অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত-৪
এ রহমান
আবারো এক অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে গেলো প্রকৃতি। সময়টা যেন থমকে দাড়িয়েই গেলো। বাড়ির পাশের একটা পরিচিত রেস্টুরেন্টের রুফ টপে বসে আছে ঈশা। শেষ বিকেলের রোদটা পড়ে গেছে। শিরশিরে ঠাণ্ডা হাওয়ায় শরীর কেঁপে উঠছে। খোলা চূলগুলো বাতাসে এলোমেলো ভাবে উড়ছে। টকটকে লাল রঙের একটা জামদানী শাড়ী পরেছে। পাতলা একটা চাদর জড়িয়ে শীত নিবারণের বৃথা চেষ্টা। চোখে কাজল আর ঠোঁটে গাড় লিপস্টিক। গরম কফির কাপ থেকে ধোঁয়া উঠছে। সময়টা ঠিক হিসেব না করলেও আন্দাজ করে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো মনে হচ্ছে। এতটা সময় ধরে চুপচাপ বসে আছে দুজন মানুষ। কেউ কোন কথা বলছে না। ঈশা অসস্তি নিয়ে চোখ তুলে তাকাল। সামনের মানুষটা পাশের চেয়ারের উপরে হাত প্রশস্ত করে দিয়ে ঘাড় বেকিয়ে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। বিরক্তিতে চোখমুখ কুচকে রেখেছে। ঈশা দৃষ্টি ফিরিয়ে ধোঁয়া ওঠা কফির কাপের দিকে তাকাল। সেদিকে তাকিয়েই অদ্ভুত ভাবে হেসে উঠে বলল
–তাহলে আপনিই আমার বাবার সেই পছন্দ করা পাত্র। যার সাথে বিয়ে দিতে না পারলে বাবা টেনশনে স্ট্রোক করতেও পারেন। তার মেয়ে ছেলেকে পছন্দ করবে কিনা সেই চিন্তায় তিনি দুপুরে ঠিক মতো খেতেও পারেন নি। আমি ভুল নাহলে এই মুহূর্তে তার প্রেসার বেড়েও গেছে।
সামনের মানুষটা ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল। ঈশার কথা বলার ধরনে অপমানের আভাস। কিঞ্চিৎ গায়ে লাগলেও সেটা ঝেড়ে ভীষণ গম্ভীর গলায় বলল
–তুমি নিশ্চয় আমার জন্য এতো সেজে আসো নি? তোমার বাবার পছন্দের ছেলের সাথে দেখা করতে এসেছিলে। রাইট? তাকে ইমপ্রেস করতেই এতো আয়োজন।
শেষের কথাটা দাঁতে দাঁত চেপেই বলল। ঈশা চোখ তুলে তাকাল। বিরক্তির কারণটা ধরতে পেরেই ভেতরে অদ্ভুত রকমের পৈশাচিক আনন্দ পেলো। ভীষণ দাম্ভিকতা বজায় রেখে হেসে উঠলো। এবারের অপমানটা গায়ে ভালোভাবেই মেখে নিলো ইভান। সরু চোখে তাকিয়ে থাকলো কয়েক সেকেন্ড। তারপর সোজা হয়ে বসল। কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
–বিয়ে করার এতো তাড়া? না দেখেই মনে ধরে গেলো সেই বাবার পছন্দ করা ছেলেকে?
ভালো করে দেখে নিয়ে তাচ্ছিল্য হেসে বলল
–কোন কমতি রাখোনি দেখছি।
ঈশা নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
–বাবাকে আমি খুব ভালোবাসি। তাই বাবার পছন্দকে গুরুত্ব দিতে চাইছি। তাই ভাবলাম একটু সেজে গুঁজে গেলে যদি ছেলে তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়।
ইভান ঠোঁট বাকিয়ে হাসল। তাচ্ছিল্যের সুরে বলল
–তোমার বাবা জানে তার পছন্দের ছেলেকে তার মেয়ে বিয়ে করতে একসময় জীবন ছেড়ে দিচ্ছিল?
ঈশার মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। অপমানটা গায়ে মেখে নিয়ে এভাবে হার মেনে চুপ করে থাকা যাবে না। সেটা ভেবেই তাচ্ছিল্য হেসে বলল
–জানে না। জানাতেও চাই না। আচ্ছা সেই সময় আবেগ বলে ফিরিয়ে দেয়া মেয়েটাকে আজ বিয়ে করতে মরে যাচ্ছেন যে? এতো বছর পর মনে হল মেয়েটা অনেক সুন্দরী হয়ে গেছে। আর এখন তাকে ছাড়া আর চলছে না কিছুতেই। মেয়েটা হুট করেই আপনার প্রণয় রাজ্যের রানী হয়ে উঠেছে। ব্যাপারটা ভীষণ মজার।
ইভান বিশেষ ভঙ্গীতে ভ্রু উঁচিয়ে বলল
–ফিরিয়ে দিয়েছিলাম?
ঈশা শান্ত চোখে তাকাল। বলল
–ওটাকে গ্রহন করা বলে না।
ইভান হেসে উঠলো। ঠোঁটে হাসি রেখেই বলল
–৬ বছর আগে তোমার বয়স কত ছিল? ১৬ বছর তাই না?
বয়সের কথা বলতেই ঈশার অপমানবোধ বেড়ে গেলো। গম্ভীর হয়ে কঠিন ভাবে বলল
–বয়স যতই হোক। আমার অনুভূতি মিথ্যা ছিল না। আপনি সেটাকে অপমান করেছেন।
ইভান মাথাটা একটু এগিয়ে নিয়ে আসলো। অত্যন্ত ঠাণ্ডা সরে বলল
–১৬ বছর বয়সের অনুভূতি নিয়ে এতো সিরিয়াস তুমি? ৬ বছর ধরে মনের মাঝে আকাশসম অভিমান জমিয়ে রেখেছ? এখন বলছ অপমান করেছি? এতো ইগো তোমার?
–এটা ইগো নয়। ৬ বছর ধরে আমি আমার মনের মাঝে কষ্টটা পুষে রেখেছি। এই অপেক্ষার প্রহর কতোটা ভয়াবহ সেটা জানেন আপনি? কোন ধারনা আছে?
চেচিয়ে কথাটা বলেই থেমে গেলো ঈশা। কয়েক সেকেন্ডেই নিজের কণ্ঠস্বর স্বাভাবিক করে নিয়ে বলল
–ঐ বয়সে আমি একটা মেয়ে হয়েও নির্লজ্জের মতো নিজের অনুভূতি আপনার সামনে ব্যক্ত করেছিলাম। ভালোবাসি বলেছিলাম। কিন্তু আপনি কি করেছিলেন? খুব সহজভাবে বলেছিলেন এটা আবেগের বয়স। এখন এসব আবেগ মাথায় আসা খুব সাভাবিক। আগে বড় হও তারপর এসব নিয়ে ভাববে। এটাকে ভালবাসা বলে না। যখন ভালবাসা কে ঠিকভাবে বুঝতে পারবে তখন ভালবাসবে। এটা ঐ সময় আমার জন্য অপমান ছিল। খুব অপমান। এমন অপমান আমি যদি আপনাকে করতাম তাহলে কি করতেন?
ইভান হাসল। বলল
–এখন কি করছ? আমার তো আবেগের বয়স নয়। আমি যথেষ্ট ম্যাচিউর। এই বয়সে এসে নিশ্চয় ভালোবাসার সঙ্গা আমাকে শিখতে হবেনা।
ঈশা ভীষণ কঠিন গলায় বলল
–এটা আপনার প্রাপ্য।
ইভান শব্দ করে হেসে উঠলো। হাসি থামিয়ে বলল
–৬ বছর আগের কথা মনে রেখে নিজেকে এতটা কঠিন করে ফেলেছ? এই ৬ বছরের অপেক্ষাটা তোমাকে এতটা কষ্ট দিয়েছে? তাহলে আমার কথা কি বলবে? আমি ঠিক করে বয়সটাও বলতে পারব না। আবেগটাই শুরু হয়েছে তোমাকে ঘিরে। তোমাকে দেখে মনে হয়নি যে আমার অনুভূতিগুলো তোমার জন্য। বরং অনুভূতি তৈরিই হয়েছে তোমাকে ঘিরে। আমার জীবনে আগে তুমি এসেছ। তারপর অনুভূতি।
ঈশা গভীর দৃষ্টিতে তাকাল। ইভানের কথা বুঝতে আজ তার কষ্ট হচ্ছে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইভানের সাথে এতো বেশী কথা আগে কখনো তার হয়নি। ইফতির সাথে একই ক্লাসে পড়ার সুবাদে তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল ঈশার। ধিরে ধিরে দুজন খুব ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। কিন্তু এর মাঝেই কিশোরী বয়সের আবেগে বাধা পড়ে। ইভানের প্রতি তৈরি হয় গভীর আবেগ। ১৬ বছর বয়সের কিশোরী নিজের আবেগের তাড়নায় ছটফট করে ওঠে। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হিসেবে কঠোর শাসনে বেড়ে ওঠে। কিন্তু সেই সময় আবেগের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে পরিবারের ভয়ের তোয়াক্কা না করেই নিজে থেকেই ইভান কে মনের কথা জানায়। কিন্তু ইভান তখন সবটা শুনে সেটাকে নিছক আবেগ বলে আখ্যা দেয়। সেটাকে তার অনুভুতির অপমান আর ফিরিয়ে দেয়া ধরে নিয়েই ঈশা মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারপর থেকে শুরু হয় অনাকাঙ্ক্ষিত অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা থেকেই তৈরি হয় অভিমান। কারণ ইভান তাকে ফেলে চলে যায় নিজের পড়াশোনা শেষ করতে। মেডিকেল স্টুডেন্ট হিসেবে বাসায় আসা যাওয়াটা খুব কম ছিল তার। পড়ার চাপটা সামলে উঠতেই অন্যদিকে মন দিতে পারেনি সে। ঈশা ধরেই নিয়েছিল ইভান হয়তো অন্যকাউকে পছন্দ করে ফেলেছে এতদিনে। কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি। এতো বছর পর ইভান ফিরে এসেছে তার জীবনে। কিন্তু কিছু অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত নিয়ে। যা ঈশা স্বপ্নেও ভাবেনি। ইভান একটা হতাশ শ্বাস ছেড়ে বলে উঠলো
–ছোট্ট ঈশা আমাকে এমনভাবে দুর্বল করে দেয় যে আমি তার কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে বাধ্য হয়েছি। ঐ বয়সে অনুভুতির তীব্রতা এতটাই প্রখর ছিল যে আমি ছটফট করতাম একবার দেখার জন্য। তুমি যখন বাসায় আসতে আমি বাসায় থাকতাম না। তোমার যাওয়া আসার পথে আড়ালে দাড়িয়ে দেখতাম। একবার বৃষ্টিতে ভিজে আমার অনেক জ্বর হয়েছিলো। আমি সেই অবস্থাতেও দেখেছিলাম তোমার চোখে পানি। ভীষণ সস্তি পেয়েছিলাম। আর তখনই বুঝে গেছিলাম যে আমার অনুভূতি এক তরফা নয়। কিন্তু ঐ বয়সে এভাবে তোমার অনুভুতিকে প্রশ্রয় দিয়ে তোমাকে বিপদে ফেলতে চাইনি। তোমার বাবা বা ভাইয়া যদি কোনভাবে জানতে পারে তাহলে তোমার অনেক কষ্ট হবে। মানসিকভাবে তুমি অনেক কষ্ট পাবে। সেটা ভেবেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়ছিলাম। কিন্তু আমি কখনো ভাবিনি যে তুমি নিজে থেকেই আমাকে তোমার মনের কথা জানাবে। নিজের মাঝে তোমার জন্য এক বুক ভালবাসা নিয়ে তোমাকে ফিরিয়ে দিতে কতোটা কষ্ট হয়েছে সেটা একমাত্র আমিই জানি। তবুও বাধ্য হয়েছি। এর পরেই শুরু হয় তোমাকে পাওয়ার সংগ্রাম। তোমার ছোট মামা বাবার বন্ধু। বাবাকে আমি মোটামুটি বাধ্য করেছি তার সাথে কথা বলতে। কিন্তু তখন জানতে পারি তোমার বাবা এই বয়সে মেয়ের বিয়ের কথা ভাবছেন না। আর ভবিষ্যতে তিনি মেয়ের জন্য ডক্টর জামাই চান। তাই শুরু হয় নিজেকে একজন সফল ডক্টর বানানোর যুদ্ধ। তোমাকে পাওয়ার জন্য নিজেকে তোমার বাবার পছন্দের পাত্র হিসেবে তৈরি করে নিতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাকে। সেসব নিয়ে আফসোস নেই আমার। তাই তো আজ তোমার বাবার পছন্দের পাত্র হিসেবে তোমার সামনে বসে আছি। তোমার কাছে বিষয়টা খুব স্বাভাবিক মনে হলেও আমার জীবনের কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ আর কষ্টের সমন্বয়ে আমি এটা হাসিল করেছি। সেটা হয়তো তুমি এই জীবনে কখনই ধারনা করতে পারবে না।
ইভান থেমে গেলো। এতক্ষন গভীর মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছিল ঈশা। এতকিছু হয়ে গেছে অথচ সে কিছুই জানতে পারলো না। ইভানের জন্য এতো বছর নিজের মনে অযথাই অভিমান পুষে রেখেছিল। ইভান তার থেকেও বেশী কষ্ট পেয়েছে। ঈশা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। ইভানের দৃষ্টি ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া কফির কাপে স্থির। সেটাতে আঙ্গুল দিয়ে ছুঁয়ে দিয়ে সেদিকে তাকিয়েই মৃদু হেসে বলল
–যাক বাবার বাধ্য মেয়ের মতো তুমিও তার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে সেজে এসেছ। খুব ভালো লাগলো বিষয়টা। ইম্প্রেসিভ!
বলেই শব্দ করে হেসে উঠলো। ঈশা কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে এবার মুখ খুলল। কিছু একটা বলার চেষ্টা করতেই ইভান বেশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল
–তুমি কোন কথা বলবে না। আমি এখানে তোমার কথা শুনতে আসিনি। আমার কথা বলতে এসেছিলাম। আমার কথা শেষ। তার মানে সব কথা শেষ আপাতত।
ঈশা হতভম্ভ হয়ে গেলো। তার বুঝতে বাকি থাকলো না যে এভাবে সেজে বাবার পছন্দের পাত্রের সাথে দেখা করতে আসাটা ইভানের পছন্দ হয়নি। রাগ করেছে সে। কারণ সে তো জানত না যে সেই পাত্র ইভান নিজেই। ইভানের উপরে অভিমান করেই সে এতো সেজে এসেছিলো। কিন্তু বাবার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে নয়। না বলে দিত ঠিকই। কিন্তু ইভান কে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যেই এমনটা করতে চেয়েছিল। যাতে ইভান জানতে পেরে কষ্ট পায়। প্রতিশোধের নেশায় পাগল হয়ে উঠেছিল ঈশা। কিন্তু এখানে এসেই ইভান কে দেখে সে বিস্ময়ের চরম সীমায় পৌঁছে যায়। ধারনাতেও আসেনি যে ইভান তার জন্য অপেক্ষা করছে। সব কেমন এলোমেলো হয়ে যায়। ইভান যেহেতু সবটা জানত তাই তার মাঝে ঈশাকে নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি না হলেও এভাবে সেজে আসতে দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে তার। নিজের রাগটা সংবরন করেই ঈশার সামনে বসে পড়ে। ইভান বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল
–সন্ধ্যা হয়ে গেছে। একটু পরেই বেশ ঠাণ্ডা পড়বে। যত সেজেছ। ঠাণ্ডায় আবার জমে না যাও।
শেষের কথাটা বেশ তাচ্ছিল্যের সাথে বলল ইভান। ঈশার খারাপ লাগলেও এখন কিছু বলতে পারবে না। তাই হতাশ শ্বাস ছাড়ল। ইভান একটা শ্বাস ছেড়ে বলল
–বাসায় চলো। একাই যেতে পারবে নাকি রেখে আসতে হবে?
ঈশা অসহায় দৃষ্টিতে তাকাল। ইভান উঠে দাঁড়ালো। সাথে ঈশাও। ফেলে রাখা ঠাণ্ডা কফির বিলটা দিয়ে দুজন নেমে এলো নিচে। ইভান গাড়ির দরজা খুলে গম্ভীর আওয়াজে ঈশাকে বলল
–ওঠো।
ঈশা দেরি করলো না। কারণ এই একটা কথার জন্যই অপেক্ষা করছিলো সে। ইভান গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিলো। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা ঈশার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো। গাড়ি থেকে নামতে যাবে সেই সময় ইভান শান্ত কণ্ঠে ডাকল
–ঈশা?
ঈশা চট করে ঘুরে তাকাল। কৌতূহলী দৃষ্টি তার। ইভান বেশ শান্তভাবে বলল
–যার জন্য এতো সেজে গুঁজে গিয়েছিলে তাকে পছন্দ হয়েছে? বাবাকে গিয়ে কি বলবে?
ঈশা বুঝতে পারলো ইভান রাগ করে আছে এখনো। তাই কোন উত্তর দেয়ার সাহস করে উঠতে পারলো না। কি বলবে আর কি হবে সেটা ভেবেই চুপ করে গেলো। দৃষ্টি নত করে ফেললো। ইভান আড় চোখে একবার ঈশার দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরে নিলো। সামনে তাকিয়ে বলল
–সেটা তোমার ব্যপার। কিন্তু আমার একটা কাজ করবে? তোমার বাবাকে গিয়ে আমার হয়ে বলবে পাত্রের তোমাকে পছন্দ হয়নি।
ইভানের কথাটা সুচের মতো বিধল ঈশার বুকে। ভীষণ ভাবে আহত হল সে। অসহায়ের মতো তাকাল। ইভান সেই দৃষ্টি উপেক্ষা করে সামনে তাকিয়েই বলল
–নামো। আমার কাজ আছে।
চলবে……