তোকে ঘিরে,Part_05,6,7,8
Ariyana Nur
part-05
কারো বাসায় আসলে আগে তার হালচাল জিগ্গেস করে তারপরে খাতির দারি করে।আর আপনি দেখি প্রথমেই থাপ্পড় দিয়ে স্বাগতম জানালেল।
মানহা রেগে বলল…..
—আপনার হালচালের ঘুষ্ঠি কিলাই।আপনি কোন সাহসে আমার বাড়িতে ঢুকেছেন।কারো অনুমতি ছাড়া কারো বাসায় ঢোকা কোন ধরনের সভ্যতা।ওহ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আপনারা মিডিয়ার লোক।বিনা দাওয়াতে যেখানে খুশি সেখানেই যেতে পারেন।
—আরে কথায় কথায় এমন মিডিয়া লোক বলিস কেন?? দেখিস তোর জামাই মিডিয়ার লোকই পরবে।আমি বলে দিলম আমার কথা মিলিয়ে নিস।গরীবের কথা বাসি হলেও মিষ্টি হয়।হুহ….
—ঐ পোরা মুখো,৩৪দাত ওয়ালা।আমার মন চাচ্ছে আপনার একটা দাত ভেঙ্গে দিতে।যা বলে তাই হয়।
—কেন গো মিডিয়ার লোকের গলায় কি শেষে ঝুলবে নাকি??
—আপনি বলেছেন আর তা না হবে ঝুলবো কি অলরেডি ঝুলে গেছি।
—ওমা…তাই নাকি….
লেগেয়ি লেগেয়ি দিল লেগেয়ি লেগেয়ি….
তা আমার এই ঝাসি বোনের দিল কে নিয়ে গেল।হুম…
—আপনি আর একটাও কথা বলবে না।আমি তোর সাথে এমনেই রেগে আছি।
—ওলে….আমার বেবি তারে…..
সে কি জানে তার রাগ আলরেডি পরে গেছে।
মানহা রেগে গিয়ে তাকে চর থাপ্পর মারতে লাগলো আর বকতে লাগলো…..
—শয়তান্নী,কুত্তী,খচ্চরের নানী,শাকচুন্নি তুই আমার সাথে ভাব দেখাস না।তোরে তো আমি আজকে মেরে তক্তা বনিয়ে দিব।
তিনি হাসতে হাসতে বলল….
—বোইন থাম আমি আর পারতাছি না।
মানহা মেরেই যাচ্ছে। মানহার থামার কোন নাম নেই।
ওরা মারামারি করতে থাক আমরা ওদের পরিচয় জেনে নেই।
আফরা আরিশা।পেশায় একজন সাংবাদিক।দেখতে মাশাল্লাহ্ অনেক সুন্দর।মানহার ফুপাতো বোন।
কিছুদিনের জন্য ও কাজের জন্য সিটির বাহিরে গিয়েছিল।আর যাওয়ার সময় মানহাকে জানিয়ে যায় নি।তার উপরে সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।তাও মানহাকে
জানায় নি।তাই মানহার এতো রাগ।
___________________________
আরহাম অফিসে কাজ করছে।কাজের অনেক চাপ যার কারনে দম ছাড়ার মত সময় নেই।কাজের মধ্যেই আরহামের ফোনটা বেজে উঠল।আরহাম ফোন রিসিভ করে বলল….
—আরহাম স্পিকিং।কে বলছেন…..
ফোনের অপর পাশ থেকে ঝজালো কন্ঠে একজন বলল….
—সালা তোর কাছে এখন আমার নাম্বারটাও নেই।
আরহাম ফোন কান থেকে সরিয়ে সামনে এনে নাম্বার দেখে বলল…..
—নাম্বার তো ঠিকই আছে কিন্তু মোটু তোর কন্ঠ এমন কেন??
—ঐ শালা আমার গলা ডেবে গেছে।বুঝতে পারছিস না।
—ও…তোর গলায় মধ্যে ব্যাঙ ডুকেছে।তা ব্যাঙটাকে গিলে ফেললেই তো হয়।
—ঐ শালা তুই আমার সাথে ইয়ারকি করছিস।রাখ তোর ইয়ারকি।১০মিনিটের মধ্যে তুই আমার বাসায় আসবি।তোর কোন কথাই আমি শুনবো না।
—আরে ইয়ার অনেক কাজের চাপ।তাই আজ যেতে পারবোনা।অন্যদিন যাবো।
—তোর কোন কথাই আমি শুনতে চাই না।
—দেখ ভাই তুই না কলিজার টুকরা,হিরা,মানিক দোস্ত আমার।এমন করিস না।প্লিজ….
—ঠিক আছে আগে কাজ শেষ কর।তারপরে আসবি।তোর আর কোন বাহানা শুনবো না।
—কাজ শেষ করার টাইমটা দিয়েছিস এটাই ওনেক।ওকে…রাখি রে।খেয়াল রাখিস নিজের।
_______________________________
অফরা সব শুনে হা করে বসে রইল। কথা যেন খুজেই পাচ্ছে না।কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল…..
—ওহ্…আল্লাহ…গো….
আমারে উঠাইয়া নাও গো….।এসব আমি কি শুনতেছ।মানহা যে কিনা ছে….
মানহা আর কিছু বলতে না দিয়ে বলল….
—থাম… থাম….থাম….
আর আগে যেতে হবে না।আর আমি আগের মত নাই।অনেক পাল্টে গেছি।পরিস্থিতি মানুষকে কিসের থেকে কি বানিয়ে দেয় তার ঠিক নেই।
আফরা তাকিয়ে দেখে মানহা মন খারাপ করে বসে আছে।তাই কথা ঘুরিয়ে বলল….
—চলনা আমরা একটু ঘুরে আসি।অনেক দিন ধরে ঘুরতে যাই না।
—তোর সাথে আমি যাবো ঘুরতে মাথা খারাপ।একটু কিছু হলেই রাস্তায় ঝামেলা শুরু করে দিস।তোদের মত মিডিয়ার মনুষের সাথে যাওয়া আর না যাওয়া সমান।
—ঐ কথায় কথায় মিডিয়ার মানুষ কস কেন।আর আজ কোন ঝামেলা করবো না সত্যি বলছি….
—ওকে আমি রেডি হয়ে আসছি।
—ওকে তারাতারি করবি।তোর তো রেডি হতে সময় লাগে।
মানহা চোখ বড় বড় করে বলল….
—কি বললি আমার দেরি লাগে রেডি হতে।আমি কি তোর মত বাহিরে যাওয়ার আগে মুখের মধ্যে ইচ্ছে মত ঝাড়ু দেই যে দেরি হবে।আমি তারাতারিই করি।হুহ….
(ঝাড়ু দেওয়া বলতে বেল্ডিং ব্রাশ দিয়ে মেকআপ সেট করার কথা বলা হয়েছে।প্লিজ কেউ উল্টাটা মনে করবেন না )
আফরা হাত জোর করে বলল….
—হয়েছে আমার বেহেনা।তুমি খুব তারাতারি রেডি হও।আর কথা না বলে রেডি হয়ে আয়।
মানহা তুর কে রেডি করে নিজে রেডি হচ্ছে।এতোক্ষন মেয়েকে তেল মেখে মান ভাংগাতে মানহার রফা দফা হয়ে গেছে।মানহা আয়নার সামনে দাড়িয়ে হিজাব পরছে আর একা একাই বকবক করছে…..
—আল্লাহ্ আমার যে মেয়ে একটু কিছু হলেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকে।সোয়া সের তেল মেখে তার মান ভাংগাতে হয়।
আমি কোনদিন যেন পাগল হয়ে পাগলা গারদে চলে যাই।
মানহা নিচে নামতেই আফরা বলল…..
চল তারাতারি এভাবেই দেরি হয়ে যাচ্ছে।
মানহাঃ হুম….চল।
তুর আফরার হাত ধরে বলল….
—আন্টি তুমি এবার আমায় বেশি করে চকলেট কিনে দিবে।ঐ বার যা দিয়েছিলে সেগুলো মাম্মাম খেয়ে ফেলেছে।
মানহা কোমরে হাত রেখে বলল…
—কি মিথ্যাবাদী মেয়েরে।আমি কখন তোর সব চকলেট খেলাম??
আফরা তুরকে আদর দিয়ে বলল….
— ঠিক আছে মা…আমি তোমাকে এবার অনেকগুলো চকলেট কিনে দিব।মাম্মাম কে একটাও দিব না।এবার খুশি…
তুরঃইয়াহু…..চলো চলো তারাতারি চল।
_________________________________
তুর কে স্কুলে রেখে মানহা আফরার সাথে দেখা করার জন্য একটা রেস্টুরেন্টে এসেছে।ওরা ফুচকা ওডার দিয়ে বসে আছে আর কথা বলছে।এমন সময় একজন ওদের সামনে এসে বলল….
—আরে আরিশা….কেমন আছো তুমি??কবে এসেছো??
আফরা দাড়িয়ে বলল….
—আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।আমি ঠিক আছি।আপনি ভালো আছেন???তা ভাইয়া বসুন না আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
লোকটি ওদের সাথে বসে বলল….
—তা কি বলবে?? এখানেই বলতে হবে??
আফরাঃকথা পরে হবে আগে বলুন আপনি ভাইয়া কি নিবেন??আমরা তো ফুচকার ওডার দিয়েছি আপনার জন্য কি ওডার দিব???
—ধন্যবাদ।আমি কিছুই নিব না।
—তা বললেই হল।কি নিবেন বলেন??আমি ওডার দিচ্ছি।আর ছোট বোন হিসেবে কি আমি আপনাকে খাওয়াতে পারি না।
—তা পারবেনা কেন।আর তোমার ওডার দিতে হবে না।লোকটি ওয়েটারকে ডেকে হট কফির ওডার দিলে।
ওরা কথা বলছে আর মানহা এদিকে ওদের কাহিনী দেখে আফরার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল।আফরা খেয়াল করতেই একটা শুকনো ডোক গিলে মুখের মধ্যে ফেক হাসি ঝুলিয়ে বলল….
—মনহা তোকে বলতাম না বড় ভাই এর কথা ইনিই হলেন আমাদের বড় ভাই।আর ভাইয়া ও হলো আমার কাজিন মানহা।
লোকটি মানহার দিকে তাকিয়ে বললেন…
—কেমন আছেন আপনি????
মানহা দাতে দাত চেপে বলল….
—জ্বি ভালো।তা আপনি কেমন আছেন ভা…ইইই…য়া????
মানহার কথা শুনে লোকটা কাশতে লাগলো।আফরা পানির গ্লাস এগিয়ে দিল।আর লোকটি ঢক ঢক করে সব পানি খেয়ে নিল।
আফরাঃভাইয়া আপনি ঠিক আছেন???
—হ্যা আমি ঠিক আছি।
লোকটি মনে মনে বলল…..
চলবে
(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।কেমন হচ্ছে জানাবেন।ধন্যবাদ)
তোকে ঘিরে
Part_06
Ariyana Nur
লোকটি মনে মনে বলল…..
—কি মেয়েরে বাবা, জীবনে আমার সাথে প্রথম কথা বলল তাও আবার ভাইয়া বলে।আমি ওর কোন কালের ভাই লাগি যে আমাকে ভাইয়া বলছে।
আফরাঃভাইয়া আপনার থেকে একটা সাহায্য লাগবে।যদি কিছু মনে না করেন???তো..
—আরে না না….তুমি তো আমার ছোট বোনের মত।নিদ্ধিধায় বলতে পারো।কি করতে পারি আমি।
আফরাঃ ধন্যবাদ ভাইয়া।আসলে আমার বোন কে না,একটা লোফার,বদমাশ ওর অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করে ফেলেছে।যদি আপনি একটু খুজে দিতেন ঐ লোকটাকে তাহলে ভালো হবে।এই আর কি….
লোকটি মনে মনে বলল…
—-মার কাছে মামা বাড়ির গল্প।আল্লাহ আর কত কি দেখতে হবে।
মানহাঃ আরে আফরা থামলি কেন???আর ঐ লোকটা শুধু লোফার বদমাশ না।আস্ত একটা খচ্চর।শালা চেনা নেই জানা নেই একটা মেয়ের কে না জানিয়ে তাকে বিয়ে করে ফেলল।
তার কাছে বিয়েটা একটা ছেলে খেলা হলেও একটা মেয়ের কাছে বিয়েটা যে কি সেটা সে কি করে বুঝবে।জানিস সে আবার নিজেকে বুদ্ধিমান মনে করে।সাহশী মনে করে।আস্ত একটা ভিতুর ডিম।এই সব লোকদের পিটিয়ে সোজা করা দরকার।মাথার সব চুল ফেলে দিয়ে টাক বানিয়ে দেওয়া দরকার।আম….
আফরা ওকে থাকিয়ে দিয়ে বলল….
—বোইন থাম এবার।একটু দম ছেড়ে নে।লোকটা যদি সামনে থাকতো তাহলে তর কথা শুনে মিমি হার্ট এর্টাক করতো।
মানহা বিরবির করে বলল….
—সামনেই তো বসে আছে কিছুই তো হচ্ছে না।
(ঠিক ধরেছেন লোকটি আর কেউ না আমাদের মানহার আরহাম😍)
আরহাম এক ধ্যনে মানহার দিকে গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে।আর মনে মনে বলছে….
—তোমার এই রুপটাই তো আমি দেখতে চাই।তুমি আমাকে রাগানোর জন্য যাই কিছু বলো না কেন আমি রাগছি না।
আমি তো চাই তুমি এমন থাকো।আর আমাকে যত পারো অপবাদ দাও।ভুল যখন আমি করেছি একটু আকটু কথা শুনলে আমার কিছু যায় আসে না।
মানহা তাকিয়ে দেখে আরহাম এক ধ্যেনে ওর দিকে গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে।আর মিটমিট করে হাসছে।তাতে মানহার মেজাজ আরো গরম হয়ে যায়।মানহা টেবিলে দুহাত দিয়ে বাড়ি দিয়ে বলল….
—তুই আফরা থাক।আর তোর এই ভাইকে ভালোমত খাতির দারি কর।আমার মেয়ের স্কুল ছুটির টাইম হয়ে গেছে।আমি গেলাম।
এই বলে মানহা উঠে গেল।মানহাকে চলে যেতে দেখে আফরা বলল….
—কিরে তুই চলে যাচ্ছিস তাহলে তোর খাবার কে খাবে???
মানহা যেতে যেতে রেগে বলল….
—তুই খা তোর জামাইরে খাওয়া। দরকার পরলে আমার জামাইরে খাওয়া।
মানহার কথা শুনে আফরা হা করে তাকিয়ে রইল আর আরহাম মিটমিট করে হাসছে।
_______________________________
মানহারা আজ ১৫দিন ধরে নতুন বাসায় এসেছে।এখানে এসে মানহা মা আর বোন পেয়েছে আর তুর পেয়েছে বনু আর মনি।মাননি আর তার মেয়ে ওদের পুরো আপন করে নিয়েছে।বাহিরের কেউ যদি এসে ওদের দেখে তাহলে কেউ বলবেনা যে ওরা এক পরিবার না।আফরা দু এক বার এসে ওদের সাথে দেখা করে গেছে।
সকাল বেলা তুর চিৎকার করে বলছে….
—মিষ্টি মনি…..
কোথায় তুমি….আমার স্কুলের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।প্লিজ তারাতারি কর…..
মিষ্টি ব্যাগ কাধে ঝুলাতে ঝুলাতে রুম থেকে বের হয়ে বলল…
—এই পাজি মেয়ে সকাল সকাল এমন ষাড়ের মত চিল্লাচ্ছো কেন??
তুর কোমরে হাত রেখে বলল…..
—তো কি করবো আমার স্কুলের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে আর তুমি রেড়ি হচ্ছ।বেশি কথা বললে কিন্তু সেদিনের কথা বনুকে বলে দিব।তারপর বনু তোমাকে ইচ্ছেমত…..
মিষ্টি হাত জোর করে বলল….
—হয়েছে মেরি মা….তোর সাথে আমি পারবো না।এবার চল তানা হলে দেড়ি হয়ে যাবে।
—হুহ…চল।আর আমার সাথে লাগতে এসো না।
মানহার স্কুলে একটা মিটিং আছে তাই মানহা আগে চলে গেছে আর তুর কে স্কুলে পৌচ্ছে দেওয়ার দায়িত্ব মিষ্টিকে দিয়ে গেছে।
__________________________
মানহা বাসায় এসে দেখে মামুনি মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।ও ওর হাতের ব্যাগ টা তারাতারি সাইডে রেখে মামুনির সামনে গিয়ে হাটু গেরে বসে বলল….
—কি হয়েছে তোমার????শরীর খারাপ লাগছে???এভাবে বসে আছো কেন???
—আরে আমি ঠিক আছি।এতো উওেজিত হতে হবে না।মাথাটা একটু ধরেছে আর কিছু না।
—তাহলে এখানে বসে আছো কেন।যাও গিয়ে ঘুমিয়ে থাক।আসো আমি মাথায় বাম লাগিয়ে দিচ্ছি।
—ঘুমালেই হবে রান্না করতে হবে না।এর একটু পর এভাবেই ব্যথা চলে যাবে।
—তোমার কিছুই করতে হবে না।আজ আমি রান্না করবো।তুমি চল চুপচাপ ঘুমাবে।
—না না তুমি এভাবেই মাএ স্কুল থেকে আসলে।আমি পারবো।তোমার কিছু করতে হবে না।
মানহা গাল ফুলিয়ে বলল….
—এই তুমি আমাকে মেয়ে ভাবো???আমাকে যদি মেয়েই ভাবতে তাহলে তো আমাকে রান্না করতেই দিতে।আমারো তো মন চায় আমার মা বোনকে কিছু রান্না করে খাওয়াতে।
মামুনি মানহার গাল টেনে মুচকি হেসে বলল…
—আমি মাঝে মাঝে ভাবি তুর কার মত হয়েছে।এখন দেখছি পুরো তোমার মত হয়েছে।ড্রামাবাজ একটা।
মানহা মুচকি হেসে বলল….
—দেখতে হবে না মেয়েটা কার।এবার কোন কথা না বলে চল।
তুর স্কুলের গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে মিষ্টি এসে ওকে নিয়ে যাবে।হঠাৎ গেটের ওপর পাশে কিছু দেখতে পায়।তুর কোন দিকে না তাকিয়ে দৌড়ে ঐ দিকে চলে যায়।
চলবে
ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।কেমন হচ্ছে জানাবেন।ধন্যবাদ)
তোকে ঘিরে
Part_07
Ariyana Nur
তুর মন খারাপ করে গেটের সামনে টুলে বসে আছে।একটু আগে আরহাম কে মনে করে সামনে গিয়েছিল সে।কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে আরহাম না অন্য একটা লোক।তাই মন খারাপ করে এখানে বসে আছে।
একটু পর মিষ্টি তুর এর সামনে এসে এক হাতে কান ধরে বেবি ফেস করে বলল….
—সরি…সরি….সরি….মা….
আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে।আসলে আসার আগেই এবং একটা জরুরী ক্লাস পরে গেছিল তাই আসতে দেরি হয়ে গেছে।
তুর মিষ্টির কথা শুনে ওর দিকে না তাকিয়েই ব্যাগ কাধে নিয়ে ওয়াটার পট গলায় ঝুলিয়ে সামনের দিকে হাটতে লাগলো।
আর মিষ্টি এদিকে বোকা বনে গেল।কেননা তুর একটু দেরি হলেই তুরকালাম শুরু করে দেয়।সেখানে আজকে আধা ঘন্টা লেট।মিষ্টিও কিছু না বলে তুর এর সাথে হাটতে লাগলো।
একটু পর তুর বলল….
—মিষ্টি মনি….
আমার সুপারম্যান কি আমার সাথে আর কখনো দেখা দিবে না???
তুর এর এমন কথা শুনে মিষ্টি থেমে গেলো।মিষ্টি তুরকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বলল….
—কি হয়েছে আমার মনির???হঠাৎ সুপারম্যান এর কথা কেন বললে???
তুর গাল ফুলিয়ে ওকে সব বলল।সব শুনে মিষ্টি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল….
—তোমার সুপারম্যান দেখবে তোমার সাথে আবার দেখা করতে আসবে।তোমার সুপারম্যান এর ও মনে হয় তোমার সাথে কথা বলতে না পেরে তোমার মন খারাপ হয়ে আছে।দেখবে আমার এই মিষ্টি মনি সাথে কথা বলার জন্য সুপারম্যান ঠিকই আসবে।কেননা আমার মনি যে অনেক ভালো।তার সাথে সবাই কথা বলার জন্য পাগল।
তুর খুশি হয়ে বলল….
—সত্যি বলছ তুমি…
মিষ্টি মুচকি হেসে বলল….
—হুম…এবার তারাতারি চল।তা না হলে আমাদের দুজনের মাদাররা আবার আমাদের বকুনি দিবে।
__________________________
আরহাম আর ওর বন্ধু বসে লাঞ্চ করছে ওর বন্ধুর বাসায়।
খাবার খেতে খেতে আরহাম বলল….
—মটু আর কতো একা থাকবি আর আমাকে দাওয়াত দিয়ে এমন খাবার খাওয়াবি???
—কেন খাবারে কি সমস্যা???
—কোনটায় সমস্যা নাই সেটা বল।একটা লবন হয় নাই একটায় লবন বেশি।একটায় মরিচ ছোয়াস নাই আরেকটায় মরিচই দেখা যায়।
—শালা বিয়ে তো ঠিকিই করছো তারপরেও আক্কল হয় নাই।ভাবি বাড়িতে থাকলে তোর চোখে আঙ্গুল দিয়ে সব চিনাইতো।
—ঐ শালা কথায় কথায় বউএর ভয় দেখাস কেন।আমার বউ এমনি যেই ধনিলংকা।তার উপরে আবার ভয় দেখাস।আর আমি কোনটা ভুল বললাম যে,আমার চোখে আঙ্গুল দিয়ে সব চিনাইতে হইবো।
—তুই কোনটা ঠিক বললি।লাউ শাকের ডগারে যে তুই মরিচ বললি তার বেলায়। আর মলা মাছের তরকারিতে কে বেশি মরিচ দিয়া রান্না করে।তোর কপালে দেখিস কি আছে।শালা আজ পযর্ন্ত তরকারির নাম ঠিক মত বলতে পারিস না।ভাবি একটা আনতে বলবে আর তুই আরেকটা নিয়ে আসবি বাজার করে।
—আরে শালা বদ্ দোয়া দিস না।তারাতারি খা খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নাই।
—ও….কথা বলতে নেই কিন্তু খাবারের দোষ ধরতে আছে না…।আমাদের রাসূল (সাঃ) খাবারের দোষক্রটি ধরতে নিষেধ করেছেন তা কেন আপনি ভুলে যান ভাই।
—শালা এই কথাটা আগে বললেই তো আমি বলতাম না।যা আজ এখন থেকে তওবা করলাম আর কখনো খাবারের দোষক্রটি ধরবো না।
_______________________________
বিকেলে মানহারা সবাই এক সাথে বসে আছে।মামুনি সোফায় বসে আছে আর মানহা তার মাথা বেধে দিচ্ছে।এমন সময় তুর বলল….
—বনু তুমি কি আমার মত ছোট বেবি???মাম্মাম তোমাকে মাথা বেধে দিচ্ছে???
মানহাঃনা মামুনি বড় বেবি।তাইতো আমি মাথা বেধে দিচ্ছি।
মিষ্টিঃভাবি তুমি আমাকেও মাথা বেধে দাও।
মামুনিঃ নিজের হাত নেই নিজে বেধে নেও।আর ও না তোমাকে ভাবি বলতে নিষেধ করে তারপরেও কেন বল???
মিষ্টিঃআমার ভাবিকে ভাবি বলতেই ভালো লাগে।আপু উপু ভালো লাগে না।হুহ….
মামুনিঃতুমি কিন্তু দিন দিন বেশি কথা বলছো।ও বলতে নিষেধ করেছে তো বলবে না।তোমার আর কোন কথাই আমি শুনবো না।
মামুনির কথা শুনে মিষ্টি গাল ফুলিয়ে বসে রইল।
মানহাঃ ছাড় তো মামুনি…..
ও যখন আমায় ভাবি বলে শান্তি পায় তাহলে বলতে দাও না।বলুক ভাবি….
তাছাড়া ওর মুখে ভাবি ডাক শুনতে আমারো ভালই লাগে।নিজেকে বড় বড় মনে হয়।
মানহার কথা শুনে মিষ্টি বলল….
—দেখলে….ভাবিও রাজি হয়ে গেছে।এবার আমায় ভাবিকে ভাবি বলা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।হুহ….
ওরা কথা বলছে আর ওদের কথার মাঝেই মানহার ফোনটা বেজে উঠল।ও ফোন রিসিভ করে সালাম দিল।কিন্তু অপর পাশ থেকে কোন কথার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।মানহা কিছুক্ষণ হ্যালো হ্যালো করে লাইন কেটে দিল।একটু পর আবার কল আসলো মানহা এবার ফোন রিসাভ করেই বলল….
—কথা যখন বলবেন না তাহলে ফোন দিচ্ছেন কেন???টাকা কি বেশি হয়ে গেছে???
অপর পাস থেকে বলল….
—কি করবো বল….
বউ বাচ্চা তো আমার টাকায় খায় না তাই…..
মানহার এবার বুঝতে দেরি হল না লোকটা কে???কিছুদিন ধরেই লোকটা একেকটা নাম্বার থেকে ফোন দিচ্ছে।এই পযর্ন্ত মানহা অনেকটি নাম্বার ব্লক করেছে তার পরেও লোকটা ওকে ফোন দিয়েই যাচ্ছে।
মানহা এবার রাগি গলায় বলল….
—মান সম্মান নেই আপনার???ছেছড়া লোকদের মত একটা মেয়েকে ডিস্টাব করছেন???
—মনে হচ্ছে মেডামের আজকে বেশি রাগ উঠে গেছে।বেশি রাগা ভালোনা।এমনেই যেই গুলুমুলু।বেশি রেগে ফুলে আবার ফুটবল হয়ে যেও না।ভালো থেকে……
মানহা কিছু বলার আগেই লোকটা লাইন কেটে দিল।মানহা রেগে ঐ নাম্বারে কয়েকবার কল দিল।প্রতিবারি একটা কথা ভেসে আসছে….
আপনি যেই নাম্বারে কল দিয়েছেন তা এই মুহুর্তে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
মানহা এবার রেগে গিয়ে হাতের ফোনটা সামনের একটা টেবিলে ঠাস করে রেখে বির বির করে বলতে লাগলো….
—আমাকে গুলুমুলু বলে আমাকে???কানা কোথাকার….
তকে মলাঢলা মাছের মাথা কাচা খাওয়ানো দরকার।কোন দিক দিয়ে আমি মোটা…..
দেখিস তর বউ একটা মিনি হাতি হবে।আর তুই দুদিন পর ফুলে গন্ডার হবি।মানহা বির বির করে বকতে বকতে কিচেনে চলে গেলো।এই মুহুর্তে তার রাগ কমানোর জন্য কিছু বানিয়ে খাওয়া দরকার।তা না হলে তার এই রাগ সহজে কমবে না।
চলবে
(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)
তোকে ঘিরে
Part_08
Ariyana Nur
মানহা র্পাকে একটা বেঞ্চে বসে আছে আর চোখের জল ফেলছে।আজ যেন ওর চোখের জলের বাধ মানছে না।মানহা কান্না করছে আর মনে মনে ভাবছে…..
—কিসের থেকে কি হয়ে গেলো।কেন সব সময় মেয়েদেরকেই কথা শুনতে হয়???কেন সবাই মেয়েদের দিকেই আঙ্গুল তুলে???একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে মানুষ কিভাবে এমন বাজে আপবাদ দিতে পারে???আমি তো তাদের মেয়ের মতন,তাহলে মেয়ের সমবয়সী একটা মেয়ের সাথে কিভাবে তারা এমন বাজে ভাষায় কথা বলতে পারলো???
আমাদের সমাজের এক অদ্ভুত নিয়ম, স্বামী ছাড়া একটা মেয়ে যদি কোন সন্তান লালন পালন করে তাহলে তাকে হাজারটা কথা শুনতে হয়।হাজারটা প্রশ্নের সমৌক্ষিন হতে হয়।সেখানে যদি মেয়েটি ডিভোর্সি অথবা বিধবা হয় তাহলেতো কোন কথাই নেই। মানুষ মেয়েটার দিকেই আঙ্গুল তুলে।মনে হয় সব দোষ মেয়েটারি।স্বামী যদি মারা যায় তাহলে মানুষ বলে,অপয়া, অলুক্ষনে, ডাইনি মেয়ে এতো তারাতারি স্বামীকে খেয়ে ফেলল।আর যদি ডিভোর্সি হয় তাহলে যদি মেয়েটার দোষ না থাকে তাহলেও মানুষ মেয়েটাকেই দোষি বলে।আর একেক জন একেক বাজে অপবাদ দিয়ে থাকে।
আর এই সব কিছুই কিন্তু শুরু হয় আমাদের সমাজের এমন কিছু মানুষের দ্বারা যারা নিজেরটা খেয়ে পরের গুনকির্তন করতে পছন্দ করে।তারা একটা মেয়ের নামে না জেনে হাজারটা কথা বলে।তাদের মধ্যে তো কিছু এমনও আছে, কেউ যদি কিছু বলে সে যদি ঐ সম্পর্কে কিছু নাও জানে তাহলেও একটু তেল,মসলা মাখা শুরু করে দেয়।
আর আমরাও তাদের কথা শুনে তাদের কথাই বিশ্বাস করে বসে থাকি।আমাদের তো আবার একটা ভালো গুন আছে আর তা হল,লোকমুখে যা শুনি তাই বিশ্বাস করে বসে থাকি।কিন্তু একবারও আসল ঘটনা জানার চেষ্টা করি না।
(এখানে যদি কিছু ভুল বলে থাকি তাহলে ক্ষমা করবেন।আমাদের আশেপাশে যেমনটা দেখি তার থেকেই কিছু কথা তুলে ধরেছি)
আজ সকালে মানহা স্কুলের জন্য বাসার থেকে বের হওয়ার একটু আগে কিছু মহিলা ওদের বাসায় প্রবেশ করে।বাসায় মানহা আর মিষ্টি ছিল।তুর আজ বায়না ধরেছে ওকে ওর বনু স্কুলে দিয়ে আসবে।তাই মামুনি তুর কে নিয়ে স্কুলে গিয়েছে।মহিলারা এসেই মানহাকে হাজারটা প্রশ্ন করা শুরু করে দেয়।মানহা সবার সাথে ভদ্রতা বজায় রেখেই তাদের প্রশ্নের উওর দিচ্ছিল।কিন্তু একটা প্রশ্নেই মানহা থমকে দাড়ায়।এক মহিলা বলল…
—তোমার মেয়েকে ঐ দিন জিগ্গেস করলাম তোমার পাপা কোথায়???ও তো কিছু বলল না।তা তোমার স্বামী কোথায়???তা স্বামী আছে নাকি???
মানহা চুপ করে দাড়িয়ে আছে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।এতোদিন তো বলেছে ওর স্বামী মারা গেছে।আর এখন যেহেতু ওর আরহামের সাথে বিয়ে হয়েছে তাই ওর মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না।মারা গেছে বলতেও পারছে না আবার আরহামের কথাও বলতে কেমন যেন লাগছে।তাইও চুপ করে দাড়িয়ে আছে।
মিষ্টি পাশের রুম থেকে কারো সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের সামনে আসল।এসেই মহিলাদের কথা শুনে হা হয়ে রইল।
মানহাকে চুপ থাকতে করে থাকতে দেখে আরেক জন বলল…
—কথা বলছো না কেন??কিছু জিগ্যেস করছি তো….
মানহা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে তার পরে বলল….
—জ্বি আমার স্বামী আছে।সে কাজের জন্য অন্য জায়গায় থাকে।
ওর কথা শুনে এক মহিলা গর্জন দিয়ে বলল….
—এই বে-শরমা মেয়ে ফাজলামি কর???আমরা খবর না নিয়েই কি এখানে এসেছি।তুমি যেখানে থাকতে সেখানকার মানুষ বলছে তুমি বিধবা আর তুমি বলছো তোমার স্বামী আছে।এই এক মাসে রূপ দেখিয়ে কাকে পটিয়ে ফেললে।
মিষ্টিঃ আন্টি ভালো ভাবে কথা বলুন।এভাবে কেন কথা বলছেন???উনি…..
ওকে কিছু বলতে না দিয়ে এক মহিলা ধমক দিয়ে বলল….
—এই মেয়ে একটাও কথা বলবে না।এমন একটা মেয়েকে কেন তোমাদের ঘরে জায়গা দিয়েছো।এসব বাজে মেয়েদের আমাদের মত এমন ভদ্র সমাজে মানায় না।তোমার মাকে বল একে যত তারাতারি পারে এখান থেকে যেন বিদেয় করে।এসব ফালতু মেয়েদের দেখে আমাদের মেয়েরা খারাপ হোক তা আমরা চাই না।
আরেক জন বলল…..
—দেখে তো ভালই মনে হচ্ছে।তাহলে চরিএ এমন কেন???
তারা একেক জন আরো একেক বাজে কথা শুনিয়ে চলে গেলো।মানহা তাদের কথা শুনে মুর্তির মত দাড়িয়ে ছিল।ওর মুখ দিয়ে যেন কোন কথাই বের হচ্ছে না।কেননা এমন পরিস্থিতিতে এর আগে ও কখনো পরে নি।মিষ্টিও ছোট মানুষ। কিছু বলতে চাইলে তাকে মহিলারা ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে রাখে।
______________________________
আফরা একটা রেষ্টুরেন্টে বসে আছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর খাচ্ছে।একটু পর একজন এসে ওর সামনে বসে বলল….
—সরি…সরি…সরি….
আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে।আসলে অনের কাজের চাপ ছিলো তো তাই।
আফরা মুখের খাবার শেষ করে বলল….
—দাড়া….
আফরার কথা শুনে লোকটি অবাক হয়ে বলল….
—হোয়াট????
—এই যে ইংরেজদের লোক।বাংলা বুঝেন না???ইস্টেন্ড আপ….
আফরার কথা শুনে লোকটি একটা শুকনো ডোক গিলে বলল….
—সরি মেডাম….আর দেরি হবে না।প্লিজ এই পাবলিক প্লেসে আমার মানসম্মান নষ্ট করো না।
—রাখ তোর মান সম্মান।আমি সেই কখন থেকে তোর জন্য বসে আছি।আমি কি তোর র্গাল ফ্রেন্ড যে আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখবি তারপর এসে বাবু,কলিজা, গিলা বলবি আর আমি পটে যাব।
—পারলিক প্লেসে কি শুরু করলে তুমি।আর তুমি এমন তুই তোকারি করছো কেন???
—তোর চেহারার যে তেরোটা বাজাই নাই সেটাই অনেক।আমাকে দুই ঘন্টা ধরে বসিয়ে রেখে আবার ভাষন দিচ্ছিস।তারাতারি বল,এদিকে আমাকে বসাইয়া রাইখা কোন মাইয়ার লগে দেখা করতে গেছিলি???
—তুমি থামবে।দেখ এখানে কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ আমাকে চিনে।প্লিজ কোন সিনক্রিয়েট করো না।
—আমি পুরান হয়ে গেছি না আমার কথা তো এখন তোর ভালো লাগবে না। থাক তুই এখানে আমি চললাম।আর ভুলেও আমার পিছু নিবি না।আর ভালো কথা,বিলটা পরিশোষ করে দিবি।
আফরা কথাগুলো বলে গট গট করে হেটে চলে গেলো আর লোকটি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইল।লোকটি তারাতারি করে বিল মিটিয়ে আফরার পিছু নেওয়ার জন্য ছুটলো।কেননা এখন যদি ওর পিছু না নেয় তাহলে আরো হাজারটা কথা শুনতে হবে।
লোকটি মনে মনে বলল….
—হায় রে মেয়ে মানুষ!!!মুখে বলে একটা চায় আরেকটা।পিছে গিয়ে মান যেন ভাঙ্গাই তার জন্য ওয়ারর্নিং যাওয়ার সময়ই দিয়ে গেলো।
এতোক্ষন যেই লোকটির সাথে আফরা কথা বলছিল সে হল আফরার ফিয়োন্সি M.S.E।বেচারী আফরা অনেক কাটখড় পুড়িয়ে ওর মনে জায়গা করে নিয়েছে।তারপর তাদের দুই পরিবারের সবাইকে জানানো হলে তারাও ওদের সম্পর্কটা মেনে নেয়।এখন আফরা বেচারাকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরায়।ঊনিশ এর থেকে বিশ হতে হয় না সারে ঊনিশ হলেই বেচারার অবস্থা খারাপ করে দেয়।
___________________________
মানহা স্কুল শেষ করে বাসায় না গিয়ে র্পাকে বসে আছে।এদিকে যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে সেদিকে তার কোন খবর নেই।হঠাৎ ওর ফোনটা বেজে উঠলো।ফোন রিসিভ না করে কলটা কেটে দিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা হল।
বাসায় এসে ওর চোখ কপালে উঠে গেলো।কেননা ড্রয়িং রুমে সকালের ঐ মহিলাগুলো বসে আছে আর……
চলবে