Mr_innocent,Part_21,22

Mr_innocent,Part_21,22
You_are_my_love_addiction
Written_by_আশফিয়া_নুর_আরুশি
Part_21

আরুশি আর মুন বাংলোর ভেতরে ডুকলো।আরুশি মুনকে নিয়ে একটা রুমে প্রবেশ করলো।রুমে প্রবেশ করতেই মুন অবাক হয়ে গেলো…….

মুন পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো আর বললো___

-“এগুলো তো সব আদ্রিয়ান ভাইয়ার আর তোর ছবি তাই না।”

-” হুমম।”

-” এতো ছবি তুই কোথায় পেলি??”

-” সাজেকে ঘুরাঘুরির সময় ধ্রুব আর আয়াশ ভাইয়া সব তুলেছে।সবগুলো মুহূর্তে ছবি আমার কাছে আছে।”

মুন ঘুরতে ঘুরতে একটা বড় ছবির সামনে এসে দাড়ালো আর বললো____

-” এরা কারা?”

মুনের প্রশ্ন শুনে আরুশি ছবিটার সামনে এসে দাড়ালো আর আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে বললো

-” এটা আমার মামুনি আমার পাপা,,,মিম্মি,,,মিম্মাই,,,,আমি,,,আমার আদ্রিয়ান।”
মুচকি হেসে বললো আরুশি।

(হ্যাঁ আরুশি সব মনে পড়ে গেছে আদ্রিয়ান ব্রিজে থেকে পড়ে যাওয়ার পর আরুশি সেন্সলেস হয়ে যায় আর যখন সেন্স আসে তখন সবাই বুঝতে পারে ওর স্মৃতি শক্তিও ফিরে এসেছে)

মুন ঘুরতে ঘুরতে আরেকটা ছবির সামনে গিয়ে দাড়ালো।ছবিটায় আরুশি আদ্রিয়ানের হাত থেকে গোলাপের তোড়া নিচ্ছে।

-” তোদের খুব সুন্দর মানায় পাশাপাশি দাড়ালে একদম made for each other.”

-” হুমমম।এখন কাজের কথায় আসি।”

-“হুমম বল।”
আরুশির দিকে ঘুরে বললো।

-” এখানের আসার মুল উদ্দেশ্য তোকে আর রাজকে এক কার।”

-“কিন্তু রাজ তো আমায় না তোকে ভালোবাসে।”
মাথা নিচু করে বললো মুন

-” না।রাজ আমায় না তোকে ভালোবাসে আমি রাজের চোখে তোর প্রতি ভালোবাসা দেখেছি।তোর প্রতি ওর ভালোবাসা আছে কিন্তু ওই বুঝতে পারছে না।”

-“কিন্তু…..”

-” আমি ওর ভালোলাগা ভালোবাসা নই।ভালোলাগা আর ভালোবাসার মধ্যে অনেক তফাৎ আছে।আর রাজের ওইসব পাগলামোর একমাত্র কারণ হলো আদ্রিয়ানের থেকে প্রতিশোধ নেওয়া।”

-“তাহলে ওর মনে আমার প্রতি যে ভালোবাসা আছে সেটা কিভবে প্রকাশ করাবো ওকে দিয়ে?”

-” তুই একসপ্তাহ রাজকে ignore করবি।”

-” ওকে।কিন্তু ignore করলেই কি কাজ হবে?”

-“হাফ কাজ হবে।ignore করলে তোর প্রতি যে ওর মনে তোর প্রতি ভালোবাসা আছে সেটা বুঝতে পারবে।”

-“প্রকাশ করাবো কিভাবে?”

-” সেটা না হয় আমার উপর ছেড়ে দে।”
বাকা হেসে বললো আরুশি।

-“ওকে বেবি।”

__________
সকালবেলা,,,
In Chowdhury industry

-“মিস.মিশমি আপনাদের অফিসের ওনার কোথায়?”

-“এই অফিসের ওনার আমাদের মাঝে বেঁচে নেই।”(মুন)

কারোর গলার আওয়াজ শুনে সবাই পেছনে তাকিয়ে দেখলো মুন দাড়িয়ে আছে।

-” বেঁচে নেই মানে আআআমার কাপকেক কোথায় ও আআসলো না কেন?ওর ককককিছু হয়নি তো?”
ঘাবড়ে গিয়ে মনে মনে বলল সূর্য।

-“মুন তুমি?”(মিশমি)

-“হুম আমি।”(মুন)

-” আজও তাহলে আরুশি আসবে না।”
মন খারাপ করে বললো মিশমি

মিশমির কথা শুনে সূর্য প্রশান্তি শ্বাস নিলো আর কঠোর গলায় বললো,

-“আপনারা এসব কি বলছেন?একজন বলছেন ওনি বেঁচে নেই আবার বলছেন আসবে না।এসবের মানে কি?”(সূর্য)

-“আসলে আরুশি কোনো মিটিংই এটেন্ড করে না।আর মিটিং বেশি ইম্পর্ট্যান্ট হলে আমাকে পাঠায় মিশমিকে হেল্প করতে আর এই অফিসের ওনার হলো আদ্রিয়ান ভাইয়া। I mean আদ্রিয়ান চৌধুরী।”(মুন)

-“এসব কি বলছে এই মেয়েটা!”
সূর্য মনে মনে ভাবলো।

-“মি.সূর্য তাহলে মিটিং স্টার্ট করা যাক।”(মিশমি)

-“জি।”(সূর্য)

মিটিং শুরু হলো।

-“কাপকেক তো আমার প্রপার্টি বিজনেস এসবের জন্য আমাকে ঠকিয়েছিলো!তাহলে আমি মরে গেছি তা যেনেও কেন অফিস নিজের নামে করলো না কেন?আর মিশমি আর এই মেয়েটার কথা শুনে মনে হলো কাপকেক অফিসের সব কাজ করে কিন্তু উপস্থিত থাকে না কেন?তাহলে কি আমি কোনো ভুল করছি না তো আমার কোনো ভুল বুঝাবুঝি হচ্চে না তো।না না ভুল বুঝা বুঝি হবে কেন?কাপকেক নিজে আমাকে ম্যাসেজ করেছিলো।আমার কোথাও ভুল হচ্ছে না তো।উফফফ মাথায় কিছুই ডুকছে না।”
মনে মনে বললো সূর্য।

-“মি.সূর্য? “(মুন)

-“জ্বি।” (সূর্য)

-“আমরা কি মিটিংটা কনটিনিউ করতে পারি”(মুন)

-” Of course.”(সূ্র্য)

___
মিটিং শেষে,,,
-“গাইস একটা এনাউন্সমেন্ট আছে আপনাদের সকলের জন্য।”(মুন)

-“কি এনাউন্সমেন্ট মুন।”(মিশমি)

-“আজ সন্ধ্যায় চৌধুরী মেনশন এ পার্টি আছে।মেস্কোরেট পার্টি। মি.সূর্য আপনি এই পার্টির বিশেষ অতিথি।”(মুন)

-” কিসের পার্টি।”
মিশমি আর সূ্র্য একসাথে বললো।

-“আমিও জানি না আরুশি বলতে বলেছে তাই বললাম।Now i have to go bye.”(মুন)

বলেই মুন চলে গেলো,,,,,

-” কাজটা করেছি?”(আরুশি)

-” তোর কি আমার উপর ভরসা নেই?”(মুন)

-” না নেই এখন চল বাসায় অনেক কাজ আছে।”(আরুশি)

আরুশি আর মুন প্রথমে শপিং এ গেলো অনেক বেলুন কিনলো তারপর বাড়ি চলে গেলো।

___
সন্ধ্যায়,,,
In the Chowdhury mention

পুরো চৌধুরি মেনশন কালো আর নীল বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।অতিথিরাও এক এক করে আসতে শুরু করেছে।ভিতরে ডুকার আগে সবাইকে একটা করে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। সূর্য আগে থেকেই মাস্ক পড়ে এসেছে তাই ওই আর মাস্ক নেই নি।

সূর্য ভেতরে ডুকতেই হল রুমের লাইট নিভে গেলো।আর আলো গিয়ে পড়লো স্টেজের উপর দাঁড়িয়ে থাকা আরুশির উপর। আরুশি পিয়ানো বাজাচ্ছে।

-”
🎶Kise pusu
Ha aisa Kyu
Bazuba sa
Yeh jaha hai🎶

🎶Khushi ke pal
Kaha dhundu
Banishan sa
Waqt bhi yeha hai🎶

🎶 Jaane kitne
Labo pe gile hai🎶

🎶Zindigi se
Kai faasle hai🎶

🎶Paseejte hai
sapne kyu
aakho mein🎶

🎶Lakeerei jab
chhoote in haatho se
Yu bewajah🎶

🎶Jo bheji thi duaa
Woh Jake aasma
Se yu takra gayi
Ke Aa gayi
Hai Laut ke sada🎶

🎶🎶 Music 🎶🎶

পিয়ানো বাজানো ছেড়ে উঠে সূর্যের কাছে গিয়ে রাউন্ড করে সূর্যের চারিদিকে ঘুরে গানের পড়ে অংশ গাইলো___
🎶Saaso ne kaha rukh mor liya
Koi raah Nazar mein na asse
Dhadkan ne kaha Dil chhod Diya
Kaha chhode in jismo ne saaye🎶

🎶Yahi bar bar sochta hu
Tanha main yeha
Mere saath saath chal Raha hai
Yaado ka duha🎶

🎶Jo bheji thi duaa
Woh Jake aasma
Se you takra gayi
Ke aa gayi hai
Laut ke sada🎶

🎶Jo bheji thi duaa
Woh Jake aasma (2)🎶

🎶Jo bheji thi duaa (3)🎶

🎶🎶 Music 🎶🎶

গান শেষে আরুশি মুনদের কাছে গেলো,।আর মুন স্টেজে এসে এনাউন্সমেন্ট করে,,,

-” hello ledies & gentlemens,, আপনারা সবাই জানেন আজকের এই পার্টি কেন।এই পার্টিটা এরেন্জ করা হয়েছে আদ্রিয়ান ভাইয়ার জন্মদিন আর প্রজেক্ট ফাইনাল হওয়ার উপলক্ষে।এই ড্রিম প্রজেক্টে আমাদের পাটনার মি.সূর্য খান।এন্জয় দ্যা পার্টি। । ”

বলেই মুন স্টেজ থেকে নেমে এলো।

মুন আরুশির কাছে আসতেই আরুশি মুনকে ইশারা করে কিছু বললো আর মুন আরুশির ইশারা দেখে সেখান থেকে চলে গেলো।মুন চলে যাওয়ার পাঁচ মিনিট পর সব লাইট অফ হয়ে গেলো।

লাইট অফ হতেই কেউ সূর্যের মূখ থেকে মাস্ক খুলে ফেললো।মাস্ক খুলে ফেলার সাথে সাথে লাইট ওন হয়ে গেলো।

সবাই সূর্যকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।মাস্ক ছাড়া সূর্যকে দেখে আজমিরা দৌড়ে এসে সূর্যকে জড়িয়ে ধরলো।

-” ভাইয়া তুমি বেঁচে আছো।জানো আমি কত কষ্ট পেয়েছিলাম তোমাকে হাড়িয়ে ফেলে।আরুশি আপু তো প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো তোমাকে না পেয়ে।আমরা তোমাকে কত খুজেছি জানো?কেন এতো দিন আমাদের থেকে দূরে ছিলে ভাইয়া।

-” এখন কি করব?আর কেই বা আমার মূখ থেকে মাস্ক খুলে নিলো? এটা ঠিকই বুঝতে পারছি এটা কোনো দুর্ঘটনা না কেউ প্লেন করে এটা করেছে সবার সামনে প্রমাণ করতে যে আমিই আদ্রিয়ান।কিন্তু এটা কে করলো?আরুশি করে নি তো।”
মনে মনে বললো সূ্র্য উরফে আদ্রিয়ান।

-আদ্রিয়ান চুপ করে আছিস কেন? বল এতো দিন কোথায় ছিলি আর আমাদের কাছে ফিরে আসিস নি কেন?”(ধ্রুব)

-“কে আদ্রিয়ান?? আমি কোনো আদ্রিয়ান না আমি সূর্য।সূর্য খান।আপনাদের কোনো ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে।আমি কেন আদ্রিয়ান হতে যাব। এদের বুঝতে দিলে চলবে না যে আমিই আদ্রিয়ান(মনে মনে)”(আদ্রিয়ান)

-” কেন মিথ্যা বলছি আমরা সবাই জানি তুই আদ্রিয়ান।”(আয়াশ)

-” ভাইয়া তুৃমি কি আমাদের চিনছো না? দেখো তোমার কাপকে…
আরুশি কোথায় গেলো?? মিশমি আরুশি কোথায়?”(ইশিতা)

-” আমিও তো সেটাই ভাবছি আরুশি কোথায় আর মুনকেও তো দেখছি না,।”(মিশমি)

-“রাজ কেও তো দেখছি না। “(রিসাদ)

-” সসসবাই তো এএখানেই ছিলো।”
ফুপিয়ে ফুপিয়ে বললো আজমিরা।

আদ্রিয়ানকে বাদ দিয়ে সবাই আরুশি,মুন আর রাজকে খুজতে লাগলো।

সবাইকে খুঁজতে দেখে রাজ আড়ালে লুকিয়ে পড়লো।

___
অন্যদিকে,,,
পার্টিতে নিজের কাজ শেষ করে আরুশি আর মুন নিজেদের বাইক নিয়ে ব্রীজের উপর চলে আসে।

-” আদ্রিয়ান ভাইয়ার মূখটা দেখার মতো ছিলো।কিন্তু তুই কিভাবে বুঝলি যে সূর্য খানই আদ্রিয়ান ভাইয়া?”(মুন)

-“সব জানতে পারবি।আগে চল আমাদের আরো কাজ আছে।”(আরুশি)

-“আরো কাজ আছে!”(মুন)

-” হুম চল। “(আরুশি)

-“কিন্তু কোথায় যাবো?”(মুন)

-“সেদিন যেখানে গিয়েছিলাম সেখানে।” (আরুশি

-“ওকে।”(মুন)

দুজনে মিলে বাংলোতে পৌছালো,,,

-“তুই এখানে ওয়েট কর।”

বলেই আরুশি মুনকে রেখে বাংলোর ভেতরে ডুকলো।আরুশি ভেতরে ডুকতেই দুটো লোক পেছন থেকে এসে মুনের মূখে রুমাল চেপে ধরলো।কিছু বুঝার আগেই মুন সেন্সলেস হয়ে গেলো।

-“ম্যাম কাজ হয়ে গেছে?”
একজন লোক আরুশিকে ফোন দিয়ে বললো।

-“ভেতরে নিয়ে এসো।”

-“ওকে।”

লোক দুটো মুনকে ভিতরে নিয়ে এসে চেয়ারের সাথে বেধে দিলো

-” তোমরা এখন যাও এখান থেকে।”

-“ওকে ম্যাম।”

-” সরি রে এটা না করলে যে রাজের মনে তোর প্রতি যেই ফিলিংস আছে সেটা ওকে বুঝাতে পারব না।আজই তোর আর রাজের মাঝে যে দেওয়ালটা আছে সেটা ভেঙে যাবে।”
মুচকি হেসে বললো আরুশি।

বলেই আরুশি ফোন বের করে রাজকে ফোন দিলো

-” কে বলছেন।”

-” কে বলছি সেটা আপনার না জানলেও হবে।মুনকে প্রাণে বাঁচাতে চাইলে এখনই আমার পাঠানো ঠিকানায় চলে আসুন।

বলেই অজান্তা ফোন কেটে দিলো রাজকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে।ভয়েস চেন্জ করে বলার কারণে রাজ আরুশিকে চিনতে পারলো না।

_________
অপরদিকে,
এরকম কথা শুনে রাজ ভয় পেয়ে যার। ওর মনে কোনো কিছু কিছু হারিয়ে যাওয়ার ভয় চেপে বসে।

-” কি করব এখন?কিভাবে বাঁচাবো মুনকে?আমার এমন কেন লাগছে?যেন আমি আমার অনেক কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলছি।খুব ভয় করছে আমার মুনের কিছু হবে না তো।না না মুনের কিছু হতে পারে না।”

আজ রাজের মনে হাজারটা প্রশ্নের আনাগোনা।যে মেয়েটাকে সে সহ্যই করতে পারে না তাকে নিয়ে কেন তার এতো ভয়। কেন মনে হচ্ছে সে তার খুব কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলবে।

রাজ তাড়াতাড়ি ফোন বের করে ঠিকানা দেখে বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলো পার্টি থেকে।সবাই আরুশি মুনকে খুঁজতে ব্যস্ত ছিলো দেখে রাজকে বেরিয়ে যেতে দেখলো না। কিন্তু আদ্রিয়ান চোখের আড়াল হলো না। আদ্রিয়ান রাজকে বেরিয়ো যেতে দেখে খটকা লাগলো।তাই সবার চোখ এড়িয়ে আদ্রিয়ানও রাজোর পেছনে গেলো___

-” আমার এমন কেন লাগছে কোনো দূর্ঘটনা ঘটেনি তো?কাপকেক-এর কিছু হয়নি তো? না না আমি এসব কি ভাবছি।আদ্রিয়ান আদ্রিয়ান এসব ভাবিস না এসব ফালতু চিন্তা মাথায় আনিস না আদ্রিয়ান।তোর কাপকেককে ভালোবাসার অধিকারও তোর আর কষ্ট দেওয়ার অধিকারও শুধু তোর আর কারোর না।যে আমার কাপকেককে কষ্ট দিবে তাকে আমি জানে মেরে দিবো
গারি ড্রাইভ করতে করতে বললো আদ্রিয়ান।

-“আমার এমন কেন ফিল হচ্ছে আমি তো মুনকে ভালোবাসি না।কিন্তু এটাও তো ঠিক আরুশি জন্য কখনো আমি এমন ফিল করি নি।তাহলে কি আমি মুনকে ভালোবাসি!!!! না না এটা হতে পারে না আমি আরুশি ভালোবাসি।”
মনে মনে বললো রাজ।

রাজ খুব দ্রত বাইক চালিয়ে আরুশিী পাঠানো ঠিকানায় পৌঁছালো। জায়গাটা রাজের কাছে অচেনা হওয়ায় রাজ বুঝতেও পারলো না যে কাজটা আরুশি।

-” এটা আবার কোন জায়গা,,,আর রাজ এখানে কেন এলো??

রাজ সকল চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে বাংলোর ভিতরে ডুকলো আদ্রিয়ানও রাজের পেছন পেছন বাংলোর ভিতরে ডুকলো।

রাজকে দেখে দুটো লোক রাজের কাছে আসলো আর রাজকে একটা হল রুমে ডুকালো। লোকগুলো হল থেকে বের হলেই আদ্রিয়ান লোকগুলোর মাথায় পাশে পড়ে থাকা লাঠি দিয়ে বারি মারলো আর লোকগুলো সেন্সলেস হয়ে ওখানেই পড়ে গেলো।আদ্রিয়ান লোকগুলোকে সরিয়ে হল রুমের বাহিরেই লুকিয়ে পড়লো আর ভেতরে উকি মেরে দেখতে লাগলো ভেতরে কি হচ্ছে।আদ্রিয়ান দেখলো ভেতরে মাস্ক পরিহিত একটা লোক মুনের মাথায় বন্দুক ধরে রেখেছে,ল। মুনের মুখে রুমাল বাধা আর দেখেই বুঝা যাচ্ছে মুনের সেন্স নেই।আর রাজ তাদের সামনে দাড়িয়ে আছে।

আরুশি মুখ মাস্ক আর মাথায় হুডি পরে থাকায় রাজ বুঝতে পারে নি।

-” কি চাও আর এভাবে মুনকে বেধে রেখেছো কেন?”

-“চাইতো অনেক কিছু?”

-“কি চাও বলো আমি সব দিতে রাজি।কিন্তু মুনকে কিছু করো না।প্লিজ আমি হাত জোড় করে বলছি।”

রাজ এতোটাই ভয় পে্যেছিলো যে সে আরুশির কন্ঠস্বরটাও চিন্তে পারে নি।

-” আমি তোমার চোখের সামনে মুনকে মারতে চাই।”

-” না না এমন কিছু করো না ভুলে অনেক বড় ভুল করতে চলেছ কিন্তু তুমি।”
চোয়াল শক্ত করে বললো রাজ।

-” এই আমাকে রাগ দেখাবি না?কেন বাচাতে চাস মুনকে আমি তো জানতাম তুই মুনকে ভালো বাসিস না তাহলে কেন এতো দরদ মুনের প্রতি তোর?”

-“ভালবাসি ভালোবাসি আমি মুনকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি ওকে।ওর বাচ্চামো গুলোকে ভালোবাসি ওকে ভালোবাসি।”
আনমনে বলে ফেললো রাজ।

-” কিন্তু তুই তো দেরি করে ফেললি বুঝতে।”

বলেই আরুশি মুনের দিকে গুলি মারলো আর পেছনে জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।রুম থেকে বেরিয়ে জানালার পেছনে লুকিয়ে পরলো। মুনের গায়ে গুলি লাগতে দেখে রাজের পুরো দুনিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলো……

To be continue

#Mr_Innocent
#You_are_my_love_addiction
#Written_by_ #আশফিয়া_নুর_আরুশি
#Part_22

বলেই আরুশি মুন দিকে গুলি মারলো আর পেছনে জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।রুম থেকে বেরিয়ে জানালার পেছনে লুকিয়ে পরলো। মুনের গায়ে গুলি লাগতে দেখে রাজের পুরো দুনিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলো।

রাজ দৌড়ে মুনের কাছে গিয়ে মুনের বাধন খুলে দিলো আর মুনকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলো।

-“এই এই মুন উঠো না মুন আমার কথা শুনতে পাচ্ছ এই মুন দেখো তোমার রাজ তোমাকে ডাকছে উঠো না প্লিজ উঠো।দেখো তোমার রাজ কষ্ট পাচ্ছে।বলো তোমার কি ভালো লাগছে আমাকে কষ্ট পেতে দেখে (মুনের গালে হাল্কা থাপ্পর মেরে)।এই মুন দেখনা তোমার রাজ কষ্ট পাচ্ছে। মুন মুন i love u moon i love u a lot..প্লিজ চোখ খুলো

তখনই হঠাৎ মুন ধীরে ধীরে চোখ খুলতে শুরু করলো।আর যখন সেন্সে আসলো তখন নিজেকে রাজের কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে দেখলো।মুন তাড়াতাড়ি করে উঠে বসলো।মুনকে চোখ খুলে উঠে বসতে দেখে রাজ অবাক তো হলোই সাথে আনন্দও পেল।রাজের মুখে এখন রাজ্য জয় করা হাসি।কিন্তু হঠাৎ ওর মনল পরল মুনের তো গুলি লেগেছে অনেক রক্তও বেরিয়ে গেছে তাহলে ও উঠে বসলো কিভাবে?

-“মুন তুমি ঠিক আছে তো?”

-“ঠিক আছি কিন্তু একটু ব্যাথা করছে।”

-“ব্যাথা করছে?”

-“হুম প্রচুর মাথা ব্যাথা করছে।”
মাথায় হাত দিয়ে বললো মুন

-“তোমার তো গুলি লেগেছিলো?”
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো রাজ।

-” ধুর গুলি লাগতে যাবে কেন আর আমাকে কেই বা গুলি করবে।এই জায়গার কথা তো শুধু আমি আর আরুশি জানি?
মুখ ঘুরিয়ে বললো মুন।

-“তুমি নিজেই দেখ তোমার গায়ে রক্ত মাখা।”

রাজের কথা শুনে মুন খেয়াল করলো আসলেই ওর শরীরে রক্ত মাখা,।

-“রক্ত কোথা থেকে এলো আমার তো কিছু হয় নি তাহলে কি অজান্তা। না না এমন কিচু হতে পারে না।”

বলেই মুন উঠে দাড়ালো আর আরুশিকে পুরো হল রুমে তনতন করে খুজতে লাগলো
কিন্তু পেলো না।অজান্তাকে না পেয়ে মুন মাটিতে বসে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে লাগলো।

-“রাজ আমার আরু কোথায়।”

-“আরুশি তো এখানে ছিলোই না।আমি তো আরুশি দেখিই নি এখানে।”

তারপর রাজ মুনকে সবকিছু বললো।রাজের কথা শুনে মুন অবাক হয়ে গেলো।

-” আমি আর আরু একসাথেই এখানে এসেছিলাম তারপর আরু আমাকে বাহিরে দাঁড়াতে বলে ভিতরে চলে যায়।পরে আমার মুখে কেউ রুমাল চেপে ধরে তারপর আমার আর কিছুই মনে নেই।”
মাথায় হাত দিয়ে বললো মুন।

-“তাহলে আরুশি গেলো কোথায়?”

তখনই জানালা দিয়ে রুমে আরুশি প্রবেশ করে। আরুশি চিনতে না পেরে রাজ খুব রেগে যায়।আর নিচে পড়ে থাকা গান নিয়ে আরুশি শুন করে,,,, গুলিটা গিয়ে আরুশির কাধে লাগে।

আরুশির কাধ থেকে রক্ত বের হওয়ায় আরুশি অন্য হাত দিয়ে তাড়াতাড়ি মুখের মাস্ক খুলে হাত দিয়ে কাধ চেপে ধরলো।আরুশিকে দেখে রাজ অনেকটা অবাক হলো সাথে ঘাবড়েও গেলো।মুন রক্ত দেখে জলদি আরুশি কাছে ছুটে গেলো আর তাকে ধরে চেয়ারে বসিয়ে বললো,
-“রাজ তুমি এটা কি করলে আরুকে গুলি করলে কেন?তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?যদি ওর কিছু হয়ে যেতো

-” আসলে আমি……”

আরুশি ইশারা করায় রাজ থেমে যায় আর আরুশি বলে,,,
-“আসলে রাজের কোনো দোষ নেই।সব দোষ আমার।”
মাথা নিচু করে বলে আরুশি।

আরুশি মুনকে সব বললো

-!সব তো বুঝলাম তাহলে মুনের শরীর থেকে রক্ত বের হলো কিভাবে?”(রাজ)

-“আমি মুনকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে জ্যাকেটের সাথে ফ্লস ব্লাড লাগিয়ে দিয়েছিলাম আর গুলি লাগায় মুনের ক্ষতি না হলেও ফ্লস ব্লাড এর ব্যাগটা ছিদ্র হয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে।”
দাঁত কেলিয়ে বললো আরুশি

__________
অন্যদিকে
আরুশি কাধে গুলি লেগেছে দেখে আদ্রিয়ান আরুশির কাছে যেতে চেয়েও কিন্তু যেতে পারে না।তাই ওখানেই দাঁড়িয়ে পরে।

হঠাৎ দরজার কারোর ছায়া দেখতে পেয়ে আরুশি দাড়িয়ে যায়,,,,

-“কে ওখানে?”(আরুশি)

-“কোথায় আরু?”(মুন)

আরুশি হাত দিয়ে ইশারা করে দেখায়।

মুন রাজকে দেখতে যেতে বলে। রাজ যাওয়ার আগেই আদ্রিয়ান ওখান থেকে চলে যায়।আরুশি ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে যায়।

আরুশিকে নিয়ে রাজ আর মুন হসপিটালে চলে যায়। তারপর সবাইকে সবটা জানায়।আরুশির সেন্স ফিরলে অনেক আদ্রিয়ান উরফে সূর্যকে নিয়ে অনেক মেলোড্রামা হয়। আরুশি ইচ্ছে করেই মেলোড্রামাগুলো করে যেন আদ্রিয়ানের সন্দেহ না হয়।

____
এক সপ্তাহ পর,,,

এই এক সপ্তাহ আরুশি হসপিটালে এডমিট ছিলো।আজ রিলিজ পেয়েই অফিসে চলে যায় সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখতে,,,,,,

-“আরুশি তুই এই অবস্থায় কেন এখানে এলি আমরা সবাই তো আছি?(মিশমি)

-” কাজ করলে তো আমি মর…..”(আরুশি)

-“মিস.আরুশি আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।”(আদ্রিয়ান)

-” ওকে আদ্রিয়ান অপস সরি মি.সূর্য। “(আরুশি)

-“আমি কিছুই বুঝতে পারছি না সব কেমন জানো গুলিয়ে যাচ্ছে(মনে মনে)।আমাদের একমাসের জন্য বান্দরবন যেতে হবে বিজনেসের কাজের জন্য।”
আরুশির দিকে তাকিয়ে বললো,

-“ওকে মি.সূর্য।কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে,,,,

-!কি শর্ত?”

-“আমার সাথে মুন যাবে।”

-” মুনন গেলো তো আমার প্লেনই সাকসেসফুল হবে না(মনে মনে)। ওকে।”

-“কবে যাচ্ছি তাহলে?”

-“আজই।”

-“ওকে।”

বলেই আরুশি কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।

সন্ধ্যায় আদ্রিয়ান,মুন আর আরুশি বান্দরবন পৌছায়।রাজ আসতে চাইলে আরুশি মানা করে দেয় আর বলে সাতদিন পরেই মুনকে পাঠিয়ে দিবে।সবাই ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় হোটেলে এসে যার যার রুমে বিশ্রাম নিতে চলে যায়।

পরদিন সকালে সবাই মিলে প্রজেক্ট সাইটে গিয়ে ঘুরে আসে।এভাবে দেখতে দেখতে সাতদিন চলে যায়। মুনও ঢাকা ব্যাক করে।

আদ্রিয়ান আর আরুশি প্রজেক্ট সাইট থেকে ফেরার সময় তাদের গাড়ি খারাপ হয়ে যায়।আশেপাশে কোনো গ্যারাজ না থাকায় তারা হাঁটতে শুরু করে। রাস্তায় আরুশি রেখে আদ্রিয়ান গায়েব হয়ে যায়। আদ্রিয়ানকে খুঁজতে গিয়ে আরুশি কিছু বখাটে লোকেদের হাতে পড়ে
চারটা ছেলে আরুশি ঘিরে ধরে।

-“এই সুন্দরী কোথায় যাচ্ছ?আমাদের সাথে একটু কথা বলো।”
চারটি ছেলের মধ্যে একজন বললো।

-“কে আপনারা আর আমার পথই বা আটকিয়েছেন কেন?””আমি জানি এটা তোমার কাজ আদ্রিয়ান কিন্তু তুমি আমাকে এখনো চিনলে না আমাকে সেই আগের দূর্বল আরুশি ভেবে ভুল করলে তুমি(মনে মনে)”

-” সুন্দরী আমাদের সাথেও একটু সময় কাটাও না।”
অপর একজন লোক আরুশি কাছে আসতে আসতে বললো বললো।

_________
আদ্রিয়ান গাছের পেছন থেকে সব দেখছে।

-“এই মেয়েটা যেখানেই যায় এই বখাটে ছেলে গুলোকে সেখানের ডেকে আনে।কি মেয়েরে বাবা।এখন আমাকেই বাঁচাতে যেতে হবে।

আদ্রিয়ান যেই আরুশিকে বাঁচানোর জন্য পা সামনে দিকে বাড়ালো দেখলো আরুশি ইচ্ছে মতো লোকগুলো মারছে।ডিটারজেন্ট ছাড়াই ধোলাই করছে।এসব দেখে আদ্রিয়ান মুখ হা হয়ে গেলো।আনমনেই বলে ফেললো- “”সেরনি””

আরুশি ভয়ে ছেলে গুলো পালিয়ে গেলো।আরুশি ধরতে গিয়েও ছেড়ে দিলো আর বললো,
-“আর কখনো কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানোর আগে আমার কথা মনে করে নিস(চিল্লিয়ে)।আপনি এখন বেরিয়ে আসতে পারেন গাছের আড়াল থেকে।”
ছেলেগুলোকে মারার সময় আরুশি আদ্রিয়ানকে গাছের আড়ালে দেখে ফেলেছিলো।

-“আমি তো গাড়ি খুজতে গিয়েছিলাম এসে দেখি আপনি মারা মারি করছেন তাই আর ডিস্টার্ব করি নি আপনাকে(মিথ্যা কথা)।আপনি কি ক্যারাটে শিখেছেন?

আরুশি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো।

-“জীবন অনেক কিছু শিখতে বাধ্য করে আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।”

আদ্রিয়ান আর কিছু বললো না।সন্ধ্যায় তারা হোটেলে পৌছালো আর ডিনার করে যার যার ঘরে চলে গেলো।

-“মিম্মাই-এর কিছু মনে পড়েছে।”(ফোনে)

-!হুম একটু একটু করে মনে করতে পারছে।”
ফোনের ওপাশ থেকে রাজ বললো।

-“গুড চালিয়ে যাও।আর আন্টির কি অবস্থা?”

-“মামুনির সেন্স এসেছে কিন্তু অনেকটাই দুর্বল ডক্টর বলেছে এক সপ্তাহের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।বাকি সব তোমার কথা মতোই চলছে।”

-“গুড।”

-“হুম।”

-“প্রেম কেমন চলছে তোমাদের?”
দাঁত কেলিয়ে জিজ্ঞেস করলো আরুশি।”

-“তোমার বান্ধবী তো ভালো মতো প্রেমই করতে জানে না একরু শিখিয়ে পড়িয়ে দিতে পারলে না।”
বাচ্চাদের মতো করে বললো রাজ।

রাজের কথায় আরুশি হেসে দিলো।

-“ওকে বাই।”

বলেই ফোন রেখে দিলো আর ফার্স্ট এড বক্স নিয়ে বিছানায় বসে হাতে ব্যান্ডেজ করতে লাগলো।

-“আমি জানি আদ্রিয়ান তোমার মনে আমার প্রতি অনেক রাগ ঘৃণা অভিমান জমে আছে।কিন্তু আমি তোমাকে প্রমিস করছি আমকে আর কিছুদিন সময় দাও আমাদের মাঝের সব ভুল বুঝাবুঝি দূর হয়ে যাবে আর আমরা খুব সুন্দর একটা জীবন কাটাবো একসাথে।”
মুচকি হেসে বললো আরুশি

_____
এক মাস পর
এই একমাসে আদ্রিয়ান আরুশওকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আরুশি সব মুখ বুঝে সহ্য করেছে।কখনো আরুশির যেসব খাবারে এলার্জি আছে সেসব খাবার খাইয়েছে,কখনো নানা ভাবে অপমান করেছে,একবার সুইমিং পুলে ফেলে দিয়েছিলো।আরুশি সাতা না জানার অনেক পানিও খেয়ে ফেলেছিলো।সেদিন আদ্রিয়ানই আরুশিকে সুইমিং পুল থেকে তুলে।নিজেই কষ্ট দিতো নিজেই মলম লাগাতো

আজকে আদ্রিয়ান আরুশি ঢাকা ফিরছে।সামনে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে তা দুজনের কাছে অজানা……

To be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here