দ্বিতীয় জন 💔,পর্ব এক
তানজিন হাসান মায়া
বধূর সাজে বিছানায় প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছি। সামান্য টুকু নড়াচড়াও করতে পারছি না। প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে হিমু আমার শরীর টা নিয়ে ওর তৃষ্ণা মিটিয়েছে। অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
কি নিষ্ঠুর ভাবে নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে বেলকনী তে গিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। এদিকে আমার শরীর টা যে যন্ত্রণায় শেষ হয়ে যাচ্ছে
সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নাই।
একটুপর ও রুমে এসে আমার গালে আলতো করে হাত রেখে রাগি গলায় বললো-
-‘কি ভেবেছিলি তুই মায়া? এতো সহজেই আমি তোকে অন্য কারো বউ হতে দিবো? আজ থেকে তোর শরীর মন সব কিছু আমার। আর রায়ান? ও তো তোর ছায়াটাও খুঁজে পাবেনা। আর যখন পাবে তখন তোর মধ্যে প্রেম ভালবাসা সুখ বলতে কিছু থাকবেনা!
বলেই একটা বিজয়ের হাসি দিলো।
ওর কথা শুনে আমার ভেতরটা কষ্টে ফেটে যেতে লাগলো। আমি জোরে কথা বলতেও পারছিলাম না।
তাই ফিসফিস করে ওকে বললাম-
-‘প্লিজ হিমু! তুই আমার ভালোবাসাকে আমার কাছ থেকে আলাদা করে দিসনা!’
-‘ভালোবাসা?’
কথাটা বলেই ও একটা ভিলেনী হাসি দিলো। তারপর শক্ত করে এক হাত দিয়ে আমার চিবুক ধরে বলল-
-‘আর একবার তোর মুখে ঐ শব্দ টা শুনলে তোর জিভ টেনে ছিড়ে ফেলবো!’
ওর হিংস্র রুপ দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। মুখ ফুটে আর একটা কথাও বলতে পারলাম না। ও আমার পার্শে শুয়ে ওর বুকের উপরে আমায় তুলে নিলো।
তারপর ঠোঁটে গভীরভাবে একটা কিস করে বলল-
-‘এতোদিন তুই আমায় যে কষ্ট দিয়েছিস আমি আজ থেকে তোকে তা সুদে আসলে ফেরত দিবো। মানসিক শারীরিক দুই ভাবেই।
বলেই ও আমার ঘারে ওর মুখ ছোঁয়াতে লাগলো।
আমি ওর কথা শুনে কান্না করতে লাগলাম। কারন এই মুহূর্তে ওর সাথে কিছু শেয়ার করার মতো অবস্থা আমার নেই। ও আমার চোখে পানি দেখে ওর বুকের উপর থেকে আমায় নামিয়ে দিলো।
তারপর চেয়ারে গিয়ে বসে আবার একটা সিগারেট ধরালো।
একটু পর আমার দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত হয়ে বলল-
-‘রায়ান কে কি কি করতে দিয়েছিলি বল? যে কারনে ওকে ভুলতে পারিসনা?’
রায়ানের সাথে আমার তিন বছরের রিলেশন। এর মধ্যে মাত্র কয়েকবার ওর সাথে দেখা করেছিলাম। কারন আমরা দুজনে দুই শহরে পড়াশোনা করতাম। আর হিমু আমার ক্লাসমেট। ওকে আমি সব সময় ফ্রেন্ডের চোখেই দেখতাম।
হঠাৎ হিমুর চিৎকার শুনে আমি ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলাম। ও চেচিয়ে উঠে বলল-
-‘প্রেমিকের কথা শোনা মাত্রই কি তাকে নিয়ে প্রেমের সাগরে ডুবে গেলি? আমার প্রশ্নের জবাব দে। বল কি কি ওকে করতে দিয়েছিলি?’
রাগের মাথায় ও কি করতে কি করে বসে, তাই কোন কিছু না ভেবেই বলে ফেললাম-
-‘কিছুই করতে দেইনি!’
-‘তাহলে ওকে ছাড়তে পারিসনা কেনো? আমি ওর থেকে কিসে কম আছি বল? ওর থেকেও হাজার গুন বেশি তোকে ভালোবাসি। তবু তুই আমার ভালোবাসা ক্যান একসেপ্ট করিস না। বল??’
-‘আমি তোকে সবসময় ফ্রেন্ডের চোখেই দেখেছি। কখনো লাভার হিসেবে দেখিনি!’
-‘কেনো? ওর মাঝে লাভার হিসেবে কি এমন আছে যেটা আমার মাঝে নেই?’
এই উত্তর আমি ওকে কিভাবে দিবো। রায়ানের সাথে যখন আমার ছয় মাসের রিলেশন চলে তখন হিমু আমায় প্রোপোজ করে। কয়েকদিন পর ও বলে যে ও নাকি বহুদিন আগে থেকেই আমায় লাভ করতো কিন্তু বলতে পারেনি। শেষে আমি যদি ওর প্রোপোজ একসেপ্ট না করে ফ্রেন্ডশীপ টা নষ্ট করে ফেলি সেই ভয়ে।
আমি তবু কাঁপা কাঁপা গলায় ওকে বললাম-
-‘তুই যদি রায়ানের সাথে রিলেশন হওয়ার আগে আমায় প্রোপোজ করতিস তাহলে অবশ্যই আমি একসেপ্ট করতাম। কিন্তু….
ও আমায় থামিয়ে দিয়ে বলল-
-‘থাক এতো ভালো সাজতে হবেনা তোকে। যখন রায়ান অন্য মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়িয়েছিলো তখন কি তুই আমায় একসেপ্ট করতে পারতিস না? তখন কেনো একসেপ্ট করিসনি?
জ্বলন্ত সিগারেট হাতের মধ্যে গুড়ো করে নিতে নিতে বলল-
-‘ কি নেই আমার মাঝে? তোকে পাওয়ার জন্য কি করিনি আমি? তবু ঐ চরিত্রহীন লম্পটের প্রতিই তোর এতো টান কেনো?’
আমি কোন উত্তর দিতে পারলাম না। ওর রাগান্বিত মুখের দিকে ভয়ে তাকাতে পারছিনা। ও চেয়ার থেকে উঠে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে আমার উপর শুয়ে বলল-
-‘নাকি ভেবেছিলি আমি তোকে সুখ দিতে পারবোনা সেইজন্য?’
ওর এতো বাজে মন্তব্যে আমার ভেতরে জ্বলে পুড়ে ছাই হতে লাগলো। আমি ওর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে বললাম-
-‘ছি! লজ্জা করেনা তোর এতো বাজে কথা বলতে?’
-‘ওহ আচ্ছা! এইসব কথা তোর কাছে এখন বাজে লাগছে! যখন চরিত্রহীন ছেলের সাথে রিলেশন করিস তখন তোর বাজে লাগে না?’