পদ্মিনী,পর্বঃ২

পদ্মিনী,পর্বঃ২
আবির হাসান নিলয়

রাস্তার মোড়ের একটা দোকানের কাছে যেতেই
দোকানের পিচ্চি ছেলে এগিয়ে আসলো।
শাহিনঃভাই কাউরে কল দিবেন নাহি?
ছেলেটার বয়স বেশি না।কতো হবে আর..!এই
১১ বা ১২।সব সময় এই দোকানেই দেখি।
হয়তো পড়াশোনা করে না।অনেকবার জিজ্ঞাস
করতে চেয়েও করা হয়নি।ভাবছি আজ করলে
কেমন হয়।হু ভালোই হবে,আজ হাতে সময়
আছে সাথে কোনো কাজ কাম নাই তাই জিজ্ঞাস
করলে মন্দ হবে না।
শাহিনঃভাই কিছু কন না কেন?
আমিঃহ্যা,কল দেবো
শাহিনঃআইচ্ছা আপনে করেন,আমি দোকান
সামলাই।
আমিঃকথা শেষ করে তোর সাথে কিছু কথা আছে।
শাহিনঃআইচ্ছা,আপনে কথা শেষ করে মোরে
ডাকলেই এদিকে আমু।

শাহিনের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে টেলিফোন
দিয়ে পদ্মিনীর বাসায় কল দিলাম।
আমিঃআসসালামু আলাইকুম,এটা কি ডাক্তার
রফিক সাহেবের বাসা?
—এই ছেমড়া তোরে আর কতোবার কমু এটা
কোনো ডাক্তার ফাক্তারের বাসা না।আর একবার
কল দিলে তোর নামে থানাতে মামলা করবো।
আমিঃআচ্ছা করবো না,কিন্তু আপনি পদ্মিনীকে
একবার ফোনটা দেন।
—এইবার কিন্তু মাথা গরম হয়তেছে,রাখ ব্যাটা।

আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টেলিফোন
রেখে দিলো।সম্ভবত আজ মন খারাপ।না হলে
আরো কিছু গালিগালাজ করতো।আর উনার
বকা শুনতে কেনো জানিনা অনেক ভালো লাগে।
কে হতে পারে?পদ্মিনীর ভাই,চাচা নাকি তার বাবা
হবে একজন। হঠাৎ রেজাউলের কথা মনে
পড়তেই বাসার দিকে রওনা দিলাম।ব্যাটা একা
একা বসে না জানি কি করছে।টেলিফোন রেখে
দিলা এক দৌড়। বাসার সামনে আসতেই মনে
হলো শাহিনকে কিছু জিজ্ঞাস করার ছিলো।
চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুমে ঢুকলাম।
যেখানে থাকি এটা আহামরি তেমন কিছু না।
টিনের ঘর সামনে বারান্দা এবং তার কিছুটা
সামনে একটা পুকুর।
আমিঃকি রে কি করিস?
রেজাউলঃতেমন কিছু না।
আমিঃসিগারেটের প্যাকেট কই?
রেজাউলঃবিছানার নিচে।
আমিঃখাবি?
রেজাউলঃনা
আমিঃমন খারাপ নাকি?
রেজাউলঃতেমন কিছু না।এমনি ভালো লাগছে না।
আমিঃওহ

আর কোনো কথা না বলে ওকে বারান্দাতে
রেখে রুমে এসে কাদ থেকে ব্যাগ নামিয়ে সিগারেট
ধরালাম। রুমে তেমন কিছু নাই।একটা চৌকি,
একটা টেবিল আর একটা কাঠের আলনা এর
থেকে বেশি কিছু রুমের মধ্যে আটানো সম্ভব না।
সিগারেট টানতে টানতে রেজাউলের পাশে এসে
বসলাম।ছেলেটাই এমন চুপচাপ থাকে।যদিও
আমার বন্ধু না।তবে ওর সাথেই এই বাসায়
থাকতে হয়।সব কিছু ও নিজেই করে আমি
শুধু এখানে থাকি তাই।
———————————————————————-
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হতেই রেজাউল আমাকে
রেডি হতে বলল।কোনো কথা না বলে
পাঞ্জাবিটা পড়ে ওর সাথে রওনা দিলাম।
উদ্দেশ্য গফুর চাচার দোকানের এক প্লেট
ভাতের সাথে ডাউল মিশিয়ে রাতের খাবার খাওয়া।
প্রতিদিন এটাই করি,তবে মাঝেমধ্যে বিরিয়ানি
খাওয়ার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয়।সেটাও
রেজাউলের ইচ্ছায়।বয়স বেশি না আমার থেকে
হয়তো দুই-এক বছর বড় হবে।মিনিট ১৫ যাওয়ার
পর গফুর চাচার হোস্টেলে গিয়ে বসলাম।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রেজাউল বাড়ির
দিকে রওনা করলো আর আমি রাস্তার
ল্যাম্পপোস্টগুলো দেখতে।রাতের আকাশে
অন্ধকারে আচ্ছন্নতায় দূর থেকে নিবুনিবু
ছোট আলোটার প্রতি আলাদা একটা মায়া
জন্মে গেছে।ল্যাম্পপোস্টের কাছে গিয়ে
অনেকটা সময় বসার পর পদ্মিনীর কথা
মনে পড়লো।এতোটা কোমলভাবে কথা বলার
জন্য বার বার তাকেই দেখতে ইচ্ছা করে।তবে
তাকে দেখাটা ব্যাপার না।ইচ্ছা করলেই
অনুভব করি পদ্মিনী আমার সামনেই বসে
হাসাহাসি করছে।
—তোর নাম কি?
বাহ পদ্মিনী আমার সাথে তুই করেই কথা বলছে।
ভাবছিলাম আমাকে প্রথমে আপনি করে
কিংবা তুমি করে বলবে।তা না করে প্রথমেই
তুই..!তবে তুই করে বলাটাও অস্বাভাবিক না।
একই ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করি বলতেই পাড়ে।
—এই ব্যাটা কথা শুনতে পাস না?

কলার ধরে ধার করানোর পর বুঝলাম এটা
পদ্মিনী না।পুলিশ মামার কথা।
—এখানে কেনো?
আমিঃএমনি বসে আছি। আর আপনারা
এখানে কি করছেন?
—আমরা পুলিশ যেখানে খুশি সেখানে যাবো।
তোকে সব কৈফত দিতে হবে নাকি?
আমিঃআমি নিজেও তো আপনাদের মতোই
মানুষ শুধুমাত্র পুলিশ না।
—তো এখানে কি করছো?
আমিঃএমনি স্যার বসে বসে ভাবছি।
—কি?
আমিঃভার্সিটিতে পড়াশোনা করি,কিন্তু টাকা
উপার্জন করার কোনো জায়গা নাই।
—নাম কি?
আমিঃআসলটা বলবো?
—হ্যা,আর পুলিশদের সাথে রসিকতা করতে নাই।
আমিঃস্যার আমি ফারুক(মিথ্যা)
—বাবা মা নাই?
আমিঃহুম
—কি করে?
আমিঃস্যার আমি হলাম ফকির একটা ছেলে।
একটু সাহায্য করবেন তা না করে কিসব
উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করছেন।
—খাইছো কিছু?
আমিঃহুম একটু আগেই পাতলা ডাউল দিয়ে
—এটা রেখে দাও(১০০০টাকা দিয়ে)।

কোনো কথা না বলে টাকাটা রেখে দিলাম।
পকেট একদম ফাকা,না জানি কখন কি
দরকার পড়ে।
—আর এখন বাসায় চলে যাও,অনেক
রাত হয়েছে।
আমিঃঠিক আছে।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বাসার দিকে
রওনা দিলাম।এই পুলিশদের বুঝে ওটা
অনেক কঠিন।না জানি ওখানে বসে
থাকলে টাকাটাই পুনরায় নিয়ে নেয়।
বাসায় এসে ঘুমিয়ে গেলাম।

পরেরদিন……
ব্যাগ কাদে নিয়ে সেই একই জায়গাতে
পদ্মিনীর জন্য অপেক্ষা করছি।আজ
হয়তো আমার দাঁড়ানো দেরি হয়েছে।
পদ্মিনী আজ সকাল সকাল চলে আসছে।
আজ শাড়ি পরে নাই,কালো কালারের
জামার সাথে ম্যাচিং করে চুড়ি পরে
আসছে।পদ্মিনী কাছে আসতেই কিছু
একটা বলতে যাবো তার আগেই চলে
গেলো।চোখ বন্ধ করে মুচকি একটা
হাসি দিয়ে ক্যাম্পাসে আসলাম।
তবে আজ অনেকটা অবাক হলাম।
সবাই ক্যাম্পাসে বসে বসে অনেক
হাসাহাসি করছে।পদ্মিনী নিজেও বসে
হাসছে।দ্রুত বন্ধুদের কাছে গিয়ে বসলাম।
আমিঃএই ব্যাটা সবাই এতো পাগলের
মতো হাসাহাসি করছিস কেনো?
জয়ঃতুই জানিস না?
আমিঃজানলে তোকে বলতাম?
রাফিঃআগামীকাল ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান আছে।
আমিঃকি নিয়ে?
রাফিঃএমনি নৃত্য,গান,কবিতা,আবৃতি,নাটক
ইত্যাদি।প্রতিবছর হয়।
আমিঃআমাকে আগে বলিস নাই কেনো?
জয়ঃসবাই জানে,তুই অনুষ্ঠান পরে আসছিস
তাই তুই জানিস না।
আমিঃপদ্মিনী কোনটাই অংশ নেয়?
রাফিঃতোকে আর কতো বার বলবো,ওর
নাম পদ্মিনী না।
আমিঃযেটা বললাম সেটার উত্তর দে।
জয়ঃআবৃতি,নৃত্য এবং রবীন্দ্র সংগীত
রাফিঃআর তিনটাতেই প্রথম হয়।
আমিঃএবার নৃত্যে প্রথম হবে না।
জয়ঃতোরে কইছে?
আমিঃমিলাই নিস
জয়ঃব্যাটা ওর দিকে দেখ,আগে থেকেই
জানে সে প্রথম হবে। তাই কতো খুশি।
আমিঃএই খুশিটাই তো আমি চাই।
রাফিঃআচ্ছা এখন চল।সময় হয়ে গেছে।

ক্লাসে এসে বসার পর স্যার আসলো।
স্যারঃপ্রতিবছরের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠান
হবে।আমি খাতাটা একপাশ থেকে ছেড়ে
দিচ্ছি,যে যেটাই অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক
সে সেটার নাম লিখবে।আর যে অংশ নিবে
না তাদের নাম লেখার প্রয়োজন নেই।
রাত্রিঃস্যার আপনি এবার অংশ নিবেন না?
স্যারঃনা রাত্রি।
পদ্মিনীঃকেনো?
স্যারঃএমনি,শরিরটা ভালো না।
পদ্মিনীঃকিন্তু স্যার আপনি তো আমাদের
এক্সপ্রেশন। আপনি না থাকলে…
স্যারঃতোমরা সবাই ভালো করবে আমি জানি।
পদ্মিনীঃস্যার আমরা অংশ নেবো না।
স্যারঃতোমার মুখে এটা মানাই না।তুমি
আমার প্রিয় ছাত্রী তার উপর ক্লাসের
প্রথম গার্ল।
পদ্মিনীঃকিন্তু স্যার..
স্যারঃকোনো কিন্তু না,সবাই লিখো।

আর কোনো কথা না বলে স্যারের কথা
মতো সবাই যার যার মতো নাম লিখতে
লাগলো।
আমিঃবন্ধু স্যার কি আগে থেকেই এমন?
জয়ঃনারে,আগে সবার সাথে মিশুকভাবেই
আচরণ করতো।কিন্তু গত বছর খানেক হবে
এরকম হয়ে থাকে।প্রয়োজনের বেশি সবার
সাথে কথা বলে না।
আমিঃকারণ জানিস না?
জয়ঃকেউ জানে না।
আমিঃওহ,জিজ্ঞাস করিস নাই কেউ?
রাফিঃতোর ভালোবাসা অনেকবার করছে
কিন্তু কোনো উত্তর দেয় না।ও স্যারের কাছে
সবচেয়ে প্রিয় ছাত্রী।ওকেই কিছু বলে নাই
আমাদের কি বলবে।
আমিঃপদ্মিনী অনেক গুণের ও সৌন্দর্যের
অধিকারী হয়ে থাকে।
জয়ঃতোরে কইছে?
আমিঃব্যাটা তোরা সব সময় আমাকে
সন্দেহ করিস।(শব্দটা জোরে হয়ে যায়)
স্যারঃতুমি দাঁড়াবে একটু?
আমিঃআমি?
স্যারঃহ্যা
আমিঃবলুন স্যার(দাঁড়িয়ে)
স্যারঃতোমার নামটা কি জেনো?
আমিঃরবীন্দ্রনাথ
স্যারঃহাহাহা,আসল নাম কি?
আমিঃসেটা না হয় আপনাকে আড়ালে বলবো
স্যারঃএখানে বললে কি হবে?
আমিঃযদি আমার নামটি চুরি হয়ে যায়
স্যারঃঠিক আছে,আর ক্লাসে কি কথা বলো?
আমিঃআপনাকে নিয়েই বলছিলাম।
স্যারঃতা কি নিয়ে কথা বলছিলে?
আমিঃআপনি কে?সত্যিই কি হাবিবুল্লাহ
যে কিনা সবার সাথে মিশুক হয়ে থাকতো।
ছোট বড় সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলতো
নাকি আপনি স্যারের মুখোশ পড়া অন্য কেউ।
যার কপালের বেশিরভাগ সময়টাতে কপালে
ভাজ পরে থাকতে দেখা যায়,সবসময়
কিছু নিয়ে ভাবেন।কেনো আপনি এমন?
স্যারঃআগে তো তুমি আমাকে দেখো নাই।
তাহলে আমি কেমন জানলে কি করে?

কোনো উত্তর না দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
এখনি যদি সব বলে দেয়,তাহলে সবার
আড়ালে কি কথা বলবো।
পদ্মিনীঃস্যার আপনাকে কিছু জিজ্ঞাস করছেন।
ওরে আল্লাহ আমি তো এবার সত্যিই
মরে যাবো।পদ্মিনী আমাকে কথাটা
বললো।আমি জেনো আমার কানটাকেও
বিশ্বাস করতে পাড়ছি না।
রাফিঃএ সালা কিছু বলিস না কেন?(আস্তে)
আমিঃহাই পদ্মিনী (হাত তুলে)
কিছু না বলে চোখ দুটো ছোট করে
ফিসফিস করে কিছু বললো।হয়তো
রেগে গেছে।
স্যারঃতুমি ক্লাস শেষ করে আমার
সাথে বের হবে।
আমিঃঠিক আছে স্যার।
কথা বলতে বলতে খাতাটা প্রায় আমাদের
কাছে চলে আসছে।বন্ধুদের থেকে লুকিয়ে
নিজের পছন্দমত একটা নাম এবং ইচ্ছার
কথাটা লিখলাম।

ক্লাস শেষ হতেই স্যারের সাথে বাইরে আসলাম।
স্যারঃতা রবীন্দ্রনাথ,একাকী আমার
সাথে কি কথা বলতে চাও?
আমিঃতার আগে চলুন না স্যার কোথাও
বসে কথা বলি।
স্যারঃঠিক আছে চলো।
স্যার নিজের খাতাটা পিয়নকে দিয়ে
আমার সাথে ভার্সিটির দক্ষিণ পাশের
পুকুরটার ধারে বসলেন।
আমিঃআপনি কি জানেন,মনের মধ্যে
জমিয়ে রাখা কষ্ট কারো সাথে শেয়ার
করলে কষ্টটা কম হয়?
স্যারঃআমার থেকে এসব জানার জন্য
আড়ালে কথা বলতে আসছো?
আমিঃনা স্যার,আপনি আমাকে বলেন
আর না বলেন তাতে আমার কিছু যায়
আসে না।কিন্তু স্টুডেন্টরা আগের হাবিব
স্যারকে দেখতে চায়।আপনি আপনার
জন্য না হলেও ওদের জন্য হোন।
স্যারঃআর তোমার জন্য?
আমিঃআমি তো আপনাকে ঠিকঠাক
করে চিনিই না।মাত্র ৮মাসের মতো
এসেছি।হয়তো আবার চলে যাবো।
স্যারঃদেখো রবীন্দ্রনাথ তুমি..
আমিঃআমার নাম স্যার রবীন্দ্রনাথ না।
স্যারঃজানি আমি,তোমার আসল নাম
ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী।
আমিঃএটাও ভুল নাম😶
স্যারঃকিন্তু এটাই তো দেয়া আছে।
আমিঃআপনার নামটাও তো হাবিবুল্লাহ,
কিন্তু আপনি কি সেই হাবিবুল্লাহ আছেন?
স্যারঃআগামী সপ্তাহে তোমাকে আমার
বাসাতে নিয়ে যাবো।
আমিঃআজ মঙ্গল বার।
স্যারঃসমস্যা নেই।আগামী সপ্তাতেই।
আমিঃঠিক আছে।স্যার এখন চলুন
ক্যাম্পাসে গিয়ে কিছু খাই।প্রচুর ক্ষুধা লাগছে।
স্যারঃতুমি খাও আমার ক্লাস আছে।
আমিঃস্যার চলেন না,প্লিজ🙏
স্যারঃআমাকে নিয়েই যাবে তাই না?
আমিঃজ্বি স্যার
স্যারঃঠিক আছে চলো।

স্যারের সাথে কথা বলতে বলতে
ক্যাম্পাসে এসে দুটো করে সিঙ্গারা
নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।খাওয়া
শেষ করে স্যার উঠে গিয়ে আরো
দুটো অর্ডার করে আমাকে দিতে
বললো এবং সাথে বিলটাও তিনিই
দিলেন।স্যার বিল না দিলে আমি
নিজেও দিতাম না।যদি কিছু বলতো
তখন স্যারের ভয় দেখিয়ে সুন্দর করে
ক্যাম্পাস থেকে কেটে পড়তাম।
স্যারঃআসছি রবীন্দ্রনাথ
আমিঃঠিক আছে স্যার।
——————————————————————–
আর ক্লাসে ঢুকলাম না।ব্রেকটাইম
অবধি বাইরে বসিয়েই কাটিয়ে দিলাম।
আজ এমনিতেও ফুল ক্লাস হবে না।
ছুটির ঘণ্টা বাজতেই ক্যাম্পাস থেকে
বের হয়ে আসলাম।ভাবছি পদ্মিনীর
সাথে সাথে কিছুটা পথ যাবো।যদি
আমার সাথে কথা বলে বা একটু দেখে।
এসব ভাবতে ভাবতেই বন্ধুদের সাথে
পদ্মিনীকে দেখলাম।একটু না বরং অনেক
বেশি অবাক হলাম।যে মেয়ে রাফিকে
দেখতে অবধি পাড়ে না,সে আজ ওদের
সাথেই হাটছে।পরক্ষণেই মাথা গরম
হয়ে গেলো।এই ব্যাটা আমার পদ্মিনীকে
প্রেমের জালে ফাঁসাইল নাকি।দুজনের
দিকে রাগি চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছি
তখন ওরা সামনে আসলো।
জয়ঃও তোর সাথে কথা বলতে চাই
আমিঃআমার সাথে? 🤔
পদ্মিনীঃজ্বি,আপনার সাথেই।
আমিঃএই রোদে তাহলে দাঁড়িয়ে না থেকে
ক্যাম্পাসে গিয়ে বসে কথা বলি?
পদ্মিনীঃতেমন কোনো কথা না,
সবার সামনে বললে কোনো সমস্যা নেই।
আমিঃওহ,বলো।
পদ্মিনীঃস্যার কি বললো?
আমিঃজেনে কি করবে?
পদ্মিনীঃস্যারকে আমরা সবাই অনেক
ভালোবাসি।তাই জানতে চাই।
আমিঃযদি আপনি বন্ধু হোন তাহলে
বলতে পাড়ি অন্যথায় বলিবো না।
পাদ্মিনীঃথাক আমার জানতে হবে না।
আমিঃস্যার আগামী সপ্তাহে উনার
বাসায় আমাকে দাওয়াত করেছে।
পদ্মিনীঃকেনো?
কোনো কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে
রইলাম। সব যদি বলে দেয় তাহলে
বন্ধুত্ব করার কোনো কারণ বেচে থাকবে
বলে আমার মনে হয় না।
পদ্মিনীঃকি হলো কিছু বলছেন না যে?
আমিঃআমিও কিছু বলেছিলাম।
পদ্মিনীঃআমি ভেবে দেখবো।
আমিঃসেদিনই বলবো
পদ্মিনীঃঅসহ্য

আর কোনো কথা না বলে দ্রুত ভার্সিটি
ত্যাগ করলো।মেয়েটা রাগি চেহারাটা
অনেক বেশিই মায়াবী। রাগলে চোখ
দুটো ছোট করে নেয়ার পাশাপাশি এক
প্রকার বিরক্তিভাজন আচরণ করে।
যেটা অনেক বেশিই মায়াবিনীর ন্যায়।
জয়ঃদাড়িয়ে থাকবি নাকি যাবি?
আমিঃহুম যাবো
জয়ঃযা,আমরাও গেলাম।
আমিঃঠিক আছে।
রাফিঃআরও একটা কথা
আমিঃকি?
রাফিঃতুই কি সত্যি নাচ দিবি?
আমিঃতোদের কি মনে হয়?
রাফিঃতুই নাচ দিলে সবাই কিন্তু
অপমান করবে তোকে।
আমিঃএসব আগামীকাল দেখা যাবে।

পরেরদিন,,,,,,,,
ভার্সিটিতে আসতেই মধ্যবয়স্ক এক
ভদ্র মহিলা তার কাছে ডাকলেন।এখানে
আমাকে চেনা জানার মতো কেউ নেই।
আর ভদ্র মহিলাটা যথেষ্ট কোমলতার
সাথে ডাকলো বিধায় যেতে বাধ্য হলাম।
মহিলাঃতোমার কি?
আমিঃএসব কিছুর আগে আমি প্রশ্ন করি?
মহিলাঃঠিক আছে করো।
আমিঃআপনি আমাকে চেনেন?
মহিলাঃহুম,তবে পরিচয় জানি না।
আমিঃকিভাবে জানেন?
মহিলাঃমাঝে মাঝে ভার্সিটি আসলে
তোমাকে দেখি আমার বোনের মেয়ের
দিকে তাকিয়ে থাকতে।
আমিঃপদ্মিনী আপনার বোনের মেয়ে?
মহিলাঃপদ্মিনী কে?
আমিঃআপনি জানবেন না।
মহিলাঃসে যাই হোক,তুমি ওকে পদ্মিনী
বা পদ্মা বলে ডাকো আমার কিছু যায়
আসে না।তোমরা যদি দুজন দুজনকে
ভালোবাসতে পারো তাহলেই ওর
সাথে তোমার বিয়ে হবে।কিন্তু এই
গেটের সামনে ওর জন্য দাঁড়িয়ে
থাকবে এসব ঠিক না।
আমিঃওকে

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here