Accounting_Teacher(Season2) Part-13,14

Accounting_Teacher(Season2)
Part-13,14
Written_by_Ritu_Rosni
part-13
.
একটু পরে একটা গিটার হাতে করে নিয়ে এলো।
তারমানে গান গাইবে উনি।করুক না কিছুক্ষণ কা কা ভালই লাগবে।
গিটার হাতে নিয়ে টুংটাং করে আওয়াজ তুলছে চোখ দুটো বন্ধ করে।
”””To Jo Rootha,To kaun hasega,tu jo
chlUta,to kaun rahega……..
To chhup Hai to,Ye Darr lagta hain
Apna Mujhko Ab,Kaun Kahega…………..
Tuhi wajah,Tere bina,Bewajah bekaar
Hoon Main
Tera Yaar Hoon Main…Tera Yaar Hoon
Main…..
Hu……Wuuuuuu…Huuuu…..Huu……
Aja Laade Fir,khillaquno ke liye,tu
Jeete Main Haar Jaun,Aaja Karre fir
Wahi Shararate,Tu Bhaage,Main
Maar Khaaun……..
Meethi Shi Wo Gaali teri,Sunne Ko
Taiyar Hoon Main………..
Tera Yaar Hoon Main……Tera Yaar Hoon
Main……Tera Yaar Hoon Main
Khushiyaan Ch Nachda Main Phiraar,
Hanjuaan Ta Bachda Main Phiraar…..
Oo……Ho Jaate Nahi Kahin Rishte
Puraane,Kisi Nayi Ke Aa Jaane Se,
Jaate Hoon Main,To Mujhe tu jaane
De,Kayun Pareshaan Hai Mere Jaane
Se……………………….
Toota Hai To,Judda Ha Kyun Mere
Tafaf tu mudd hai kayun,Haq Nahi Tu
Ye Kahhe ke, Yaar Ab Hun Na Rahe……..
Ek Teri Yaar Ha hI,Saato Janam
Haadaar Hoon Main
Tera Yaar Hoon Main……Tera Yaar Hoon
Main….Tera Yaar Hoon Main….Tera
Yaar Hoo Main………..
বলে থামলো শুভ্র।
আমি তো একদম হা হয়ে আছি।এত সুন্দর করে গাইছিল যে আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো হা হয়ে শুনছিলাম। একদম নেশা লেগে গেছিল।এত সুন্দর করে ও কেউ গাইতে পারে আমার জানা ছিল না।
তবে যখন আবার সন্ধ্যার সময় কার কথা মনে হল তখন মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
কি দরকার ছিল এমন করার।কি এমন করছিলাম আমি।শুধু ইহানের সাথে একটু কথা বলেছিলাম তাতেই ঐ বিহাব টা করলো।
সবাই শুভ্রের গানের প্রশংসা করছিল আর শুভ্র তার বিনিময়ে একটা করে তেডি স্মাইল দিচ্ছিল।
উনি কি জানে যে উনার ঐ একটা হাসিতেই কত রমনীর রাতের ঘুম হারাম।জানলে হয়তো বুঝতো।
আড্ডা শেষে যে যার মতো নিচে চলে গেছে।অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমাতে যেতে হবে।সকাল সকাল উঠতে হবে আবার আগামীকাল।
ঘুম পাচ্ছে খুব।সারাদিনে কম ধকল যায় নি।আবার সকালে উঠতে হবে।এত ঘুম পেয়েছে যে মনে হচ্ছে এখানেই ঘুমিয়ে পড়ি।
হাই তুলতে তুলতে নিচে নামছিলাম।চোখে ঘুমে ঢুলু ঢুলু খাচ্ছে।আমার পক্ষে এ অবস্থায় নামা সম্ভব নাহ।
কি কেয়ারলেস মেয়েরে বাবা।দাঁড়িয়েই ঘুম পারছে।একে এখন ডেকেও লাভ নেই।
কোলে তুলে নেয় শুভ্র।আবছায়া আলো মুখ টা দেখতে কি মায়াবী লাগছে।মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে নেশা লেগে যাচ্ছে।বাতাসে এলোমেলো চুল গুলো মুখের সামনে এসে পরছে।ফুঁ দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলো শুভ্র।
মেহমানে গিজগিজ করছে পুরো বাড়ি।কোথাও পা রাখার মতো জায়গা নেই।ওর রুমে নিয়ে গিয়ে আলতো করে শুইয়ে দিলাম।শুভ্র মনে মনে হাসছে।এতকিছু হয়ে গেলো ও টেরই পেলো না।চলে আসার সময় হঠাৎ করে ঋতুর হাতের দিকে নজর গেলো শুভ্রের।বাম হাত টায় কেমন কালচে হয়ে আছে।
মনে পরে গেলো সন্ধ্যার কথা।দেয়ালের সাথে চেপে ধরায় এমন হয়ে গেছে।
ইশশশ!!কতই না ব্যাথা পেয়েছে মেয়েটা।আমিও নাহ কেমন জানি রেগে গেলে মানুষ থেকে বন মানুষ হয়ে যাই।
কি করবো,,ওর পাশে অন্য কাউকে দেখলে যে আমার মেজাজ খারাপ হয় সেটা কি আর ও বোঝে না নাকি?
তাও ঠিক ওকে আমি না বললে ও বুঝবে কি করে?
ব্যাথা পাওয়া অংশ নিজের গালের সাথে ঠেকিয়ে কিছু আদর করে ঋতুর গায়ে চাদর বিছিয়ে রুম আটকিয়ে দিয়ে চলে আসে শুভ্র।
,
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঋতু ভাবছে সে তো যতদূর মনে পরে ছাদের রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ছিল।তাহলে রুমে আসলো কি করে?তাহলে কি ওর মা নিয়ে এসেছে??
–মা ও মাহহহ
–কিরে সকাল সকাল এত চিৎকার করছিস কেনো?
–রাতে আমায় কে ঘরে এনেছে?? তুমি এনে দিয়ে গেছো নাকি?
—কি যাতা বলছিস??পাগল টাগল হলি নাকি বলতো।
কে আনতে যাবে তোকে??তোর কি সাথে পা নেই?
–আমি তো ছাদেই দাড়িয়ে ছিলাম তাহলে এখানে এলাম কি করে?
–দেখ সকাল সকাল এসব ভাল্লাগছে না আমার।প্রচুর কাজ পরে আছে আমার হাতে।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নে।
কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে তো তোর?
–কি বলছো মা?কয়টা আর বাজবে বলো ঐ নয়টা হয়তো।
–আজ্ঞে না মহারাণী। বেলা ১২ টায় নবাবী ঘুম ভেঙ্গে এখন আসছে কয়টা বাজে।
–কিহহহহহ!!১২ টা বাজে আর তুমি আমায় একবারো ডাকলে না।
–তোমার কানের কাছে পুরো বাজার তুলে আনলেও তুমি টের পাবা না।এখন রেডি হয়ে নাও সবার শেষ হতে চললো।
–এত বকো না তোহহ।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি টেবিলের খাবার দাও খুব ক্ষিদা লাগছে।আর শোনো আমি এখন কি পরবো একটু চুজ করে দাও তোহহ।
–শোনো মেয়ের কথা তুই কি এখনো ছোট বাচ্চাই আছিস নাকি?নিজের কাজ নিজে করে নে আমার কাজ আছে।
–ধুরররররররর বাল ভাল্লাগে

না।ব্রেকফাস্ট করে গোসল করে নিলাম আগে।সিম্পল একটদ ড্রেস পরে আছি।চুল গুলো হেয়ার ড্রাই দিয়ে শুকাবো আগে।এত গরমে চুল ছেড়ে দিলে থাকতে পারবো না আমি।
–মধু ডাকতে এসেছে কি রে তোর ঘুম ভাঙ্গলো তাহলে এতক্ষণে?আমরা ভেবেছি আজকে আর ঘুম ভাঙ্গবে না তোর।
😲😲ওয়াওওওওওওওও,,এত্ত সুন্দর লেহেঙ্গা।

,
আলমারি খুলে ড্রেস খুজতে গিয়ে হঠাৎ একটা প্যাকেট হাতে এসে বাধে।
খুলে দেখি একটা নিউ লেটেস্ট মডেলের মহামানথানের লেহেঙ্গা।সিদূর লাল রঙের যার্দূসী ও কুন্দুল ওয়ার্কের কাজ করা।ঘের গুলা অনেক বড়।ডাবল ক্যান ক্যান দেয়া।
শোভার বিয়ের শপিং করতে গিয়ে লেহেঙ্গা টা আমার প্রথম দেখায়ই ভালো লেগে যায়।প্রাইজ জানতে চাওয়ায় বলেছিল তেইশ হাজারের মতো তাই আর নেয়া হয়নি পরে।
আসলে এটা কেনার মতো সামর্থ্য আমাদের ফ্যামিলির নেই।
কিন্তু এটা তো আমি মনে মনে পছন্দ করছিলাম কাউকে বলি নি।তাহলে কে এনেছে?নিশ্চয়ই আম্মা নিয়ে এসেছে।
কি দরকার এসব করার। শুধু শুধু এতগুলো টাকা নষ্ট করার কোনো মানেই হয় না।
–কিরে কবে কিনলি এত সুন্দর লেহেঙ্গা?কি সার্থপর তুই দেখেছিস।আমাদের বললে কি আমরা কেরে নিতাম নাকি?
–কি জানি!!
–মানে টা কি,তোর জিনিস আর তুই জানিস না।
–আমিই আজকে আর এখনি দেখলাম তাহলে তোদের বলবো কখন?মনে হয় আম্মা কিনে এনে রেখেছেন।
–সত্যিই আন্টির চয়েজ আছে বলতে হবে।আমাদের মা কেনো যে তোর মায়ের মতো হয় না।
–হয়েছে আর ন্যাকা কান্না করতে হবে না।আমায় একটু রেডি করে দে তোহ।
প্যাকেটের মাঝেই সব কসমেটিকস,জুয়েলারি ম্যাচিং করে রাখা আছে।আম্মা যে এইভাবে আমায় সারপ্রাইজ দেবে ভাবতেই পারি নি।
চুল গুলো সামনে কিছুটা পাম্প করে খোপা করে দিলাম।চোখে মোটা করে কাজল।দু হাত ভর্তি রিয়েল স্টোন লাগানো চুড়ি।কানে গলায় ম্যাচিং করা দুল ও হার।
ওড়না সুন্দর করে শাড়ির মতো স্ট্যাইল করে নিলাম।আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেই নিজেকে চিনতে পারছি না।লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে যাচ্ছে।হারামি গুলা তো খুব পচাচ্ছে আমায়।
বাহহহহহ!!আমার মা টাকে তো খুব সুন্দর লাগছে আজকে।
দেখি একটা তীলক দিয়ে দেই যাতে করে কারো নজর না লেগে যায় তাই বলে সোনা মা নিজের চোখ থেকে একটু খানি কাজল নিয়ে আমার কপালে ছুইয়ে দিল।
সবাই আমার লেহেঙ্গার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।আমায় নাকি একদম রাজকন্যার মতো লাগছে দেখতে।
স্যারের রুমের সামনে দিয়েই শোভার রুমে যেতে হয়।পেছন থেকে কে যেন হাত টেনে ধরে।
–আহহহহ!!এত নড়াচড়া করো কেনো?একটু চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে পারো না।
খোপায় একটা তাজা গোলাপ গুজে দিয়ে এবার ঠিক আছে যেতে পারো।
–মানে টা কি এই লোকটার সমস্যা টা কি?এমন অদ্ভুদ আচরণ করে কেনো বুঝি না।
সে যাই হোক সকাল থেকে শোভার কাছে একবারো যাওয়া হয়নি।সবাই শোভা কে সাজাতে ব্যস্ত। এদিকে সায়নী তো আমায় দেখে হা হয়ে আছে।
–মুখে মশা ঢুকবে মুখটা বন্ধ কর।সায়নী কে হা করে থাকতে দেখে বললাম।
—এই লেহেঙ্গাতে তোমায় পুরো রাজকন্যার মতো লাগছে আপু।বাহহহ আমার ভাইয়ার পছন্দ আছে বলতে হবে।দেখতে হবে না ভাইয়া টা কার?
ঋতুকে দেখে শোভা কথাটা বললো।
–মানে টা কি শোভা?কি বলছিস এসব?
–ঠিকই তো বলছি। তুমি কি ভেবেছো আন্টি এনেছে এটা?
নাহহহ,তুমি যখন এটা বার বার চেয়ে চেয়ে দেখছিলে তখনি ভাইয়া তোমার অগোচরে এটা কিনে ফেলেছিল।আর তোমার মনে আছে আমি তোমায় একটা প্যাকেট দিয়েছিলাম এটাই সেটা।
কিহহহহহহহ!!!তারমানে আমি এতক্ষণ যা ভাবছিলাম সব কিছুই ভুল।স্যার এটা কিনেছে।কিন্তু কেনো রেখেছে।
স্যার আমায় এই লেহেঙ্গা টা গিফ্ট করছে শুনে সায়নীর মুখটা কালো হয়ে গেছে।ওর মুখটা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে বেচারা
স্যার কে নিয়ে কত্ত স্বপ্ন দেখছিল আর স্যার কি না।
চেঁচামেচি শুনে বাইরে চলে এলাম।বর চলে এসেছে।
সিড়ি বেয়ে দৌড়ে নামতে গিয়ে লেহেঙ্গার ঘের পায়ের নিচে পরে পরে যেতে গিয়ে স্যার ধরে ফেলে।
একদম ফিল্মি স্ট্যাইলে স্যার ধরে রেখেছে।দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
বুকের ভিতর কেমন হাতুড়ি পিটাচ্ছে মনে হচ্ছে ধক ধক করছে।আমাদের এভাবে জরিয়ে ধরা অবস্থায় ফটোগ্রাফার ছবি তুলে নিলো কয়েকটা।আর এদিকে সবাই সিটি বাজাচ্ছে। এতক্ষণ দুজন যেনো একটা ঘোরের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম। তুড়ির আওয়াজে হুশ ফিরলো আমাদের।
লজ্জায় আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।আল্লাহ তুমি মাটি ফাক করো আমি ঢুকে যাই।
দেখে শুনে চলতে পারো না?কেয়ার লেস একটা।উপরের কথাটা শুভ্র ঋতুকে বলে চলে গেলো।
লোকটা পারেও ভালো গিরগিটির মতো রং পাল্টাতে।
শুভ্র আজকে সাদা রঙের চিকেন কাপড়ের পান্জাবী পরেছে।
ফর্সা মানুষকে যে সাদা পান্জাবীতে এত সুন্দর লাগতে পারে তা আমার জানা ছিল না।
সাদা পান্জাবীতে স্যার কে এত সুন্দর লাগছিল যে বলার বাই রে।মন চাচ্ছিল সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকিয়ে ওর দিকে।কেনো জানি আজকে বিরক্ত লাগছে না বরং এক ধরনের ভাল লাগা কাজ করছিল।

,
বর এসেছে।গেটের সব আমাদের রুলস পালন করলাম। বরপক্ষের থেকে একটা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছি।হোক না সে আমার ভাই তাতে কি আমি তো এখন কনে পক্ষের লোক।
ছাদে স্টেজ করা হয়েছে।অভি ভাইয়া কে সেখানে নিয়ে গিয়ে বসানো হয়েছে।
সবাই আমার পরিচিত তাই সব তদারকি করার ভার আমার উপর পরেছে।
ওয়েটার রা আছে সার্ভ করছে তার পরেও আমি মাঝেমধ্যে চেক করছি।সোনা মা ভেতরে আছেন ঐদিক টা দেখছেন।আঙ্কেল আর স্যার বর যাত্রীদের দেখছেন।
–শুভ্র বেইবি! কেমন আছো?
–আম ফাইন,ইউ?
–আম অলসো ফাইন।সরি বেবি লেট করে আসার জন্য।একচুয়েলি কাজ পরে গেছিল সেগুলো করতেই লেট হয়ে গেলো।
–ইটস অকে।ইটস নট ম্যাটার।
মেজাজ টা আমার ৩৬০ ডিগ্রি গরম হয়ে গেছে।এই এনা না তেনারে এখন আসতে বলছে কে?
রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে কেউ আমার গায়ে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দিয়ে রাখছে।
এই মেয়ে টাকে আমার একদমি সহ্য হয় না।আর ঐ ধলাচিকার কথাই বা কি বলবো মেয়ে দেখলেই লুচ্চামি শুরু হয়ে যায়।এত শখ কোলাকুলি করার।কই আমার সাথে তো কখনো করে না ঐ ডাইনীর সাথে এত কি?মনে হচ্ছে দুই ডারেই ধাক্কা দিয়ে ছাদের নিচে ফেলে দেই।
,
বিয়েটা আল্লাহর রহমতে খুব ভালোভাবেই কম্পিলিট হয়ে গেলো।এখন কনে কে ঐ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পালা।
সব রিচুয়াল শেষে কনে বিদায়ের শেষে শোভার সেকি কান্না।কিরে কেদে কেটে নদাী বানাবি নাকি?শোন তোর সব মেকাপ নষ্ট হচ্ছে এতে তোকে দেখতে পেত্নির মতো লাগবে।
আর দেখিস আমার ভাই যেনো ভয়ে না পালিয়ে যায়।
সোনা মা আঙ্কেল সবাই খুব কান্না করছে।কান্না করারই কথা।এক মাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।এতদিন তীলে তীলে এত কষ্ট করে বড় করেছে।কখনো কোনো চাওয়া পাওয়া অপূর্ণ রাখে নি।খুব আদরের মেয়ে সবার।সবাই কে দেখছি এখানে কিন্তু স্যারকে কোথাও দেখতে পারছি না।উনি হঠাৎ কোথায় গেলেন? সবাই স্যারকে খুজছে।
স্যারকে পুরো বাসার কোথাও স্যার কে পেলাম না।উনি হঠাৎ কোথায় গেলো বুঝতেছি না।
এখন শুধু ছাদেই আছে বাকি খোজা।খুজতে খুজতে স্যারকে পেয়েও গেলাম।
স্যার,স্যারর,,নিচে সবাই আপনাকে খুজছে
ওমাাা একিিিি!!আমি কি দেখছি এসব।স্যার কান্না করছে এটাও কি সম্ভব।
শুনেছি ছেলেরা অধিক কষ্ট না পেলে নাকি কান্না করে না কখনো।হয়তো আদরের ছোট বোন টাকে বিদায় দেয়ার কষ্ট টাকে সামলাতে না পেরে এখানে চলে এসেছে। ছোট থেকে যাকে আদর দিয়ে বড় করে তুললো তাকে যে এক সময় বিদায় দিতে হবে এভাবে হয়তো এটা কখনো ভাবেনি।
আচ্ছা সব সময় মেয়েদের কেই কেনো এত ত্যাগ করতে হয় বলুন তো?বিয়ে করে ছেলের বাসায় থাকতে হবে কেনো?ছেলে রাও তো থাকতে পারতো।
শুভ্র হয়তো এতক্ষণ ধরে একজনকে খুজছিল যার বুকে মাথা রেখে একটু কান্না করতে পারে।
ঋতুকে জরিয়ে ধরে হু হু করে কাদঁছে শুভ্র।না ডাকে ও যে পারবে না চোখের সামনে দাড়িয়ে শোভার যাওয়া টাকে।
খুব কষ্ট হচ্ছে শুভ্রের।কষ্টে বুক টা ফেটে যাচ্ছে।
শুভ্রের এহেন কান্ডে ঋতু যেনো জমে পাথর হয়ে গেলো।নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।
এখন শুভ্র কে কি বলা উচিৎ ঋতুর জানা নেই।
নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছে ঋতু শুভ্রকে কিছু বলে স্বান্তনা দিতে হবে।
শুভ্রের চোখে পানি দেখে ঋতুর ও খুব কান্না পাচ্ছে। ওর ছোট থেকে একটা বদ অভ্যাস আছে যে কারো কান্না দেখলে নিজেও কেঁদে ফেলে।
এই মুহূর্ত এমন টা করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
স্যার প্লিজজজ কান্না করবেন না।দেখুন এক টা নির্দিষ্ট সময় পরে সব মেয়েকেই এভাবে তার পরিবার ছেড়ে অন্য অচেনা একটা পরিবারে যেতে হয় এটাই নিয়ম।
দেখুন না আপনার মা আমার মা সবাই এই নিয়মে গেছে।
আপনি শান্ত হন প্লিজ।আর শোভা তো দূরে কোথাও যায় নি।এখান থেকে এখানেই আছে।যখনি মন চাইবে চলে আসবে আর আপনিও দেখতে যেতে পারবেন।
আর চিন্তা করবেন না অভি ভাইয়া শোভাকে সুখেই রাখবেন।
আমার মনি মা শোভা কে নিজের মেয়ের মতোই রাখবেন।আপনি কোনো চিন্তা করবেন না প্লিজ।
ঋতুর গলায় কেমন যেনো দলা পাকিয়ে আসছে।ও কি বলছে নিজেই জানে না।
শুভ্রকে শান্ত করতে গিয়ে ও নিজেই কেঁদে ফেলছে।
কাঁদতে কাঁদতে হিচকি উঠে গেছে ঋতুর।
শুভ্রের এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। নিজের দুঃখ কোথায় ভোলাবে সেখানে ওকে এখন ঋতুর কান্না থামাতে হবে।
শুভ্রের খুব হাসি পাচ্ছে এখন কিন্তু হাসতে গেলে এখন অবস্থা বেগতিক হতে পারে।
.
.
.#Accounting_Teacher(Season2)
#__Part__14
#Written_by_Ritu_Rosni

শুভ্রের খুব হাসি পাচ্ছে এখন কিন্তু হাসতে গেলে এখন অবস্থা বেগতিক হতে পারে।
পেট ফেপে শুভ্রের হাসি আসছে।এই প্রথম ও কাউকে দেখছে যে একজনের কান্না থামাতে এসেই নিজেই কান্না করছে।
হাহাহা করে হেসে দিল শুভ্র।হাসি যেনো থামছেই না।শুভ্রের খুব মজা পাচ্ছে।
স্যারের সাথে সাথে আমিও যে কখন বাচ্চাদের মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না শুরু করে দিছি বুঝতেই পারি নি।
খুব রাগ হচ্ছে স্যারের উপর।কেমন শয়তানের মতো করে হাসছে দেখো ব্যাটা বিটকেল একটা।
রাগে আমার শরীর রি রি করছে।যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর।
চলে যাচ্ছিলাম স্যার এক ঝটকায় হাত ধরে টান দেয়ায় হুরমুর করে স্যারের বুকে এসে আছড়ে পড়লাম।
এত কাছে কখনো আসি নি।স্যারের গায়ের পারফিউম এর তীব্র কড়া ঘ্রাণ আমার নাকে এসে লাগছে।কেমন মাতাল করা একটা ঘ্রাণ।
আমি স্পষ্ট স্যারের বুকের হৃদ স্পন্দন শুনতে পাচ্ছি। গণনা করার চেষ্টা করছি ১,২, ৩,,,,,,,
–পিচ্চি মানুষের এত রাগ?অবশ্য লাগলে তোমায় তোমাদের পাড়ার কুনুর মতো লাগে দেখতে।
—কিহহহহহ!!এত বড় অপমান।
হাত সরানোর যতই চেষ্টা করছি স্যার ততোই বুকের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরছে।কে বলছে আমায় দেখতে হুহহ
যান না আপনার সেই ন্যাকু এনার কাছে।
–পিচ্চি মানুষের গায়ে যে এত জোর আগে জানতাম না তোহ।আর হ্যাঁ যাবোই তো আমার এনার কাছে।
তাতে তোমার কি হু?
–হ্যাঁ আমার কি?
–সত্যি তোমার কিছু না তো?
–নাহহ কিছুনা।
–ভেবে বলছো তো?
–এত ভাবার কি আছে?
–যদি কিছুই না হবে তাহলে তোমার এত জ্বলে কেনো আমার পাশে কোনো মেয়ে কে দেখলে?
–ক,,, কককিিিি ব,,বললছেনন?জ,,জ্বললবে কেেনো?
–ভালোবাসো?
-ক,,,কিিিি বলছেন এসব?ছাড়ুন কেউ এসে দেখে ফেলবে।
–না ছাড়বো না আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
ঋতুর ঘাড়ের মুখ গুজে আছে শুভ্র।মাঝেমাঝে ঘাড়ে গলায় সুরসুরি দিচ্ছে। ঋতুর সারা শরীর জুরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।
রক্ত চলাচল যেনো বন্ধ হয়ে গেছে।জমে পুরো শরীর পাথর হয়ে গেছে।নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে।
কি বলছে শুভ্র এসব?শুভ্রের ভালোবাসো কথাটায় যেনো পুরো শরীর জুরে একটা বাতাস বয়ে গেলো।
ঋতু কি বলবে ভাবছে।
–কি হলো কিছু বলছো না কেনো?ভালোবাসো আমায়?
–মোটেই নাহহ।আমি আপনাকে ভালোবাসতে যাবো কেনো?
–সত্যি তো?
–হু সত্যি।
–তাহলে কেনো আমার কষ্টে তোমার চোখে পানি আসে?কেনো তুমি আমার পাশে সায়নী বা এনাকে সহ্য করতে পারো না?আনসার মি ড্যামন।
–ঋতু কিছু না বলে ছাদ থেকে নেমে যায়।
আমিও দেখে নিবো মিসেস চৌধুরী কতদিন এভাবে তোমার মনের মধ্যে আমার জন্য আস্তে আস্তে গড়ে ওঠা ভালোবাসাকে ইগনর করো।তোমায় তো আমার কাছে আসতেই হবে।
তুমি নিজে আমায় এসে ভালোবাসি বলবে।শুভ্র মনে মনে নিজের সাথে কথাগুলো বলছে।
,
বর যাত্রীরা অনেকক্ষণ হলো কনে নিয়ে চলে গেছে।নিচে গিয়ে শোভার সাথে কথা বলে নিয়েছে ঋতু।ওরা ভালোভাবেই পৌছে গেছে বাসায়।শুভ্রদের বাড়ি টা কেমন চুপচাপ কারো মুখে কোনো কথা নেই আর ঐদিকে অভিদের বাসায় তার উল্টো টা।সবাই নতুন বউকে বরণ করায় ব্যস্ত।
বর বউয়ের সব রিচুয়াল শেষ করে শোভা কে অভির ঘরে রেখে এসেছে। খুব ভয় করছে শোভার।এতদিন ধরে দুজন এই দিনটার অপেক্ষা করে এসেছে। আজ ওরা এক হতে পেরেছে।ঘড়িতে ১১ টা বাজতে চললো এখনো রুমে অভির আসার কোনো খবর নাই।এই ছেলেটা কে আমি আজো বুঝে উঠতে পারলাম না।কোনো কান্ড জ্ঞান নেই নাকি।ঘরে নতুন বউকে রেখে আড্ডা দিচ্ছে আগে আসুক রুমে তারপর জম্মের মতো আড্ডা দেয়াবো।মনে মনে রাগ করছে শোভা।
দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ হওয়া শোভা ঠিক ঠিক করে বসলো।ঘোমটা টা আরো নিচে টেনে দিল।
নিজেকে যথা সম্ভব গুটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
নার্ভাস নেসে ঘিরে রেখেছে যেনো চারিপাশ।
আজকে শোভার নতুন জীবনের প্রথম সকাল।
সকালে ফোনে বাবা মায়ের সাথে কথা বলেছে।ওরা কিছুক্ষণের মাঝেই চলে আসবে।অভির মা খুব ভালো।
অমায়িক ব্যবহার তার।অল্প সময়েই কেমন শোভা কে আপন করে নিয়েছেন।
,
সকাল থেকে শুভ্র কেমন ঋতুকে ইগ্নোর করছে।ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে এনার সাথে ঘুরছে।
ঋতুর খুব কষ্ট হচ্ছে এসব কেনো যেনো। সহ্য করতে পারছে না।
এনা টা ও না কেমন বেশরম যে শুভ্রের গায়ে ঢলে ঢলে পরছে।
সবাই রেডি হচ্ছে অভি দের বাসায় যাওয়ার জন্য।
মেয়েরা সবাই একসাথে রেডি হচ্ছে।
শুভ্র এসে এনা কে ডাকছে।
এনা এদিকে এসো তো।এই ড্রেস টা পরে রেডি হয়ে আসো।
ঋতুকে দেখিয়ে দেখিয়ে বলছে শুভ্র।
–শুভ্র বেবি এসবের কোনো দরকার ছিল না।আম ফাইন।
–কে বলছে দরকার ছিল না?যাও রেডি হয়ে আসো কুইক।
–অকে বেবি।যাস্ট ওয়েট করো।
শুভ্র মনে মনে বলছে “দেখবে শুনবে আর লুচির মতো ফুলবে”।
এই ন্যাকু টাও হয়েছেএকটা ড্রেস পেয়ে খুশিতে কেমন গদগদ করছে দাড়াও তোমায় দেখাচ্ছি মজা।
একবার তোমায় বাগে পেয়ে নেই চান্দু তারপর বুঝাবো কত ধানে কত চাল।কেঁদেও কুল পাবে না তখন তুমি।
,
ঋতু টকটা নীল শাড়ি পরেছে যার পার দিয়ে কালো রঙের কাজ করা।সাথে ম্যাচিং কানের দুল গলায় সিম্পল একটা চেইন।হাতে এক গুচ্ছো রেশমি চুড়ি।
চোখে হাল্কা কাজল দিয়ে চুল গুলো এক পাশে সিথি করে ছেড়ে দেয়া।
–ওয়াওওওও!!দোস্ত তোকে না খুব সুন্দর

লাগছে আজকে।নজর ফেরানো দায় তোর থেকে।
আমি নিজেই ক্রাশ খেয়ে ফেলছি তোর উপর।
আমি ছেলে হলে তোকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলতাম।
–হয়েছে তোর বকবক?আমি মরি আমার জ্বালায় আর উনি আছেন বিয়ে নিয়ে।
আদিখ্যেতা দেখে গা জ্বলে যায় আমার।
শুভ্র ও আজকে একটা নীল পান্জাবী পরেছে।এই ছেলে যাই পরে না কেনো সব কিছুতেই ওকে সুন্দর লাগে।
শেভিং করে না কয়েকদিন মনে হয়। দাড়ি গুলো কে ধরে রেখেছে।ছোট ছোট করে ছেটেছে।
খোচা খোচা দাড়িতেই ছেলেদের কে মানায়।
ঐ বদ লোকটা ও নীল পরছে।
আমি যে ওর সামনে এসে দাড়িয়ে আছি সেটা দেখেও না দেখার ভান করে আছে।অন্য সময় হলে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে থাকতো আর এখন ফিরে তাকাচ্ছে না।
–ছটু,এই ছটু দেখতো আমায় কেমন লাগছে?
–কেমন লাগছে আবার? সুন্দরই তো লাগছে।
–সত্য করে বলতো কেমন লাগছে?একটু ভালো করে দেখ তাকিয়ে।
—এক কথা কয়বার জিজ্ঞাস করিস?বললাম তো ভালো লাগছে।
—ধুরররররর ভাল্লাগে না।
ঋতু শুভ্রকে দেখিয়ে দেখিয়ে ছটুকে ডেকে বলছিল।ভেবেছিল শুভ্র ওর দিকে তাকাবে।কিন্তু শুভ্রের মাঝে কোনো পরিবর্তন নেই।শুভ্র মনে মনে হাসছে ঋতুর কান্ড দেখে।
,
সবাই গাড়িতে উঠে গেছে শুধু ঋতু ছাড়া।ও মধুদের গাড়িতে গিয়ে দেখলো সবাই বসে পড়ছে কোনো সীট খালি নেই।
একে একে সব গাড়িই দেখলো কোথাও সীট ফাঁকা নেই শুভ্রদের গাড়ি ছাড়া।শুভ্র আর এনা আছে বসে।
এনা তুমি আমার ঐখানে বসলে কেনো?আমার পাশে এসে বসো।
–ওহহ শীট।ওয়েট বেবি আমি আসছি এখনি।
শুভ্র ড্রাইভ করছে আর তার পাশে এনা বসে আছে।
এত অবহেলা আর ভালো লাগছে না ঋতুর।চোখ দুটো ছলছল করছে মনে হচ্ছে এখনি কেঁদে দিবে।না এখন কাঁদলে শুভ্র দেখে ফেলবে।ওর কাছে আমার চোখের পানির কোনো মূল্যই নেই।যদি থাকতোই তাহলে আর এত কষ্ট দিতে পারতো না আমায়।
ঋতু বুঝতে পারছে শুভ্র সব ইচ্ছে করেই করছে ওর মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য।কিন্তু ঋতু তো ভালোবাসে না শুভ্রকে।তাহলে কেনো এত কষ্ট হচ্ছে শুভ্রের অবহেলায়।
পুরো রাস্তা জুরে এনা শুভ্রের বকবক শুনে মাথা ধরে গেছে।কই আমার সাথে তো কখনো এত কথা বলেনি আর ঐ ত্যানার সাথে এত কথা বলে।হুহহহহ বললে বলুক আমার কি?
আমি তো ওকে ভালোই বাসি না।ঋতু ওর মনের সাথে যুদ্ধ করছে।সত্যিই কি তাই?নাকি ওর মনের ওপর জোর করছে ঋতু?ও নিজের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে।
নাহহ এখন আর নিজের মন কে বেধে রাখবে না শিকলের বাধন দিয়ে।ওর মন টাকে মুক্ত করে দিল। সে যা চাইবে তাই করবে ঋতু।আর যাই হোক মনের উপর কারো জোর চলে না।
,
শোভার সাথে দেখা করে এসেছে ঋতু।মনি মা তো আমার সাথে কোনো কথাই বললো না। গিয়ে দেখি খুব রাগ করে আছে।কত্ত কষ্ট করে তার রাগ ভাঙ্গাতে হলো।
আমি আজকে এখানে থাকবো বলে রাগ ভাঙ্গল।
মধু রা এখানে সবাই নতুন তাই ওদের পুরো বাড়ি টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিলাম।
কোথা থেকে যেনো ইহান এসে সামনে দাড়িয়ে পরে।
–বালিকা কেমন আছো?
–দেখতেই পারছেন কেমন আছি।
–ইশশ!!এভাবে হাসি দিয়ো না বালিকা।আমি তোমার হাসিতেই ঘায়েল হয়ে গেছি।
–কি আবোলতাবোল বলছেন এসব?আপনার মাথা ঠিক আছে তো?
—সে তো কবেই হয়েছি পাগল তোমার প্রেমে।সে তো নতুন না।তোমার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল এই পাগল।
বালিকা বাসলে ভালো একটু ক্ষতি কি?
–আপনি ফ্লার্টিং করতে খুবই ভালো পারেন।
–ওহে বালিকা
ফ্লার্টিং না,মত্ত তোমার প্রেমে দিওয়ানা।
–এবার কিন্তু আমার সত্যি সত্যি রাগ হচ্ছে।
–রাগো না।রাগলে তোমায় রসগোল্লার মতো লাগে।
–কি বললেন?
–সত্যি তো বলেছি।
–ধুরররররর!!থাকেন আপনি।
—আরে আরে বালিকা কই যাও?
—জাহান্নামে।যাবেন?
–সে তুমি বললে তো আমি পাতালেও যেতে রাজি।
পাতালে যেতে হবে না আপাতত ছাদে যাবো।এত কোলাহল আমার ভালো লাগে না।যাবেন নাকি আমি একাই যাব?
–না তো বলিনি বালিকা।
–তো চলুন।
চারিদিকে অন্ধকার নামতে চলেছে।যে যার নীড়ে ফিরে চলেছে।
–গৌধুলি সন্ধ্যা ভালো লাগে?
-হুমমম,,খুউউব।
–কবিতা পারেন?
–পারি কিনা জানিনা তবে
তবে কি?
তোমার জন্য আমি কবি হতেও রাজি।
“চোখ কেড়েছে চোখ
উড়িয়ে দিলাম ঝড়া পাতার শোক।”
–বাহহ! সুন্দর ছন্দ মিলান তো।
আপনার প্রিয় কবি কে?
-রুদ্র গোস্বামী।
কয়েক লাইন বলুন আপনার পছন্দ মতে।

অসুখ

আজকাল কি যে উল্টোপাল্টা বায়না শিখেছে ও
যখন তখন এসে বলবে,ওর একটা আকাশ চাই।
আর আমিও বোকার মত সব কাজ ফেলে
ওর চোখের মাপের আকাশ খুঁজতে থাকি।
শুধু কি তাই!তাতেও আবার ওর আপত্তি

এটাতে বলে মেঘ ভর্তি তো ওটাতে এক ঘেয়ে আলো
গৌধুলি আকাশ দেখলেই ও আবার লজ্জায় মরে যায়।
আমার হয়েছে জ্বালা,মেঘ থাকবে না রোদ থাকবে না
এমন একটা আকাশ আমি কোথেকে খুঁজে আনব?
গোলাপ হবে অথচ কাঁটা হবে না।

রঙটাও আবার লাল?এমন আবার হয় নাকি!
একটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না,
ভালোবাসা বুকে এসে বসলেই মানুষ কেন পাখি হতে চায়।
—রুদ্র গোস্বামী

ঋতু এতক্ষণ গভীর মনোযোগে ইহানের কবিতা আবৃত্তি শুনছিলো।এত সুন্দর করে কবিতা আবৃত্তি করছিল যেনো মনে হচ্ছিল মনের সব টা ঢেলে দিয়েছে কবিতার মাঝে।

নিজেকে বিলীন করে দিয়ে রেখেছে।
খুব সুন্দর কবিতা বলেন তো আপনি।
-তোমার মতো সুন্দর করে তো আর না।
–কি বিরবির করছেন একা একা?
-হু,কই কিছু না তোহ।চলো নিচে যাওয়া যাক।তোমায় খুজতে পারে নিজে অনেকক্ষণ হলো এসেছো।
— হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাত টা বাজতে চললো।আসলে শহরে কখন সকাল, কখন রাত বোঝা যায় না।দেখতে কখন আধা ঘন্টা পার হয়ে গেছে খেয়ালই করে নি ঋতু।
কি করবে নিচে গিয়ে শুভ্র আর এনার কার্যকলাপ সহ্য করার থেকে এখানেই শ্রেয় বসে থাকা।
ফোন বেজে উঠলো হঠাৎ ঋতুর।মধু কল দিয়েছে।হয়তো খুজে পাচ্ছে না নিচে তাই।পাবে কি করে আমি তো ছাদে।
,
–কিরেেে কই ছিলি তুই এতক্ষণ? তোকে স্যার খুজছে সেই কখন থেকে।
–উনি আমায় খুজবে কেনো?যা গিয়ে দেখে আয় কেনো ডাকছে।
বলতে বলতে ফোনের স্কিনে জল্লাদ লেখা নাম্বার টা ভেসে উঠলো।ধরবো না ধরবো না করেও ধরলাম।
—কোথায় তুমি?
–আপনাকে বলতে আমি বাধ্য নই।ফোন দিয়েছেন কেনো সেটা বলুন।মধু বললো আমায় খুজছেন আপনি
–ওহহ হ্যাঁ আসলে আমার আর এনার কয়টা কাপল পিক তোলার জন্য তোমায় ডেকেছিলাম।
এখানে ভালো কাউকে পাচ্ছি না যে তুলে দিবে।
কত্তবড় বেয়াদব দেখছো আমায় বলে কিনা কাপল পিক তুলে দিতে।তোর পিক তুই তোল খবরদার আমায় কল দিবি না।
রাগে আমার মেজাজ গরম হয়ে আছে মনে হচ্ছে সামনে পেলে দুইটাকেই আমি লবন মশলা ছাড়া চিবিয়ে গিলে খাইতে পারলে গায়ের জ্বালা মিটতো।
পেছনে ঘুরে দেখি বদ লোক,লুচু ব্যাটা দাড়িয়ে আছে।
হলুদের দিনে ইহানের সাথে দেখায় রেগে গেছিল না?
মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি চাপলো।
দাড়াও চান্দু কি ভেবেছো মজা শুধু তুমিই নিতে পারো আমি পারি না???এখন দেখবা আর জ্বলবা।
লও ঠ্যালা জ্বলা কারে কয়।
শুভ্রের সামনে ইহানের হাত ধরে নিয়ে আসলাম। এহেন ঘটনায় ইহান অবাক আর শুভ্র রেগে ফায়ার।তাতে আমার কি আমি ও তো তাই চাইছি।এই ঋতু রশনিও পাল্টা চাল দিতে জানে।
শুভ্রকে দেখিয়ে দেখিয়ে ইহানের সাথে ঘুরছি।শুভ্র বার বার রাগী চোখে তাকাচ্ছে আমার দিকে।তাতে আমার কি?
আমিও তো এটাই চাইছি।
আমরা এখন পুকুরপাড়ে বসে আছি।ইহানের একটা ইমারজেন্সি কল আসায় সে আসছি বলে চলে গেলো।
ভয়ে আমার জান যাবার মতো অবস্থা। ভূত দেখে নয় আমার ডেভিল টিচার কে দেখে।আমার সামনে দাড়িয়ে গোঁখরা সাপের মতো শুধু ফোস ফোস করছে।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।আমি এখন পালানোর মতো রাস্তা খুঁজছি।
কিন্তু কোনো পথ খুজে পাচ্ছি না।আজকে আর আমার বাঁচার কোনো রাস্তাই নেই।
ভয়ে আমার ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা।
শুভ্র এগিয়ে আসছে আমার দিকে আর আমি পিছাচ্ছি পিছাতে পিছাতে একদম পানির কাছে চলে এসেছি। একটু সরলেই পরে যাবো।পা পিছলে পরতে গেলেই শুভ্র হাতটা ধরে ফেলে।ঋতু তো ভয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে এই ভেবে যে ও হয়তো পরে গেছে।সাঁতার জানেনা পরলে আজ আর নিস্তার থাকবে না।
শুভ্র ঋতুকে টানতে টানতে গাড়ির সামনে এনে গাড়ির ডোর খুলে ভেতরে জোর করে বসিয়ে রেখে লক করে দিল।
–কি করছেন টা কি??আমায় ধরে আনলেন কেনো?
আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??আমি কিন্তু চিৎকার করে লোক জরো করবো।বলবো আপনি আমায় কিডন্যাপ করে বিক্রি করতে যাচ্ছেন।
–স্টপ ইট ননসেন্স।
–চুপ করবো না আমি আরো চেঁচাবো। আপনি আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
এতক্ষণ অনেক কষ্টে রাগ টাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিল শুভ্র কিন্তু ঋতুর জন্য তা আর হলো না।এবার আর চুপ থাকতে পারলো না।
দাঁতে দাঁত চেপে খুব ভালো লাগে অন্য পর পুরুষের ছোয়াঁ তাই না?
তোকে আমি নিষেধ করছিলাম না ঐ ছেলের সাথে মিশতে?তারপরেও কেনো,কোন সাহসে তুই কথা বললি ওর সাথে?
কি হলো কথা বল,এতক্ষণ তো মুখে খুব খই ফুটেছিল।
–আমি কার সাথে মিশবো না মিশবো তা আপনাকে বলতে হবে?কই আপনি যখন এনার সাথে থাকেন আমি তো কিছু বলি নি।তাহলে আমার সাথে কেনো করছেন?
—মুখে খই ফুটছে খুব তাই না?
–হ্যাঁ ফুটছেই তো।কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?
আপনার একটা মেয়েতে হয় না দুকা লাগে😡
–ঋতুর কথায় শুভ্রের চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে।গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা বাই পাসের দিকে ছুটে চলেছে।
হাই স্পিডে গাড়ি চালিয়ে চলেছে।যেকোনো সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে।ঋতু ভয়ে চুপসে আসে।
মুখে হাত দিয়ে আছে কি বলতে কি বলে ফেলেছে।
শুভ্রের মাথায় শুধু ঋতুর বলা কথা গুলোর বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে।
‘।কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?”
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here