আষাঢ়ে_মেঘ,পর্ব_৪(অন্তিম পর্ব)

#আষাঢ়ে_মেঘ,পর্ব_৪(অন্তিম পর্ব)
#নাজমুন_বৃষ্টি

তিশা এখনো বিয়ের পোশাকেই হাঁটুমুড়ে মাথা নিচু করে বসে আছে। রিধির ইচ্ছে ছিল তিশাকে খাবারের প্লেট দিয়েই রুম থেকে বেরিয়ে যাবে কিন্তু রুমে ঢুকতেই তার ভাবনা পরিবর্তন হয়ে গেল।
রিধি তিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে প্লেটটা ড্রেসিং টেবিলের কর্নারে রেখে তিশার পিঠের উপর আলতো ভাবে হাত রেখে আস্তে করে ডাক দিল,

-‘আপু?’

তিশা মাথা তুলে রিধির দিকে তাকাতেই রিধির হঠাৎ করে খারাপ লেগে উঠল। মেয়েটি কাঁদছে। প্রতিটা মেয়েরই বিয়ের রাত নিয়ে স্বপ্ন থাকে, হয়ত তিশারও ছিল! প্রতিটা মেয়েই এখন তার পাশে সদ্য বিয়ে করা স্বামীকে চাই কিন্তু গভীর রাত হওয়ার পরেও তিশার পাশে কেউ নেই।
রিধি রুমের আশেপাশে তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজে তিশার ব্যাগ থেকে একটা জামা তিশার দিকে এগিয়ে ফ্রেস হয়ে আসতে বলল। তিশা বিনা বাক্য ব্যয়ে জামা নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে গেল। রিধি তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। একটা সম্পর্কে তিনজন কষ্ট পাচ্ছে।

তিশা ওয়াশরুম থেকে বের হতেই রিধি জোর করে নিজের হাতে তিশাকে খাইয়ে দিয়ে চলে আসতে নিতেই তিশা পেছন দিক দিয়ে রিধিকে ডাকতে রিধি ফিরতেই তিশা এসে জড়িয়ে ধরল। তিশা জড়িয়ে ধরেই ডুকরে কেঁদে উঠল। রিধি কীভাবে সান্ত্বনা দিবে বুঝতে পারছে না। তার নিজেরও মন যে ভীষণ খারাপ! সে কোনোমতে তিশাকে শান্ত করে বিছানায় শুয়ে দিয়ে বের হয়ে গেল ওই ফ্ল্যাট থেকে।

গভীর রাতে সিহান রিহানকে জোর করে বাসায় নিয়ে আসলো। রিহানকে তার বাসায় ঢুকিয়ে দিয়ে সিহান নিজের বাসার উদ্দেশ্যে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল।

দরজা খোলার আওয়াজ পেয়েই তিশা তাড়াতাড়ি শোয়া থেকে উঠে বসতেই দেখল, অগোছালোভাবে রিহান রুমে ঢুকছে। তিশা বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই রিহান তিশার দিকে এক ফলক তাকিয়ে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে জোরে শব্দ করে দরজা লাগিয়ে ফেলল । তিশা মলিন চোখে ওয়াশরুমের দরজার দিকে তাকিয়ে রইল।
.
.
রিধির ঘুম আসছে না কিছুতেই। হঠাৎ রুমের বাইরে থেকে শব্দ হতেই বুঝতে পারলো তার ভাই সিহান ফিরেছে। তার মানে রিহান ভাইও এসেছে। হয়ত এখন রিহান আর তিশা আপু একটা রুমেই আছে। এটা ভাবতেই তার বুক ভারী হয়ে এলো। মনে হচ্ছে কেউ যেন তার বুকে বড়ো পাথর দিয়ে রেখেছে। এতো কষ্ট কেন হচ্ছে তার! এই রুম বরাবর নিচেরটাতে এখন রিহান ভাই আর তিশা আপু একসাথে আছে। কীভাবে সহ্য করবে রিধি! সে তো মানতে পারছে না এটা। মাঝখানে শুধুমাত্র এক রাতের মধ্যেই কতকিছু বদলে গেল!
.
.
রিহান ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখল তিশা রিহানের জন্য খাবারের প্লেট নিয়ে এসেছে। রিহান সেদিকে পাত্তা না দিয়ে শুয়ে পড়তে গেলেই তিশা বলে উঠল,

-‘এ কী! আপনি শুয়ে পড়ছেন যে? খাবেন না? অল্প একটু খেয়ে নিন, আমি গরম করে এনেছি।’

রিহান না শুয়েই তিশার দিকে রাগী দৃষ্টি নিঃক্ষেপ করে এগিয়ে এলো।
-‘ভুলেও আমার সাথে বউ বউ আচরণ করার চেষ্টা করবি না। ওয়ার্নিং দিলাম। এরপরে যদি আবারো এমন করিস তাহলে আমার চাইতে খারাপ আর কেউ হবে না। আর কিসের আপনি আপনি করছিস ? আমরা জাস্ট বন্ধুর মতোই ছিলাম, আছি আর থাকবো। বিয়ের আগে যেভাবে ‘তুই’ করে বলতি? এখনই সেভাবেই বলবি। আমাদের সম্পর্ক কোনোদিনও বদলাবে না। এবার বাকিটা তোর ইচ্ছে। আমি তো বিয়ের আগের দিনই বলে দিয়েছি – এই বিয়েতে আমি রাজি নই আর তোকে কোনোদিনও বউ হিসেবে মেনে নিবো না। তুই তবুও রাজি হয়েছিস। এভাবেই থাকবি। এসব ন্যাকামো করে আমার কাছ থেকে ভালোবাসা নয় উল্টো খারাপ আচরণ পাবি। দরকার হলে ডিভোর্স দিয়ে চলে যা। আজকের এই সব কথা মাথায় রাখবি।’ বলেই হনহন করে রেগে রুম থেকে বেরিয়ে গেল রিহান।

তিশা রিহানের যাওয়ার দিকে মলিন চোখে তাকিয়ে রইল। রিহান অন্য কাওকে ভালোবাসে সেটা তিশাও জানতো আর তিশাও তো রিহানকে শুধুমাত্র বন্ধু হিসেবেই ভেবে আসছিলো। আদনান যে তিশাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। তিশা আদনানকে সব খুলে বলেছিল। আদনানের কথা রিহানও জানে। তিশা তো চেয়েছিল বিয়েটা আটকাতে কিন্তু মায়ের এমন অসুস্থতার মধ্যে হিতে বিপরীত হবে ভেবে আর বলতে পারলো না। সে বুঝতে পেরেছিল, এই বিয়ের ফলে হয়ত তাদের মধ্যে থাকা বন্ধুত্বের সম্পর্কটাতেও ফাটল ধরবে। হয়েছেও তেমন। তিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্লেটটা রুমের বাইরে রেখে এসে শুয়ে পড়লো।
.

রিহান ছাদে উঠে সব দুঃখটুকু ধোয়াতে উড়াচ্ছে। শুধুমাত্র দুইটা মানুষের ওয়াদাবদ্ধের কারণে চারটা মানুষ একসাথে কষ্ট পাচ্ছে। তিশা- আদনান এঁকে অপরকে ভীষণভাবে ভালোবাসে। তারা কী আলাদা থাকতে পারবে! আর রিহান তো তিশাকে কোনোদিনও ভালোবাসবে না। রিহানের উচিত দুইটা ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া।

———

রিহিলা ডাইরির পাতা উল্টিয়ে দেখলো আর বাকি সব পাতা খালি। সে পাগলের মতো হন্য হয়ে ডাইরি উল্টাতে লাগলো কিন্তু হতাশ হলো। সে সবসময় দেখতো তার মা এই ডাইরিটা পড়তো আর কেউ তখন সেই রুমে গেলেই ডাইরিটা লুকিয়ে ফেলতো।তারও ইচ্ছে হলো এই ডাইরিটা পড়ার। কী এমন আছে এই ডাইরিতে! বাসায় মেহমান উপলক্ষে তার মা এখন রুমে কম থাকে যার কারণে রিহিলার ডাইরিটা পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। সে দুহাত দিয়ে মাথা চেপে রইল। এরপর কী হয়েছে তা জানার জন্য সে উদগ্রীব হয়ে আছে। কাল থেকে সে তার বিয়ে উপলক্ষে অনেক উৎফুল্ল ছিল কিন্তু এখন এসব কিছুই নেই। তার এখন একমাত্র কাজ হচ্ছে এরপরের ঘটনা জানা। রুমের দরজা ধাক্কানোর শব্দে রিহিলার হুশ ফিরলো। সে দ্রুত গিয়ে দরজা খুলতেই তার মা ঢুকল,
-‘কী রে! আজ তোর গায়ে হলুদ আর তুই সেই সকাল থেকে দরজা বন্ধ করে আছিস? কী হয়েছে তোর? এই বিয়েতে কী তুই রাজি না? তোর মত না থাকলে বল, আমি এখনই ভেঙে দিতে রাজি। মেয়ের মত ছাড়া আমি কিচ্ছুতে বিয়ে হতে দিবো না।’

রিহিলা এক দৃষ্টিতে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে রইল। হয়ত বা তার মায়ের বিশবছর আগের কথাগুলো মনে পড়ে গিয়েছে। রিহিলার আর কিচ্ছু বুঝতে বাকি রইল না। কিন্তু এসব ভাবতে গেলেই তার বাবার কথা মনে পড়ছে। আচ্ছা, তার বাবা কই? মা’কে জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যেত, শুধু বলতো উনি মারা গিয়েছে কিন্তু কী হয়েছিল এরপর!

-‘না, মা। আমার কিছু হয়নি। আমি আহিবের সাথে বিয়েতে পুরোপুরি রাজি আছি, মা।’

রিহিলার কথা শুনে তার মা মুচকি হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে উঠল,’ কিছুক্ষন পর পার্লার থেকে মানুষ আসবে তোকে তৈরী করাতে। তুই এখন একটু বস, আমি খাবার নিয়ে আসছি। দুপুর থেকে তো তেমন কিছুই খেলি না?’ বলেই চলে যেতে নিলে রিহিলা তার মায়ের হাত ধরে ফেললে রিধি মেয়ের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই রিহিলা বলে উঠল,

-‘আজ তোমাকে সব বলতে হবে মা। নাহলে আমি কিছুই খাবো না। এতদিনেও কী তোমাদের কথা আমি জানতে পারবো না?’

রিধি মুচকি হেসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠল,’সব বলবো, আমি খাবার নিয়ে আসি।’ বলেই বেরিয়ে গেল।

কিছুসময় পর রিধি এক প্লেট খাবার নিয়ে এসে রিহিলার পাশে বসতেই রিহিলা এগিয়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতেই রিধি বলে উঠল,’আগে কথা দেয়? সব শোনার পরেও তুই এই মাকে এখনের মতোই মা হিসেবে ভাববি?’

-‘ছোটকাল থেকেই দেখে আসছি। তুমি সবসময় আমাকে আগলে রাখতে। তখন থেকেই তোমাকে আমি আমার পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা হিসেবে ভেবে আসছি। সব শোনার পরেও তুমিই আমার প্রাণ।’

রিধি চলে গেল সেই বিশবছর আগের অতীতে।

-‘তুই আমার মেয়ে নস রিহু। তুই তিশা আদনানের মেয়ে।’

রিহিলা তার মায়ের কথা শুনে চমকে উঠল। সে কিছু বলে উঠতে নিতেই রিধি আবারো বলে উঠল,

‘রিহান-তিশা’র বিয়ের কয়েকদিন পরেই তিশার মা মারা যায়। এসময় তিশা অনেক ভেঙে পড়ে কিন্তু রিহান তখন কিছুই করতে পারছিল না। একদিন রিহানের সাথে আদনানের দেখা হয়। কথা বলে বুঝতে পেরেছিল আদনান তখনও তিশাকে ভুলতে পারেনি। রিহান বুঝতে পেরেছিল, এসময় তিশার পাশে একমাত্র ভরসার স্থান হিসেবে আদনানের প্রয়োজন। এরপর একদিন রিহান তিশা-আদনানকে মিলিত করে। রিহান বুঝতে পারে তিশা-আদনান দুইজনেই তখনও একে অপরকে ভালোবাসে। রিহান তার বাবা মকবুল শেখকে সবকিছু খুলে বলে। এরপর রিহানের সাথে তিশার ডিভোর্স কার্যকর করে তিশা-আদনানের বিয়ে হয়। তিশা-আদনান সুখেই চলছিল। সেসময় রিধির মেডিকেল পড়ার ক্ষতি হবে ভেবে রিহান সেই বছর রিধির সাথে বিয়ের কথা তুলেনি কিন্তু সবাইকে রাজি করে রেখেছিল। তিশা-আদনানের বিয়ের এক বছরের মধ্যেই একটা ঝড় এসে তিশাদের সংসার জীবন পুরোপুরি শেষ করে দিল। তিশার ডেলিভারি করানোর জন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যাওয়ার সময়ই ওদের গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়। আদনান সাথে সাথে মারা গিয়েছিল। তিশাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল। তিশা রিহিলাকে সুস্থভাবে জন্ম দিয়েই প্ৰিয়জনের মৃত্যুসংবাদ মেনে নিতে না পেরে স্টোক করে। এক মুহূর্তের মধ্যে তাদের সুখের জীবনটা শেষ হয়ে যায়। এরপর রিহান রিহিলাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। রিহান-রিধি একসাথেই দেখতো রিহিলাকে। রিধি হোস্টেল থেকে রিহিলার জন্য চলে এসেছিলো। রিহিলার পাঁচমাসের সময় রিহান-রিধির বিয়ের তারিখ পড়েছিল। বিয়ের আগে বিজনেসের কাজে রিহানের না চাইতেও ঢাকার বাইরে যেতে হয়েছিল। সেদিন রিহান-রিধির মেহেদির আগের রাত ছিল। সম্পূর্ণ বাড়ি লাল-নীল বাতিতে জ্বলজ্বল করছিল। রিধিও ভীষণ খুশি, এতো অপেক্ষার পর নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে পেতে চলেছে। রিহান কল দিয়ে জানিয়েছিল, সে গাড়িতে উঠেছে। সবাই ভীষণ খুশি কিন্তু কে জানতো এই খুশি কিছুসময়ের ব্যবধানে একেবারের জন্য মিলিয়ে যাবে! রিহান-রিধির জীবনে সুখ যেন ধরা দিচ্ছে কিন্তু নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! মাঝরাতে রিহানের এক্সিডেন্টের খবর এসেছিলো। এক মুহূর্তের মধ্যে সব কিছু শেষ হয়ে গিয়েছে রিধির। সেই রাতেই রিহান মারা গিয়েছিল। এরপর থেকে রিধি একদম চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল। সারাদিন রিহিলাকে নিয়েই চুপচাপ শুয়ে থাকতো। সিদ্ধান্ত নেয়, রিহিলাকে নিয়ে রিধির বাকি জীবন কাটিয়ে দিবে। রিহিলার মধ্যেই যে রিধি রিহান-ভাইয়ের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। মা-বাবা’রা রিধিকে অনেক জায়গায় বিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু রিধি করেনি। তারা রিধির উপর রেগেও ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মেয়ের দিকে তাকিয়ে তাদের রাগ পড়ে গিয়েছিল। রিধি যে পারবে না, তার রিহান ভাইকে ভুলতে।এখনো আশেপাশে সে তার রিহান ভাইকে অনুভব করে।
.
.
রিহিলা তার মায়ের কথা শুনে একটা ঘোরের মাঝেই চলে গিয়েছিল। তার মায়ের মনে এত্ত কষ্ট! অথচ তার ঠোঁটে সবসময় মিথ্যে হাসি ঝুলে থাকে। একটা মানুষ আরেকজনকে কতটা ভালোবাসলে তার বাকি জীবন ওই মানুষটাকে উৎসর্গ করে একলা কাটিয়ে দিতে পারে তা রিহিলা ভাবতে পারছে না। সে যদি পারতো তার রিহান বাবাকে এখনই এই মায়ের কাছে এনে দিতো।

ততক্ষনে পার্লারের মানুষ এসে যাওয়াতে রিধি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিহিলার কপালে চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

——-

দেখতে দেখতে রিহিলারও বিয়ে হয়ে গেল। মেয়েটা যাওয়ার আগে মা’কে ছাড়তেই চাইছিল না।
রিধি তার রুমের খোলা ব্যালকনিটাতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। এই ব্যালকনিটাতে যতবারই আসে ততবারই রিধির রিহানভাইয়ের কথা মনে পড়ে। সিহান ভাই ঢাকাতে নিজের বাসাতে রিধিকে সাথে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু রিধি যায়নি। এখন মকবুল শেখ রিহানের বাবা আর রিধির মা-বাবা একসাথেই এই বাসাতে থাকে। এই ব্যালকনিতে চোখ বন্ধ করে দাঁড়ালেই রিধির মনে হয় তার রিহান ভাই তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আজ চাঁদ আছে কিন্তু মেঘে কিছুসময় পর পর এসে চাঁদটাকে আড়ালে ঢেকে দিচ্ছে যার ফলে রিহিলার বিয়ে উপলক্ষে দেওয়া লাল-নীল বাতিগুলো জ্বলজ্বল করে রাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দিচ্ছে। সেদিন রাতেও এমন ছিল রাতটা। যেদিন রিহান রিধির সাথে চন্দ্রবিলাস করেছিল।
রিধি এক ফলক ঢেকে যাওয়া চাঁদটার দিকে তাকালো। এরপর আপনমনেই বিড়বিড় করে উঠল,’আমার দায়িত্ব আমি শেষ করে ফেলেছি রিহান ভাই। দেখতে দেখতে আপনি আপনার রিধুকে ছেড়ে চলে যাওয়ার আজ বিশবছর পেরিয়ে গেল। আজ আপনার বিশতম মৃত্যুবার্ষিকীতে রিহিলাকে তারই ভালোবাসার মানুষটার হাতে তুলে দিলাম। রিহিলাও আজ আমার কাছ থেকে বিদায় নিল। আমি কথা দিয়ে কথা রেখেছি অথচ আপনি পারলেন না। সেদিন বিয়ের আগে আমাকে কথা দিয়ে কথা না রেখে হারিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু আমি হারায়নি রিহান ভাই। আমি কথা রেখেছি, আপনি আপনার কথা রাখতে পারেননি। আপনি বড্ড স্বার্থপর রিহান ভাই। বড্ড স্বার্থপর।’

#সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here