Accounting Teacher(Season2),Part-1,2

Accounting Teacher(Season2),Part-1,2
Written_by_Ritu_Rosni
part-1
.
ক্রিং ক্রিং ক্রিং,,,,
—ঘুম ঘুম চোখে,,হ্যালো!(আমি)
—রাখ তোর হ্যালো!!এখন কয়টা বাজে সেই খেয়াল আছে তোর??(ঊর্মি)
–কয়টা আবার,৭ টা ৮ টা হবে হয়তো।কেনো কি হয়েছে বলতো??(আমি)
—কি হয়নি তাই বল,,সেই ১ঘন্টা ধরে কল দিতেই আছি,নো রেসপন্স।আজকে যে এক্সাম আছে সেটা কি ভুলে গেছিস??ঘড়ি টা একটু দেখ তো আগে(ঊর্মি)
–৯.৩৫ মিনিিিিট,,,
আল্লাহ ৯.৩৫ বেজে গেছে,,আমি রেডি হবো কখন??আর ভার্সিটিতে পৌছাবো কখন
ঐ এনাকন্ডা টা তো আমারে আজ কুপিয়ে কিমা বানিয়ে খাবে।
দোস্ত প্লিজজ তুই ৫ মিনিট খাড়া আমি ২০ মিনিটে আইতেছি
বলেই মাথায় এক থাবড় পায়ে এক থাবড় দিয়ে রেডি হলাম কোনো রকমে।
রেডি হয়ে আসতে আসতে ১০.১০ বেজে গেছে।
,
—এতক্ষণে তোর আসার সময় হলো???কুত্তি,না আসলেও পারতিস,
এখন তোর জন্য আমারেও ঐ জল্লাদ স্যারের বকা শুনা লাগবে।(ঊর্মি)
—এই চুপ থাক তোহহ,,প্যাঁচাল পাড়িস না কানের কাছে।
ঐ মুখ পোড়া লাল হনুমান,কালা কুমির, বিলাতি ইদুর,অস্ট্রেলীয়ান গরু,আফ্রিকান জঙ্গলি, বিট্রিশ লম্বু কি করবে হুমমমম???
তুই আয় তো আমার সাথে দেখি কেডায় কি কয়,,
(মনে মনে বলছে,উর্মি রে তো কলেম আমি।আমারি তো ভয় করছে না জানি জল্লাদেরর বংশটা ক্লাসে ঢুকতেই দেয় কিনা।আর এক্সাম না দিলেও পানিশমেন্ট এর ব্যবস্থা আছে।)
দোয়া দরুদ সব পড়ে বুকে ফুঁ দিয়ে আস্তে আস্তে করে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি,,কি ভাবছেন আন্নেরা??ঐ ডেভিল, সাপিনীর বর টা আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আছে???
আরে নাহহহহ,,বৃষ্টি পড়েছে রাত্রে হাল্কা ঐ রাস্তা পিচ্ছিল করে রেখে গেছে আরকি।আর আমিও কানার মতো হাটতে গিয়ে পড়িতেছিলাম কিন্তু আমার বান্ধপ্পি মধুর জন্য আর পড়া হলো না।
—ঐ কুত্তি দেইখা চলতে পারস না??আমি যদি এখন না ধরতাম??তাহলে কি হতো বুঝছোস??(মধু)
–ঐ শাকশুঁটকি!!তোরে কি মুই ধরতে কইছিলাম??নাহয় পড়ে কোমর টাই ভাঙ্গতো,তাহলে অন্তত কদিন ভার্সিটিতে আসার প্যারা থেইক্কা মুক্তি পেতাম।
এল্যা ক তো বইন,কিচ্ছা ডা কি??তুই লেট করছিস ক্যা??(আমি)
—ইয়ে মানে দোস্ত(মাথা চুলকিয়ে)
—শালা সারারাত জিজুর সাথে প্রেমালাপ কইরা এহন আইছে।(উর্মি)
–হ বুঝবার পারছি।তয় তোরা এহন কি করবি?এইহানেই খাড়া থাকবি নাকি??অলরেডি ১০.২০ বেজে গেছে।
এক্সামের সময় কি আর আছে???চল তার পরেও ঘুরে আসি।
–হু,চল যাই।(মধু)
,
–দেখ সবাই শুধু চুপচাপ লিখেই চলেছে।কুনো কতা নাই,,ডেভিল টা কই??উঁকি দিয়ে দেখলাম নাহ,নেই তো কোথাও,,,
তারপরেও সিওর হওয়ার জন্য,,সুমি,,ঐ হাম্রি আস্তে লেখ।
হাত ভেঙ্গে যাবি।(আমি)
———(সুমি)
—কিরে চুপ করে আছিস ক্যান??আচ্ছা, ঐ জল্লাদের বংশ, থুক্কু নেংটি ইদুর,ধলা চিকা থুক্কু বজ্জাৎ সার টা কই রে???
————-(সুমি)
—-ঐ ছেমড়ি মুখে কি কুলু পেতে রেখেছিস নাকি???
কতা ক,আরে ঐ খবিশ ব্যাটারে ভয় পাওয়ার কি আছে?? এই দেখ আমারে।আমি ভয় পাইনা ঐ ব্যাটা এনাকন্ডা টারে।
পেছন থেকে মধু বার বার জামা টেনে ধরছে,,ইঙ্গিতে কিছু বলার ট্রাই করছে বাট আমি পাত্তাই দিচ্ছি নাহহ।
না এই ছেড়ি তো খুব জ্বালাচ্ছে আমায় দেখতেছি।কি হয়েছে কি??? এতো টানাটানি করছিস ক্যাাাা,,,,,,,,,,,???(স্বয়ং যমরাজ আমার সামনে দাড়িয়ে)
—কি হলো??চুপ হয়ে গেলা কেনো???কি যেনো বলছিলে না আমায়???আমি সার না???আমি বজ্জাৎ সার তাই না???আরো কি যেনো বলছিলে না???নেংটি ইদুর আমিিিিিিিি???(দাঁতে দাঁত চেপে)
—ক,,,,কইই স,স্যা,,ররররররর???আপনি তো লাল হনুমান,থুক্কু কালা কুমির, আফ্রিকান কাইল্লা গ,,,রুুুুুুু বলেই ঢোক গিলছি(আমি)
—আমি আফ্রিকান কাইল্লা গরু নাহহহহহ(শুভ্র)
–নাতোহহহ সার থুক্কু স্যার!আপনি কাইল্লা গরু হবেন কিনু??আপনি তো ধলা গরুুু,,,থুক্কু বলেই মুৃখে হাত দিছে ঋতু,,,,
আমার মুখে কিছু আটকায় না।আসলে আমি চুপ করে থাকতে পারি না,মনে হয় কথা আমার পেটের মধ্য পোকার মতো কিলবিল করছে আর তখন আমার ঠোঁট দিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।এই ডেভিল টা তো আমার উপ্রে এটম বম হয়ে আছে।এমনিতেই লেট করে আসছি তার উপর আবার ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা শুরু করে দিছি।যে ভাবে রাগে ফুঁসছে সাপের মতো মনে হয় আমায় এখনি গিলে খাবে।(আমি)
—-কত্তবড় বেয়াদব,,এমনিতেও লেট করে আসছে,তার উপর আবার আমায় সার বলছে,,মনে হয় কানের নিচে দেই চারটা লাগিয়ে।কিন্তু যেই ছিৎকাদুনে তখন আবার সারা কলেজ কান্নার বন্যা বানিয়ে ফেলতো।এই মেয়েদের চোখে পানির ট্যাং মনে হয় বসানো।অবশ্য টাহা লাগে না বিনামূল্যে ছাড়ে চোখ দিয়ে।
মধু,আর উর্মি এই নাও প্রশ্নপত্র যাও নিজ সিটে গিয়ে এক্সাম দাও।(শুভ্র)
—আর আমি?????
—তুমি কান ধরে এক পায়ে খাড়া থাকবে ২০ মিনিট।তারপরে এক্সাম দিতে পারবা।আর যদি তা না করো তাহলে অন্য পানিশমেন্ট এর ব্যবস্থা করি।
কি করবো নাকি?????(শুভ্র)
—না নাহহহ থাক।এক পায়ে খাড়া থাকা যায় নাকি???একবার নিজেই করে দেখুক নাহ,,কিরাম কষ্ট লাগে এক পায়ে খাড়া থাকতে।২ মিনিট ই থাকা যায় না আর ২০ মিনিট,,(আমি)
—আমি তোমার মতো লেট করে আসি নাহহ,যে আমি কান ধরে দাড়িয়ে থাকবো।ভুলে যেওনা তুমি আমার স্টুডেন্ট আর
আমি তোমার টিচার।চুপচাপ কান ধরে দাড়ি থাকো,নইলে ৪০ মিনিট করে দিবো।বলেই শয়তানি একটা হাসি দিয়ে ক্লাস রুমে চলে গেলো ডেভিল টা।
মনচায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হাড্ডি মাংস আলাদা করে কুতকুত খেলি।এক মাঘে কখনো শীত যায় না,সময় আমারো আসবে তখন বুঝাবো মজা,কত ধানে কতো গম,,
,
উফফফহহহহহহ,,,আর পারছিনা।এভাবে আর কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হবে কে জানে।
আমার পা লেগে যাচ্ছে তোহহ,,(আমি)
—দূর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ওর কার্যকলাপ দেখছি আর হাসছি।কত্তবড় ফাজিল,কান ধরে দাড়িয়ে আছে তবুও মুখের হাসি কমে না।পড়াশুনা তো করবেই নাহহহ,দিন দিন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে।এতো পানিশমেন্ট দেই,গায় লাগে না নাকি,
হয়েছে এবার সীটে গিয়ে বসতে পারো।আর দয়া করে আগামীকাল থেকে টাইমলি আসার ট্রাই কইরো।নইলে তো বুঝতেই পারছো।
—হুহহহহহহহহহ,,বুঝতে পারছি।প্রশ্ন নিয়ে লেখা শুরু করে দিলাম।সময় নেই এখন বসে থাকার।কি লিখছি নিজেও জানিনা।একটা Journal, Ledger, Trial balance+ Equation করছি মাত্র ১০ মার্কস করেই বসে আছি।কারণ আর কিছুই পারতেছি না।এই সব ম্যাথ আসবে না বলে ফেলে রাখলাম আর এ গুলাই আইছে সব।
সব কয়টা শাঁকচুন্নি, শেওড়া গাছের পেত্নি,সাপিনী গুলা ম্যাথ করেই যাচ্ছে করেই যাচ্ছে খালি।আমিই একমাত্র ব্যাক্তি যে বসে বসে কলম চিবুচ্ছি।এছাড়া আর কি করবো।কিছু তো কমন ও পড়েনি।সব গুলা দাগানোর ভেতর থেকেই আসছে।
—ঐ,,,কলম দিয়ে খুচাচ্ছি,,,
—কি হইছে???কলম দিয়ে খুচাচ্ছিস ক্রে??(উর্মি)
—দোস্ত প্লিজজজ একটু হেল্প কর,,আমি পারতেছি নাহহ,,(আমি)
–কেন দেখা যাচ্ছে না এখান থেকে???পারলে দেখ না পারলে বসে বসে মুড়ি খা।(উর্মি)
—ঐ হাম্রি তুই আইনা দে বসে বসে খাই,,আর এমন করে লিখিস ক্যা??মনে হচ্ছে তোর লেখার মধ্যে তেলাপোকা হাটঁছে।(আমি)
—কিহহহহহ!!এত্তবড় কথা???ঐ দুর হ,,দুর হ আমার সামনে থেকে।কেনো রে???আমি কি বলছি তোরে??বলেই ঢেকে করা শুরু করলো উর্মি।
—ধুররররর,,আমি ও নাহহহ,,একজনকে না খোচালে মনে হয় পেটের ভাত হজম হয় না,,এখন কি করিিিিিিি,,
আবার মধুকে খোচানো শুরু করলাম,,এই শাকশুঁটকি(মধু চিকন তোহহ,তাই আমি আবার শাকশুঁটকি বলেই ডাকি,আর ও তো তখন ক্ষেপে লাল মরিচের মতো বম হয়ে থাকে।হেব্বি কিউট লাগে তখন।)থুক্কু মধু বেপ্পি কেরাম আছ্যেও??
—দেখছিস না কেরাম আছি??নাটক করিস???চুপচাপ বসে থাক নইলে উষ্টা খাবি কলেম।(মধু)
—এরুম করিস কিনু বনু,,তুই না আমার মিষ্টি পাখি(পাম দিয়ে,ডাইনির মতো লাগে কুত্তি তোরে)
একটু দেখা না।(আমি)
—পারবো নাহ,,তুই সড় তোহহ।তোর জন্য শুভ্র স্যারের পানিশমেন্ট খাওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই।(মধু)
—ওকে সরিিিি।(একটা মলিন মুখ করে)
—থাক আপনাকে আর মন খারাপ করতে হবে না দেখেন।ড্রামাকুইন একটা।(মধু)
—হুহহহ,,পেত্নি কুনহানকার।(আমি)
,
—-কত্তবড় সাহস,,এক্সাম দেওয়া বাদ দিয়ে বসে বসে গল্প করতেছে।দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
ঋতু,ঋতু,, স্ট্যান্ড আপ!আই সে স্ট্যান্ড আপ!!(শুভ্র)
—জ্বি স্যার!!(আমি)
—এখানে এসে আমার সামনে বসে এক্সাম দাও।গল্প করা বের করছি দাড়াও,,মনে মনে বলছে শুভ্র,,
—এমনিতেই কিছু পাড়ছি না,,মধুর টা দেখে দেখে করছিলাম তাও বজ্জাত টা তুলে দিলো।মন চাচ্ছে ওরে ঐ ইছামতির পচা পানিতে গোসল করাই।ইয়াক😷
,
—তাড়াতাড়ি লেখা ফিনিশড করো,সময় খুব কম।আর মাত্র ৫ মিনিট টাইম আছে।
কিছুক্ষণ পরে,,টাইম ইজ ওভার।(শুভ্র)
,
খাতা নিয়ে গেলো ঐ জল্লাদ সার টা।২-৩ টা ম্যাথ করছি মাত্র।কম মার্কস পেলেও পানিশমেন্ট আছে তার জন্য।এসব ভাবছি মনে মনে তখনি,,
—হারামি,সারারাত গল্প পড়বে আর প্রতিদিনই লেট করে ঘুম থেকে উঠবে।মনে হয় আমাদের ওর বরের কেনা সার্ভেন্ট পাইছে।(উর্মি)
উফফফহহহ!!কান টা একদম ঝালাপালা করে দিলো এই ডাইনি গুলা।এদিকে ক্ষিদেয় আমার পেটের মধ্য ইদুর রেস দেওয়া শুরু করছে।
চল তো ক্যান্টিনে যাই, আগে কিছু খাবো।(আমি)
—হু,চল।আমিওও সকালে এই পরিক্ষার জন্য খেয়ে আসিনি।(উর্মি)
,
সবাই মিলে ক্যান্টিনে বসে রতন মামার গরম গরম সামুসা খেলাম,,
খাওয়ার শেষে বিল দেওয়ার সময়,,,
মধু বিল টা দিয়ে তাড়াতাড়ি চলে আয়।(আমি)
—আমি বিল দিবো কেন???
—কেন?তুই কি খাস নি???আর তোর না আমাদের ট্রিট দেওয়ার কথা ছিলো,তাড়াতাড়ি দিয়ে জুবলিতে চলে আয়।জানি পেত্নি টা চিল্লাচ্ছে তাতে আমার কি??সকাল সকাল একটা বাশ দিয়ে চলে এলাম।অবশ্য এমুন করতে আমার ভালোই লাগে।
,
—কিরে আপু!!এক্সাম কেমন দিলি??আর কই ছিলি এতক্ষণ তোরা??ক্লাস শেষে তো তোদের পেলাম নাহ।(রবিন আমার ফ্রেন্ডস,আপু বলেই ডাকে)
—জাহান্নামের চৌরাস্তায় গেছিলাম, তাতে তোর কি??একটা হাম্রি ও আমার সাথে কথা বলবি না বলে দিলাম।(আমি)
—এই শালা,আমরা আবার তোর কোন পাকা ধানে মই দিলাম রে??সকাল সকাল এতো ক্ষেপেছিস কেন??(আশিক)
—দোস্ত আমার মনে হয় কি জানিস!ঋতু ঐ লম্বু শুভ্রের রাগ টা আমাদের উপর খাটাচ্ছে।ওরে কেউ ধরে জুবলির পানিতে চুবিয়ে ঠান্ডা কর।(অপু)
–এতক্ষণ মনেই ছিলো না ঐ নাইজেরিয়ান উগান্ডা,বিলাতি ইদুর,আফ্রিকান জঙ্গলি, ধলা চিকা,সাপিনীর বরের কথা।বলেই রাস্তার দিকে যাচ্ছিলাম।
—কিরেে!!কই যাস ঐ দিকে??পাগল টাগল হলি নাকি???(আশিক)
—তোরা থাক আমার কাজ আছে একটা।এখনি চলে আসতেছি।আপ্পু তোরে এত্তগুলান থ্যাংকু,,তুই আমারে বিরাট একখান ইম্পর্টেন্ট কথা মনে করাই দিছস।(অপু কে আমি আপ্পু বলেই ডাকি।)
—ওরে কেউ আমারে ধর,পড়ে গেলাম,,এই ছেড়ি মনে হয় সত্যিই পাগল হয়ে গেছে।ওরে আমি আবার কি মনে করাই দিলাম।(অপু)
,
কলেজ এসে নিচে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।
.
.
.
.#Accounting_Teacher(Season2)
#___Part___2
#Written_by_Ritu_Rosni
.
.
—ওরে কেউ আমারে ধর,পড়ে গেলাম,,এই ছেড়ি মনে হয় সত্যিই পাগল হয়ে গেছে।ওরে আমি আবার কি মনে করাই দিলাম।(অপু)
কলেজ এসে নিচে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।হঠাৎ স্যারের সদ্য কেনা নিউ বিএম ডব্লিউ কার টা দেখে মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধির উদয় হলো।
আমারে বকা দেওয়া নাহহ,,ব্যাটা আস্ত বড় একটা শয়তান।দাড়াও চান্দু!এইবার বুঝবা মজা😂
ঋতুর সাথে পাঙ্গা নেয়া নাহহহ,এই বার হারে হারে টের পাবা।
,
স্কার্ফ থেকে কয়েকটা পিন খুলে টায়ারে শপাং শপাং করে ঢুকিয়ে হাওয়া ছেড়ে দিলাম।
এবার বাড়ি যায় কেমনে দেখি,নবাব পুত্র আমার তো হেটে যেতে পারে নাহ,প্রেস্টিজে লাগে উনার।
,
ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরবো তাই পার্কিং থেকে গাড়ি বের করছিলাম।কি ব্যাপার “!
গাড়ি স্টার্ট নেয় না কেন?বার বার স্টার্ট দেই বাট নেয় না।
ওহহ শীট!বলেই হাতের তালুতে বারি দিলো শুভ্র।
এখান থেকে ওর বাসার দূরত্বও অনেক।বাস,অটো বা রিক্সা তে ওর যাওয়ার অভ্যাস নেই।ছোট থেকেই নিজেদের গাড়ি করে চলাফেরা করে।
আসার সময় ও তো ভালোই ছিল গাড়ি টা।হঠাৎ করে কি হলো কে জানে।

কি হয়েছে দেখার জন্য নিচে নামলেই দেখি টায়ার পামচার হয়ে আছে।কেউ টায়ারে সূচালো কিছু দিয়ে আঘাত করে হাওয়া বের করে দিয়েছে।
মাথায় কিছু ঢুকছে না,কে এসব করলো? আর করেই বা কি লাভ হবে তার?চারিপাশ টা ভালো করে গোয়েন্দাদের মতো ঘুরে ফিরে দেখছে শুভ্র।যদি কোনো ক্লু পাওয়া যায়!!
চারপাশ ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করে একটা সাদা স্টোনের পিন(মেয়েরা হেজাব বাধার সময়ে সাধারণত ব্যবহার করে থাকে।) দেখতে পেলো গাড়ির নিচে।
এটা কি😒আর এখানেই বা এলো কোথা থেকে??
শুভ্র বাসায় কল দিয়ে ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে আসতে বলছে।
এটা সার্ভিসিং এ পাঠিয়ে ঐটা নিয়ে ও বাসায় চলে যাবে।
.
–কিরে?তুই ঐভাবে দৌড়ে কই গেলি??আর কিসের কাজ ছিলো রে তোর?(উর্মি)
–ছিলো রে,,বলছি তোদের।(আমি)
–হু,বলে ফেল তো শুনি।(মধু)
তারপরে আমি সবাইকে বললাম স্যারের গাড়ির টায়ার লিক করার কথা।আমার কথা শুনে তো ওদের যায় যায় অবস্থা।চোখ কোটরের মধ্য থেকে মনে হয় এখনি বেরিয়ে আসবে একেকটার।
–তুই এসব কি করেছিস??একবার যদি শুভ্র স্যার জানতে পারে তো কেল্লাফতে করে দিবে।আমাদের আর আস্ত রাখবে না ঐ ডেভিল টিচার টা।এমনিতেই আমাদের দেখতে পারে না।
আমি আর বাপু তোদের সাথে নেই।(রবিন)
–তো যা নাহহ?তোরে কি ধরে রাখছি আমি? যত্তসব👿
আমি মরি আমার জ্বালায়,,
যতক্ষণ না নিজের চোখে জল্লাদের বংশটার অসহায় মুখ টাকে দেখছি ততক্ষণ শান্তি নেই আমার।যখন দেখবে ওনার পছন্দের গাড়ির এই অবস্থা।
না জানি উনার রিয়েকশন টা কেমন হবে।ইশশশ!!যদি নিজের চোখে দেখতে পারতাম।😊
কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নহে,ব্যাটা বুঝে যেতে পারে।
কিন্তু আমি সেই কৌতুহল টাকে দমিয়ে রাখবো আর কতক্ষণ এভাবে😭
,
—–উফফফহহহহহ!!এই পাবনার শহরেও দেখি এখন ঢাকার মতো জ্যাম বেধে থাকে।এতো জনসংখ্যা,এতো গাড়ি ঘুরা।😰মাঝেমাঝে মনে চায় বাড়ি ঘর বেইচা উগান্ডায় চলে যাই।কিন্তু আপসুস যাইতে পারি না।
এস.এস.সি পরিক্ষা চলছে সম্ভবত, আর মাত্র এক্সাম শেষ হলো মনে হয়।সব পরিক্ষার্থীকে ফাইল হাতে বের হতে দেখা যাচ্ছে।আর যার কারণেই এত্তো জ্যাম রাস্তায়।ধুরররর বোরিং,,,,,এভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে??
এফএম টা চালু করে দিলাম।
সময় টা কেটে যাবে।চোখ টা বন্ধ করে রেডিও শুনছিলাম মনোযোগ দিয়ে।এতোই মনোযোগ দিয়ে শুনছি যে জ্যাম ছেড়ে গেছে কখন সেটা বুঝতেই পারি নি।
আল্লাহ এতো মনোযোগ যদি পড়াশুনার কাজে লাগাইতাম তাইলে নির্ঘাত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হতে দেরি হতো না।😍
এদিকে পেছন থেকে সব গাড়ি ওয়ালা হর্ন বাজিয়ে বাজিয়ে কানের বারো টা বাজিয়ে দিলো আমার।
মনে হয় খুব ক্ষেপে আছে।তাড়াতাড়ি গাড়ি টান দেই নইলে খবর করে দেবে পাব্লিক আমার।
ওহহহ নোহহ!!ভাগ্যিস ব্রেক কষেছিলাম নইলে খবর ছিল😰এতক্ষণে মার্ডার কেসের আসামি হয়ে জেলে থাকতে হতো।
গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে গিয়ে,,,,,,,,,,
—-সরিিিিি সরিিিি!!আপনি যে এভাবে সামনে এসে পড়বেন বুঝতে পারি নি আমি।
আপনার লাগে নি তো কোথাও???(অভি)
—-নো নো,ইটস ওকে।It’s only my fault.
আমারই উচিৎ ছিল গাড়ি দেখে পার হওয়া।আপনাকে এতো উত্তেজিত হতে হবে না আমার লাগে নি তেমন।
একটু ছিলে গেছে,,(শোভা)
–চলুন সামনেই ডক্টরের দোকান আছে।ক্ষত টায় ঔষুধ লাগাতে হবে।
–উহু,আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।আমি একাই যেতে পারবো।(শোভা)
–উহু,নো এক্সকিউজ।ক্ষতটায় ইমিটেডলি ঔষুধ লাগাতে হবে।নইলে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।আর এটুকু না করতে পারলে গুইল্টি ফিল হবে।
—ওকে!ওকে চলুন।(শোভা)
মেয়েটাকে সাথে করে হাসপাতাল রোড থেকে ডক্টর দেখিয়ে ক্ষত টায় ঔষুধ লাগিয়ে নিলাম।অনেক খানি কেটে গেছে।
Actually,মেয়ে টা গাড়ির ড্রাইভ করার সময় অপজিট সাইড থেকে হুট করে এসে পড়ে আমার গাড়ির সামনে,আর আমি জোরে ব্রেক কষায় যা হওয়ার তাই হলো।
,
—থ্যাংকস দিয়ে আপনাকে আর ছোট করতে চাই না।
–আরে না নাহহ ইটস ওকে।
তো চলুন আপনাকে বাসা অব্দি ড্রপ করে দেই।
ইটস ওকে।তার আর দরকার নেই।আমি একাই যেতে পারবো।আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।
এমনিতেই আপনার গাড়ির সামনে পরে বিপদে ফেলতেছিলাম।(শোভা)
–কি যে বলেন না।বিপদে ফেলবেন কেনো?।যাই হোক চলুন!বাসা পর্যন্ত ড্রপ করে দিয়ে আসি।ভয় নেই আপনার বাসা চলে যাবো না।(অভি)
–ভয় পাবো কেনো?ওকে চলুন।(শোভা)
গাড়ি টা ঘুরিয়ে চলতে শুরু করলাম।
,
এতক্ষণে খেয়াল করলাম মেয়ে টাকে।
হাল্কা ছিপছিপে গড়নের, উজ্জ্বল শ্যাম বর্নের মেয়েটি কে চোখে মোটা করে কাজল,খোলা চুলে সাদা লং চুড়িদারে বেশ ভালোই লাগছে।দেখে তো মনে হয় বয়স ১৬/১৭ আনুমানিক।
উফফহহহহহ কখন থেকে সেই মেয়ে টা মেয়েটা করছি।এখনো তো নাম টাই জানা হলো না।
,
উহুম,উহুমম!!গলা টা ঝাকিয়ে কথা বলার জন্য প্রস্তুত করে নিজেকে।
ইয়ে মানে এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কেউ কারো সম্পর্কে কিছুই জানতে পারলাম না।
—হুমমম,আমি শোভা।শোভা আহমেদ।এবার ইন্টার ১ম বর্ষ, সরকারী মহিলা কলেজ।
মা বাবার একমাত্র রাজকন্যা অবশ্য বড় ভাই আছেন যার কলিজা আমি।😍এবার আপনি বলুন
–তা তো অবশ্যই বলতে হবে।আমি অভি,
বাসায় মা আছেন শুধু,আর বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন।
–নাইস টু মিট ইউ,
–মি টু,,
,
স্টপ!স্টপ দ্যা কার।এটাই আমার বাসা।
গল্প করতে করতে কখন যে নিজ গন্তব্যপথে চলে এসেছি বুঝতেই পারি নি।গাড়ি থেকে নেমে।
—চলুন ভেতরে যাবেন।কফি খাবেন,,
–নো ইটস ওকে।আমার একটু তাড়া আছে,অন্য আরেক দিন।
–উমম!!অন্য আরেকদিন আপনাকে পাবো কোথায়?(শোভা)
—তাও ঠিক!ওকে আমার কন্টাক্ট নাম্বার টা রাখুন।
–হু,আইডি আছে??(শোভা)
–সরি!বুঝলাম না!
–বুদ্ধু!ফেসবুক আইডি আছে না আপনার??(শোভা)
—হুমম
—ওকে,নাম বলুন।
—অভি চৌধুরি।
–😱😱ইয়ার্কি মারছেন আমার সাথে???(শোভা)
—আজব তোহ!আপনি কি আমার বেয়াইন যে ইয়ার্কি করুম আপনার লগে।
—আপনি সত্যিই অভি চৌধুরি?মিন সেলিব্রেটি রাইটার অভি চৌধুরি।
–হুমম,আমিই অভি চৌধুরি।তবে সেলিব্রেটি বা রাইটার নই।শখের বসে দু একটা গল্প লেখে থাকি।
কিন্তু আপনি জানলেন কিভাবে???(অভি)
—আমি আপনার সব গল্পই পড়েছি।বিশ্বাস করুন একবার না,,একেকটা গল্প বার বার পড়ি।আপনি এতো নিখুঁত করে কিভাবে লেখেন???আপনি কি জানেন আমি আপনার কত্ত বড় বিশাল ফ্যান??
—ওহহহ রিয়েলী??জানতাম না তোহহ,,
–তা আপনার আইডি নেম কি??(অভি)
–বলবো না,,
–কেনো??আমি বললাম না????(অভি)
— #কৃষ্ণ_কলি
—😱😱আপনিই সেই বদ গুনধর পাঠক??যে আমায় ইনবক্সে হুমকি দেন??
—হুমমম,,ঠিকই তো আছে।আপনি গল্প দেন না কেনো এখন??
–সময় হয় না তাই,,
—সময় বের করুন।
–চেষ্টা করবো।আচ্ছা, আজকের মতো বায়।
–হু,বায়।
,
আমার তো খুশিতে লুঙ্গী ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে যে আমি আমার ক্রাশ অভির সাথে এতক্ষণ ছিলাম।😍
আচ্ছা, এটা আমার কল্পনা নয় তো?চোখ খুললেই হারিয়ে যাবে?হাতে চিমটি কেটে,,ওমাগোোোোোোোোোো,,,,,
তারমানে এটা আমার স্বপ্ন নয় বাস্তব।ইশশশশশশ😍
আমার এতো খুশি লাগে ক্রে,,,,(শোভা)
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here