প্রার্থনায়_তুমি #সূচনা_পর্ব

#প্রার্থনায়_তুমি
#সূচনা_পর্ব
#Tahmina_Akther

১.
-আমাকে জানে মেরে ফেলিস না। আমি মরে যাব। দয়া কর আমার উপর। আ….

কাঁপুনি দিয়ে অর্ধঘুম থেকে জেগে উঠলো একটি মেয়ে। স্বপ্নে দেখা এক একটি দৃশ্য যেন বাস্তবমিশ্রিত।এত ভয়ানক দৃশ্য বোধহয় আর কিছুই হতে পারে না। চলন্ত গাড়িতে বেধড়ক মার খেয়ে একটি মেয়ে বারবার চিৎকার করে উঠছে আর বলছে,আমাকে জানে মেরে ফেলিস না। উফফ, আল্লাহ তুমি সকল বিপদ থেকে সবাইকে রক্ষা করো।

প্রার্থনা শেষ করে মেয়েটি খাট থেকে নেমে ঘরের দরজা খুলে ছাঁদের যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেছে।

পশ্চিমে হেলে পরেছে সূর্য, শহরকে আঁধার রাত গ্রাস করছে।লালচে আলোর সংমিশ্রণে ছেঁয়ে আছে।একঝাঁক পাখিরা আপন নীড়ে ফিরে যাচ্ছে।
হাতে এক কাপ চা নিয়ে ছাদের দোলনায় বসে উপরিউক্ত দৃশ্যগুলো অবলোকন করছিলো অরুণিমা।
দিনের শেষ ভাগের এই দৃশ্য গুলো অনেকের জন্য উপভোগ্য হলেও অরুণিমার কাছে এই দৃশ্য উপভোগ করার কোনো ইচ্ছে নেই ।

-আরু???

হটাৎ, কারো ডাকে চমকে উঠলো অরুণিমা। পেছনে ফিরে দেখলো মামনি ডাকছে,অরুণিমা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো এরপর ধীরপায়ে হেঁটে মামনির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।মামনি রাগান্বিত চেহারা বানিয়ে অরুণিমাকে জিজ্ঞেস করছে,

-এই সন্ধ্যায় ছাঁদে কি করছিলি তুই? কতবার বললাম এই সময় ছাঁদে যাবি না তারপরও আমার কথার অমান্য করে প্রতিদিন এইসময়ে ছাঁদে চলে আসিস।

-ছাঁদে তো এসেছি এতে চিন্তা করার কি আছে মামনি।এই সময়টাতে ছাঁদে একা বসে থাকতে ভালো লাগে তাই বসে থাকি।

-আমি জানি কেন তুই একা ছাঁদে বসে থাকতে ভালোবাসিস?আরে যেই স্মৃতি তোর মনে নেই সেগুলো মনে করার চেষ্টা করাটাও বৃথা।
আমি কি তোকে কম আদর-যত্নে রেখেছি বল?

– আমি শত চেষ্টা করেও আগের কোনো কিছু মনে করতে পারিনা। আমি জানি তুমি আমাকে নিজের মেয়ের মতো আগলে রাখো।
তারপরেও মামনি আমার মনে হয় আমি এতিম নই; আমার মা বাবা, ভাই বোন পরিবারের সবাই আছে।তারা হয়তো আমাকে না পেয়ে পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছে।

কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নার জন্য আমার কন্ঠস্বর আটকে আসছে।

মামনি আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। আমাকে আর কিছু না বলে আমার রুমে নিয়ে গেলেন।রুমের লাইট অন করে আমার হাত ধরে খাটের উপর বসিয়ে দিলেন এবং নিজেও আমার পাশে বসে রইলেন চুপ করে।মিনিট দশেক অতিক্রম হবার পর মামনি বলতে লাগলেন,

-দেখ তোকে আমি যেদিন পেয়েছি সেদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম।
তখন প্রায় রাত আটটা মিরসরাই হাইওয়েতে একটা বন্ধ প্রাইভেট কারে তুই অচেতন অবস্থায় পরে ছিলি,তুই ছাড়া গাড়িতে আর কেউ ছিল না। তোর শরীরে আঘাতে হয়েছে কিনা চেক করে দেখি তোর মাথা ফেটে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে।তৎক্ষনাৎ, আমি আর ড্রাইভার মিলে আমাদের গাড়িতে তুলে তোকে চট্টগ্রাম নিয়ে এসে হসপিটালে ভর্তি করি।কিন্তু, অতিরিক্ত জখম আর রক্তক্ষরনের কারনে তোর মরণ প্রায় অবস্থা। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে তুই ফিরে এলি আমাদের মাঝে দীর্ঘ দু’মাস পর।কিন্তু, অতীতের কোনো স্মৃতি তোর মনে নেই।
তোর পুরোপুরি সুস্থ হতে প্রায় ছয় মাস লেগেছে।এই যে তুই বেৃচে আছিস এইটা কি তোর প্রাপ্য নয়?
সুস্থ যেহেতু আছিস একদিন সব মনে পরবে। তখন কিন্তু তোর এই মামনিকে ভুলে যাস না যেন।

-কি যে বলো না তুমি!তোমাকে ভুলব কি করে?সবকিছু হারিয়ে এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।

বলতে বলতে কেঁদে ফেললাম আমি। মামনি আমাকে একপাশে জড়িয়ে ধরেলনে, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন আর কান্না থামাতে বলছিলেন।

আস্তে আস্তে আমার কান্না কমে এলো।তখন মামনি বললো,

-আরু,তুই শান্ত হ যেভাবে কান্নাকাটি শুরু করেছিস দেখা যাবে আমিও তোর সাথে কেঁদে ফেলব।কিন্তু,আজ আমার খুশির দিন তাই আমি আজ কাঁদব না।

আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন

-তুইও কাঁদবি না,ঠিক আছে?

আমি মামনির দিকে তাকিয়ে আছি, আর ভাবছি মামনিকে এত খুশি খুশি দেখাচ্ছে কেন ?

আমার ভাবনার ছেদ হলো মামনির কথায়,

– আজ আমার ছেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসছে।

-তোমার ছেলে ঢাকায় মানে কিভাবে? আর এতদিন তো বলো নি যে তোমার ছেলে আছে?

অবাক মিশ্রিত কন্ঠে কথাগুলো বলে মামনির দিকে তাকালাম।

দেখি মামনি হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এরপর, মামনি নড়েচড়ে বসলেন এবং বলেন ,

– কেন আমার কি ছেলে থাকতে পারে না?আর তুই এত উত্তেজিত হচ্ছিস কেন?তুই অসুস্থ বিধায় এই প্রসঙ্গে তোর সাথে আলাপ হয় নি আমার, বুঝেছিস পাগলি?

– কিন্তু, মামনি তোমার ছেলে যদি আমাকে এই বাড়ি থেকে বের করে দেয় তখন কি হবে আমার?
কাঁদোকাঁদো ভাবে নিয়ে বললাম।

– এই বিষয়ে তোর কোনো চিন্তার দরকার নেই। আমি সব সামলে নিব।হয়তো,কিছুক্ষণের মধ্যেই আয়মান চলে আসবে। তুই এত বেশি ভাবিস না তো। তুই যখন হসপিটাল ছিলি তখন আয়মান তোকে একবার দেখতে গিয়েছিল। কিন্তু,ডাক্তার আইসিইউ এর ভেতরে ওকে এলাউ করেনি। পরে ওর অফিসের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়াতে ফিরে গিয়েছিল ঢাকায় আর এখন ছ’মাস পর আসছে।তুই থাক আমি আসছি।

মামনি চলে গেলেন আর আমি ভাবছি অচেনা একজনকে কে এত ভালোবাসা দেয় কেউ যদি মামনিকে না দেখে বিশ্বাস করতে চাইবে না।
এই স্বার্থপর দুনিয়ায় এখনো ভালো মানুষ আছে। মামনির ছেলে অর্থাৎ আয়মানের তো আমাকে দেখতে হসপিটালে যাওয়ার কথা না, তারপরও গিয়েছে। কিন্তু কেন?

আমার ভাবনার মাঝেই গেট খোলার শব্দ শুনতে পেলাম হয়তো আয়মান এসেছে।
আমি উঠে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে বাইরে দিকে তাকাতেই দেখি একটা কালো রঙের কার গেট দিয়ে ঢুকল।
আমার রুমের জানালা দিয়ে বাড়ির মেইন গেটের অংশটুকু দেখা যায়।

মাথায় ও শরীরে খুব ভালো করে ওড়না পেঁচিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।নিজেকে মন মনে বলছি,

-দেখি তো মামনি তার ছেলেকে এতদিন পর কাছে পেয়ে কি করছে?

সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় দেখি মামনি তার ছেলেকে একপাশে জরিয়ে ধরে কুশলাদি বিনিময় করছে।

হঠাৎ, মনে হলো মা ছেলের মাঝে আমি কী করব?
তাই আবারও রুমে ফিরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। এরই মাঝে দু’চোখের পাতা এক হয়ে এলো কখন যে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম বুঝতেই পারিনি?

রাত ১২টা ছুঁইছুঁই, প্রচন্ড পানির তৃষ্ণায় ঘুম ভেঙে গেলো।ধীরে ধীরে উঠে খাট থেকে নেমে রুমের লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম, বেডসাইড টেবিলের জগে পানি নেই।পানি নিয়ে আসতে হলে এখন নিচে যাওয়া লাগবে।উফফ,নিজেকে বকা দিচ্ছি কেন যে অসময়ে ঘুমাতে গেলাম?

মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলাম রান্না ঘরে।ট্যাপ থেকে জগে পানি নিয়ে পিছনে ফিরতেই দেখতে পেলাম ডাইনিং টেবিলে একটি প্লেট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেওয়া আছে।

হয়তো, মামনি আমার জন্য খাবার রেখেছে। কারন, মধ্যরাতে আমার ঘুম ভাঙার বাজে স্বভাব আছে তা-ই।

খাবার শেষ করে রুমে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটি ছায়ামূর্তি বলে উঠলো,

– রাতের খাবারের সময় হচ্ছে ৮টা-১০টা পর্যন্ত। আর এখন কয়টা বাজে?আপনি রাতের খাবার এখন খেলেন কেন?বলুন।

হঠাৎ, করে এভাবে চিৎকার করে কথা বলার কারনে ভয় পেয়েছি।
আর যা বুঝলাম এই ছেলে হচ্ছে আয়মান। তাই উনার কথার উত্তর না দিয়ে একদৌঁড়ে রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলাম। জোরে নিশ্বাস নিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম।যখন খিদে লাগবে তখন খেলেই হয়, রাতের খাবারের নাকি সময় আছে গাল বেঁকিয়ে বললাম। এপাশওপাশ করতে করতে কিছু সময়ের মাঝেই ঘুমিয়ে পরলাম।

অপেক্ষা নতুন এক সকালের।

ঐ দিকে আয়মান হা করে তাকিয়ে আছে অরুণিমার যাওয়ার পথের দিকে।আয়মান কিছু সময় পর মনে মনে বলল,

– এই মেয়ে নাকি অসুস্থ!যেভাবে দৌঁড় দিয়েছে মনে হয় ৪০০ মিটারের দৌড়ের প্রতিযোগিতা আছে।কিন্তু,ও এইভাবে দৌঁড়ালো কেন? আমার কথায় কষ্ট পেয়েছে নাকি অন্ধকারে আমাকে ভূত ভেবে ভয় পেয়েছে? হয়তো ? সকালে সরি বলব ওকে।আর কি অদ্ভুত মেয়েরে বাবা একটা কথার জবাব পর্যন্ত দিল না!

সময় এখন সুবহে সাদিকের,
এই সময় আমার ঘুম প্রতিদিন ভেঙে যায়।

আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি তাই বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে অযু করে রুমে এসে ফজরের নামায আদায় করলাম।
নামাজের শেষাংশে অর্থাৎ মোনাজাতে আল্লাহর কাছে উদ্দেশ্য করে দোয়া চাইলাম যেন দ্রত আমার পরিবারের কাছে আমাকে ফিরিয়ে দেয়।

নামাজ শেষে রান্নাঘরে গেলাম চা বানাতে। চা বানানো হয়ে গেলে দুটো কাপে চা নিয়ে গেলাম মামনির রুমে।
ভেতরে যেতেই দেখি মামনি কুরআন তিলাওয়াত করছে।আমাকে আসতে দেখে মামনি তার কাছে ডাকলো।
এগিয়ে এসে মামনির হাতে চা দিয়ে তার পাশেই বসলাম। মামনি বলছে,

-কি রে রাতে খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পরলি?রুমের দরজা লক করা বিধায় তোকে ডাকলামও না।
যদি তোর ঘুমে সমস্যা হয়।কি হয়েছে মা তোর কি শরীর খারাপ লাগছে? ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব?

মামনির কন্ঠে ছিল আমার জন্য উদ্বিগ্ন, তাই মামনির হাত ধরে বললাম,

– তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছো। আমার কিছুই হয় নি এমনিতে ঘুমিয়ে পরেছিলাম।আর তুমি যে রাতে আমার জন্য টেবিলে খাবার রেখেছিলে না। রাতে ঘুম ভাঙার পরে নিচে এসে দেখি টেবিলে খাবার রাখা আছে তাই খেয়ে ফেলেছিলাম।

মামনি আমার কথা শুনে হয়তো সন্তুষ্ট হতে পারে নি।আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে রইলেন।তাই আমি হালকা করে মামনি ডানগালটা টেনে বললাম,

-মামনি আমি সত্যি বলছি। তোমার ছেলেও আমাকে খাবার খেতে দেখেছে।পারলে জিজ্ঞেস করো উনাকে আমি খেয়েছি কিনা? চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে খাও তো।

– তুই অত রাতে ওকে কিভাবে দেখলি?
আর ও তোকে চিনতে পেরেছে কীভাবে? কিছু বলেছে ও তোকে?

– বলেছে রাতের খাবারের সময় হচ্ছে রাত ৮টা-১০টা পর্যন্ত।এখন কেন খাচ্ছি?যেভাবে চিল্লিয়ে বলেছিল মামনি আমি পুরো ভয়ে শেষ! এক দৌঁড়ে উনার সামনে থেকে রুমে চলে আসি।
কিন্তু, মামনি তোমার ছেলে আমাকে চিনেছে কী করে? কারন এর আগে তো কখনো তার সাথে আমার দেখা হয়নি,বলেই কাপের বাকি চা টুকু শেষ করলাম।

-তোর মনে আছে রিমির জন্মদিনের দাওয়াতে তোর, আমার আর রিমির একসাথে তোলা একটি সেলফি ছিলো।ওই ছবি একবার আয়মানকে দিয়েছিলাম,তাই হয়তো তোকে চিনতে পেরেছে।

– কিন্তু, মামনি আমার ছবি মানে, তুমি কেন দিয়েছো আমার ছবি তোমার ছেলেকে?
তুমি জানো না আমাকে কেউ দেখুক তা আমার কাছে ভালো লাগে না।
কিন্তু, গতকাল রাতে হলরুমে হালকা আলো ছিল বিধায় আমাকে ততটাও স্পষ্ট দেখতে পায়নি তোমার ছেলে।

– আচ্ছা, বাবা কাউকে দিব না তোর ছবি চল
এখন, দুজনে মিলে নাশতা বানিয়ে ফেলি।

– তুমি যাও আমি কাপ দুটো নিয়ে আসছি।

– আচ্ছা, তাড়াতাড়ি আসিস।

জানো গতকাল আমি কেন নিচে এসে খাবার খাইনি? শুধুমাত্র তোমার ছেলের সাথে আমার দেখা হবে বলে। আর, এখন কি না শুনছি আমার ছবি আরও আগে দেখে বসে আছেন তিনি।থাক
মামনিকে বললে হয়তো কষ্ট পাবে তাই আর নাই বা বললাম। মনে মনে কথা গুলো ভাবছে অরুণিমা।

দু’জনে মিলে নাশতা বানানো শেষ করলাম। সব খাবার টেবিলে গুছিয়ে চলে এলাম রুমে ফ্রেশ হতে।কিছু সময় পর রুম থেকে বের হলাম সকালে খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্য। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় দেখতে পেলাম, মামনি উনার ছেলেকে প্লেটে নাশতা তুলে দিচ্ছেন।

তাই আমি চুপচাপ রুমে চলে আসলাম, কিছুক্ষণ পর নাশতা খেয়ে নিব এখন থাক।

ঐদিকে,

আয়মান নাশতা খাচ্ছে আর ওর মা ওকে খাবার এগিয়ে দিচ্ছে।আয়মানের মায়ের মনে পড়লো অরুণিমার কথা,রাতে নাকি আয়মান ওকে খাবার খেতে দেখেছিল।তাই, উনি আয়মানকে জিজ্ঞেস করছেন,

-কী রে রাতে নাকি তুই আরুকে খাবার খেতে দেখেছিস?ও কি সত্যি খেয়েছিল?
জানিস, গতকাল ওর জন্য টেবিলে খাবার রাখতে আমার মনে ছিল না! তাহলে টেবিলে খাবার রেখেছিল কে? তুই রেখেছিলি?

-মা, আসলে তুমি মোবাইলে আরুর যে মধ্যরাতে খাওয়ার অভ্যাস আছে প্রায়ই আমাকে বলতে।
কিন্তু, গতকাল রাতে ডাইনিং টেবিলের দিকে খেয়াল করে দেখি তুমি ওর জন্য খাবার রাখো নি। হয়তো তোমার মনে ছিল না খাবার রাখতে? তাই আমিই রেখে দিয়ে ছিলাম।খাবারগুলো টেবিল গুছিয়ে রাখার পর আমি আমার রুমে গিয়েছিলাম মোবাইল আনতে। এসে দেখি সে খাবার খেয়ে চলে যাচ্ছে। তাই ওল,আরুকে সামনে পেয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেনো সে সঠিক সময়ে রাতের খাবার খায় না? আর ও কী না আমার কথার জবাব না দিয়ে দৌঁড়ে চলে গেলো!
বলো তো,মা কথার উত্তর না দিয়ে চলে যাওয়া কি ঠিক হয়েছে ওর ?

আর সকালের নাস্তাটাও ঠিক সময়ে এসে করছে না। শেষের কথাগুলো মনে মনে বলল আয়মান।

– আসলে আরু, ছেলেদের সামনে কম্ফোর্ট ফিল করে না।তাই তোর সামনে আসছে না,আমাকে আজ সকালে জিজ্ঞেস করেছে ওকে তুই কীভাবে চিনতে পেরেছিস? আমি কোনোভাবে ওকে বুঝিয়ে বলেছি যে,তোর কাছে আমিই ছবি দিয়েছিলাম আমার, রিমি আর ওর।তাই তুই ওকে চিনতে পেরেছিস।

– মা, এখন ও আমার সর্ম্পকে কি ভাবছে বলো তো? আয়মান হতাশাগ্রস্থ কন্ঠে বলে উঠলো।

– আয়মান, তুই কি আরুকে পছন্দ করিস বাবা?

আয়মান ওর মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে এহেন প্রশ্ন শুনে, কি জবাব দিবে আয়মান?

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here