুই ভালোভাবে বুঝে মেনে নে ভাই। বেশি কষ্ট দিতে যায়ে যেন আবার হারিয়ে না ফেলিস।

শাকিবঃ হ্যাঁ সাহিদ ইকবাল কিন্তু ঠিকই বলেছে।

আমিঃ আরে না হারিয়ে যাবে কোথায়? এখন আমার বাসায় থাকে।

ইকবালঃ কিহহহহ তোর বাসায় থাকে?

আমিঃ হুমমমম। আচ্ছা ভালো থাকিস তোরা। আমি বাসায় যাবো।

বন্ধুরাঃ ঠিক আছে যা।

ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নেহার কাছে গেলাম। মানে নেহা যেখানে ওর বান্ধবীদের সাথে বসে থেকে আড্ডা দেয় । কিন্তু সেখানে নেহা নেই, ওর কয়েকটা বান্ধবী বসে আছে।

আমি ওদের কাছে যায়ে বললামঃ নেহা কোথায় গেছে বলতে পারবে কি?

নেহার বান্ধবীঃ নেহা তো ওর ভাবির সাথে ক্যান্টিনে গিয়েছে।

আমিঃ ভাবি মানে?(কিছু টা অবাক হয়ে)

নিলা (নেহার বান্ধবী)ঃ ভাইয়া আপনি মনে হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারতেছেন না। ভাবি আপনার সাথে আপনার বাসায় থাকতেছে আর আপনি আমাদের কাছে এসে না জানার ভান করতেছেন।

ওও এবার বুঝলাম আসল কাহিনী। আমি ওদের বললামঃ আরে তোমরা যা ভাবতেছো তা নয়।

নিলাঃ বুঝি ভাইয়া বুঝি। এসব বাদ দিয়ে ট্রিট কবে দিবেন বলুন।

কি এক মুশকিলে পড়লাম রে ভাই। বিয়ে না করেই আজ বিয়ের ট্রিট দিতে হচ্ছে। তাও আবার আমার EX এর।মন চাচ্ছে আজকে থাপ্পড় মেরে ওদের কান ফাটিয়ে ফেলি। কীসের এতো ভাবি ভাবি।(মনে মনে)

আমিঃ ঠিক আছে ক্যান্টিনে চলো।

এরপরে ওদের কে নিয়ে ক্যান্টিনে গেলাম। ক্যান্টিনে যায়ে দেখি সামিয়া, মিম আর নেহা বসে থেকে ফুসকা খাচ্ছে।
আমাকে নেহার বান্ধবীদের সাথে দেখে নেহা আর সামিয়া কিছুটা অবাক হলো।

মিম আমাকে দেখে আমার কাছে আসলো। নেহা ওর বান্ধবীদের জিজ্ঞাসা করলোঃ কী তোরা এখানে?

নেহার বান্ধবীঃ আরে ভাইয়া আজকে ট্রিট দিবে তাই আসলাম।

নেহাঃ ভাইয়া ট্রিট দিবে মানে?

নিলাঃ হুমম ভাইয়া বিয়ে করেছে তাই।

এমন সময় সামিয়া পানি খাচ্ছিলো।বিয়ের কথা শুনে সামিয়ার হাত থেকে পানির গ্লাস পড়ে গেল। বিষন্ন মুখে নিশার দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললোঃ বি বিয়েয়ে ককরেছে মানে?

সামিয়ার এই অবস্থা দেখে আমার যে কি পরিমাণ খুশি লাগতেছে তাই আমি বুঝাতে পারবো না।

নিলাঃ হ্যাঁ ভাবি সরি ম্যাম আপনি এতো ইমোশনাল হচ্ছেন কেন? ভাইয়া ভাবি এক গ্লাস পানি খাওয়ান।

নিলার কথা শুনে যেন সামিয়ার কলিজায় পানি আসলো।
সামিয়া মুচকি হেসে বললঃ না না আমি ঠিক আছি।

কেউ আর কোনো কথা না বলে ফুচকা খাওয়া শুরু করলো। ওরা সবাই ফুচকা খাবে তাই ফুচকা অর্ডার দিয়েছি। আমি আর নেহার বান্ধবী একই টেবিলে বসেছি। নেহা আর সামিয়া আমাদের সামনের টেবিলে বসেছে। আমি আর সামিয়া মুখামুখি বসেছি। যার ফলে আমি কী করবো তা সামিয়া দেখতে পাবে। আর আমার ডান পাশের চেয়ারে নিলা মানে নেহার বান্ধবী।

আমি চেয়ারে বসে থেকে ওদের ফুচকা খাওয়া দেখতেছি। অবশ্য নিলা আমাকে ফুচকা খাওয়ার জন্য জেদ করলো কিন্তু আমি খেলাম না। আর আমার মেয়ে আমার কোলে বসে আছে। আমার মেয়েকে ফুচকা খাওয়ার কথা বললে, সে খাবে না। সে নাকি তার মামনির সঙ্গে খেয়েছে।

নিলা একটা ফুচক ওর মুখে দিয়ে চিবুতে চিবুতে বললোঃ ভাইয়া আপনি একটা ফুচকা খান। আমি তুলে খাওয়াচ্ছি।

কী মেয়ে যে বাবা,,,,আমিতো অবাক না হয়ে পারলাম না।
আমি বললামঃ না আমি খাবো না তোমরা খাও।

নিলাঃ আপনি না খাইলে আমিও খাবো না।(মুখটা ভার করে)

আমি নিলার কথা শুনে সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে আমার দেখি মায়াবি হরিণীর মতো তাকিয়ে আছে । হয়তোবা ভাবতেছে, সাহিদ আমি তোমাকে আমার হাতে খাইয়ে দিবো। তুমি ওদের হাতে খেয়ো না। কিন্তু সেই অধিকার তার নেই।

ওহহহ,,, এইতো একটা ভালো বুদ্ধি পেলাম তাকে মানসিক ভাবে হার্ট করার। আমি নিলাকে বললামঃ এতোই করে যখন বলতেছো। তাহলে দেও।

এরপরে নিলা আমার মুখে একটা ফুচকা তুলে দিলো। দেখি সামিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওকে আরেকটু হার্ট করার জন্য ফুচকায় একটা চিবানি দিয়ে বললামঃ আহহ তোমার হাতে ফুচকা খাইতে তো অনেক টেষ্ট।

নিলাঃ ভাবি কি আপনাকে এই ভাবে খাইয়ে দেয় না।

এইরে এইবার কী বলবো।
আমিঃ আরে সেই কথা আর বলো না তোমার ভাবি তো,,,,,

কথা শেষ না হতেই ফোনটা কেঁপে উঠলো ( ভাইব্রেশন মুডে ছিলো)।
পকেট থেকে বের করে দেখি অফিসের এমডি সাহেব ফোন দিয়েছে। রিসিভ করে বললাম,,,,,

আমিঃ আসসালামুয়ালাইকুম।

এমডি সাহেবঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। স্যার আজকে একটু অফিসে আসতে পারবেন কি?

আমিঃ আংকেল আপনাকে আমি কত বার বলবো আপনি আমাকে স্যার বলে ডাকবেন না। নাম ধরে ডাকবেন। (রেগে)

এমডি সাহেবঃ আচ্ছা বাবা। তুমি কি আজকে অফিসে আসতে পারবে?

আমিঃ আচ্ছা দেখি। কয়টার সময়ে?

এমডি সাহেবঃ দুপুর দু টা থেকে তিনটার মধ্যে এসো।

আমিঃ ঠিক আছে আংকেল।

এমডি সাহেবঃ ঠিক আছে বাবা।

এমডি সাহেবের সাথে কথা বলে ফোনটা রেখে দিলাম। এরপরে ফুচকার যা বিল হয়েছে তা পে করে দিয়ে ওদের (নেহার বান্ধবীদের ট) থেকে বিদায় নিয়ে নেহাকে গেটের কাছে যেতে বললাম। এরপরে আমি পার্কিং লটে যায়ে বাইক টা নিয়ে গেটের সামনে আসলাম।

বাইকে উঠার সময় ঘটলো এক বিপত্তি। নেহা, মিম আর সামিয়া গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। আমি মিমি আর নেহাকে বাইকে উঠতে বললাম। কিন্তু আমার মেয়ে ওর মামনি কে ছাড়া বাইকে উঠবে না। আমি কিছু বুঝিনা এই ছোট্ট বাচ্চার কী করে তার মামনির প্রতি এতো টান? কয় দিনের পরিচয় হবে?

আমি বললামঃ দেখো মিম এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।( ধমক আর রেগে বললাম)

আমার ধমক শুনে আমার মেয়ে কান্না করতে লাগলো। এতো আরেক ঝামেলাই পড়লাম। মিমকে কান্না করতে দেখে সামিয়া বললোঃ থাক ওকে কিছু বলো না। আমি। ওকে নিয়ে রিকশায় করে যাচ্ছি। নেহা তুমি বাইকে উঠো।

নেহাঃ না তুমি মিমকে নিয়ে বাইক বাইকে যাও। আমি রিকশায় যাচ্ছি।আর মিম রিকশায় উঠলে কান্না করে।

নেহার কথা শুনে সামিয়া আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। হয়তোবা আমি তাকে উঠার অনুমতি দিবো এই আশায়।

আমি সামিয়া কে বললামঃ বাসা ভাড়া দেওয়ার পরে আবার বাইকে করে নিয়ে যেতে হবে? শুনুন আমি আমার মেয়ের জন্য আপনাকে বাইকে নিচ্ছি। এর থেকে বেশি কিছু নয়। উঠুন।

সামিয়া খুশি হয়ে বাইকে উঠে পড়লো। আর আমার মেয়ে আমার সামনে তালের টাংকি তে বসে পড়লো। সে নাকি তার মামনির কোলে বসে থাকবে তো এখনে কেন?

নেহাকে একটা রিকশা করে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম। আমি বাইক স্টার্ট দিতেই সামিয়া আমার কাঁধে হাত রেখে জড়িয়ে ধরতে চাইলো। আমি বাইকটা বন্ধ করে সামিয়া কে বললামঃ আমার মতো চরিত্রহীন ছেলের কাঁধে হাত রেখে জড়িয়ে ধরেছেন কেন? আপনিও তো নষ্ট হয়ে যাবেন। তাই বলি কি দুরত্ব বজায় রেখে বসেন।

আমার কথা শুনাতে পর সামিয়া আমার ঘাড় থেকে হাত নামিয়ে একটু সরে বসলো। আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বাইক স্টার্ট দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

পুরো রাস্তায় সামিয়া আমার দিকে এগিয়ে আসেনি এমনকি শরীর টাচ করে নি। তবে গতিরোধকে বাইক ব্রেক করার সময় আমার দিকে কিছুটা ঝুঁকিয়ে এসেছিল। কিন্তু সাথে সাথে আবার ঠিক হয়ে বসেছে।

বাসায় পৌঁছার পরে ওদেরকে নামিয়ে দিয়ে বাইকটা পার্ক করে আমিও বাসার ভিতরে ঢুকলাম। সোজাই আমার রুমে যায়ে গোসল করে যোহরের নামাজ পড়ে রুমে বসে আছি। একটু পরে সামিয়া আমার রুমের দরজার সামনে এসে বললোঃ আসতে পারি কি?( মাথা নিচু করে)

আমিঃ আমার মতো চরিত্রহীন রুমে কি প্রয়োজন? আসুন।

সামিয়াঃ আমি তোমাকে একটা কথা বলবো একটু শুনবে প্লিজ।

সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার কাছে হাতজোড় করে বলতেছে।

আমিঃ হুমমম বলুন।

সামিয়াঃ সাহিদ তুমি আমাকে যেই কষ্ট দেওনা কেন আমি সব সহ্য করবো। কিন্তু প্লিজ তুমি অন্য কোনো মেয়ের সাথে হেসে খেলে কথা বলো না। এটা আমি মেনে নিতে পারি না। তুমি কোনো মেয়ের সাথে কথা বললে আমার কলিজাটা মনে হয় কেউ বের করে নেয়।
প্লিজ তুমি এই কথাটা রাখো।

আমি মাটির দিকে তাকিয়ে বললামঃ দেখুন এটা আমার পার্সোনাল লাইফ। আমি কার সাথে হেসে খেলে কথা বলবো এটা আমার ব্যপার। এতে কারো কিছু হলে আমি দায়ী নই। এখন আপনি যেতে পারেন।

সামিয়া আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেল। কারণ সে জানে সাহিদ এক কথা একবারই বলে।

আমি রুমে বসে থেকে ফোন টিপতেছে। একটু পরে আমার মেয়ে এসে লাঞ্চ করার জন্য ডেকে গেলো।

আমিও লাঞ্চ করতে নিচে গেলাম। ডাইং টেবিলে যায়ে দেখি নেহা একাই বসে আছে। আমি নেহাকে বললামঃ নেহা তোর ম্যাম কই?

নেহাঃ রুমে আছে।

আমিঃ লাঞ্চ করবে না?

নেহাঃ বিকেলে রেস্টুরেন্টে যায়ে লাঞ্চ করে একবারে রাতের জন্যেও খাবার নিয়ে আসবে।

আমিঃ রেস্টুরেন্টে যাবে কেন?

নেহাঃ তো কোথায় খাওয়া দাওয়া করবে?

আমিঃ কোথায় খাওয়া দাওয়া করবে মানে। আমাদের সাথে খাওয়া দাওয়া করবে।

নেহাঃ তুমিই তো নিষেধ করেছো।

নিজেকে নিজের কাছে খারাপ মনে হলো। মেয়াটা একাই কোথায় খাবে ? আর না খেয়ে থাকলে শরীর খারাপ করবে।

আমিঃ আজ থেকে আমাদের সাথে খাইতে বলিস।

নেহাঃ সত্যিই বলতেছো?

আমিঃ হুমমম। এতো খুশি হওয়ার কিছু নেই।

নেহাঃ হুঁ,,,,।

নেহা আর মিম সামিয়া কে ওর রুমে গেল। আর আমি একাই লাঞ্চ করে রুমে আসলাম।

তিনটার সময় বাইক নিয়ে অফিসে গেলাম। অফিসে যায়ে স্টাফদের সাথে কিছু কথা বলে এমডি সাহেবের রুমে গেলাম।
আমাকে দেখে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন।

উনাকে বসতে বলে আমি তার সামনের চেয়ারে বসে পড়লাম।আমি বললামঃ আংকেল কি সমস্যা হয়েছে যার জন্য এতো জরুরী তলব?

এমডি সাহেবঃ আসলে বাবা, আমাদের কম্পানির লন্ডনে যে ব্রাঞ্চ আছে সেখানে কিছু সমস্যা হয়েছে। আর তারা তোমাকে সেখানে যেতে বলে।

আমিঃ ওওও,, আপনি যাবেন না?

এমডি সাহেবঃ না বাবা সেখানে আমি গেলে হবে না। সেখানে তোমাকে যেতে হবে।

আমিঃ ঠিক আছে কিন্তু আমার সাথে তো একটা এসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন।

এমডি সাহেবঃ সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। তোমার এসিস্ট্যান্ট হিসেবে আমার পিএ বর্ষা যাবে। বর্ষার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই।

আমিঃ আচ্ছা আংকেল।

এরপরে তিনি ফোন করে তার পিএ কে আসতে বললেন। কিছুক্ষণ পরে একটা মেয়ে আসলেন। মেয়েটিকে দেখে আমি আবাক না হয়ে পাড়লাম না। কারণ মেয়েটি হলো আমার ক্লাস মেইট তিশা। খুবই ভদ্র এবং সুন্দর মেয়ে। পড়া লেখাইও ভালো। ক্লাস তেমন করতো না। শুনেছিলাম কোনো এক অফিসে জব করে আর মাঝে মাঝে ক্লাস করে। আর্থিক সমস্যার জন্য জব করে নিজের লেখা পড়ার খরচ নিজেই চালাতো। কিন্তু এই মেয়ে যে আমার অফিসে জব করে তা আমি জানতাম না।
আর জানবোই বা কি করে। আমি তো তেমন অফিসে আসি না। আসলেও এমডি সাহেব এবং স্টাফদের সাথে কথা বলে চলে আসি। তবে কোনো দিন তিশার সাথে দেখা হয়নি। আর তিশার আরেক নাম বর্ষা।

আমি তিশাকে বললামঃ আরে তিশা তুমি এখানে জব করো?

তিশাঃ হ্যাঁ আমি আপনার অফিসে জব করি।

আমিঃ আরে আমাকে আপনি করে বলতে হবে না। তুমি করে বলবা।

তিশাঃ আচ্ছা।

এরপরে এমডি সাহেব আমাদের সব কিছু বুঝিয়ে দিলেন। আসলে আমি কোনো দিন ব্যবসার হাল না ধরায় এতো কিছু বুঝিনা। করেছিলাম একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে । কিন্তু এই রকম ভাবে বস হিসেবে নয়। আগামি কাল সকাল সাতটায় আমাদের ফ্লাইট।
সেখানে প্রায় দুই দিন থাকতে হবে।

অফিস থেকে বাসায় আসলাম। বাসায় এসে দেখি মিম নেহা আর সামিয়া সোফায় বসে থেকে গল্প করতেছে। আমাকে দেখে মিম জড়িয়ে ধরে বললোঃ বাবাই তোথায় দিয়েথিলে?

আমি ওকে চুমু দিয়ে বললামঃ অফিসে গিয়েছিলাম আম্মু।
এই নাও তোমার চকলেট। বসে থেকে খাও।

মিমঃ আততা বাবাই।

রাতে মিম, নেহা, সামিয়া আর আমি একসাথে ডিনার করতেছি। মিম সামিয়ার কোলে বসে থেকে খাচ্ছে। আর সামিয়া বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি সে দিকে খেয়াল না করে ডিনার শেষ করে নেহা কে বললামঃ নেহা কালকে সকালে আমি লন্ডনে যাবো।

সাহিদের কথা শুনে সামিয়ার গলায় ভাত আটকে যাওয়ার মতো অবস্থা। সে ভেবেছে সাহিদ তার জন্য এই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মূহুর্তে যেন সামিয়ার পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল। এই কাছে পেয়ে বুঝি হারিয়ে ফেললো।

নেহাঃ কেন ভাইয়া?

আমিঃ অফিসের কাজে।

নেহাঃ ওও ,।, কয় দিনের জন্য?

আমিঃ দুই দিন পর চলে আসবো।

সাহিদের এই কথা শুনে সামিয়া কিছু টা শান্তি পেলো।

নেহাঃ ঠিক আছে ভাইয়া।

আমি রুমে এসে ড্রেস প্যাক করতে লাগলাম। প্যাক করা শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। ফজরের নামাজ পড়ে ওদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে নাস্তা করলাম। এরপরে আমার মেয়েকে কিছুক্ষণ আদর করে ওদেরকে বিদায় দিয়ে বাসা থেকে বের হলাম। এরপরে ড্রাইভার আংকেল কে সঙ্গে নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেখি তিশা ওয়েটিং রুমে বসে আছে। আমি যায়ে ওর পাশে বসলাম। একটু পরে আমরা ফ্লাইটে উঠলাম। তার কিছুক্ষণ পরে আমাদের ফ্লাইট ছেড়ে দিলো।

দীর্ঘক্ষণ আকাশে উদ্দোয়মান থাকার পরে আমাদের ফ্লাইট ল্যান্ড করলো। এয়ারপোর্টের কাজ শেষ করে আমরা আমাদের অফিস থেকে পাঠানো গাড়িতে করে একটা হোস্টেলে গেলাম।এর পরে ফ্রেশ নাস্তা করে একটু রেস্ট নিয়ে অফিসে গেলাম। অফিসের সমস্যা সমাধান করতে বেশ সময় লাগলো। তবে একদিনেই সমাধান হয়েছে।

পরের দিন লন্ডন শহরটা ভালো ভাবে ঘোরাফেরা করে কিছু মুহূর্তকে ক্যামেরা বন্দি করে নিলাম।এই ভাবে। কেটে গেল দুই টা দিন। আজকে রাতে আমাদের ফ্লাইট। নেহা, মিম আর মিমের মামনির জন্য কেনাকাটা করলাম। আর তিশাকে তার পছন্দ মতো কিছু কিনে দিলাম।

হোস্টেল থেকে বের হয়ে এয়ার পোর্টে আসলাম। কিছু সময় আছে তাই লন্ডন এয়ার পোর্টাটা ঘুরে ঘুরে দেখতেছি। একটু পরে আমাদের ফ্লাইট ছেড়ে দিবে তাই ফ্লাইট উঠার জন্য বলতেছে।
আমরা আর দেরি না করে ফ্লাইটে উঠে পড়লাম।

বাংলাদেশে বিমান ল্যান্ড করার পরে আমি আর তিশা বের হয়ে বিমান থেকে আসলাম থেকে। চেকপোস্টে সব কিছু চেক করার পর আমরা এয়ার পোর্ট থেকে বের হলাম। বাইরে এসে দেখি ড্রাইভার আংকেল গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আর তিশা গাড়িতে উঠলাম। এরপরে তিশাকে ওর বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমার বাসায় চলে আসলাম।

এই কয়দিনে তিশা আর আমি বেশ ফ্রী হয়ে গেছি। বাসায় আসতেই আমার মেয়ে আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমি ওকে আদর করে চকলেটের একটা বক্স দিলাম।

ড্রয়িং রুমে এসে নেহাকে ডেকে সামিয়া আর ওর জন্য যা কিছু এনেছি সব দিয়ে দিলাম।

রুমে এসে ফোন টা পকেট থেকে বের করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি সামিয়া আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে রক্ত বের হবে।

আমি বরলামঃ কি হয়েছে?

সামিয়া কোনো কথা না বলে আমার জামার কলার চেপে ধরে বললোঃ তোকে না বলেছি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবি না তাহলে এই তিশা কে?(চিৎকার করে)

আমি ঠাসস ঠাসস করে এর গালে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বললামঃ তোকে আমি নিষেধ করিনি যে, তুই আমার পার্সোনাল লাইফে নাক গলাবি না। কিন্তু শুনিস নি। এখনি রুম থেকে বের হয়ে যা তোকে যেন আর চোখের সামনে না দেখি।

দরজা বন্ধ করে দিয়ে বেডে এসে শুয়ে পড়ে ভাবতে লাগলাম, আচ্ছা আমি কি সামিয়ার সাথে এসব কি ঠীক করতেছি? সে যদি ভালো না বাসতো তাহলে এতো অত্যাচার সহ্য করতো না।
পরোক্ষণেই মনে হলো, না না সাহিদ তুই কী ভাবতেছিস এসব।

আজকে সারাদিন এবং রাতে সামিয়া আমার সামনে আসে নি।

পরের দিন সকালে নাস্তা করে কলেজে গেলাম। সামিয়া নাকি আগেই এসেছে। কলেজে যায়ে দেখি বন্ধুরা বসে থেকে আড্ডা দিচ্ছে আমিও ওদের পাশে যায়ে বসলাম। লন্ডন সম্পর্কে কথা বলতেছি। একটু পরে মিমি আজ পাশে এসব বসে বললোঃ সাহিদ তুমি নাকি লন্ডনে গিয়ে ছিলে? কেমন ঘোরাফেরা করলে?

আমিঃ হুমম খুব ভালো । দেখার মতো অনেক কিছু আছে।

মিমিঃ তাই। তো কি ক্যামেরা বন্দি করো নি?

আমিঃ হুমম করেছি। দেখবে?

মিমিঃ কোনো দিন তো যেও পারবো না। দেখাও দেখি।

এরপরে আমি মিমিকে আমার ফোন বেজে করে পিকচার গুলো দেখাচ্ছি। আর মিমি প্রশ্ন করতেছে এটা কি ঐটা কী? আমিও ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছি। যার ফলে আমি আর মিমি একেবারে ঘনিষ্ঠ মানে কাছাকাছি চলে এসেছি।
আর আমার বন্ধুরা পাবজি খেলতেছে।

হঠাৎ করে বুঝতে পারলাম সামনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। মাথা উঁচু করে দেখি সামিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখে পানি টলমল করতেছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দৌড়ে ওর রুমে চলে গেল।

এটা দেখে ইকবাল বললোঃ সাহিদ অনেক হয়েছে এবার আপন করে নে? দেখলি না কী ভাবে তোর দিকে তাকিয়ে আছে।

মিমিঃ হ্যাঁ সাহিদ তুমি ওকে আর কষ্ট দিয়ো না।

আমিঃ আরে এটা আবেগ।

শাকিবঃ এটাকেও তুই আবেগ বলতেছিস?

আমিঃ সে যদি আমাকে সত্যিই ভালোবাসে তাহলে পরিক্ষা দিতে হবে?

রিয়াদঃ কী পরিক্ষা?

আমিঃ তুই সামিয়া কে ভালোবাসার কথা বলবি মানে তুই তাঁকে ভালোবাসিস। আর সে যদি রাজি হয়ে যায় তাহলে আমাকে ভালো বাসে না।

রিয়াদঃ আমি ১০০% শিয়র তোকে ভালোবাসে। এতে আমাকে এসব বলার কী আছে?

আমিঃ আমাকে সে ভালোবাসে না। আর যদি ভালোবাসে তাহলে তোরা যা খাইতে চাইবি তাই খাওয়াবো।

রিয়াদঃ সত্যি?(খুশি হয়ে)

আমিঃ হুমম।

রিয়াদঃ আচ্ছা চল?

আমিঃ কোথায়?

রিয়াদঃ তোরা আয় আমার সাথে।

আমরা ওর সাথে সামিয়ার রুমের কাছে গেলাম। রিয়াদ আমাদের কে একটু সাইটে থাকতে বললো।

এরপরে রিয়াদ সামিয়া কে তার রুমের বাইরে একটু আসতে বললো। সামিয়াও আসলো। এসে বললোঃ কি হয়েছে?

রিয়াদঃ আসলে ম্যাম কী ভাবে যে বলি,,,(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)

আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম বলবে টা কি। রিয়াদ আর সামিয়ার কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি।

সামিয়াঃ বল সমস্যা নেই।

রিয়াদঃ ম্যাম আমি আপনাকে ভালোবাসি।

সামিয়াঃ হোয়াট,,,(রেগে)

রিয়াদঃ ম্যাম আপনাকে সত্যিই ভালোবাসি।

এই কথা বলার সাথে সাথে সামিয়া ঠাসস ঠাসস করে রিয়াদের গালে চড় মেরে দিয়ে বললোঃ কী বললি আবার বল?

রিয়াদঃ সরি ম্যাম আমি আপনাকে ভালোবাসি না ‌ এসব সাহিদের জন্য হয়েছে?

সামিয়াঃ মানে?

এরপরে রিয়াদ আমাদের ডাক দিলো ।আমি ভয়ে ভয়ে গেলাম।
রিয়াদ বললোঃ আসলে ম্যাম সাহিদ আমাকে এসব বলতে বলেছে।সে আমার সাথে বাজি ধরেছে যে যদি। আপনি,,,,

রিয়াদের আর কোনো কথা না শুনে সামিয়া আমার শার্টের কলার ধরে ওর রুমের ভিতরে নিয়ে যায়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। এরপরে আমার সামনে এসে আবার আমার কলার ধরে আমার চোখে চোখ রেখে বললঃ তুই আমাকে ভালোবাসি কি না? মানুষ কী ভুল করে না। আমার জায়গায় যদি তুই হইতিস তাহলে কি করছি? তোকে আমার প্রথমেই বিশ্বাস হয়েছিলো তুই এসব করবি না। কিন্তু তোর প্রতি একটা রাগ থেকে যায়। এই কলেজে যেদিন তোকে দেখেছিলাম সেদিন যে কি খুশি হয়েছিলাম তা বুঝাতে পারবো না। মনে করেছিলাম তুই আমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলবি আমি তোকে এখনো ভা
লোবাসি। কিন্তু না আবার তোকে কাছে পাওয়ার জন্য আমি তোকে আমার এসিস্ট্যান্ট করলাম কিন্তু সেখানেও হলো না। কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে ট্যুরে যাওয়ার ব্যবস্থা করলাম। যেটা এই কলেজে কয়েক বছর ধরে বন্ধ ছিল। কিন্তু সেখানে যায়েও তুই আমাকে দূরে ঠেলে দিলি। এরপরে তোর অপমান সহ্য করে তোর বাড়িতে থাকার জন্য মিথ্যা অভিনয় করে গেলাম তোর বাসায়। সেখানেও প্রতিদিন থাপ্পড় আর অপমান সহ্য করে থাকলাম কিন্তু ফল স্বরূপ পেলাম অবহেলা।আর আজকে তুই আমি বাজির বস্তু বানিয়ে ফেলেছিস।

কথা গুলো বলেই সামিয়া নিচেও দিকে তাকিয়ে রইল আর ওর চোখ দিয়ে পানি পড়তেছে।
আমি ভাবতে লাগলাম, আসলেই তো সামিয়ার জায়গায় যদি আমি হতাম তাহলে কী করতাম। তাররপে আমাকে পাওয়ার জন্য সে অপমান অত্যাচার সহ্য করতেছে।
নেহার মুখে শুনেছি সামিয়া রাতে যখন একা একা থাকে তখন আমার ছবিটা মোবাইলে বের করে দেখবে আর কান্না করবে। আর তাকেই আমি ছিঃ

সামিয়া আমার কলার ছেড়ে দিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে থেকে বললোঃ আচ্ছা সাহিদ তোমার কাছে আমি কী এতো বড়ই পাপ করেছি যার কোনো ক্ষমা হয়না। আমাকে মাফ করে দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বলা যায় না কি” সামিয়া আমি তোকে ভালোবাসি।”
বেশ তোমাকে বলতে হবে না। আমি যেহেতু খুবই বেশি পাপ করে ফেলেছি যার কোনো ক্ষমা নেই তাহলে আমি চলে যাবো তোমাকে ছেড়ে । কোন দিন আর আসবো না ভালোবাসার দাবি নিয়ে।
বলেই সামিয়া আমার কাছ হাত ছাড়িয়ে হাঁটা ধরবে। ওমনি আমি ওর হাত ধরে টান দিয়ে আমার বুকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ কোথায় যাবি তুই আমাকে ছেড়ে। আমিও যাবো তোর সাথে সেই অচিনপুরের অচেনা পথে। হাটবো দুজনে একসাথে দুই হাত ধরে।

আমার কথা শুনে সামিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললোঃ তাহলে আমাকে এতো কষ্ট দিলে কেন?

আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে বললামঃ সরি জান পাখি আর কখনো দিবো না। এখন শুধু সুখ দিবো। বলেই ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরলাম।

প্রায় দশ মিনিট পর ছেড়ে দিলাম। সামিয়া হাঁপাতে হাঁপাতে বললোঃ যাহহ দুষ্টু এতক্ষণ কেউ করে।

আমি মুচকি হেঁসে বললামঃ তাহলে একটু শিখিয়ে দেও।

সামিয়াঃ এখন নয় বিয়ের পর।

আমিঃ ওরে বাবা তাই নাকি? (ওর দিকে এগুতে এগুতে)

সামিয়াঃ এই একদম ভালো হবে না কিন্তু? আচ্ছা আমাদের মেয়ে কই?

“মামনি আমি এথানে” পিছন থেকে কে যেন কথাটা বললো।
পিছনে তাকিয়ে দেখতো আমি বড় পড় একটা সক খেলাম। কেননা,,,,,,

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here