#EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম💖,পর্বঃ ৬,৭,৮
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
#পর্বঃ ৬ষ্ঠ
কলেজে ঢুকতেই আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল। কেননা,রিপন সামিয়া কে বাজে কথা বলতেছে আর ওড়না নিয়ে টানাটানি করতেছে।
রিপন হলো এই কলেজের সবচাইতে বেশি বখাটে টাইপের ছেলে।এর আগে আমরা রিপনকে এসব কাজ থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছি।
যাইহোক, আমি সিফাত কে আমাদের সিক্রেট স্থান থেকে হকিস্টিক গুলো নিয়ে আসতে বললাম।
আমি দ্রুত সামিয়ার কাছে গেলাম। আমাকে দেখে রিপন বলতে লাগলোঃ দেখ সাহিদ তুই আমাদের কাজে বাঁধা দিস না। প্রয়োজনে তুইও আমাদের সাথে ইনজয় করতে পারিস।
রিপনের কথা শুনে রক্ত টগবগ করতে শুরু করলো। সামিয়া কে ওর বান্ধবীদের কাছে রেখে এসে রিপনকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করলাম।
আমি রিপনকে মারতেছি আর ঐদিকে রাফি, সিফাত আরো কয়েকজন মিলে রিপনের বন্ধুদের মারতেছে।
আমাদের কাছে হকিস্টিক থাকায় ওরা আমাদের সাথে পেরে উঠতে পারে নি।
আমি রিপনকে মারতে মারতে ওর মুখ দিয়ে রক্ত বের করে দিয়েছি।
রাফি আর সিফাত এসে আমাকে রিপনের কিছু থেকে সরে নিয়ে গেল আর রিপনকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিলো।
আমি আর ক্লাস করলাম না। বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় আসার পর আম্মু জিজ্ঞাসা করলঃ কি হয়েছে?
আমি আম্মুকে সব বলে দিলাম। আম্মু জানে যে আমি কোন অন্যায় সহ্য করতে পারিনা।
বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম। পরদিন সকালে কলেজে গিয়ে জানতে পারলাম যে রিপন অনেক অসুস্থ।
আসলে রিপনের বাবা এই কলেজের সভাপতি হওয়াই তার ছেলে কে মারার জন্য আজকে আমাদের বিচার হবে। হলরুমে বিচার শুরু হলো,,সকল ছাত্র-ছাত্রী রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেছে।কারণ,সকল ছাত্র-ছাত্রী রিপনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। যাইহোক, রিপনের জন্য শাস্তি তেমন দেয়নি। শুধু 50 হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
আজকে ক্লাস শেষে সামিয়া কে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। ঘোরাফেরা করে বাসায় আসলাম।
এভাবে কেটে গেল 15 দিন। আজকে কলেজের ক্যাম্পাসে বসে আছি এমন সময় একটি মেয়ে এসে বললোঃ আমি। কি আপনাদের ফ্রেন্ড হতে পারি।
আমিঃ কোন ইয়ার?
মেয়েটিঃ অনার্স ফার্স্ট ইয়ার।
রাফিঃ জুনিয়র।
মেয়েটিঃ সমস্যা নেই। ভাইয়া বলে ডাকবো।
আমিঃ নাম কি তোমার?
মেয়েটিঃ রিপা।
আমিঃ বন্ধু হতে পারবোনা।তবে ভাইবোন হিসেবে থাকতে পারি।
রিপাঃ সমস্যা নেই।আপু আপনার নাম কি?
(মিমকে বললো)
মিমঃ আমার নাম মিম।
সবাই মিলে আড্ডা দিলাম।
ক্লাস শেষে বাসায় আসলাম। লাঞ্চ করার সময় বাবু বললঃ সাহিদ সামিয়া মামনি কে নিয়ে একদিন।
আমিঃ ঠিক আছে বাবা।
লেখাপড়া করা, আড্ডা দেওয়া এভাবে চলে গেল আরো তিন মাস। রিপার সাথে আমাদের সম্পর্ক ভাই বোনের মতো।
একদিন রাতে রুমে বসে আছি রাত প্রায় আটটা বাজে।
বসে থেকে ফোন টিপতেছি।
মনে হলো কে যেন রুমে ঢুকেছে।দেখি রিপা।
আমিঃ রিপা তুমি এখানে?
এরপর রিপা যা করলো,,,,,
(চলবে)
#EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ৭ম
রিপা কে রুমে ঢুকতে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কেননা, রিপা আসবে একথা সে আমাকে আগে বলেনি। তারপরেও এই সময়ে আসাটা কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে।
রিপা কে প্রশ্ন করলামঃ রিপা তুমি এখানে?
রিপা মুচকি হেসে বললোঃ আমি না আসলে কে আসবে মিস্টার সাহিদ হাসান সাহি।
আমিঃ মমমানে,,( অবাক হয়ে)
রিপাঃ মানে টা নাহয় একটু পরেই জানতে পারবে।আগে হিসাব টা মিটিয়ে নেই।
আমিঃ কিসের হিসাবের কথা তুমি বলতেছো,,(অবাক হয়ে)
রিপাঃ মনে আছে তোমার আজ থেকে 15 দিন আগে তুমি আমার ভাইকে মেরে ছিলে।
আমার ভাই এখনও বিছানায় পড়ে রয়েছে। তখন থেকে আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে করেই হোক আমি এটার প্রতিশোধ নেব।
তারপর থেকে তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি করোনি। তুমি বলেছিলে ভাই বোন থাকতে আমিও রাজি হয়ে গেছিলাম।
শুধুমাত্র আমার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
একথা বলেই রিপা দরজা লাগিয়ে দিয়ে নিজের জামা টেনে ছিড়তে শুরু করল আর চিৎকার করতে লাগলো। আমি শুধু নির্বাক দর্শকের মত
দেখতেছি। রিপার কাহিনী দেখে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। রিপার শীৎকার শুনে বাবা বলতেছেঃ কি হয়েছে মা দরজা খোলো।
রিপা দরজা খুলে সবাই তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতেছে আর বলতেছে বাবা তোমরা না আসলে সেহেতু আমার সাথে,,,,, বলে কান্না শুরু করে দিল।
রিপার বাবার পিছনে দেখি মা বাবা, ভাইয়া আর ভাবী দাঁড়িয়ে আছে।
বাবার কোনো কথা না বলে সোজা এসে আমাকে ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় মারল।
আমি বললামঃ আব্বু বিশ্বাস করো,,,,
আব্বুঃ ঠাসস ঠাসস এই মুখ দিয়ে আর আমাকে আব্বু বলে ডাকি না 😡😡😡।
রিপার আব্বুঃ ছি ছি আমজাদ(আমার আব্বুর নাম) ছি তোকে আমার বন্ধু ভাবতে ঘৃণা হয়( রিপার বাবা আর আমার বাবা বন্ধ)।
আমার ছেলে একটি মেয়েকে খারাপ কথা বলেছে তার জন্য তোর ছেলে আমার ছেলেকে এমন মার মেরেছে এখনো বিছানা থেকে উঠতে পারতেছে
না।আর তোর সেই ছেলে ছিঃ
আব্বুঃ বন্ধু আমাকে মাফ করে দে,, আমি ওকে মানুষ করতে পারিনি।
আমিঃ আব্বু আমার কথা শোনো,,,,
আব্বুঃ ঠাসস ঠাসস তোর কোনো কথা শুনতে চাই না।তুই বাসা থেকে বের হয়ে যা।আজ থেকে আমাদের একটাই ছেলে।
আমি কান্না করতে করতে আম্মুর কাছে যায়ে বললামঃ আম্মু তুমি তো বিশ্বাস করবে।
আম্মুঃ তোর বাবা তোকে কি বললো শুনতে পাসনি।
আমি ভাইয়াকে বললামঃ ভাইয়া তুমিও আমাকে ভুল বুঝবেন।
ভাইয়াও আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
আমি দৌড়ে গিয়ে আব্বুর পা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললামঃ আব্বু আমাকে বাসা থেকে বের করে দিওনা।
আমি তোমাদের ছাড়া বাঁচবো না।
আব্বু আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বললোঃ তুই যদি বাসা থেকে বের হয়ে না যায় তাহলে আমার মরা মুখ দেখবি।
এতোক্ষণ থেকে যে কথা গুলো শুনতে ছিলাম সেই কথাতে যে কষ্ট পাইনি এই একটা কথা যে তার চেয়ে শতগুণ বেশি কষ্ট পেয়েছি।
আমিঃ আমি তোমাদের কাছে এতোই ঘৃণার পাত্র হয়েছি।যার জন্য আমি বাসায় থাকলে তোমাদের মরা মুখ দেখতে হবে।
বেশ আমি চলে যাচ্ছি,তবে ,,,
(চলবে)
#EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ৮ম
আমিঃ হ্যাঁ আমি চলে যাচ্ছি।তবে আফসোস তোমরা যেদিন তোমাদের ভুল বুঝতে পারবে সেদিন খুব কান্না
করবে।এর থেকেও বড় আফসোস সেদিন তোমরা আমাকে খুঁজেও পাবে না। ভালো থেকো সবাই।
বলেই আমি বাসা থেকে বের হয়ে দরজার কাছে এসে ভাবীকে বললামঃ আম্মু কে দেখে রেখো।
আর এই অধম কে ক্ষমা করে দিয়ো।
ভাবি আমার কথা শুনে অঝোরে কান্না করতে লাগলো।
আমি আবার বলতে শুরু করলামঃ এই যে মিস রিপা খান আপনি খুব ভালো অভিনয় করতে পারেন। যদি
অভিনেত্রী হিসেবে যোগদান করেন তাহলে সেরা এওয়ার্ড টা পেতে পারেন।ভালো থেকো।
আর পারলে এই ধর্ষককে ক্ষমা করো।
বলেই একটা অট্টহাসি দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম।বাসার বাহিরে এসে ভাবতে দেখলাম কোথায় যাব
কোথায় থাকবো, কি খাব ?
না এসব ভাবলে হবে না আমার। আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। চলে যাবো এই স্বার্থপর শহরের স্বার্থপর
মানুষ দের কাছ থেকে। যেখানে থাকবে না কোনো স্বার্থপরতা আর না থাকবে অবিশ্বাসীদের অস্তিত্ব।
হায়রে মা বাবা, যেখানে নিজের ছেলেকে বিশ্বাস না করে একটা মেয়ের কথা বিশ্বাস করে নিজের ছেলেকে দুরের ঠেলে দিলে।
তবে এখানে তাদের কোন দোষ ছিলনা।যে কেউ আমাকে এই অবস্থায় দেখলে ধর্ষকের উপাধি দিয়ে পিছু
পা হবে না। হয়তোবা আমার মা-বাবার চোখে আমার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্বাস টা ছিলো না।
যাইহোক, ভাবলাম আজকে রাতে রাফির বাসায় থাকবো।কালকে সকালে কলেজ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে
চলে যাবো এই শহর ছেড়ে।চলে যাবো অজানা পথে। ভাবতেই চোখের কোণায় বিন্দু বিন্দু জল বাসা
বাঁধতে শুরু করলো।হাত দিয়ে চোখের পানি মুছলাম।
রাফির বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজাতেই আন্টি দরজা খুলে দিল। আমাকে দেখে আন্টি জিজ্ঞাসা
করলঃ কেমন আছো বাবা?
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?
আন্টিঃ আলহামদুলিল্লাহ। বাবা তোমার কি হয়েছে কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
আমিঃ কিছু হয়নি আন্টি আমি ঠিক আছে। রাফি বাসায় আছে?
আন্টিঃ হ্যাঁ বাবা আসো রুমে যাও।
আমি রাবির রুমে এসে দেখি রাফি শুয়ে থেকে ফোন টিপতেছে। আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলঃ
কিরে সাহিদ তুই এত রাতে?(অবাক হয়ে)
আমি আর কিছু না বলে রাফিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।
রাফি আমাকে কাঁদতে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলোঃ কি হয়েছে সাহিদ? বল আমাকে তোর কি
হয়েছে।
আমি রাফিকে সব বললাম।রাফি আমাকে শান্তনা দিয়ে বললোঃ দেখ দোস যা হয়েছে তা ভুলে গিয়ে নতুন ভাবে
শুরু করে। একদিন তারা তাদের ভুল ঠিকই বুঝতে পারবে।
আমি চুপ আছি।
রাফি বললঃ সাহিদ রাতে কিছু খেয়েছিল কী?
আমিঃ নারে দোস ভালো লাগতেছে না,খাবো না।
রাফি আর কিছু না বলে বাইরে চলে গেল।
আর আমি খাটে বসে থেকে ভাবতেছি কি হয়ে গেল আমার জীবনে শুধু মাত্র একটা সন্ধ্যার মধ্যেই সবকিছু পাল্টে
গেল
রাফি রুমে এসে বললোঃ সাহিদ প্লেটে খাবার আছে। ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে নে ভাই।
আমিঃ নারে খাবো না।
রাফিঃ দেখ দোস না খেলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে।
তারপর রাবির জোরাজুরিতে কিছু খেলাম।
খাওয়া দাওয়া করে খাটে এসে শুয়ে পড়লাম।
রাফি প্লেট রেখে এসে আমার পাশে বসে বললোঃ এখন কি করতে চাচ্ছিস তুই?
আমিঃ এই শহর ছেড়ে চলে যাবো।আর হ্যাঁ কাল সকালে আমার সাথে একটু কলেজে যাবি ।
রাফিঃ ঠিক আছে।ঘুমা,,।
রাফি আমার পাশে শুয়ে পড়লো। আমি চোখ বন্ধ করে ভাবতেছি সামিয়ার কথা সেকি আমাকে বিশ্বাস
করবে নাকি দূরে ঠেলে দিবে। ভাবতেই বুকের ভিতর টা মুচোড় দিয়ে উঠলো।
যাইহোক, আজকের রাতটা কোন মতো পার করলাম
সকালে ওঠে নাস্তা করে আন্টির থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। আন্টি কে চলে আসার কথা বলিনি।
বললে হয়তো আসতেই দিতো না।
কলেজে এসে প্রিন্সিপালের কাছে থেকে টিসি নিলাম।টিসি নেওয়ার সময়ও প্রিন্সিপাল অনেক কথা
শুনানো। সেগুলো মুখ বুজে সহ্য করে নিলাম।
প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে থেকে বাহির এসে দেখি সামিয়া দাঁড়িয়ে আছে। সামিয়ার দিকে লক্ষ্য করতেই দেখি, সামিয়ার,,,,
(চলবে)