ভয়ানক_ভালোবাসা,পার্ট:৫

#ভয়ানক_ভালোবাসা,পার্ট:৫
#Writer:#Meheruma_Imtaz_Raya(S.Q)

১সপ্তাহ পর ,,
দুপুর ১টা,

পুরোনো পরিত্যক্ত এক ঘরে হাত ,মুখ বাঁধা অর্ধনগ্ন অচেতন অবস্থায় পরে রয়েছে রিধি ,আর তার পাশেই বসে রয়েছে রুদ্র ,,

ফ্লেসব্যাক ১দিন আগে ,,,,,

রাত ৯টা,,,

ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে রিধি,
এই কয়েকদিনের মধ্যে রিধি একবারের জন্যও বাসা থেকে বের হয়নি , মুহিব ,মিরাজ আর নিয়াজ অনেক বার বুঝিয়েছে কিন্তু তাও কোনো লাভ হয়নি ,রিধি নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছে । সেদিন কার ঘটনাটা কিভাবে যেনো রিধির মায়ের কানে পৌছেছিলো যদিও মিরাজ ব্যপার টা সামলিয়ে নিয়েছে । তবে রিধি এইভাবে ঘরবন্দি থাকায় রিধির বাবা-মা প্রথম প্রথম একটু অবাক হচ্ছিল কিন্তু মিরাজ বলেছে যে রিধির শরীর খুব একটা ভালো নেই ,আর সামনে পরীক্ষা তাই পড়ছে,তাই ওনারা আর বেশি কিছু বলেননি। হঠাৎ রিধির ফোনটা বেজে উঠলো ,ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে মুহিবের কন্ঠ শুনতে পেলো,
-হ্যালো রিধি,
-হুম বলো ,
-কি করো?
-তেমন কিছু না ,একটু ছাদে এসেছি
-এতো রাতে ?
-হুম ,ভালো লাগছিলো না
-কাল একবার দেখা করতে পারবা ?
-কেনো ? দরকারি কোনো কিছু ?
-দরকারি কিছু ছাড়া কি আমার সাথে দেখা করা যায়না বুঝি ?(অভিমানী কন্ঠে)
-না না সেটা বলিনি,তুমি তো জানোই আমি এখন বাসা থেকে বের হইনা
– থাক দেখা করা লাগবে না (অভিমানী কন্ঠে)
-রাগ করছো কেনো ?
-রাগ করিনি ,
– তুমি তো জানোই আমি কেনো বাসা থেকে বের হচ্ছিনা ?
-রিধি ,একটা বাহিরের ছেলের জন্য তুমি কেনো নিজের স্বাধীনতা নষ্ট করবে ?তুমি কেনো নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখবে ?তোমার তো কোনো দোষ নেই ,
-সত্যি কি আমার কোনো দোষ নেই ?
-না নেই রিধি
-হয়তো ,
-হয়তো না ,তোমার আসলেই কোনো দোষ নেই , দোষ একমাত্র ওই রুদ্রের,
-আচ্ছা এখন বাদ দাও,বলো কোথায় আসতে হবে ?
-তুমি সত্যি আসবে ?(খুশি হয়ে)
-হুম ,
-তাহলে তুমি তোমার স্কুলের সামনে থেকো ,আমি তোমাকে ওখান থেকে পিক করবো,
– কখন ?
-সকাল ১০টা ৪৫
-ওকে ,
-রিধি ,
-হুম
-কালকে কালো শাড়ি পরবা?
-কেনো?
-এমনি
-আচ্ছা দেখি ,
-তোমার কি এখনও মুড ওফ ?
-তেমন কিছু না ,
-আচ্ছা তুমি এখন নিচে যাও ,আর কালকে সাবধানে এসো ,ওকে ?
-হুম ওকে ,
-আমি এখন রাখছি ,
-আচ্ছা ,

ফোন কেটে রিধি আকাশের পানে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো ,
-মাঝে মাঝে অনেক ছোট ছোট কিছু কথা একটা মানুষের পুরো মুডটা চেন্জ করে দিতে পারে,,,

নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পেছনে তাকাতেই দেখলো একটা ছায়া সেখান
থেকে সরে গেলো ,
-কে ওখানে ?
রিধি দেখলো ওখানে কেউ নেই ,নিজের মনের ভুল ভেবে রিধি নিচে চলে গেলো ,

এদিকে ,

অন্ধকার রুমে হাঁটু মুড়ে মাথা নিচু করে বসে আছে রুদ্র ,,
– কালকে আমি তোমাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো রিধি ,আমার সাথে কেনো এমন করলে রিধি ?আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। কাল থেকে তুমি শুধুই আমার কাছে থাকবে ,,

সকাল ১০টা ,

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তৈরি হচ্ছে রিধি ,কালো শাড়ি পরেছে সে তার সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ,চুরি, কানের দুল।মুহিবের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলো রিধি,আজ ৭দিন পর বাসা থেকে বের হলো সে । বাসা থেকে স্কুল খুব একটা দূরে নয় ,হেঁটে গেলে ২০মিনিট লাগে আর রিকশায় গেলে ১০মিনিট ।রিধি ভাবলো যেহেতু এখনো অনেক সময় বাকি আছে তাই হেঁটেই যাবে ,আর এমনিতেও আজ কেনো জানি হাঁটতে ইচ্ছা করছে ।তখনি ফোনটা বেজে উঠলো , ফোন হাতে নিয়ে দেখলো মুহিব ফোন করেছে ,,
-হ্যালো ,
-হ্যা রিধি , কোথায় তুমি?
-এইতো বাসা থেকে বের হলাম মাত্র,
-তুমি তো রিকশায় আসছো তাইনা ?
-হ্যা(মিথ্যা বললো)

ফোনে কথা বলতে বলতে কখন যে রিধি নির্জন রাস্তায় চলে এসেছে সেটা খেয়াল করেনি,,, হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন রিধির মুখ চেপে ধরলো ,,রিধির হাত থেকে ফোনটা পরে গেলো ,রিধি জ্ঞান হারিয়ে সেই ব্যক্তিটির কোলে ঢোলে পরলো ,এদিকে মুহিব ফোনের ওপাশ থেকে হ্যালো হ্যালো বলেই যাচ্ছে , হঠাৎ ফোনটা কেটে গেলো ।

দুপুর ১টা,,

পুরোনো পরিত্যক্ত এক ঘরে হাত ,মুখ বাঁধা অর্ধনগ্ন অচেতন অবস্থায় পরে রয়েছে রিধি ,আর তার পাশেই বসে রয়েছে রুদ্র , রিধির জ্ঞান ফিরলো ,অনেক কষ্ট করে মাথা তুলে বসলো । রিধি খেয়াল করলো তাঁর পরণে শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট,আর তাঁর শাড়ি দিয়েই হাত আর মুখ বাঁধা ।
রুদ্র কে দেখতেই রিধি কেঁপে উঠলো,
-কেমন আছো রিধি ?ওহ সরি তোমার তো মুখ টা বাঁধা , দাঁড়াও মুখের বাঁধন টা খুলছি ,
রুদ্র রিধির মুখের বাঁধন টা খুলে দিলো ,,
-আমাকে এখানে কেনো এনেছো ?(রাগান্বিত স্বরে)
– ভালোবাসি তাই (নির্লিপ্ত কন্ঠে)
-আমাকে ছেড়ে দাও প্লিজ (করুন কন্ঠে)
-না না ,সেটা তো হবেনা ,
-কেউ কি আছেন ?প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন (চিৎকার করে)
-চিৎকার করে কোনো লাভ নেই রিধি , কেউ তোমার ডাক শুনতে পাবেনা,
– কেনো করছো এমন বলো?
-ওইযে বললাম ভালোবাসি ,
-তোমার মতো একটা অমানুষ জানোয়ারকে আমি কখনোই ভালোবাসব না ,তোমার মতো তোমার ভালোবাসাও জঘন্য (চিৎকার করে )
-রিধি ?(চিৎকার করে)
-আমার সাথে চিৎকার করে কোনো লাভ নেই ,আমি যা বলেছি তা একদম ঠিক বলেছি ,তোমার মতো তোমার ভালোবাসাও জঘন্য জঘন্য জঘন্য (চিৎকার করে)
রুদ্র নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রিধিকে থাপ্পর মারলো ,
-দেখলে তো ,তুমি আসলেই একটা অমানুষ (কাঁদতে কাঁদতে)
– আমাকে ক্ষমা করো রিধি ,আমি তোমাকে মারতে চাইনি , বিশ্বাস করো আমি তোমাকে মারতে চাইনি ,আমাকে কেনো রাগালে বলো ,,
কথাগুলো বলেই রুদ্র রিধির গালে হাত দিতে যাচ্ছিলো,
-খবরদার রুদ্র , একদম আমার কাছে আসবেনা ,তোমার মতো একটা জানোয়ারকে আমি সহ্য করতে পারছি না(রেগে বললো)
-ওহ আমি ছুঁলেই দোষ?আর ওই মুহিব যে ওইদিন তোমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো তখন তো কিছু বলো নি ,
-মুহিব এর স্পর্শে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিলো না , তুমি আমাকে স্পর্শ করলে আমার ঘেন্না লাগে ,আর আমি মুহিব কে ভালোবাসি (চিৎকার করে )
– আমি স্পর্শ করলে তোমার ঘেন্না লাগে তাইনা ?আজকে তাহলে তোমার এমন অবস্থা করবো যে সারাজীবন আমার করা স্পর্শ নিয়েই তোমাকে ঘুরতে হবে (রাগান্বিত স্বরে)
– ম,,মানে (ভয়ার্ত কন্ঠে)
রিধি কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুদ্র রিধি কে খুব খারাপভাবে ছুঁতে লাগলো

– রুদ্র প্লীজ ,ছেড়ে দাও আমাকে প্লীজ (কাঁদতে কাঁদতে)

তখনি হঠাৎ কোথা থেকে যেনো মুহিব চলে আসলো ,, রুদ্র কে রিধির থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে লাগলো ,,মুহিবের বন্ধুরা আর মিরাজ মিলে মুহিব কে আটকালো,,রিধির দিকে খেয়াল হতেই মুহিব রিধির কাছে গেলো ,,রিধি কে ধরে বসাতেই রিধি মুহিবের কোলে ঢোলে পরলো ,,,,,

#চলবে ,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here