পূর্ণিমা সন্ধ্যায়,পর্ব-১০,১১

পূর্ণিমা সন্ধ্যায়,পর্ব-১০,১১
Tithee sarker
পর্ব-১০

নিকশকালো রাত।বাড়ির পাশের ঝোঁপ থেকে ঝি ঝি পোকার আওয়াজ আসছে।গাছের পাতা থেকে টুপটাপ শিশির পড়ছে।চারদিকে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা।
এই কনকনে শীতে,ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে শক্তি। দাঁড়িয়ে আছে বললে ভুল হবে,তাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।তার হাত মুখ সবই কাপড় দিয়ে বাধা।

ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে রক্তিম।এখন কী হবে তার সাথে?কী ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে তার জন্য?
এসব ভেবে এই শীতের মাঝেও তার ঘাম ছুটে যাচ্ছে।
রক্তিম ওর হাত ধরে ওকে ছাঁদের রেলিঙ ঘেসে দাঁড় করায়।কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,

“আমার কথা অমান্য করে তুই গুরুতর অপরাধ করেছিস,এর শাস্তি তো তোকে পেতেই হবে।”

এই বলে শক্তিকে ছাঁদ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় রক্তিম। শক্তি শুধু চোখ বড়ো বড়ো করে দেখে যে সে নিচে পড়ে যাচ্ছে। তার আর কিছুই করার থাকে না।

নাহহহহহহহ!

বলে এক চিৎকার দিয়ে বিছানায় ধরফরিয়ে উঠে বসে শক্তি। এখনও তার শ্বাস উঠানামা করছে ভয়াবহ ভাবে।

“এটা স্বপ্ন ছিলো!”ভাবে শক্তি।

এতো ভয়াবহ স্বপ্ন! তার কলিজাটা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে খাঁচা ছেড়ে বেরিয়ে গেছে।
বিছানার পাশের টেবিল থেকে জল খেয়ে নিজেকে কিছুটা স্থির করলো সে।নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে সন্ধ্যা ছয়টা বাজে।বিকেলে ছাঁদ থেকে এসে যে ঘরে ঢুকেছিলো আর বের হয়নি।কে জানে বের হলে কি হবে।একটু আগে দেখা স্বপ্নটা যদি সত্যি হয়ে যায়।মনে মনে ভাবে শক্তি।

আর এদিকে দড়জায় ক্রমাগত ধাক্কিয়ে যাচ্ছে মুন্নি

” শক্তি, এই শক্তি, দড়জা খোল।বাইরে আয়।চা খাবি না?”

আর চা,,,শক্তি তো ভাবছে আজ রাতের খাবারও খাবেনা।বাইরে গেলেই যদি রক্তিম ওকে ছাঁদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়!

মুন্নি বাইরে থেকে কতোক্ষণ ডাকাডাকি করে চলে গেলো।

“আজ মনে হচ্ছে না শক্তি আর বাইরে আসবে, দিভাই।!
রিদ্ধির রুমে গিয়ে বলে মুন্নি।

” আমার মন চাচ্ছে তোকে ধরে দুটো ঠাটিয়ে দেই।এই কথাগুলো বলার আর জায়গা পেলি না তুই!”

বিরক্ত হয়ে বলে রিদ্ধি।কি জানি এবার মেয়েটার সাথে কি হবে?ভয়েই বাইরে আসছে না ও।
“আচ্ছা, দিভাই এতো ভয় পাওয়ারই বা কি আছে?দাদাভাই তো আর ওকে মেরে ফেলবে না।”

রিদ্ধি মনে মনে বলে,”কেনো যে এতো ভয় পায়,তা তুই কি করে জানবি?”
কিন্তু মুখে বলে,”যা তো নিচে যা,দুইকাপ চা আর মুড়ি বাটিতে করে নিয়ে আয় উপরে। ”

এরই মাঝে রক্তিম আসে রুমে। ওকে দেখে আরো মেজাজ খারাপ হয়ে যায় রিদ্ধির।

“শক্তিকে বল তো একটু আমার রুমে আসতে। ”
বলে রক্তিম।

রক্তিমের এই কথা শুনে রিদ্ধির রাগটা যেনো আরো বেড়ে যায়।রেগে গিয়ে রক্তিমকে বলতে থাকে,

“তুই বেরো আমার রুম থেকে।তোকে দেখেই আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আবার বলে কিনা শক্তিকে বল তো আমার রুমে আসতে।কেনো রে?বলি,কেনো?শক্তি কি তোর বিয়ে করা বউ যে যখন তুই যা বলবি ওকে তাই করতে হবে?”

“এসব কি বলছিস উল্টাপাল্টা। মাথা ঠিক আছে তোর?”

“একদম আমার সাথে মেজাজ দেখাবিনা রক্তিম। কি অবস্থা হয়েছে মেয়েটার বিকেলে থেকে বাইরে অব্দি বের হয়নি একমাত্র তোর ভয়ে।”

“কেনো আমি ওকে কি করেছি যে ও বের হচ্ছে না?” রক্তিমের দাঁতে দাঁত চাপা আওয়াজ।

রিদ্ধি যদিও বুঝতে পারছে যে রক্তিম রেগে যাচ্ছে, তবু্ও আজ সে থামে না।এই ব্যাপারটার আজ একটা হেস্তনেস্ত হওয়ায় প্রয়োজন।

“কিছু করিসনি তবে আমরা সবাই জানি যে তুই কি কি করতে পারিস।শুধু মুখে বললেই হয়না রক্তিম যে ভালোবাসি। ওর সামনে যদি নিজের ভালোবাসাটাকে প্রকাশই করতে না পারিস তো ও কিভাবে থাকবে তোর সাথে? হ্যাঁ,থাকবে।তোকে ভয় পেয়ে থাকবে।এখন মনে হচ্ছে বাবা ঠিকই বলেছিলো।তোর থেকে শক্তিকে দূরে রাখাই উত্তম। আমিই বোকা যে কিনা নিজের ভাইয়ের স্নেহে অন্ধ হয়ে ওর জীবনটা নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছি।”.

কথা গুলো একদমে বলে হাপাতে থাকে রিদ্ধি।

আর রক্তিম, সে রাগের চোটে বেরিয়ে যায় বাইরে।ছেলেটার রগে রগে রাগ।

———————————–

রাত ধীরে ধীরে গভীর হচ্ছে। বাড়ির সবাই খেয়ে দেয়ে শুয়ে পরেছে।জেগে আছে শুধু শক্তি। ও ঘুমাবে কি করে একে তো বিকেল থেকে সন্ধ্যে অব্দি ঘুমিয়েছে। তার ওপর লেগেছে প্রচন্ড খিদে। মামনী কতবার ডাকলো খাওয়ার জন্য।কিন্তু শক্তি নিচে নামেনি।রিদ্ধি সবাইকে বলেছে যে শক্তি ভেতর থেকে দড়জা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে।ঘুম থেকে উঠলে ও খাইয়ে দেবে।শক্তি যদিও রিদ্ধিকে টেক্সট করে জানিয়ে দিয়েছিলো যে রক্তিম যখন ঘুমিয়ে যাবে তখন যেনো তাকে ডাকা হয়।কিন্তু রিদ্ধি তো এখনও আসছে না।এদিকে ওর পেটে হাজার খানেক ছুচো মিলে ডন মারছে।এই রক্তিম টার জন্য একদম শান্তি নেই।

এরই মাঝে দড়জায় আস্তে নক করার আওয়াজ পায় শক্তি। আর মনে মনে ভাবে যে বাঁচা গেলো। নিশ্চয়ই রিদ্ধি খাবার নিয়ে এসেছে।

কিন্তু দরজা খুলে তো শক্তির চোখ ছানাবড়া! খাবার নিয়ে দাড়িয়ে আছে রক্তিম! ভয়ে তো ওর হাত পা কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে যায়।এখন কি হবে তার।রক্তিমের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।হয়তো রাগের চোটে।শক্তি পারছে না শুধু মুখের ওপর দরজাটা লাগিয়ে দিতে।

শক্তির কোনো কিছু বলার অপেক্ষা না করেই রক্তিম গটগটিয়ে রুমে ঢুকে যায়।খাবারের প্লেটটা টেবিলের উপর রেখে নিজে বসে বিছানায়। শক্তি এখনো দরজার সামনে স্টেচুর মতো দাড়িয়ে আছে।আর ভাবছে যে রক্তিম কি তাকে কঠিন কোনো শাস্তি দেবে?আর তাই বলেই কি নিজের হাতে আদর-যত্ন করছে?বলির পাঠাকে যেমন বলির আগে আদর যত্ন করা হয়।

শক্তির ভাবনার ঘোর কাটে রক্তিমের আওয়াজে।

“ওখানে পিলারের মতো দাড়িয়ে আছিস কেনো?এদিকে আয়।”

শক্তির অবস্থা তো যেনো কেঁদে দেবে এমন।মিনমিন করে বলে,

“বিশ্বাস করুন, আমার কোনো দোষ নেই।কে মুন্নির বন্ধু তাকে আমি চিনিও না।আর শাড়ি পরার ব্যাপারটা তো,,,সবাই পরছিলো বলে আমিও পরেছিলাম।সবাই জোড়াজুড়ি করছিলো তাই।
বলতে বলতে প্রায় কেঁদে দেয় শক্তি।

রক্তিম গম্ভীর গলায় বলে,” তোর কাছে তো আমি কোনো কৈফিয়ত চাই নি।আগে এদিকে আয়।”

রক্তিমের এমন ঠান্ডা আওয়াজ শুনে কিছুটা অবাক হয় শক্তি। সে আস্তে আস্তে বিছানার পাশে গিয়ে দাড়ায়।দাড়াতেই রক্তিম তাকে টান মেরে বিছানায় বসায়।আর এদিকে শক্তি মোচড়ামুচড়ি শুরু করে দেয়।কিন্তু রক্তিমের রক্তচক্ষু দেখে শান্ত হয়ে যায়।বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পরও কেউ কোনো কথা বলে না।শক্তি আবার উশখুশ করতে থাকে।

“আমায় ভালোবাসিস শক্তি? ”

রক্তিমের এই প্রশ্নে বিস্ময়ের সপ্ত আসমান থেকে পড়ে শক্তি।

(চলবে)

#পূর্ণিমা সন্ধ্যায়
পর্ব-১১

“বল,আমায় ভালোবাসিস শক্তি?”

রক্তিমের এই প্রশ্নের কি উত্তর দেবে শক্তি। এর উত্তর কি সে নিজেও আদৌ ঠিকঠাক ভাবে জানে।সে কি রক্তিমকে ভালোবাসে?নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে। উত্তর আসে যে, হ্যা,সে রক্তিমকে ভালোবাসে।কিন্তু ভয়ের আড়ালে তার ভালোবাসাটাই চাপা পড়ে গেছে।

“কি রে,কিছু বলছিস না কেনো?তুই কি শুধুই আমায় ভয় পাস,ভালোবাসিস না?” রক্তিমের কন্ঠে আকুলতা।

রক্তিমের এমন কন্ঠে চমকে ওঠে শক্তি। সে রক্তিমকে ধমকাতে দেখেছে,হাসতে দেখেছে আর সবসময় তো রাগি মুড নিয়েই থাকে। কিন্তু কোনো দিন রক্তিমের কন্ঠে এমন আকুলতা দেখেনি সে।

শক্তির উত্তরের অপেক্ষা না করে আবার বলতে থাকে রক্তিম,

“আচ্ছা, শক্তি, আমি কি সত্যি পাগল?আমার সাথে কি কেউ থাকতে পারে না?আমি কি তোর সাথে খুব বেশি খারাপ ব্যবহার করি,তুই কি আমায় ছেড়ে চলে যাবি?”

কথা গুলো ভাঙ্গা ভাঙ্গা আওয়াজে বলে দু’হাতে মুখ ঢেকে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে রক্তিম। তার বলিষ্ঠ দেহ মৃদু কাঁপছে।

শক্তি বুঝতে পারে যে রক্তিম কাঁদছে। রক্তিমের এই অবস্থা শক্তির বুকের পাঁজরে তীব্র আঘাত করে।শক্তি বিছানা ছেড়ে ওঠে রক্তিমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আস্তে করে নিজের একটা হাত ওর কাঁধে রাখে।
শক্তির স্পর্শ পেয়ে রক্তিম ওকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।খুব শক্ত করে।যেনো নিজের কষ্ট গুলোকে সে মিশিয়ে দিতে চাইছে শক্তির অনুভূতির সাথে।

শক্তিও এক হাত দিয়ে আলতোভাবে জড়িয়ে নেয় রক্তিমকে।শক্তিরও চোখের বাঁধ ভেঙে জল গরিয়ে আসছে।আচ্ছা, এতোটাও কি ভালোবাসা যায় কাউকে?শক্তির এবার নিজেকে অপরাধী মনে হতে থাকে।

রক্তিমের চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে শক্তির পেটের দিকের অংশটা।
শক্তি এবার জোড়ে একটা শ্বাস নিয়ে চোখের জল মুছে নেয় নিজের। তাকে অনেক স্ট্রং হতে হবে।আবেগে গা ভাসালে চলবে না তাকে।যে মানুষটা তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে সে পুরোপুরি পাগল না হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ ও নয়।তা সে বুঝতে পারে।রক্তিমকে ঠান্ডা মাথায় সামলাতে হবে।
রক্তিমের মুখটা দু’হাতে উপরে তোলে শক্তি। ওর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে হাসি হাসি মুখ করে বলে,

“আমি আপনাকে ছেড়ে কক্ষনো যাবো না।”

“সত্যি বলছিস তো?”

“হ্যা,সত্যি বলছি।”

“কিন্তু বাবা যে বললো রিদ্ধির বিয়ের পরই তোকে বিয়ে দিয়ে দেবে।তুই শুধু আমায় ভালোবাসিস,তাই না?তুই আমায় ছেড়ে যাস না,প্লিজ। আমি কিন্তু কাঁদবো।”

রক্তিমের এইধরনের কথা শুনে শক্তি হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছেনা।শক্তি বরাবরই একটু বেশি ইমোশনাল। তাই হয়তো পীযূষ বাবু ওকে রক্তিমের কাছ থেকে দূরে রাখতে চাইছিলেন। কিন্তু শক্তিও যে রক্তিমকে ভালোবেসে ফেলবে তা মনে হয় তিনি বুঝতে পারেন নি।
শক্তি রক্তিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,

“কে বলেছে এসব কথা?এগুলো মিথ্যে কথা।আমি তো এখানেই আছি।”

রক্তিম যেনো ছোট বাচ্চা। খেলনা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে কাঁদছে। আপাতত তাই মনে হচ্ছে শক্তির। রক্তিমের এমন রুপও কোনোদিন দেখবে তা ভাবেনি শক্তি। কিন্তু এসব না ভেবে রক্তিমের মন এখন ডাইভার্ট করতে হবে অন্যদিকে।শক্তি পাশে তাকিয়ে খাবারের প্লেটটা দেখতে পেলো।

“ওমা,এতো খাবার কার জন্য?আমি বুঝি এতো খাই?” মুখ ফুলিয়ে বলে শক্তি।

শক্তির মুখ ফোলানো দেখে রক্তিম হাসি হাসি মুখ করে বলে,”এগুলো দু’জনের খাবার।আমার আর তোর।আমিও খাইনি।আজ আমায় খাইয়ে দিবি?”

পুরোই বাচ্চাদের মতো আবদার। শক্তি বেশি কথা না বাড়িয়ে ওকেও খাইয়ে দেয় আর নিজেও খেয়ে নেয়।

রাতে আর ঘুম আসেনা শক্তির। সে ভাবতে থাকে এ কয়দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো। যা কিনা তার জীবন টাকে আমূল বদলে দিচ্ছে। ছোট থেকেই দেখতো যে রক্তিম অনেক এগ্রেসিভ।আর পীযূষ বাবু একদম পছন্দ করতেন না তার সাথে রক্তিমের কথা বলা।তখন না বুঝতে পারলেও এখন ঠিকই এর কারণ বুঝতে পারছে শক্তি।

শক্তি এখন বুঝতে পারছে যে রক্তিম মেন্টালি একটু আনস্টেবল হওয়াতেই পীযূষ বাবু চায়না তাকে শক্তির জীবনের সাথে জড়াতে।কিন্তু রক্তিম তো পাগল নয়।হ্যা,নিজের জিনিসের ক্ষেত্রে একটু ডেস্পারেট। ওকে শক্ত হাতে ভালোবাসা দিয়ে সামলাতে হবে।শক্তি ঠিক করে যে এখন থেকে ও আর রক্তিমকে ভয় পাবে না।যত যাই বলুক ও রক্তিমের সাথে সহজ হওয়ার চেষ্টা করবে।এসব ভাবতে ভাবতে শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে যায় শক্তি।

——————————
এভাবেই বেশ কিছুদিন কেটে যায়।শক্তি এখন রক্তিমের সাথে অনেকটা ফ্রি।রক্তিমও নিজেকে যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে।কারণে অকারণে, বিনাকারণে আর শক্তিকে বকাবকি করে না।
এরইমাঝে একদিন রিদ্মিকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসে।সেদিন সবাই নিচে গেলেও যেতে পারেনা শুধু শক্তি।কারণ রক্তিমের কড়স নির্দেশ।তাই সকাল সকাল মামনীকে কিছুটা হেল্প করে দিয়ে উপরে চলে আসে।

সারাদিনটা নিজের ঘরে বসে কাটালেও বিকেলের দিকে ছাঁদে চলে আসে শক্তি। যদিও নিচে সবার সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে। মানে পাত্রপক্ষ এখনো যায়নি।শক্তি গিয়ে ছাঁদের কোণে রাখা দোলনাটায় বসে।পুরো ছাঁদে এটাই শক্তির সবচেয়ে প্রিয় জায়গা।

একটু পর রক্তিম এসে ধুপ করে নিচে বসে মাথাটা ওর কোলে রাখে।নিজের হাত দিয়ে শক্তির কোমর পেচিয়ে ধরে।রক্তিমের এহেন আচরণের শক্তি মনে মনে কেঁপে উঠলেও নিজেকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে।
রক্তিম ওর কোলেই মুখ গুজে বলে,”চুল গুলো একটু টেনে দে।প্রচুর মাথার যন্ত্রণা করছে।”

শক্তি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেও পারছেনা।কেমন যেনো একটা অনুভূতি!

এরই মাঝে ছাঁদে আসে রিদ্ধি আর তার হবু বর অর্ক।ওদের দিকে চোখ পরাতেই রিদ্ধি অন্যদিকে তাকায়।কিন্তু অর্ক খুকখুক করে কেশে বলে,

“কি ব্যাপার,শালাবাবু? ভালোই তো চলে!”

ওনার আওয়াজ শুনে শক্তি ধরফরিয়ে উঠতে চায়।কিন্তু রক্তিম ওকে বসিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে বলে,

“চলতে আর দিলে কই?তা নিচে কি হলো?”

অর্ক হাসি মুখ করে বলে,

“নিচে আশীর্বাদের আয়োজন চলে।আজই ডেট ফিক্স হবে।তাই আমাদের পাঠালো কিছুক্ষণ আলাদা কথা বলতে।”

রক্তিম হু হা করে হেসে বলে,”তোমাদের আবার আলাদা কথা!দু’বছর কথা বলে সাধ মেটে নি?”

“আস্তে শালাবাবু। এটা তুমি জানো,আমি জানি। আর কেউ যেনো না জানে।”

শক্তি ওদের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো।তার মানে সবাই জানতো শুধু সেই জানতো না।ওদের হাসাহাসি দেখে এবার ওর রাগ লাগে।তাকে কেউ কিছু জানাইনা।ধুর,,থাকবেনা এখানে সে।

শক্তি ছাঁদ থেকে বের হতে গেলেই অর্ক বলে,

“আরে,,আমার একমাত্র শালাবৌ কোথায় যাও?”

উফফ,, কি লজ্জা! রিদ্ধির হবু স্বামীও ওদের ব্যাপারটা জানে।

(চলবে)

Tithee sarker

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here