পদ্মিনী,পর্বঃ৩,৪

পদ্মিনী,পর্বঃ৩,৪
আবির হাসান নিলয়
পর্বঃ৩

—খালাম্মা তুমি এই বেয়াদব ছেলের
সাথে কেনো কথা বলছো?
দুজনের কথা বলার মাঝে হুট করে
কোথায় থেকে জেনো পদ্মিনী এসে
একদম কথার তেরোটা বাজিয়ে দিলো।
মাত্র খালা শাশুড়িকে ইমপ্রেস করছি।
বদজাত মেয়েটা সব নষ্ট করে দিলো।
পদ্মিনীঃআপনি খালাম্মাকে কি বলছিলেন?
আমিঃবিয়ের কথা বলছিলাম।
পদ্মিনীঃআমার খালাম্মার আগে থেকেই
বিয়ে হয়ে আছে এবং একটা সন্তান আছে।
তাই উনার আর বিয়ে করার শখ নাই।
খালাম্মাঃআরে পাগলি মেয়ে এই ছেলে
আমাকে বিয়ের কথা বলেনি।
পদ্মিনীঃতুমি চলো তো এখান থেকে।
খালাম্মাঃকেনো আর একটু কথা বলি
পদ্মিনীঃএকদম না,চলো আমার সাথে।

একপ্রকার টানতে টানতে তার খালাম্মাকে
সেখান থেকে নিয়ে গেলো।ভেবেছিলাম
অনেক বেশিই নরম হবে,কিন্তু দিন দিন
সে পাক্কা বদজাত মেয়েতে রুপান্তরিত
হচ্ছে।সে যাই হোক,দাঁড়িয়ে না থেকে
মঞ্চের দিকে এগিয়ে গেলাম।অনেক
বেশিই সুন্দর করে সব কিছু সাজানো
হয়েছে।ভার্সিটির সকল স্টুডেন্টস
এসে হাজির হয়েছে এখানে।একদম
পেছনের একটা চেয়ারে বসে আনমনে
ভাবছি পদ্মিনীকে কিভাবে এখান
থেকে নিয়ে যাবো।ভালোভাবে যাবে
নাকি কিডন্যাপ করে নিতে হবে।কিন্তু
আমি তো ওকে কিডন্যাপ করতে চাই
না।আমি চাই ও আমার সাথে হাসিখুশি
থাকুক। কিন্তু ওর পরিবার আমাকে
মেনে নিবে না এটা আমি অনেক
আগে থেকেই শিওর।
—কিরে কি ভাবছিস একা একা.?

কাদের উপর হাত দিয়ে কথাটা বলতেই
পেছন ফিরে দেখলাম জয় আর রাফি
দাঁড়িয়ে আছে সাথে দুজনকে অনেক
সুন্দরও লাগছে।হয়তো কোনো মেয়ে
পটানোর শখ জেগেছে।
আমিঃতেমন কিছু না।ভাবছি আর
হয়তো বেশিদিন এখানে থাকতে হবে না।
রাফিঃকেনো?
আমিঃচলে যাবো পদ্মিনীকে নিয়ে।
জয়ঃও রাজি হয়েছে?
আমিঃনা
রাফিঃতাহলে?
আমিঃএখন না হলেও পরে রাজি হবে।
রাফিঃকিন্তু তুই যাবি কই?
আমিঃযাবো কই মানে?
রাফিঃসালা তুই নিজেই ঠিকমতো
চলতে পারিস না,ওকে নিয়ে কিভাবে
চলবি সারাজীবন?
আমিঃভালোবাসা দিয়ে।
জয়ঃহালাই পাগল একটা।
আমিঃভালোবেসে পাগল হলে তাকে
পাগল বলে না।তাকে বলে মজনু।
রাফিঃবন্ধু তোর নামটা বল আজ
আমিঃমজনু
জয়ঃধুর ব্যাটা।

আর কোনো কথা না বলে দুজন
দুপাশে বসে রইলো।অনেকটা
সময় যেতেই শুরু হলো কবিতা
এবং আবৃত্তি।যে যার মতো করে
কবিতা এবং আবৃত্তি করে শোনাতে
লাগলো।দীর্ঘ সময় ডাক আসলো
পদ্মিনীর।
—এবার বাংলা ডিপার্টমেন্ট থেকে
জান্নাতুল মাওয়া কবিতা নিয়ে
হাজির হচ্ছে।

হ্যা পদ্মিনীর নাম জান্নাতুল মাওয়া।
কিন্তু কেনো জানিনা পদ্মিনী বলে
ডাকতেই আমার বেশি ভালো লাগে।
পদ্মিনী নামটা যে আহামরি বড় কিছু
তা কিন্তু না।দাদু(ঠাকুমা)বলতো তোর
সাথে পদ্মিনীর বিয়ে হবে।প্রথমে নামটা
আমার কাছেই কেমন একটা লাগতো।
কিন্তু তিনি বলতেন,নামটা কিছুই না।
নামের অর্থ এবং গুণগুলোই আসল।
দাদু বলতো পদ্মিনী নামের অর্থ
হলো;বন্ধুত্বপূর্ণ, সক্রিয় এবং অনেক
গুণের অধিকারী।যদিও আমি এসব
বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু যখন তিনি
পদ্মিনীকে দেখিয়ে বললো,“তোর
এই মেয়েটার সাথেই বিয়ে হবে।”
প্রথমদিকে আমি এসব কিছুই
ভাবতাম না।কিন্তু দিন দিন
মেয়েটার কথা ভাবতে ভাবতে
কবে যে ভালোবেসে ফেলেছি নিজেই
বলতে পাড়বো না।দাদু যখন শেষ
নিশ্বাস ত্যাগ করে তার আগের দিন
পদ্মিনীকে দেখতে চেয়েছিলো।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা কেউ
তখন পদ্মিনীর ঠিকানা জানতাম
না।অনেক কথাই আপনাদের
বলে দিলাম।এখন বর্তামানে এসে
পদ্মিনীর কবিতা করা শুনি।

বর্ষা
লেখায়ঃঅনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
বর্ষা এসে হাত ছোয়ালো কয়েক গাছা চুলে,
তাকে বললাম ..
“সর্দি হবে জল বসলে চুলে!
হ্যাচ পেচিয়ে হাঁচবো ভীষণ, দুচোখ হবে লাল!”
“ফের ভেজাবো”
বর্ষা আমায় জানিয়েছিল কাল।

কাল কেটেছে আজ হয়েছে, বৃষ্টি গেছে থেমে,
আমিও আমার স্বভাবমতো ফের পড়েছি প্রেমে।
রোদের প্রেমে ঈষৎ ঘেমে,
চষেছি পাড়াময়
বর্ষা রোদের পাত্তা পাবে,
তাই কখনো হয়!

চিলতে হেসে মিথ্যে কেশে
খাঁকরে নিয়ে গলা ,
খুচরো গুনে দোকান থেকে কিনেছি হজমোলা।
দুপুর থেকে বিকেল হল বিকেল থেকে সাজ
বর্ষা বোধহয় ব্যস্ত আছে
তাই এলোনা আজ।
সন্ধ্যা শেষে নিরুদ্দেশে ছুটিযে দিয়ে গাড়ি,
এমন সময়” may I come in? একটু আসতে পারি”
রিনরিনে এক কন্ঠ, আমার এ কণ্ঠস্বর চেনা!
বর্ষা বলে কি ভাবছিলেন আজকে আর আসবো না?॥
এই দেখে নাও আজও তোমার চুলের ডগা ছুঁয়ে,
নামছি আমি ছদ্দবেশী বৃষ্টি কণা হয়ে
ভিজিয়েছি চুল সর্দি-কাশি যাই হয়ে যাক তাও!
আজকে শুধু আর একটিবার আমায় মেখে নাও!

মখমলি সেই স্পর্শ তোমার, কাছে সারা গা,
শরীর আমার অবশ গাড়ি আর যে চলে না!
আবছা আলোয় বর্ষাদিনের বরসা প্রবাহিনী,
বর্ষা আমি তোমার কাছে আজন্মকাল ঋণী।

কেউ ডাকেনি এমন করে যেমন করে ঝরো,
আশ্লিষ্ঠ আধ ভেজা গায়ে, তাইতো বলি আরো।

আর থাকেনা হুঁশ,
চলে যায় তেপান্তরের মাঠে।
বসা তখন আলতো করে স্পর্শ করে ঠোঁটে ,
ঠিক থাকেনা হয়তো কিছুই প্রেক্ষাপটের দাবি,
বর্ষা তবু ভিজে গেল সূর্য প্রেমিক কবি।

পুরোটা কবিতা পড়ার সময়
পদ্মিনীর দিকে কেমন জানি একটা
আকর্ষিত হচ্ছিলাম।মনে হচ্ছিলো
এই বুঝি পদ্মিনী আমাকেই ইশারা
করছিলো,তার কাছে যাওয়ার জন্য।
সবাই যে যার মতো পদ্মিনীর কবিতা
শুনে হাত তালি দিচ্ছে।আবার কেউ
কেউ তাকে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে পদ্মিনীর কাছে
গেলাম।মেয়েটা যার সাথেই কথা বলুক
না কেনো,হাসিটা জেনো তার মুখে
লেগেই থাকে।
আমিঃতোমার সাথে একটু কথা ছিলো।
পদ্মিনীঃহ্যা বলুন
আমিঃতোমাকে বিয়ে করতে চাই।

বোতলে করে জল খাচ্ছিলো আমার
কথা শুনে জল খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে
তার খালাম্মার কাছে গিয়ে কিছু বলতে
লাগলো।আমার থেকে দূরে যাওয়াই
বুঝতে পারছিলাম না কি বলছে।কিন্তু
খুব করে আন্দাজ করতে পারছিলাম
আমাকে নিয়েই বলছে।৫ মিনিট যাওয়ার
পর ফিরে এসে বলতে শুরু করলো,
পদ্মিনীঃআমাকে দয়া করে এসব
বলবেন না।জানিনা আপনি কেনো
আমার পিছে লেগে আছেন।জানিনা
আপনি বা হয়তো অন্য কেউ বাসার
ল্যান্ডলাইনে কল দিয়ে বিরক্তি করে।
বাসায় একমাত্র মেয়েই আমি।তাই
কিছু হলেই আমার উপর দিয়ে সবার
রাগটা বয়ে যায়।আর আজ আপনি
বলছেন আপনাকে বিয়ের কথা।
আমি নিজের ইচ্ছাতে আপনি কেনো,
কাউকেই বিয়ে করতে পারবো না।
পরিবার যা করবে সেটাই।আর আমার
পরিবার আগে থেকেই আমার বিয়ে
ঠিক করে রেখেছে।
আমিঃকে সে?
পদ্মিনীঃআমার চাচ্চুর দুঃসম্পর্কের
এক আত্মীয়।
আমিঃআমি তার পরিচয় জানতে চেয়েছি।
পদ্মিনীঃআমি কিভাবে পরিচয় জানবো।
আমি কখনো দেখেছি নাকি।
আমিঃনা দেখেই বিয়ে করতে রাজি হয়ে
গেলে?ছেলেটা যদি খারাপ হয়?
পদ্মিনীঃআমি এসব জানতে চাই না।
আপনি আমার পিছু আসবেন না ব্যস।
আমিঃযদি তোমার পিছু না ছাড়ি?
পদ্মিনীঃভার্সিটি আসা ছেড়ে দেবো
আমিঃওকে
পদ্মিনীঃকি ওকে?
আমিঃছেরে দাও আসা
পদ্মিনীঃধুর

রাগ দেখিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
অনেক বেশিই রেগে আছে।তাই আর
রাগালাম না।পরে দেখা যাবে অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণ না করেই বাসায় চলে যাবে।
সে যায় হোক খালাম্মার দিকে একবার
তাকাতেই দেখলাম মুচকি হাসাহাসি
করছে।মনে মনে ভাবলাম খালাম্মার
মাথায় হয়তো কোনো সমস্যা আছে।
তা না হলে সকালে বললো প্রেম করে
বিয়ে করতে আর এখন পদ্মিনী বলছে
তার নাকি আগে থেকেই বিয়ে ঠিক হয়ে
আছে।একরাশ হতাশ হয়ে বন্ধুদের
জায়গাটাতেই ফিরে গেলাম।
জয়ঃকিরে কই গেছিলি?
আমিঃবিয়ের প্রস্তাব দিতে গেছিলাম।
রাফিঃসালা মজা লস আমাগো লগে?
আমিঃতোদের সাথে মজা নিয়ে আমার
কোনো প্রকার লাভ আছে?
জয়ঃসে যায় হোক,তা প্রস্তাবের কি হলো?
আমিঃনা করে দিছে।
রাফিঃতাহলে এখন কি করবি?
জয়ঃএখান থেকে চলে যাবি?
আমিঃগেলে তো পদ্মিনীকে সাথে
নিয়েই এখান থেকে যাবো।
রাফিঃদোস্ত এবার আমার গানের
পালা আসছে।আমি গেলাম এসে
তোর মত শুনবো কি করবি এখন।
আমিঃযা আর যতোটা পাড়িস খারাপ
করে গান পরিবেশন করিস।
রাফিঃসালা

রাফি উঠে গিয়ে কয়েক সেকেন্ড
সব কিছু ঠিক করে তাহসানের
আলো আলো গানটা গাইলো।
সবার গান গাওয়া প্রায় শেষের
দিকে।পদ্মিনী নিজেও রবীন্দ্র
সংগীত “যে রাতে মোর দুয়ারগুলি
ভেঙলো ঝড়ে”গানটা বললো।
মেয়েটার মধ্যে কিছু একটা আছে
যার জন্য তার সবকিছুই অনেক
সুন্দর আর গোছালো হয়।
—এবার সবার মাঝে গান নিয়ে
আসছে রবীন্দ্রনাথ।
স্যারের কথাটি শুনে সবাই অনেক
বেশিই হাসাহাসি করছে।স্যার ম্যামরাও
বাদ যায়নি।পদ্মিনী নিজেও হেসে
দিয়েছে।তবে আমি খেয়াল করছিলাম
হাবিব স্যারের দিকে।তিনি নিজেও
আমার দিকেই কেমন জানি তাকিয়ে
আছে।হয়তো মাথায় উনার অন্য চিন্তা
ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে।তবে মুখটাতে
জেনো হাসির ছিটেফোঁটাও নাই।
ময়লাযুক্ত পুরানো একটা পাঞ্জাবি
পরে মঞ্চে উঠে প্রথমেই হাবিব স্যারের
কাছে গেলাম।
স্যারঃআশা করি সুন্দর করে গাইবে।
আমিঃসবার মুখে হাসি ফুটলেও
আপনার মুখটা সেই আগের মতোই
রয়ে আছে।
স্যারঃযেদিন আমার বাসায় যাবে তখন
ঠিক বুঝতে পাড়বে আমার এই হাসিটা
কেনো আর কোথায় আটকে পরে আছে।
আমিঃঠিক আছে স্যার।
স্যারঃAll the best রবীন্দ্রনাথ।

মুচকি একটা হাসি দিয়ে স্পিকারটার
কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।অনেকদিন
পর স্পিকারের সামনে দাঁড়িয়ে গান
বলছি।চোখটা খানিক সময় বন্ধ
করে নিয়ে দীর্ঘ একটা নিশ্বাস নিয়ে
মাথা থেকে সবকিছু ঝেড়ে ফেললাম।
স্পিকারের লোকজনকে বলে দিলাম
কোন গানটা বলবো।এবার স্পিকারটা
ডান হাত দিয়ে ধরে,লোপামুদ্রা মিত্র-এর
২০০৯ সালে প্রকাশিত হওয়া গানটা
বললাম……

ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
আমার আপনহারা প্রাণ, আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
আমার আপনহারা প্রাণ, আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
তোমার অশোকে কিংশুকে
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে
তোমার ঝাউয়ের দোলে
মর্মরিয়া ওঠে আমার দুঃখরাতের গান……
(আরো আছে)

পুরোটা গান শেষ করতেই আচমকা
সবার হাত তালির আওয়াজ শুনতে
পেলাম।হয়তো কেউ আশা করেনি
আমার মতো উদ-ঘুটে ছেলেটা
এমন করে গান গাইতে পারে।
হাবিব স্যারের দিকে লক্ষ্য করতেই
দেখলাম তার গাল দুটো ভেজা।
আরো ভালো করে দেখলাম উনার
চোখের জলে গাল ভিজে গেছে।
কিন্তু আমি তো কোনো ওরকম
বিরহের গান বলিনি।আর স্যার
নিজেও তো বিবাহিত নাকি বিয়ের
আগে ছ্যাকা খাইছে নাকি যার
জন্য পুড়ানো গান শুনে প্রেমিকার
থুক্কু এক্স প্রেমিকার কথা মনে
করে চোখে জল চলে আসছে।
সে যাই হোক,মঞ্চ থেকে নেমে
আসবো তখন প্রিন্সিপাল স্যার
অভিনন্দন জানালেন। অনেকেই
বলছে;ফাটিয়ে দিছো রবীন্দ্রনাথ।”
কিন্তু তাদের কথায় কি আসে যায়।
বন্ধুদের কাছে বসতে যাবো তখন
পদ্মিনী সামনে এসে বললো;
পাদ্মিনীঃতুমি তো অনেক সুন্দর
করে গান গাইতে পারো।কোথায়
থেকে শিখলে?

চলবে………..

“পদ্মিনী”
পর্বঃ৪
#আবির হাসান নিলয়

জান্নাতঃকোথা থেকে শিখলেন এমন গান?
আমিঃকেনো বলবো তোমাকে?
জান্নাতঃআমি শিখতে চাই।
আমিঃবিয়ে করো,ফ্রিতে শিখিয়ে দেবো।
জান্নাতঃআপনার কি আজাইরা কথা
ছাড়া আর কোনো কথা নাই?
আমিঃআছে তো
জান্নাতঃতো সেগুলোই বলুন
আমিঃআমার সাথে বন্ধুত্ব করবে?
জান্নাতঃকরতে পাড়ি তবে শুধুমাত্র বন্ধু
আমিঃকেনো অন্য কিছু হওয়ার
ইচ্ছে আছে নাকি?
জান্নাতঃআজ্ঞে না,আপনি নিজেই এসব
বলে বলে মাথা খাচ্ছেন।তাই আগে
থেকে বলে রাখছি।
আমিঃঠিক আছে।তো করবে বন্ধুত্ব?
জান্নাতঃআমাকে গান শেখাবে?
আমিঃহুম
জান্নাতঃতাহলে আমিও রাজি।
আমিঃআমি আবির হাসান নিলয়
জান্নাতঃকিন্তু সবাই তো অন্য নামে…
বুঝতে পেড়েছি।
আমিঃকি?
জান্নাতঃআপনি আমাকে বোকা
বানিয়ে ভুলভাল নাম বলছেন।
আমিঃতোমাকে ভুল বলতে যাবো কেনো?
জান্নাতঃকারণ আপনি সবাইকে মিথ্যা
কথা বলেন তাই।
আমিঃশোনো,সবাইকে মিথ্যা বললেও
তোমাকে মিথ্যা বলি নাই।
জান্নাতঃকেনো এখানে আসছেন?
আমিঃতোমার জন্য
জান্নাতঃধুর,কথায় বলবো না।
আমিঃনাচে কি অংশগ্রহণ করবে?
জান্নাতঃআমার ইচ্ছা
আমিঃহাত তালি দিতাম 😇
জান্নাতঃবেয়াদব ছেলে
আমিঃইউ টু
জান্নাতঃতোরে আমি😤

কিছু বলতে চেয়েও বললো না।
সেখান থেকে চলে গেলো।হয়তো
খালাম্মার কাছে নালিশ জানাতে
গেছে।এতে আমার এতোটুকুও
যায় আসে না।আমি ওকে ভালোবাসি
আর ওকেই বিয়ে করবো।
——————————————————————-
অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে,কিন্তু
পদ্মিনীর কোনো খবর নাই।অনেকবার
খুঁজলাম কিন্তু কোথাও পেলাম না।
উঠে গিয়ে রাত্রির কাছে গেলাম।
আমিঃপদ্মিনী কোথায়?
রাত্রিঃপদ্মিনী কে?
আমিঃতোমার বান্ধুবী জান্নাত
রাত্রিঃওর নাম পদ্মিনী হলো কবে থেকে?
আমিঃআমার সাথে রিলেশনের পর থেকে
রাত্রিঃকিহ,ও তোমার সাথে রিলেশনে?
আমিঃআমি যেটা বললাম সেটার
আগে উত্তর দাও।
রাত্রিঃআন্টির সাথে বাসায় চলে গেছে
আমিঃকেনো?
রাত্রিঃজানিনা,আন্টিকে জোর করে
নিয়ে গেলো তাই জানি।
আমিঃওহ আরেকটা কথা
রাত্রিঃকি?
আমিঃবসে বলি?
রাত্রিঃহুম বসো

পাশের একটা চেয়ারে বসলাম।
আমিঃপদ্মিনীর আন্টির কি মাথায়
কোনো গণ্ডগোল আছে?
রাত্রিঃআবার পদ্মিনী?
আমিঃআরে বা** তুই বল
রাত্রিঃওর আন্টিকে চেনো তুমি?
আমিঃচিনলে কি জিজ্ঞাস করতাম?
রাত্রিঃপুলিশ অফিসারের স্ত্রী। আর
তুমি উনার মাথায় গণ্ডগোল বলছো..!
আমিঃবাহ চমৎকার
রাত্রিঃকি?
আমিঃতুমি বুঝবে না,আর আমাদের
বিয়েতে তোমাকে পাক্কা ইনভাইট করবো।
রাত্রিঃএকটা কথা ছিলো
আমিঃবলো
রাত্রিঃতোমার আসল নাম কি?
আমিঃহুমায়ন
রাত্রিঃঢপ দিচ্ছো?
আমিঃহোপ,তুমি আমার যতোটুকু
উপকার করলে আমার বোন হলেও
করতো না।যদিও আমার বোন নেই।
রাত্রিঃআর কিছু বলবে?
আমিঃধন্যবাদ
রাত্রিঃতোমার বাসা কোথায়?

শুনেও না শোনার মতো করে সেখান
থেকে চলে আসলাম।বন্ধুদের কাছে
গিয়ে বললাম জান্নাত অংশগ্রহণ নিবে
না।কিন্তু দুজন কিছুতেই বিশ্বাস করছে
না জান্নাত বাসায় চলে গেছে।অনেক
বোঝানোর পরেও যখন দুজন মানতে
নারায তখন ধরলাম বাজি।
রাফিঃযদি ও নাচে অংশ নেয় তাইলে
তুই তোর পরিচয় দিবি।
আমিঃআর যদি না পাড়িস?
জয়ঃযা বলবি তাই করবো।
আমিঃপাক্কা?
রাফিঃপাক্কা।

অনুষ্ঠান শেষ হতে আরো ঘণ্টা
খানেক সময় লাগলো।আর এদিকে
সবাই জানেন পদ্মিনী অনেক আগেই
ভার্সিটি থেকে চলে গেছে।সেই হিসাবে
দুজন হেরে গেছে।দুজনকে কি করতে
বলা যায় সেটা ভাবতে ভাবতেই স্পিকার
দিয়ে আমাকে ডেকে নিলো।গানে প্রথম
হওয়াতে পুরষ্কার পেলাম।আর পদ্মিনী
আবৃত্তিতে প্রথম হয়েছে।এছাড়া আরো
অনেকে অনেক প্রতিযোগিতায় প্রথম
হয়েছে।সেসব না জানাই ভালো।
মঞ্চ থেকে পুরষ্কার এনে বন্ধুদের
কাছে গেলাম।
আমিঃতো যা বলবো সেটাই করবি?
রাফিঃওয়াদা যখন দিছি করতে
তো হবেই।
আমিঃআজ না,অন্য একদিন বলবো।
জয়ঃকেনো,আজ বললে কি হবে?
আমিঃএমনি বলবো না।
জয়ঃঠিক আছে।আচ্ছা এখন আমি
বাসায় যাবো।
রাফিঃআমিও যাবো।তুই কি করবি?
আমিঃপদ্মিনীর বাসাতে কল দিয়ে
একটু বিরক্তি করবো।
রাফিঃতোরে পাইলে কিন্তু সেই
রকম মাইর দিবে।
আমিঃদেখা যাক,আবার এমনও
হতে পারে তারা তাদের মেয়ের
ঠিকমতো খেয়াল রাখতে পারে না।
জয়ঃমানে?
আমিঃএমনও হতে পারে,কেউ ওকে
কিডন্যাপ করে নিয়ে গেলো।
জয়ঃসালা পাগল,ওরে কিডন্যাপ
করতে গেলে সে নিজেই কিডন্যাপ
হয়ে যাবে।
আমিঃহুম,সেটা জানি।
রাফিঃআচ্ছা আমি গেলাম।
আমিঃহুম যা।আমিও যাবো।

আর কথা না বাড়িয়ে ভার্সিটি থেকে
বের হয়ে ল্যান্ডলাইন থেকে কল
দেয়ার জন্য দোকানে গেলাম।
আমাকে দেখতেই শাহিন এগিয়ে
আসলো।
শাহিনঃকাউরে কল দিবেন ভাই?
আমিঃহুম
শাহিনঃআইচ্ছা আপনে কথা কন
আমি ভিতরে আছি।
আমিঃতোকে একটা প্রশ্ন করার ছিলো
শাহিনঃকরেন
আমিঃতুই সব সময় এখানে থাকিস কেনো?
শাহিনঃতো কোথায় থাকবো?
আমিঃস্কুলে পড়তে যাস না?
শাহিনঃনা,আব্বার অনেক বয়স
হয়েছে তাই আব্বার লগেই দোকান
সামলাই।আর আমাগো পড়া টড়া হইবো
না ভাই।
আমিঃকেনো হবে না?
শাহিনঃআমার এই পড়া ভালো লাগে না।
আমিঃবুঝতে পাড়ছি।তুই যা আমি
কথা বলা শেষ হলে টাকা রেখে যাবো
শাহিনঃআইচ্ছা।

শাহিন চলে যেতেই পদ্মিনীর ল্যান্ডলাইনে
কল দিলাম।তিনবার রিং হতেই রিসিভ
করলো।কিছু বলতে যাবো কিন্তু ওপাশ
থেকে চেঁচানোর আওয়াজ পেলাম..
—আপনারা যা খুশি করেন,আমি
তো কেউ না।যার থেকে মত নিবেন।
কোনো মহিলার কথা হবে।এসব
ভাবনার ছেদ পড়িয়ে ওপাশ থেকে
বলে উঠলো…
পদ্মিনীঃকে বলছেন?
আমিঃআমি নিলয়
পদ্মিনীঃকোন নিলয়?
আমিঃযে তোমার সাথে বন্ধুত্ব করার
জন্য একপ্রকার মরিয়া হয়ে পড়েছে।
পদ্মিনীঃআমি কারো সাথে বন্ধুত্ব করি না।
আমিঃপদ্মিনী,আমি জানি তুমি আমার…
পদ্মিনীঃপদ্মিনী কে?
আমিঃতুমি
পদ্মিনীঃফাজলামোর একটা লিমিট থাকে।
কাকে কল দিতে কাকে কল দিছেন।এখানে
পদ্মিনী নামের কেউ থাকে না।
আমিঃজানি আমি,কিন্তু তার আসল
নাম জান্নাতুল মাওয়া।নাকি সেউ
আপনাদের বাসায় থাকে না।
পদ্মিনীঃআমাকে কখনো পদ্মিনী
বলে ডাকবেন না।
আমিঃডাকলে কি খুব রেগে যাবে?
পদ্মিনীঃকেউ না,একটা পাগল
কল করেছে।
আমিঃতুমি আমাকে পাগল বানিয়ে
দিলে..!সমস্যা নেই যদিও আমি তোমার
জন্যই পাগল।
পদ্মিনীঃদেখুন..
আমিঃআমরা একই ডিপার্টমেন্ট তাই
তুমি করে কথা বলো।না হলে বাসায়
গিয়ে বলবো তোমার সাথে আমার
ওইসব হয়েছে।
পদ্মিনীঃওয়েট,ওইসব মানে?
আমিঃযেগুলো বিয়ের পরে হওয়ার
কথা থাকে সেগুলো।
পদ্মিনীঃআপনি কল রাখবেন?
আমিঃরাখতে পারি যদি আমার
একটা কথা শুনো।
পদ্মিনীঃকেনো শুনবো?
আমিঃতুমি কি সব ছেলের সাথেই
এমন করে কথা বলো?
পদ্মিনীঃযার সাথে ইচ্ছা আমি বলবো।
আপনাকে কেনো বলতে যাবো?
আমিঃআজ থেকে আর কোনো ছেলের
সঙ্গে এমন করে কথা বলবে না।
পদ্মিনীঃআপনি কে ভাই?যার কথা
শুনতে হবে আমাকে?
আমিঃঐ ছেমড়ি আমি তোর কোন
কালের ভাই লাগি রে?
পদ্মিনীঃকি বললেন আমাকে?😤
আমিঃআরো অনেক কিছু বলবো,
তোর কি মনে হয় আমি ভালো করে
কথা বলছি তাই কিছুই জানি না?
আজ থেকে তুমি করে কথা বলবি
সেটাও শুধু আমার সাথেই।যদি
না বলিস তোর এবং তোর পরিবারের
সবাইকে মেরে দেবো।
পদ্মিনীঃতুই আর কখনো আমার
সামনে আসবি না জানোয়ার।

আমাকে কিছু বলার সুযোগ না
দিয়েই কল কেটে দিলো।হয়তো
অনেক বেশিই রেগে গেছে।আর
কেনো জানি ওকে রাগাতে আমার
একটু বেশিই ভালো লাগে।আর
কিছু না ভেবে টেলিফোনের সাথে
টাকা রেখে বাসার দিকে রওনা
দিলাম।রেজাউল বাসায় নেই।
গতকালই গ্রামের বাসায় গেছে।
আসতে আরো দুদিন লাগবে।
আমাকে খাওয়ার জন্য কিছু
টাকা দিয়ে গেছে।ছেলেটা একদম
আলাদা।চেনা নেই জানা নেই,হুট
করে একদিন এসে বললাম,“আমি
তোর সাথে থাকতে চাই।”সেদিন
থেকেই ওর সাথে পরে আছি।
মাঝে মাঝে মনে হয় অনেক বিরক্তি
করছি ওকে।কিন্তু আমার কাজ না
হওয়া অবধি থাকতেই হবে।

পরেরদিন,,,,,,,,,,,,
ভার্সিটি যাবো তখন গাড়ি থেকে
কয়েকজন গার্ড এসে দাঁড়ালো।
—আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে।
আমিঃকোথায়?
—স্যার প্লিজ জিজ্ঞাস করবেন না।
আমিঃগেলে আমাকে আসতে দিবে কখন?
—১৫ মিনিট পর
আমিঃঠিক আছে চলো।

আর কথা না বাড়িয়ে উঠে পড়লাম
তাদের সাথে।খানিকটা দূরে আসতেই
আমার কিছু ছবি তুললো।
আমিঃছবি তোলার জন্য আসছি?
—শুধু ছবি না।
আমিঃতো?
—এই টাকাগুলো দিয়েছেন।
আমিঃএসব লাগবে না।
—কিন্তু….
আমিঃএকটা কাজ করতে পারবে?
—কি কাজ?
আমিঃহিট মি
—সরি স্যার
আমিঃআরে মারো আমাকে
—আমরা আমাদের জব হারাতে
চাই না।স্যার প্লিজ আপনি টাকা
নিয়ে চলে যান।
আমিঃনা মারলে সব বলে দেবো।
আর এসব শুধু আমাদের মাঝেই
থাকবে।কেউ জানবে না।
—কিন্তু স্যার…
আমিঃতুই মারবি নাকি নাকি জব
থেকে আউট করানোর ব্যবস্থা করবো
—প্লিজ স্যার এটা করবেন না।
আমিঃতাহলে মার।

আর কোনো কথা না বলে মারতে
শুরু করলো।কিন্তু তাদের খেয়ে
ছোট বাচ্চাদেরও কিছু হবে না।
তাই ধমক দিয়ে জোরে মারতে
বললাম।মিনিট ৫মার খাওয়ার
পর সবাইকে থামতে বলি।
এখানে যা টাকা আছে তার
মধ্যে থেকে আমাকে ১ হাজার
টাকা দিয়ে তোমরা সবাই নিজেদের
মধ্যে ভাগ করে নাও।
—ঠিক আছে।আপনাকে কি ভার্সিটি
অবধি এগিয়ে দিয়ে আসবো?
আমিঃসেটার দরকার নেই
—ওকে

কোনো কথা না বাড়িয়ে খুরাতে
খুরাতে একটা রিক্সা নিয়ে ভার্সিটি
আসলাম।আজ পদ্মিনীকে ভয়
দেখানোর জন্য এসব করা।
ক্যাম্পাসে বসে আছি তখন
জয় আর রাহুল আসলো।এসেই
জিজ্ঞাস করে বলতে লাগলো
কি হয়েছে,আর কিভাবে হলো।
কোনো উত্তর না দিয়ে পদ্মিনীর
জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
প্রায় ১০ মিনিট যাওয়ার পর
পদ্মিনী আসলো।দেখানোর জন্য
জয় এবং রাহুলকে ধরে দাঁড়ালাম।
এই মুহূর্তে অভিনয় করলে মোটেও
খারাপ হবে না।আগের থেকে অনেক
বেশিই খোরাতে খোরাতে পদ্মিনীর
কাছে যেতে লাগলাম।
আমিঃতোমার সাথে কথা আছে
পদ্মিনীঃআপনার এসব কিভাবে হলো?
আমিঃসেসব জানার জন্যই বলছি
পদ্মিনীঃজানার জন্য মানে?
আমিঃজয় রাফি তোরা যা আমি
পরে সব বলবো তোদের।
জয়ঃঠিক আছে।

দুজন চলে যেতেই পদ্মিনীকে বললাম
ক্যাম্পাসে এসে বসতে।খোরাতে
খোরাতে হাটতেই পদ্মিনী আমার
এক হাত ওর কাদে নিয়ে আস্তে
আস্তে হাটতে লাগলো।এই মেয়ে
যতোই রাগ করুক না কেনো।মনের
মধ্যে সামান্যতম অহংকার এবং
হিংসা নেই।আর এটার জন্যই
হয়তো আমি ওকে এতো ভালোবাসি।
যার জন্য এখানে পরে আছি এক
পাগ সন্ন্যাসীর ব্যস ধরে।পদ্মিনী
আমাকে বসিয়ে দিয়ে সে নিজেও
আমার সামনে বসলো।
পদ্মিনীঃএসব কি করে হলো?
আমিঃএটা তো আমার করার
কথা ছিলো।কেনো আমাকে এমন
করে মারালে?
পদ্মিনীঃকিহ,আমি আপনাকে
মারাতে যাবো কেনো?
আমিঃতাহলে তারা মারার সময়
বলছিলো কেনো জান্নাতকে জেনো
আর বিরক্তি না করি।
পদ্মিনীঃতাহলে এসব মামুন করিয়েছে।
আমিঃমামুন কে?
পদ্মিনীঃআমার কুত্তা চাচাতো ভাই।
গতকাল আপনি আমাকে কল দিছিলেন
সেটা পরিবারের সবার সাথে কথা বলতেই
কুত্তাটা বলছিলো ও আপনাকে মারবে।
আমি অনেকবার বারণ করেছিলাম
কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি কিছুই
জানতাম না।
আমিঃআমি তোমার থেকে এমনটা
মোটেও আশা করি নাই।
পদ্মিনীঃপ্লিজ আমাকে ভুল বুঝবেন না।
আমিঃতুমি কি জানো এখন আমার
কাছে ঔষধ খাওয়ার অবধি টাকা নেই।
পদ্মিনীঃআমার সাথে এখন আপনি
হাসপাতালে যাবেন।
আমিঃতোমার সাথে আমার এখন
কথা বলাও যাবে না।
পদ্মিনীঃআমি কি করেছি?যা করার
আমার চাচাতো ভাই করেছে।
আমিঃএসব নিয়ে আমি আর কোনো
কথা বলতে চাই না।না জানি আবার
কখন আপনার সাথে আমাকে দেখে
আবার মারে।

অনেকটা সময় কথা বলার মাঝে
রানা ফুল নিয়ে আসলো।পদ্মিনীর
মনটা অনেক বেশিই খারাপ হয়ে
গেছে।ভাবছে সত্যি আমাকে তার
চাচাতো ভাই মেরেছে।
রানাঃভাই তোমার এটা কিভাবে হলো?
আমিঃউনি করছেন এসব
পদ্মিনীঃবললাম তো আমি এসবের
কিছুই জানিনা।
আমিঃভাই তো আপনার ছিলো
রানাঃআপু আজ কি ফুল নিবেন?
পদ্মিনীঃনা।
আমিঃদুটো কৃষ্ণচূড়া ফুল দে।
রানাঃদুটো নাই ভাই,একটা আছে।
আমিঃএকটাই পদ্মিনীকে দে
পদ্মিনীঃআমার নাম জান্নাত।আর
কতোকার বলতে হবে?
আমিঃওকে জান্নাতকে দে
পদ্মিনীঃআমি ফুল নেবো না।আর
চলেন না হাসপাতালে।
আমিঃযদি তোমার সাথে আমাকে
দেখে আবার মারে?
পদ্মিনীঃআমাকে নাকি ভালোবাসেন,
এটুকুতেই ভয় পাচ্ছেন?
আমিঃতুমি তো ভালোবাসো না।
পদ্মিনীঃহু
আমিঃরানার থেকে ফুলটা নাও
পদ্মিনীঃহুম

ব্যাগ থেকে গতকালকের পুরষ্কারটা
রানাকে দিলাম।
আমিঃসত্যিকারের একজন হিরোর
উপহার এটা।যদিও এর থেকেও
বড় কিছু পাস কিন্তু এখন এটাই আছে।
রানাঃভাই এটা তো তোমার প্রথম
পুরষ্কার।
আমিঃহুম,এখন থেকে তোর।আর
১০০ টাকা নে।তোর ফুলে দাম।
পদ্মিনীঃআপনি কেনো ফুলের দাম দিবেন?
আমিঃBecause we are…..(জামাই বউ বলবো)😇

চলবে…………….।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here