গল্পঃ_দ্যা_ডার্ক_আইল্যান্ড,পর্বঃ_১+২
লেখাঃ_IH_Abid
.
ডেনমার্কের একটি দ্বীপে এসেছে বায়োজিদ। অবশেষে তার স্বপ্ন পুরন হলো৷ একজন ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার হিসাবে এটা একটা বড় অর্জন৷ তবে এখানে তাকে একটা শর্তপুরন করতে হয়েছে৷ তাকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হয়েছে যে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা বা কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ দ্বায়ী থাকবে না৷ তবে এর বিনিময়ে মোটা অংকের পুরুস্কারও পাবে৷ সে চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসে তাই ঝুকি সত্ত্বেও এখানে আসা৷ বায়োজিদ তার স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই ফটোগ্রাফির প্রতি তীব্র নেশা ছিলো৷ সেই স্টুডেন্ট লাইফের নেশা থেকেই একসময় সেটাকে পেশা হিসাবে বেছে নেয় বায়োজিদ৷ সেই ফটোগ্রাফির জন্য সে ডেনমার্কের এই দ্বীপ এরেনোফেরাতে। সে এপ্লাই করেছিলো একটা ফটোগ্রাফি অর্গানাইজেশনে। তার তোলা ছবি পছন্দ করে সেখানকার এডমিন। একটা লম্বা শ্বাস নিলো সে । দিনের আলোয় ঝলমল করছে দ্বীপটি। বায়োজিদ তার ক্যামেরা হাতে নিয়ে এদিক ওদিক কিছু ফটোশুট করলো৷ তার সাথে একজন ট্যুরিস্ট গাইড আছে। শুধু বায়োজিদ না। তার সাথে আরো অনেকজন ফটোগ্রাফার এসেছে বিভিন্ন দেশ থেকে। তারা প্রত্যেকেই বলতে গেলে মৃত্যুচুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছে যে কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে কতৃপক্ষ দোষী না৷ তবে বায়োজিদ জানে এটাইপ কাজে নানান ঝুকি থাকে৷ অনেক ফটোগ্রাফারদের জীবনী পড়েছে যারা ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে প্রান হারিয়েছে৷ কেউ জন্তুদের আক্রমনে। কেউ চোরাবালিতে, কেউ বা উত্তপ্ত লাভায় দগ্ধ হয়ে৷ এখানে বাংলাদেশের একমাত্র সে।
বায়োজিদ এদিক ওদিক ক্যামেরা দিয়ে সেখানকার দৃশ্য ক্যাপচার করছে। এসময় সেখানে ক্যামেরার সামনে একটা মেয়ে এসে দাড়ালো। বায়োজিদের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করছে। বায়োজিদ হাল্কা ভ্যাবাচেকা খেয়ে ক্যামেরাটা নামালো। মেয়েটা সামনে আসলো৷
জিন্স শার্ট পড়া সোনালি চুলের একটা মেয়ে৷ দেখেই বুঝা যাচ্ছে বিদেশি কেউ হবে। মেয়েটা সামনে আসলো। মেয়েটা ইংরেজিতে কথা বলছে
— হ্যালো মিস্টার? কি নাম আপনার?
— বায়োজিদ
— হোয়াট? বায়ো……. হোয়াট?
— বায়োজিদ।
— বা…য়ো..ঝিদ,,,, ভাইজিদ?
— ( মেজাজ খারাপ) ইটস বায়োজিদ। নট ভাইজিদ৷
— উফফফ,,, হোয়াট এ ক্রিটিক্যাল নেম। বায়ো..জিদ৷ বায়োজিদ। এখন ঠিক আছে?
— আলমোস্ট ওকে৷ যাই হোক? আপনি?
— আই এম লিসা। লিসা এলজিও। ফ্রম কানাডা।
— ওকে৷ আমি বাংলাদেশ থেকে৷
— বাংলাদেশ? আমি কখনো নাম শুনি নি। এই দেশের।
— শোনার কথা না। যাই হোক। আপনিও কি ফটোগ্রাফার?
— হুম্ম৷ আমিও ফটোগ্রাফার৷
— আচ্ছা পরে দেখা হবে। বাই।
এই বলে বায়োজিদ সেখান থেকে কেটে পরলো৷ মনে মনে মেয়েটাকে গালি দিলো৷ তার নামটাকে কি বানিয়ে দিছে৷ এসময় আবার ওই মেয়েটার ডাক৷
— বায়ো……..কি যেন নাম?
বায়োজিদ ঘুরে বললো।
— বায়োজিদ,,,, নোট ইট।
— ওকে ওকে।
মেজাজ পুরাই গরম বায়োজিদের। তারা এই দ্বীপে মোট ৮ জন আছে। দুই জন করে টিম। বায়োজিদ বাকিদের সাথেও পরিচয় হয়ে নিলো৷ সবাই ফটোগ্রাফার। সবাই একে অন্যের ফটোগ্রাফি দেখছে৷ কিন্তু সবাই বায়োজিদের ফটোগ্রাফির প্রশংসা করলো৷
এসময় হঠাৎ একজন বলে উঠলো
— আচ্ছা, আমি এখানকার কিছু স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি ডেনমার্ক এর এই দ্বীপে নাকি ভৌতিক অনেক কিছু আছে৷ আপনারা কিছু জানেন৷
— আমরা এসবে বিশ্বাসী না৷ এসব কেবল পৌরানিক কাহিনি মাত্র। এসবের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই৷ ( বাকি কয়েকজন)
বায়োজিদের খেয়াল হলো। সে শুনেছে এরকম পৃথিবীর অনেক দেশে গহীন জায়গাগুলায় নানান রকম ব্ল্যাক ম্যাজিক চর্চা হয়৷ ফলে অনেক শয়তানি শক্তি বিরাজ করে সেখানে। তবে বায়োজিদ শুধু শুনেছেই এসব। কখনো এমন কিছু দেখেনি৷
এসময় তাদের সাথে একজন ট্যুরিস্ট গাইড আসলো৷ সাথে দুটা জিপ৷ দ্বীপের ভেতর আলাদা আলাদা জায়গায় বিভিন্ন কটেজ আছে৷ যেগুলা কেবল এখানে যারা দর্শনার্থী আসে তাদের জন্য। আর কটেজ গুলো জঙ্গল থেকে যথেস্ট নিরাপদ দুরত্বে। আর ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফারদের জন্য আলাদা গার্ডও নিযুক্ত করা হয়েছে৷
যথারীতি সবাই তাদের ট্যুরিস্ট গার্ডদের সাথে পরিচয় হয়ে নিলো৷ সবাই জিপে উঠলো৷ জিপ স্টার্ট হলো৷ বায়োজিদ বেশ উপোভগ করছে জার্নিটা৷ পড়ন্ত বিকাল একটু পরই সুর্য ঢলে পরবে৷
বায়োজিদ জিপ থেকে নামলো৷ কটেজটার দিকে তাকালো৷ চমৎকার দেখতে৷ বায়োজিদ কটেজের দিকে পা বাড়ালো৷ হঠাৎ পেছন থেকে মেয়েলি ডাক৷
— হেই বায়োজিদ।
বায়োজিদ পেছন ফিরে তাকালো। দেখলো সেই মেয়েটা৷
— লিসা,,,,, আপনি এখানে?
— হ্যা আমরা পার্টনার । আমাদের দুজন দুজন পার্টনার বানানো হয়েছে জানোনা?
— হ্যা পার্টনার ঠিক আছে৷ কিন্তু আমার সাথে আপনার পার্টনার শিপ এটা কই পাইলেন৷
লিসা একটা কাগজ বের করে দেখাল। সেখানে বায়োজিদ আর লিসার পার্টনারশিপের কথা আছে ।
বায়োজিদ বলল
— আমি খেয়াল করিনি৷ এখন কি এই পুরা জার্নি আমাকে আপনার সাথে থাকতে হবে?
— তা তো অবশ্যই৷
বায়োজিদ বিপাকে পরে গেলো৷ মেয়েটাকে এমনেই বিরক্তিকর লাগছে৷ কটেজের দিকে এগিয়ে গেলো বায়োজিদ৷ ভেতরটা বেশ সুন্দর আর গোছান৷
কটেজের নিচ তলায় থাকবে লিসা আর দোতালায় থাকবে বায়োজিদ৷ বায়োজিদ তার রুমে এসে তার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলো৷ ।
সন্ধ্যা হচ্ছে। বায়োজিদ কিছু চিপস খাচ্ছে৷ । সুর্য পুরাটা ঢলে গেলো। বায়োজিদ কটেজের ছাদে গেলো৷ তার বাইনোকুলার নিয়ে৷ নাইট ভিশন বাইনোকুলার।
বায়োজিদ কটেজের ছাদ থেকে আশেপাশের দৃশ্য দেখছে। কোথায় কোন পশু দেখা যায় নাকি। আজ শরীরটা খারাপ নাইলে ক্যামেরা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়তো ফটোশ্যুট করতে।
বায়োজিদ দুরবীন দিয়ে দেখছে। হঠাৎ কিছু একটার উপর চোখ পরলো তার৷ বায়োজিদ জুম করে দেখলো৷ অনেকগুলা মানুষ৷ কিন্তু তারা দেখতে এমন কেন। সারা গায় দেখে মনে হচ্ছে যেন কবরের ভেতর থেকে উঠে আসছে। প্রত্যেকের চোখ বন্ধ। যেন তাদের হিপনোটাইজ করা৷ বায়োজিদ আরো লক্ষ্য করছে তাদের মুখে ছিটা ছিটা রক্ত। বায়োজিদ ভয় পেয়ে গেলো৷ দুরবীনটা নামিয়ে নিলো। এরা কারা। এই দ্বীপে কি তবে আদিবাসী থাকে। হ্যা থাকতে পারে। কিন্তু আদিবাসী হলে এমন হবে কেন সারা গায়ে এমন দগদগে ঘা। মুখে রক্ত থাকা স্বাভাবিক হয়তো কাচা মাংস খায় তারা। কিন্তু তাই বলে এমন কেন। কিছুতো অন্য ঘটনা আছে৷ আদিবাসী সম্পর্কে স্টাডি করেছে বায়োজিদ৷ কিন্তু এদের আদিবাসী কম কবরের পচা লাশ বেশি মনে হচ্ছে। যেন কবরের লাশ কোন ব্ল্যাক ম্যাজিকের পাওয়ারে জীবন ফিরে পেয়েছে। একভাবে হাটতে হাটতে তারা জঙ্গলের ভেতর ঢুকছে ৷ বায়োজিদ দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু আর দেখতে পেলো না৷ বায়োজিদ কয়েকটা বড় শকুন উড়ে যেতে দেখলো আকাশে। বায়োজিদ এক মুহুর্তের জন্য মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেলার ট্রাই করল। সে আবার দূরবীন দিয়ে দেখলো। না এখন কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। তবে বায়োজিদের মনে হাল্কা একটা ভয় কাজ করলো৷ কিন্তু ভয়ের সাথে একটা রহস্যের শিহরণ বয়ে গেলো। মুহুর্তেই ভয়টা গায়েব হয়ে গেল৷ সে আন্দাজ করলো কিছু একটা বড় রহস্যের সম্মুখীন হয়তো শীঘ্রই হবে। আপাতত ভাবলও তাদের সাথে যে গার্ড আছে সবসময় তাদের সতর্ক থাকতে বলবে। একই সাথে তাদের বাকি পার্টনারদেরও সতর্ক থাকতে বলবে।
বায়োজিদ ছাদ থেকে নেমে তার রুমে আসলো। এখন লিসাকে কিছু জানানো উচিৎ হবেনা৷ যেহুতু লিসা ঘুম৷ বায়োজিদ চুপ করে রুমে এসে শুয়ে পরলো। কিন্তু তার ঘুম আসছে না৷ বার বার ভাবছে কি হতে পারে। কি আছ এই জঙ্গলে৷ এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো সে৷
কোন একটা অশুভ শক্তি তাদের দেখছে। এই দ্বীপে অবস্থিত আছে ভয়ানক কোন রহস্য। এই ভয়ানক রহস্যের বেড়াজালে তারা আটকা পরে গেছে৷
.
.
.
কোন একটা অশুভ শক্তি তাদের দেখছে। এই দ্বীপে অবস্থিত আছে ভয়ানক কোন রহস্য। এই ভয়ানক রহস্যের বেড়াজালে তারা আটকা পরে গেছে৷
জংগলের গভীরে দমকা হাওয়া বইছে৷ শুকনা পাতা গুলার মরমর শব্দ হচ্ছে৷ বাতাসে ভেসে ভেসে কেউ একজন আসছে৷ পা ফালানোর শব্দ হচ্ছে৷ এসময় আস্তে আস্তে একটা অবয়ব দৃশ্যমান হলো। একটা ছেড়া কোট পরা, মাথায় হ্যাট পরা চোখ দুটা সবুজ৷
আশেপাশে বাতাস বইছে জোরে জোরে৷ একটা পেচা তাকিয়ে আছে সেদিকে৷ পেচাটা উড়ে যেতে চাইলো কিন্তু যেতে পারলো না৷ চৌম্বকের মত টেনে সোজা ওই লোকের হাতে চলে গেলো৷ লোকটি পেচাটার মাথা ছিড়ে রক্ত পান করতে লাগলো যেরকম মানুষ ক্যান খুলে কোলডিংক্স পান করে৷ পেচাটা ফেলে দিলো৷ মাথাহীন একটু পর পেচাটা উঠে দাড়ালো৷ সেটা উড়ে গিয়ে লোকটার কাধে বসলো৷
রহস্যময় লোকটি হাটতে হাটতে জংগলের ভেতরে গেল৷ মাটির নিচ থেকে একে একে লাশ উঠছে৷ তারা উঠে গায়ের মাটি ঝারা দিয়ে হাটতে লাগলো লোকটির পেছনে৷
লোকটি একটা বড় গুহার ভেতর আসলো৷ গুহার দরজায় ৩ টা টোকা দিতেই দরকাটা খুলে গেল৷
ভেতরে প্রবেশ করছে৷ ভেতরটা ভয়ানক দেখতে নানান জায়গায় মানুষের কংকাল পরে আছে। পাহাড়ের গায়ে রক্তের ছিটা ছিটা দাগ পরে আছে৷
লোকটি এগিয়ে যাচ্ছে৷ এবার শেষ মাথায় এসে পরল।
একটা বিশাল কক্ষ৷ পুরা কক্ষ লাল আগুনের আলোয় লাল হয়ে আছে৷ এখানে একজন বসে আসে৷
একজন বৃদ্ধ লোক বিরবির করছে আগুনের সামনে। হঠাৎ সে চোখ খুলল। বলে উঠলো
— জ্যাক ক্রো
সেই রহস্যময় লোকটির নাম জ্যাক ক্রো । জ্যাক ক্রোএর কাধে থাকা মাথা কাটা পেচাটা উড়ে উড়ে বৃদ্ধ লোকটির চারপাশে উড়াউড়ি করে তাকে জ্বালাতন করছে। এসময় বৃদ্ধলোকটি অগ্নিদৃস্টি নিয়ে তাকালো পেচাটার দিকে। পেচাটা ছাই হয়ে গেলো।
এবার বৃদ্ধ লোকটা ঘুরে দাড়ালো। তার চোখটাও দুপ করে লাল হয়ে গেলো৷ জ্যাক ক্র বলছে।
— বলেছিলাম না। একদিন ফিরে আসবো। আজ ফিরে আসলাম। এই দ্বীপে আবার আমার রাজত্ব হবে। আমার ক্ষমতা চলবে। আমি তোর চেয়েও বড় জাদুকর এখন। জনাব লিউএল ক্রিক । যাই হোক ওই গ্রীন ক্রিস্টালটা কোথায় আছে। আশাকরি সোজা কথায় উত্তর দিয়ে দিবে।
— আমি জানিনা কোথায় ওটা। আর আমার সাথে ফাও প্যাচাল করবা না৷ চুপ চাপ এখান থেকে বেরিয়ে যা।
জ্যাক ক্রো একা একা হাসতে লাগলো। ক্রিক এবার তার তলোয়ার নিয়ে সোজা ঝাপিয়ে পরলো জ্যাক এর উপর। তলোয়ারের কোপ লাগার আগ মুহুর্তে ভ্যানিশ হয়ে গেলো জ্যাক। কোপ পরলো না। ক্রিক এবার পেছন ফেরতে নিবে জ্যাক পেছন থেকে একটা ছুড়ি ক্রিকের পেটে ঢুকিয়ে দিলো৷ ক্রিক চিতকার করে উঠলো। তবু হার মানলো না। এবার পালটা ঘুরে আক্রোমন করতে
নিলো। ক্রিক সজোরে তলোয়ার দিয়ে জ্যাক কে আঘাত করলো কিন্তু তলোয়ারটা জ্যাকের বডিতে ছোয়ার সাথে সাথে তলোয়ারটা জ্যাকের শরীর গলিয়ে বের হয়ে গেলো। মানে এটা শুধু জ্যাকের ইমেজ ছিলো। ক্রিক নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে ঠিক এসময় জ্যাক পেছন থেকে সজোরে লাথি দিলো৷ ক্রিক পরে গেলো। হাতের তলোয়ারটা ছিটকে পরে গেল৷ জ্যাক এবার দুই হাত দিয়ে ক্রিকের দুই পা ধরে হ্যাচকা টান দিলো। পুরা পা দু টা ছিড়ে আসলো। চিতকার করে উঠলো ক্রিক৷ সেই পা জোড়া ছুড়ে দিলো জম্বি তথা জ্যাকের পেছনে আসা জ্যান্তা লাশ গুলার দিকে। জম্বি গুলা পা দুটার উপর হুরমুর করে পরল। যার যার মত মাংস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে। জ্যাক এগিয়ে গেলো ক্রিকের কাছে। ক্রিক প্রচন্ড ক্ষোভের সাথে বলছে
— জ্যাক তুই কাপুরষ ছিলি৷ আর সবসময় কাপুরষ থাকবি৷ সবসময় পেছন থেকে আক্রমন করিস।
— শত্রুকে ঘায়েল করার কোন নীতি নাই। যেদিক থেকে সুবিধা সেদিক থেকেই আক্রমন করা যায়। এটা আমার নীতি৷
ক্রিক একদলা থুথু জ্যাককে দিলো। জ্যাক হাসতে হাসতে ক্রিকের মাথাটা হাত দিয়ে চেপে ধরলো৷ মাথাটা টেনে উপড়ে পরলো৷ রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হচ্ছে। ছিড়া মাথাটা জ্যাক নিজের মুখে ঘসছে৷ জ্যাকের মুখ রক্তে লাল হয়ে গেলো৷ ক্রিকের মাথা আর পা হীন শরীরটা পরে রইলো৷ একটা বিকট হাসি হাসলো জ্যাক৷ ক্রিকের লাশটা সব জম্বিরা মিলে খেয়ে ফেললো৷ জ্যাক গিয়ে সেখানে তালি দিলো৷ গর্তের নিচ থেকে একটা বড় পাথরের আসল উঠে আসকো৷ জ্যাক গিয়ে সেখানে বসলো৷ এসময় সেখানে ফ্লাইং ব্রুমে উড়ে আসলো মুনা। মুনা একজন ডায়নি৷ জ্যাক হেসে বলল
— আসো মুনা৷ তোমারই অপেক্ষায় ছিলাম৷ আজ থেকে শুধু আমাদের রাজত্ব চলবে এখানে৷ তুমি আমি৷
জ্যাক হাসছে৷ মুনাও হাসছে৷ মুনা বলছে
— এই দ্বীপে কিছু বিদেশী মানুষ আসছে৷ কি করা যায়?
— যখন এসেছে৷ তাইলে নিশ্চিত থাকো যে তারা আর কেউ যেতে পারবেনা৷ এখানে সবাই নিজের ইচ্ছায় আসে আর যায় আমার ইচ্ছায় তবে কেউ যেতে পারবে না৷ হা হা হা৷
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেছে বায়োজিদ৷ মাথা হাল্কা ভার লাগছে৷ একটা মগ হাল্কা চিনি দিয়ে কড়া কফি প্রয়োজন তার৷ দরজায় নক হচ্ছে৷ বায়োজিদ গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে লিসা দাড়িয়ে আছে। লিসার হাতে গরম দুই মগ কফি আর কেক৷ লিসা বলল
— কফি বানাচ্ছিলাম৷ ভাবছিলাম আপনার জন্যও বানাই৷ একসাথে খাই৷ ভেতরে আসতে পারি৷ ।
— হ্যা হ্যা আসুন৷
লিসা ভেতরে ঢুকলো৷ কফির মগ একটা বায়োজিদকে দিলো৷ বায়োজিদ আলতো করে মগে চুমুক দিলো৷।
— ধন্যবাদ। একটা কফির খুব প্রয়োজন ছিলো।
বায়োজিদের চেহারায় হাল্কা একটা চিন্তার ছাপ৷ লিসা জিজ্ঞাস করলো
— আপনি কি চিন্তিত?
বায়োজিদের গতরাতের ঘটনা মনে পরে গেলো৷ কিন্তু লিসাকে কিছু বললো না৷ বরং একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল
— আরে না কিছু না৷ আজকের ফটোগ্রাফিটা দারুন হবে ভাবছি৷
বায়োজিদ পুরা কফি শেষ করলো৷ মাথাটা অনেক হাল্কা লাগছে৷
নাস্তা শেষে বায়োজিদ তার ক্যামেরা নিয়ে নিলো৷ সাথে লিসাও। দুজন বের হবে৷ সাথে তাদের গার্ড মাইক৷ মাইক তার সাথে থাকা রাইফেল কাধে ঝুলিয়ে নিলো৷ আর পিস্তলটা কোমরে গুজে নিল৷ একটা বড় ছোরাও আছে সাথে৷ এখানে তারা ফটোগ্রাফার মোট ৮ জন আলাদা আলাদা দেশের। ৷ প্রত্যেকে জোড়া করে চারটা স্পটে অবস্থান করছে৷ আর তাদের সাথে একজন করে গার্ড৷ গার্ডেরা সবাই ডেনমার্কের৷ বায়োজিদ আর লিসা হলো তিন নাম্বার স্পটে৷ তবে প্রতি স্পটের সাথেই সবার সাথে সবার যোগাযোগ আছে৷
দ্বিতীয় স্পটে আছে ব্যানার আর রুজব। একজন ফিনল্যান্ড আরেকজন ইতালির৷ তারা দুজন হাটছে বেশ কিছু ছবি তুলছে৷ এসময় ব্যানার আচমকা হোচট খায়৷ জায়গাটা জংগলের ভেতরে এবং দিনের বেলায়ও অন্ধকার৷
— আপনি ঠিক আছেন মি.ব্যানার?
— জ্বি. মি রুজব৷ আমি ঠিক আছি৷ কিন্তু পায়ে মনে হচ্ছে বেশ ভারী মোচ লেগেছে৷
— আচ্ছা। আমি সামনে কিছু ফটোগ্রাফি করে আসি৷ আপনি এখানেই অপেক্ষা করুন।
গার্ড আর ব্যানার দাঁড়িয়ে আছে৷ গার্ড তার সঙ্গে আসতে চাইলে বলে৷
— সমস্যা নেই ৷ আপনি থাকুন মি রুজবের সাথে৷
আমি বেশি দূরে যাবো না৷
এই বলে ব্যানার এগিয়ে গেলো৷ ক্যামেরায় ছবি তোলার মত তেমন কিছু পেলোনা ৷ সে বুঝতেই পারেনাই যে সে পথ ভুলে বসছে৷ সে এদিক ওদিক দেখছে। এমন সময় টের পেলো তার গায়ে ভেজা কিছু পরলো। দেখলো এটা রক্ত উপরে তাকাতেই দেখে গাছে একটা মানুষ সদৃশ কিছু বসে আছে কিন্তু সেটা মানুষ না৷ ব্যানার কিছু বলার আগেই সেটা ঝাপিয়ে পরলো তার উপর৷ এক কামড়ে তার গলার নালি ছিড়ে ফেললো। আরো কয়েকটা জম্বি এসে ব্যানারকে ছিড়ে খেতে লাগলো৷
.
.
( চলবে)