Revenge,পর্ব ০১,০২

#Revenge,পর্ব ০১,০২
#Tisha_Islam_Nabila
০১
·
·
খাটের এক কোনায় পড়ে আছে নাবিলা। শরীরের শাড়ীটা এলোমেলো হয়ে আছে। রক্তে ফ্লোর লাল হয়ে আছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। তারপাশেই বেল্ট হাতে খাটের উপর। পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে আয়াশ। যে নাবিলার স্বামী আর আজই ওদের বিয়ে হয়েছে। আর আয়াশই নাবিলা কে মেরে রক্তাত্ব করেছে। বিয়ের প্রথম রাতে যে এভাবে নিজের স্বামীর হাতে। নাবিলা কে মার খেতে হবে এটা কল্পনাও করেনি। অথচ যেটা কল্পনা করেনি সেটাই। বাস্তব হয়ে ওর সামনে ধরা দিলো। আয়াশ বেল্ট ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। নাবিলা কোনোরকম চেষ্টা করে আস্তে আস্তে উঠে বসলো। সব স্বপ্ন আশা ভরসা আজ এক নিমিষে শেষ হয়ে গেলো। নাবিলা কাঁদতে কাঁদতে ওয়াসরুমে গেলো। গিয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দিয়ে হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো!!

#কিছুক্ষণ_আগে..!!

নাবিলা কে আয়াশের রুমে। ফুল দিয়ে সাজানো খাটে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কারন আজ ওদের বাসর রাত। লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে নাবিলা। আর লজ্জায় লাল নীল বেগুনী হচ্ছে। ওদের বিয়েটা ভালবেসেই হয়েছে। ৬মাসের রিলেশন ছিলো আর ৬মাস পর। আজ প্রিয় মানুষটার হতে চলেছে পুরোপুরি। এসব ভেবে মনটা শান্তিতে ভরে উঠছে। একটুপরই দরজা খোলার আওয়াজ পেলো। নাবিলা একটু নড়ে চড়ে বসলো। আয়াশ বাঁকা হেসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে। এক পা দু পা করে কাছে এলো। এরপর কিছু না বলে ড্রেস নিয়ে ওয়াসরুমে গেলো। গিয়ে একটা কালো জিন্স প্যান্ট আর ব্লু কালার গেন্জি পড়ে এলো। নাবিলা খাট থেকে নেমে আয়াশ কে সালাম করতে গেলো। আয়াশ দু পা পিছিয়ে গেলো নাবিলা অবাক হলো। আয়াশ মুচকি হেসে বললো..!!

—–কামঅন বেইবী হোয়াট ইস দিস??

নাবিলাঃ এটা রিচুয়েলস আয়াশ!!

আয়াশ বিরক্তি নিয়ে বললো..!!

—–এসব স্টুপিড রিচুয়েলস কে বানিয়েছে??

নাবিলা হাসি দিয়ে বললো..!!

—–বাসর রাতে সব মেয়েদেরই। উচিত তার হাসবেন্ড কে সালাম করা..!!

আয়াশের চেহারা পাল্টে গেলো। চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে। ঘুরেই নাবিলা কে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে। ঠাস করে এক থাপ্পর মারলো। টাল সামলাতে না পেরে নাবিলা ফ্লোরে গিয়ে পড়লো। ঠোট কেটে অলরেডি রক্ত বেরিয়ে গিয়েছে। নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। আয়াশ ওকে মেরেছে ওর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যে কিনা নাবিলার একটু কষ্ট সহ্য করতে পারতো না। নিজেই কেঁদে ফেলতো নাবিলা অবাক হয়ে বললো..!!

—–তুৃমি আমাকে মারলে??

আয়াশ বাঁকা হেসে বেল্ট খুলতে খুলতে বললো..!!

—–একটা থাপ্পরেই এই অবস্থা জান?? এরপর যে তোমার কি হবে?? ভাবলেই আমার গায়ে কাটা দিচ্ছে..!!

বলে পাগলের মতো হাসতে লাগলো। নাবিলা ভয়ে কুকরে গিয়ে বললো..!!

—–এ এমন ককরছো কেন??

আয়াশ কোনো কথা না বলে। বেল্ট দিয়ে ইচ্ছেমতো মারতে লাগলো নাবিলা কে। নাবিলা চিৎকার করে যাচ্ছে। কিন্তুু ওর এই চিৎকার কেউ শুনছে না। আয়াশ ওকে এমন জায়গায় নিয়ে এসেছে। এর আশেপাশে কয়েক মাইল নিয়েও কেউ থাকেনা। তার উপর রুম সাউন্ড প্রুফ। নাবিলা ফ্লোরে গড়াগড়ি করছে। আয়াশ খাটে পায়ের উপর পা তুলে বসলো..!!






#এখন..!!

নাবিলা ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলো। এসেই ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। কারন সামনেই আয়াশ দাড়িয়ে আছে। মুখে তার রহস্যময় হাসি হাসতে হাসতেই বললো..!!

—–ওয়াও বেইব ইউআর লুকিং সো হট..!!

নাবিলা ভয়ে আবার ওয়াসরুমে ঢুকে। দরজা দিতে গেলেই আয়াশ ধরে ফেলে। নাবিলা কাঁপা গলায় বলে ওঠে..!!

—–আমাকে কেন মারলে আয়াশ?? আমি কি করেছি??

এমন প্রশ্নে আয়াশের মাথায় আগুন ধরে গেলো। সাথে সাথে নাবিলার চুলের মুঠি ধরলো। নাবিলা ব্যথায় কুকরে উঠলো নিজের ঠোট নিজে চেপে ধরলো। আয়াশ রাগে ফোস ফোস করতে করতে বললো..!!

—–মারার জন্যই তো তোকে বিয়ে করেছি। প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছি তোকে। তিলে তিলে আমি মারবো তোকে..!!

নাবিলার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। নাবিলা অবাক হয়ে বললো..!!

—–কি?? আয়াশ তুমি কি বলছো?? কিসের প্রতিশোধ?? তুমি না আমাকে ভালবাসো??

আয়াশ নাবিলা কে ফেলে দিলো। এরপর বাঁকা হাসলো। এসির পাওয়ার আরো বাড়িয়ে ফুল করলো। রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে দিলো। নাবিলা এদিকে শীতে কাঁপছে। আয়াশ নাবিলা কে ধরে হাত পা বেধে দিলো..!!

নাবিলাঃ আয়াশ কি করছো তুমি?? আমার শীত করছে আমি চেন্জ করবো..!!

আয়াশ হাসতে হাসতে বললো..!!

—–চেন্জ করতে দিলেতো করবি..!!

বলে ওই অবস্থায় ফেলে চলে গেলো। সোজা ছাদে চলে এলো আয়াশ। চোখ থেকে পানি পড়ছে অনবরত। একটা সময় তো ঠিকই ভালবাসতো নাবিলা কে। আয়াশ কান্না করতে করতে বললো..!!

—–তুমি যা করেছো তার শাস্তি তুমি পাবে। চাইলেই আমি তোমাকে মেরে ফেলতে পারি। কিন্তুু না এমন কিছু আমি করবো না পারবো না করতে। ভালবেসেছিলাম তো তোমাকে কি করে মারবো?? তবে শাস্তি তোমার পেতে হবে। তোমার গো বেচারী ভোলা ভালা। চেহারার পিছনে যে শয়তানি রুপ আছে। তার শাস্তি তোমাকে পেতে হবে। সবাই বলে তুমি নাকি বাচ্চা আসলে তো তুমি ডাইনি..!!

[এবার পরিচয় দিয়ে দেই। আয়াশ আয়াশের পুরো নাম সম্রাট খাঁন আয়াশ। তবে ডাকনাম আয়াশ। আয়াশের বাবা একজন বিজনেসম্যান। বিজনেসের জন্যই আয়াশের বিয়ের দিনই বিদেশে চলে গিয়েছে। আর তার জন্যই আয়াশের মায়ের ও যেতে হয়েছে। আয়াশের বয়স ২২ মেডিকেলের স্টুডেন্ট এখনো। লম্বায় ৬.২” ফর্সা চোখগুলো ভাসা। নীলাভ চোখের অধিকারী আয়াশ। চোখ দেখে প্রেমে পড়তে বাধ্য মেয়েরা। ঠোটের নিচে একটা তিল আছে। সিল্কি চুলগুলো কপাল ছুয়ে থাকে সবসময়..]

[নাবিলা পুরো নাম তিশা চৌধুরী নাবিলা। ডাকনাম নাবিলা মিষ্টি বলেও ডাকে। বয়স ১৮ বছর নাবিলা ও মেডিকেলের স্টুডেন্ট। লম্বায় ৫.৫” গায়ের রং ফর্সা। নাবিলার থুতনির নিচে ছোট একটা তিল আছে। যেটা বাদামী কালার বাবা বিজনেসম্যান। মা একজন এডভোকেট বড় ভাইয়া আবির ডক্টর..]

আয়াশ চোখের পানি মুছে ফেললো। পাশে থাকা ফুলের টব লাথি মারলো। সাথে সাথে ভেঙে গুড়িয়ে গেলো। হাতের মুঠি শক্ত করে বললো..!!

—–তুমি যা করেছো তার শাস্তি পাবে। কঠিন শাস্তি পাবে প্রমিস..!!

আয়াশ সকালে রুমে গেলো। রুমে গিয়ে পায়ের তলার মাটি সরে গেলো। দৌড়ে নাবিলার কাছে গেলো। আর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো..!!
·
·
চলবে…………

#Revenge (পর্ব ০২)
#Tisha_Islam_Nabila
·
·
·
আয়াশ রুমে এসে থ হয়ে গিয়েছে। পায়ের তলার মাটি মনে হয় সরে গেলো। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। দৌড়ে রুমের ভেতর চলে আসে। নাবিলার গায়ে হাত দিয়ে শরীর কেঁপে ওঠে। নাবিলার শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে। নিঃশ্বাস নিচ্ছে খুব আস্তে আস্তে..!!

আয়াশঃ মিষ্টি, মিষ্টি ওঠো ওহ গড কি করি এখন?? মিষ্টি ওপেন ইউআর আইস ড্যাম ইট। মিষ্টি ওঠো প্লিস আই সেইড ওপেন ইউআর আইস মিষ্টি..!!

আয়াশ কিছু একটা ভেবে। নাবিলা কে কোলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দেয়। নাবিলার গায়ের শাড়ি গায়েই শুকিয়ে গিয়েছে। আয়াশ তাড়াতাড়ি ফ্যান আর এসি অফ করে দেয়। এরপর সব জানালা খুলে দিয়ে। আবার নাবিলার কাছে গিয়ে বসে..!!

—–এই মেয়ে ওঠো ড্রামা করবে না। অনেক সহ্য করেছি ওঠো বলছি..!!

আয়াশ নাবিলা কে ইচ্ছেমতো ঝাকতে থাকে। কিছুক্ষণ পর নাবিলা জোড়ে শ্বাস নিয়ে। লাফ দিয়ে উঠে বসে আবার শুয়ে পড়ে। আয়াশ অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠে..!!

—–হোয়াট দ্যা হেল??

নাবিলা ভ্রু কুঁচকে তাকায়..!!

আয়াশঃ এসব নাটকের মানে কি হ্যা?? নাটক করছিলে তুমি তাইনা??

নাবিলা ছলছল চোখে আস্তে বলে..!!

—–এখন কি আমি মরে গেলেও তোমার নাটক মনে হবে??

আয়াশ স্তব্ধ হয়ে যায় আর কিছু বলতে পারেনা। মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলে..!!

—–এখন একটু টাইম দিলাম। রেস্ট করে নাও বিকেলে থেকে। সব কাজ তুমি একা করবে গট ইট??

বলে হনহন করে চলে যায়। নাবিলা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। এরপর চেহারাটা অসহায় করে বলে..!!

—–আমি কি করে কাজ করবো?? মাম্মি তো আমাকে কোনো কাজ শেখায়নি। পাপা ও তো কখনো কাজ করতে বলেনি। আর ভাইয়া তো পানিটুকুও কিচেন থেকে এনে খেতে দেয়নি। একমাএ আপু মাঝে মাঝে বলতো। বাট কাজ করাতো হয়নি কখনো। নাউ হোয়াট ক্যান আই ডু আল্লাহ??

নাবিলা একা একা বিরবির করছে। আয়াশ বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে এসেছে। আয়াশ কে আজ ক্যাম্পাসে দেখে সবাই অবাক হয়। গতকাল বিয়ে হয়েছে আর আজই চলে এসেছে। আয়াশের ফ্রেন্ড মোহিত বলে..!!

—–তুই এখন এখানে??

আয়াশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে..!!

—–ইয়েস ইটস মি আয়াশ হোয়াই??

মোহিতঃ গতকাল বিয়ে হলো আর আজ??

আয়াশ বিরক্তি নিয়ে বলে ওঠে..!!

—–সো হোয়াট মোহিত??

—–বেবী তুমি??

পাশ থেকে ক্যাম্পাসের ন্যাকা মেয়ে রায়া বলে..!!

আয়াশঃ ইয়েস বেবস তুমি খুশি হওনি??

রায়াঃ আই এম সো হ্যাপি..!!

বলে গিয়ে আয়াশ কে জড়িয়ে ধরে। সবার সামনেই গালে কিস করে। আয়াশ ও রায়া কে জড়িয়ে ধরে। কারন এখানে নাবিলার ফ্রেন্ড রুপ ও আছে। আর আয়াশ জানে রুপ এখন ঠিকই। এই সবটা নাবিলা কে জানাবে এটাই আয়াশ চায়। তাই আয়াশ ও রায়া কে জড়িয়ে ধরে। এসব দেখে রুপ রেগে নাবিলা কে ফোন করে..!!

নাবিলাঃ রুপ কেমন আছিস রে??

রুপঃ ভালই ছিলাম তোর হাসবেন্ড কে দেখে। আর ওর কার্যকলাপ দেখে মেজাজ গরম হয়ে গেলো..!!

নাবিলা ঘাবরে গিয়ে মনে মনে বলে..!!

—–তাহলে কি রুপ জেনে গেলো?? যে আয়াশ আমাকে মেরেছে। কিন্তুু ও কি করে জানলো??

রুপঃ তোর হাসবেন্ড এখানে এসে। রায়া নামের মেয়েটার সাথে ছিঃ..!!

আয়াশ পাশ থেকে মুচকি হাসছে..!!

আয়াশঃ এরজন্যই তো ফোন রেখে এসেছি। যাতে এই রুপ সবটা বলতে পারে। মেয়েরা নাকি হাসবেন্ডের ভাগ কাউকে দেয়না। ইস বেচারী আমার বউ সো স্যাড না??

বলে হাসতে হাসতে চলে আসে। এদিকে নাবিলা সবটা শুনে অনেক কষ্ট পায়। কান্না করতে থাকে কান্না করতে করতে বলে..!!

—–কেন এমন করছো আয়াশ?? কি করেছি আমি?? একবার সেটাতো বলো আমাকে। যদি না জেনে কোনো ভুল করে থাকি। আমি সেটা ঠিক করে নেবো কিন্তুু এমন করো না। আমার যে খুব কষ্ট হয় আয়াশ কেন বোঝোনা তুমি??

আয়াশ বাড়ি এসে নিজের আলাদা রুমে যায়। এরপর সেখানে দেখতে থাকে সবটা। নাবিলা যা যা করেছে এতক্ষণ যা যা বলেছে। সারা বাড়িতেই সিসি ক্যামেরা লাগানো। আর গার্ড রাখা বাড়ির চারপাশে পাহারা দেওয়া। আয়াশ নাবিলার কথা শুনে ল্যাপটপ ছুড়ে ফেলে দেয়। হাত মুঠ করে নেয় চোখগুলো রক্ত লাল করে ফোস ফোস করে বলে..!!

—–ভুল ঠিক করবি তুই?? আর তুই জানিস না তাইনা?? তোর জন্য আমি আমার ভাই কে হারিয়েছি। এখনো মাসুম সেজে রয়েছিস তুই। একবারও নিজের ভুলটা স্বীকার করছিস না। খুনী তুই তোকে তো আমি ছাড়বো না। তিলে তিলে মারবো তোকে..!!






এরপর আয়াশ একটা ছবির সামনে গিয়ে দাড়ায়। ছবিটাতে একটা ছেলে আছে। যার মুখে রয়েছে মিষ্টি হাসি। আর ছবিটাতে মালা দেয়া রয়েছে মানে ছেলেটা মৃত। আয়াশ ছবিটাতে হাত বুলিয়ে কান্না করতে করতে বললো..!!

—–তুই দেখতে পারছিস মিশান?? তুই না বলেছিলি আরসাল চৌধুরীর মেয়ে কে ক্ষমা না করতে?? আমি কিন্তুু ক্ষমা করিনি ভাই। রিভেন্জ নিচ্ছি আমি, ওকে আমি কষ্ট দিচ্ছি। যতটা কষ্ট দিনের পর দিন তোকে দিতো। আর তুই সহ্য করতে না পেরে আমাকে ছেড়ে চলে গেলি। ঠিক ততটা কষ্ট আমি ওকে দেবো মিশান প্রমিস..!!

বলে কান্নায় ভেঙে পড়লো আয়াশ। নিচে বসে পড়ে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বললো..!!

—–কেন চলে গেলি তুই?? আমার কথাটা একবারও ভাবলি না। তুই ছিলি সবচেয়ে বেশী আপন মিশান। তুই তোর ভাই কে ছেড়ে কেন গেলি?? একটা মেয়ের জন্য আমাকে ছেড়ে গেলি?? আমি কি করবো কেমন থাকবো ভাবলি না?? মিশান আমি ভাল নেই রে ভাই তোকে ছাড়া। যে তোকে কেড়ে নিয়েছে তার সব কেড়ে নেবো আমি..!!

আয়াশ উঠে রুম থেকে চলে গেলো। গিয়ে দেখলো নাবিলা বসে আছে। আয়াশ বাঁকা হাসি দিয়ে বললো..!!

—–আমরা ওই বাড়িতে যাবো রেডি হও..!!

নাবিলাঃ কোন বাড়ি??

আয়াশঃ ড্যাড আসছে তাই খাঁন প্যালেস যাবো..!!

নাবিলা খুশি হয়ে গেলো..!!

আয়াশ মনে মনে বললো..!!

—–খুশি হয়ে নাও বেইবি। বাট তোমাকে তো আমি সেটা না হয় দেখতেই পাবে..!!

নাবিলা গিয়ে একটা কালো শাড়ি পড়ে নিলো। সাথে ম্যাচিং জুয়েলারি চুলগুলো ব্রাশ করে নিলো। আয়াশ কালো একটা টি শার্ট পড়েছে। আর কালো জিন্স প্যান্ট। হাতে ব্রান্ডের কালো ঘড়ি চোখে সাইন গ্লাস। চুলগুলো জেইল দিয়ে সেট করা। আয়াশ রেডি হয়ে নাবিলা কে দেখে বাঁকা হাসলো। আর নাবিলা তো আয়াশ কে হা করে দেখছে। আয়াশ কে দারুন লাগছে। ফর্সা শরীরে কালো ড্রেস তার উপর মুখে খোচা দাড়ি। আয়াশ একটা রুমাল নিয়ে নাবিলা কে দিয়ে বললো..!!

—–মিষ্টি তুমিতো আর সাজোনি। তোমার মুখে ঘাম এটা দিয়ে মুখ মুছে নাও..!!

নাবিলা মিষ্টি শুনে অবাক হলো। ভাবলো আয়াশ হয়তো সব ভুলে গিয়েছে। যদিও ও জানেনা ও কি ভুল করেছে। তাই রুমালটা দিয়ে মুখটা মুছে নিলো। এরপর রুমালটা আয়াশ কে দিয়ে দিলো। এদিকে নাবিলার মাথা ঘুরছে হঠাৎ। দাড়িয়ে থাকার শক্তি পাচ্ছেনা। আয়াশ বনিতা করে বললো..!!

—–মিষ্টিপাখি কি হলো??

ওমনি নাবিলা মাথা ঘুরে পড়ে গেলো। আয়াশ নাবিলা কে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে। গাড়ি স্টার্ট দিলো আসলে আয়াশের উদ্দেশ্য। নাবিলা কে না জানানো যে ওরা কোথায় ছিলো। গাড়ি গিয়ে খাঁন প্যালেসে পৌছালো আয়াশ নাবিলা কে কোলে নিয়ে রুমে শোয়ালো। নাবিলার সেন্স আসার পর অনেক মিউজিক শুনতে পেলো..!!






নাবিলা উঠে বসে মাথা চেপে বললো..!!

—–এত লাউড মিউজিক কোথায় হচ্ছে??

খাট থেকে নেমে রুমের বাইরে এসে অবাক। ড্রয়িংরুম সাজানো নানান রকম লাইটিং। আর পার্টি হচ্ছে অনেক ছেলে মেয়েরা আছে..!!

নাবিলাঃ এসব কি হচ্ছে এখানে?? আর আয়াশ কোথায় গেলো??

নাবিলা নিচে নেমে গিয়ে চোখ ভরে গেলো। চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। কারন সামনেই আয়াশ রায়ার সাথে ডান্স করছে। শুধু ডান্স করছে বললে ভুল হবে। একদম চিপকে আছে আয়াশের একটা হাত রায়ার কোমরে। আর রায়াও আয়াশের ঠোটে হাত বুলাচ্ছে..!!

—–আয়াশশশশশশশ..!!

নাবিলার আর সহ্য হলোনা। আয়াশের নাম ধরে চিৎকার করলো। কিন্তুু এত মিউজিকে কিছুই শোনা গেলোনা। তাছাড়া নাবিলা সিরিতে আর ওরা দুরে আছে। নাবিলা গিয়ে আয়াশ কে থাপ্পর মেরে দিলো। থাপ্পর দিয়ে নিজেই ভয়তে কাঁপতে লাগলো। নাবিলা মনে মনে ভাবছে..!!

—–এটা কি করে ফেললাম?? আয়াশ তো আমাকে মেরেই ফেলবে এখন..!!

কিন্তুু নাবিলা কে অবাক করে দিয়ে। আয়াশ নাবিলা কে জড়িয়ে ধরে বললো..!!

—–এই না হলে আমার মিষ্টি। নিজের স্বামী কে কারো সাথে দেখতেই পারেনা। এন্ড এরজন্যই তোমাকে এত ভালবাসি আমি বেবী..!!

নাবিলাঃ আয়াশ কি বলছো??

আয়াশঃ চলো আমরা রুমে যাই। গাইস পার্টি শেষ বাড়ি যাও সবাই..!!

সবাই চলে গেলো আয়াশ নাবিলা কে নিয়ে। রুমে এসে বিছানায় বসিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। নাবিলা তো অনেক অবাক হলো। যে ও আয়াশ কে থাপ্পর মারলো সবার সামনে। আর আয়াশ ওকে কিছু বললোই না কিন্তুু কি করে সম্ভব?? ১ ঘন্টা পর আয়াশ রুমে এসেই হাসি দিলো। আয়াশ কে দেখে নাবিলার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো। কারন আয়াশের হাতে লোহার জলন্ত শিক। যা লাল হয়ে আছে বোঝা যাচ্ছে এটা পোড়ানো হয়েছে। নাবিলা বুঝে গেলো ১ঘন্টা আয়াশ কোথায় কি করেছে?? আর এত স্বাভাবিক কেন ছিলো?? নাবিলা থরথর করে কাঁপছে আয়াশ এগোচ্ছে। নাবিলা দৌড়ে এসে আয়াশের পা জড়িয়ে ধরে বললো..!!

—–আয়াশ আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি আর কখনো তোমার গায়ে হাত তুলবো না। আমাকে শাস্তি দিয়োনা ছেড়ে দাও প্লিস..!!

আয়াশ মুচকি হেসে বসে পড়লো। এরপর নাবিলা কে ছাড়িয়ে। কপালে চুমু দিয়ে বললো..!!

—–জান তুমি ভয় পাচ্ছো কেন?? এটা দিয়ে তেমন কিছু করবো না। শুধু তোমার সাহস কমিয়ে দেবো। তুমি যাতে আমাকে থাপ্পর তো থাক দুরে। আমাকে দেখলেই কেঁপে ওঠো সেই ব্যবস্থা করবো। এটা জাস্ট তোমার ওই ডান হাতে রাখবো..!!

নাবিলা ভয়ে উঠে দৌড় দিতে গেলো। আয়াশ টান দিয়ে বসিয়েই গরম শিকটা। নাবিলার ডান হাতে চেপে ধরলো। নাবিলা জোড়ে চিৎকার করলো। তবে আজও এই চিৎকার কেউ শুনলো না। শুনলে হয়তো বুঝতে পারতো কতটা কষ্ট এই চিৎকারে। আর যে শুনলো সে বুঝেও হাসছে কারন সে এটাই চায়। আয়াশ দাতে দাত চেপে বললো..!!

—–আমাকে থাপ্পর মারা তাইনা?? তাও সবার সামনে??

নাবিলার কানে কিছুই পৌছালো না। ততক্ষণে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। আয়াশ রুম কাঁপিয়ে হাসি দিয়ে বললো..!!

—–এখনি সেন্সলেস হলে হবে?? আরো একটা হাত যে আছে বেবী। বলা তো যায়না কোনদিন এই হাত দিয়ে থাপ্পর মারতে চাও। তাই এখনি কন্ট্রোল রাখা উচিত। আমিতো তোমার স্বামী এটা আমার রেসপন্সিবিলিটি বেবী। কামঅন উঠে যাও বেবস..!!

বলে নাবিলার মুখে পানি মারলো..!!
·
·
·
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here