#বউ চুরি
সিজন-২
পর্ব ঃ ৪
লেখিকা ঃ জান্নাতুল নাঈমা
সব ইচ্ছে কে মাটি চাপা দিয়ে নিজেকে কিছুটা শক্ত করে নিয়ে মুসকান বললো আমার শরীর খারাপ লাগছে ঘুমাবো আমি।
ইমন এসব অদ্ভুত আচরন আর নিতে পারছে না তাই ওভাবেই মুসকানকে আটকে রাখলো আর বললো ঘুমাতে দিবো তার আগে বলো কি হয়েছে। আমার সাথে কেনো তুমি অদ্ভুত আচরন করছো। কেনো আমার কাছে আসতে চাইছো না। আমি আমার মুসকান কে কেনো পাচ্ছি না তোমার মাঝে।
মুসকানের চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।
মুখ ফিরিয়ে বললো প্লিজ আমার হাতে লাগছে ছাড়ো আমায়।
ইমন আর কিছু বললো না মুসকানের হাত আলগা করে দিলো। মুসকানকে বুকে জরিয়ে নিলো শক্ত করে। যাতে মুসকান চাইলেও সরে যেতে না পারে।
মুসকানও বাধ্য হয়েই ইমনের বুকে ঘুমিয়ে পড়লো।
হঠাৎ ইমন বুকে শীতল কিছু অনুভব করলো। হাত দিয়ে ছুঁতেই বুঝতে পারলো মুসকানের চোখের পানি তার বুকের সাথে লেপ্টে আছে।
আমি জানি মুসকান তুমি মুন কে হারানোর যন্ত্রণায় আমার সাথে এমন করছো। সবটাই বুঝতে পারছি আমি। কিন্তু কি করবো বলো আমাদের ভাগ্যেই ছিলো এটা। ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুসকানকে আরো গভীরভাবে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
১৫দিন কেটে গেছে। বাড়ির সবাই মুসকানকে স্বাভাবিক করার জন্য সব সময় হাসি খুশি থাকে।
এশা, দিপু মুসকান কে অনেক সময় দেয়। দিপক ইমন ও অফিস শেষে মুসকানের জন্য চকলেট, আইসক্রিম সাথে বাড়ি ফেরে। প্রতিদিন দুপুরবেলা ফুচকাওয়ালা কে পাঠিয়ে দেয় ইমন। এশা আর মুসকান ফুসকা খায়। সবার সাথে মুসকান স্বাভাবিক থাকলেও ইমনের সাথে কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছে না।
একি বাড়িতে,একি ঘরে, একি বিছানায় থেকেও যেনো কতো দূরে মুসকান। এটাই অনুভব হয় ইমনের। কিন্তু কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারছে না যে কেনো এমন করছে।
বাচ্চার জন্য এমন হলে তো সবার সাথেই এমন করতো শুধু একা আমার সাথে নয়। তাহলে কি অন্য কোন ব্যাপার আছে। কি থাকবে নাহ হয়তো মুসকানকে বুঝতে ভুল করছি আমি।
কেটে যায় আরো কয়েকদিন। একদিন সন্ধ্যা বেলা এশা আর মুসকান যায় ছাদে। দুজনেই গল্প করছিলো এমন সময় হঠাৎ মুসকানের ফোন বেজে ওঠে।
এশা বললো কি,,,ভাইয়া ফোন দিয়েছে নাকি ধর ধর মনে হয় মিস করছে অনেক।
মুসকান হালকা হেসে বেশ ইতস্ততবোধ করে সেখান থেকে ওঠে অন্যপাশে চলে গেলো।
এশা ভাবলো – ভাইয়া কি নাকি অন্য কেউ ওর মুখটা অমন লাগছিলো কেনো,,, আর ওভাবে অন্যপাশেই বা চলে গেলো কেনো,,, বেশ খটকা লাগলো এশার।
বেশ কয়েক মিনিট হয়ে গেলো তবুও মুসকান আসছে না। এশা ওয়েট করতে করতে বিরক্ত হয়ে ওঠে পড়লো। সাথে সাথেই মুসকান চলে এলো।
এশা বললো কে ফোন করেছিলো ইমন ভাইয়া,,,
ঐ আমার এক ফ্রেন্ড,,,
কে রায়া,,,
মুসকান বেশ বিপাকে পড়ে গেলো, কিছু বলতে পারলো না। এশা আর কথা না বাড়িয়ে বললো -চলো নিচে যাই বড় মা, মা আবার বকবে।
রাত দশটায় ইমন বাড়ি ফিরলো।প্রতিদিন আটটায় ফিরলেও আজ দেরী হয়ে গেছে কিছু অতিরিক্ত কাজ পড়ে গিয়েছিলো বলে।
বাড়ি এসে রুমে গিয়ে দেখলো মুসকান ঘুমিয়ে পড়েছে। বাথরুম গিয়ে ফ্রেশ হতে হতে ভাবলো -সব কেনো আবার বদলে যাচ্ছে এইভাবে,,, এতোটা পরিবর্তন কেনো হয়ে গেলো মুসকান। আগেতো আমি যতো দেরীতেই ফিরি তুমি না খেয়ে অপেক্ষা করতে আর আজ এইটুকু সময়েই ঘুমিয়ে পড়লে।
এইভাবে তোমার ইমনকে তুমি দূরে সরিয়ে কেনো দিচ্ছো। আমাদের সাথে যা হয়েছে এর জন্য আমরা দুজনের কেউ দায়ী নই। ভাগ্যে ছিলো আমাদের,,, ইমন বেশ কিছুক্ষন শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এলো।
মুসকানের কাছে গিয়ে বেশকিছুক্ষন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। কপালে ভালোবাসার স্পর্শ ছুইয়িয়ে দিলো।
একহাতে শক্ত করে চেপে ধরলো পেটের উপর হাত রেখে কিছুক্ষন চুপ থেকে হাত সরিয়ে নিলো। গভীর এক শ্বাস নিয়ে ওঠে পড়লো লাইট অফ করে সুয়ে পড়লো। আজ আর মুসকানকে বুকে নিলো না।
তার মনটাও আজ বড্ড খারাপ।
মুসকান আমি ছেলে বলে তোমার মতো মুখ ভার করে, চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে আমার কষ্ট টা প্রকাশ করতে পারছিনা। এই সময় তোমার যেমন আমার সাপোর্টের প্রয়োজন আমারো তোমার সাপোর্টের খুব প্রয়োজন। আমিও যে হারিয়েছি আমার সন্তানকে। আমিও যে স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু দূর্ভাগ্য আমার, আমার কষ্টের ভাগ টা কেউ নিতে পারে না। তুমি আমার বউ হয়েও আমার কষ্ট টা বুঝতে পারলে না। একরাশ অভিমান জমিয়ে রেখেছো আমার উপর।
মুসকান চোখের পানি আস্তে করে মুছে নিলো।
আজ যদি তুমি এইসব রাজনীতিতে না জরাতে তোমার শত্রু হতো না ইমন আর আমরাও আমাদের সন্তান কে হারাতাম না। আমি কিছুতেই মুনকে ভুলতে পারছিনা ইমন কিছুতেই না।
তুমি আমার উপর রাগ করে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লে। কেনো খেয়ে ঘুমালে কি হতো আমাকে কি রাগ করতেও দিবে না।
ইমন ওদিক ফিরে মুসকানের উপর জমানো অভিমান নিয়ে ভাবছে। আর মুসকান ওদিক ফিরে তার জমানো অভিমান নিয়ে ভাবছে। বেশ কিছু ক্ষন পর মুসকান ওঠে বোসলো। লাইট অন করে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
ইমন বুঝে গেলো মুসকান ঘুমায় নি ঘুমের অভিনয় করছিলো।
কিছুক্ষন পর মুসকান খাবাড় প্লেটে নিয়ে ঘরে ফিরলো। ইমন দেখে মনে মনে বেশ খুশি হলো।
যাক খেয়াল আছে তাহলে,,,
মুসকান চুপ করে খাবাড়টা টেবিলে রেখে পানি নিয়ে এসে বললো খেয়ে নাও।
ইমনের বড্ড ক্ষিদে পেলেও একটু ঢং করে বললো আমার ক্ষিদে নেই।
মুসকান অন্যদিক মুখ করে বললো তবুও খেয়ে নাও কষ্ট করে এনেছি আমি।
ইমন হেসে ফললো সাথে সাথে আবার মুখ ভার করে ফেললো যাতে মুসকান না দেখে।
আহারে বউ টা আমার কষ্ট করে খাবাড় এনেছে খেয়ে নেই। বলেই খাবাড় খেতে শুরু করলো। মুসকান গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আর মাঝে মাঝে আড় চোখে ইমনের খাওয়া দেখতে লাগলো।
ইমন খাওয়া শেষ করে মুসকানকে পিছন থেকে জরিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে নিলো।
মুসকানের কানে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো বউ তো আগের থেকে ভারী হয়ে গেছে মনে হচ্ছে,,,
মুসকান হাত ছাড়াতে চাইলেও আর পারলো না ইমন মুসকানের ঘারে মুখ ডুবিয়ে দিলো।
আবেশে চোখ দুটো বন্ধ করে ফললো মুসকান।
হঠাৎ ইমন মুসকান কে ছেড়ে দিলো। আর বললো- মুসকান তোমার সাথে আমার কিছু জরুরি কথা আছে।
মুসকান ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছিলো। হালকা স্বরে বললো- হুম বলো।
ইমন মুসকানের এক হাত তার বুকের বা পাশে শক্ত করে চেপে নিয়ে বললো আমার ভালবাসা কতোটা স্ট্রং আশা করি তুমি সেটা জানো। আমি তোমাকে কখনোই ছারবোনা এটাও তুমি জানো। আর এটাও জানো তোমার ব্যাপারে আমি খুব সিরিয়াস। তোমার ব্যাপারে আমার নেওয়া প্রত্যকটা সিদ্ধান্তই সিরিয়াস। আমার কথার বাইরে গিয়ে নিজের অনেক ক্ষতি করেছো তাই আমি চাইনা তুমি আর আমার বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করো।
মুসকান ইমনের একটু কাছে এসে খুবই আবেদনের স্বরে বললো প্লিজ একটা বাচ্চা চাই আমার,,, এই একটা জিনিস তুমি আমায় দাও,,, আমি তোমার কথার বাইরে যাবো না।
ইমন মুসকানকে জরিয়ে কপালে আলতো করে চুমু খেলো।
মুসকান,,, তুমি বুঝার চেষ্টা করো তোমার শরীরের কন্ডিশন ভালো না, আর গাইনোকলজিষ্ট এর সাথে কথা বলেছি আমি একবছর না গেলে কোন ভাবেই বেবী নেওয়া যাবে না। কমপক্ষে একবছর তুমি এটা নিয়ে না ভেবে তোমার পড়াশোনা নিয়ে ভাবো। আমাকে নিয়ে ভাবো। মুসকান,,, আমার কাছে তোমার থেকে দামী আর কিছু নেই। তুমি সুস্থ থাকলে আমরা একটা না চার,পাঁচটা বেবী নিতে পারবো কিন্তু তার জন্য তেমাকে সুস্থ থাকতে হবে। স্ট্রং থাকতে হবে। একটা বছরই তো প্লিজ তুমি একটা বছর ওয়েট করো।
মুসকান এক ঝটকায় ইমনের থেকে সরে গেলো।
চিৎকার করে বললো একটা বেবী চেয়েছি তাই দিতে পারছো না। কেনো কেনো,,, আমি সুস্থ নই আমি অসুস্থ?? আমি একদম ঠিক আছি আমার বাচ্চা চাই, চাই, চাই। পাগলের মতো চিৎকার শুরু করে দিলো মুসকান।
ইমনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলো আজ।
ঠাশ করে এক চড় বসিয়ে দিলো গালে। মুসকান গাল ধরে কাঁদতে লাগলো।
ইমন রেগে গিয়ে বললো অনেক হয়েছে আর না।এই বাড়াবাড়ির জন্যই আজ তুমি তোমার সন্তান কে হারিয়েছো। মা হতেও যোগ্যতা লাগে মুসকান যেটা তোমার নেই। বার বার আমার কথার অবাধ্য হয়েছো। সেদিন যদি আমার কথা শুনতে আজ এই দিন দেখতে হতো না মুসকান। আমার কোন কথাই শুনোনি তুমি। কনসিভ করা থেকে শুরু করে আজ অবদি যা যা হলো এর মধ্যে কোথাও আমার একটা কথা শুনেছো তুমি। রায় দিতে দিতে একদম মাথায় ওঠে গেছো আর না ওকে আর না। আমার কথার অবাধ্য হলে এবার তুমি আমার কি ভয়ংকর রূপ দেখবে সেটা তুমি ভাবতেও পারবে না। তোমার জীবন আমার নিয়মে চলবে এই ইমনের নিয়মে চলবে। আর কারো নিয়মে চলবে না বুঝতে পেরেছো তুমি। এর বাইরে ভাবলে ভুল করছো তুমি। চিৎকার করে কথা গুলো বলে ইমন রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
মুসকান চিৎকার করে কেঁদে ওঠলো। মা হওয়ার যোগ্যতা আমার নেই, নেই, তোমার আছে বাবা হওয়ার যোগ্যতা??? সেদিন তোমার শত্রুরাই আমায় ওঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো আর আজ সব দোষ আমায় দিচ্ছো তুমি।
ফোন খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে গেলো মুসকান।
ফোন পেয়ে একজনকে ফোন করে কেঁদে কেঁদে বললো আমি হেরে গেলাম আমার ভালোবাসার কাছে। ইমন রাজি হয়নি আবার বেবী নিতে।
তার মানে ও সত্যিই বেবীটা চায়নি। বলেই ফোন কেটে দিলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো ও ঠিকি বলেছিলো ইমনের জন্যই সব হয়েছে ।
ও যদি বেবীটা চাইতোই তাহলে আজ আমাকে ফিরিয়ে দিতো না। ওর কথাই ঠিক আমার অসুস্থতার অজুহাত দিলো ইমন। যদি ও মিথ্যাই বলতো ইমন তো আজ এই কথা বলতো না। তার মানে ওর কথাগুলোই সত্যি ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো মুসকান।বিছানায় মুখ গুজে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো।
ইমন দরজার বাইরে থেকে দেয়ালে সাজোরে এক ঘুষি দিলো।
সারাদিন কেটে গেলো ইমন বাড়ি ফেরেনি শক্রবার অফিস নেই। তাহলে কোথায় গেলো ইরাবতী চিন্তায় চিন্তায় সারাদিন কিছু খেতে পারলো না । এদিকে মুসকানের ও চোখ মুখ ফোলা। গালে পাঁচ আঙুলের ছাপ। সবাই বেশ বুঝতে পারছে এই কাজ ইমনের ছাড়া আর কারো না।
বিকালের দিকে বাড়ি ফিরলো ইমন।
সবাই ড্রয়িং রুমে কিন্তু মুসকান কে দেখতে পারলো না। এশা ইমনকে দেখে খানিক টা ভয় পেয়ে গেলো।
ইমন এশার দিকে তাকাতেই এশা ঢোক গিললো।
এশা মুসকান কোথায়,,,
এশার সারা শরীর বরফ হয়ে গেলো ভয়ে ভয়ে বললো- ওতো উপরে।
ইমন আর দেরী না করে উপরে চলে গেলো।
রাতে খুব রাগে ছিলো গায়ে হাত তুলেছে। তাই এখন বউকে একটু ভালোবাসা দিবে তাই নিজের রুমে খুঁজলো পেলো না। মুসকানের রুমে খুঁজলো তবুও পেলো না। মুসকানের রুম থেকে বের হতেই এশা সামনে পড়লো। এশা বললো ভাইয়া আসলে ও ছাদে আছে।
ইমন বললো- ওহ ওকে যাচ্ছি।
এশা ইমনকে থামিয়ে দিয়ে বললো- ভাইয়া একটা কথা ছিলো।
ইমন বললো হুম বলো।
আসলে ভাইয়া,,, মুসকান ইদানীং কারো সাথে ফোনে কথা বলে।জিগ্যাস করলেও কে বলে না। আপনাকে জানাতে চেয়েছি সুযোগ পাইনি তাই আজ জানালাম।
ইমন স্বাভাবিক ভাবেই বললো ওহ আচ্ছা আমি দেখছি।
ছাদের সিঁড়ি তে পা দিতেই দিপক বললো ইমন,,,
ইমন থেমে দিপকের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো আর বললো নো ব্রো,,, স্বামী স্ত্রীর মাঝখানে আসা যাবে না। যতোই তুমি তার ভাই বা আমার ভাই হও।
দিপক কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ইমন ছাদে চলে গেলো।
এশা দিপকের হাত টা শক্ত করে চেপে ধরলো।
আমার খুব ভয় হচ্ছে।
ভয় পেওনা কিছু হবে না । ইমনের উপর আমার বিশ্বাস আছে।
আমি মুসকান কে অনেক বার সাবধান করেছি। তবুও কেনো মেয়েটা কথা শুনলো না বুঝলাম না।
ও একটু জেদি একরোখা। কিন্তু ইমন যে ওর থেকে জেদি সেটা জেনেও কেনো বার বার ভুল করে বুঝিনা।
বড় মা, বড় বাবা এসব জানলে আরো জটিল হতো বিষয়টা ইমন ই সামলে নিক। তুমি যে আর কাউকে বলো নি এটাই অনেক।
এশা দিপকের দিকে তাকিয়ে বললো- স্বামীর আদেশ কি অমান্য করা যায়।
দিপক এশার কপালে চুমু দিয়ে বললো গুড গার্ল।
মুসকান ফোনে কথা বলছে এমন সময় ইমন পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো। বেশকিছুক্ষন কথা শুনে ইমন খানিকটা আঁচ করতে পারলো এটা কে হতে পারে।
নিজের রাগটা আর কন্ট্রোল করতে পারলো না ইমন।
জেনে শুনে কেউ এমন ভুল বার বার কি করে করতে পারে ইমন ভেবে পাচ্ছে না । মনে মনে ভাবলে আগে ঘরের লোক কে শায়েস্তা করতে হবে পরে বাইরের লোক।
ইমন আর চুপ থাকতে পারলো না মুসকানের হাত থেকে ফোন টা নিয়ে ছাদ থেকে এক ঢিল দিলো।
মুসকান ইমনকে দেখে ভয়ে কাঁপতে শুরু করলো।
ইমন বললো এটার কোন প্রয়োজন নেই আজ থেকে তোমার তাই বিদায় দিলাম। বলেই মুসকানের কাছে এসে হাত বেঁকিয়ে ধরলে পিছন দিকে।
মুসকান ব্যাথায় কুঁকড়িয়ে ওঠলো।
আহ, ছাড়ো লাগছে আমার।
ইমনের চোখ দুটো রক্ত বর্ন ধারন করেছে। রাগে তার শরীর ও কাঁপছে। আরো শক্ত করে চেপে ধরলো হাত।
মুসকান ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে কেঁদে ওঠলো।
ইমন মুসকানের হাত ছেড়ে দুগালে চেপে ধরলো।
আর কতো,,, আর কতো ভুল করবি তুই। সব সময় তোর ভুলগুলো ইমন বোকামি, ছেলেমানুষি ভাববে
এটা যদি তুই ভেবে থাকিস তাহলে ভুল ভাবছিস।
মুসকান কথা বলতে পারছে না। শুধু চোখ দিয়ে অঝড়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে। আর ইমনের চোখ দুটো রক্ত লাল হয়ে আছে।
গাল ছেড়ে ঠাশশ করে এক থাপ্পড় দিলো।টাল সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে গেলো মুসকান।
ইমন হাটু গেড়ে বসে আবারো দুগালে চেপে ধরলো।
আর বললো- এই তুই কি ভেবেছিস ইমন অনেক বোকা। হসপিটাল থেকে ফেরার পর থেকে তুই কি করছিস না করছিস কার সাথে কথা বলছিস কিচ্ছু জানিনা আমি। তোকে আমি কাল রাতেও বুঝিয়েছি তবুও তুই আমার কথার অবাধ্য হলি। কি চাস তুই? ইমনকে ক্ষেপিয়ে তুলতে চাস, সহ্য করতে পারবি তুই, একটা কথা মাথায় রাখিস বিশ্বাস ঘাতকের কোন ক্ষমা নেই কোন ক্ষমা নেই।
এমনভাবে গাল চেপে ধরায় মুসকান কথা বলতে পারছে না। খুব কষ্টে বললো- আমার কথা শুনো তুমি। প্লিজ আমাকে বলতে দাও।
চলবে…
সিজন ওয়ান না পড়লে টু তে তেমন আকর্ষণ পাবেন না.