সৎ বোন,পর্বঃ এক ও দুই

#সৎ বোন,পর্বঃ এক ও দুই
#লেখকঃ জুনায়েত

…ভাইয়া উঠ,,,,ভাইয়া দরজা খুল। ভাইয়া,,,,
..কে রানি? কি হয়েছে ডাকছিস কেন এতো সকালে?
… এতো সকালে মানে? জানিস কয়টা বাজে? ৯টা বেজে গেছে।
… কি বলিস এইতো মাএ ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমালাম আর এর মধ্যেই ৯ টা বেজে গেলো,,,,,🥱যা এখান থেকে আমাকে একটু ঘুমাতে দে
… তোর না আজকে ভার্সিটিতে কি জানি একটা কাজ আছ?
!
!
!
… ইসরে ভুলেইতো গেছি,,,,,ধব্যবাদ আমার মহা উপকারী বোন😊
ও আপনাদের সাথে ত পরিচয় ই হয়নি,,,,,,আমি জুনায়েত,,,,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। আর একটু আগে যাকে দেখলেন ও আমার সৎ বোন রানি৷ আসলে আমার বয়স যখন ৭ বছর তখন আমার মা মারা যাই। আর বাবা ২য় বিয়ে করে। আর তখন থেকেই শুরু হয় আমার প্রতি আমার সৎ মায়ের অবহেলা। কিছুদিন পর আমার সৎ মায়ের একটা মেয়ে হয়,,,মানে রানি। সৎ মা আমাকে সৎ ছেলের চোখে দেখলেও বোনটি আমাকে কখনো সৎ ভাইয়ের চোখে দেখেনি,,,,,

!
!
!
আর আমি ও না,, ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে চলে গেলাম,,,মাকে বললাম খাবার দিতে,,,আর উনি রেগে বললেন নিজে নিয়ে খেতে,,, সকাল সকাল মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। ভাবলাম খাবই না,,, তাই ব্যাগটা হাতে নিয়ে যেই ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরুবো ঠিক তখনি পিছন থেকে হাতটা কে জানি টেনে ধরলো,,,,,,পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি রানি।
… কিরে ভাইয়া না খেয়ে চলে যাচ্ছিস?
…নারে বোন খিদে নেই । তুই খেয়ে নে,,।
… রাগ করছিস তুর বোনের উপরেও,,,আয় তকে খায়িয়ে দেয়,,,,,?
!
!
!
নিজের হাতে আমাকে খায়িয়ে দিলো। নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে দুই ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।বোনটা চোখটা মুছে দিয়ে বললো যা ভাইয়া তুর দেরি হয়ে যাচ্ছে!! ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,,সারা দিন ক্লাস করে খুবই টায়ার্ট হয়ে বাড়ি ফিরলাম,,,,আর বাড়ি ফিরে যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।বাড়ি ফিরেই দেখতে পেলাম বোনটা এখুনো বাড়ি ফিরেনি।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম রাত ১১ টা বাজে।
!
!
!
খুব টেনশন হচ্ছে।রানি ত কখনো এমন করেনি আগে।তাগলে কি কোন বিপদ হলো নাকি?? আমি সহ বাড়ির সবাই খুব ভয়ে আছে। আমি রাস্তায় বের হলাম রানিকে খুজার জন্য। সকল রাস্তা তন্ন তন্ন করে খুজলাম। কোথাও রানিকে খুজে পাচ্ছিলাম না!! রানীর বান্ধবীকে একটা ফোন করলাম। আর সে যা বললো তা আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না।
!

রানির বান্ধবীকে ফোন করতেই ও যা বললো তা আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। রানি নাকি তার কোন এক বড় লোক ফ্রেন্ড এর বাড়িতে পার্টি করতে গেছে।কিন্তু আমি একটু অবাক হলাম এই কথা ভেবে যে রানি মাকে মিথ্যা কেন বললো??রানি মাকে বলে এসেছে ওর নাকি ইসপেসাল ক্লাস আছে তাই ফিরতে দেরি হবে। এখন আমার একটু নয় অনেকটাই চিন্তা হচ্ছিলো।রানির বান্ধবীর থেকে ঐই ছেলেটা নাম আর ওর বাসার ঠিকানা নিলাম।ছেলেটার নাম নাকি রকি। বড় লোকের একমাত্র ছেলে। আমি রকির বাড়ি গেলাম। গিয়েই দেখতে পেলাম বসার ঘরের লাইটটা হাল্কা জ্বলছে।কিছু ছেলে মেয়ে মেঝেতে,,

!
!
!
কিছু ছেলে মেয়ে সুফায় শুয়ে আছে।সবাই নেশায় আচ্ছন্ন। মনে হয় মদ পান করেছে। ভেবে পাচ্ছি না আমার বোনটা এতটা নিচে নেমে গেছে। ওকে খুজে পাচ্ছিলাম না।অনেক খুজা খুজির পর দেখতে পেলাম সোফার এক কোনায় রকি নামের ছেলেটার পাশে শুয়ে আছে। আমি ওকে ডাকলাম,, কিন্তু ওর কোন জ্ঞান নেই। আমি আমার বোনকে কুলে তুলে নিলাম। তার পর বাড়ী ফিরে এলাম। এসে মাকে বললাম লেবুর শরবত এনে দিতে। মা শরবত এনে দিলো।আর রানিকে খেতে বললাম।রানি শরবতটা খেয়ে একটু হুসে এলো। আমি বললাম কোথায় গিয়েছিলি?? রানি বললো!! না মানে ভাইয়া!! ইএ!! পরক্ষনেই রানির গালে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।
!
!
!
এতটা নিচে নেমে গেছিস তুই ছি, ছি!! মাকে মিথ্যা বলে পার্টিতে গিয়েছিস আর সেখানে গিয়ে মদ খেয়েছিস।তুই আমার বোন হতে পারিস না। পাশ থেকে মা বলে উঠলো কী এমন মহাভারত অসুদ্ধ করেছে?? একটু মদ ই ত খেয়েছে!! মা যেখানে মেয়েকে আশকারা দিচ্ছে আমি আর কি বলবো। শুধু কান্নার সুরে রোমে চলে আসলাম।রানি আমার দিকে তাকিয়ে আছে!! মনে মনে ভাবলাম আমি ওকে আর কিছু বলবো না। দুই দিন ওর সাথে কথা বলিনি।২দিন বাসায় খাবার ও খাইনি। ৩য় দিন ভার্সিটির জন্য রেডি হচ্ছি!! সেই সময় রানি আমার রোমে খাবার হাতে আসলো।আর বললো আয় ভাইয়া তকে খায়িয়ে দেই। আমি কোন কথা বললাম না।চুপ করে ব্যাগটা নিয়ে যেই বেরুবো ঠিক তখনি রানি আমার দুই পা জড়িয়ে ধরলো।আর কেদে কেদে বললো প্লিজ ভাইয়া আমার সাথে কথা বল।আমার সাথে এমন করিস না।আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দে ভাইয়া!!!
!
!
!
বোনটার কান্না একদম সহ্য করতে পারি না। ওকে তুলে বুকে জড়িয়ে নিলাম। বললাম তোর ভাইয়া অনেক কষ্ট পাইছে!!! রানি বললো আমার ভুল হয়ে গেছে ভাইয়া!! আর কখনো হবে না। রানি বললো খেয়ে তার পর ভার্সিটিতে যা। আমি বললাম খাব না !!এখন আবার কি হলো ভাইয়া?? আমি বললাম তুই না খায়িয়ে দিলে আমি কি কখনো খেয়েছি!! রানি একটু হাসলো আর আমাকে খায়িয়ে দিতে শুরু করলো।আবার ও নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো!! রানি রেগে বললো আবার কাদছিস তুই???? আমি কিন্তু চলে যাবো!!!
!
!
!বোনটি আমার চোখের জল মুছে দিলো। আমার খাওয়া শেষ!! ও ওর ওড়না দিয়ে আমার মুখটা মুছে দিলো। আর বললো চুল গুলো এলোমেলো কেন?? দাড়া আঁচড়ে দেয়। রানি আমার চুল গুলো আচড়ে দিলো!! আর বললো এবার সব ঠিক আছে!! যা এখন তুই ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পর!! রানির কপালে একটা চুমু খেলাম!!

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here