কায়নাত ( ভৌতিক রোমান্টিক গল্প),পর্বঃ২
লেখিকাঃ টিউলিপ রহমান
বাবা এসে তেলের শিশিটা মার হাতে দিয়ে বললেন
— মেয়ের চুলটা তেল দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দাও।
মায়ের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কায়নাত নিজের হাতে যেখানে কামড়ে ছিল সেই জায়গায়টায় একটা ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।মা ক্ষতটা পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলেন। বাবা কায়নাতের পাশে এসে বসলেন। কায়নাত নিশ্চিন্ত মনে ঘুমোচ্ছে যেনো কিছুক্ষণ আগে এখানে কিছুই হয় নি। ওকে এখন কতটা নিশ্পাপ দেখাচ্ছে ! কিন্তু ওর মধ্যে কিছুক্ষন আগেও একটা শয়তানের ববসবাস ছিল। ওর হাতটা উচু করে ধরলেন বাবা। দেখলেন গতকাল রাতে হাতে পরা মেহেদিতে খুব সুন্দর লাল রং হয়েছে । তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে। কেও দেখার আগেই তিনি তা তাড়াতাড়ি করে মুছে ফেললেন । এদিকে কায়নাতের দাদী আর ফুফু পা টিপে টিপে কায়নাতের ঘরে প্রবেশ করলেন। ধীরে ধীরে বাবার পাশে এসে দাঁড়ালেন। তার হাতের মোবাইলটা বাবার হাতে গুজে দিয়ে ফিসফিসিয়ে বললেন
— গ্রামের মসজিদের হুজুর, কথা বল। উনি অনেক বড় মাপের হুজুর। কায়াকে দেখবি একদম ঠিক করি দিবে। নে কথা বল!
–মা তোমরা কি শুরু করলে ? এভাবে করলে তো আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে বাহিরে বের হয়েও কাওকে মুখ দেখাতে পারবে না ! তোমরা দেখছি এখন পুরো এলাকাতে খবর জানান দিচ্ছো?
— কি যে বলিস না! মেয়ে বড় হয়েছে সেইজন্যই তো বলছি। বিয়ে দিতে হবে না? সুস্থ করতে হবে না! নাকি এভাবেই ঘাড়ে ভুত বসিয়ে রাখবি?তোকে কত করে বললাম মেয়ে ইন্টার পাস করেছে এখন বিয়ে দিয়ে দে। ভালো পাত্র আছে। নাহ! সেটা শুনলো না। বলে নাকি , মেয়েকে আরো পড়াবে।এখন নেহ! দেখি এই জ্বীনে ধরা মেয়েকে তুই কোথায় পড়াস আর কার কাছে বিয়ে দেস!
দাদী পাশ ফিরে ফুফুকে ধীরে ধীরে বলেছেন,
— ভালো করেছিসরে রোকেয়া, আমাদের শিউলীকে সঙ্গে করে আনিসনি! ও এলে ঘুমোতো এই ঘরেই কায়ার সাথেই । আল্লাহ!!( ঘাবড়ে) তাহলে তো তোর মেয়েকেও জ্বীনে ধরতো। তখন ওর বিয়েও আমরা দিতে পারতাম না!
ফুফু চোখ বড় বড় করে নিজের ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরেছেন।তারপর বললেন
— আসলেই আম্মা। ও তো আসতেই চেয়েছিল। কি মনে করে যেনো ওকে আনিনি। ভালোই হয়েছে। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। কিন্তু এখন কায়নাতের কি হবে? (ফুফু)
–তোমরা এখন থামো। (ধমক দিয়ে) আমার মেয়ে আজ অসুস্থ আর তোমরা বিয়ে বিয়ে নিয়ে পড়ে আছো। বিয়ে ছাড়া কি মেয়েদের জীবনের কোনো মূল্য নেই? কোথায় তোমরা আমাকে উপায় বলে দিবে, স্বান্তনা দিবে, তা না, বিয়ে নিয়ে পরে আছে। যাও, তোমারা ঐদিকে গিয়ে বসে বিয়ের আলাপ করো ।( বাবা)
— আরে তোকে তো উপায়ই বলছি, গ্রামের হুজুরের সাথে কথা বল, দেখবি উনি ঝাড় ফুক দিয়ে সব ঠিক করে দিবেন। এখানের হুজুর পারবে না।দেখিস না ভয়ে সে পালিয়েছে! ( দাদী)
কায়নাত তখনো ঘুমোচ্ছে। মা তার শ্বাশুড়ির কথা শুনে মাথা নিচু করে রেখেছেন। বাবা সেখান থেকে উঠে নিজের ঘরে চলে গেলেন। দাদী আর ফুফু ব্যাঙের মত মুখ ভেঙচি কেটে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। মা কায়নাতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। তারপর তেলটা নিয়ে মাথায় দিতে যাবে আর কায়নাতের বাবা এসে বলছেন
— তৌসিফের মা, ওযু করে নিয়েছো তো ?
–জী আমার ওযু আছে।
— আচ্ছা তাহলে তিন কুল পড়ে ফু দিয়ে তারপর তেল দিয়ে দাও। আর ওর চুলটা শক্ত করে বেঁধে দাও যেনো খুলতে না পারে।
–জী আচ্ছা।
মা সুরা পড়ে কায়নাতের মাথায় ভালোভাবে তেল দিয়ে একটা বেনী গেঁথে দিলেন। এখন ওকে একটু স্বাভাবিক দেখাচ্ছে । ঠিক তখন কায়নাত একটু নড়ে উঠল। মা একটু ভয়ও পাচ্ছে আবার মায়াও হচ্ছে। শত হোক ওতো ওর মায়ের কলিজার টুকরা। কায়নাত ধীরে ধীরে চোখ খুলছে। পাশে ওর মাকে বসে থাকতে দেখে বলল
–মা, তুমি এখানে বসে আছো কেনো? আর তোমার চোখে পানি কেনো?
— কিছু না মা। তোমার শরীর এখন কেমন? একটু সুপ খাবে?
–আমার কি কিছু হয়েছে? আমি কি অসুস্থ?
–না তেমন কিছু না, তোমার শরীরটা একটু দুর্বল তাই বলছিলাম। কিছুক্ষণ আগে তুমি মাথা ঘুরে নিচে পড়ে গিয়েছিলে।
–ওহ! তাই নাকি! হ্যাঁ শরীরটা কেমন যেনো ব্যাথা ব্যাথা করছে।
তখনই ওর চোখ গেলো হাতের ব্যান্ডেজ এর দিকে।তারপর সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল
–মা আমার হাতে কি হয়েছে? আল্লাহ! কি জ্বালাপোড়া করছে। কিভাবে ব্যাথা পেয়েছি আমি, মা?
মা কিছু বলতে যাবে আর তখনই বাবা এসে বললেন
–তুমি যখন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলে তখন হাতে ব্যাথা পেয়েছো। ঠিক হয়ে যাবে। ( বাবা ইশারা করে মাকে থামতে বললেন। )
কায়নাত উঠে বসতে চাইলো। বাবা এসে ধরে বসিয়ে দিলেন। মা উঠে ওর জন্য সুপ আনতে গেলো। বাপ মেয়ে চুপ করে বসে আছে।
— বাবা ঘরের পর্দাগুলো এভাবে নামিয়ে দেওয়া কেনো? এখন কি রাত? মানে আমি আজ সারাদিন ঘুমিয়েছি?
–নারে মা, বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে তাই ওমন অন্ধকার দেখাচ্ছে।
— একটু পর্দাটা সরিয়ে দাও বাবা, আমি বৃষ্টি দেখবো।
— আচ্ছা, সরিয়ে দিচ্ছি।
বলে ওর বাবা উঠে সব পর্দা সরিয়ে দিলেন।বাহিরের আপছা আলোতেও কায়নাত তাকাতে পারছে না। তারপরও চোখ কুচকে তাকানোর চেষ্টা করছে। ওর বাবা ওর দিকে তাকিয়ে দেখলো এক রাতেই কেমন শুকিয়ে গেছে তার মেয়েটা। চোখের নিচের কালো ভাবটা যেনো এখন আরো গাঢ় হয়েছে।ওর মা এসে সুপ খাইয়ে দিচ্ছে। আর তখনই কায়নাতের বড় ভাই, যে কিনা সিলেট মেডিকেলে ফোর্থ ইয়ারে পড়ছে, ঘরে ঢুকেই চেচিয়ে বলছে
— বাবা আমি এসব কি শুনছি? কায়ার কি হয়েছে? লোকে এগুলো কি বলছে?
বাবা উঠে দৌড়ে তৌসিফের কাছে গিয়ে বলছে
— আহা! একটু ধীরে বল।
–কেনো ধীরে বলবো কেনো? লোকে আমার বোনকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলবে আর আমি মাথা নিচু করে চুপচাপ শুনে আসবো?( তৌসিফ)
— হ্যাঁ, চুপচাপ শুনে আসবি। আর আমরা কায়াকে কিছুই বলিনি ওর কি হয়েছে। এখন তোর জন্য ওকে আবার সব ভেঙ্গে, বিশ্লেষণ করে বলতে হবে।এতক্ষণ এত এত মিথ্যা বলে ওকে বুঝিয়েছি। এখন আবার ওকে কতগুলো মিথ্যা বলতে হবে। তুই এভাবে না চেচিয়ে আসলেও পারতিস।( বাবা ফিসফিসিয়ে বললেন )
কায়নাত মুখে সুপের চামচ নিয়ে হা করে ওদের কথোপকথন শুনছে। ওরা কি নিয়ে আলোচনা করছে বোঝার চেষ্টা করছে। বাবা আর তৌসিফ দুজনেই কায়নাতের দিকে তাকিয়ে আছে। বাবা তৌসিফকে টেনে রুম থেকে বের করে নিয়ে গেলেন।কায়নাত মুখের সুপটা গিলে কিছু একটা চিন্তা করছে।
অন্যরুমে বাবা বলছেন
–গতকাল রাতে কি হলো জানি না, সকাল থেকেই কায়া কেমন পাগলের মত করছে। পরে হুজুর এসে পানি পড়া, তেল পড়া দিয়ে গেলেন। এখন একটু শান্ত হয়েছে।
— বাবা! এসব কি বলছো? এযুগে এসব হুজুর কবিরাজ দিয়ে কি চিকিৎসা হয়? তোমার ছেলেকে তাহলে ডাক্তারী পড়াচ্ছো কেনো, বলো? আমার ডাক্তারী কোন কাজে লাগবে?( তৌসিফ)
–জ্বীন ভুতের চিকিৎসা এসব ডাক্তারী দিয়ে হবে না। হুজুরের ঝাড়ফুকই কাজে দিবে।( বাবা)
— বাবা ওকে যে জ্বীনে ধরেছে তোমাকে কে বলল? জ্বীন ভুত বলতে কিছু নেই। এসব ফালতু কথা।ওর সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম হয়েছে। সাইকায়াট্রিসের কাছে গিয়ে ট্রিটমেন্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
— চুপ কর, তুই বেশী শিক্ষিত হয়ে গিয়েছিস। এখন বাবার মুখে মুখেও তর্ক করছিস। এই তোর শিক্ষা!
তৌসিফ মাথা নিচু করে বলছে
–সরি বাবা, আসলে হঠাৎ করে কথাগুলো শুনেছি তো তাই নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি।বোনটাকে তো অনেক ভালোবাসি, তাই ওকে নিয়ে আজেবাজে কথা একদম সহ্য করতে পারিনা।
–পুরো কোয়ার্টারে সবাই বলাবলি করছে? আল্লাহ! ( মাথা নাড়তে নাড়তে বাবা বললেন )
–কিন্তু বাবা আমি আমার স্যারকে বলেছি কায়নাত হঠাৎ করে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, উনি যেনো এসে একবার দেখে যান!
— আহা, ওর তো অন্য সমস্যা! মানসিক সমস্যা না।
–বাবা মেডিকেলে এগুলোর বিভিন্ন টার্ম আছে। এক একটা স্টেজ আছে। স্যার এসে দেখে যাবেন। তারপর ঔষধ দিবেন। কিছু সেশন হবে তারপর কায়া একদম সুস্হ হয়ে যাবে, তুমি দেখো!
— তুই যদি মনে করিস ডাক্তার দিয়ে এসব করালে কায়া ঠিক হয়ে যাবে, তাহলে তাকে আসতে বলিস। এই উসিলায় যদি মেয়েটা সুস্হ হয়ে যায়! তবে এখন আর বাসায় এগুলো নিয়ে কথা বলিস না। কখন আবার ও অসুস্থ হয়ে পরে আল্লাহ জানেন।
কায়নাতের বাবা তার গলার স্বরটা একটু নিচু করে বললেন –এগুলো আমাদের সাথেই কেনো হলো! আমারা কার কি এমন ক্ষতি করেছিলাম!
বলেই ওর বাবা সোফায় হঠাৎ করেই বসে পড়লেন।
— বাবা, আমরা আছি না! আমরা কায়াকে কিছু হতে দিবো না।তুমি একটুও টেনশন করো না। ওর সাথে কি এখন একটু কথা বলা যাবে??
–হ্যাঁ যাবে, কিন্তু নরমালি কথা বলতে হবে।
হঠাৎ ওপাশ থেকে কায়নাতের চিৎকার শুনতে পেলো। বাবা আর তৌসিফ দৌড়ে ওর ঘরে গেল। দেখে কায়নাত পেট চেপে ধরে বসে আছে আর চিৎকার করছে।
— কি হয়েছে?
–বলছে ওর ভীষন পেট ব্যাথা করছে।( মা )
— ওহ! পেটের ভিতর অনেক মোচড় দিচ্ছে। মনে হচ্ছে পেটের ভিতর কেও সবকিছু শুঁচ দিয়ে গুঁতো দিচ্ছে। উফ! প্রচন্ড ব্যাথা করছে। মাহ! ( কায়নাত)
–কায়ার বাবা, আমার মেয়েটার কি হয়েছে? ওর এমন পেট ব্যাথা করছে কেনো?(মা )
— কই দেখি কায়া, আমাকে দেখতে দে! (তৌসিফ)
.
তৌসিফ কায়ার পাশে গিয়ে বসে ওর পাল্সটা চেক করলো। তারপর জিহবা আর চোখ দেখতে চাইলো।
তারপর বলল
— কিরে চোখের নিচে এত কালো পড়েছে কেনো? রাতে ঠিক মত ঘুমাস না! এখন ব্যাথাটা কোথায় করছে আমাকে হাত দিয়ে দেখা, নাকি তোর পুরো পেটেই ব্যাথা করছে?( তৌসিফ)
— ভাইয়া পেটের ব্যাথার ঔষধ দে, আর সহ্য করতে পারছি না।হ্যাঁ, পুরো পেটেই ব্যাথা করছে।
— আচ্ছা দাড়া আমি একটা পেইন কিলার কিনে আনি!
কায়ানাত মাথা নেড়ে আচ্ছা বলল। কায়নাতের বাবা আর মার মুখটা ভয়ে শুকিয়ে গেল। তারা চিন্তা করলেন এখন আবার যদি পাগলামি শুরু করে তাহলে কি একটা অবস্হা হবে ! কিভাবে ওকে থামাবে! কারন সকালে ও যা করলো তাতে বিন্দু মাত্র মনে হচ্ছে না যে ওর কোনো অসুখ হয়েছে।ওর মা ওর পেটটা হাত দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে দিচ্ছে। তিনি দেখলেন ওর পেটটা ভীষণ গরম হয়ে আছে। তিনি তাড়াতাড়ি ফ্রিজ খুলে কয়েকটা বরফের টুকরা একটা স্টিলের বাটিতে এনে ওর পেটের উপর ধরল যেনো ওর ব্যাথাটা একটু কমে। ওদিকে দাদী পেট ভরে খেয়ে বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে ঘুমোচ্ছে আর নাক ডাকছে যার শব্দ কায়নাতের রুমেও আসছে আর ফুফু বসে বসে টিভিতে ভলিউম বাড়িয়ে বাংলা সিনেমা দেখছে। তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপও নেই তার নাতনী বাঁচলো কি মরলো!
বাবা সেখানে বসেই হুজুরকে ফোন করলেন
–হুজুর আমি আশফাক চৌধুরী , আজ সকালে আপনি যার মেয়েকে পানি পড়া, তেল পড়া দিয়েছেলেন!
— ও আচ্ছা, আচ্ছা, তা কোনো সমস্যা??
–জী, আমার মেয়ের হঠাৎ করেই ভীষণ পেট ব্যাথা করছে। এই রকম ব্যাথা তো আগে কখনো করেনি, এটাকি এমনেই করছে, মানে শারীরিক সমস্যা নাকি অন্য কোনো কারনে ব্যাথা করছে ?
— উনি কি পড়া পানি খেয়েছিল?
বাবা পাশে বসে থাকা মাকে জিজ্ঞাস করলো
— ও কি পড়া পানি খেয়েছে?( বাবা)
— না, ভেবেছিলাম সুপটুকু খাওয়ার পর খাওয়াবো!( মা )
–কি যে করনা! ওকে আগে পানিটা খাওয়াবে না?!( বাবা)
মা মাথা নিচু করে ফেললেন। বাবা আবার হুজুরকে বলছেন
— হুজুর দুঃখিত, এখনো খাওয়ানো হয়নি।
–আচ্ছা তাহলে খাইয়ে দিন। তিনবেলা খাওয়াবেন। ইনশাআল্লাহ দেখবেন কমে যাবে। না কমলে ব্যাথা কমানোর ঔষধ খাওয়াবেন, আমি মাগরিবের পরে আসার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।যদি না আসতে পারি তাহলে হয়তো আগামীকাল আসবো। ইনশাআল্লাহ!! ( হুজুর)
— জী, আচ্ছা। ( বাবা)
এদিকে কায়নাত পেটের ব্যাথায় পাগলের মত করছে,ও ওর পেটে হাত দিয়ে বসে আছে আর তখনই শুনল পাশ থেকে একটা বিচ্ছ্রি কন্ঠে ফিসফিসিয়ে বলছে
— কায়নাআআআআত!!
কায়নাআআআআআআত!( বাজে ভাবে হেসে)
কায়নাত ভীতু কন্ঠে বলছে
— মা, ঐ যে কথা বলছে, কে যেনো কথা বলছে শুনেছো?? আমার নাম ধরে ডাকছে, তুমি শুনেছো?? (কায়নাত)
— কই কে কথা বলছে? ও ঘরে তোর বাবা কথা বলছে!( মা )
— নাহ, আমার নাম ধরে ডাকছে?শুনতে পাচ্ছো না ??
সেই বিছ্রি কন্ঠটি আবার বলছে —কায়নাআআআত! (হেসে)
কায়নাত ওর কান চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।
তৌসিফ ঔষধ নিয়ে এসে ওকে একটা খাইয়ে দিতে চাইলো কিন্তু ও পাগলের মতই হাত পা ছুড়ে অস্হির হয়ে পড়েছে।তৌসিফ, কায়নাত কে একটা ঘুমের ঔষধ আর একটা পেট ব্যাথার ঔষধ জোর করে খাইয়ে দিল।এতে কিছুক্ষণের মধ্যে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল কায়নাত। তখন চারিদিক শান্ত হয়ে গেল।মা হাফ ছেড়ে বসলেন। ভেবে পাচ্ছে না কি থেকে কি হয়ে গেল। কায়নাত কি আসলেই সুস্থ হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে নাকি তিনি তার মেয়েকেই হারাবেন চিরদিনের জন্য!
( চলবে)