বিষাক্ত ছোঁয়া🍁,পর্ব:০৬ (শেষ)
মাহিয়া মেরিন
শারমিন বেগম লুকিয়ে আশরাফ সাহেবের ফোনে বলা কথাগুলো শুনে ফেললেন।। তিনি যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না,,,আশরাফ সাহেব একজন বাবা হয়ে কিভাবে নিজের মেয়েকে জ্বীনের কাছে বিক্রি করে দিলেন??? যেখানে সৎ মা হওয়ার পরেও সে কখনো জাইমাকে অন্যের মেয়ে ভেবে দেখেনি।। সেখানে উনি কিভাবে এমন কাজ করলেন??
আশরাফ সাহেবের ফোনে কথা শেষ হওয়ার পর শারমিন বেগম নিজেকে সামলে নিয়ে এমনভাবে রুমে প্রবেশ করলেন যেন তিনি আশরাফ সাহেবের কোন কথাই শোনেননি।।
–দেখলে তো শারমিন….সেদিন জাইমাকে রুমে বন্দি করে রাখার পরেও সব প্রতিবেশীরা জেনে গিয়েছে জাইমা একজন মানসিক ভারসাম্যহীন। আশেপাশের অনেকে তো এটাও বলছে তুমি নাকি অত্যাচার করে জাইমাকে পাগল বানিয়ে ফেলেছো। মেয়েটাকে জন্য আমাদের আজ কোন পর্যায়ে আসতে হলো।।((আশরাফ))
–((এক দৃষ্টিতে আশরাফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো শুনছিলো)) আমার মেয়ে পাগল না,,জাইমার আব্বু।। আর আশেপাশের যে যাই বলুক তাকে আমার কিছুই আশে যায় না।। আমার কাছে জাইমার সুস্থতাই সবচেয়ে বড়।।((শারমিন))
–কিন্তু আমার আশে যায়।। আমি সমাজের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি।। এতো এতো বিজনেস আমার।। আমার সব বিজনেস পার্টনাররা আমাকে দেখে কানাঘুষা করে,,উনার মেয়ে মানসিক ভারসাম্য হীন বলে।। আচ্ছা আমার কথা বাদ দাও,,,একবার জিহানের দিকে দেখো,,,তোমার নিজের ছেলে সে।।
–জাইমার আব্বু!! সরাসরি বলো,,,তুমি কি বলতে চাও?? মানছি আমার মেয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অস্বাভাবিক আচরণ করছে।। তাই বলে তো আমি আমার মেয়েকে ফেলে দিতে পারি না।। আর আমার কাছে জাইমা আর জিহান দুজনেই সমান।। আর আমি এমন মা না যে জিহানের কথা ভেবে জাইমাকে অবহেলা করবো।। ((শারমিন))
কথাটা বলেই রুম থেকে বেরিয়ে আসেন শারমিন বেগম।। যেহেতু এখন সে জানে জাইমার উপর জ্বীন কে নিয়ে এসেছে তাই আর দেরি না করে হুজুরকে খবরটা দিতে হবে।।
🍁🍁
এদিকে অনেক দিন পর কারো সাথে মন খুলে কথা বলতে পেরে জাইমার মনটাও বেশ ভালো।। তাজবিহ ছেলেটা বেশ অদ্ভুত!! যেখানে অন্য সবাই জাইমার থেকে পালিয়ে বেড়ায় সেখানে সে নিজে থেকেই এসেছে জাইমার সাথে কথা বলতে। ছেলেটাকে বেশ কিছুদিন ধরেই খেয়াল করছে জাইমা।। জাইমার রুমের বরাবরই ছেলেটার রুম।।
বেশ উচা লম্বা,,সুঠাম দেহের অধিকারী,,ফর্সা ছেলেটাকে দেখলে যে কেউ তার প্রেমে পড়তে বাধ্য।। তবে তাজবিহ বেশ অমায়িক স্বভাবের ছেলে।। কি জানি এই কদিন ছেলেটাকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে হয়তো জাইমা নিজেই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছে।।
খাটের উপর আধশোয়া অবস্থায় বসে বসে কথাগুলো ভাবছিলো জাইমা।। নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে তার।। হঠাত জাইমার মনে হলো তার গায়ে দেওয়া চাদরের ভিতর কিছু একটা আছে।। যা ধীরে ধীরে জাইমার দিকেই এগিয়ে আসছে।। জাইমা ভয়ে জড়সড় হয়ে আস্তে আস্তে চাদরটা সরিয়ে দেখে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটা পচা গলা লাশ চোখ মেলে জাইমার দিকেই তাকিয়ে আছে।। মুহূর্তেই জাইমা একটা চিৎকার করে খাট থেকে নেমে গিয়ে দরজা ধাক্কানো শুরু করে।। জাইমার চিৎকার শুনে শারমিন বেগম দৌড়ে জাইমার রুমের দরজার সামনে আসে।।
–জাইমা কি হয়েছে মা?? ((শারমিন))
–মা দরজা খুলো।। স…সে আমাকে মেরে ফেলবে। আমার অনেক ভয় লাগছে,,,,মা দরজা খুলো।।((চিৎকার করে কথাগুলো বলে যাচ্ছে জাইমা))
এদিকে জাইমার এমন চিৎকার চেচামেচি শুনে আশরাফ সাহেব জাইমার রুমের কাছে আসলেন। উনাকে দেখেই শারমিন বেগম অনুরোধ করলেন..
–জাইমার রুমের দরজাটা খুলে দাও।। দেখছো না মেয়েটা ভয় পাচ্ছে।। এভাবে চলতে থাকলে জাইমা অসুস্থ হয়ে যাবে।। তুমি এমন করছো কেনো??
–শারমিন!! তুমি এখান থেকে যাও।। এইসব কিছু জাইমার মনের ভুল। জাইমাকেই এর সমাধান করতে দাও। চলো।।((কথাটা বলে শারমিন বেগমের হাত টেনে নিয়ে চলে গেলেন।। জাইমার এতো চিৎকার অনুরোধ কিছুই তিনি দেখলেন না))
এদিকে….
বাবাকে এতবার অনুরোধ করার পরেও যখন উনি দরজা খুলে না দিয়েই চলে গেলেন।। তখন জাইমা অনেকটা ভেঙে পড়ে,,,,নিজের বাবাই আজ তার কথা বিশ্বাস করছে না অথচ এতোগুলো বছর সে মনে করেছে বাবা ছাড়া তার আপন কেউ নেই।।
জাইমা ধীরে ধীরে পিছনে ঘুরতেই দেখে লাশটা ঠিক তার পিছনে দাঁড়িয়ে বিশ্রি ভাবে হাসছে।। জাইমা একটা চিৎকার দিয়ে দৌড়ে তার রুমের বারান্দায় এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর সেখানেই হাটু ভেঙে বসে কান্না করতে শুরু করে।। এসব কিছু আর সহ্য হচ্ছে না তার।। সবাই এখন জাইমাকে পাগল মনে করে ভয় পায়,,,এখন তো নিজের বাবাও তাকে সহ্য করতে পারে না।। মানসিক ভাবে অনেকটা ভেঙে গিয়েছে জাইমা।।
–আমি ভেবেছিলাম আপনি অনেক সাহসী কিন্তু এখন তো দেখছি আপনি একটা ভিতু।। এভাবে ভয় পেয়ে বারান্দায় বসে বসে কান্না করছেন।।
–((কথাগুলো শুনে মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে তাজবিহ।। জাইমা দৌড়ে বারান্দার ধারে এসে কান্না করতে করতে বলতে থাকে)) আমাকে এখান থেকে বের করুন প্লিজ।। এরা কেউ আমাকে বাঁচতে দিবে না।। বিশ্বাস করুন আমি পাগল না।। আমি সত্যিই এসব আর নিতে পারছি না।। তারা কেউ আমাকে বিশ্বাস করে না,,,এই রুমে সারাদিন বন্দি করে রাখে।। আর ওই জ্বীন এসে আমাকে ভয় দেখায়,,,আমাকে সে নিয়ে যেতে চায়।।
কথাগুলো বলে কান্না করতে করতে বসে পড়ে জাইমা।। তাজবিহ এতক্ষণ মন দিয়ে জাইমার বলা কথাগুলো শুনছিলো সে।। মেয়েটার বলা কথাগুলো মিথ্যা হতে পারে না,,,আর না সে পাগল।।
–কেঁদো না।। খুব শীঘ্রই এমন দিন আসবে যখন তোমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তারা নিজেরাই কষ্ট পাবে।। তুমি আবার সুন্দর এক নতুন জীবন শুরু করবে।((তাজবিহ))
তাজবিহ সারারাত টুকটাক কথা বলে জাইমাকে শান্ত করে।। মেয়েটাকে সুস্থ করতে হলে প্রথমেই তার ভয় দূর করতে হবে।।
কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে জাইমা বারান্দায় বসেই ঘুমিয়ে পড়ে।। তাজবিহ মুচকি হেসে জাইমার স্নিগ্ধ মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকে।।
🍁পরদিন…
জাইমার রুমে খাবার নিয়ে প্রবেশ করে শারমিন।। জাইমা চুপচাপ খাটে হেলান দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে ছিলো।। মেয়েটাকে এভাবে দেখে বুক ফেটে যাচ্ছে শারমিনের,,,,জাইমার মুখটা শুকিয়ে গিয়েছে চোখের নিচেও কালি পরে গিয়েছে।
–জাইমা।। আজ আমি গোপনে হুজুরের কাছে গিয়েছিলাম।। উনি সমস্যার সমাধান খুঁজতে কিছুদিন সময় নিয়েছেন ততদিন এই সুঁতাটা তোমাকে পড়তে দিয়েছেন।। এটা কিন্তু ভুল করেও খুলবে না।।((জাইমার হাতে একটা সুঁতা বেধে দিয়ে))
–মা,,,সব ঠিক হয়ে যাবে তো?? আমি আবার আগের মত হয়ে যাবো তো?? ((করুন কণ্ঠে প্রশ্ন করে জাইমা))
–আল্লাহর উপর ভরসা রাখো মা।।((জাইমাকে জড়িয়ে ধরে))
সেদিনের পর সাতদিন পার হয়ে গেল….এখন আর আগের মতো জাইমা জ্বীন দেখে না।। তাজবিহর সাথে এই কদিন বেশ ভাব হয়ে গিয়েছে তার। দুজনেই বারান্দার ধারে বসে টুকটাক গল্প করে।
এদিকে জাইমার আঠারো বছর হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি।
আজ সকাল থেকেই শারমিন বেগম বাসায় নেই।। জাইমা নিজের রুমে খাটের উপর বসে বারবার বারান্দার দিকে তাকিয়ে তাজবিহকে খুঁজছে। হঠাত আশরাফ সাহেব জাইমার রুমে প্রবেশ করে…
— জাইমা মামুনি। চলো,,,দেখো তোমার সাথে দেখা করতে কারা এসেছে।।
–কে এসেছে বাবা??
–গেলেই দেখতে পারবে।।
আশরাফ সাহেব জাইমার হাত ধরে তাকে ড্রইংরুমে নিয়ে আসে। তাদের আশেপাশের কয়েকজন প্রতিবেশী সাথে একজন অদ্ভুত লোক বসে আছেন।। লোকটার হাতে গলায় কেমন যেন অনেক তাবিজ পড়া।।
–বাবা উনি কে?? এখানে কেনো এসেছেন??
–মামুনি,,,দেরিতে হলেও আমি বিশ্বাস করেছি যে তোমার উপর জ্বীনের প্রভাব আছে।। তাই উনি তোমাকে সাহায্য করতে এসেছেন।।
–((জাইমা লোকটার দিকে তাকাতেই লোকটা তার পাশে বসতে ইশারা করলেন)) মা কোথায় বাবা??
–জিহানকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছে।। তুমি যাও উনার পাশে বসে পড়ো।
জাইমা এক প্রকার বাধ্য হয়েই লোকটার পাশে বসে পড়ে।। লোকটা তার হাতে কিছু একটা বেঁধে দেয় আর অদ্ভুত ভাষায় কিসব বলতে শুরু করে।। হঠাত জাইমা তার আশপাশে অসংখ্য ভয়ংকর জ্বীন দেখতে পায়।। জাইমা ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে গিয়ে দেয়াল ঘেঁষে বসে পড়ে।। লোকটা জাইমার শরীরে কিছু পানি ছিটিয়ে দিতেই সেই সব জ্বীন একে একে জাইমার শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করে,,,,জাইমা হাজার চিৎকার করেও সরে যেতে পারছে না।।
লোকটা বিরবির করে কিসব বলে যাচ্ছে কিন্তু কোন কিছুই জাইমার উপর কাজ করছে না।। হঠাত…..
–তোমার কোন জাদুই এখন আর জাইমার উপর প্রভাব ফেলতে পারবে না।।
কণ্ঠটা শুনে সবাই পিছনে ফিরে দেখে শারমিন আর হুজুর দাঁড়িয়ে আছে ।
–((আশরাফ সাহেব তেড়ে এসে)) শারমিন এসবের মানে কি?? তুমি আমার অনুমতি ছাড়া কিভাবে উনাকে এখানে নিয়ে আসলে??
–তোমার সব সত্যি বের হয়ে গিয়েছে আশরাফ।। বাবা হয়ে জাইমাকে তুমি কিভাবে জ্বীনের কাছে বিক্রি করে দিলে??((শারমিন))
–কি সব বলছো তুমি??((আশরাফ))
–এখনো সময় আছে সব সত্যি স্বীকার করো।।((হুজুর))
আশরাফ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো…
–হ্যা করেছি।। আমি জাইমাকে দিয়ে বিনিময় করেছি।। জাইমার কারণে শুধু মাত্র জাইমার কারণেই জুঁই মারা গিয়েছে।। আমি আমার ভালোবাসা হারিয়েছি।। তাই এমন কাজ করেছি।। ঘৃণা করি আমি তাকে।
–আর কতো মিথ্যা বলবে তুমি আশরাফ?? জুঁই শুধু তোমার প্রথম স্ত্রী না আমার বোনও ছিলো।।
এই ডায়েরিতে সব সত্যি লেখা আছে।। জুঁইয়ের ডাইরি এটা।।
জাইমার যখন তিন বছর তখন জুঁই একটা এক্সিডেন্ট করে ফলে সে সন্তান জন্মের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।। সেদিন থেকে তুমি জুঁইকে ভুল ঔষধ খাইয়ে এসেছো।। তিলে তিলে মেরে ফেলেছো তুমি জুঁইকে।।
–হ্যা মেরেছি।। কারণ আমার একটা ছেলে সন্তান প্রয়োজন ছিলো।। আমার এতো কষ্টের বিজনেস সামলাতে আমার ছেলের প্রয়োজন ছিলো।। জুঁই কখনো তা দিতে পারতো না।।
জুঁই সেদিন আমার সব পরিকল্পনা জেনে যায় আর মৃত্যুর আগে আমাকে অভিশাপ দিয়ে যায়। যার কারণে তুমিও সন্তান নিতে পারছিলে না।। তাই আমি জাইমার বিনিময়ে জিহানকে দাবি করেছি।। এখন যদি জাইমাকে যেতে না দাও তাহলে তারা জিহানকে মেরে ফেলবে।। বুঝেছো তুমি??
শারমিন বেগম অবাক হয়ে আশরাফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে আছে।। এটা কি করলেন উনি?? তার দুইজন সন্তানের মধ্যে হয়েছে এই বিনিময়!!
–এটা কি করেছো তুমি আশরাফ?? তুমি ছেলে সন্তানের লোভে অন্ধ হয়ে এটা কি করলে?? জিহানের জন্য জাইমাকে!!
হুজুর এখন কি হবে?? ((শারমিন))
হুজুর জাইমার হাত থেকে তাবিজ খুলে দিয়ে কিছু একটা পড়তেই জাইমা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।।
–আশরাফ,,,তুমি কি জানো?? তোমার স্ত্রী জুঁই একটা জ্বীন সন্তান পালতো??
তোমার কি সন্দেহ হয়নি? জুঁই তোমার পরিকল্পনা কিভাবে জানলো?? কিভাবে তার অভিশাপ শারমিনের উপর কাজ করলো?? জাইমাকে এতদিন বদ জ্বীন থেকে কে আগলে রাখলো??((হুজুর))
–((আশরাফ সাহেব অবাক হয়ে)) মানে?? কি বলতে চান??
–তোমার স্ত্রী তাজবিহ নামক একজন জ্বীন পালতো।। সেই তোমার সব পরিকল্পনা জেনে জুঁইকে দিয়েছে।। জুঁই মারা যাওয়ার পর থেকে আড়ালে থেকে জাইমাকে আগলে রেখেছে।। তাই এখনও বদ জ্বীন তার ক্ষতি করতে পারছে না।।((হুজুর))
কথাটা বলতেই একটা সাদা বিড়াল ধীরে ধীরে জাইমার দিকে এগিয়ে এসে তার আসল রূপে ফিরে আসে…
–ম…মেঘ!!! তাজবিহ??((জাইমা))
হঠাত চারদিকে অসংখ্য জ্বীন তাদের ঘিরে ধরে।। তারা জাইমার উপর আক্রমণ করতে নিতেই তাজবিহ তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।।
অসম্ভব ভয়াবহ এক লড়াইয়ের পর বদ জ্বীন তাদের দুনিয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়।।
–জাইমা ((শারমিন দৌড়ে এসে জাইমাকে জড়িয়ে ধরে))
ঘটনাটি দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।। প্রতিবেশীরা আশরাফের আসল চেহারা দেখে কানাঘুষা শুরু করে।। আশরাফ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।।
–আমি জাইমাকে আমার সাথে নিয়ে যাচ্ছি।। জাইমা এখানে থাকলে তারা আবারও ফিরে আসবে।। ভয় নেই জিহানের কোন ক্ষতি তারা করতে পারবে না।। জাইমা এখন আমার রাজ্যে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত।।আমি তাকে আগলে রাখবো।((তাজবিহ))
শারমিন হুজুরের দিকে তাকাতেই হুজুর সম্মতি প্রকাশ করেন।। তাজবিহ সাথে সাথে জাইমাকে নিয়ে চলে যায় অজানা গন্তব্যে।।
🍁বেশ কিছু দিন পর….
সেদিনের পর থেকেই শারমিন বেগম জাইমার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে যদি সে একবার হলেও জাইমাকে দেখতে পায়।।
তাজবিহ তার দেওয়া কথা রেখেছে,,,,জিহানের কোন ক্ষতি বদ জ্বীন করেনি।। সত্যি প্রকাশ হওয়ায় আশরাফ সাহেব সমাজের মানুষের কাছে নানাভাবে অপমানিত হয়ে শেষে স্টোক করে বিছানায় পড়ে যায়।। শেষ সময়ে হলেও তিনিও বুঝতে পেরেছেন জাইমার সাথে তিনি কি অন্যায় করেছেন।।
এদিকে,,,জাইমা আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবার কথাই মনে করছে।। যদিও বাবা তার সাথে অনেক অন্যায় করেছে তবে সেই সব বিষাক্ত_ছোঁয়া ভুলে বাবাকে মন থেকেই ক্ষমা করে দিয়েছে সে।। তাজবিহ চা হাতে জাইমার পাশে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে জাইমার দিকে চায়ের কাপটা এগিয়ে দেয়।। জাইমাও মুচকি হেসে তাজবিহ-র হাত থেকে কাপ নিয়ে খুনসুটি গল্প করতে থাকে।। তার লক্ষ্য শুধু একটাই বিষাক্ত ছোঁয়ার সেই দিনগুলো ভুলে যেতে চায় জাইমা।
সমাপ্ত