Revenge,পর্ব ০৪,০৫

#Revenge,পর্ব ০৪,০৫
#Tisha_Islam_Nabila
০৪
·
·
আয়াশ নাবিলার হাতের উপর দাড়িয়ে আছে। একেতো পোড়া হাত তার উপর দাড়িয়ে আছে। হাত দিয়ে রক্ত বেরিয়ে গিয়েছে অলরেডি। আর নাবিলার মনে হচ্ছে কেউ কলিজা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। কপাল থেকে রক্ত পড়ে ফ্লোরে পড়লো। আয়াশ দেখে মুচকি হাসলো। এরপর অন্য পা দিয়ে রক্ত মুছে ফেললো। নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কাঁদতে কাঁদতে বললো..!!

——আয়াশ আমার লাগছে খুব..!!

আয়াশ বাঁকা হেসে বললো..!!

——রিয়েলি বেবী?? খুব বেশী লাগছে তোমার??

বলে পা দিয়ে হাত পিষে দিলো। নাবিলা চেঁচিয়ে উঠলে আয়াশ হেসে নেমে গেলো। নাবিলা আস্তে আস্তে উঠে বসলো। উঠে পড়তে গেলেই আয়াশ ধরে বললো..!!

——খবরদার পড়ে যাওয়ার ট্রাই করো না। তাহলে তোমার হাত আর হাত থাকবে না..!!

বলে ছেড়ে দিলো নাবিলা খাটে বসলো। হাতের ব্যান্ডেজ রক্তে ভিজে গিয়েছে। নাবিলা কাঁদতে কাঁদতে ও ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। তাই চুপ হয়ে গেলো কিন্তুু চোখ থেকে ঠিকই পানি পড়ছে। আয়াশ একটু হাসি দিয়ে ব্যান্ডেজ খুললো। এরপর আবার ব্যান্ডেজ করে দিলো। নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। বোঝার চেষ্টা করছে আয়াশ কে। আয়াশ বিরক্তি নিয়ে বললো..!!

——তাকিয়ে থাকার কিছু হয়নি ওকে?? আমিই আঘাত করবো আমিই ব্যান্ডেজ করবো..!!

বলে হাতটা ব্যান্ডেজ করে দিলো। এরপর কপালেও ব্যান্ডেজ করে দিলো। একটা ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখলো। আয়াশ কতক্ষণ নাবিলার দিকে তাকিয়ে। তাচ্ছিল্য হাসলো এরপর গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। নিজেদের আড্ডা দেয়ার জায়গায় চলে এলো। এসে দেখলো মোহিত আসেনি এখনো। তবে বাকীরা আছে সৌরভ, রিয়ান, আশিক। এরা সবাই মেডিকেলের স্টুডেন্ট। আয়াশের সাথেই সবাই আয়াশ গিয়ে বসলো..!!

আশিকঃ কি রে বিশ্ব প্রেমিক তুই??

আয়াশঃ সাট আপ ওকে..!!

রিয়ানঃ কি এমন বলে ফেললো আশিক??

সৌরভঃ আরে তুই তো বিশ্ব প্রেমিকই ছিলি। এখন হাসবেন্ড হয়েছিস তাইনা??

আয়াশঃ মোহিত কোথায়??

সৌরভঃ মোহিত মেবি আদিত্য কে রিসিভ করতে গিয়েছে..!!

আয়াশঃ আদিত্য এসেছে নাকি??

রিয়ানঃ তাই তো শুনলাম..!!

আয়াশঃ আমাকে তো বললো না..!!

আশিকঃ তোকে নাকি ফোন করেছিলো??

আয়াশঃ কখন??

বলে ফোন বের করলো। দেখলো আসলেই ফোন করেছিলো..!!

আয়াশঃ ফোন সাইলেন্ড ছিলো রে..!!

সৌরভঃ হ্যা এখন তো থাকবেই..!!

আয়াশঃ আবার??






সবাই হেসে দিলো শুধু আয়াশ ছাড়া। অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়ে আয়াশ বাড়ি গেলো। বাড়ি যেতেই আয়াশের বাবা ঠাস করে। আয়াশ কে থাপ্পর মেরে দিলো। আয়াশ গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে..!!

মিস্টার খাঁনঃ কি ভাবছো?? কেন থাপ্পর মারলাম তাইতো??

আয়াশঃ পাপা আমি কি করেছি??

মিস্টার খাঁনঃ তুমি এতটা বিগড়ে গিয়েছো??

আয়াশঃ বাট পাপা আমি করেছিটা কি??

মিস্টার খাঁনঃ তুমি নাবিলার চুলের মুঠি ধরেছিলে কেন?? এই শিক্ষা পেয়েছো তুমি??

রেগে বললো উনি আয়াশ রাগী দৃষ্টিতে। মিতা খাঁনের দিকে তাকালো..!!

মিস্টার খাঁনঃ এই ওদিকে কি দেখছো?? কেন করেছো তুমি এটা??

আয়াশঃ সরি পাপা আর করবো না..!!

মাথা নিচু করে বললো আয়াশ। কারন নিজের বাবা কে ভয় পায়। বলে হনহন করে রুমে চলে গেলো। রুমে এসেই রাগে ফোস ফোস করতে লাগলো..!!

আয়াশঃ সব তোমার জন্য হয়েছে..!!

নাবিলার দিকে তাকিয়ে বললো। নাবিলা তো এখনো ঘুমিয়ে আছে। আয়াশ বেলকনিতে চলে গেলো। কতক্ষণ বেলকনিতে থেকে আবার রুমে এলো। সবকিছু অসহ্য লাগছে ওর কাছে। নাবিলার ঘুম ভেঙে গেলো দেখলো। আয়াশ ওর দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নাবিলা ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে গেলো। গুটিশুটি মেরে বসে আছে একপাশে। আয়াশের দিকে তাকাচ্ছেও না ভয়তে। আয়াশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বেরিয়ে গেলো..!!

রাত ১২টা আয়াশ ঘুমিয়ে আছে। নাবিলা ফ্লোরে হঠাৎ আয়াশ ধপ করে উঠে বসলো। মূলত স্বপ্ন দেখেই উঠে বসলো আয়াশ। আয়াশ প্রচুর ঘামতে লাগলো বারবার ঘাম মুচ্ছে। এরপর ফ্লোরে তাকালো বিছানা থেকে নেমে। অনেকক্ষণ কিছু একটা ভাবলো। আয়াশের চোখ থেকে দুফোটা পানি পড়লো। আয়াশ গিয়ে নাবিলা কে কোলে নিয়ে। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজেও শুয়ে পড়লো। সকালে নাবিলা ঘুম ভেঙে নিজেকে। আয়াশের বুকে আবিষ্কার করলো। নাবিলা কিছুই বুঝতে পারছে না। তাও আবার আয়াশ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে..!!






নাবিলা একা একা বিরবির করছে..!!

নাবিলাঃ আমি এখানে কি করে এলাম??

নাবিলা মোচরা মুচরি করছে। আয়াশ চোখ বন্ধ করেই বললো..!!

——মিষ্টি ঘুমোতে দাও তো..!!

নাবিলা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললো..!!

——কিহহহহহহহহ??

নাবিলার চেঁচানোতে আয়াশ তাকিয়ে বললো..!!

——কি হলো??

নাবিলাঃ আমি এখানে কি করে এলাম??

আয়াশঃ আমি এনেছি..!!

নাবিলা হা করে তাকিয়ে আছে। আয়াশ নাবিলা কে ছেড়ে দিলো। নাবিলা ঠিক হয়ে বসলো আয়াশ ও উঠে বসলো। বসেই নাবিলা কে জড়িয়ে ধরে বললো..!!

——আই এম সরি মিষ্টি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি যা করেছি একদম ঠিক করিনি। জানি হয়তো ক্ষমা হয়না তবুও বলছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও মিষ্টি..!!

নাবিলা অনেক অবাক হলো। কি বলবে কিছু বুঝতে পারছে না..!!

আয়াশঃ আই লাভ ইউ মিষ্টি। আমি যাই করি না কেন। আমার ভালবাসা মিথ্যে না ট্রাস্ট মি..!!

নাবিলা হাত কচলাচ্ছে। আয়াশ সেটা দেখে বললো..!!

——জানি বিলিভ করতে কষ্ট হচ্ছে। ওকে তুমি টাইম নাও। আর আজকে তুমি ক্লাসে যাবে সো রেডি হও..!!

বলে বেলকনিতে চলে গেলো। নাবিলা কিছুক্ষণ হা করে থেকে। ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। এসে দেখলো আয়াশ এখনো রুমে আসেনি। তাই বেলকনিতে গেলো গিয়ে অবাক হলো। আয়াশ কান্না করছে নাবিলার কষ্ট হচ্ছে খুব। তবুও কিছু বললো না চলে এলো। আয়াশ ও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। এরপর দুজনে বেরিয়ে গেলো। নাবিলা বই পড়ছিলো হঠাৎ বইটা পড়ে গেলো। আয়াশ গাড়ি দাড় করলো বই অনেক দুরে। নাবিলা গাড়ি থেকে নামলো বই আনতে। আয়াশ ও নামলো আয়াশই যেতে চেয়েছিলো। বাট নাবিলা কিছু না বলে গিয়েছে..!!

নাবিলা বইটা ওঠাতে নিচু হলো। এরমাঝে আয়াশ দেখলো দ্রুতগতিতে। একটা ট্রাক আসছে আয়াশ চেচিয়ে বললো..!!

——-মিষ্টি সরে যাও..!!

নাবিলা একবার তাকিয়ে আবার নিচু হলো। আসলে বইটা একদম চিকন। যার জন্য বাতাসে সরে যাচ্ছে বারবার। ট্রাকটা প্রায়ই চলে এসেছে আয়াশ দৌড়ে গিয়ে। নাবিলা কে একটানে সরিয়ে দিলো। কিন্তুু নিজে সরতে পারলো না ট্রাকটা। আয়াশ কে ধাক্কা মেরে চলে গেলো। আয়াশ মুখ থুবরে গিয়ে পড়লো। নাবিলা আয়াশ কে দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। আয়াশ রক্তে মেখে গিয়েছে..!!

নাবিলাঃ আয়াশশশশশশ..!!

নাবিলা দৌড়ে আয়াশের কাছে গেলো। আয়াশ নাবিলার দিকে তাকিয়ে। আস্তে আস্তে বললো..!!

——আই এম সরি মিষ্টি..!!

বলে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো..!!

এরমাঝে গাড়ি নিয়ে কেউ এলো। নাবিলা তো কেঁদেই যাচ্ছে। নাবিলার কাধে লোকটা হাত রাখলো। নাবিলা পিছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো..!!

——তুমি??
·
·
·
চলবে……..

#Revenge (পর্ব ০৫)
#Tisha_Khan_Nabila
·
·
·
নাবিলা পিছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো..!!

—–তুমি??

আদিত্যঃ হ্যা আমি কি হয়েছে??

আদিত্যর চোখ গেলো আয়াশের দিকে..!!

আদিত্যঃ আয়াশ ও মাই গড। নাবিলা ওর এই অবস্থা কি করে হলো??

নাবিলাঃ আদি ভাইয়া আমাকে বাঁচাতে গিয়ে..!!

আদিত্যঃ ডোন্ট ওয়ারী ওর কিছু হবেনা। আমরা ওকে এক্ষুণি হসপিটালে নেবো..!!

এরপর কয়েকজনের সাহায্যে। ওরা আয়াশ কে গাড়িতে তুলে। হসপিটালে নিয়ে যায় আর নাবিলা। নিজেদের ড্রাইভার কে ফোন করে। ওদের গাড়িটা নিয়ে যেতে বলে। সারা রাস্তা নাবিলা কেঁদেছে। আর আয়াশ কে ডেকেছে কিন্তুু আয়াশ চোখ খোলেনি। হসপিটালে নিয়ে ডক্টর কে ডাকে। ডক্টর এসে আয়াশ কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। নাবিলা ফোন করে সবাই কে জানিয়ে দেয়। সবাই হসপিটালে চলে আসে। ডক্টর ২ঘন্টা পর বেরিয়ে আসে..!!

নাবিলাঃ ডক্টর আমার হাসবেন্ড কেমন আছে??

ডক্টরঃ কন্ডিশন খুব খারাপ ছিলো। বাট এখন উনি ঠিক আছে। সেন্স এলেই দেখা করতে পারবেন..!!

সবাই সস্তির নিঃশ্বাস নেয়। আর নাবিলার যেন বুক থেকে পাথর সরে গেলো..!!

নাবিলাঃ থ্যাংক ইউ সো মাচ ডক্টর..!!

ডক্টরঃ এটা আমাদের রেসপন্সিবিলিটি মিসেস খাঁন..!!

ডক্টর চলে যায় নাবিলা আদিত্যর কাছে গিয়ে বলে..!!

——থ্যাংক ইউ আদি ভাইয়া..!!

আদিত্য ভ্রু কুঁচকে বলে..!!

—–হোয়াই??

নাবিলাঃ তুমি না এলে একা আমি কি করতাম??

আদিত্যঃ ওহ সাট আপ মিশ। আয়াশ আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর তুমিও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তো এটা আমি করবো তাইনা?? তার জন্য থ্যাংকস দিতে হবেনা..!!

আদিত্য নাবিলা কে মিশ বলে। মিষ্টি বলতো বাট আয়াশ বলতে দেয়না। আবির এসে নাবিলা কে জড়িয়ে ধরলো..!!

নাবিলাঃ ভাইয়া তুমি এখন এলে??

আবিরঃ আই এম সরি মিষ্টি কলিজা। আমার একটা ওটি ছিলো সরি হ্যা। ওটি শেষ করে আমাকে আসতে হলো..!!

নাবিলাঃ আমাকে সবাই ভুলে গিয়েছো। দেখো আয়াশের কি হয়ে গেলো..!!

আবিরঃ কিছু হবেনা সোনা তুমি কাঁদবে না..!!

অনেকক্ষণ পর আয়াশের সেন্স এলো। তাই ডক্টর এসে জানিয়ে গেলো। নাবিলা একরকম দৌড়েই কেবিনে চলে গেলো। গিয়ে দেখলো আয়াশের মাথায় ব্যান্ডেজ করা। হাতে পায়ে ও ব্যান্ডেজ করা। বাম হাতে স্যালাইন চলছে। নাবিলা ধীর পায়ে গিয়ে আস্তে বললো..!!

——আয়াশ..!!

আয়াশ আস্তে করে চোখ খুললো। দুজনের চোখেই পানি ছলছল করছে। আয়াশ হুট করেই উত্তেজিত হয়ে বললো..!!

——মিষ্টি আর ইউ ওকে??

নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে..!!

আয়াশঃ মিষ্টি প্লিজ টেল মি আহহ..!!

মাথা ব্যথা করে ওঠায় চেচিয়ে উঠলো। নাবিলা পাশে বসে আয়াশের ডান হাতটা ধরে বললো..!!

——উত্তেজিত হতে কে বলেছে হ্যা?? আমি একদম ঠিক আছি আয়াশ। তুমি তো আমার কিছু হতে দাওনি..!!

আয়াশ জোরে একটা শ্বাস ছাড়লো। এরপর সবাই এক এক করে এসে। আয়াশ কে দেখে গেলো রায়হান খাঁন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই ওনাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো। এরমাঝে কেবিনে আদিত্য এলো..!!

আয়াশঃ আদি তুই এখানে??

নাবিলা সবটা বললো আয়াশ কে..!!

আয়াশঃ আদি তোকে..!!

তারআগেই আদি বলে উঠলো..!!

——আর যাই বলিস না কেন?? এটলিস্ট থ্যাংকস বলিস না প্লিজ..!!

আয়াশঃ হোয়াই??

আদিত্যঃ তারমানে তুই থ্যাংকস বলতি??

আয়াশ হেসে দিলো আদিত্যর ফোন এলো। তাই আদিত্য বেরিয়ে এলো। দরজা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে মনে মনে বললো..!!

——তোকে কি করে কিছু হতে দিতাম??

বলে ওখান থেকে চলে এলো। ৩দিন পর আয়াশ কে বাড়ি নিয়ে এলো। নাবিলা আয়াশের খেয়াল রাখে সবসময়। কখন কি লাগবে?? কখন কি খেতে হবে?? ঔষুধ কখন কখন খাওয়ানো লাগবে সবটা। নাবিলার সেবাতেই আয়াশ তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়..!!






১০দিন পর রাত ১১টা নাবিলা দাড়িয়ে আছে। আয়াশ এসে নাবিলা কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো..!!

নাবিলাঃ কি হলো মিস্টার খাঁন??

আয়াশঃ রোমান্স পাচ্ছে মিসেস খাঁন..!!

নাবিলা সামনের দিকে ঘুরে। চোখ বড় বড় করে তাকালো। আয়াশ ফিক করে হেসে দিলো। নাবিলা গাল ফুলিয়ে রইলো..!!

আয়াশঃ মিষ্টি চলো..!!

নাবিলা ভ্রু কুঁচকে বললো..!!

——কোথায় চলবো??

আয়াশঃ গেলেই দেখতে পারবে লেটস গো..!!

বলে হাত ধরে বাইরে নিয়ে এলো। নাবিলা কে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো..!!

নাবিলাঃ আরে আয়াশ কোথায় নিয়ে যাচ্ছো??

আয়াশঃ লং ড্রাইভে মিসেস চকলেট..!!

নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আয়াশ ওকে লং ড্রাইভে নিয়ে যাচ্ছে। মিসেস চকলেট বললো এতদিন পর?? বিয়ের আগে মিস চকলেট বলতো অলওয়েস। কত কত নামে ডাকতো নাবিলা হেসে দিলো..!!

আয়াশঃ এটা তোমার চাওয়া ছিলো রাইট??

নাবিলা মুচকি হাসলো। গাড়ি চলছে আপনমনে হঠাৎ বৃষ্টি এলো। বৃষ্টির মাঝে গাড়ি চালানোটা রিস্কি। তাই গাড়ি থামিয়ে ফেললো আয়াশ। গাড়ি থামিয়ে তাকিয়ে দেখলো নাবিলা নেই..!!

আয়াশঃ মিষ্টি কোথায় গেলো??

বাইরে তাকিয়ে দেখলো নাবিলা। মনের সুখে ভিজছে আয়াশ ঘড়ি দেখলো। রাত ১টা বাজে মানে বাড়ি থেকে অনেক দুর চলে এসেছে। বৃষ্টি থেমেও গেলো কিন্তুু নাবিলা তো ভিজে গিয়েছে। আয়াশ গাড়ি থেকে নেমে নাবিলার কাছে এলো..!!

আয়াশঃ এটা কি হলো??

নাবিলাঃ কি হলো??

আয়াশঃ তুমি ভিজলে কেন?? বাড়ি থেকে অনেক দুর চলে এসেছি। এখন বাড়ি যেতে যেতে টাইম লাগবে অনেক। তোমার তো ঠান্ডা লেগে যাবে মিষ্টি..!!

নাবিলা কাঁপতে শুরু করলো..!!

আয়াশঃ দেখলে তো??

আয়াশের চোখ গেলো একটা হোটেলে। লাইট জ্বলছে কিন্তুু ততটা উন্নত লাগছে না। বাট এই মুহূর্তে কিছু করার ও নেই। আয়াশ নাবিলা কে নিয়ে ওখানেই গেলো। বাইরেটা ততটা সুন্দর না হলেও। ভেতরটা ততটা খারাপ ও না। আয়াশ গিয়ে ওদের সাথে কথা বললো। একটা রুমই খালি আছে তাই ওটাই নিলো। রুমে এসেই আয়াশ নিজের শার্ট খুললো। নাবিলা হা করে তাকিয়ে বললো..!!

——তুমি এরজন্য এখানে এসেছো??

আয়াশ ভ্রু কুঁচকে শার্ট খুলতে খুলতে বললো..!!

——কিসের জন্য??

নাবিলাঃ এইযে শার্ট খুলছো..!!

আয়াশঃ ওহ হ্যা এরজন্যই এসেছি..!!

নাবিলা চোখ বড় বড় করে বললো..!!

——কিন্তুু এরজন্য তো বাড়ি আছে আয়াশ। এখানে এসে এসব করবে কেন??

আয়াশ কিছুই বুঝলো না তাই বললো..!!

——মানে কি হ্যা?? বাড়ি যেতে পারলে এখানে আসতাম না..!!

নাবিলাঃ কাল তো পারতে তাইনা??

আয়াশঃ তুমি একচুয়েলি কি মিন করছো??

নাবিলা লজ্জা মাখা ফেস করে বললো..!!

——রোমান্স করতে এখানে এসেছো..!!

আয়াশ হা করে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা এত কিছু ভেবে ফেলেছে?? ভেবেই আয়াশ ছোট শ্বাস নিলো। এরপর শার্টটা নাবিলা কে দিয়ে বললো..!!

——নাও তোমার ড্রেস খুলে এটা পড়ো..!!

নাবিলাঃ কিন্তুু কেন??

আয়াশঃ বেশী কথা বলছো তুমি..!!

নাবিলা এক দৌড়ে ওয়াসরুমে গেলো। গিয়ে শার্টটা পড়ে এলো হাটুর উপরে শার্টটা। টানতে টানতে বেরিয়ে এলো। আয়াশ ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নাবিলার চুল থেকে পানি পড়ছে। নাবিলা গিয়ে খাটে বসে বললো..!!

——তোমার মাথা ও ভিজে গিয়েছে। তুমি গিয়ে আমার ওড়না দিয়ে মুছে এসো..!!

আয়াশ কথা না বলে চলে গেলো। নাবিলার চোখ পড়লো একটা বোতলের দিকে। বেচারীর পানির পিপাসা পেয়েছে খুব। তাই ওতে কি আছে না বুঝেই খেয়ে ফেললো। আয়াশ ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে গোল গোল চোখ করে তাকিয়ে আছে। একচুয়েলি ওটা ড্রিংক যেটা একটু আগে দিয়ে গিয়েছে। দেখতে পানির মতোই তাই নাবিলা খেয়ে ফেলেছে। আয়াশ দৌড়ে এসে বললো..!!

——মিষ্টি এটা কি করলে তুমি??






নাবিলা আয়াশের দিকে তাকালো। আয়াশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। নাবিলার চোখে যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আয়াশ চোখ নামিয়ে নিলো। নাবিলা ঢুলতে ঢুলতে আয়াশ কে জড়িয়ে ধরলো। আয়াশের উন্মুক্ত বুকে মুখ ডুবালো। আয়াশ ফ্রিজড হয়ে দাড়িয়ে আছে..!!

আয়াশঃ মিষ্টি কি করছো তুমি??

নাবিলাঃ হুস কোনো কথা বলবে না। আমি তো তোমার বউ তাইনা?? তাহলে তুমি আমাকে ভালবাসো না কেন আয়াশ?? সবার মতো আমার ও তো ইচ্ছে হয়। আমার স্বামী আমাকে অনেক ভালবাসবে। কিন্তুু তুমি আমাকে একটুও ভালবাসো না..!!

বলে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে লাগলো। আয়াশ ভয় পেয়ে গেলো কেউ শুনলে কি ভাববে??

আয়াশঃ মিষ্টি স্টপ কেউ শুনলে ভাববে। আমি তোমাকে কিডন্যাপ করে এনেছি..!!

নাবিলাঃ এ্যা কিডন্যাপ বাঁচাও..!!

আয়াশ এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। বারবার থামতে বলছে কিন্তুু নাবিলা থামছেই না। আয়াশ আর না পেরে নাবিলার ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দিলো। নাবিলা আয়াশের খালি পিঠে নিজের। বড় বড় নখ বসিয়ে চেপে ধরলো। কিন্তুু এই মুহূর্তে আয়াশ নিজের মধ্যে নেই..!!






সকালে ওরা দুজন বাড়ি চলে এলো। বাড়ি আসার ১মাস পর। নাবিলা বসে বসে চকলেট খাচ্ছে..!!

আয়াশঃ মিসেস চকলেট এটা দেখো..!!

নাবিলার হাতে একটা খাম দিলো। নাবিলা খামটা খুলে দেখলো ২টা টিকিট..!!

নাবিলাঃ আয়াশ এটা??

আয়াশঃ আমরা কক্সবাজার যাচ্ছি ২দিনের জন্য। দ্যান ওখান থেকে এসে তোমার ড্রিম..!!

নাবিলাঃ প্যারিস..!!

আয়াশঃ রাইট প্যারিস যাবো এখন রেডি হয়ে নাও..!!

নাবিলা লাফাতে লাফাতে রেডি হতে গেলো। একটা সাদা টপস আর কালো জিন্স পড়লো। গলায় একটা স্কার্ফ ঝুলিয়েছে ঠোটে হালকা লিপস্টিক। আয়াশ লাল একটা শার্ট পড়েছে উপরে কালো জ্যাকেট। আর কালো জিন্স প্যান্ট চুলে কিছু দেয়নি। সিল্কি চুল তাই কপালে এসে পড়েছে। হাতে কালো ব্রান্ডের ঘড়ি চোখে সাইন গ্লাস..!!

আয়াশঃ রেডি এখন চলো..!!

নাবিলাঃ ড্রেস নেবো না??

আয়াশঃ বেবী তুমি আমার সাথে যাচ্ছো। সম্রাট খাঁন আয়াশের সাথে ওকে?? ড্রেস তোমার যত লাগে কিনে দেবো..!!

বলে হাত ধরে বেরিয়ে গেলো। দেখতে দেখতে ওরা কক্সবাজার পৌছে গেলো। আয়াশ হঠাৎ করে বললো..!!

——চলো আগে পাহাড়ে যাই??

নাবিলাঃ এখন পাহাড়ে??

আয়াশঃ হ্যা চলো..!!

দুজনে পাহাড়ে গেলো সবচেয়ে উচু পাহাড়ে..!!

আয়াশঃ মিষ্টি চলো তোমার পিকচার তুলি??

নাবিলাঃ ওকে..!!

এরপর অনেকগুলো ছবি তুললো। আয়াশ নাবিলা কে পাহাড়ের একদম কিনারে নিয়ে এসেছে..!!

আয়াশঃ আমাকে এটা করতেই হবে। আমার ভাইয়ের খুনীর বেঁচে থাকার কোনো রাইট নেই..!!

নাবিলা অবাক হয়ে বললো..!!

——হঠাৎ এসব কি বলছো?? আর কে তো..!!

তারআগেই আয়াশ নাবিলা কে ধাক্কা মারলো। নাবিলা জোরে আয়াশ বলে চিৎকার করলো। এরপর আস্তে আস্তে সব মিলিয়ে গেলো। আয়াশের কানে বাজছে আয়াশ বলাটা। আয়াশ কানে হাত দিয়ে মিষ্টি বলে চেঁচিয়ে উঠলো। এরপর পাগলের মতো করতে করতে বললো..!!

——এটা কি করে ফেললাম আমি?? মিষ্টি কে ফেলে দিলাম আমি?? না না আমি তো মিষ্টি কে ভালবাসি..!!

আয়াশ দৌড়ে নিচে নামলো। পথ যেন সহজে শেষ হচ্ছেনা। নিচে নেমে খুজতে লাগলো পাগলের মতো। পেলো খুজে নাবিলার গলার স্কার্ফ। আয়াশ মিষ্টি মিষ্টি বলে চিৎকার করছে। হঠাৎ দেখলো সামনেই কেউ পড়ে আছে। সাদা টপস আর কালো জিন্স দেখেই আয়াশ বুঝে গেলো ওটা কে?? আয়াশ কোলে নিয়ে তাড়াতাড়ি গাড়িতে ওঠালো। এরপর সবাই কে ফোন করে বললো। নাবিলা পাহাড় থেকে পড়ে গিয়েছে। আয়াশ নাবিলা কে নিয়ে ঢাকা চলে এলো। সাদা ড্রেস রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে। এখনো শ্বাস চলছে ঢাকা হসপিটালে নিয়ে এলো। বাড়ির সবাই আগেই চলে এসেছে। ডক্টর তাড়াতাড়ি নাবিলা কে নিয়ে গেলো। বাট কিছুক্ষণ পরই আবার নিয়ে চলে এলো..!!

আয়াশঃ ডক্টর ওকে নিয়ে এলেন কেন??

ডক্টরঃ একচুয়েলি মিস্টার খাঁন..!!

আয়াশঃ আপনি প্লিজ ওর ট্রিটমেন্ট করুন। প্লিজ ডক্টর ওকে বাঁচিয়ে দিন। নয়তো আমাকে বলুন আমিই আমার ওয়াইফের ট্রিটমেন্ট করবো। আমি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট..!!

ডক্টরঃ আই এম সরি মিস্টার খাঁন। সি ইজ নো মোর..!!

আয়াশ স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। নাবিলার মা সেন্সলেস হয়ে গেলো। আবির গিয়ে ডক্টরের কলার ধরে বললো..!!

——আর ইউ ক্রেজি ডক্টর?? আমার বোন ঠিক আছে ওকে??

ডক্টরঃ মিস্টার চৌধুরী আপনি একজন ডক্টর। আপনি নিজে দেখুন আর মিস্টার খাঁন। আপনি মেডিকেল স্টুডেন্ট আপনিও দেখে নিন..!!

আবির নাবিলার হাত ধরে থমকে গেলো। কান্নার রোল পড়ে গেলো কাঁদছে না শুধু আয়াশ, কিন্তুু কেন?? আয়াশ হঠাৎ করেই পাগলের মতো হাসতে লাগলো। কেউ বুঝলো না সেই হাসির মানে। নাবিলা কে নিয়ে সবকিছু করে কবর দেয়া হলো। আয়াশ কে আর কেউ দেখেনি। কবর দেয়ার পর কবরের পাশে একবার দেখেছিলো..!!

৫বছর পর..!!

হসপিটালের সুইমিং পুলে পুল পার্টি হচ্ছে। এটা যে হসপিটাল কেউ বলবেই না। কারন হসপিটালে এটা হতে পারে কারো জানা ছিলো না। ফুল ভলিউমে গান চলছে পানিওয়ালা ডান্স। আর একসাথে ৪/৫টা মেয়ের সাথে ডান্স করছে একটা ছেলে। খালি গায়ে একটা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পড়া। কাছে ডক্টরী সব কিছু হাতে থার্মোমিটার। দুর থেকে একজন ডক্টর বোঝার চেষ্টা করছে কে এই ছেলে?? উনি একটু কাছে গেলো গিয়ে দেখলো। ছেলেটার পিঠে ট্যাটু করা সম্রাট খাঁন আয়াশ।ইনি ডক্টর নিহান আহমেদ। উনি অবাক হয়ে চলে গেলো..!!
·
·
·
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here