Mr_innocent,Part_9

Mr_innocent,Part_9
You_are_my_love_addiction
Writer_ আশফিয়া_নুর_আরুশি

-“পেশেন্টের বাড়ির লোক কে আছে?”

-“আমরা সবাই পেশেন্টের বাড়ি লোক ।” (ধ্রুব)

-“আরুশি কেমন আছে?”(আয়াশ)

-“প্রচুর ব্লিডি হয়েছে। পেশেন্টের ইমিডিয়েটলি এবি পজেটিভ রক্ত লাগবে কিন্তু আমাদের ব্লাড ব্যাংকে এবি পজেটিভ ব্লাড শেষ হয়ে গেছে। আপনাদের করারো ব্লাড গ্রুপ কি এবি পজেটিব আছে?

-” ডক্টর আমার এবি পজেটিভ আমি দিব।”(আয়াশ)

-“আপনার একার দিলে হবে না অনেক রক্ত লাগবে।”(ডক্টর)

-“আমি দিব আমার ব্লাড গ্রুপ এবি পজেটিব। “(আদ্রিয়ান)

-“আপনারা আমার সাথে আসুন আপনাদের কিছু চেকআপ করতে হবে।”

আদ্রিয়ান আর রিসাদ ডাক্তারের পেছন পেছন গেলো।

কিছুক্ষন পর
-“আমি ব্লাড দিব বললাম না তবুও কেন বলছেন যে আমি ব্লাড দিতে পারবো না।”(আদ্রিয়ান)

-“আপনি প্লিজ বোঝার চেষ্টা করুন আপনার বিপি আর সুগাল দুটোই লো হয়ে আছে। এখন আপনি যদি ব্লাড দেন তাহলে আপনার ক্ষতি হতে পারে। আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন।”(ডক্টর)

-“আদ্রিয়ান ডক্টর ঠিক বলছে তোর দিতে হবে না
আমি দিব তোর হয়ে।”(আয়াশ)

-“আমি বললাম না আমি দিবো।”(আদ্রিয়ান)

একপর্যায়ে আয়াশ আর আদ্রিয়ানই রক্ত দিলো। কিন্তু রক্ত দেওয়ার কারণে আদ্রিয়ান অনেক দুর্বল হয়ে পরলো।

একঘন্টা পর ডক্টর বেরিয়ে আসে।ডক্টরকে দেখে আদ্রিয়ান ডক্টরের সামনে গিয়ে বলে,
-“ডক্টর আমার কাপকেক ও কেমন আছে?”

-“ভয়ের কোনো কারণ নেই মিস.আরুশি এখন ভালো আছে।আধা ঘন্টা পর ওনাকে কেবিনে দেওয়া হবে।

-“ডক্টর আমি কি ওর সাথে দেখা করতে পারব?”

ডক্টর কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
-“জ্বি পারবে কিন্তু যেকোনো একজন।”

-“আমি যাবো।”
আদ্রিয়ান বললো।

-‘ওকে কিন্তু বেশিক্ষন না পাঁচ মিনিট।”

-” ওকে ডক্টর। ”
বলেই আদ্রিয়ান ভিতরে চলে গেলে।

আদ্রিয়ান আরুশির কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে ওর পাশে বসলো।

-“খুব মজা পাও আমাকে কষ্ট দিয়ে তাই না। তুমি খুব পঁচা। একবার সুস্থ হয়ে যাও তোমাকে আর আমার কাছ থেকে দূরে রাখবো না। আমি যে তোমাতে বাস করি তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না তোমাকে ছাড়া আমার জীবনে এতোগুলো বছর কিভাবে গিয়েছে তা শুধু আমি জানি।প্লিজ জলদি সুস্থ হয়ে যাও প্লিজ প্লিজ।”

আদ্রিয়ান এসব বলছে আর চোখের জল ফেলছে।এভাবে কিছুক্ষণ কথা বলার পর আদ্রিয়ান বেরিয়ে আসে।

আধা ঘন্টা পর আরুশিকে কেবিনে সিফট করা হয় তারপর এক এক করে সবাই আরুশিকে দেখে যায়। তারপর সবাই বাসায় চলে যায়। ধ্রুব ইশিতাকে নিয়ে ওদের বাড়ি চলে যায়। আদ্রিয়ানকে নিয়ে যেতে চাইলে আদ্রিয়ান মানা করে দেয় যে ও এখান থেকে কেথাও যাবে না।

আদ্রিয়ান আরুশির বেডের পাশে বসে একধ্যানে আরুশিকে দেখছে।হঠাৎ আদ্রিয়ান খেয়াল করে আরুশির হাতের আঙ্গুল নড়ছে আর আরুশি চোখ মিটমিট করছে। তাই আদ্রিয়ান ডক্টরকে ডেকে নিয়ে আসে।

ডক্টর এসে আরুশিকে চেক করে।
-” মিস.আরুশির সেন্স আসছে।”

আরুশির সেন্স আসছে শুনে আদ্রিয়ান অনেক খুশি হয়ে যায় আর সবাইকে ফোন করে জানিয়ে দেয়।সবাই আসতে চাইলে আদ্রিয়ান ওদের পরে আসতে বলে।

ডক্টর কিছুক্ষণ আরুশিকে চেক করে চলে যায়।

ডক্টর চলে যেতেই আরুশি নিজের চোখ খুলে আর চোখ খুলতেই আদ্রিয়াকে দেখতে পায় আদ্রিয়ান ওর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে।

-“স..স্যার আ..আআপনি এখানে কে..কেন আর আ..আমি কো..কোথায় এটা কো…কোন জা..জায়গা।আহহ আ..আমার মাথা।এতো ব..ব্যাথা করছে কে..কেন। ক..কি হয়েছে আমার? ”

বলেই আরুশি জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করে।
আরুশিকে এই অবস্থায় দেখে আদ্রিয়ান ভয় পেয়ে যায় আর উত্তেজিত হয়ে ডক্টরকে ডাকতে থাকে।

ডক্টর এসে আবার চেক করে বলে আরুশি যেন বেশি কথা না বলে।

এরকম করে আধা ঘন্টা চলে যায় আর আয়াশ, মিশমি, আজমিরা, রিসাদ, ধ্রুব আর ইশিতা হসপিটালে চলে আসে।

ইশিতা আরুশির কেবিনে ডুকেই আরুশিকে দেখেই কান্না করে দেয়।

-“ইশু বেবি তুই কাঁদছিস কেন।ধ্রুব ভাইয়া কি কিছু বলেছে তোকে?”
আড়চোখে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে ইশিতাকে জিজ্ঞেস করলো আরুশি।

-“আরে আরে ব্লাকরোজ আমি কেন ওকে বোকব তুমি তো জানে তোমার এই চুরেল বোনই আমাকে বকে। ”
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বললো ধ্রুব।

ধ্রুবর ফেস দেখে সবাই হেসে দেয় আর ইশিতা ধ্রুব দিকে তীক্ষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আর ধ্রুব ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়

-“বাসায় চলো একবার।”
রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো আরুশি।

-“দেখলে তো তোমরা কে কাকে বকে।”
ধ্রুব বললো।

সবাই ধ্রুব আর ইশিতার খুনসুটি দেখছে আর হাসছে।হঠাৎ আদ্রিয়ান চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলো আর হুট করে নিচে পড়ে গেলো।

আরুশি আদ্রিয়ানের এ অবস্থা দেখে স্যার বলে চিৎকার করলো,

-“স্যারররররর।”

আরুশির চিৎকার শুনে সবাই পেছনে তাকিয়ে আতকে উঠলো সবার মূখের হাসি নিমিষে গায়েব হয়ে গেলো।

সবাই পেছনে তাকিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান মাটিতে পরে আছে আদ্রিয়ানকে এ অবস্থায় দেখে আয়াশ ডক্টরকে ডাক দিল।রিসাদ আর ধ্রুব মিলে আদ্রিয়ানকে কেবিনে থাকা সোফায় শুয়িয়ে দিলো।

তারপর ডক্টর এসে আদ্রি😘য়ানকে চেক করে বললো,

-” আমি আপনাদের আগেই বলেছিলাম ওনার বিপি আর সুগার দুটোই
লো।সারাদিন কিছু খানও নি মনে হয় তারপরও তিনি রক্ত দিলেন যার কারণে শরীর আরো দুর্বল হয়ে পড়ে আর উনি সেন্সলেস হয়ে যায়। এখন চিন্তার কোনো ব্যাপার নেই আমি ওনাকে অন্য কেবিনে সিফ করানের ব্যবস্থা করছি আর কিছুক্ষণের মধ্যেই উনার সেন্স এসে যাবে আর ওনাকে স্যালাইন দিয়ে রাখতে হবে দুই ঘন্টা ।ওনার সেন্স আসলে আমাকে জানাবেন।”

বলেই ডক্টর চলে যায় আর কিছু নার্স এসে আদ্রিয়ানকে অন্য কেবিনে নিয়ে যায়

এতক্ষণ কি হলো তা না বুঝে
আরুশি ইশিতাকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে।

তারপর ইশিতা আরুশিকে সবকিছু বলল।

-” এবার বুঝলি।”(ইশিতা)

-“হুম আমার জন্য স্যারকে কতোই না সমস্যা পরতে হলো স্যারের এই অবস্থার জন্য শুধু আমি দায়ী। ”
কেঁদে দিয়ে বললো আরুশি।

-“আরে ব্লাকরোজ তোমার জন্য কিছুই হয়নি। তুমি এখন ঘুমাও। তোমার ঘুমের প্রয়োজন।”(ধ্রুব)

-” হুম অজান্তা তুমি ঘুমাও। আমরা একটু আদ্রিয়ানের কাছে যাই আর মিশ আর ইশিতা তোমরা এখানেই থাকো আরুশির খেয়াল রাখো।

-“আচ্ছা।”
দুজন একসাথে বললো।

-“আপনি কতো ভালো আয়াশ। সবার কতো খেয়াল রাখেন।আমি তো আপনার প্রেম পরে যাচ্ছি দিনে দিনে। কি এমন আছে আপনার মধ্যে Mr.handsame। ”
মনে মনে বললো মিশমি।

-” হেই মিশু কি ভাবছো এতো।”
মিশমিকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো ইশিতা।

-” না তেমন কিছু না।”

-“চল আমরা ক্যান্টিন থেকে কিছু খাবার নিয়ে আসি সকাল থেকে কেউই হয়তো খায়নি আর আরুও ঘুমিয়ে আছে। ওর এখন কিছু লাগবে না।

-“আচ্ছা চল।”

_________________
-“ধ্রুব রিসাদ তোরা একটু আমার সাথে আসবি প্লিজ জরুরী কথা আছে আর আজু তুমি আদ্রিয়ানের কাছেই থাকো আমরা যাব আর আসবো।”(আয়াশ)

-” আচ্ছা ভাইয়া।”(আজমিরা)

আয়াশ,ধ্রুব আর রিসাদ বাহিরে চলে গেলো।

-” এভাবে ডাকলি কেন?”(ধ্রুব)

-” হুম ধ্রুব ঠিক বলেছে ডাকলি কেন? “(রিসাদ)

-“তোরা আমার থেকে কিছু লুকোছিস তাই না?” (আয়াশ)

-“কই না তো কি লুকাবো তোর থেকে।”
অবাক হয়ে জবাব দিলো রিসাদ।

-“আরুশি কে?আরুশির এমন অবস্থা দেখে আদ্রিয়ানের এরকম দশা হলো কেন? সবচেয়ে বড় কথা আদ্রিয়ান তো শুধু বারবিডল কেই কাপকেক ডাকতো তাহলে ও আরুশিকে কাপকেক ডাকলো কেন?আর আমাদের ছোট বারবিডল আর এই মেয়ের নামও সেম। তাহলে ওই ই কি আমাদের সেই ছোট্ট আরুশি??

-” হুম তুই ঠিকই ধরেছি আরুশিই আমাদের সেই ছোট্ট বোন তোর বারবিডল, রিসাদের কিউটিপাই, আমার ব্লাকরোজ আর আদ্রিয়ানের কাপকেক।আমাদের সবার কলিজার টুকরা বোন আর আদ্রিয়ানের জান।”(ধ্রুব)

-” ধ্রুব তুই জানতিস এসব?”
রিসাদ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো।

-“আমি তোদের আগে থেকেই ওকে চিনি।তাও তোদের বলি নি কারণ আরুশি সবটা ভুলে গিয়েছে পাহাড় থেকে পড়ার পর। আমরা সবাই ওকে খুঁজি কিন্তু কেউ খুঁজে পাইনি। পুলিশ হার মেনে নিলেও আমি হার মানি নি আমি খোঁজ চালিয়ে যাই আব্বির মাধ্যমে।
পরে একদিন জানতে পারি ও পাহাড় থেকে পড়ার পর একটা পরিবার ওকে রাস্তার পাশে কুড়িয়ে পায়। সেই পরিবারটা আর কেউ না ইশিতার পরিবার।
ইশিতার বাবা আর আমার আব্বি খুব ভালো বন্ধু ছিল আর আমি ইশিকে ছোট থেকে পছন্দ করতাম তাই ওদের সাথে মিশতে আমার বেশি সময় লাগে নি। ইশি কিছুই জানে না কিন্তু ইশির বাবা আর ভাই কে আমি সবটাই বলি আর ভাইয়া আর আংঙ্কেল আমাকে অনেক সাহায্য করে। তোদের তখনই জানাতাম কিন্তু তখন আমি জানতে পারি ব্লাকরোজ মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছে ওকে মানসিক চাপ দেওয়া যাবে না আর ইশিও ওর সাথে খুব মিশে গিয়েছিলো তাই তোদের জানাই নি।কারণ আমি জানতাম আরুশি ওখানে ভালো থাকবে।”
এক নিশ্বাস বললো ধ্রুব।

To be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here