#শুধু_তুমি_চাও_যদি 🥀
#পর্ব – ০৫
#লেখনীতে – Aloñe Asha [ছদ্ম নাম]
#Kazi_Meherin_Nesa
আদিত্য — পরশু যেতে হবে..! কালকে ব্যাগপ্যাক করলেই হবে
দিয়া — কালকে কেনো? আমি আজকেই করে নেবো এমনিতেও আমি তো ফ্রি বসে আছি..একটু কাজ করি
দিয়া টিভি বন্ধ করে ওঠে, ও যে খুব খুশি হয়েছে সেটা বুঝতে বাকি নেই আদির তবে মেয়েটাকে আনন্দিত দেখে ভালো লাগছে ওর..দিয়া আলমারির কাছে গিয়েও আবার কি একটা ভেবে আদির কাছে এসে দাড়িয়ে প্রশ্ন করে..
দিয়া — ১ মিনিট…! একটু আগে তুমি আমাকে “তুমি” বললে তাইনা?
আদি কিছুটা থতমত খেয়ে যায়, কারণ ও নিজেই খেয়াল করেনি কখন দিয়াকে তুমি করে বললো?আদি ভ্রু কুঁচকে বলে..
আদিত্য — কই নাতো..!! তুই ভুল শুনেছিস মনে হয়
দিয়া — মোটেই না..! এতটা ভুল শুনবো নাকি? দু – দুবার তুমি বলেছো..!! আজকে তোমার কি হয়েছে বলোতো?
আদিত্য — আমার কিছু হয়নি.. হতে পারে “তুমি” টা মুখ স্লিপ করে বেরিয়ে গেছে, এইটুকু ব্যাপার নিয়ে এতো খুশি হবার কি আছে বুঝলাম না
দিয়া — ও তুমি বুঝবে না, আমার কাছে এই ছোটো বিষয়গুলোই অনেক.. যাই হোক আমি ব্যাগ গুছিয়ে ফেলছি তুমি দেখিয়ে দাও কি কি নেবো কেমন?
এরপর দিয়া আরো অনেক কথা বলতে বলতেই ব্যাগ গুছাতে শুরু করে, চোখেমুখে ওর এক রাশ আনন্দ ভেসে উঠছে, মুখের হাসি যেনো সরছেই না.. আর আদি নিরব দর্শকের মতো দিয়াকে দেখে যাচ্ছে, একটা মানুষ যে এত অল্পতেই এতো খুশি হতে পারে সেটা হয়তো দিয়াকে না দেখলে জানতেই পারতো না আদি..দিয়ার অগোচরেই ওকে দেখে মুচকি হাসে আদি, সত্যিই মেয়েটা হয়তো একটু আলাদা সবার থেকে..কিছুক্ষণের মধ্যেই দিয়ার ব্যাগ গোছানো শেষ হয়ে যায়, মাত্র ২ দিনের ব্যাপার তাই ব্যাগ গোছাতে খুব একটা ঝক্কি পোহাতে হয়নি..আদির আপাতত কোনো কাজ নেই, ও উঠে ল্যাপটপটা টেবিলের ওপর রাখতেই দিয়া বলে ওঠে..
দিয়া — আচ্ছা তোমার কী আর কোনো দরকারি কাজ বাকি আছে এখন?
আদি ঘুরে তাকায় দিয়ার দিকে…
আদিত্য — না তো, কেনো জিজ্ঞেস করছিস?
দিয়া প্রথমে বলতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছিলো যদি আদি রাগ করে তাই, পরে সাহস করে বলেই ফেললো যে…
দিয়া — যদি রাত না করো তাহলে একটা কথা বলবো?
আদিত্য — আমি রাগ করবো কি করবো না সেটা তো তোর কথা শোনার পর ডিসাইড করবো, কি বলবি বলে ফেল
দিয়া — না মানে, আমি বলছিলাম চলো না আমরা দুজনে একটু বাইরে ঘুরে আসি..বাইরে যেতে খুব ইচ্ছে করছে তাই..
আদি ভ্রু কুঁচকে ঘড়ির দিকে তাকায়, ঘড়ির কাঁটা তখন প্রায় দশটার কাছাকাছি গেছে..আর এখন দিয়ার এই আবদার ওর কাছে কিছুটা আজব লাগলো…
আদিত্য — এখন..? রাত ৯.৫০ বাজে দিয়া, তার ওপর বাইরে কতটা ঠান্ডা সেই আইডিয়া আছে? ঠান্ডা লেগে কি হবে?..এখন যাওয়ার দরকার নেই
দিয়া — আরে এর জন্যেই তো মজা হবে, তুমি জানো এই ঠান্ডা ঠান্ডা রাতে পাড়ার মোড়ে টং এ বসে গরম চা খাওয়ার মজাই আলাদা..তুমি কোনোদিন খাওনি তাইনা? (হেসে)
আদিত্য — খাবো না কেনো? কলেজ লাইফে বন্ধুদের সাথে কতই তো খেলাম, কিন্তু এখন এত ঠান্ডার মধ্যে বাইরে যাওয়ার কোনো মানেই দেখছি না আমি
দিয়া — আদিত্য প্লিজ প্লিজ..! শুধু ১০ -১৫ মিনিটের জন্যে চলো, যদি চা না খাও তাহলে একটু হেটেই না হয় চলে আসবো
আদিত্য — দিয়া জেদ করিস না, তোর চা খাওয়ার ইচ্ছে হলে বাড়িতে চায়ের সব উপকরণ তো আছেই, গিয়ে বানিয়ে খা..বাইরে যেতে হবে না
আদি কথাটা বলে বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়, দিয়া এবার কিছুটা অভিমানী স্বরেই বলে ওঠে..
দিয়া — তোমার কাছে এইটুকু একটা আবদার করছি সেটাও না রাখতে এতো বাহানা? নাকি আমার কোনো কথার দামই নেই তোমার কাছে?
কথাটা আদির কানে পৌঁছাতেই আদি চোখ গরম করে ঘুরে তাকায় দিয়ার দিকে, মেয়েটা গাল ফুলিয়ে বাচ্চাদের মতো তাকিয়ে আছে আদির দিকে..
আদিত্য — ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছিস?
দিয়া — চলো না প্লিজ..!!
দিয়া এমনভাবে তাকালো যে আদি না করতে পারছে না, প্রথমবার আজ হয়তো দিয়ার দিকে ভালোভাবে দেখলো ও নাহলে তো সবসময় রাগারাগি করতেই থাকে..আজকে আদি নিজেও জানেনা কেনো ওর সাথে এমন হচ্ছে? দিয়ার কথা তো শুনতেই পারতো না ও কিন্তু আজ ওর কথা ফেলতে পারছে না..রাতারাতি এই বদলের কারণ কি? এরই মাঝে একবার ওর মনের মধ্যে একটা কথা উকি দিলো, আচ্ছা এটা ধ্রুবের কথার সাইড এফেক্ট না তো? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে ক্লান্ত আদি..কি একটা ভেবে শান্ত কণ্ঠে ও বললো..
আদিত্য — চল..!
দিয়া আহ্লাদে আটখানা হয়ে বলে..
দিয়া — কিহ..!! যাবে? সত্যি সত্যি তো..?
আদিত্য — নাহ! মিথ্যে মিথ্যে যাবো..!!
আদির কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠে দিয়া, ওর কাছে আদির আচরণগুলো একদম নতুন লাগছে, তবে হ্যা নতুন হলেও ভালো লাগছে..সবসময় তো আদিকে এইভাবেই চেয়েছিল ও..একটু বাদে দিয়া নিচে এসেছে, সদর দরজার দিকে যাচ্ছিল তখনই আদির মা ওকে ডাকে..আসলে উনি এসেছিলেন ডাইনিং রুমে পানি নিতে যাওয়ার সময় দিয়াকে দেখতে পান..
শেফা — কীরে দিয়া, এই সময় তুই কোথায় যাচ্ছিস?
দিয়া — একটু বাইরে যাচ্ছি, এই বাড়ির আশেপাশেই থাকবো..একটু বাদেই চলে আসবো (হেসে)
শেফা — সে ঠিক আছে, কিন্তু তুই একা..
তখন সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে আদি বলে ওঠে..
আদিত্য — আমি যাচ্ছি ওর সাথে..
ছেলের কথা শুনে আদির মা অবাক হয়ে যান, অবশ্য হবারই কথা..যেখানে তার ছেলে দিয়ার সাথে ভালোভাবে কথা অব্দি বলেনা সেখানে আজকে দিয়ার সাথে বাইরে যাচ্ছে অবাক তো হবারই কথা তাইনা? আদি নেমে এসে দাড়ায় দিয়ার পাশে..
শেফা — আদি..? তুই ওর সাথে যাচ্ছিস?
আদিত্য — হ্যা মা, আমাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে নিজের সাথে নিয়ে যাচ্ছে..
শেফা — আহা এভাবে কেনো বলছিস? মেয়েটার একটু ইচ্ছে হয়েছে তাই তো বলেছে নাকি?
দিয়া — সেটাই তো আর মাঝে মাঝে একটু এরকম করতে হয় নাহলে তুমি যেতে রাজি হতে নাকি? তাছাড়া এরকম সুযোগ সবসময় তো আসেনা যে তুমি এত সহজে রাজি হচ্ছ যেতে
আদিত্য — হ্যা যাচ্ছি ঠিকই তবে জাস্ট ফর ফিফটিন মিনিট..! এর বেশি একটুও না
দিয়া — আমার তাতেই চলবে (হেসে)
আদির মা অনেক খুশি হন..উনি তো এটাই চাইছিলেন যে আস্তে আস্তে দুজনের সম্পর্কটা ঠিক হোক, দুজনে একে অপরকে বুঝুক..
.
.
পাড়ার মোড়ের একটা টং এ বসেছে আদি আর দিয়া..দিয়া নিজের পছন্দের মালাই চা খাচ্ছে আর আদি নরমাল আদা – রং চা..এখন অব্দি দুজনের মধ্যে কোনো কথা হয়নি..একটু বাদে আদি জিজ্ঞাসা করে..
আদিত্য — আমি কোন কথার মাঝে তোকে “তুমি” বলে ফেলেছিলাম আমার নিজেরই মনে নেই কিন্তু এত্তো ছোট্ট একটা বিষয় তুই নোটিস করলি কিভাবে?
দিয়া — শুধু এটা কেনো, তোমার বলা প্রত্যেকটা কথা আমি খুব ভালোভাবেই নোটিস করি বুঝলে! তুমি হয়তো কোনোদিন খেয়াল করনি, তুমি যখন কিছু বলো আমি তোমার প্রত্যেকটা কথা খুব মন দিয়ে শুনি
আদির কাছে ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো আবার ভালোও লাগলো, এত ছোটো ছোটো জিনিস ও দিয়া খেয়াল রাখে..?
দিয়া — আচ্ছা, সবসময় তো রং চা খাও, আজকে একটু মালাই চা খেলে কি হতো? এত্তো হেলথ কন্সিয়াস হলে সবসময় চলে নাকি?
আদিত্য — সবসময় সবদিক ভেবে কাজ করা উচিত, এটাই স্বাস্হ্যের জন্যে ভালো আর আমারও এটাই ভালো লাগে..!
দিয়া আর কিছু বললো না, আদির ভালো লাগা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ওর..একটু বাদে আদি শান্ত গলায় বলে ওঠে..
আদিত্য — আমি যাবো না বলে তুই ওই বাড়িতে যাবি না বলে দিলি কেনো দিয়া? আমি তো তোকে বলেছিলাম মাকে নিয়ে যেতে
দিয়া কিছুটা চমকে যায়..
দিয়া — তুমি আমাদের কথা শুনছিলে?
আদিত্য — হুম শুনেছি, দেখ দিয়া তোকে আজকে একটা কথা বলি..আমার জন্যে তোর কোনকিছুতে থেমে যাওয়ার বা পিছিয়ে আসার দরকার নেই, তোর জীবনটা তুই তোর মত করে লিড করবি..তুই না করে দিলি আমার জন্যে এতে আঙ্কেল আন্টির খারাপ লাগবে তো..ওনারা কি ভাববেন যে আমি তোকে যেতে দেইনি
দিয়া — মোটেই না, তারা এমন ভাববেন না তবে হ্যা, আমি জানি মা বাবার একটু খারাপ লাগবে তবে মা কিন্তু এটা শুনে খুশি হয়েছে যে আমি তোমাকে ছাড়া যেতে চাইছি না..!
আদিত্য — সেটা কেনো? (ভ্রু কুচকে)
দিয়া ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে..
দিয়া — জানো আমি না আগে একদম অন্যরকম ছিলাম, যেটা চাইতাম সেটা সঙ্গে সঙ্গে না পেলে সবকিছু মাথায় তুলে ফেলতাম বলতে পারো একটু উশৃঙ্খল ছিলাম, আমার মধ্য ধৈর্য এর অভাব ছিলো..কিন্তু তোমার সাথে বিয়ের পর অনেককিছু শিখেছি আমি.. ধৈর্য্য ধরে কিভাবে একটা জিনিসের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়, কিভাবে নিজের থেকে অন্যের খুশির কথা বেশি ভাবতে হয় সেসব শিখেছি..সত্যি বলতে তোমার মন পাওয়ার চেষ্টা করছি, এখনও সফল হইনি তবে হাল ছাড়িনি..নিজের থেকে বেশি তোমাকে প্রায়োরিটি দিতে শিখেছি আর আমার মা এখন আমার মধ্যে এইসব পরিবর্তন দেখে অনেক খুশি হয়েছেন..তুমি ওসব নিয়ে ভেবো না
আদি চুপচাপ দিয়ার কথাগুলো শুনলো আর শুনে বুঝেছে যে দিয়া শুধু ওর জন্যে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছে, অনেকটা বদলেও ফেলেছে কিন্তু এইসব তো আদি চায় না..
আদিত্য — নিজেকে বদলানোর দরকার নেই তোর দিয়া, তুই আগে যেভাবে ছিলি সেভাবেই আবার থাকতে শুরু কর..
দিয়া — সে তুমি যতোই বলো কিন্তু আমি চাইলেও সেই বিয়ের আগের লাইফ লিড করতে পারবো না..ব্যাপারটা তোমার কাছে অস্বাভাবিক লাগতে পারে কিন্তু সত্যি এটাই যে বিয়ের পর মেয়েদের জীবনটা না অনেক বদলে যায়, হাসবেন্ড, শ্বশুরবাড়ি এইসবের বাইরে কোনো ভাবনাই আসেনা..আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে..! আর এমনিতেও আমি চাইনা আগের মত করে জীবন কাটাতে, এখনি তো দিব্যি ভালো আছি
আদিত্য — তো তুই বলতে চাইছিস বিয়ের পর তুই বেশি ভালো আছিস?
দিয়া — অফ কোর্স, বিয়ের পরের লাইফটা ভালো এনজয় করছি, একটা অ্যাডভেঞ্চেরিয়াস ব্যাপার আছে এর মধ্যে.. এগুলো মেয়েরা বুঝবে কিন্তু তুমি তো ছেলে, তুমি এসব বুঝতে পারবে না
কথাগুলো বলেই আদির দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দেয় দিয়া..দিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আদি আজ যেনো অনুভব করলো এই দেড় মাস ও যা যা করে আসছিল, মেয়েটার সম্পর্কে যা ভেবেছিল সব ভুল.. এই দেড় মাসের সব ভুলে আজই প্রথম যেনো ও দিয়াকে একটু বুঝলো, একটু জানতে সক্ষম হলো মেয়েটা আসলে ঠিক কেমন..
.
.
আদির বেধে দেওয়া ১৫ মিনিট সময় ফুরিয়েছে, এবার তো বাড়ি ফিরতে হবে.. দিয়াও আর জেদ করে বলেনি যে “আরেকটু থাকি”, কারণ আদি যেটুকু সময় দিয়েছে সেটাই ওর জন্যে অনেক..রাস্তা এখন প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে, মাঝে মাঝে জন কয়েক মানুষ হাঁটছে, ২-১ টা বাইক যাচ্ছে…রাস্তার এক সাইড দিয়ে পাশাপাশি হাঁটছে দিয়া আর আদি..দিয়ার মনটা আজ ফুরফুরে হয়ে আছে..হাঁটার এক পর্যায়ে আদি দেখলো দিয়ার হুডির টুপি নামানো, দাড়িয়ে যায় ও..
আদিত্য — ১ মিনিট দাড়া..
দিয়া — কি হলো..
আদিত্য — এই ঠান্ডার মধ্যে এটা নামিয়ে রেখেছিস কেনো? এই কুয়াশায় ঠান্ডা লাগতে একটুও সময় লাগবে না আর এখন ঠান্ডা লাগলে সহজে যাবেনা
আদি হুডির টুপিটা মাথায় তুলে ভালোভাবে কানসহ ঢেকে দেয়..তারপর আবার হাটতে শুরু করে..
দিয়া — থ্যাংক ইউ..! (মুচকি হেসে)
আদিত্য — আমি থ্যাংক বলার মতো কিছু করিনি..!
দিয়া — আমার প্রতি কেয়ার দেখাচ্ছ, আমার কথামত আজকে বাইরেও এলে তার জন্যে থ্যাংক বলছি..আজকে আমি অনেক খুশি
আদি কিছু বললো না আর না দিয়ার দিকে তাকালো, সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটছে আর দিয়া হাঁটতে হাঁটতে আদির দিকে দেখছে..মনে মনে অনেককিছু চিন্তা করছে আদি, আজকে প্রথমবার ও দিয়ার সাথে ভালোভাবে কথা বললো আর আজকেই প্রথম অনুভব করলো মেয়েটাকে ওর জানা প্রয়োজন সাথে এটাও বুঝলো দিয়াকে ওকে জানতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত, মেয়েটা ভীষণ সিম্পল আর ওর সাথে রাফ বিহেভ করার কোনো মানেই হয় না..তখনই দিয়ার পাশ দিয়ে একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে যাচ্ছিলো, দিয়া ভয় পেয়ে আদির হাত চেপে ধরতেই আদির ভাবনায় ছেদ ঘটে..ভ্রু কুচকে তাকায় ও দিয়ার দিকে..
আদিত্য — কি হলো..!!
দিয়া — কুকুর..!!
দিয়ার সামনে দিয়ে এসে কুকুরটা পেছনে চলে গেলো তো দিয়া ঘাড় পেছনে ঘুরিয়ে দেখছিল যে কুকুরটা গেছে কিনা..
আদিত্য — সামান্য একটা কুকুর দেখে এতো ভয় পাওয়ার কি আছে? তোকে কামড়ে দেবে নাকি?
দিয়া — ভয় পাওয়ার অনেক বড় কারন আছে বুঝলে..!!
আদিত্য — আচ্ছা? কি কারণ শুনি..!
দিয়া — ছোটবেলায় একবার স্কুল থেকে ফেরার পথে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে কুকুরের দিকে ঢিল ছুড়ে দিয়েছিলাম, তারপর কুকুরটা আমাকে অনেক দূর অব্দি তাড়া করেছিলো..কতো ভয় পেয়েছিলাম জানো? ব্যস তারপর থেকে কুকুর দেখলেই দশ হাত দুর দুর দিয়ে থাকি
বেচারি দিয়া নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া এক মারাত্মক ঘটনার কথা বললো আর সেটা শুনে আদি হেসে দেয়..দিয়া মুখ গোমড়া করে ফেলে ওকে হাসতে দেখে..
আদিত্য — সিরীয়াসলি? তুই কুকুরের দৌড়ানি খেয়েছিস? তুই তো উল্টে কুকুরকে দৌড়ানি দিবি
দিয়া — খুব মজা লাগছে তোমার তাইনা? আমার জায়গায় তুমি থাকলে বুঝতে, কুকুরের ভয় কি জিনিষ..সাধে তো আর ভয় পাচ্ছি না
ভয়ে আদির হাত ধরে ফেলেছিল, সেটা বুঝতে পেরেই হাত সরিয়ে নেয় দিয়া..
দিয়া — চলো যাই..!
দিয়া এক পা এগোতেই ওকে অবাক করে দিয়ে আদি আবার ওর হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে..
আদিত্য — এবার রাস্তায় কুকুর কেনো, বাঘ ভাল্লুক দেখলেও যেনো আর ভয় পেতে না দেখি
দিয়া হাঁটছে আর ড্যাবড্যাব করে আদির দিকে তাকিয়ে দেখছে, ছেলেটা এতো কিউটলি কেয়ার করতে পারে সেটা এতদিন বুঝতেই পারেনি, আদি তো বোঝার সুযোগই দেয়নি..তবে আজ সুযোগ দিয়েছে, এত্তো এত্তো কেয়ার করছে..আদির প্রতি যে অনুভূতি আছে সেটা যেনো হুট করে আরো একটু বেড়ে গেলো..মনে মনে নিজেই নিজেকে বলে উঠলো, “লোকটা তো খুব কেয়ারিং, সবসময় এরকম থাকলে কিন্তু মন্দ হয় না”
চলবে…
[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন..!!]