#প্রেম_ফাল্গুন
#পর্ব_১০
#Nishat_Jahan_Raat (ছদ্মনাম)
ববি তিন কবুল বলার পরক্ষনেই লিলি এক নিশ্বাসে গড়গড় করে তিন কবুল বলে দিলো। লিলির মধ্যে কোনো রকম লজ্জাবোধ বা আড়ষ্টতা কাজ করে নি। চোখে, মুখে শুধুমাএ এক রাশ খুশি আর অপার সম্ভাবনার ঝিলিক দেখা গেছে।
কাজী অফিস থেকে বের হয়ে জুবায়ের আহমেদ ববিকে উদ্দেশ্য করে খানিক উদ্বিগ্ন স্বরে বললেন,,
“বিয়েটা তো হয়ে গেলো ববি। এইবার তুমি তোমার বাড়ির লোকদের কিভাবে ম্যানেজ করবে? মানে তাদের সামলাতে পারবে তো? লিলিকে তারা মেনে নিবে তো?”
লিলির ডান হাতটা শক্ত করে ধরে ববি ক্ষীণ স্বরে জুবায়ের আহমেদকে বলল,,
“প্রথম অবস্থায় কেউ ই মেনে নিবে না আঙ্কেল। হয়তো বিরাট কলহ্ বাঁধতে পারে। তবে আশা করছি একটা সময় পর সবাই লিলিকে মেনে নিবে। আর যদি আমার ধারণা ভুল ও হয়, তবে কারো পরোয়া করি না আমি, লিলিকে নিয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসব। এনাফ গ্রেজুয়েট আমি, ট্রাই করলে ছোট খাটো একটা জব নিশ্চয়ই পেয়ে যাবো।”
“জব নিয়ে তুমি ভেবো না ববি। আমাদের অফিসে কিছু দিন পরই একটা কম্পিউটার অপারেটরের পোস্ট খালি হবে। আমি চেষ্টা করব সেই পোস্টে তোমাকে চাকরীর ব্যবস্থা করে দিতে। এতে যদি তোমার কোনো সুরাহা হয়।”
“থ্যাংকস আঙ্কেল। তবে আমি শতভাগ চেষ্টা করব পরিবারের সবাইকে নিয়ে লিলি সহ একই বাড়িতে থাকতে। যদি চেষ্টার বিচুত্যি ঘটে, পরে না হয় বাড়ি থেকে বের হওয়ার ডিসিশানটা নেওয়া যাবে। দেন, নেক্সটে না হয় আপনি আমার জবের বিষয়টা নিয়ে ভাববেন।”
জুবায়ের আহমেদ হালকা হেসে বললেন,,
“ঠিক আছে বাবা। দো’আ করি, তোমার পরিবারের সবাই যেনো তোমাকে এবং লিলিকে খুব দ্রুত মেনে নেয়।”
তন্মধ্যেই ববির ফোনে সাইলেন্ট মোডে রিং বেজে উঠল। ববি তাড়াহুড়ো করে ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রীনের দিকে তাকাতেই কপাল কুঁচকে কলটা পিক করে বেশ নরম স্বরে বলল,,
“হ্যাঁ আপু বলো?”
ঐপাশ থেকে হেমা ভীষণ রেগে চেঁচিয়ে বলল,,
“ববি। কোথায় তুই?”
“এইতো আপু। এলাকার আশেপাশেই আছি।”
“কাল রাত থেকে এই পর্যন্ত তোকে কল করেই যাচ্ছি তো করেই যাচ্ছি। কলটা রিসিভ করলি না কেনো? কোথায় ছিলি তুই? আয়রা বলছিলো, তুই নাকি নড়াইল গেছিস?”
“হুম আপু। গিয়েছিলাম। একটা বিশেষ কাজে। কাজটা মাএ শেষ হলো। এইতো এই মাএ ঢাকায় ফিরলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমি বাড়ি ফিরছি। সাথে একজন নতুন মেম্বার নিয়ে!”
“নতুন মেম্বার? মানে? কি বললি বুঝলাম না!”
“বাড়ি ফিরে বলছি। সবাইকে নিয়ে দ্রুত মামুর বাড়ি চলে এসো। আমি ওখানেই আসছি!”
“মানে? মামুর বাড়ি কেনো? আম্মু তো আমাদের বাড়িতে। তোর জিজুর সাথে বিয়ে সম্পর্কিত কথা বলছে৷ এখন কিছুতেই মামুর বাড়ি যাওয়া যাবে না। তাছাড়া, মামু একটু পরেই আমাদের বাড়িতে আসছেন, বিয়ের এরেন্জমেন্ট নিয়ে কথা বলতে। এক সপ্তাহ বাদেই বিয়ে৷ কতো কাজ পড়ে আছে বল তো? তুই ও জলদি চলে আয়।”
ববি বেশ স্বাভাবিক স্বরে বলল,,
“বিয়েটা হচ্ছে না আপু৷ এই বিষয়ে কথা বলার জন্যই বলছি সবাইকে নিয়ে মামুর বাড়িতে আসতে।”
“হোয়াট? এসব তুই কি বলছিস ববি? মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর?”
“আমার মাথা ঠিক আছে আপু। প্লিজ আম্মু এবং জিজুকে নিয়ে কুইকলি মামার বাড়ি চলে এসো। রাখছি। বায়!”
ববি কলটা কেটে জুবায়ের আহমেদের দিকে তাকিয়ে ক্ষীণ হেসে বলল,,,
“আঙ্কেল, এবার আমরা আসছি। আপু খুব তাড়া দিচ্ছে।”
জুবায়ের আহমেদ কৌতুহলী হয়ে বললেন,,
“এক সেকেন্ড ববি। ফোনে তুমি কার বিয়ের কথা বলছিলে?”
ববি মাথা নিচু করে পিছনের চুলগুলো টেনে বলল,,
“একচুয়েলি আঙ্কেল৷ বাড়ি থেকে আমার বিয়ে ঠিক করা হয়েছিলো। জিজুর বোন আয়রার সাথে।”
লিলি প্রকান্ড চোখে ববির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বাস ই হচ্ছে না ববির বিয়ে আগে থেকেই অন্য কারো সাথে ঠিক করা ছিলো। আর ববি বেমালুম বিষয়টা চেঁপে গেছে। জুবায়ের আহমেদ উত্তেজিত স্বরে ববিকে বললেন,,
“এখন তো আরেক বিপত্তি বাঁধলো ববি! আয়রার কি হবে এখন? তাছাড়া, লিলিকে তোমার পরিবারের লোকজন ছাড়বে তো? এখন তো দুই পরিবারের মানুষ এক হয়ে তোমাদের আলাদা করার জন্য উঠে পড়ে লাগবে!”
“চিন্তা করবেন না আঙ্কেল। কেউ আমাকে লিলির থেকে আলাদা করতে পারবে না। তাছাড়া আমাদের বিয়েটা এখন হয়ে গেছে। পৃথিবীতে আর কারো সাধ্য নেই ববির থেকে লিলিকে আলাদা করার। আমাদের পবিএ সম্পর্কটাকে এতো সহজে ভেঙ্গে দেওয়ার।”
জুবায়ের আহমেদ ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন,,
“আমি ও আসি তোমাদের সাথে? খুব টেনশান হচ্ছে ববি।”
“না না আঙ্কেল। এখনই না। পরিস্থিতি আগে কন্ট্রোল করে নেই, এরপর না হয় আপনাকে ডাকব। এখনই যদি সবাই কোনোভাবে বুঝতে পারে আপনি আমাদের বিয়ে পড়িয়েছেন, তাহলে হয়তো আরো বড় বিপত্তি বাঁধতে পারে। সো বিষয়টা আমি আগে ঠান্ডা মাথায় হ্যান্ডেল করে নেই, এরপর না হয় আপনি সময় বুঝে ঐ বাড়িতে যাবেন।”
“ঠিক আছে বাবা। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পরই মনে করে আমাকে একটা কল করে ওখানের সমস্ত ঘটনা ইনফর্ম করে দিও। টেনশানে হয়তো আমার সারাদিন কাটবেই না। ঐদিকে তোমার আন্টি স্যরি চাচী আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জর্জরিত করে ফেলবে। হঠাৎ কেনো নড়াইল গেলাম, কি হয়েছে, এক দিনেই বা কেনো আবার ফিরে এলাম? হেন তেন আরো কতো কি!”
লিলি মৌন হয়ে এতক্ষন সবার কথা শুনছিলো। মৌণতা ভেঙ্গে লিলি এবার ভয়ার্ত চোখে জুবায়ের আহমেদের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“সত্যিটা জানতে পারলে চাচী তোমার সাথে খুব ঝগড়া করবে তাই না চাচা? তোমাকে ছোট, বড় কথা শুনাবে। পারবে তো তুমি চাচীকে সামলাতে?”
জুবায়ের আহমেদ ম্লান হেসে লিলির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,
“পারব মা। খুব পারব। আমাকে নিয়ে এখন তোর টেনশান করতে হবে না। তুই এখন নিজেকে নিয়ে ভাব। ঐ বাড়িতে যাওয়ার পর কারো মুখের উপর কোনো কথা বলবি না। কেমন? পরিস্থিতি যাই হোক একদম চুপ হয়ে থাকবি। শান্ত থাকবি। শুধু ববির হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলাবি। আর না তে না। পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর আমি ববিকে কল করে নিবো। তখন তোর সাথে ও কথা বলে নিবো। ঠিক আছে?”
লিলি অশ্রুসিক্ত চোখে মাথা নাঁড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালো। লিলিকে নিয়ে ববি প্রথম বিকশাটায় উঠে পড়ল। দ্বিতীয় রিকশাটায় জুবায়ের আহমেদ উঠে পড়লেন। রিকশায় এক কোণায় চিপকে বসে আছে লিলি। চোখ থেকে তার টুপটাপ করে জল পড়ছে। একটু পরে তার সাথে ঠিক কি কি হবে তাই নিয়েই সে গভীর দুঃশ্চিন্তায় ডুবে আছে। ববি বিরক্তি নিয়ে চোয়াল শক্ত করে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি হয়েছে লিলি? এতো কান্নাকাটির কি আছে?”
লিলি গলা জড়ানো স্বরে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“আমার খুব ভয় করছে ববি ভাই। আপনার পরিবারকে আমি কিভাবে ফেইস করব তাই ভেবেই আমার অন্তর আত্না কেঁপে উঠছে। উনারা যদি আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন? তখন আমি কোথায় যাবো ববি ভাই?”
“তুমি আমার ওয়াইফ লিলি। ঐ বাড়িতে তোমার শতভাগ অধিকার আছে। সেই অধিকারের জোরেই তুমি আমার বাড়িতে যাবে। মানে তোমার শ্বশুড় বাড়িতে যাবে। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টা এখানে আসছে কোত্থেকে? তাছাড়া স্বয়ং ববি তোমার পাশে থাকতে তোমার কিসের এতো ভয়, টেনশান, দুঃশ্চিন্তা লিলি? তোমার এই কান্নাকাটির জন্যই আমি মনোবল হারিয়ে ফেলছি। প্লিজ এটা করো না। কান্না থামাও, নিজেকে শক্ত করো। বাড়ি থেকে বের হওয়ার হলে তুমি একা নও ববি ও তোমার হাত ধরে বের হয়ে আসবে। কোনো অবস্থাতেই ববি তোমার হাত ছাড়বে না। সো প্লিজ নিজেকে শান্ত করো। স্থির হও। মনোবল ধরে রাখো। আই হোপ, সামনে যা হবে ভালোই হবে।”
“ঐ মেয়েটার কি হবে ববি ভাই? যার সাথে আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো?”
“এই বিষয়টা নিয়ে আমি আপাতত ভাবতে চাইছি না লিলি। এখন আমার মেইন প্রায়োরিটি হলে তুমি। বাকি সব নরকে যাক।”
লিলি মাথা নিচু করে চোখের জল ছেড়ে বলল,,
“ঐ মেয়েটাকে আপনি ভালোবাসতেন ববি ভাই?”
ববি প্রচন্ড রেগে লিলির বাম হাতটা চেঁপে ধরে চোয়াল শক্ত করে বলল,,
“আমার চোখ দেখে বুঝতে পারো না, আমি কাকে ভালোবাসি?”
লিলির হাতটা ছেড়ে ববি রাগ কন্ট্রোল করার জন্য সামনের চুল গুলো টেনে পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট টা বের করে একটা সিগারেট ধরিয়ে অনবরত সিগারেটটা ফুঁকতে লাগল। নাক ছিটকে লিলি অশ্রুসিক্ত চোখে ববির দিকে তাকিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলল,,
“ছিঃ ববি ভাই। আপনি এসব ছাই পাশ খান?”
“যখন খুব রেগে যাই তখনই খাই।”
“আমার উপর এতো রাগ আপনার?”
ববি হাত থেকে জ্বলন্ত সিগারেটটা রাস্তায় ছুড়ে ফেলে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তুমি এতো অবুঝ কেনো লিলি? বুঝতে পারো না? আমি কেনো এতো রিস্ক নিয়ে, পরিবারের কথা না ভেবে, জিজুর কথা না ভেবে, আয়রার কথা না ভেবে তোমাকে বিয়ে করলাম?”
“হয়তো দয়াবোধ থেকে আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন। অনেক দিন যাবত আমাকে দেখছেন তো, তাই মায়ায় পড়ে গেছে। এছাড়া চাচার কাকুতি, মিনতি ও সহ্য হচ্ছিলো না আপনার। পুণ্যি অর্জন করতেই আপনি আমাদের দয়া করছেন। আমি সব বুঝি ববি ভাই। সব বুঝি। এতোটা ও নির্বোধ নই আমি।”
লিলির থেকে মুখ ফিরিয়ে ববি নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে আছে। আর মনে মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,
“ভালোবাসি, বুঝলে না। অথচ দয়া করেছি দিব্যি বুঝে নিলে। তবে তাই হবে লিলি। তোমার ধারনাটাই সত্যি হবে। আমি কখনো তোমাকে মুখ খুলে আমার ভালোবাসার কথাটা স্বীকার করব না। বুঝার হলে হয়তো কখনো নিজের মন থেকেই বুঝে নিবে। যদি কখনো তুমি ও আমাকে মন থেকে ভালোবাসতে পারো তখনই হয়তো বুঝতে পারবে এই ববি তোমাকে কতোটা ভালোবাসে, তোমাকে কতোটা চায়, তোমার জন্য কতোটা সেক্রিফাইজ করতে পারে!”
ববি গলা জড়ানো স্বরে লিলিকে উদ্দেশ্য করে বলল,,
“ইউ আর রাইট লিলি। আমি তোমাকে দয়া করেছি। দয়া করেই তোমাকে বিয়েটা করেছি। ভবিষ্যতে হয়তো এভাবেই দয়া করে যাবো!”
লিলি এক পলক ববির দিকে তাকিয়ে আবার চোখ জোড়া নিচে নামিয়ে নিলো। একটু ও আশ্চর্যিত হয় নি সে। কারণ সে ববির মুখ থেকে যে কথা গুলো শুনতে চেয়েছিলো, সে কথাগুলোই ববি ননস্টপ বলে গেলো!
,
,
আধ ঘন্টা পর। বাড়ির ড্রইং রুমে ববি এবং লিলি গোটা পরিবারের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে৷ ববির মা (সাহেরা খাতুন), ববির মামা (খায়রুল আহমেদ), ববির মামী (জিনিয়া আহমেদ), হেমা, আতিক, আয়রা, আয়রার মা (নাফিসা আহমেদ), আয়রার বাবা (আমির আহমেদ) তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ববি এবং লিলির দিকে তাকিয়ে আছে। সবার মধ্যমণি খায়রুল আহমেদ গলা ঝাঁকিয়ে ববির দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকিয়ে বললেন,,
“মেয়েটা কে ববি?”
ববি মাথা তুলে খায়রুল আহমেদের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“আমার ওয়াইফ মামু!”
খায়রুল আহমেদ উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন,,
“লজ্জা করল না? সবার সম্মুখে দাঁড়িয়ে এতো উঁচু গলায় ঐ মেয়েটাকে ওয়াইফ হিসেবে দাবি করতে?”
“ওয়াইফকে ওয়াইফ হিসেবে দাবি করতে কিসের লজ্জা। মামু?”
খায়রুল আহমেদ প্রচন্ড ক্ষীপ্ত হয়ে ববির গালে কষে এক চড় মেরে বললেন,,
“মুখে মুখে তর্ক করা শিখে গেছিস না? এই দিনটার জন্যই কি তোকে সেই ছোট বেলা থেকে কোলে, পিঠে করে মানুষ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম? বল? এই দিনটা জন্যেই?”
ববির দিকে তাকিয়ে লিলি ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদছে। কাউকে কিছু বলার সাহস যোগাতে পারছে না সে। ববি গালে হাত দিয়ে টলমল চোখে খায়রুল আহমেদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তুমি কুয়েশ্চন করেছিলে এর বিপরীতে আমি আনসার করেছি। এতে মুখে মুখে তর্ক করার কি আছে মামু? আমি অস্বীকার করছি না যে, ছোট বেলা থেকে তুমি আমাকে কোলে, পিঠে করে মানুষ করে এই পর্যায়ে এনে দাঁড় করাও নি। এটা ও অস্বীকার করছি না যে, তোমার জন্যই আজ আমি উচ্চশিক্ষিত। আমি বরং এটা স্বীকার করেছি যে, আমি বিয়ে করেছি, পাশেই আমার ওয়াইফ দাঁড়িয়ে আছে।”
“কোন স্পর্ধায় তুমি এই মেয়েটাকে বিয়ে করে আনলে? যে জায়গায় তুমি আগে থেকেই জানতে তোমার বিয়ে ঠিক। তা ও আবার পাএী কেউ না, তোমার বোনের আপন ননদ। সে জায়গায় তুমি কি করে পারলে আয়রার জায়গায় অন্য একটা মেয়েকে এই বাড়িতে বিয়ে করে আনতে? তোমার সম্মতি নিয়েই কিন্তু আমরা বিয়েটা ঠিক করেছিলাম!”
ববি মাথা নিচু করে বলল,,
“ভুল হয়েছে আমার মামু। এর জন্য আমি অনুতপ্ত। একচুয়েলি ঐ সময়টাতে আমি না বুঝেই বিয়েতে মত দিয়েছিলাম। যখন বুঝলাম মনের বিপরীতে গিয়ে আমি বিয়েটা করতে পারব না তখনই আমি লিলিকে বিয়ে করে নিয়ে এলাম। লিলিকে আমি ভালোবাসি মামু। লিলিকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করা আমার জন্য সম্ভব ছিলো না!”
লিলি হেচকি তুলে কেঁদে মনে মনে বিড়বিড়িয়ে বলল,,
“কতো নিঁখুতভাবে আপনি মিথ্যে বলতে পারেন ববি ভাই। শুধুমাএ আমাকে দয়া দেখানোর জন্য আপনি আপনার বাড়ির লোকদের সামনে আমাকে ভালোবাসার মিথ্যে কথাটা বলতে পারলেন? মুখে একটু ও বাঁধল না?”
খায়রুল আহমেদ ক্ষুব্ধ হয়ে ববিকে কিছু বলার আগেই হেমা তেড়ে এসে ববির ডান গালে ঠাস করে আরো একটা চড় বসিয়ে বলল,,
“কে এই লিলি? কি তার পরিচয়? আমার ননদের চেয়ে ও কি এই মেয়ে বেশি সুন্দুরী, গুনবতী, উচ্চশিক্ষিত, বংশ পরম্পরায় ও বড়?”
ববি গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে হেমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,
“আমি কখনো লিলির সাথে কাউকে কম্পেয়ার করি নি আপু। প্রয়োজন ই পড়ে নি। কজ, লিলি সবসময় সব দিক থেকেই আমার কাছে পার্ফেক্ট ছিলো, আছে আর ভবিষ্যতে ও থাকবে।”
“এই মেয়েটার জন্যই তুই এইভাবে আমাদের ভরসা, বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলি ববি? তোর জিজুর সম্মান, আমার সম্মান, আমাদের আম্মুর সম্মান এমনকি মামুর সম্মান ও ধূলোয় মিশিয়ে দিলি? এই দিনটার জন্যই কি তোর জিজু তোর জন্য, আম্মুর জন্য এতো কিছু করেছে? কিভাবে পারলি ববি আমাকে তোর জিজুর পরিবারের কাছে এতোটা ছোট করে দিতে? বিবেকে বাঁধল না?”
ববি মাথা নিচু করে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ববির মা সোফায় বসে আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছছে। একবার ও চোখ তুলে ববির দিকে তাকাচ্ছে না। ববির জিজু মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আয়রা ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে শুধু লিলির দিকে তাকাচ্ছে। সে পারছে না লিলিকে দু চোখ দিয়ে ভৎস করে দিতে। খায়রুল আহমেদ তীক্ষ্ণ স্বরে ববিকে বললেন,,
“মেয়েটার পরিচয় কি ববি? মেয়েটার বাড়ি কোথায়?”
“পাশের বাড়ির জুবায়ের আঙ্কেলের ভাতিজি লিলি।”
“কই কখনো তো জুবায়েরদের বাড়িতে দেখি নি। বা এলাকার আশেপাশে ও মেয়েটাকে দেখি নি।”
“লিলি নড়াইলে থাকে। কিছুদিনের জন্য আঙ্কেলের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো।”
আয়রা ক্ষেপে এসে লিলির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,
“বাহ্। এই কয়েকদিনের মধ্যেই ববিকে হাতিয়ে নিলে? তোমার গুনের তো তারিফ করতেই হয়!”
ববি রূঢ় দৃষ্টিতে আয়রার দিকে তাকালো। লিলি মাথা নিচু করে কেবল চোখের জল ছাড়ছে।”
খায়রুল আহমেদ উত্তেজিত স্বরে হেমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,,
“জুবায়েরকে খবর দে হেমা। জুবায়েরের সাথে আমার ফেইস টু ফেইস কথা আছে। এ সব কিছুর নাটের গুরুই হলো ঐ জুবায়ের। ডেকে আন তাড়াতাড়ি ঐ জুবায়েরকে।”
ববি উদ্বিগ্ন চোখে খায়রুল আহমেদের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“আমাদের বিয়েতে আঙ্কেলের কোনো হাত নেই মামু। প্লিজ এসবে তুমি আঙ্কেলকে দোষারোপ করো না। যা করেছি আমি নিজ থেকে করেছি। আচমকা লিলির বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়াতে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। মাথা ঠিক ছিলো না। তাই সবার অগোচড়ে আমি নড়াইল গিয়ে লিলিকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে আনি। আর নিজের ইচ্ছে তেই ওকে বিয়েটা করি। আঙ্কেল এই সম্বন্ধে কিছুই জানেন না!”
খায়রুল আহমেদ চুপ হয়ে গেলেন। আতিক তেড়ে এসে ববি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,
“এখন আমার বোনের কি হবে ববি? আমি তো তোমাকে বিশ্বাস করে আমার বোনের সাথে তোমার বিয়েটা ঠিক করেছিলাম। এলাকায় জানাজানি হয়ে গেছে ব্যাপারটা। লোক সমাজে আমি এবং আমার পরিবার কিভাবে মুখ দেখাবো ববি?”
“স্যরি জিজু। আ’ম এক্সট্রেমলি স্যরি। আমার জন্য তোমাদের মান সম্মান নষ্ট হলো। বাট আমার কিছু করার ছিলো না জিজু। মনে একজনকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করাটা আমার পক্ষে পসিবল ছিলো না। প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড!”
সাহেরা খাতুন হঠাৎ বসা থেকে উঠে ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ক্ষীপ্ত স্বরে বললেন,,
“আমি এই বিয়ে মানি না ববি। না কখনো মানতে পারব। মেয়েটাকে তুই এক্ষনি, এই মুহূর্তে মেয়েটার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আয়।”
ববি ইতস্তত বোধ করে বলল,,
“স্যরি আম্মু। পারব না আমি। ক্ষমা করো আমাকে।”
হেমা প্রচন্ড ক্ষেপে লিলিকে ঝাঁকিয়ে বলল,,
“আমার ভাইয়ের মাথাটা পুরোপুরি খারাপ করে দিয়েছ তুমি তাই না? তোমার জন্যই এই প্রথম আমার ভাই বাড়ির সবার মুখে মুখে তর্ক করছে। সবার সিদ্ধান্তের বাইরে গেছে। কিভাবে বস করলে তুমি আমার ভাইকে? বলো কিভাবে?”
লিলি ফুঁফিয়ে কেঁদে ববির দিকে তাকালো। ববি হেচকা টানে লিলিকে হেমার খবল থেকে ছাড়িয়ে ববির বুকের সাথে মিশিয়ে জোরে চেঁচিয়ে বলল,,
“তোমরা প্লিজ লিলিকে দোষারোপ করা বন্ধ করো। আমার সায় পেয়েই লিলি আমাকে বিয়ে করেছে। লিলিকে ভালোবেসেই আমি বিয়ে করেছি। লিলি আমাকে কোনো রকম ভাবে বস করে নি। লিলির মায়ায় পড়েই আমি লিলিকে বিয়ে করেছি। থাকতে হলে এই বাড়িতে আমি লিলিকে নিয়েই থাকব। আর যদি তোমরা লিলিকে বের হয়ে যেতে বলো, তাহলে বলে রাখছি, আমি ও লিলির হাত ধরে এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবো।”
হেমা এবং সাহেরা খাতুন অবিরত কাঁদছে। উপস্থিত সবাই তব্দা লেগে ববির দিকে তাকিয়ে আছে। তন্মধ্যেই আতিক হেয় স্বরে ববিকে বলল,,
“কোথায় যাবে বউয়ের হাত ধরে? চাকরী, বাকরী তো কিছুই করো না। কি খাওয়াবে বউকে? কি আছে তোমার? কি আছে?”
ববি প্রতিত্তুরে কিছু বলার আগেই ববির মামানী ববির পাশে দাঁড়িয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন,,
“আচ্ছা, যা হওয়ার হয়ে গেছে। তোমরা সবাই প্লিজ শান্ত হও। এখন চাইলে ও আমরা কেউ এই বিয়েটা অস্বীকার করতে পারব না। ববি আমাদের পরিবারের একমাএ ছেলে সন্তান। ববিকে ছাড়া আমরা কেউ ই থাকতে পারব না। ববি তো স্পষ্ট গলায় বলেই দিলো, ববির বউকে মেনে না নিলে ববি নিজে ও এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে। সো ব্যাপারটা আমরা এখানেই শেষ করি। রাতে ঠান্ডা মাথায় এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা যাবে। এখন সবাই রেস্ট নাও, দুপুরের খাওয়া দাওয়া করো। আপাতত ব্যাপারটা এখানেই শেষ করলাম আমি।”
আতিক তার পরিবার নিয়ে হেমাকে এই বাড়িতে রেখেই রাগে গজগজ করে নিজেদের বাড়ি ফিরে গেলো। আয়রা নাকের জলে, চোখের জলে পুরো বাড়ি ভাসিয়ে ফেলছে। লিলির প্রতি তার এক ধরনের ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। তার হাব ভাব দেখে বুঝাই যাচ্ছে, যে করেই হোক সে লিলির ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। হেমা এবং সাহেরা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমে প্রবেশ করলেন। খায়রুল আহমেদ ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন,,
“তুমি যতোই অস্বীকার করো ববি আমি জানি জুবায়ের এই সবের কল কাটি। আজ না হয় কাল জুবায়েরকে আমি ধরবই ধরব। এলাকার চেয়ারম্যান আমি। তোমার এই কুকীর্তির জন্য এলাকায় আমার মান-সম্মান সব ডুবল। তোমার থেকে অন্তত এটা এক্সপেক্ট করি নি আমি ববি।”
ববি অপরাধবোধ নিয়ে খায়রুল আহমেদের দিকে তাকালো৷ খায়রুল আহমেদ হনহনিয়ে নিজের রুমে প্রস্থান নিলেন। জিনিয়া আহমেদ ম্লান হেসে ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন,,
“হতাশ হয়ো না ববি। দেখবে, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। সবাই ঠিক তোমাদের মেনে নিবে। মামানী সবসময় তোমাদের পাশে আছি।”
ববির বুক থেকে লিলিকে উঠিয়ে জিনিয়া আহমেদ লিলির চোখের জল মুছে বললেন,,
“কেঁদো না লিলি। এতো সহজে ভেঙ্গে পড়লে হবে? কতো কতো কঠিন পথ অতিক্রম করার বাকি আছে তোমার। পরিবারের সবাইকে হাতের মুঠোয় আনতে হবে তো নাকি? সো এতো সহজে ভেঙ্গে পড়লে চলবে?”
লিলি হেচকি তুলে কেঁদে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো রূপ কথা বলছে না। শরীরটা কাঁপছে তার। ক্ষুধা, ক্লান্তি, ভয়, আতঙ্ক সব তার মধ্যে মিশ্রিত। ববি বিষয়টা আঁচ করতে পেরে জিনিয়া আহমেদকে উদ্দেশ্য হয়ে বলল,,
“মামানি৷ লিলিকে রুমে নিয়ে যাও। ওর রেস্ট দরকার। অনেক ক্লান্ত সে, হয়তো ক্ষিদে ও পেয়েছে। কিছুক্ষণ রেস্ট করার পর দুপুরের খাবারটা খাইয়ে দিও ওকে।”
“তুমি ও তো ক্লান্ত ববি। তুমি ও রুমে যাও। তোমরা তো এখন হাজবেন্ড, ওয়াইফ। এক রুমে থাকাটাই মানানসই। লিলিকে তোমার রুমে নিয়ে যাও। দুজনই শাওয়ার নাও, রেস্ট করো। কিছুক্ষন পর আমি বুয়াকে দিয়ে রুমে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
ববি হ্যাঁ সূচক মাথা নাঁড়ালো। লিলির হাত ধরে ববি রুমে প্রবেশ করল। রুমের দরজাটা আটকে ববি মাথা নিচু করে ধপ করে বেডের উপর বসল। লিলি নাক টেনে কেঁদে ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন স্বরে বলল,,
“স্যরি ববি ভাই। আজ আমার জন্যই আপনাকে অনেক মার খেতে হলো। ছোট, বড় অনেক কথা শুনতে হলো। আমি খুব অনুতপ্ত ববি ভাই। খুব অনুতপ্ত।”
ববি অশ্রুসিক্ত চোখে লিলির দিকে তাকালো। ববির গাল দুটোতে দশ আঙ্গুলের দাগ স্পষ্ট। লিলি উত্তেজিত হয়ে ববির পাশে বসে অজান্তেই ববির দু গালে হাত বুলিয়ে বলল,,
“আপনার গাল দুটোতে তো চড়ের দাগ পড়ে গেছে ববি ভাই। কষ্ট হচ্ছে না আপনার?”
ববি হঠাৎ লিলিকে ঝাপটে ধরে ফুঁফিয়ে কেঁদে বলল,,
“চড় কোনো ম্যাটার না লিলি। আমি ছোট, বড়রা আমার অন্যায় দেখলে আমাকে মারতেই পারে। তবে, আমি অজান্তেই আম্মু, আপু, এবং বাড়ির সবাইকে খুব হার্ট করেছি। আমার জন্যই আম্মু এবং আপু এতো বছর পর আবার কাঁদতে বাধ্য হয়েছে। আব্বুর মৃত্যুর এতো বছর পর দুজন আবার এতোটা কাঁদতে বাধ্য হয়েছে। সেই কষ্টটাই আমি মানতে পারছি না লিলি। ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে আসছে।”
“এ সব কিছুর জন্য আমিই দায়ী ববি ভাই। অবাঞ্ছিত ভাবে আমি আপনার জীবনে এসে আপনাদের সাজানো পরিবারটাকে আলাদা করে দিলাম। সবাইকে কষ্ট দিলাম।”
ববি হঠাৎ লিলির বুক থেকে মাথা উঠিয়ে চোয়াল শক্ত করে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“শাট আপ। ইউ জাস্ট শাট আপ। তুমি ইচ্ছে করে আমার জীবনে, আমার পরিবারে আসো নি। আমিই তোমাকে বাধ্য করেছি। সমস্ত দোষ আমার। ওকে? সমস্ত দোষ আমার।”
বসা থেকে উঠে ববি চোখের জল গুলো মুছে শান্ত স্বরে লিলিকে বলল,,
“বসো তুমি। আমি মামানীর রুম থেকে একটা শাড়ী নিয়ে আসছি। শাওয়ার নিয়ে শাড়িটা পড়বে।”
লিলি হ্যাঁ সূচক মাথা নাঁড়ালো। ববি রুম থেকে প্রস্থান নিয়ে ৫/১০ মিনিটের মধ্যেই আবার রুমে প্রবেশ করল। লিলি এখনো একই জায়গায় বসে আছে। পুরোপুরি এক মাস ও হয় নি, যখন সে প্রথমবার ববির রুমে রাতের আঁধারে এসেছিলো। তখন এসেছিলো, প্রতিবেশীর আত্নীয় হিসেবে এক রাতের জন্য আশ্রয়ের খোঁজে। আর আজ এলো স্ত্রীর অধিকার নিয়ে। সারা জীবনের জন্য। লিলির ভাবনা চিন্তার মধ্যেই ববি লাল রঙ্গের একটা জর্জেট শাড়ি লিলির হাতে গুজে দিয়ে বলল,,
“যাও শাওয়ার নিয়ে এসো। কুইকলি।”
শাড়িটা হাতে নিয়ে লিলি ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। আধ ঘন্টার মধ্যেই লিলি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলো। জর্জেট শাড়িটা সে সামলে রাখতে পারছে না। বার বার কাঁধ থেকে খসে পড়ছে। চুলগুলো টাওয়াল দিয়ে পেঁচিয়ে হাতে নিংড়ানো কাপড় গুলো নিয়ে লিলি বেডের উপর মাথা নিচু করে বসে থাকা ববিকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,
“ববি ভাই। কাপড় গুলো কোথায় নাড়ব? বারান্দায় তো দঁড়ি নেই।”
ববি মাথা উঠিয়ে লিলির দিকে তাকাতেই হঠাৎ থমকে গেলো।
#চলবে….?