শুধু_তুমি_চাও_যদি 🥀 #পর্ব – ০৩

#শুধু_তুমি_চাও_যদি 🥀
#পর্ব – ০৩
#লেখনীতে – Aloñe Asha [ছদ্ম নাম]
#Kazi_Meherin_Nesa

আদিকে এগোতে দেখে দিয়ার চোখ আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়, ও ভেবেছে আদি আবার কালকের মতো কিছু করবে না তো? মিনিট দুয়েক কিছু টের না পেয়ে আদি চোখ খুলে দেখে আদি ওর সামনে না বরং ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে..হাফ ছেড়ে বাঁচলো মেয়েটা..চুলগুলো ঠিক করে আদি ঘুরে দাঁড়ায়..

আদিত্য — আজকে কোনো স্পেশাল ওকেশন আছে নাকি যার জন্যে শাড়ি পড়েছিস? নাকি আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য তোর এই আয়োজন?

দিয়া নরমালি একটা হাসি দিয়ে বললো..

দিয়া — একটা কথা কি জানো? একটা জিনিষ তো আমি বুঝে গেছি তোমাকে আমি কিছুতেই ইমপ্রেস করতে পারবো না কারণ কাওকে মন থেকে পছন্দ না করলে জোড় করে ইমপ্রেসড করানো যায় না..

আদি কি যেনো ভেবে মুচকি হাসলো, আরো দরকারি কিছু বাড়িতে রেখে গেলো কিনা সেটা দেখতে দেখতে বললো..

আদিত্য — যাক! কথাটা মাথায় ঢুকেছে তাহলে? গুড..! আমি তো ভেবেছিলাম কালকে রাতে যে পাগলামি করেছিস সেটা মাথা থেকে বেরোয়নি তাই এসব..!

দিয়া — ওটা তোমার কাছে পাগলামি মনে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে না!

আদিত্য — আল্লাহ জানে এসব করে কি শান্তি পাস তুই, বারবার আমার বকাঝকা শুনতে ভালো লাগে তোর? (ভ্রু কুচকে)

দিয়া মিষ্টি একটা হাসি দেয়, মেয়েটাকে হাসলে মন্দ লাগে একথা বলার সাহস আদির নেই..উল্টে দিয়া যখন ছোট্ট করে এমন হাসি দেয় সেটা যেনো সোজা আদির মনের মধ্যে গিয়ে লাগে যদিও সেটা কখনো দিয়াকে বুঝতে দেয়নি..

দিয়া — আমার তো সম্পূর্ন তুমিই পছন্দ, সে হোক তোমার রাগ বা বকা..সব মঞ্জুর আমার কাছে!

আদি কোনো উত্তর দিলো না, কখনো কখনো দিয়ার মুখের এমন কথা বেশ অবাক করে আদিকে কিন্তু সেটা ও প্রকাশ করেনা.. ও কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে আসতে যাচ্ছিল তখন দিয়া বলে ওঠে..

দিয়া — আচ্ছা শোনো, আমি আমার বন্ধুদের সাথে একটু দেখা করতে যাচ্ছি

আদিত্য — হ্যা তো? আমাকে কেনো বলছিস এসব! আমি তো আর তোকে বারন করিনি

দিয়া — জানি তুমি নিজ থেকে তো জিজ্ঞাসা করবেও না, তবে জানানোটা আমার দায়িত্ব তাই বললাম

আদি ঘুরে তাকায় দিয়ার দিকে, দু হাত ভাঁজ করে দাড়িয়ে বলে..

আদিত্য — দিয়া তোকে এইসব দায়িত্ব পাগল করতে হবে না.. বিয়ে হয়ে গেছে মানে এই না যে তোর স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে..যখন যেখানে দরকার যেতে পারিস

দিয়া — হুমম জানি তো, তবুও স্বাধীনতার মাঝে একটু বাধা না থাকলে মজা হয় নাকি? যতোই হোক আমি তো এখন একজনের স্ত্রী

আদি শুধু দৃষ্টি ক্ষেপণ করলো দিয়ার দিকে কিন্তু কোনো উত্তর দিলো না..এত সুন্দর একটা কথা বলার পড়ো আদির কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে দিয়া বুঝে গেছে এর থেকে বেরসিক মানুষ আর দুটো হয় না, তাই বিষয়টার সেখানেই সমাপ্তি দিয়ে বলে..

দিয়া — যাই হোক, তুমি এসেছ ভালো হয়েছে.. আমার না একটা কথা জানার ছিলো

আদিত্য — এখন আবার এটা জিজ্ঞাসা করিস না যে শাড়ি পড়ে তোকে কেমন লাগছে.. বিশ্বাস কর, শাড়িটা তোকে একদম স্যুট করেনা (বিরক্ত হয়ে)

দিয়ার মুখের ওপর সপাটে কথাটা বলে দেয় আদি, দিয়ার একটু খারাপ লেগেছে বটে কিন্তু কি আর করার? আদির মুখে এই ধাচের কথা ছাড়া ওর জন্যে আর কিছু তো নেই তাই ওর তালে তাল মিলিয়েই দিয়া বলে…

দিয়া — আরে বাবা হ্যা, আমাকে শাড়ি পড়লে মানায় না এটা আগে থেকেই জানি.. আরেকটা দরকারি কথা জিজ্ঞাসা করার আছে

আদিত্য — কি কথা?

দিয়া আদির দিকে কিছুটা এগিয়ে এসে আস্তে আস্তে করে বলে..

দিয়া — আচ্ছা কালকে আমি যখন তোমাকে কিস করলাম কেমন ফিল করলে তুমি? আমি তো শুনেছিলাম প্রথম কিসে নাকি অদ্ভুত একটা অনুভুতি হয়? সত্যি নাকি?

আদিত্য — what..! কি বলিস তুই এগুলো! (অবাক হয়ে)

দিয়া — মিথ্যে বলছি না, আমি শুনেছি! এরকম নাকি হয়..!!

আদিত্য — কার কাছে শুনেছিস এইসব কথা? কে বলেছে তোকে এগুলো? কিরকম বন্ধুদের সাথে মিশিস তুই যারা তোকে এইসব বলে? (রেগে)

দিয়া — ধুর বাবা..! আমার বন্ধুদের কেনো টানছো? ওরা কিছু বলেনি, আমি অন্য জায়গায় শুনেছিলাম যে প্রথমবার কিস করলে নাকি মনের মধ্যে একটা অন্যরকম শিহরণ বয়ে যায় মনের মধ্যে..আচ্ছা তোমারও কি হয়েছিল তেমন কিছু?

দিয়ার প্রশ্ন শুনে আহাম্মক বনে যায় আদি, কোন ধারার প্রশ্ন এটা? আদির মনে হচ্ছে ও নিজেই এবার পাগল হয়ে যাবে এই মেয়েটার চক্করে আর ওর এইসব উদ্ভট প্রশ্ন শুনে..

দিয়া — কিজানি বাবা, আমি তো কিছু ফিল করার সময়টুকু পেলাম না, তার আগেই তো তুমি আমার গালে থাপ্পড় মেরে দিলে

আদিত্য — দিয়া, তুই…

আদি পুরো কথা শেষ করার আগেই দিয়া ওর সামনে দাড়িয়ে কোমরে দু হাত গুজে বলে..

দিয়া — হ্যা কি..? বলো না, তুমি বুঝলে কিছু? আমার না খুব জানতে ইচ্ছে করছে, নিজে তো কিছুই বুঝলাম না..তুমি যদি কিছু বুঝে থাকো সেটা শুনেই নিজেকে সান্তনা দিয়ে নেবো না হয়

আদিত্য — তুই..তুই পাগল হয়ে গেছিস!

কথাটা বলেই দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় আদি, এতদিন সন্দেহ থাকলেও এখন মেয়েটাকে সত্যিই পাগল মনে হয় ওর..এরকম প্রশ্ন কেউ করে নাকি? দিয়া তখন রুম থেকেই জোরে বলতে শুরু করে..

দিয়া — আজকে আপনাকে কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে ডাক্তার সাহেব..! মেয়ে রোগী, ডাক্তার আর নার্সদের থেকে দূরে থাকবেন কিন্তু..!

আদি তো দিয়ার কথা শুনলো না, কিজানি হয়তো শুনেছে কিন্তু স্বভাবত কোনো উত্তর দেয়নি..

দিয়া — সবসময় আমার থেকে দূরে পালাই পালাই করতে থাকে! নাহ! এই ছেলেকে বাগে আনা আমার কম্ম না! আর বলবোই না একে আমি কিছু (মনে মনে)
.
.
আদি বেরিয়ে গেছে প্রায় ১৫-২০ মিনিট হলো..এরপর দিয়াও পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাওয়ার জন্যে নিচে আসে..আদির মা ড্রইং রুমেই ছিলো, আদির বাবার সাথে ফোনে কথা বলছিল..দিয়া এসে ওনার পাশে বসতেই উনি ফোন রেখে দেন..

দিয়া — আংকেলের সাথে কথা বলছিলে বুঝি অ্যান্টি? আমি বিরক্ত করলাম নাকি?

শেফা — আরে না না, তোর আংকেলের অনেক কাজ রে, একটু ফোন করে খোঁজ নিলেন আর কি

দিয়া — আঙ্কেল অতো দূরে থাকে তাও আন্টির কতো কেয়ার করে আর ওনার ছেলেকে দেখো, আমাকে জিজ্ঞাসা অব্দি করে না কিছু (মনে মনে)

আদির এইভাবে ইগনোর করাটা কিছুতেই যেনো মন থেকে মানতে পারেনা দিয়া, মন খারাপ হয়ে আসে ওর..আদির মা ফোনটা রেখে দিয়াকে ভালোভাবে দেখে বলে..

শেফা — মাশাআল্লাহ, কি মিষ্টি লাগছে তোকে..হ্যা রে, আদি তোকে এভাবে দেখে কিছু বললো, একটু আগেই তো ওপরে গেছিলো তাইনা? ইমপ্রেস হয়েছে তোকে এভাবে দেখে তাইনা?

আদির মা অনেক এক্সাইটেড ছিলেন ছেলে কি করেছে শোনার জন্যে, উনিও চান দিয়া আর আদির মধ্যের দূরত্ব শীঘ্রই ঘুচে যাক..কিন্তু ওনার আশায় ছাইচাপা পড়ে যায় দিয়ার কথা শুনে..

দিয়া — অ্যান্টি, তোমার ছেলেকে ইমপ্রেস করাটা এতো সহজ না..আর ওকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা আমি ছেড়েই দিয়েছি (মলিন হেসে)

আদির মা ভ্রু কুচকে ফেলে, ওনার ছেলে যে দিয়ার প্রতি এতটা উদাসীন সেটা জানা ছিল না ওনার..

শেফা — কি বলছিস? ও এলো, তোকে শাড়িতে দেখলো..এতো সুন্দর লাগছে তোকে, আর কিছুই বললো না?

দিয়া — বলেছে তো, অনেক বড় কমপ্লিমেন্ট দিয়েছে.. আমাকে নাকি শাড়িতে একদম ভালো লাগে না, অ্যান্টি তুমিই বলো একটুও কি ভালো লাগে না আমাকে?

দিয়া মজার ছলে কথাটা বললেও আদির মায়ের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে কথাটা বলতে দিয়ার কতো কষ্ট হচ্ছে..উনি দিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শান্তনা সহিত বলে..

শেফা — আমার ছেলেটার কি সমস্যা তোকে নিয়ে কে জানে..তুই ওর কথায় কিছু মনে করিস না দিয়া মা..

দিয়া — না না অ্যান্টি, তোমার ছেলের কথায় আমি মন টন খারাপ করি না, তুমি বলে দিয়েছ আমাকে সুন্দর লাগছে এটাই আমার জন্যে যথেষ্ট, তোমার ছেলের প্রশংসা আমার চাইনা (হেসে)

আদির মা কোনো উত্তর দিতে পারলো না, ছেলেকে তো আর কম বোঝাননি উনি এরপরও যদি ছেলে না বুঝতে চায় তাহলে উনি আর কি করবেন..?

দিয়া — যাই হোক, আমি আসছি এখন..২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসবো আর হ্যা তোমার ছেলেকে আবার ফোন করে কিছু বলতে যেও না যেনো, পরে দেখা যাবে আবার বাড়িতে এসে আমার ওপর রাগ ঝাড়বে

আদির মা আর কিছু বললো না, বাইরে গেলে মেয়েটার মন একটু ফ্রেশ হবে তবে ছেলের বিবাহিত জীবনের প্রতি এই উদাসীনতা দেখে উনি কিছুটা চিন্তিত বটে…
.
.
দিয়ার দুজন বেস্টফ্রেন্ড আছে..নিশি আর উদয়, সেই ক্লাস ৫ থেকে ওরা বন্ধু আর এখনও একসাথে আছে..ওদের দুজনের সাথেই দেখা করতে এসেছে দিয়া..উদয় বেশ পেটুক টাইপের তার ওপর দিয়ার তো বিয়ে হয়ে গেছে এখন, ওর বরের টাকা খাওয়ার জন্যে রেস্টুরেন্টে টেনে নিয়ে এসেছে..দিয়াও আর আপত্তি করেনি..বিয়ের পর প্রথম বন্ধুদের সাথে দেখা করতে এলো, ট্রিট তো দিতেই হবে..

উদয় — আজকে কিন্তু আমি যা খেতে চাইবো তাই খাওয়াতে হবে দিয়া, তোর টাকা আজকে সব শেষ করে দেবো

দিয়া — ঠিক আছে যাহ, আজকে যা খুশি খেতে প্যারিস..! তুই অর্ডার তো কর আগে (হেসে)

নিশি — খাওয়া পরে, তার আগে দেখি দেখি ভালোভাবে তোর মুখটা একটু দেখতে দে..এক্সাম টাইমে তো ভালোভাবে দেখতেই পারলাম না, আর তারপর তুই সোজা শ্বশুরবাড়ি চলে এলি

দিয়া — আমাকে আবার নতুন করে দেখার কি আছে রে? আমি সেই পুরোনো দিয়াই আছি, দুটো পাখনা তো গজায়নি আমার

নিশি দিয়ার থুতনি ধরে এদিক ওদিক মুখ ঘুরিয়ে দেখে বলে..

নিশি — দেখার অনেককিছু আছে..দেখি, ওলে বাবা! বিয়ের পর তো দেখছি আরো বেশি মিষ্টি হয়ে গেছিস তুই, ভাইয়ার ভালোবাসায় গ্ল্যামার বেড়ে তোর তাইনা? হুম হুম..!! (দুষ্টু হেসে)

নিশির এই কথার উত্তর দিয়ার কাছে নেই কারণ সত্যি তো এটা যে ভালোবাসা দূরের কথা আদি ওকে বলতে গেলে জোর করে সহ্য করছে..কিন্তু দিয়া তো ভালোবাসে, ও নিজের দিকের ভালোবাসার কথাটাই তুলে ধরে বন্ধুদের সামনে..

দিয়া — ভুল বললি, উল্টে বল আমার ভালোবাসায় তোদের ভাইয়ার গ্ল্যামার বেড়ে গেছে, আগের থেকে আরো বেশি হ্যান্ডসম হয়ে গেছে সে, দেখ গে কেমন গ্লো করছে (হেসে)

উদয় — সব তো বুঝলাম কিন্তু ভাইয়াকে নিয়ে আসতে পারলিনা? তাহলে আরো মজা হতো

দিয়া — মুখ দিয়ে বললেই হলো নাকি? ডাক্তার সাহেবের কাছে আমাকে দেবার মতোই সময় নেই সেখানে আবার এখানে আসতে যাবে? কি যে বলিস!

উদয় — তাহলে তো মনে হয় আমাদের বন্ধের দিন দেখা করার প্ল্যান করা দরকার ছিল, তাইনা নিশি?

নিশি — হুমম! তাইতো দেখছি

দিয়া — এই, আমি এসেছি তাতে তোদের হচ্ছে না? এখন ভাইয়াই তোদের আপন আর আমি পর হয়ে গেলাম? চুপচাপ খাবার অর্ডার কর আর আদিত্যর কথা ভুলে যা..

নিশি — আচ্ছা আচ্ছা এবার ছেড়ে দিচ্ছি কিন্তু এরপর কিন্তু ছাড়বো না, ভাইয়াকে আসতেই হবে দরকার পড়লে আমরা গিয়ে নিয়ে আসবো

দিয়া মুচকি হাসলো, আসলে ও ইচ্ছে করে খাবারের কথা টেনে আদির প্রসঙ্গ বদলে দেয়, কিছু সময়ের জন্য হলেও আদির কথা, ওর ইগনোর করার বিষয়গুলো ভুলে থাকতে চায় ও..ওদিকে দিয়ার বাড়িতে ওর বাবা জাভেদ সাহেব আর মা মিসেস কেয়া মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে এনে খাওয়ানোর আলোচনা করছিলেন..

কেয়া — সামনে তো দিয়ার জন্মদিন, আমি ভাবছিলাম সেদিন আদিত্য আর ওকে একসাথে আসতে বলবো, মেয়ের জন্মদিন ও পালন করে নেবো আর মেয়ে জামাইকে খাওয়ানো ও হয়ে যাবে

জাভেদ — ভালো কথা ভেবেছো তুমি, এমনিতেও আদিত্য তো বিয়ের পর এই বাড়িতে মাত্র ১ বার এসেছে.. ব্যস্ত মানুষ ছেলেটা, ওর সাথে আমি আগে কথা বলে দেখি কি বলে

কেয়া — হ্যা, তুমি ওর সাথে কথা বলো তারপর আমি আয়োজন করে ফেলবো, মেয়ে জামাইকে ভালোভাবে একসাথে তো অ্যাপায়ন করানোর সুযোগই পেলাম না

জাভেদ — আমি রাতে কথা বলে দেখবো, আর ওরা এলে আমি সালমা আপাকেও আসতে বলবো

কেয়া — আচ্ছা! যেটা ভালো বোঝো করো তবে মেয়েকে কিন্তু ওর জন্মদিনে আমি নিজের হাতে ওর পছন্দের তিলের নাড়ু আর পায়েস বানিয়ে খাওয়াতে চাই

জাভেদ — অবশ্যই খাওয়াবে..আমি আজকে রাতেই আদিত্যর সাথে কথা বলে রাখবো (হেসে)
.
.
দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকে আদি ইমারজেন্সি ওয়ার্ড থেকে রোগীকে চেকাপ করে কেবিনের দিকে যাচ্ছিল তখনই ওর বন্ধু ধ্রুব ও এসে হাঁটতে শুরু করে ওর পাশাপাশি..ধ্রুব ও এই হসপিটালের ডাক্তার, আসলে আদিই ধ্রুবকে এখানে অ্যাসাইন করিয়েছে..নতুন হসপিটাল যখন খোলা হলো তখন ভালো ডাক্তারের চাহিদা অনুযায়ী ধ্রুব উপযুক্ত ছিলো বিধায় দুই বন্ধু একই হসপিটালে একসাথে আছে আজকে..রোগীদের ওয়ার্ড অব্দি যেতে যেতে ধ্রুব দিয়াকে নিয়েই কথা বলছিল, এক পর্যায়ে আদি বিরক্ত হয়ে দাড়িয়ে যায়..

ধ্রুব — তোদের বিয়ের দিন ফটোশুটের সময় ওকে দেখেই বুঝেছিলাম মেয়েটা বেশ জলি টাইপের আর তোর প্রতি বেশ ভালোবাসাও আছে

আদিত্য — প্লিজ ধ্রুব! বাড়িতে দিয়ার এই ভালোবাসার কথা শুনতে শুনতে পাগল হয়ে যাই আমি.. অন্তত তুই তো আবার শুরু করিস না

ধ্রুব — আদি, তুই এইভাবে রিয়্যাক্ট করছিস কেনো? দিয়া এতো ভালো যে কেউ ওকে ভালোবেসে ফেলবে আর তুই একই বাড়িতে একই রুমের মধ্যে থেকে ওকে অ্যাভয়েড কিভাবে করিস?

আদিত্য — চাইলেই সব করা যায়..!

ধ্রুব — but She’s your wife.. আর তোকে অনেক ভালোবাসে! তুই তাহলে কেনো ওর সাথে..

আদিত্য — তো..? ওয়াইফ বলে কি ওকে পছন্দ করতেই হবে? আর শোন ও যেটাকে আমার প্রতি ভালোবাসা বলে সেটা ওর পাগলামি..তুই জানিস কালকে ও..

থেমে যায় আদি, আরেকটু হলে তো গত রাতে দিয়া ওকে কিস করেছে সেটা বলে দিতেই যাচ্ছিলো..

ধ্রুব — কালকে কি হয়েছে..?

আদিত্য — কিছুনা..! কালকে আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিল ও, আর প্লিজ আমি এখন ওর কথা শুনতে চাইছি না

আদি আবার হাটতে শুরু করে, ধ্রুব যেখানে ছিল সেখানেই দাড়িয়ে আছে..আদি সবে তিন চার পা এগিয়েছে তখনই ধ্রুব শক্ত কণ্ঠে বলে ওঠে..

ধ্রুব — তাহলে এক কাজ কর তুই..আমার তো বিয়ে হয়নি আর তুইও দিয়াকে পছন্দ করিস না..তাহলে ওকে আমায় দিয়ে দে না, মেয়েটা ভালোবাসা ডিসার্ভ করে..বিশ্বাস কর, অনেক ভালো রাখবো আমি ওকে..! তাছাড়া আমাদের মধ্যে অনেক মিলও আছে..

ধ্রুবর কথাগুলো কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় আদি.. দিয়ার ব্যাপারে সবকিছু সহ্য হলেও এই কথাটা কেনো যেনো সহ্য হলো না ওর, বাম হাতের মধ্যে স্টেথোস্কোপ টা সহ হাত মুঠো করে ফেলে ও…

চলবে….

[ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন..!!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here