Accounting_Teacher(Season2) Part_5,6

Accounting_Teacher(Season2)
Part_5,6
Written_by_Ritu_Rosni
Part 5

স্যাাাাাররররর আাাাাপনিিিি?ককককখখননম এলেন?আর এখানেে কি করছেন?
এ বাল তোদের এখানে আসতে বলছিল কিডা?আর আসছিস যখন ভালো কথা মুখ টা বন্ধ রাখতে পারিস না কোনো সময়?আসছে আমায় উদ্ধার করতে।হাতে হারিকেন আর পেছনে বাঁশ।মনে মনে ওদের বকা দিচ্ছে ঋতু।
শুভ্র ঋতুকে খুজতে এসে ওদের সব কথোপকথন শুনে ফেলে।
শুভ্রের ভয়ংকর আর রাগী চেহারা দেখে তো ওরা শেষ।কথা বলার সময় খেয়ালই করেনি যে শুভ্র ওদের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে।ওদেরই বা কি দোষ,ওরা কি আর জানতো যে শুভ্র ওদের ফলো করে লাইব্রেরীতেই চলে আসবে।ঋতু না বললে বুঝতেই পারতো না শুভ্র ওদের পেছনে এসে দাড়িয়ে আছে।
নইলে হয়তো এফএম রেডিও এর মতো নন স্টপ বকবক করেই যেতো।
.
ওদের ভুলের জন্য এখন বেচারি ঋতুকে খেসারত দিতে হবে।না জানি এই ল্যামপোস্ট টা কি পানিশমেন্ট দেয়।
আস্তে আস্তে রুমের বাইরে যাওয়ার সময়,,,
–আপনি কোথায় যাচ্ছেন?খপ করে ঋতুর হাত ধরে ফেলে।
–স্যাররর বাসায় যাবো।ওরা সবাই চলে যাচ্ছে প্লিজজ যেতে দিন আমায়।
–বাসায় যাবে তাই না?দাঁতে দাঁত চেপে,সেদিন আমার গাড়ির টায়ারে সূচ দিয়ে খোচায়ে ফুটা করে দিছিলো কে?
–কিিি কিিি বলছেন স্যাাররর গাড়ি আর টায়ার ফুটো
–কেনো?মনে হচ্ছে কথাটা আজ নতুন শুনছো?
–স্যার প্লিজজ যেতে দিন আমায়।নিচে আমার ফ্রেন্ডস রা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
শুভ্র সামনে আগাচ্ছে আর ঋতু ভয়ে পেছাতে পেছাতে দেয়ালের সাথে ঠেকে যাচ্ছে।
—বাসায় যাবে?তো আটকে রেখেছে কে?যাও না চলে যাও
–এভাবে ষাড়ের মতো সামনে এসে গুতো দিলে যাবো কিভাবে আমি
–এই মনে মনে গালি দেয়া বন্ধ করো।যাবে নিশ্চয়ই বাসায় যাবে তবে আর আগে আমার প্রশ্নেরর উত্তর দিয়ে যাও।
–কিিি প্রশ্নেরর উত্তর?
–আরে এতো তোতলামি করছো কেনো?তুমি কি তোঁতলা?
আমার গাড়ির চাঁকা ফুটো করছে কে?
–শুভ্রকে ধাক্কা দিয়ে, আমার গাড়ির চাঁকা ফুটো করছে কে,করছে কে?মুখ ভেংচি করে।
আরে জানেনই যখন আমি করছি তখন এতো জেরা করার কি আছে?হিরোগিরী দেখান?
–ইউউ ইডিয়ট
–হু,বলেন বলেন।ইডিয়ট,গম্ভার্ট,মাথামোটা, ব্ল্যা ব্ল্যা
এইরেেে বেশি বলে ফেলেছি। রাক্ষস টা যেভাবে তেড়ে আসছে,ভাগ ঋতু ভাগ।বাচঁতে চাইলে ভাগ।দিলাম চোখ বন্ধ করে ভৌ দৌড়।এক দৌড়ে ৩য় তলা থেকে মেইন গেটে চলে আসছি।এত জোরে হুসাইন বোল্ডেরর মতো দৌড় দেয়ার কারণে হাপাচ্ছি,,
–কিরে দোস্ত, কেমন পানিশমেন্ট দিলো?(পুতুল)
–শালা চুড়েল,বজ্জাতের কিমা,নেংটি ইদুঁর,লুচু কোম্পানি, কান খেরু কুনহানকার,ল্যাফটেনেন্ট খুঁটি,মোটা আলু,ভুঁই কুমড়ার দল।সব তোদের জন্য হয়েছে।কে বলছিল তোদের আমার পিছু গিয়ে লেকচার দিতে?একটু হলেই তো জল্লাদের বংশটা আমায় খপাৎ করে ধরে কপাৎ করে গিলে খাচ্ছিল।
–বেশ হচ্ছিল।শালা তারছিঁরা লাগতে যাস কেনো স্যারের সাথে?নিজেও মরবি শালা আর সাথে আমাদের ও মারবি।(আশিক)
–তোদের কে বলেছিল আমার সাথে থাকতে?যা না,ধরে রাখছে কে?আজাইরা সব,ধুররর বাল থাক তুরা।
আমার সাথে আর কথা বলতে আসবি কেউ।তাইলে ভালো থাকবি।
.
রাগ দেখিয়ে বাসায় চলে গেলো ঋতু।অবশ্য আজ এটা ওদের কাছে নতুন না।প্রতিদিনই এমন হয়।
নিজেই রাগ করবে,আবার নিজেই এসে সরি বলবে।একটু বদমেজাজি তবে মনটা ভীষণ ভালো।
হুমায়ুন স্যারের একটা কথা ছিল এমন টা;ভালো মানুষদের রাগ বেশি।যারা মিচকা শয়তান তারা কখনো রাগে না।পাছায় লাথি মারলেও লাথি খেয়ে হাসে।ওর ক্ষেত্রে ও তাই।একটু রাগি এই আরকি।তবে বন্ধুদের সাথে রাগ করে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না।
মাঝে মাঝে অদ্ভুদ ধরণের সব কান্ড করে বসে।যার না হাসলেও হয়না।একদম সহজ,সরল, সাঁদামাটা তবে ভীষণ ভালোবাসতে জানে।
এই যে এখন রাগ করে চলে গেলো।রাত্রে আবার নিজে থেকেই কল দিয়ে কথা বলবে।যেনো কিছুই হয়নি।
,
ক্লাসে রাগ করছি বলে দেখতে গেলাম মন খারাপ করে কোথায় গেলো পাগলি টা।কোথাও খুজে পাচ্ছিলাম না।শেষমেশ খুজে না পেয়ে লাইব্রেরিতে গেলাম।পেয়েও গেলাম তবে যা শুনলাম সেখানে গিয়ে তাতে তো আমার মনে হচ্ছিল তুলে ৪ তলার উপর থেকে আছাড় দেই।কত্তবড় বেয়াদব।বেয়াদবির একটা লিমিট আছে।কিছু বললেই তো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে বাচ্চাদের মতো কাঁদবে।অনার্সের পড়া একটা স্টুডেন্ট কি এখনো বাচ্চাই আছে?কাজ কর্মে সব সময় বাচ্চামির স্বভাব।
এভাবে চলতে থাকলে ওর পড়াশুনার ক্ষতি হবে।আন্টিকে আজই জানাতে হবে।
,
খাওয়ার টেবিলে,,,
–ঋতু আমি কি শুনছি এসব?
–আম্মা তুমি বা কি শুনছো আর আমি তোমাকে কি বলবো বলোতো?
–শুভ্র আমায় তোমার নামে কমপ্লেইন করছে।তুই নাকি ভার্সিটিতে পড়াশুনা করিস না। উল্টা বেয়াদবি করে বেড়াচ্ছিস।
সেদিন নাকি শুভ্রের গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিছিস।
–কিহহহহ!!ঐ ধলা চিকার এত্তবড় সাহস আমার নামে বিচার দেয়।সেদিন তো শুধু ওর গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিছি,
সুযোগ পেলে এবার ওর হাওয়া ছেড়ে দিবো।আমায় চিনো না বাচ্চু।তোমার লাইফের নাট বল্টু খুলে দিবো কিচ্ছু টের পাবানা😂😂
—ঋতুউউহহহ,তুই ভালো হবি কবে?তুই জানিস না তোর সামনে টেস্ট পরিক্ষা ১ম বর্ষের।ভার্সিটি কতৃপক্ষের নির্দেশ যারা টেস্টে অকৃতকার্য হবে তাদের কোনো ভাবেই ফাইনালে এলাউ করা হবে না।
—হু,জানি তো।
-জানিস?জানিস যখন পড়াশুনার প্রতি সিরিয়াস হস না কেন?
–আম্মা আমি তো ভীষণ সিরিয়াস পড়াশুনার প্রতি।
–ওহ রিয়েলি?তুই যখন পড়াশুনার প্রতি এতই সিরিয়াস।তখন আগামীকাল থেকে শুভ্রর বাসায় গিয়ে পড়ে আসবি।আমি জানি একমাত্র শুভ্রই তোকে জাতে তুলতে পারবে।
–কি বলছো আম্মা??😱প্রাইভেট পড়বো আমি?তাও আবার ঐ ল্যামডা ডাইনোসর টার কাছে?দেশে কি প্রাইভেট টিউটরের এতই আহাল পড়ছে?যে আমায় ঐ ইটালিয়ান ধলা চিকার কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে।ইয়াম পসিবল মাম্মা।
নো নেহি,কাভি নেহি।
–আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা।এতদিন যা বলেছিস সব শুনেছি। আদর দিয়ে যখন মাথায় তুলেছি তখন মাথা থেকে নামাতে ও পারবো।আমি তোকে আস্ক করিনি যে পড়বি না ক পড়বি বলবি।আমি তোকে অর্ডার করছি সো ইউ উইল ডু।
আই হোপ।
–না আম্মা,তুমি এমনটা করতে পারো না।তুমি জেনেশুনে তোমার মেয়েকে ঐ রাক্ষসের ডেরায় ভরে দিতে পারো না।মাগোোোো আমি তোর পায়ে পরি।তুই তোর এই নাদান মাসুম বাচ্চা টাকে এমন সাঁজা দিতে পারিস না।
–আমি কি পারবো কি পারবো না সেটা তোমার থেকে শিখতে হবে না।তুমি ভালো করেই জানো আমি একবার যা বলি তাই করি।
যাও ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।ফার্দার যদি কোনো নিউ ড্রামা স্টার্ট করো তো কোনো রিক্সাওয়ালার সাথে ধরে বিয়ে দিয়ে দিবো তখন আমায় কিছু বলতে পারবা না।
–আল্লাহ গোোো তুমি কোথায়??তুইল্লা লও না ক্যা মোরে।আমার নিজের মা ও আজ আমার বিরোধী তা করছে।শত্রুপক্ষের সাথে মির্জাফরের মতো হাত মিলিয়েছে।ঘষেটি বেগম কুনহানকার।নিজের মেয়েকে বাঘের থুক্কু বিটকেলের হাতে তুলে দেয়,আদৌ আমার আপন মা তো?
–এনি ডাউট?ডাউট হলে ডিএনএ টেস্ট করতে পারো।
.
–আইলা😱এরা সবাই কি মনের কথা শুনতে পারে এনাকন্ডার মতো?মনে হয় ঐ বিট্রিশ ল্যাম্পপোস্ট থুক্কু ধলা চিকার কাছে প্রতিদিন ট্রেনিং নিচ্ছে।
বুঝে গেছি,আর এই বাড়িতে আমার কোনো রাজত্ব নাই।নিজের মাথার চুল নিজেই ছিড়তে ইচ্ছা করছে।
ঐ নেংটি ইদুঁর টা যদি আমায় হাতের নাগালে পায় তো কুপিয়ে কিমা বানিয়ে খাবে।
রাত্রের বেলা ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি ডেভিল টিচার থুক্কু জল্লাদের বংশ থুক্কু আংকেলের ছেলে আমায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।টমেটোর সচ রেডিই আছে।শুধু খপ করে ধরে সপাং করে ফুটন্ত গরম তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে কাবাব করে খাবে।
আল্লাহ রাতের স্বপ্ন টা যেনো কোনোদিনও সত্যি না হয়।
শুনেছি ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয় কিন্তু আমি তো দেখেছি মধ্যরাতে।😂
,
ভদ্র মেয়ের মতো মায়ের কথামত রাক্ষসপুরি থুক্কু স্যারের বাড়িতে রওনা দিলাম।এর আগেও আব্বু আম্মুর সাথে অনেকবার এখানে এসেছি।তাই চিনতে অসুবিধা হলো না।কলিংবেল দেয়ার সাথে সাথেই স্যারের মা দরজা খুলে দিলো।
মনে হয় দরজার পাশেই দাড়িয়ে ছিল।
–আরে ঋতু কেমন আছিস?
–ভালোই ছিলাম সোনা মা।তবে এখন আর থাকবো না মনে হয়।
–কি যা তা বলছিস এসব?আয় ভেতরে আয়।
–ঋতুপু কেমন আছো?(শোভা)
–এই আছি,তুই?
–ভালো আর থাকি কই বইন?এই দেখছো না কত্তগুলো পড়া দিয়ে রাখছে।এসব কম্পিলিট না হলে আমার লান্চ বন্ধ।এদিকে ক্ষিদেয় আমার পেটে ছুঁচোবাবাজী গুঁতোগুঁতি করছে।
–কে করছে এসব?😱সোনা মা?
–নারে বইন।আমার যমরাজ ভাই ছাড়া আর কে।
–অ্যাঁ বলিস কি.?
–অ্যাঁ নয় গো হ্যাঁ।তা তোমার কি অবস্থা?
–আমারো তোর মতোই অবস্থা।চল দুই বোন মিলে কচু গাছের সাথে ফাঁসিতে লটকায় পড়ি।
,
প্রথম দিনের জন্য হয়তো অল্প পড়া দিছে।এসব কম্পিলিট করতেই তো নয়দিন লাগবে আমার।😰
বাসায় গিয়ে দেখলাম অভি ভাইয়া এসেছে।
–আরে অভি ভাইয়া যে,কতদিন পরে এলে?পথ ভুলে রং রোডে চলে আসোনি তো আবার?😂
–আসলো বান্দরনি।
–তা কেমন আছো বলো?
–আমি তো ভালই আছি।তোর কি খবর বল?
–আমার আর ভালো থাকা।
-কেন রে বুড়ি তোর আবার কি হলো?
–জেনেশুনে নিজের মা যদি নিজের পেটের সন্তানকে বাঘের খাচাঁয় রেখে আসে।তাহলে কি ভালো থাকা যায়?যায় না তোহ।
–কি বলিস এসব?
–কিনু😱আমি তো বাংলাতেই বললাম।না বুঝলে মুড়ি খাও
–তাই না শয়তান।
–হ।অভি ভাইয়া তুমি ৫ মিনিট বসো আমি ১৫ মিনিটে আইতাছি।
–যাহ ফাজিল একটা।তাড়াতাড়ি আয়।
,
কিরে রসুন তুই কি কখনো বড় হবি না?
–ভাইয়া প্লিজজ ডোন্ট কল মি রসুন।মাই নেম ইজ রশনি।ঋতু রশনি😎
–ওলে আমাল ঋতু রশনি লে
.
#Accounting_Teacher
#__Part__6
#Written_by_Ritu_Rosni
.
.
কিরে রসুন তুই কি কখনো বড় হবি না?
–ভাইয়া প্লিজজ ডোন্ট কল মি রসুন।মাই নেম ইজ রশনি।ঋতু রশনি😎
–ওলে আমাল ঋতু রশনি লে
.
অভি ভাইয়ার সাথে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিলাম।ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় রাত ২ টা বেজে গেলো।কতক্ষণ ঘুমিয়েছি তা জানিনা।বর্ষার ঐতিহাসিক চিল্লানীতে আমার সাধের ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।কোথায় স্বপ্নে দেখছিলাম আমার ক্রাশ শেখ সাদির সাথে আমি বসুন্ধরায় বসে বসে রোমাঞ্চ করছি আর হেতি দিলো আমার স্বপ্নের তেরোটা বাজিয়ে।মনডায় চায় কুইট্টালায়।ঐ হাল্ফ টিকেটের বাচ্চু,ট্যাম্পু গ্যারেজ সকাল সকাল দিলি তো আমার সাধের ঘুমটা ভেঙ্গে।কি হয়েছে কি ষাঁড়েরর মতো থুক্কু ইন্ডিয়ান রাম ছাগির মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছিস কেনো?বাড়িতে ডাকাত ঢুকে কি তোরে কিস করছে নাকি?
ইয়াককককক!!ডাকাত দের খায়ে দায়ে কোনো কাম নাই তোহ তোর মতো ডাইনিরে কিস করবো।
,
তুমি কি পাগল?পুরাই একটা মেন্টাল।আমার মনে হয় তোমার মানসিক প্রবলেম আছে খাড়াও আম্মারে বলে তোমার জন্য ডাঃ মোহাম্মদ আলীর কাছে সিরিয়াল দিয়ে আসি।কি রকম পাগলের মতো অদ্ভুূদ অদ্ভুদ কথা বলো।মানুষজন শুনলে তো তাই ভাববে।
–তুই পাগল,তোর বাপ পাগল,তোর চৌদ্দ গোষ্ঠী পাগল।
–এই দেখো রাগলে তুমি হিতাহিত জ্ঞান বুদ্ধি হারিয়ে ফেলো।
আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী পাগল হলে তুমি কি?তুমিও তাদের মধ্যে একজন।
ফালতু প্যাঁচাল পারতে চাইছি না তোমার সাথে।কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি আমি তোমায়। আর তুমি গন্ডারের মতো নাক ডেকে ঘুমিয়েই যাচ্ছ।
—ঐ ট্যাম্পু গ্যারেজ মুখ সামলে কথা বল।আমি না তুই নাক ডাকিস,তোর বাপ থুক্কু তোর বর ডাকে।গরুর মতো ঘ্য ঘ্য করে।
–আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।আমি মেনে নিলাম।এবার দয়া করে একটু ঘড়ির দিকে তাকান তো।দেখুন কয়টা বাজে।
–কয়টা আর বাজবেেেে😱একিরে আপু সাত রা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট বাজতে চললো আর তুই কিনা এখন আমায় ডাক দিচ্ছিস?
সাত টা থেকে এনাকন্ডার কাছে পড়া আছে আর আমি কিনা এতো দেরিতে ঘুম থেকে উঠছি।টাইমলি যেতে না পারলে পানিশমেন্ট দিবে তার জন্য।আমি এত ভুল করি কেমনে কে জানে।তাড়াহুড়ো করে ১৫ মিনিটে রেডি হয়ে কোনো রকমে স্যারের সামনে হাজির হলাম।১ ঘন্টা লেট করে এসেছি আমি।
,
সময়মত না আসার জন্য কান ধরে এক পায়ে ভর করে দাড়িয়ে রেখেছে ধলা চিকা টা।আল্লাহ এই ডাইনোসর টার মনে একটু দয়া দাও।
–হোম ওয়ার্ক দেখাও
–কিিি বলছেন স্যার?হোম ওয়ার্ক ছিল কি?
অভির সাথে গল্প করতে করতে শুভ্রের দেয়া হোম ওয়ার্কের কথা মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল একদম।
–ননসেন্স। কোনে কাজ হবে না তোমার দ্বারা।একটা কাজ ও যদি ঠিকমতো করতে পারে।কবে যে বুদ্ধি সুদ্ধি হবে কে জানে।কেয়ার লেস একটা যার দুদিন পরে এক্সাম সে কি না আরামে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হয়েছে আর কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে হবে না।বসো আর এই প্রবলেম গুলো সল্ভ করে দিয়ে যাচ্ছি আমি তুমি করতে থাকো।বুঝতে না পারলে নিচে আন্ডারলাইন করে রাখবে।
আর যতক্ষণ না তোমার ম্যাথ করা সম্পূর্ণ কমপ্লিট হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি এখান থেকে এ পা ও নড়তে পারবে না।আমি বাইরে থেকে দরজা লকড করে রেখে যাচ্ছি।লকড করার কথাটা মিথ্যে বলে গেলাম।জানি ইডিয়েট টা আর দরজার সামনে গিয়ে পরখ করে দেখবে না দরজা টা আদৌ লক আছে নাকি।
,
ডেভিল টা ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো।এমন অবিচার আমার সাথে উপরওয়ালা ও সইবে না জানি।পরেছ যখন মোল্লার হাতে একসাথে তো তোমায় খানা খেতেই হবে।
৪র্থ বর্ষের ফাইনাল এক্সামের কারণে আমাদের ক্লাস অফ রাখছে।
,
পরিক্ষার কারণে ক্লাস নাই আজ আমার।গার্ডে ডিউটির জন্য আমার কোনো চাপ নেই।আর আমায় বলেও না কখনো কেউ কেনো জানি না।
টিচার্স রুমে ভার্সিটির ট্যুর নিয়ে আলোচনা বৈঠক চলছে।ব্যবস্থাপণা আর হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ মিলে ১ দিনের ট্যুরে নাটোরের লালপুর গ্রীণ ভ্যালি পার্কে যাবে মেবি এমনটাই তো শোনা গেলো।ক্লাস অফ থাকায় এখনো স্টুডেন্টদের মাঝে এনাউন্স করা হয়নি।শুধু দুই ডিপার্টমেন্ট এর টিচার্স রাই পূর্ব প্ল্যানিং করছে আরকি।
পুরো ভার্সিটির টিচার্সদের মাঝে আমিই একমাত্র শিশু।এ জন্য সবাই আমায় অনেক স্নেহ করে।আর ভার্সিটির বেয়াদব মেয়েগুলো তো আমায় জ্বালিয়ে মারে।
আমার শিক্ষকতার বয়স সবে দুই মাস হতে চললো।শখের বসে এই পেশায় জয়েন করা তবে সেটা সীমিত সময়ের জন্য।
এটা আমি আমার ইনকামের জন্য করিনা।কারণ টা নাহয় অন্য কোনো একদিন জানাবো।
১ম বর্ষের হিসাব বিজ্ঞানের ১ টা সাবজেক্টস ছাড়া অন্য ক্লাস নেই আমার।সিগনেচার টা করে বাসায় চলে এলাম।
,
এর আগে অনেক ট্যুরে গেছি তবে সেটা ফ্যামিলি ট্যুরে।একা একা কখনো যাইনি।ফ্যামিলির সাথে যাওয়ার এক মজা আর ফ্রেন্ডের সাথে যাওয়ার আরেক মজা।কিন্তু আমার মা জননী কে কে বোঝায়?একা কিছুতেই ছাড়বে না।আমিও নাছোড়বান্দা যাবোই।শেষমেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তবে সে দেয়ার থেকে না দেয়াই ভালো।ঐ কান খেরু,ধলা চিকার সাথে কথা বলে পার্মিশন দিয়েছে।আসার আগে হাজার টা জ্ঞানমূলক বাণী বলে দিয়েছে।সব সময় যেনো তাদের গুনধর শুভ্রের সাথে থাকি।সব সময় যেনো তার কথা মতো চলি।আরে আমি কি ছোট বাচ্চা নাকি।

অনার্সে পড়ি।আজ বিয়ে দিলে কাল দুই পোলার মা হমু আর এখনো আমায় এতো নজরদারী করে।ভাল্লাগে না আমার এসব।বাস জার্নি করতে আমার বেশ ভালোই লাগে।তবে জানালার পাশের সীট না হলে কি আর বাস জার্নির মজা থাকে?সারা রাস্তা প্রকৃতি বিলাশ করতে করতে যাবো কত্ত প্ল্যান করে রেখেছি।পুরো রাস্তা ফ্রেন্ডসদের সাথে এনজয় করতে করতে যাবো। সব প্ল্যানে পানি ঢেলে দিলো ঐ ডাইনোসর টা।বডি গার্ডের মতো চিপকে বসে আছে আমার সাথে।বাসে ওঠার আগেই বমি বন্ধের ঔষুধ খাইয়ে দিছে।
আমার অবশ্য এমন রেকর্ড নাই তারপরেও বলা তো আর যায় না কখন কি হয়।জানালার পাশের সীট টা আমায় দিয়ে উনি আমার পাশের সীটে বসে আছে।
এত্ত কেয়ারে আমার খুশিতে কান্না পাচ্ছে।ট্যুরে যাচ্ছি কোথায় একটু আমোদ প্রমোদ করবো তা না কুচকি মুরগির মতো বসে থাকো।
,
সেন্টার ফ্রুট চিবোচ্ছি আর কানে হেডফোন ঢুকিয়ে নিউজ ফিড স্ক্রল করছিলাম। এছাড়া আর কি করবো?আমার সব ফ্রেন্ডস রা কত্ত মজা করছে আর আমি😰ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আমার।
পাবনা শহর থেকে লালপুরের দূরত্ব বেশি না।ঘন্টা দুয়েক লাগে।(প্রায়)
গন্তব্যের কাছাকাছি আসতেই আমার সামনের সারি তে কে যেনো গরগর করে বমি করে দিলো।তা দেখো আমার কেমন যেনো গা গুলিয়ে যাচ্ছিল।বেহুশ হয়ে বমি করে দিলাম স্যারের গায়ের উপর।এটা একটা খুব খারাপ জিনিস।গাড়িতে উঠার আগে স্যার অনেকবার নিষেধ করছিল ভাজা পোড়া খেতে।কে শুনে কার কথা।চিপস আর চানাচুর সামনে থাকলে আমার হুশ থাকে না।
গাড়ি থামিয়ে আগে আমায় কুলি করিয়ে দিলো।আমার মুখ হাত পরিষ্কার করে দিলো নিজ হাতে।অন্য সময় হলে রাগ করতো কিন্তু এখন একবারো টু শব্দ টাও করলো না।
তারপরে নিজেও ফ্রেশ হয়ে পরনের পোশাক টা বদলে নিলো।
,
কিছুক্ষণ পরেই আমরা আমাদের গ্রীণ ভ্যালিতে পৌঁছালাম। নাটোর রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন,সিংড়া চলনবিল,লালপুরের লাল সাগর,নাটোর শিশু পার্ক,সাহারা প্লাজা শিশু পার্ক,
বনলতা সেন, রানী ভবানী,মিনি কক্সবাজার পাটুল আর কাচাগোল্লার জন্য আগে থেকেই দেশবাসীর কাছে বিখ্যাত হয়ে আছে নাটোর। এবার নাটোরকে আরো এক ধাপ রাঙিয়ে তুলতে দেশের বিপুল সংখ্যক বিনোদনপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের মনের খোরাক মেটাতে নাটোরের লালপুরে তৈরি হয়েছে গ্রীনভ্যালী পার্ক। উদ্বোধনের আগেই যা দর্শনার্থী ও বিনোদন প্রেমীদের নজরে এসেছে।
নান্দনিক সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ এই পার্ক…মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।দেখলেই পরাণ টা জুরে যায়।
আশা করি এই পার্কের সৌন্দর্য আপনাদের ও মুগ্ধ করবে আমাদের মতো।
অনেক মজা করেছি তবে সব সময় ছায়ার মতো শুভ্র স্যার আমায় আগলে রেখেছেন।হয়তো মাকে দেয়া কথা রাখতেই।
,
বাসায় রওনা হওয়ার আগেই স্যারের ফোনে একটা কল আসলো।জানিনা কল টা কার ছিল।তারপর থেকেই কেনো জানি উনার মুখ টা আমাবস্যার মতো কালো হয়ে গেলো।
টিচার্সদের সাথে কথা বলে আমাকে নিয়ে রওনা হলেন পাবনার উদ্দেশ্যে।আমি নিরব দর্শকের মতো ছাড়ের পিছু পিছু দৌড়াচ্ছি।কারণ আমার হাতটা শক্ত করে স্যারের হাতের মুঠোয় বন্দি।যেনো ছেড়ে দিলেই আমি ছুটে পালাবো।

To be Continue…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here