সৎ বোন,পর্বঃ ০৩

#সৎ বোন,পর্বঃ ০৩
#জুনায়েত

আমি পকেট থেকে ১০০ টাকার একটা নোট বের করলাম আর রানীর হাতে দিলাম। রানী খুব খুশি হলো। আমি ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। ভার্সিটিতে গিয়েই নীলার সাথে দেখা করলাম। ও আপনাদের ত বলাই হয়নি নীলা আমার গালফ্রেন্ড। নীলা খুব ভাল একটা মেয়ে। আমাকে খুব ভাল বাসে। আর আমি ও ওকে খুব ভালবাসি। সারাদিন ভার্সিটিতে কাটানোর পর সন্ধায় বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি এসেই বাথরুমে গেলাম ফ্রেস হতে। রানি খাবার হাতে আমাকে ডাকছে?? আমি বললাম টেবিলের উপরে রেখে দে!! হঠাৎ শুনতে পেলাম আমার ফোনটা বাজছে!! রানি বললো ভাইয়া কে যেন ফোন দিয়েছে!! আমি বললাম ফোনটা ধর!! আর দেখ কে ফোন দিয়েছে??
!
!
!
আসলে নীলার নাম্বারটা আমি জান লিখে সেভ করে রেখেছি!! জান লিখা দেখেই রানী বুজে যায় এটা আমার গালফ্রেন্ড!! ও ফোনটা রিসিভ করে আর আসসালামু আলাইকুম ভাবি!! ভাবি!!!!! নীলাতো পুরা অবাগ!! জুনায়েত এর ফোন একজন মেয়ে রিসিভ করলো তার উপর আবার আমাকে ভাবি বলছে!! রানী নীলাকে বললো ভাবি আমি আপনার বয়ফ্রেন্ড এর ছোট বোন!! নীলা একটু লজ্জা আর একটু ভয় ও পেল। কারন নীলা জানতো আমার সৎ মা এর কথা। ওনি যদি নীলার কথা জানতে পারে তবে আমাকে আস্ত রাখবে না। পরক্ষণেই রানী বলে উঠলো ভয় নেই ভাবি আমি কাউকে কিছু বলবো না!
!
!
!
আমি আপনাদের দলে।। আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলাম কে ফোন করেছিলো রে রানী?? কেউ না ভাইয়া!! অফিস থেকে।। আচ্ছা ভাইয়া?? হুম বল!! নীলা ভাবি দেখতে খুব সৌন্দর তাই না!! তুর ভাবি ত সোন্দর হবেই!! পরক্ষণেই আমার মনে পড়লো আমি কি বলছি এই সব!!! 😨 নীলা আবার কে?? কোন নীলা?? আর নীলা তুর ভাবি মানে কী?? রানী মুখ চেপে হাসছে!! তোর জান ফোন দিয়েছিলো!! এইরে খাইছে!!! কি বলছর তুই?? বেশি কিছু না শুধু ভাবি!! ভয় পাস না আমি মাকে কিছু বলবো না!! আমি রানিকে বললাম ধারা এতো পাকনামি তোর!! তুর কান আজকে মলে দেব!!
!
!
!
এই বলে ওকে কানে ধরে রোম থেকে বের করে দিলাম!! রানীকে রোম থেকে বের করেই নীলাকে ফোন দিলাম!! আর ওকে জিজ্ঞেস করলাম উলটা পালটা কিছু বলছে কি না!! নীলা বললো তুমার বোনটা অনেক ভাল!! কী সুন্দর করে ভবি ডাকে!!🥰 আমি বললাম ও আমার বোন না ও আমার কলিজা!! বিয়ের পর তুমি কিন্তু ওকে কিছু বলতে পারবা না বলে দিলাম!!নীলার সাথে কথা শেষ করে শুয়ে পড়লাম। পরদিন সকালে রানির কলেজের সামনে দিয়ে ভার্সিটি যাচ্ছিলাম!! হঠাৎ খেয়াল করলাম রানি ওই রকি নামের ছেলেটার হাত ধরে কফি হাউসএ বসে আছে!!আমি কিছু বললাম না।
!
!
!
ভার্সিটিতে গিয়ে এক বন্ধকে দিয়ে রকি নামের ছেলেটার খুজ নীলাম। আর যা জানতে পারলাম তা হলো ছেলেটা একটা বড় লোকের বাজে ছেলে!! মদ নেশা সব খায়!! অনেক মেয়ের সাথেই নাকি ওর উঠা বসা!! সন্ধায় বাড়ি ফিরলাম আর রানিকে ডাকলাম ওকে জিজ্ঞেস করলাম রকি কে??রানি কোন কথা বলছে না!! চুপ করে আছে!! আমি ধমক দিলাম আর জিজ্ঞেস করলাম রকি কে?? আর তখন রানী মুখ খুললো আর জানালো রকিকে ও ভালবাসে!! ঠাস করে রানীর গালে একটা চড় বসিয়ে দিলাম!!

বাবা, মা এর সামনে ভালবাসার কথা
বলতে তুর লজ্জা করছে না??
তুই জানিস রকি ছেলেটা কতটা বাজে।
ওর অনেক মেয়ের সাথেই উঠা বসা!! প্লিজ ভাইয়া রকির নামে একটাও
বাজে কথা আমি শুনতে চায় না।
কী?? আমি বাজে কথা বলসি!! তোর কি
মনে হচ্ছে আমি মিথ্যা বলছি।।

তুই প্রমান চাস?? রানি বললো আমার
কোন প্রমান চাই না। আমি রকিকে
ভালবাসি।। আর কেউ আমাকে রকির
থেকে আলাদা করতে পারবে না।আমি
বুঝতে পারছি না কি করে রানিকে
বুঝায় যে রকি ছেলেটা কতটা বাজে

আমি আমার বোনকে কোন বিপদ
এ পরতে দেব না।মা আমাকে বললো ছেলেটা যেহেতু বড়লোক সেহেতু একটু
খারাপ হলেও সমস্যা নাই। আমি মা এর কথা শুনে অবাক হলাম। কি বলছো এই
সব। এই ভাবে ওর জীবনটা আমি নষ্ট হতে দিতে পারি না।

পরদিন সকাল বেলার কথা,আমি আজ ভার্সিটিতে গেলাম না। দেখলাম রানি
বাড়ি থেকে বের হলো।।আমি রানির
পিছু নিলাম। দেখি আজ ও কোথায় যায় আর কি করে?? ও রিকশা করে পার্কে
আসলো। সেখানে আগে থেকেই রকি
নামের ছেলেটা বসে ছিলো। রানী ওখানে
যেতেই রকি রানীকে জড়িয়ে ধরলো।

আমার খুব রাগ হলো। ছেলেটা যে বাজে।ওকে দেখলেই বুঝতে পারা যায়। আমি ওদের দুজনের সামনে গিয়ে দাড়ালাম
আর রকি ছেলেটাকে বললাম তুর এত
বড় সাহস তুই আমার বোনের জীবনটা
নষ্ট করছিস??আমি যেই হাত তুলেছি
রকিকে থাপ্পড় মারবো,,ঠিক তখনি
রানি আমার হাতটা ধরে ফেললো।

আর বললো তুর এত বড় সাহস তুই
আমার বয়ফ্রেন্ড এর গায়ে হাত তুলতে
চাইছিস?? কে তুই?? তুই কি আমার আপন ভাই?? তুই আমার সৎ ভাই!!
কথা গুলো শুনে চোখ দিয়ে এমনি জল পড়তে শুরু করলো!!

সেদিন অশ্রু ভরা চোখ নিয়ে ওখান
থেকে চলে এসেছিলাম। আসার আগে রকি নামের ওই ছেলেটাকে
শুধু বলে এসেছিলাম আমি বেচেঁ থাকতে তুর আশা কোন দিন ও পুরন হবে না।

রকি নামের ছেলেটা রানিকে বললো
তোমার এই ভাই বেঁচে থাকতে আমাদের
ভালবাসা কোন ও দিন ও মেনে নেবে না।
যে করেই হোক ওকে আমাদের পথ থেকে সরাতেই হবে!!!!সেদিন জানতাম না যে এটাই রানীর
সাথে আমার শেষ ঝগড়া।
সেদিন বাড়ি ফিরে সারা রাত বসে
বসে কেদেছিলাম। আর শুধু ভেবে যাচ্ছিলাম রানি তাহলে কোন দিন
আমাকে তার ভাইয়ের জাইগাই বসাতেই

পারেনি । সৎ ভাই ছাড়া রানি আমাকে
নিজের ভাই ভাবেনি এটা ভেবে আমার
চোখ দিয়ে পানি পড়া বন্ধ হচ্ছিলো না।পরদিন সকালে যা ঘটলো তা আমার জীবনটা পুরো উল্টো পাল্টা করে দিল।
যা গঠলো তা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here