Accounting_Teacher(season2)
Part_7,8
Written_by_Ritu_Rosni
Part 7
হাসপাতালে গিয়ে দেখি স্যারের বাসার সবাই আছে সাথে বর্ষা ও।সবাইকে দেখছি আম্মুকে তো দেখছি না।
মাথার ভেতর অনেকগুলো জটিল প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ডাঃ বেরিয়ে এলেন।ডাঃ মামনি কেমন আছে?শুভ্র স্যার ডাঃ আংকেল কে আসতে দেখে দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
ভয়ের কিছু নেই।অতিরিক্ত টেনশনের কারণে এমন হয়েছে।
কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত টেনশন করছে হয়তো।আমি কিছু ঔষুধ প্রেসক্রিপ করে দিচ্ছি সময় মতো খাওয়াবেন।
.
ডাক্তার আর স্যারের বলা কথাগুলো আমার মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।মামনি মানে?স্যার তো আম্মুকেই আম্মু বলে।সবাই আছে,তাহলে আম্মু কোথায়?বর্ষা কে দেখে মনে হচ্ছে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে।
দৌড় দিয়ে কেবিনে ঢুকে গেলাম যেখান থেকে ডাক্তার বের হলেন।আর কেউ নয় আমার আম্মুই যে বেডে শুয়ে আছে।আম্মা ছাড়া যে এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ নেই।বাপি ও উপরে চলে গেলেন আমাদের রেখে,সেই থেকে আম্মুই আমাদের কাছে সব।বাবা মা দুটোই।
কখনো কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি আমাদের।
সেই আম্মুর কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচঁব।
,
কান্না করতে করতে আমার হে্চকি উঠে যাচ্ছে।আমি কান্না করতে পারিনা।দম বন্ধ হয়ে আসে।শুনেছি কান্না করতে পারলে নাকি ভেতরের কষ্ট টা কিছুটা হলে নাকি কমে।
কিন্তু আমি তো পারি না তা।আমার কান্নার শব্দে আম্মুর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
–আরে পাগলি মেয়ে কান্না করছিস কেনো?আমি কি মরে গেছি নাকি।
–আম্মুউউউহহহ,,মায়ের মুখে মরার কথা শুনে আমার কান্নার শব্দ টা আরো বেড়ে গেলো 5G স্পিডে।অক্সিজেন ছাড়া আমাদের বেচে থাকা কখনোই সম্ভব নয় আর আমার অক্সিজেন হলো আমার মা।
,
আম্মু সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে আসিতেছিলাম কিন্তু কামাল আঙ্কেল জোর করে উনাদের বাসায় নিয়ে এলেন।আর আঙ্কেলদের পাশের ফ্ল্যাটেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।এত করে বললাম আমরা আমাদের বাসাতেই থাকতে পারবো তারপরেও উনি শুনলেন না।জোর করে নিয়ে এলেন।মামনি,শোভা টা হয়েছে আঙ্কেলের মতো।
,
–ভাই সাহেব!!এতকিছু করার কোনো দরকার ছিল না।আমরা আমাদের বাসাতেই থাকতে পারতাম আপনি শুধু শুধু কষ্ট করতে গেলেন আমাদের জন্য।
–কিসের কষ্ট?কোনো কষ্ট হয়নি।আমার অনেক আগেই আপনাদেরকে এখানে আনা উচিত ছিল।যাই হোক আজ থেকে এটাও আপনার বাসা।
—ঠিক তা নয়।ওর আব্বু মারা যাবার পর থেকে আপনি কম করেননি আমাদের জন্য।এ যুগে এমন বন্ধু পায় কজন বলুন?ওর আপন ভাইয়েরাও এমন করেনি কখনো।আমাদের সব সময় ছায়ার মতো করে আগলে রেখেছেন।
–বাদ দিন তো ভাবি।আপনার এখন বিশ্রামের প্রয়োজন।ডাক্তার কি বলছে আপনি শোনেনি? একদম টেনশন করা যাবে না।যে কোনো সময় আপনার হার্ট ব্লক হতে পারে।
নিজের জন্য নাহলে মেয়ে দুটোর কথা ভেবে হলেও নিজের শরীরের যত্ন নিন।আপনি ছাড়া যে ওদের আর কেউ নেই এই নিষ্ঠুর দুনিয়াতে।আপনি বরং রেস্ট করুন আমি শুভ্রর মাকে বলছি খাবার পাঠাতে।
,
অনেকদিন হলো এখন আমরা স্যারের থুক্কু আঙ্কেলের বাসাতেই থাকি।আর আমাদের আগের বাসাটা ভাড়া দেওয়া আছে।
এখানকার সবাই কত্তভালো।সবাই কত্ত আদর করে আমায়।আর ঐ বজ্জাত গুমরামুখো টা কথায় কথায় আমায় বকা দেয়।একটু ও ভালোবাসে না আমায়।রাতদিন শুধু পড়া পড়া করে আমার মাথা খাবে।বই পোকা থুক্কু পড়ার পোকা একটা।আমার এসব বোরিং পড়া মরা ভাল্লাগেনা।
মনচায় তো শুধু রাতদিন ইতিপু,রিতুপু,উষাপু,সাথীপুর গল্পগুলা পড়ি।আমি আবার সেই লেবেলের গল্পখোর।আমায় যদি কেউ বলে তোকে আজ খেতে দেওয়া হবে না।সারাদিন গল্প পড়বি তো আমার মতো খুশি মনে হয়না আর কেউ হবে না।কিন্তু আমার একটা ভাঙ্গা কপাল আছে না😰কথায় আছে না কানার কপালে ধন(নেগেটিভলি নিবেন না কেউ আশা করি) মিলে না।আমার পড়ার টেবিল থেকে সব উপন্যাসের বই সরিয়ে ফেলছে সেই সাথে আমার সাধের মোবাইল ডাও কাইড়ে নিছে বজ্জাত চুড়েল স্যার টা।
কিছু বলতেও পারিনা আবার সইতেও পারিনা।আমার মা পারে তো বজ্জাত টারে মাথায় তুলে নাচে।গা জ্বলে যায় এমন আদিখ্যেতা দেখে।
কি এমন একটা বালের বোরিং লাইফ।তেজপাতা করে দিলো একেবারে ডাইনোসর টা।
“মাঝেমাঝে মনে হয় পালিয়ে যাই কোথাও কিন্তু গাড়ি ভাড়ার অভাবে যেতে পারি না ”
এত রসকষহীন কোনো মানুষ হয় নাকি বুঝি না বাপু।
,
রাত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে বাংলাদেশের খেলা দেখছিলাম।টানটান উত্তেজনা পর্বে যখন যখন কেউ আউট হয়ে যায় তখন
–হোয়াট দ্যাাাাাাাা👿(শুভ্র)
–দিজ ইজ বোল্ড থুক্কু আউট স্যার।
–ইডিয়ট
–সেতা খায় না মাথায় দেয় স্যার থুক্কু আঙ্কেলের ছেলে?
–হোয়াট দ্যা ল্যাংগুয়েজ
–হুররর মিয়া খালি ইংরেজি কন ফরফর করে মুখে বাতাস ঢুকতে দেন।ওমন দুই চারটা ইংরেজি আমরাও কইতে জানি হুহহ।
,
প্রতিদিন ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় নিয়ে যাবে এবং নিয়ে আসবে।কত্তদিন হলো বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয়া হয় না।এত অত্যাচার করলে আমি আর মনে হয় বেশিদিন বাচঁবো না।আগামীকাল নুপুরের বিয়ে।তিন বছর রিলেশনের পরে নীল ভাইয়ার সাথে ফাইনালি বিয়ের পিরিতে বসছে।নুপু আসলেই অনেক লাকী।নীল ভাইয়া নুপু কে অনেক ভালোবাসে।
একদিন আগে যাওয়ার জন্য কত্ত করে বলে দিল।একমাত্র কলিজার টুকরা বেস্টির বিয়ে বলে কথা।না জানি সাতদিন আগে থেকেই নাচ শুরু করে দিব।মেক আপ শেকাপ করবো।
হলুদের অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে সবাই মিলে,মেয়েরা লাল পারের হলুদ শাড়ি।কাচা ফুলের গহনা পড়বো আর ছেলেরা পড়বে ম্যাচিং হলুদ শাড়ি।
বিয়েতে চার বান্ধপ্পি মিলে একই সাজ দিবো।যাতে করে আমাদের জিজু মহাশয় তাক লাগিয়ে যায়।বিয়ে বাড়ি থেকে বরের ভাইয়েরা মানে আমাগো বিয়ান রা আসবে তাদের সাথে ফ্লার্টিং করবো।কত্ত প্ল্যানিং করেছি সবাই মিলে আর সব শেষে কি হলো😰এ জন্যই কোনো কিছু নিয়ে এত এক্সাইটেড হতে নেই।আমি অনেক খেয়াল করে দেখেছি যে আমি যে বিষয় টা নিয়ে বেশি উত্তেজিত থাকি দিন শেষে ফল হিসেবে শূন্য পাই।
এই তো সেদিন ফ্রেন্ডস রা মিলে রাত জেগে জেগে প্ল্যানিং করলাম আমরা সিলেট ট্যুরে যাব সাতদিনের।চাঁদাও দিলাম,শপিং ও করলাম কিন্তু পরে আর যাওয়া হলো না আমাদের কোনো কারণে।
,
আম্মার কাছে গিয়ে বলায়য় আম্মা স্ট্রেট বলে দিলো গেলে শুভ্র কে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
–আম্মুউউউউহহহহহহহ
–কি হয়েছে এত চিল্লাচিল্লি করছিস কেন?
–আমি একাই যাব।
–নাহ বললাম না?
–আমি কি সেই দু বছরের শিশু নাকি যে সব সময় বডি গার্ড নিয়ে ঘুরতে হবে আমার।একা চলতে পারি না?একটা অনার্স পড়ুয়া মেয়ে কে শাসন করো যেভাবে মনে আমি ছোট্ট সান্জু।
–আমি ওত শত বুঝিনা।শুভ্র কে নিয়ে গেলে যাবি নয়তো কানের গরে প্যানপ্যান করবি না।
মুড অফ করে বসে রইলাম ঘরে।কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে।হারামি গুলা বারবার ফোন দিচ্ছে।সবাই আগে থেকে চলে গেছে আমি বাদে।
.
.
.#Accounting_Teacher(season2)
#___Part___8
#Written_by_Ritu_Rosni
.
.
মুড অফ করে বসে রইলাম ঘরে।কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে।হারামি গুলা বারবার ফোন দিচ্ছে।সবাই আগে থেকে চলে গেছে আমি বাদে।
,
–সেই কখন থেকে নিচে বসে আছি মহারাজা বিজয়ের এখনো আসার সময় হয়নি।এত্ত কষ্ট করে সাজুগুজু করলাম আটা ময়দা মেখে সব তো এখন গলে গলে পড়বে।এই গরমে গাড়ির মধ্যে সং সেজে কি বসে থাকা যায়।
ধুররর ভাল্লাগেনা এসব প্যারা।সবাই চলে গেছে ঐদিকে নুপু বারবার কল দিয়েই যাচ্ছে।
আম্মার উপরে এখন যা মেজাজ হচ্ছে না😡কি হতো আমি একা গেলে।সাথে আবার লেট লতিফ বডি গার্ড দিয়ে দিচ্ছে।
সেদিন পিকনিকে গিয়ে যেভাবে আমায় অত্যাচার করছে সে কথা ভেবে আমার চিৎকার করে কাদঁতে ইচ্ছা করছে কিন্তু সাজগোজ নষ্ট হবার ভয়ে কাদঁতে পারছিনা।
আল্লাহ গো এই ব্যাটা কি মেয়েদের মতো ছুনু পাউডার ঘষতে বসছে নাকি কে জানে।এত্ত লেট করছে কেনো?
বসে বসে বোরিং হওয়ার থেকে হেডফোনে গান শুনি।
.
♪♪তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।♪♪
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
,
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারি।
তুমি হাত টা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওও……………………
……………..পারো।
আমার ভাল লাগা……………..
………………..জড়োসড়ো।
,
তোমার আবেগমাখা খামখেয়ালী হাটঁছে
আমার পিছু,আমার আসা যাওয়ার পথের বাঁকে
পাইনি আমি কিছু।
তোমার আবেগমাখা………………
……………………♪♪♪……….
……………কিছু।
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না কারো।
তুমি…….♪♪………………….
………………………………….
……….. কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
,
আমার হৃদয় যেনো বান ভাসি হয় তোমার
স্রোতের টানে।
আমি তোমার কাছে যাবোই যাবো
একলা থাকার দিনে।
আমার হ্দয় যেনো বান ভাসি হয় তোমার
স্রোতের টানে।
আমি তোমার কাছে যাবোই যাবো
একলা থাকার দিনে।
,
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো,
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
(গান টা সবাই নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন।)
,
গান শুনিতেছিলাম গভীর মনোযোগে হঠাৎ তীব্রতর গাড়ির হর্ণের শব্দে আমার গান শোনায় ব্যাঘাত ঘটে।
এত জোরালো শব্দ যে আমি ফুল ভলিউমে গান শোনার পরেও কানে যাচ্ছিল।
—আমি কোনো ড্রাইভার নই।সো সামনে এসে বসুন।(শুভ্র)
–এই কথা বলার জন্য এত কাহিনী করার কি আছে।ডাকলেই তো পারতো হুহহহহহ
–ইয়াহ।ইউ আর অল রাইট।বাট আপনি যেভাবে গান শুনছিলেন যে আপনার পাশে কেউ মারা গেলেও টের পাবেন নাহ।আর ডেকে কোনো কাজ হয়নি বলেই তো ব্যতিক্রম পথ বেছে নিয়েছি।
যাই হোক অনেক লেট হয়ে গেছে হারিয়াম।
—এইরেেে এই লোক টা বারবার আমার মনে মনে বলা কথাগুলো শুনে ফেলে কিভাবে জানি।
—যেভাবে বলো তাতে তো মনে হয় মাইকে এনাউন্স করার সময়েও এতো জোরে শব্দ করে না।কানে তালা লেগে যায় তোমার কথা শুনে।তাই তো কানে তুলা দিয়ে রেখেছি।
—কিহহহহহ এই লোক টার এত্তবড় সাহস আমায় ইনসাল্ট করলো😡😡এক বার বাগে পাই আগে বিচ্চু তারপরে বুঝাবো রশনি কি জিনিস।
—ম্যাম!!আপনার মনে মনে গালি দেয়া হলে সিটবেল্ট টা কাইন্ডলি বেধে নিবেন।
,
নুপুর দের বাসা তো এইদিকে না তাহলে এই লোকটা এইদিকে কোথায় যাচ্ছে।পাগল টাগল হলো না তো আবার।কি জানি আগে আস্ক করে দেখি তো।
এই যেেেে আপনি এইদিকে কোথায় যাচ্ছেন?আপনি হয়তো ভুলে গেছেন নুপুরদের বাসা রাধানগর মধ্যপাড়ায় মিন এডওয়ার্ড কলেজের পাশে।আর আপনি শহরে কেনো যাচ্ছেন কিছুইতো বুঝতেছি না।
—জ্বী নাহ!!আমার মেমরি খুব শার্প।অন্যের মতো গোবর পোরা মাথা নয়।১মত আমাদের নুপুরের জন্য কিছু গিফট কিনতে হবে।আর ২য়ত ওর বিয়েটা কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে।
—এই রেেেে আমার তো গিফটের কথা মাথা তেই আসেনি।জ্বিব্বাহ্ তে কামড় দিয়ে।এত্ত মনভুলা কেনো
আমি।
মাম্মিহহহহহহহ😰
এই লোকটা আমায় আবারো ইনসাল্ট করলো।
,
আমরা এখন রবিউলের ২য় তলায় আছি।নুপুরের জন্য গিফট চয়েজ করছে শুভ্র না কুভ্র।
মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে চয়েজ হচ্ছে না কোনো কিছু।
আমি আনমনে সব হাতরে বেড়াচ্ছি।
হঠাৎ কোথা থেকে একটা বেটা ছেলে এসে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো।
–আরে শুভ্র বেইবি!! কেমন আছিস?
–আম ফাইন।তুই?
–সেইম টু।
,
জিন্স,টি শার্ট পরহিতা সেই বেটা ছেলে।নাম জানিনা।মেয়ে হলেও দেখতে পুরাই ছেলে।প্রথম দেখায় যে কেউ বলবে যে এটা ছেলে।হেয়ার স্টাইল ও ছেলেদের মতো করে ছোট ছোট করে ছাটা।তবে যতোই ছেলে সাজার চেষ্টা করুক না কেনো
মেয়েদের চিন্হগুলো তো আর মিথ্যে নয়।
এটা কেমন পোশাক।পোশাক আশাকে কোনো প্রকার শালীনতা নাই।কেমন ফ্যামিলির মেয়ে কে জানে।এ রকম পোশাকে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফ্যামিলি থেকে কিছু বলে না নাকি।
আর বলেই বা লাভ কি কজন বা শোনে।
কি বেহায়া মেয়েরে বাবা শপিং মলের মধ্যে এসে অন্য পুরুষের সাথে ঢলাঢলি করছে একটু ও লজ্জাশরম নাই নাকি।
আর লজ্জা থাকলে কি আর এমন পোশাক পরে বের হতো না কি।
রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে যে ঐ লুচ্চা ব্যাটা ঐ ব্যাটা ছেলেরে জড়িয়ে ধরেছে।
হিতাহিত জ্ঞান ভুলে গেছি রাগে।আমার কি হলো জানিনা
হাতে একটা শো-পিচ ছিল আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে টুকরোটুকরো করে ফেললাম।
মনে হচ্ছে এইভাবে আছাড় দিয়ে ঐ ডাইনি হাল্ফ লেডিস টারে টুকরোটুকরো করতে পারলে গায়ের জ্বালা মিটতো কিছুটা।
,
কিছু ভাঙ্গার শব্দে শুভ্র এনা কে ছেড়ে দেয়।তাকিয়ে দেখে ঋতু ওর দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে।
—ঐ ডাইনি টাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে শুভ্রর হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নেমে এলাম।
ঋতুর এহেন কান্ডে শুভ্র হা হয়ে আছে।অবাকের উচ্চ সীমায় অবাক হয়েছে।এই প্রথম ঋতু কে এত রাগতে দেখছে।
ওর জানামতে ঋতু খুব শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে তবে হ্যাঁ ও একটু দুষ্টু প্রকৃতির।তবে এখন ওর সামনে যে ঋতু দাড়িয়ে আছে মনে হয় সে অন্য কেউ।
একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা টা হজম করতে শুভ্রের একটু সময় লাগছে।আসলে ও এখনো বুঝতে পারেনি ঋতুর এত রাগার কারণ।
সব কিছুই তো ঠিক ছিল।দুজন মিলে গিফট চুজ করতেছিল হঠাৎ করে কি হলো।
,
শুভ্রর মতো ঋতুও অবাক হয়েছে।এতক্ষণ যেনো একটা ঘোরের মাঝে ছিল।
—আর ইউ ওকে?ঋতু
–হু,আসলে ঐ ব্যাটা ছেলেটা আপনাকে জড়িয়ে ধরছিল দেখে মাথা গরম হয়ে গেছিল।
—ব্যাটা ছেলে মানে????ও এনা।
–এনা হোক আর ও প্যানা হোক তাতে আমার কি?
–আপনি ওকে জড়িয়ে ধরবেন কেনো?
–যাস্ট শাট আপ ঋতু।ও আমার ফ্রেন্ডস।কানাডায় আমরা এক সাথে স্ট্যাডি করতাম।অনেকদিন পরে দেখা তাই হাগ করছে।এটা ওদের কালচার।
এ্যানি ওয়ে তাতে তোমার কি?আমি কাকে জড়িয়ে ধরবো না কি করবো তা কি তোমার থেকে শুনে করতে হবে নাকি?(শুভ্র)
—ওর একটু আগে করা কান্ডে লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।ঠিকই তো বলছে শুভ্র।ওর যা খুশি তাই করতে পারে তাতে ওর কি?
সসসররররিিিি স্যার,,র,,আম রিয়েলী সরিি।প্লিজ ফর গিভ মি।
–ইটস অকে।যাও গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি।
,
সারা রাস্তা কেউ কারো সাথে কথা বলে নি।কিছুক্ষণের মাঝেই কমিউনিটি সেন্টারে গাড়ি এসে থামলো।আমায় গাড়ি থেকে নামিয়ে উনি গাড়ি পার্ক করতে গেলেন।
আমার আসা দেখে দূর থেকে সুমি,উর্মি,মধু,আশিক,দাদু,অপু,রবিন সবাই ছুটে এলো।হয়তো এতক্ষণ আমার অপেক্ষাই করছিল ওরা।আমিই লেট করেছি।যে আমি সাতদিন আগে থেকেই প্ল্যানিং করছি আর সেই আমিই লেট।আমার মতো দূর্ভাগা কি আর কেউ আছে কি না জানি না।
–আগে নুপু’র সাথে দেখা করে আয়।ও খুব রেগে আছে তোর ওপর।
–ওকে তোরা থাক আমি আসতেছি।
আঙ্কেল আন্টির সাথে দেখা করে নুপু’র কাছে দেখা করার জন্য ওর রুমের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আছি।জানি না আমার কপালে আজ কি আছে।রাক্ষস রাণী কটকটি না জানি আমার প্রাণ দন্ড না নিয়ে নেয়।
দরজার দিকে দুটি চোখ অগ্নিমূর্তি ধারণ করে তাকিয়ে আছে।মনে হয় ঐ চোখ দুটি দিয়ে আমায় ভস্ম করে দিবে।
এক পা দু পা করে আগাচ্ছি আর দু’আা পড়ছি।
,
–বের হ আমার রুম থেকে।বের হ
নুপু জুতা হাতে করে তেড়ে আসছে আমার দিকে।
–সরি জান আমার ভুল হয়ে গেছে।প্লিজজ এবারের মতো আমায় ক্ষমা করে দে।
–কিসের জান?কার জান?আমি কারো জান নই।
এক্ষুণি বের হ তুই আমার রুম থেকে।
–সত্যি সত্যি বের হবো তো?
–হ বের হ তুই
–সত্যি যাবো তো?
–হ তুই বের হ।
–অকে আমি চলে গেলাম।😰কেউ আমায় ভালোবাসে না।সবাই খালি পর পর করে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।
বিরক্ত করলে ক্ষমা করবেন আপা দয়া করে।একটু ন্যাকা সুরে।এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
–ঐ কুত্তা কই যাস?আর এক পা এগোলে ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা করে দেবো তোকে।
–এমা নাহহ,তাইলে আমি হাটবো কেমনে?আমি লুলা হলে কেউ আমায় বিয়ে করবে না।😰আমার বিয়ে না হলে আমি বাচ্চাকাচ্চা পামু কই?আর তোরে আমি বেয়াইন বানামু কেমতে,,এ্যাাাাাাাাাাাাাাাা
—ঐ ঢঙ্গি থামবি তুই?এমনিতেই লেট করে আসছে আবার এসেই ঢং শুরু করছে।
চলবে