Mr_Innocent,পর্ব_৪,৫

Mr_Innocent,পর্ব_৪,৫
You_are_my_love_addiction
writer_ #আশফিয়া_নুর_আরুশি
পর্ব_৪

রিকশা না পাওয়ায় আরুশি রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে। কিছু দূর আসতেই ওর মনে হয় কিছুলোক ওকে ফলো করছে।তখনই ওর মনে পড়লো রাস্তায় কিছু বখাটে ছেলে বসে বসে মদ খাচ্ছিল। তাই ওই পিছনে তাকালো দেখার জন্য আসলেই কেউ ওকে ফলো করছে কিনা।

পিছনে তাকিয়েই ওর হাত পা জমে যাওয়ার উপক্রম পেছনে তাকাতেই আরুশি দেখলো আদ্রিয়ান ওই বখাটে ছেলেগুলোকে ইচ্ছা মতো পেটাচ্ছে।

-” স্যার এখানে কোথা থেকে আসলো আর স্যার এদেরকে পিটাচ্ছেই বা কেন?”
বিরবির করে বললো আরুশি।

এসব ভাবতে ভাবতে আরুশি খেয়াল করলো ওই বখাটে ছেলেদের একজন আদ্রিয়ানকে পেছন থেকে আঘাত করতে যাচ্ছে। আরুশি এক মুহূর্তও দেরি না করে দৌড়ে গিয়ে আদ্রিয়ান আর ওই বখাটে ছেলেটার মাঝখানে ঢুকে পরে যার কারণে আরুশির মাথায় আঘাত লাগে। আদ্রিয়ান পেছনে ঘুরতেই দেখে আরুশি মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর মাথায় কিছুটা কেটে রক্ত বের হচ্ছে।

আরুশি পড়ে যেতে নিলেই আদ্রিয়ান ওকে ধরে ফেলে।আরুশির কপালে রক্ত দেখে আযান অনেকটা ভয় পেয়ে যায় এবং রেগে ওর চোখমূখ লাল হয়ে গেছে যা দেখে বখাটে ছেলেটা ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু করে।

আরুশি সেন্সলেস হওয়ার আগে শুনতে পায়,’ তুই আমার কলিজাই হাত দিয়েছিস তো…..’

বাকিটুকু শোনার আগেই আরুশি সেন্সলেস হয়ে যায়।

-“তুই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস তোর এতো বড় সাহস তোর এই হাত আমি ভেঙে ঘুরো করে দিবো তোর জন্য আমার জান কষ্ট পেয়েছে ওর কপাল থেকে রক্ত বেরিয়েছে তুই ওর দিকে কুনজর দিয়েছিস তোকে আমি জানে মেরে দিব তোকে আমি এমন মৃত্যু দিবো যে তুই মরেও বেঁচে থাকবি আর ব্যাথায় কাতরাবি”
আদ্রিয়ান রেগে গিয়ে হুৎকার দিয়ে বললো।

আদ্রিয়ান আরুশিকে নিচে শুয়িয়ে দিয়ে ছেলেগুলোকে ইচ্ছা মতো ডিটারজেন্ট ছাড়াই ধোলাই দিল যার কারনে ছেলেগুলো সেন্সলেস হয়ে নিচে পড়ে রইল আর আদ্রিয়ান একজনকে কল করে বললো,
-“হ্যালো। তোমাকে একটা জায়গার ঠিকানা ম্যাসেজ করছি তুমি এখানে এসে ময়লা আর্বজনা গুলোকে নিয়ে যাও।”

-“ওওকে সসসস্যার”
আদ্রিয়ানের রাগি কন্ঠ শুনে ভয়ে ভয়ে জবার দিলে ফোনের ওপাশের ব্যক্তি।

ফোন কেটে দিয়েই আদ্রিয়ান লোকটিকে ঠিকানা পাঠিয়ে দিলো আর আরুশিকে কোলে নিয়ে গাড়িতে শুয়িয়ে দিলো। আদ্রিয়ান নিজেও গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো।

-“তোমার কিছুই হবে না আমি তোমার কিছুই হতে দিব না কাপকেক দেখো তোমাকে এখনি হসপিটালে নিয়ে যাব দেখবে তুমি খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে বলেই ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো।”

(ওরা হসপিটালের
যাক ততক্ষণে আমরা জেনে নেই তখন আদ্রিয়ান কোথা থেকে টপকালো আর কেন ডিসুমডিসুম করল)

★কিছুক্ষন আগে
আদ্রিয়ান ওইস্থান থেকে বেরিয়েই রিসাদকে ফোন দেয়

-” রিসাদ।”

-“জ্বি স্যার বলেন।”

-” থাপ্পর চিনোস কানে দুই ইঞ্চি নিচে বসাই দিমু কতবার তোকে বলছি আমাকে স্যার বলবি।”

-“সরি ভাই ভুলে গেছিলাম ক্ষেমা দে। এখন বল এই সময় ফোন দিলি যে কোনো সমস্যা হয়েছে কি?”

-“আরে না আসলে কাপকেক বাসায় গিয়েছে কিনা জানার জন্য ফোন দিয়েছিলাম ওর ফোনও ধরছে না সুইচ অফ বললো। ”

-“ওহ আমার সাথে দেখা হয়েছিল। আমি জিঙ্গাস করেছিলা চলে যাবে নাকি কিন্তু ওই বলল থাকবে পরে। ওকে শেষবার মিশমির সাথে দেখেছি।”

-“ওকে।তোর কাছে মিশমির নম্বর আছে?”

রিসাদঃ হুম 0166******7

-“ধন্যবাদ দোস্ত।”

-“ওয়েলকাম প্রেমপাগলা।”
দাঁত কেলিয়ে বললো রিসাদ।

-“তোকে পরে দেখে নিব যা ভাগ।”

-“আইচ্ছা মন ভরে দেখিস কালকে।”
ফোনের ওপাশ থেকে জোড়ে হাসতে হাসতে বললো রিসাদ।

-“নে নে বেশি বেশি হেসে নে দিন আমারও আসবে। হুহহহ।বায়।”

রিসাদে ফোন কেটে দিয়েই আদ্রিয়ান মিশমিকে কল দিলো।

-“হ্যালো মিশমি। ”

-” হ্যালো কে
বলছেন?”

-“আমি আদ্রিয়ান চৌধুরী। ”

-“ওহ স্যার। সরি আমি আপনাকে চিনতে পারি নি?”
একটু নিচু কন্ঠে বললো মিশমি।

-” ইট’স ওকে।”

-“কোন কাজ ছিল কি স্যার।”

-” আসলে আমার একটা তথ্য দরকার ছিল আমি জানতে পারলে মিস.আরুশির সাথে তোমাকে শেষবার দেখা গিয়েছে। আর ওনার ফোনটাও বন্ধ আপনি কি জানেন ওই কোথায় আছে? ”

-“আসলে স্যার অফিস থেকে শপিং এ গিয়েছিলাম তারপর আমার বাসা কাছে হওয়ায় আমি হেঁটেই আমার বাসায় চলে আসি আরুশিকে আমার বাসায় থাকতে বললে ও না করে দেয়।আমি বলে ছিলাম বাসায় গিয়ে আমাকে জানাতে বাট ওই এখনো ফোন দেয় নি আমাকে।হয়তো এখনো বাসায় যায় নি।”

-“ওহ ওকে ধন্যবাদ। আচ্ছা ওকে কোথায় রেখে এসেছিলে?”

-“শপিংমলে থেকে ডান দিকে যেতেই বামদিকে একটা গলি আছে ওই গলির সামনে। ”

-” ওহ। ওকে বায়।”

এখন আদ্রিয়ানের টেনশন হতে লাগলো।আদ্রিয়ান যত দ্রুত সম্ভর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ওই জায়গায় গেলো যেখানে আরুশিকে মিশমি রেখে এসেছিল ওখানে যেয়ে আদ্রিয়ান যা দেখলো তাতে আদ্রিয়ানের রাগ সপ্তম আকাশে উঠে গেল।

আদ্রিয়ান দেখলো আরুশি একলা একটা নির্জন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে আর তার দিকে কতগুলো বখাটে ছেলে লোলুপ্ত নজর দিয়ে গিলে খাচ্ছে। হঠাৎ ছেলেগুলো আরুশির কাছে যেতে লাগলো যা দেখে আদ্রিয়ানে প্রচুর রাগ উঠে গেল।

____________
বর্তমানে

★ইন দ্যা হসপিটাল
আদ্রিয়ান আরুশিকে কোলে করে হসপিটালের ভিতরে নিয়ে যায় এবং ডক্টর ডক্টর করে চিৎকার করতে লাগে।আদ্রিয়ানের চিৎকার শুনে ডক্টর আর নার্স বাহিরে চলে আসে।

-“ডক্টর প্লিজ ওকে সুস্থ করে দিন দেখুন না কত রক্ত বেরিয়ে গেছে।”

-“ওকে আমি দেখছি।”
বলেই ডাক্তার আরুশিকে একটা বেডে শুয়ালো । আদ্রিয়ান বেডের পাশেই আরুশির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

-“কিসের জন্য ওকে একা রেখে চলে গেলাম কিসের জন্য”
মনে মনে বললো আদ্রিয়ান।

-“ডক্টর ও ঠিক আছে তো?”

-” মি.আদ্রিয়ান পেশেন্ট একদম ঠিক আছে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে ৫-৬ ঘন্টা ঘুমাবে।উনি মনে হয় ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না এবং অনেক টেনশনে থাকে যার জন্য ওনার বিপি সবসময় আপ ডাউন করে।ওনার ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে হ্যালদি খাবার খাওয়াতে হবে।আর ওনাকে টেনশন এ রাখা যাবে না।”

-“ওকে ডক্টর। আমি কি ওকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি?”

-“নিয়ে যেতে পারেন কিন্তু ওনার সেন্স আসার সাথে সাথে আমাকে খবর দিবেন।”

-“ওকে ডক্টর। ”
বলেই আদ্রিয়ান আরুশিকে কোলে তুলে নিলো আর বাহিরে এসে আরুশিকে ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটে বসিয়ে দিলো এবং নিজেও গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।

_______________
-“এই মেয়েটা যে কোথায় যায় আমাকে কিছুই বলে না ওর কিছু হয়ে গেলে আমার কি হবে ও কি তা জানে না। ও বাসায় লেট করে আসলে যে আমার টেনশন হয় ও কি বুঝে না। আসুক একবার বাসায় কথাই বলব না আমি ওর সাথে।”
কান্না করতে করতে বললো ইশিতা।

.-“প্লিজ কান্না করো না জান তুমি জানো না তুমি কান্না করলে আমার কতোটা কষ্ট হয় প্লিজ কান্না করো না ব্লাকরোজ এসে পরবে দেখো প্লিজ তুমি কান্না করো না তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না যে।”
ইশিতার পাশে বসে একজন শান্তনা দিচ্ছে।

-“কিভাবে নিজেকে শান্ত করব বল ধ্রুব ওর কিছু হলে যে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।”

-“আরে এসে পরবে হয়তো কাজের অনেক চাপ।”

তখনই কেউ দরজায় কড়া নাড়লো। ইশিতা যেতে ধরলে ধ্রুব ইশিতাকে থামিয়ে দিলো।

-“তুমি বসো আমি দেখছি।”

-“না তুমি না আমি যাবো এতো রাতে আরু ছারা আর কেউ আসবে না। আজ ওর একদিন আর আমার ১০০ দিন।”
একটু রাগ দেখিয়ে বললো ইশিতা।

বলেই ইশিতা দরজা খুলতে গেল দরজা খুলেই ইশিতা বলতে শুরু করল

-” ওই আক্কেলের ঘরের বেয়াক্কেল তোর মাথা আজ আমি ফা…..”
সামনে তাকিয়ে দেখে আরুশি সেন্সলেন এবং ওকে একজনে কোলে করে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

-“কি হয়েছে ওর? আরু সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে কিভাবে আর ওর মাথা ব্যান্ডেজ কেন? ওর কি হয়েছে?”
ভয়ে উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো ইশিতা আদ্রিয়ানকে।

-” আগে ভিতরে ডুকে ওকে শুয়িয়ে দেই তারপর আমি আপনাকে সব বলব।”
আদ্রিয়ান বললো।

-“ব্লাকবেরি কি হয়েছে? তুমি চেচামেচি করছো কেন কে এসেছে?”
ইশিতার পেছন থেকে ধ্রুব বললো।

ধ্রুব সামনে না তাকিয়ে কথাগুলো বলে আর যখন সামনে তাকায় তখন দেখে আদ্রিয়ানের কোলে আরুশি।

-“আরে আযান তুই আর ব্লাকরোজ তোর কোলে কেন কি হয়েছে ওর?”

-“আমি তোকে সব বলছি আগে ওকে শুয়িয়ে দেই।”

-“হুম ভিতরে আয় আর ব্লাকবেরি ব্লাকরোজের ঘর ঠিক করে দেও।”

-“ওকে। আমার পিছে পিছে আসুন।” আদ্রিয়ানকে উদ্দেশ্য করে বললো ইশিতা।

আদ্রিয়ান ইশিতার পিছে পিছে গিয়ে আরুশিকে বেডে শুয়িয়ে দিল।

-“আপনি কে? ধ্রুব তুমি ওনাকে কিভাবে চিনো?”
আদ্রিয়ান আর ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো ইশিতা।

-“আমি আরুশির বস আদ্রিয়ান চৌধুরী। ”

-” এবং আমার বেস্টু। ”
আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো ধ্রুব।

-” ওহ ইনিই তোমার ওই ফ্রেন্ড যার কথা তুমি সব সময় বলতে।”

-“হুম ব্লাকবেরি।”

-” আপনি আরুশিকে কোথায় পেলেন আর ওর কি হয়েছে?”
আদ্রিয়ানকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো ইশিতা।

আদ্রিয়ান সবাইকে সবটা বলল।

-“ধন্যবাদ আরুকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
কৃতজ্ঞতা সুরে বললো ইশিতা।

-“ধন্যবাদ দিতে হবে না। এটা আমার কর্তব্য।”
মুচকি হেসে জবাব দিলো আদ্রিয়ান।

-“ওই শালা তুই দেশে কবে ফিরলি আর আমাকে জানাস নাই কেন?”
আদ্রিয়ানের পাশে বসে ওর পিঠে একটা কিল দিয়ে জিজ্ঞেস করলো ধ্রুব।

-“কাজের চাপে কাউকে জানানো হয়নি শুধু রিসাদ জানতো।”

তারপর ওরা সবাই কিছুক্ষণ গল্প করে ডিনার করে ফেললো আদ্রিয়ান খেতে চাইছিল না একপ্রকার জোড় করে খাইয়েছে

-“তোমরা কিছু মনে না করলে আমি আরুশির সাথে দেখা করতে পারি কি?

ইশিতা বলার আগেই ধ্রুব বলে দিলো
-“যা আমাদের কোনো সমস্যা নেই।”

-“কিন্তু…….”
ধ্রুবর ইশারা দেখে ইশিতা থেমে গেলো।

-” ইশিতা আমাকে তুমি ভাইয়া করে ডেকো কারন আমি ধ্রুব সমবয়সী।”

“চলবে”

#Mr_Innocent
#You_are_my_love_addiction
#writer_ #আশফিয়া_নুর_আরুশি
#পর্ব_৫

_________________
-” ইশিতা আমাকে তুমি ভাইয়া করে ডেকো কারণ আমি ধ্রুব সমবয়সী।”
বলেই আদ্রিয়ান আরুশির রুমের দিকে চলে যায়।আর ইশিতা আর ধ্রুব ইশিতার রুমে চলে গেলো

-” তুমি ওনাকে এতো সহজে পারমিশন দিয়ে দিলে?”
রুমের এসেই ইশিতা ধ্রুবকে জিজ্ঞেস করলো।

-“আমাকে তুমি বিশ্বাস করো না?”
দরজা লাগাতে লাগাতে জিজ্ঞেস করলো ধ্রুব।

-” অবশ্যই।”

-“তাহলে বিশ্বাস রাখো আদ্রিয়ান খুব ভালো ছেলে। ও মেয়েদের খুব সম্মান করে।”
ইশিতাকে জড়িয়ে ধরলে বললো।

-” আচ্ছা এখন চলো ঘুমাবো।”

-” হুম চলো।””আমি যেইটা সন্দেহ করছি সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে আরুশি তুমি খুব লাকি। আদ্রিয়ানের সাথে কথা বলতে হবে।”
মনে মনে বললো ধ্রুব।

কিছুক্ষণ পর ধ্রুব চেক করে দেখলো ইশিতা ঘুমিয়ে গেছে তাই সে আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে আরুশির রুমের কাছে গেল।

_______________
আদ্রিয়ান আরুশিকে বুকে জরিয়ে ধরে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে আর আরুশিকে দেখছে

দরজায় কড়া নাড়তে শুনে আদ্রিয়ান আরুশিকে ছেড়ে দেয়। বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে দেখে ধ্রুব দাঁড়িয়ে আছে।

-“আরে ধ্রুব তুই এত রাতে এখানে। ”

-“কেন আসতে পারি না বুঝি? ”

-“অবশ্যই কেন না।”

-“তোর সাথে আমার কিছু দরকারি কথা আছে ছাদে চল।”

আদ্রিয়ান ধ্রুব দুজন মিলে ছাদে চলে গেলো।

-“বল কি এমন কথা যার জন্য তুই আমাকে এখানে ডেকে আনলি।”

-“ব্লাকরোজই কি তোর কাপকেক?”

ধ্রুবর কথা শুনে আযান চমকে উঠলো

-” আরে না না ওই কেন আমার কাপকেক হবে না ওই আমার কাপকেক না। “( মিথ্যা বললো)

ধ্রুবঃ আমাকে মিথ্যা বলিস না আমি তোকে ছোট থেকে চিনি আর যে ছেলে কিনা কোনো মেয়ের সাথে কথা পর্যন্ত বলা পছন্দ করতো না সেই ছেলে তার অফিস এপ্লোয়ির সেবা করছে। এটা কি সন্দেহের বড় কারণ না। আমি তখনই তোকে দেখে বুঝে ফেলেছিলাম যে ব্লাকরোজই তোর কাপকেক।”

-” হুম তুই ঠিকই বুঝেছিস ওই আমার কাপকেক। ”

-“আমি জানতাম। রিসাদ কি জানে?”

-” হুম।”

-“তার মানে আমরা তিন জনই জানি। ওই কি জানে?”

-“আমরা চারজনই কাপকেক এর কথা জানি কিন্তু কাপকেককে যে আমি খুজে পেয়েছি তা ওই জানে না ও বিডি তে আসলেই ওকে জানাবো।”

-“ওকে চল নিচে যাই।”

-“হুম আর ইশিতাকে কিছু বলিস না এখনই।”

-“আচ্ছা।”

দুজন দুজনের রুমে চলে গেলো

আদ্রিয়ান আরুশির রুমে এসে আরুশিকে বুকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।আর ধ্রুবও রুমে এসে ঘুমিয়ে পরলো

__________________
সকাল বেলায়
আদ্রিয়ান ফজন নামাজের সময় উঠে পরলো আর আরুশির কপালে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে নিল। নামাজ শেষে আদ্রিয়ান চেয়ারে বসে পরলো

পরক্ষণেই ওর চোখ লেগে আসলো আর ওই চেয়ারেই ঘুমিয়ে পড়লো।

কিছুক্ষণ পর আরুশির ঘুম ভেঙে যায় আর উঠে দেখে ও ওর নিজের ঘরে শুয়ে আছে৷ হঠাৎ সামনে তাকালে খেয়াল করে চেয়ারে আদ্রিয়ান ঘুমিয়ে আছে ওকে খুব নিষ্পাপ লাগছে

-“#Mr_innocent
আপনার মধ্যে কিছু একটা আছে যেটা আমাকে সবসময় আপনার দিকে টানে আবার মাঝে মাঝে মনে হয় আপনি আপনাকে আগেও দেখেছি আপনি আমার অনেক কাছের কেউ কেন এমনটা মনে হয়।”
মনে মনে ভাবছে আরুশি

-” ভাবুকরানি এতো কি ভাবছেন?”

আদ্রিয়ানের কথায় আরুশি বাস্তব জগতে ফিরে আর আদ্রিয়ানের কথা হকচকিয়ে যায়।

-” না না কিছু না
আপনি এখানে মানে আমার রুমে কি করছেন আর আমি বাসায় এলাম কখন?”

তখনই আরুশির কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায় আর ভয় পেয়ে যায়।

-“আপনার কিছু হয়নি তো আপনি ঠিক আছেন তো? ওই ছেলেগুলো আপনার কিছু করে নি তো?”
আরুশি উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করে।তার এমন উত্তেজিত হওয়ার কারণ সে নিজেও জানে না।

আদ্রিয়ান আরুশিকে শান্ত করার জন্য ওকে জড়িয়ে ধরে।

-“কাম ডাউন আমার কিছু হয় নি দেখ আমি তোমার সামনে সহিসালামতে দাড়িয়ে আছি। আর আমিই তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি। আচ্ছা এটা বলতো তুমি আমাদের মাঝখানে চলে এসেছিলে কেন?
চোখ ছোট ছোট করে জিজ্ঞেস করলে আদ্রিয়ান।

-“আপনাকে আঘাত করতে ধরেছিলো তাই।”

-“ওহহহ আর কোনো কিছুর জন্য না তো।”

-“আপনাকে কিভাবে বলবো ওই ছেলেটা যখন আপনাকে আঘাত করতে ধরেছিল আমার মনের মধ্যে কিরকম জানো একটা ভয় জেকে বসেছিল মনে হচ্ছিল এখনই হয়তো আপনাকে হারিয়ে ফেলবো।”
মনে মনে ভাবতে লাগলো।

-” কাপকেক কি ভাবছো”

-“কই কিছু না তো। আচ্ছা আপনি আমাকে কাপকেক ডাকেন কেনো?”

-“সময় হলেই জানতে পারবে।”

-“আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”
বলেই আরুশি চলে গেলো ওয়াশরুমে।

-” আমি জানি কাপকেক আমার মনে যেমন তোমার জন্য ভালোবাসার অনুভূতি আছে তোমার মনেও ঠিক একই অনুভূতি আছে। আর যদি না থাকতো তাহলে তুমি আমাকে কাল ওভাবে বাচাঁতে যেতে না আমি জানি তুমিও আমাকে ভালোবাসো কিন্তু বুঝতে পারছো না।(মনে মনে)

_______________
অন্যদিকে ধ্রুব আর ইশিতা মিলে দুষ্টুমি করছে আর রান্নার করছে সবার জন্য

আরুশি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে আদ্রিয়ান বসে বসে ফোন টিপছে আছে।

-“চলুন আমার হয়ে গিয়েছে।”

আদ্রিয়ান সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে আরুশি দাঁড়িয়ে আছে চুল থেকে পানি পরছে ঠোঁটগুলো গোলাপি হয়ে আছে।নেশাক্ত দৃষ্টিতে আদ্রিয়ান আরুশিকে দেখছে
-“আমার কাপকেক।”
বিরবির করে বললো আদ্রিয়ান।

– আপনার বিরবির করা হয়ে গেলে চলুন আমার ক্ষুধা লেগেছে পেটে ইদুর বিড়াল দৌড়দৌড়ি করছে চলুন না প্লিজ।”
রেডি হতে হতে বললো আরুশি।

আরুশির কথায় আদ্রিয়ানের ধ্যান ভাঙে।

-” হুম চলো।”

-“আচ্ছা আপনি আমাকে কাপকেক ডাকেন কেন?”
আরুশি আবার জিজ্ঞেস করলো উত্তর পাওয়ার আশায়।

-“আমার ইচ্ছা আমি ডাকবো তোমার কি”
ভাব দেখিয়ে জবাব দিলো আদ্রিয়ান।

-” হুহ এনাকন্ডা ”
আসতে আসতে বললে আরুশি যেন আদ্রিয়ান শুনে না ফেলে।

-” কিছু কি বললে?”

-” কই কিছু বলি নি তো।”

তারপর দুজন মিলেই চলে গেলো। সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করলো আর কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে যার যার অফিসে চলে গেলো

_________________
★ইন দ্যা চৌধুরি ইন্ড্রাসট্রি

আদ্রিয়ান আর আরুশিকে একসাথে অফিসে ডুকতে দেকে একজন রাগে কাঁপাকাপি সুরু করে দিয়েছে সে আর কেউ নয় রিংকি।

-” ওহহ কাল রাতে বাড়ি না ফিরার কারণ ওই মেয়েটা।” রাগে ফোসতে ফোসতে বললো রিংকি।

-” আমার কফিটা বানিয়ে নিয়ে আসো তারাতাড়ি। ”

-“হুম হুম মনে আছে।”
বলেই আরুশি কফি বানাতে চলে গেলো।

আর আদ্রিয়ান কেবিনে ডুকে গেলো।আদ্রিয়ানকে কেবিনে ডুকতে দেখে রিংকিও আদ্রিয়ানের পিছে পিছে ওর কেবিনে ডুকে আদ্রিয়ানকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।

-” বেবি আমি কাল তোমাকে অনেক মিস করেছি আর তুমি ওই পি.এ এর সাথে ছিলে আমাকে একা ফেলে। নট ডান।”

-“আমি কখন কার সাথে থাকবো তা তো আমি তোমাকে জানাবো না আর আমি তোমাকে মিস করতে বলি নি।”
রিংকিকে ছাড়িয়ে স্বজোড়ে ধাক্কা দিয়ে বললো আদ্রিয়ান।

-” বেবি তুমি আমর সাথে এমন করো কেন সবসময়?”

-” তোমার ন্যাকামো আমার ভালো লাগে না তাই। ”
চেয়ারে বসতে বসতে বললো আদ্রিয়ান।

-“আমি ন্যাকামো করি না আমি তোমাকে ভালোবাসি।”
বলেই আদ্রিয়ানে কোলে বসে পড়লো আর আদ্রিয়ানকে কিস করতে গেলো। তখনই আরুশি আদ্রিয়ানের কেবিনে ডুকলো।

-” স্যার আপনার ক….সরি আমি মনে হয় ভুলে সময়ে চলে এসেছি। ”
সামনে দৃশ্য দেখে জলদি পেছন ফিরে বললো আরুশি।

-“এই অসভ্য মেয়ে তোমার কি এতো টুকু বুঝ নেই যে বস এর কেবিনে নক করে ডুকতে হয় বেয়াদব মেয়ে।”

-” সরি ম্যাম। সরি স্যার আমি বুঝতে পারি নি।”
বলেই আরুশি কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়।

আদ্রিয়ানের কেবিন থেকে বেরিয়ে ও সোজা নদীর পাড়ে চলে যায়। আরুশির মন খারাপ থাকলে ও প্রায় ওখানে গিয়ে বসে থাকে।

আরুশিকে চলে যেতে দেখেই আদ্রিয়ান রিংকিকে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে আর রিংকি পরে যায়।

-“বেবি আমি তো পড়ে গেলাম এখন আমাকে কোলে তুলো আমি খুব ব্যাথা পেয়েছি দাঁড়াতে পারছি না।”

আদ্রিয়ান রিংকির কথার তোয়াক্কা না করে কেবিন থেকে বেরিয়ে আরুশিকে খুঁজতে। লাগলো। মিশমি রিসাদকে জিঙ্গাসা করলে ওরা বলে আরুশি অফিস থেকে কোথায় যেন গেছে কিন্তু কোথায় গেছে কেউ জানে না।তাই আদ্রিয়ান আর দেরি না করে গাড়ি নিয়ে আরুশিকে খুঁজতে বেরিয়ে যায়।

________________
আরুশি নদীর পাড়ে বসে কান্না করছে ও নিজেই বুঝতে পারছে না যে ও কেন কান্না করছে।

-“আমার কেন এতো খারাপ লাগছে কেন? ”
বলে আবার কান্না করতে লাগলো।

এক ঘন্টা পর আরুশি অফিসে ফিরে গেলো আর আদ্রিয়ানের অবস্থা তো পাগল পাগল। আরুশিকে খুঁজে না পেয়ে ইশিতাকে ফোন দিয়ে জানতে পেরেছে আরুশি বাসায় যায় নি। আসলে আরুশির মন খারাপ থাকলে ও কোথায় যায় তা কেউ জানে না।

আরুশিকে অফিসে ডুকতে দেখে রিসাদ আদ্রিয়ানকে ফোন দিয়ে জানিয়ে দেয়। আরুশির খবর পেয়ে আদ্রিয়ান অফিসে চলে আসে এবং নিজের কেবিনে ডুকে দেখে আরুশি বুকসেল্ফ গুছাচ্ছে।
আরুশিকে দেখে আদ্রিয়ান ছুটে গিয়ে ওকে সামনে ঘুরিয়ে একটা চর মারে।

চর খেয়ে আরুশি গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ান ওর দিকে রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে্ হঠাৎ করে আদ্রিয়ান আরুশিকে………….

“চলবে”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here