# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ১৯
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
প্রথম ক্লাস শেষ করে রুমে বসে আছি।একটু পরে প্রিন্সিপাল স্যার আর ম্যাম ক্লাসে আসলেন। প্রিন্সিপাল স্যার যেন রুমে ঢুকে যা বললো তা শুনে তো আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানো মিস সামিয়া তোমাদের নতুন টিচার। দুই দিন হলো জয়েন করেছেন। নতুন হওয়ায় তাঁর বেশ কিছু সমস্যা হচ্ছে। এজন্য তিনি আমার কাছে এসে বলেছেন, তাঁর একটি এসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন। আর সেটা তিনি তোমাদের ক্লাস থেকেই নিতে চাচ্ছেন।
তাই আমি ঠিক করেছি সাহিদ হাসানকে তাঁর এসিস্ট্যান্ট করে দিবো।সাহিদ তোমার কোনো আপত্তি আছে কী?
প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে তো মন চাচ্ছে কলেজ ছেড়ে চলে যায়।ঠান্ডা মাথায় নরম কন্ঠে বললামঃ স্যার আপনি বারবার আমাকে কেন এসব কাজে জড়াচ্ছেন? আর আপনি তো জানেন আমি সবসময় ব্যস্ত থাকি। তারপরেও এসব কীভাবে করবো? আপনি অন্য কাউকে বলেন।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ দেখো সাহিদ তোমাকে আমি পছন্দ করি। আর তোমার প্রতি আমার যেই পরিমান বিশ্বাস আছে তা অন্য কারোর প্রতি নেই। তাছাড়া তোমার ম্যাম নিজে তোমাকে সিলেক্ট করেছেন।
আমিঃ স্যার তবু—-
আমাকে আর বলতে না দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যার বললেনঃ আর কোনো কথা নয়।আজ থেকে তুমি মিস সামিয়ার এসিস্ট্যান্ট। তুমি তার কাজে তাকে সহযোগিতা করবে।
এই কথা বলে প্রিন্সিপাল স্যার ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলেন। আমি আমার সিটে বসে ভাবতে লাগলাম, যার থেকে দুরে থাকার জন্য আজ এতো দূর, আজ তারই আবার এসিস্ট্যান্ট। সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি মুচকি হাসতেছে। তারমানে এটা তার টোপ।
হা হা হা সামিয়া তুমি যতই টোপ ব্যবহার করো না কেন, এই মাছ তোমার ছিপে ( বরশি) ধরা দিবে না (মনে মনে)। যাজ্ঞে ক্লাস নিতে লাগলো, আমিও পড়ায় মনোনিবেশ করলাম। হঠাৎ, শাকিব আমার পিছনে বসে থেকে আমার পিটে ঘুতাচ্ছে আর বলতেছেঃ মামা ট্রিট কখন দিবি?
আমিঃ কিসের ট্রিট দিবো?(অবাক হয়ে)
রিয়াদঃ বোঝনা তুমি কচি খোকা তাই না? সুন্দরী ম্যাডামের এসিস্ট্যান্ট হচ্ছো তাহলে তো আমাদের ট্রিট দিতেই হবে।
আমিঃ আমি দিতে পারবো না 😠😠😠।
শাকিবঃ পারবি না মানে?(একটু জোরে)
শাকিব একটু জোরে বলাই ম্যাম শাকিবের কথা শুনতে পেয়েছে। টেবিলের উপর বই রেখে আমাদের কাছে এসে বললোঃ এই কি হয়েছে এখানে এতো কথা হচ্ছে কেন?
রিয়াদঃ কিছু না ম্যাম। ,(ভয়ে ভয়ে)
ম্যামঃ কিছু না মানে? কি বলতেছিলে বলো?😡😡
রিয়াদঃ আসলে ম্যাম সাহিদ তো আপনার এসিস্ট্যান্ট হয়েছে তাই ওর থেকে ট্রিট চাচ্ছিলাম। কিন্তু সে দিতে চাচ্ছে না 😚😚(মন খারাপ করে)
সামিয়া মুচকি হেঁসে বললঃ ওওও এই ব্যাপার। তাহলে তোমরা ক্যান্টিনে এসো আমি তোমাদের ট্রিট দিবো।
সামিয়ার কথা শুনে ওরা সহ ক্লাসের কিছুটা অবাক হয়ে পড়লো।
সাহিদের বদলে ম্যাম ট্রিট দিবে? কেউ ভাবতেই পারতেছে না।
যাইহোক, কোনো রকম ক্লাস টা শেষ হয়ে গেল। সামিয়া রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আমার কাছে এসে বললোঃ এইযে মিস্টার সাহিদ হাসান ছুটির সময় আমার অফিস রুমে আসবে।
আমি আর কিছু বললাম না।কারণ, ওর সাথে কথা বলার ইচ্ছা আমার নেই। কলেজ শেষে আমি আমার মেয়েকে চকলেট দিয়ে গেলাম। আমার মেয়ে ওর আন্নির কাছে ছিলো। চকলেট দিয়ে এসে দেখি আমার বন্ধুরা একজনও আগের জায়গায় নেই। আমি বসে থেকে ফোন টিপাটিপি করতেছি।দশ মিনিট হওয়ার পরেও ওদের আসার কোনো নাম গন্ধ নেই।
একটু পরে ওরা তিনজন আসলো।
আমিঃ কীরে তোরা কোথায় গিয়েছিলি?
ইকবালঃ ভাবি ট্রিট দিতে চেয়েছিলো,সেটা খাইতে গিয়েছিলাম।
(ঢেঁকুর তুলতে তুলতে)
ইকবালের কথা শুনে চমকে উঠলাম।ভাবি মানে ? সব জেনে গেছে নাকি আর সামিয়া কী এদের সব বলেছে,,? এদের কে আগে জিজ্ঞাসা করি।
আমিঃ ভাবি মানে কার কথা বলতেছিস?
রিয়াদঃ আরে ভাই, ম্যাম যদি তোকে ভালোবাসে আর বিয়ে করে তাহলে তো আমাদের ভাবি হবেই।(পাশে বসতে বসতে)
আমিঃ ওও তাই বল,,,,, ( বাঁচলাম,নইলে এরা যদি জানে তাহলে আমাকে প্যঁচাবে)। ম্যাম আমাকে ভালোবাসতে যাবে কেন? আমিই ভালোবাসো কেন? আর কোনো দিন ভাবি বলবি না,,😡😡😡(রেগে)
ইকবালঃ আরে শালা ভালো না বাসলে তোর জন্য সে অন্য কাউকে খাওয়ানো? আবার সেটা তারই এসিস্ট্যান্টের ট্রিট হিসেবে,, হা হা হা।
আমি মনে মনে ভাবলাম, ইকবাল ও তো ঠিক বলেছে, তাহলে সামিয়া আমাকে ভালোবাসে কি?? না না কোনো মতেই আমি গলে যাবো না।
শাকিবঃ কিরে কী ভাবতেছিস?
আমিঃ কিছু না।
ইকবালঃ দোস তোকে ভাবি সরি ম্যাম যেতে বলেছিলো যে।
আমিঃ হুমম তোরা বাসায় যা আমি গেলাম ম্যামের রুমে।
অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গেলাম। দরজার কাছে যায়ে না করে বললামঃ মে আই কাম ইন,,,
সামিয়াঃ হুমম এসো। আর আমার রুমে আসতে তোমার অনুমতি লাগবে না বুঝেছো,,।
আমিঃ হা হা হা চরিত্রহীন ছেলে আমি আমার তো অনুমতি নিতেই হবে।
সাহিদের কথাটা যেন সামিয়ার বুকে বাঁধলো। তবুও নিরবে সহ্য করলো।কারণ, এর থেকে বেশি কষ্ট সাহিদ কে সে দিয়েছে।
আমিঃ বাই দ্যা ওয়ে ম্যাম আমাকে কি কাজ করতে হবে বলুন।
সামিয়াঃ তোমাকে কোনো কাজ করতে হবে না তুমি চেয়ারে বসো।
আমিঃ না না ম্যাম, আমি চরিত্রহীন ছেলে আপনার সাথে বসে থেকে আপনার কি ক্ষতি করি না করি তা বলা যাবে না।
সামিয়া অশ্রু ভেজা নয়নে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললোঃ প্লিজ সাহিদ আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমিঃ ছি ছি ম্যাম আপনি কেন আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন? সবাইকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি।
সামিয়াঃ তাহলে আমার সা,,,
হঠাৎ আমার মেয়ে সামিয়ার রুমে ঢুকে দৌড়ে সামিয়ার কাছে যায়ে বললোঃ মামনি মামনি থুমি তি কলতেথো?
আমার মেয়ের কথা শুনে আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম।বলে কি এই বাচ্চা মেয়ে 😲😲😲।
এতোক্ষণে মিমকে আমাকে লক্ষ্য করেনি। সামিয়ার কোলে ওঠে বসে সামনে তাকাতেই আমাকে দেখতে পেলো। আমাকে দেখতে পেয়ে সামিয়ার কোলে থেকে নেমে আমার কাছে আসলো।
আমি মিমকে কোলে তুলে নিতেই মিম বললোঃ দানো বাবাই আমাল মামনি আমালে এতো (হাত দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে) দুলো তকলেত দিয়েতে।
আমি আমার মেয়ের কথা শুনে কিছুটা খুশি হলাম সামিয়ার প্রতি আর বেশি রেগে গেলাম আমার নেহার প্রতি। কেনো সে আমার মেয়েকে অপরিচিত ব্যক্তির কাছে পাঠিয়েছে?
যদিও সামিয়া অপরিচিত নয় তবুও,,,।
আমি আমার মেয়ে ধমক দিয়ে বললামঃ কে বলেছে ইনি তোমার মামনি?
মিমঃ আন্নি বলেতে।
আমিঃ আন্নি বলেছে তাই তুমি বলবে? আর চকলেট নিয়েছো কেন?( ধমকের সুরে, জোরে)
আমার ধমক শুনে আমার মেয়ে কান্না করতে লাগলো।আমি তাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম।
সামিয়াঃ প্লিজ মিমকে তুমি কিছু বলো না। সে তো ছোট বাচ্চা যা বলার আমাকে বলো।
আমি আর কিছু না বলে মিমকে নিয়ে সামিয়ার রুম থেকে বের হয়ে নেহার কাছে গেলাম।
নেহার কাছে যায়ে নেহাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ নেহা তুই মিমকে কি বলেছিস?(রেগে)
নেহাঃ কি ভাইয়া আমি তো কিছু বলিনি,,।(ভয়ে ভয়ে)
আমিঃ কিছু বলিসনি তাহলে ইংলিশ ম্যাম কে মামনি বলে ডাকলো কেন?(প্রচন্ড রেগে)
আমার এমন আচরণ নেহা কোনো দিন দেখেনি। যারফলে আজকে নেহার চোখের কোণায় পানি এসে গেছে।
নেহাঃ আসলে ভাইয়া,,
আমি আর কিছু বলতে না দিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে ওদের দুজনকে নিয়ে ক্যান্টিনে আসলাম।কী করবো বর্তমানে ওরা দুজনেই আমার পৃথিবী। ওদের চোখের পানি আমার সহ্য হয়না।
যাইহোক, ক্যান্টিনে কিছু খাওয়ার পরে ওদেরকে নিয়ে বাসায় আসলাম। বাসায় এসে গোসল করে নামাজ পড়লাম। তিন জন একসাথে লাঞ্চ করতে বসলাম। বসতেই অফিসের এমডি সাহেব ফোন দিলো। আমি রিসিভ করতে এমডি সাহেব বললেন,,,
এমডিঃ আসসালামুয়ালাইকুম। স্যার আজকে একটু আপনাকে অফিসে আসতে হতো।
আমিঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। কেন কিছু হয়েছে নাকি?
এমডিঃ একটু সমস্যা হয়েছে আপনি আসলে ভালো হতো।
আমিঃ ঠিক আছে। কয়টায় যাবো?
এমডিঃ বিকেল চারটায়।
আমিঃ ঠিক আছে।
এমডিঃ ওকে স্যার। আসসালামুয়ালাইকুম।
আমিঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম।
ফোন রাখতেই আমার মেয়ে বললোঃ বাবাই কাল চাথে তথা বললে আমাল মামনিল চাথে?
হায় হায় আমার মেয়ে তো আমাকে পাগল বানিয়ে দেবে। অফিসের এমডির সাথে কথা বললাম।আর তিনি বলতেছেন তাঁর মামনির কথা। আল্লাহ আমার মেয়ের মাথায় মামনির ভূত ঢুকলো কোথা থেকে 😚😚!
আমিঃ না,, আম্মু অফিসের এমডির সঙ্গে।
মিমঃ ওওওও,,,(মন খারাপ করে)
নেহাঃ আচ্ছা আম্মু তোমার কী মামনি লাগবে?
মিমঃ হুমম আন্নি,,।
নেহাঃ তাহলে তোমার বাবাইকে বলো।
মিমঃ বাবাই আমাল একতা মামনি আনে তিবে।(করুন সুরে)
আমিঃ ঠিক আছে মামনি তোমার জন্য একটা মামনি আনবো। এখন আমার ভালো আম্মুর মতো খাও।
মিমঃ আততা। তিন্তু বাবাই আমাল মামনি যে আমি নিয়ে আনবো।
এটুকু মেয়ে বলে কি😲😲😲।আমিঃ তুমি কোথায় পাবে ।(অবাক হয়ে)
মিমঃ আদকে আমালে দে তকলেত দিয়েতে তোলে নিয়ে আদল তলেতে সেতাই আমাল মামনি।
মেয়ের কথা শুনে আমার গলায় ভাত আটকে গেল।নেহা আমাকে পানি এগিয়ে দিয়ে বললোঃ আহহ ভাইয়া এখন খাও। পরে নাহয় ভাবির কথা ভেবো।
আমিঃ তোর ভাবিকে কোথায় পাইলি?
নেহাঃ কে আবার, মিমের মামনি 😏😏😏।
আমিঃ পেকে গেছিস😡😡😡।
নেহাঃ দেখো ভাইয়া তোমার বয়স হয়ে যাচ্ছে, আবার মিমের তো একটা মামনির প্রয়োজন প্লাস আমার তো ভাবি তো লাগবেই। তাহলে। তুমি এমন করতেছো কেন। নিয়ে আসো না,,(করুন সুরে)
আমিঃ আমার কথা তোকে ভাবতে হবে না, তুই খা তাড়াতাড়ি।
নেহাঃ হুঁ,,(মন খারাপ করে)
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।মিম নেহার রুমে গেছে।
চারটায় অফিসে গেলাম। অফিসে যেই বিষয়ে সমস্যা হয়েছে সেটা সলভ করে দিয়ে সকল স্টাফের সাথে দেখা করে চলে আসলাম।
অপরদিকে সামিয়া ভাবতেছে, আজকে আমার কলিজাটা অনেক রেগে গিয়েছে।না জানি নেহাকে কী বললো।নেহাকে একটু ফোন দিয়ে দেখি। নেহাকে ফোন দিতেই নেহা রিসিভ করলো,,,,
নেহাঃ আসসালামুয়ালাইকুম। ম্যাম কেমন আছেন?
সামিয়াঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
নেহাঃ আলহামদুলিল্লাহ।
সামিয়াঃ তোমাকে কত বার বলবো তুমি আমাকে আপু বলে ডাকবে?
নেহাঃ ঠিক আছে আপু।
সামিয়াঃ আচ্ছা। তোমার ভাইয়া তোমাকে কিছু বলেছিলো কি?
নেহাঃ না কিছু বলেনি।
সামিয়াঃ ওহহ।তো আমার মেয়ে কি করতেছে?
নেহাঃ তোমার মেয়ে আমার সঙ্গে শুয়ে আছে। কথা বলবে কি?
সামিয়াঃ হুমম দাও,,,
মিমঃ আততালামুআলাইতুম,, মামনি তেমন আতো?
সামিয়াঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমার আম্মু টা কেমন আছে?
মিমঃ আমিও বালো আতি।
সামিয়াঃ আম্মু বাসায় যায়ে তোমার বাবাই তোমাকে বলেছিলো কী?
মিমঃ না মামনি। বাবাই তে তোমালে আনাল তথা বলেতি।
সামিয়াঃ কী বললে আম্মু বুঝতে পারিনি।
নেহাঃ তোমার কথা তোমার আম্মু তার বাবাই কে বলেছে সেটা বললো।
সামিয়াঃ কিহহ আমার আম্মু তো দেখছি বড় হয়ে গেছে।
মিমঃ হুমম মামনি,,
সামিয়াঃ আচ্ছা আম্মু পরে কথা হবে।
মিমঃ আততা মামনি।
সামিয়াঃ হুমম নেহা তোমার ভাইয়া তোমাকে কিছু বললে আমাকে বলবে।
নেহাঃ আচ্ছা।
সামিয়াঃ হুমম বাই,,,
সামিয়া নেহার সাথে কথা বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।কারণ, সামিয়া সাহিদের রাগ সম্পর্কে জানে।
_-_-_-_-
আমি অফিস থেকে বাসায় আসলাম। সন্ধ্যায় ছাদে গেলাম। ছাদে যায়ে দোলনায় বসতেই রাফি ফোন দিলো।
আমিঃ হুমম বল, কেমন আছিস?
রাফিঃ আলহামদুলিল্লাহ,, তুই কেমন আছিস?
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ।
রাফিঃ সাহিদ আজকে তোর বাবা আর ভাইয়া আমার বাসায় এসেছিলো।
আমিঃ কেন?(অবাক হয়ে)
রাফিঃ তুই কোথায় আছিস তা আমি জানি কিনা তাই।
আমিঃ হঠাৎ করে খোঁজ খবর নিচ্ছে?
রাফিঃ তোর বাবা, সামিয়া, তোর ভাই এক কথায় তোর পরিবার, সামিয়ার পরিবার আর রিপার পরিবারের সবাই সত্যটা জেনে গেছে। তুই যে নির্দোষ তা জেনে গেছে।
আমিঃ কিন্তু কীভাবে জানলো?
রাফিঃ গত কাল তোকে বললাম না যে, সামিয়া তোর বাসায় এসেছিলো।আসলে সামিয়া তোর সম্পর্কে জানতে এসেছিলো।আর এসেই তোর বাবা তাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। হাসপাতালে রিপা কে ভর্তি করানো আছে। আর সেখানে রিপা সবাইকে ডেকে সব সত্যি বলে দেয়।
আমিঃ ওহহহ। কিন্তু রিপার কী হয়েছে?
রাফিঃ ব্রেন টিউমার।
আমিঃ ওহহহ। আমার বাসার সবাই কেমন আছে?
রাফিঃ সবাই ভালো আছে কিন্তু তোর আম্মু তোর চিন্তা করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তুই চলে আয় ভাই।
আমিঃ তা সম্ভব নয়। আচ্ছা ভালো থাকিস।
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম। আম্মুর কথা প্রচুর মনে পড়তেছে।
রাফির কাছ থেকে এই খবর পেয়ে আমি যা খুশি হয়েছি তা বলে বোঝাতে পারবো না।কারণ, পরিবারের লোকদের কাছে এক মিথ্যা ষড়যন্ত্রের জন্য আমি ছিলাম পাপী। এখন তারা সত্যিটা জেনে ।
কিন্তু আম্মুর কথা ভেবে নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমিতো আর তাদের কাছে যাচ্ছি না।
পরেরদিন কলেজে গেলাম। মিমকে রেখে যেতে চাইলাম। কিন্তু সে আমার সাথে কলেজে যাবে সেটি কান্না। আমিও আর না করতে পারলাম না।
কলেজে পৌঁছে মিম সামিয়া কে দেখতে পেয়ে আমাকে বললোঃ
বাবাই মামনিল কাতে দাবো।
আমিঃ না যাওয়া হবে না।
ব্যস কান্না শুরু করে দিলো।আমি ওর কান্না দেখে যাওয়ার হুকুম দিলাম সাথে সাথেই কান্না অফ।
হা হা হা যাদু,,,,,
ক্লাসে ঢুকতে যাবো এমন সময় আমাদের ক্লাসের একটা মেয়ে আমার কাছে এসে একটা প্রশ্ন বুঝিয়ে নিতে চাইলো। আমি তাকে সাথে করে নিয়ে ক্যাম্পাসে একটা ফাঁকা জায়গায় বসে সেটা বুঝিয়ে দিতে লাগলাম। একটু দূরে লক্ষ্য করে দেখি সামিয়া আমার দিকে ভেজা চোখে তাকিয়ে আছে। মনে করতেছে আমি এই মেয়ের সাথে গল্প করতেছি।
আমিও সামিয়া কে রাগানোর জন্য মেয়েটির সাথে হেসে হেসে কথা বলতে লাগলাম।
সামিয়া সেটা সহ্য করতে না পেরে সেখান থেকে উঠে চলে গেল।
আমিও ক্লাসে গেলাম। সামিয়ার ক্লাসে সামিয়া বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। ছুটির আগে সামিয়ার রুমে গেলাম।
রুমে যায়ে বসতেই সামিয়া আমার পায়ের কাছে এসে পা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললোঃ প্লিজ সাহিদ আমাকে এভাবে ইগনোর আরো না। আমি আর পারছি। বলতেছি আমার। ভুল হয়েছিল কিন্তু আমাকে কি মাফ করা যায় না,(কান্না করতে করতে)
আমিঃ কি করতেছেন পা ছাড়ুন।
সামিয়াঃ না ছাড়বো না,। তুমি আমাকে মেনে না নিলে আমি পা ছাড়বো না।
আমিঃ দেখুন আপনি যদি আমার পা না ছাড়েন। তাহলে আমি এখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হবো।
সামিয়াঃ না না, তোমাকে যেতে হবে না তুমি থাক।
আমি চেয়ারে বসলাম আর সামিয়া আমার সামনের চেয়ারে বসলো। আমার কোনো কাজ নেই শুধু বসে থাকা ছাড়া। মাঝে মাঝে সামিয়া আমাকে কিছু প্রশ্ন করতে দেয় আর আমি সেগুলো করি।
এভাবে অতিবাহিত হলো এক সপ্তাহ।আর এই এক সপ্তাহে সামিয়া আমার কাছ থেকে অনেক বার ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু আমি ক্ষমা করিনি।প্রতিবারই তার বলা কথা গুলো দ্বারা তাকেই আপমাণ করেছি। সেগুলো সে মুখ বুজে সহ্য করেছে।
হয়তোবা এখন সে আমার ভালোবাসার মর্মটা বুঝতে পেরেছো।
আর এক সপ্তাহে সামিয়ার সাথে মিমের সম্পর্কটা গভীর হয়েগেছে। মনে হবে যে তাদের সম্পর্ক টা মা এবং মেয়ের।
আজকে কলেজে গেলাম, আমি নেহা আর মিম তিন জন মিলে। মিমকে না নিয়ে গেলে আমার অস্তিত্ব রাখবে না সে।
ক্লাস শুরুর সময় নূটিশ দিল যে, প্রিন্সিপাল স্যার সকল ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের হল রুমে উপস্থিত হতে বলেছেন।
ছুটির সময় সবাই হল ররুমে গেলাম। এরপরে প্রিন্সিপাল স্যার বললেনঃ প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আমি তোমাদের একটা খুশির কথা বলবো।আর তা হলো এই কলেজ থেকে,,,
(চলবে)
💝💝কেমন হচ্ছে তা কমেন্ট করে জানাবেন।