তোকে ঘিরে,Extra part,part-31,32,33

তোকে ঘিরে,Extra part,part-31,32,33
Ariyana Nur
Extra part

কলিং বেলের শব্দ পেয়ে নিধি হাতের কাজ রেখে দরজা খুলে দেখে একজন দরজার সামনে ফুলের তোরা দিয়ে মুখ ঢেকে দাড়িয়ে আছে।আর তোরার মধ‍্যে সুন্দর একটা কার্ড রাখা।যেখানে বড় বড় অক্ষরে সরি লেখাটা স্পস্ট বুঝা যাচ্ছে।নিধির আর বুঝতে দেরি হলো না লোকটি কে।নিধি অবাক হয়ে বলল….

—চলে এলে যে!!!তোমার না আজ একটা জরুরী মিটিং আছে???

মাহাব মুচকি হেসে তোরাটা নিধির হাতে দিয়ে বলল….

—তোমার জন‍্য।তোমাকে আফরাদের বাড়িতে নিয়ে যাব তাই চলে এলাম।

—আমার জন‍্য মিটিং ক‍্যেন্স‍েল করতে কে বলেছে।আর ওরা তো আমাকে নিতেই আসবে।তাহলে…(অবাক হয়ে)

—জ্বি না ম‍্যাম ওরা আসবে না।

—কেনো(আবাক হয়ে)

—কারন আমি তাদেরকে আসতে বারন করেছি তাই।

—তুমি কেন না করতে গেলে???

—আমি যেহেতু কথা দিয়েছি তোমাকে নিয়ে যাব সেই কথা রাখতে।

—তার জন‍্য কাজ ফেলে চলে আসবে।আমার জন‍্য তোমার কাজের ক্ষতি হলো😔

—এতো কথা বলো না তো।সবার আগে তুমি তারপর কাজ।এবার তারাতারি রেডি হয়ে এসো।আগে আমরা শর্পিং আর ঘুরাঘুরি করবো তারপরে ওদের বাসায় যাবো।

নিধি খুশি হয়ে বলল….
—সত‍্যি….

মাহাব ওর নাক টেনে বলল….
—100% সত‍্যি।এবার তারাতারি রেডি হয়ে এসো।

—আমি এখনি রেডি হয়ে আসছি।

নিধি চলে যাওয়ার সময় মাহাব ওর হাত ধরে বলল….

—মহারানী কি এই আধমকে মাফ করেছে।মাফ না করিলে যে এই অধম শান্তি পাবে না।

নিধি মুচকি হেসে বলল…

—তা তো সেই কখনই মাফ করে দিয়েছে।এবার হাত টা ছারুন।তা না হলে আবার দন্দ দিতে পারে।

মাহাব মুচকি হেসে হাত ছেড়ে দিয়ে বলল…

—তারাতারি করবে একটু প্লিজ….

নিধি মিষ্টি হেসে রেডি হতে চলে গেলো।

_________________________________

আস্তে আস্তে রেস্টুরেন্ট খালি হয়ে গেলো।ইহান ওর ঝামেলা শেষ করে আফরাদের সামনে আসতেই আফরা বলল….

—এই রেস্টুরেন্ট কি তোমার???

ইহানঃহুম….

—আর ঐ লোকটা???

—এখানকার মেনেজার।

আফরা এবার রেগে বলল….

—আগে বলো নি কেন এটা তোমার রেস্টুরেন্ট।তাহলে ঐ বেটাকে প্রথমেই ডিটারজেন ছাড়া ধুতাম।শালা মেনেজার হয়ে এমন একটা ভাব নিয়েছে মনে হচ্ছিল মলিক সে।যতসব ফালতু লোক।সামনে পেলে ঝাটা পেটা করবো।

—তোমার এই শালা বলা যাবে না।ছিহ্ দিনদিন মুখের ভাষা কি হচ্ছে।

আফরা রেগে ইহানের কলার ধরে বলল….
—মুখের ভাষার কি দেখছোস।এগুলো তো ভালোই বলছি।তুই কোন সাহসে আমারে ছিহ্ বললি???

ইহান আশেপাশে তাকিয়ে দেখে দুএক জন ওয়েটার ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর মানহা,মিষ্টি ওর দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে।

ইহান নিচু স্বরে বলল….

—দেখো সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।তুমি কি চাও সবার কাছে আমাকে হাসির পাএ বানাতে???

আফরা ইহানের কলার ঠিক করতে করতে বলল…

—এবারের মত ছেড়ে দিলাম।

ইহান বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে মিষ্টি দিকে তাকাতেই ওর চোখ কপালে।কেননা মিষ্টি ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।ইহান শুকনো ঢোক গিলে বলল….

—টমেটো বোন আমার তুই ঠিক আছিস???

মিষ্টি রেগে টেবিল থেকে টমেটো সসের বোতল হাতে নিয়ে বলল….

—আর একটা কথা বললে এই টমেটো সসের বোতল দিয়ে তোমার মাথা ফাটাবো।

ইহান একটা শুকনো ঢোক গিলে মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকছে আর বলছে….

—আল্লাহ্ কি ফেমেলি দিলা আমায়।কেউ দুই টাকারও দাম দেয় না।যেখানে বাহিরের সবাই আমার সামনে কথা বলতে পারে না।সেখানে এদের সামনে আমিই কথা বলতে পারি না।আমার বউটা কি কম ছিল এখন যে আমার বোনটারেও এমন বাঘিনী বানাইয়া দিলা।এদের মান-অভিমান আমি কেমনে ভাঙ্গবো।ইহান বেটা তুই আজ শেষ।

চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ইহানকে এই অবস্থায় দেখে কার কেমন লাগছে???ধন‍্যবাদ)

তোকে ঘিরে
Part 31
Ariyana Nur

রেস্টুরেন্টে পিনপিনতা নিরবতা।কারো মুখে কোন কথা নেই।আফরা একটু পর পর ইহানের মুখের দিকে করুন চোখে তাকাচ্ছে।যাতে ইহান এখানকার পরিস্থিতি সামলিয়ে নেয়।কিন্তু ইহান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে আছে।আফরা পারছেনা ইহানের চুল ছিড়তে।আফরা দোয়া-দুরুদ পরে মিষ্টি দিকে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি মন খারাপ করে বসে আছে।তারপর সাহস করে মানহার দিকে তাকাতেই দেখে মানহা ওর দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে কাচা চিবিয়ে খাবে।আফরা শুকনো ঢোক গিলে সাথে সাথে চোখ নামিয়ে ফেলল।

নিরবতা ভেঙ্গে মানহা বলল….

—মিষ্টি তুমি এখানে থাকবে নাকি যাবে আমার সাথে???

আফরা কাপাকাপা গলায় বলল…..
—ক কোথায় যাচ্ছিস???আ….

মানহা ওর দিকে চোখ বড় করে তাকাতেই ও চুপ করে রইলো।মিষ্টি আর মানহা চলে যাওয়ার জন‍্য পা বাড়াতেই ইহান বলল….

—আরহাম এখানে আসছে।তোমাদেরকে কোথাও যেতে না করেছে।

ইহানের কথা শুনে মানহা আর মিষ্টির পা থেমে গেলো।মানহা মিষ্টির দিকে তাকাতেই দেখে মিষ্টি করুন চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।মানহা ইহানের দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলল….

—ভারি পেট পাতলা মানুষ তো আপনি।পেটে কি কোন কথা হজম হয় না নাকি।এখানকার কথা ওখানে লাগিয়ে দিয়েছেন।এতোই যদি হজমে সমস‍্যা হয় তাহলে প্রতিদিন নিমপাতার রস খাবেন।শুনেছি তাতে নাকি হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়।

আফরা অবাক হয়ে বলল…..
—নিম পাতার রস খাইলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয় কে বলছে তোরে???

আফরার কথা শুনে মানহা ওর দিকে কটমট করে তাকাতেই ও নিজের ঠোটের উপর আঙ্গুল দিয়ে দিয়ে চুপ করে রইলো।

মিষ্টিঃতোমার মাথা এবার ফাটানোই দরকার ভাইয়াকে কেন এখানকার কথা তুমি বলতে গেলে???তুমি জানোনা, ভাইয়া জানতে পারলে যে কি করবে???😡

মানহাঃ কাকে কি বলছো??? আমার মনে হয় না মাথায় কিছু ঢুকছে।

ইহানঃ আরে আমাকে তো কেউ কিছু বলতে দিবে।আমি….

আফরা ধমক দিয়ে বলল….

—চুপপপপ একদম চুপপপপ…..
আর একটাও কথা বলবে না।ভাইয়া এসে যদি কিছু বলে না আমাদের তখন তোমার খবর আছে।

ইহানঃ আমার কথাটা তো শুনবে প্লিজ…..
সত‍্যি বলছি আমি ওকে কিছুই বলি নি।ওই আমাকে ফোন করে বলল, যেখানে আছিস সেখানেই থাক।আমি ১০মিনিটের মধ‍্যে আসছি।

মানহা বিরবির করে বলল….
—নেতারা বলবে সত‍্যি কথা হুহ….
এদের কথা বিশ্বাস করা আর পেপে গাছ দিয়ে ফার্নিচার বানানোর চিন্তা করা একই।

ইহান মানহাকে বিরবির করতে দেখে বলল….
—সরি… তুমি কি বললে আমি শুনিনি।

মানহা ভেংচি কেটে ধপ করে চেয়ারে মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো।

ইহান মনে মনে বলছে….

—আল্লাহ্ রক্ষা কইরো আমায়।ঐটায় অইসা কাউরে কিছু না বললেও আমার তেরোটা বাজাইবো।কেন যে আমি ঐ বেটারে এমনেই যেতে দিলাম।আমার ঠান্ডা মাথায় মানহার সাথে কথা বলতে হবে।একমাএ মানহাই পারবে ওরে থামাতে।তা না হলে ঐ বেটার খবর আছে।আল্লাহ্ আমারে সাহায‍্য কইরো।

_____________________________

সবাই গালে হাত দিয়ে বসে আছে।আল্লাহ্ জানে আরহাম এসে কি করে।সবার মাথায় এখন এই একটাই চিন্তা।

আরহাম ধরফরিয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করল।আরহামকে দেখে সবাই দাড়িয়ে যায়।মানহা আরহামের দিকে তাকিয়ে অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা।ওকে দেখেই মনে হচ্ছে অনেক রেগে আছে।চেহারা পুরো লাল হয়ে আছে।চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে অগুনের ফুলকি বের হচ্ছে।মানহা ভেবে পায় না এই ছেলে এমনি সহজে রাগে না আর যখন রাগে তখন আল্লাহ্ মালুম এতো রাগ কোথার থেকে আসে।ছোট বেলায় মানহা মজার ছলে বলেছিলো,আমার বর যেনো রাগি হয়।তাহলে সে যখন রাগ করবে তখন আমি তার রাগি কিউট চেহারার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবো।আল্লাহ্ ওর দোয়া যে এভাবে কবুল করবে ও ভাবতেও পারেনি।মানহা এখন আফসোস করে বলছে, আল্লাহ্ কেনো যে সেদিন এই দোয়া করতে গিয়েছিলাম।বর তো রাগি জুটিয়ে দিয়েছো কিন্তু এখন তার রাগি চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকবো কি তার রাগি চেহারা দেখলেই আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়।

আরহামকে মানহার দিকে বড় বড় পা ফেলে আসতে দেখে মানহা মনে মনে বলছে….

—মানহা তুই আজকে শেষ।এই রাক্ষসের হাত থেকে তোকে আজ কেউ বাচাতে পারবে না।আল্লাহ উপায় দেখাও কিভাবে এর থেকে রক্ষা পাবো।

মানহাকে অবাক করে দিয়ে আরহাম মানহার সামনে এসে মানহাকে জরিয়ে ধরবো।মানহা স্টেচুর মত হা করে দাড়িয়ে রইলো।সব যেনো ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।ওর মাথা ভন ভন করে ঘুরতে লাগলো।

আর এদিকে ওরা সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আরহাম আর মানহার দিকে।ইহান বিরবির করে বলছে….

— ঘূণিঝড় মনে হয় মহাসাগরের উপর দিয়ে চলে গেছে।

আফরা ওর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাতেই ইহান চুপ করে রইলো।

একটু পর আরহাম করুন শুরে বলল….

—স..সরি…
আমি আমার কথা রাখতে পারিনি।তুমি প্লিজ… রাগ করো না।

আরহামের কথা শুনে মানহার হুস হলো।ও মনে মনে বলছে….
—আল্লাহয় বাচাইছে এই রাক্ষসের হাত থেকে।কিন্তু উনি আমাকে সরি কেনো বলছে।পাগল টাগল হইয়া যায় নি তো।মানহা নিজেকে সামলিয়ে কাপা কাপা গলায় বলল….

—আআপনি সরি কেনো বলছেন???আর এভাবে কথা বলছেন কেনো???

—আমি বলেছিলাম তোমার উপর কোন আচ্ লাগতে দিবো না।কিন্তু তোমাকে আজ…..
আমার জন‍্যই এমন হয়েছে।আমি তোমার সাথে থাকলে এমন হতো না।ও তোমাকে একটা কথাও শুনাতে পারতো না তার আগেই আমি ওর….
কথাগুলো বলার সময় আরহামের গলা কাপছে।

—আরে কি হয়েছে আপনার???নিজেকে কেনো দোষ দিচ্ছেন।দেখেন আমি ঠিক আছি।আর ঐ বেটা আমাকে কি কথা শুনিয়েছে।তার থেকে তো আমি ওকে সোডা দিয়ে ধুয়ে দিয়েছি।আপনি শুধু শুধু মন খারাপ করছেন।

আরহাম একটু চুপ থেকে বলল…
—কেনো ধুয়েছো???

—কেনো মানে,আপনাকে নিয়ে আজে বাজে কথা শুনাবে আমি তাকে ছেড়ে দিবো।মনে তো চাচ্ছিল তাকে উস্টা মেরে চান্দের দেশে পাঠিয়ে দেই।

মানহার কথা শুনে আফরা ফিক করে হেসে দিল।বাকিরা মিটমিট করে হাসছে।আফরার হাসির শব্দ পেয়ে মানহাকে আরহাম ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো।

ইহান হাতে তালি দিয়ে বলল…

—বাহ্ ভাই বাহ্…..
আমার ভাই দেখি পুরো মজনু হয়ে গেছে।আহ্ কেয়া বাত কেয়া বাত…

আরহাম শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে ইহানের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলল….

—অনেক খৈ ফুটছে মুখ দিয়ে তাই না।আমি তোর খৈ ফুটানো বন্ধ করছি।

ইহান উল্টো পিছন দিকে যেতে যেতে বলল….
—এই দাড়া কাছে আসবি না।ভালো হবে না কিন্তু….

—খারাপের কি দেখলি তুই।মটু তোকে আমার হাত থেকে কেউ আজকে বাচাতে পারবে না।

ইহান চিৎকার দিয়ে বলল….
—এক মিনিট…..

ইহানের চিৎকারে আরহাম থেমে গেলো।ইহান গলা পরিষ্কার করে বলল….

একজন আছে।যে আজ তোর হাত থেকে আমাকে বাচাতে পারবে।তারপর মানহার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বলল….

—মানহা…বোন,শালিকা,ভাবি আমার প্লিজ…এর হাত থেকে আমাকে বাচাও।তা না হলে আমার এই সুন্দর চেহারার নকশা আজ পাল্টিয়ে দিবে।তুমি কি চাও তোমার ভাই,দেবর,জিজুর এই সুন্দর চেহারাটা পাল্টিয়ে যাক।

ইহান ইনোসেন্ট চেহারা বানিয়ে এমন ভাবে কথাগুলো বলল যা দেখে সবাই খিলখিল করে হাসতে লাগলো।

চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন‍্যবাদ)

তোকে ঘিরে
Part 32
Ariyana Nur

তিন ঘন্টা ধরে শর্পিং মলে ঘুরাঘুরি করছে সবাই।কিন্তু একটা ড্রেস ও কারো পছন্দ হচ্ছে না।ডিজাইন পছন্দ হলে কালার পছন্দ হচ্ছে না আর কালার পছন্দ হরে ডিজাইন হচ্ছে না।

আরহাম আর ইহান ওদের সাথে ঘুরতে ঘুরতে হাপিয়ে গিয়ে ওদেরকে ড্রেস পছন্দ করে ওদের খবর দিতে বলে এক জায়গায় বসে আছে।বেচারারা মনে হয় না,জীবনেও এতো সময় শপিং মলে নিজেদের ড্রেস কিনতে ব‍্যয় করেছে।

ইহান মাথায় হাত রেখে আহত শুরে বলল….

—কেমনে পারে এরা এতো ঘুরাঘুরি বাছাবাছি করতে???
আমি তো প্রথমদিনই শেষ।আল্লাহ্ আর জীবনেও বউ এর লগে শর্পিং করতে আসবো না।

আরহাম হাসতে হাসতে বলল….

—প্রথম দিনই এই অবস্থা।আর তো দিন পরেই আছে।আর আফরা যেই মেয়ে তুই ওর সাথে শর্পিংয়ে যেতে না চাইলে তোর কান ধরে নিয়ে যাবে।

ইহান রাগি গলায় বলল….

—এমোন দাত কেলাইতাছোস কেন???আমার শালিকাও কিন্তু কম না।আমার চিন্তা না করে নিজেরটা ভাব।

—আরে রাগছিস কেন???

—না রাগবোনা তোরে সালাম করবো😡

—করলে করতে পারিস বাট আমি সালামি দিতে পারবো না।

—তোরে আমি…..😡

—কিছুই করতে পারবে না মাম..মাহ….তাহলেই উল্টাপাল্টা বলে তোমাকে রাম ধোলাই খাওয়াবো।(ভাব নিয়ে)

ইহান কিছু না বলে চোখ রাঙ্গিয়ে বসে রইলো।আর
ইহান এর কাহিনী দেখে আরহাম হুহা করে হাসতে লাগলো।

অবশেষে মেয়েরা তাদের কাজে সফল হয়েছে।মানে ড্রেস সিলেক্ট করতে পেরেছে।আফরা বড় একটা নিশ্বাস ছেড়ে ইহানকে কল করে আসতে বলল।

একটু পর আরহাম আর ইহানকে হেলে দুলে আসতে দেখে মানহা শয়তানী একটা হাসি দিয়ে মিষ্টিকে উদ্দেশ্য করে দুরের একটা শার্ট দেখিয়ে বলল….

—মিষ্টি দেখো শার্টটা কতো সুন্দর।যে ঐ শার্টটা পরবে তাকে পুরো টি…টিপটপ,চকলেট বয়ের মত লাগবে।😁

মানহা আরহামকে শুনিয়ে কথাগুলো বললো।কিন্তু এমন একটা ভাব করলো যে ও আরহামকে দেখেই নি।

মানহাকে ছেলেদের পোশাক নিয়ে এতো সুন্দর কথা বলতে শুনে আফরা ঘাড় ঘুড়িয়ে শার্টটা দেখার জন‍্য তাকাতেই দেখলো একসাথে সেখানে অনেকগুলো শার্ট রাখা আছে।আফরা মানহাকে বলল…

—কোন শার্টটার কথা বলছিস???

—কেনো ঐ যে লাল আর ফিরোজা কালারের মাঝেরটা।

আফরা অবাক হয়ে মানহাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মানহা চোখ রাঙ্গিয়ে ওকে থামিয়ে দিল।আফরা পাশের মিররে ইহানকে ওদের একটু পিছনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আফরা শুর টেনে বলল….

—কি যে বলিস…..
শুধু চকলেট বয় না।আমার সামনে যদি ঐ শার্টটা পরে কেউ আসে তাহলে তো তাকে দেখে আমার মুখ দিয়ে অটোমেটিক এই গানটা বের হবে….

—আমি জ্ঞান হারাবো….
মরে যাবো….
বাচাতে পারবে না কেউ।

ওদের দুটোর কাহিনী দেখে মিষ্টি মিটমিট করে হাসছে আর মনে মনে বলছে…..

—আমার ভাইরা যদি তাদের ফাদে পা দেয় তাহলে তারা শেষ।আল্লাহ আমার ভাইদের রক্ষা করো তুমি….

______________________________

মা রান্নাঘরে টুকটাক কাজ করছে।এমন সময় তার ফোনটা বেজে উঠলো।সে শাড়ির আচলে হাত মুছতে মুছতে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে একজন সালাম দিয়ে বলল….

—আমি তোমার সাথে কথা বলবো না।রাগ করেছি।তুমি একটুও আমাকে মিস করো না।তুমি আমাকে ভুলে গেছো।

মা সালামের জবার নিয়ে বলল….

—আমার বোনু কি আমার সাথে রাগ করেছে???সে কি জানেনা আমি তার সাথে রাগ করেছি।

তুর অবাক হয়ে বলল….

—কেনো???তুমি কেনো আমার সাথে রাগ করেছো???আমি কি করেছি???

—এই যে তুমি আমাকে ফোন দিয়ে আমার সাথে কথা বলোনি।আমাকে একটুও মিস করোনি।আমায় একটুও তোমার মনে পরেনি।তাই…..

—কে বলেছে আমি তোমাকে মিস করিনি???তোমার কথা আমার মনে পরেনি???

মা অভিমানী শুরে বলল….
—পরলে তো আমার খোজ নিতেই।

—তুমি নিয়েছিলে আমার খোজ???

—হুম….নিয়েছি।

—থাক আর রাগ করতে হবে না।এবার বলো কবে আসবে???আমি তোমাকে অনেননক মিস করছি😔

—মন খারাপ করে না বোনু….
আমি চলে গেলে পাপা একা কিভাবে থাকবে??

—তাহলে তুমি পাপাকে নিয়েই আসো।

—ঠিক আছে আমি তোমার পাপাকে নিয়ে তোমার কাছে চলে যাবো।

তুর খুশি হয়ে বলল….
—সত‍্যি তুমি পাপাকে নিয়ে আসবে।

—হুম সত‍্যি…

—ইহা হুওওওও…..বনু তুমি অনেক ভালো।রাখছি এবার আমি নান্নান কে বলে আসি তুমি আর পাপা আসবে ।

তুর আর কোন কথা না বলে ফোন রেখে দিয়ে দৌড়ে নান্নান এর কাছে চলে গেলো।

_________________________

ইহান আর আরহাম ওদের কেনাকাটার বিল মিটিয়ে ওদের কফি শপে বসিয়ে ইহান আরহামকে কাজ আছে বলে নিয়ে চলে এলো।আরহাম বিরক্ত হয়ে বলল….

—একে তো এতো সময় মেয়েদের শর্পিং এর পেছনে ব‍্যয় করলাম।তার পরে আবার তোর জন‍্য কফি শপে গেলাম।এখন আবার আমাকে এখানে নিয়ে এলি কাজ আছে বলে। শর্পিং মলে তোর কি এমন কাজ পরে গেলো যে আমাকে এভাবে গরুর মত টেনে নিয়ে এলি।

—আরে ঝারি মারছিস কেন???আমি তো তোর ভালোর জন‍্যই এখানে নিয়ে এলাম।এজন‍্যই বলে উপকারের বাঘে খায়।

—তা দয়া করে বলবেন আপনি আমার কি উপকার করতে নিয়ে এসেছেন???

ইহান একটু লাজুক হেসে বলল….
—তখন শুনিসনি ভাবি কি বলল।

আরহাম বিরক্ত হয়ে বলল….

—কতো কিছুই তো বলেছে তুই কোনটার কথা বলছিস???

—আরে একটা শার্ট দেখিয়ে।

—তাতে কি হয়েছে???

—আর ঢং করো না।তুমি যে ঐ শার্টটা নিবে সেটা আমার জানা আছে।

আরহাম ইহানকে ধমক দিয়ে বলল…
—বেশি বুঝিস না।আমার মনে হচ্ছে ওরা ঢপ দিচ্ছে।

—চুপ থাক।আর একটা কথাও বলবিনা।আমরা এখনি শার্টটা নিয়ে আসবো।চল….

শার্টের দোকানে দাড়িয়ে আরহাম শার্ট হাতে নিয়ে বলল….

—দেখ ভাই আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাদের বোকা বানাচ্ছে।তা না হলে এই কালার কেউ পছন্দ করে।এই কালার পরলে আমাদের জোকার লাগবে।এই কালার তো জীবনেও পরি নি।

—আরে বেশি বুঝিস কেন।তোর আমার এই কালার পছন্দ না বলে কি ওদের পছন্দ হতে পারে না।আর এক শার্টেকি আমাদের জীবন যাবে।বেশি না শুধু একবার ওদের সামনে পরলেই হবে।

—দেখ তোর কথায় আমি এই শার্টটা কিনছি।যদি এই শার্ট পরে হাসির পাএ হই না তাহলে তোর খবর আছে মটু।

—পরেরটা পরে দেখা যাবে।এবার চুপ থাক।

____________________

আরহামরা শার্ট কিনে ইহানের লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।ওরা খালি হাতে মানহাদের সামনে গিয়ে দাড়ালো।মিষ্টি ওদের দেখেই বলল…..

—কাজ শেষ হয়েছে তোমাদের???

ইহানঃহুম হয়েছে।

আফরাঃ তাহলে এবার যাওয়া যাক।আর ভালো লাগছেনা।

আরহামঃ সবার কেনাকাটা শেষ হয়েছে???

মানহাঃহুম….

মিষ্টিঃ না ভাইয়া ভাবি নিজের জন‍্য কিছুই কিনেনি।কিন্তু আমাদের সবার জন‍্যই কিনেছে।

আরহাম শান্ত শুরে বলল….
—তোমার জন‍্য ড্রেস কিনোনি কেনো???

—আমার লাগবে না।আমার নতুন ড্রেস আছে।শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে কি লাভ।

আরহাম মানহার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে থেকে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলো।
আর মানহা আরহামের যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলল…

—এর আবার কি হলো???একে কি কখনো আমি বুঝতে পারবো???আল্লাহ্ এই খচ্চর কে হেদায়াত দাও।যাতে হুট হাট রাগ করাটা কমে।

চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।শার্টের কালারটা কি রং এর হতে পারে???ধন‍্যবাদ)

তোকে ঘিরে
Part 33
Ariyana Nur

আকাশ আজ মেঘে ঢাকা।হুট করেই যে কোন সময় বৃষ্টি নেমে যেতে পারে।মানহা এক ধ‍্যনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আজ একদিন হয়ে গেছে না আরহাম মানহা সাথে ফোন করে কোন কথা বলেছে না মানহার ফোন রিসিভ করেছে।মেয়ের সাথে হুটহাট কথা বলে মেয়ের খবর নিয়ে ফোন রেখে দেয়।মানহা ভেবে পায় ঐ একটা কথায় এতো রাগের কি আছে???

পিছন থেকে মিষ্টির ডাকে মানহার ধ‍্যান ভাঙ্গলো।মিষ্টি মানহার সামনে এসে বলল….

—ভাবি তুমি একা সাদে দাড়িয়ে কি করছো????

মানহা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল…
—কিছু না এমনি দাড়িয়ে আছি।

—তোমার মন খারাপ???

—না মন খারাপ হবে কেন।

—ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছিলো???

মানহা রাগ দেখিয়ে বলল….

—বয়েই গেছে আমার তোমার ঐ খচ্চর ভাই এর সাথে কথা বলার।আমি কি এমন বললাম তার জন‍্য আমার সাথে রাগ করে বসে রইলো।রাগ যেন তার নাকের ডগাই থাকে।হুহ… ঢং দেখলে বাচি না।খবিস একটা….

—আরে তুমি এতো রাগ করছো কেন???ভাইয়া তো কাল আসছেই তখন না হয় তোমার মন মত বকে নিও।

—হয়েছে আপনাকে এখন আর পাকামো করতে হবে না।কারা যেন আজ আসবে।চলে গেলো বলো তাহলেই নিচে যাব।

—কেনো এতোক্ষন এখানে দাড়িয়ে থাকবে কেনো???

—ভালো লাগছেনা কারো সাথে কথা বলতে।😔

—ঠিক আছে তুমি থাকো আমি আসি।দেখি তুর কি করছে।

মিষ্টি সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে ফোন কানে ধরে বলল….
—দেখলে তো ভাবির মন খারাপ কেনো এমন করছো।শুধু শুধু ভাবিকে কষ্ট দিচ্ছ।

(এতোক্ষন মিষ্টি আর মানহার কথা আরহাম শুনছিলো।মিষ্টি আরহামকে লাইনে রেখেই মানহার সাথে কথা বলছিলো।আরহাম মিষ্টিকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছে ।সাথে তো মিষ্টির ঘুষ ফ্রি।)

—আসছে ভাবির চাম্চি….চুপ থাক। বেশি কথা বলিস না।

—এতোক্ষন তো মুখ দিয়ে মধু বের হচ্ছিল।কাজ শেষ এখন আমাকে চিনেই না।হুহ…

—টমেটো বেশি কথা না বলে বল কি লাগবে???

—কেনো তুমি আসছো???

—যা জিগ্যেস করছি তা বল।

—ঠিক আছে পরে বলছি।

—ওকে।

_______________________________

মাঝ রাতে মানহার ফোনটা বেজে উঠলো।ঘুমে ঘুমে ফোন রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে গম্ভীর কন্ঠে একজন বলল….

—তারাতারি নিচে আসো।

মানহা চোখ ডলে ফোন সামনে এনে নাম্বার দেখে ওর চোখ কপালে।এতো রাতে আরহাম ওকে নিচে কেনো যেতে বলছে।মানহা ভয়ে ভয়ে বলল….

—কটা বাজে দেখেছেন???এতো রাতে নিচে গিয়ে কি করবো।আর আপনি কোথায়???

—বেশি কথা না বলে যা বলছি তা করো।আমি গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।

মানহা বিরবির করে বলল…
—সব সময় শুধু আমাকে বকে।আমি যাবো না।

—তুমি না আসলে আমি গিয়ে তোমাকে নিয়ে আসবো।

—আপনি কি ভাবে আসবেন???(অবাক হয়ে)

—সেটা না হয় গেলেই বুঝবে।এবার বেশি কথা না বলে তারাতারি নিচে আসো।

মানহা উপায় না পেয়ে মাথায় ওরনা পেচিয়ে আস্তে আস্তে চোরের মত মেন ডোর খুলে নিচে গেলো।

নিচে গিয়ে দেখে আরহাম বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।মানহা গুটি গুটি পায়ে আরহামের সামনে দাড়াতেই আরহাম বুকের বা পাশে হাত রেখে বিরবির করে বলল….
—মার ডালা….

মানহা বুঝতে না পেরে ওর দিকে প্রশ্ন বোধম দৃষ্টিতে তাকাতেই আরহাম ওর সামনে শর্পিং ব‍্যাগ ধরে বলল…
—এগুলো তোমার।

মানহা গাল ফুলিয়ে বলল….
—লাগবেনা আমার।

—আবার….

মানহা চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে নাক টেনে বলল….

—আসছে এখন ঢং করতে।রাগ করতেও দেরি লাগে না আবার ঢং করতেও দেরি লাগে না।

আরহাম মানহার এই ছেলেমানুষী দেখে হেসে বলল….
—আমার প্রতি এতো অভিমান???

—………

—কথা বলবেনা আমার সাথে???

—……..

আরহাম বড় একটা নিশ্বাস ছেড়ে বলল….

—সরি….
কি করবো বল,তোমার মুখে সেদিন টাকা অপচয়ের কথা শুনে মাথা গরম হয়ে গিয়েছিলো।তুমি যদি ড্রেস নিতে তাহলে তো আর এমন হতো না।

—……

—আচ্ছা বাবা সরি তো….
আর কাদতে হবে না।

মানহা কোন কথা না বলে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলছে আর একটু পর পর নাক টানছে।

আরহাম মানহার চোখের পানি মুছে দিয়ে ওকে এক হাতে জরিয়ে ধরে আরেক হাত দিয়ে কান ধরে বলল….

—বললাম তো সরি।আর এমন হবে না।এবার কান্না থামাও।

মানহা নাক টেনে বলল….
—আপনি অনেক পচা।শুধু শুধু আমাকে বকেন।শুধু শুধু রাগ করেন।

—দেখো কান ধরেছি।আর কখনো তোমার সাথে অকারনে রাগ করবো না।

মানহা চোখ পানি মুছে অবাক হয়ে বলল….
—তার মানে আপনি রাগ করবেন!!!

আরহাম মুচকি হেসে বলল….
—হুম করবো।জানো না রাগ,আভিমান করলে মহব্বত বাড়ে।

—কচু বাড়ে।আর আপনি এতো রাতে কেনো এখানে এসেছেন???

—এতো রাত মানে মাএ একটা বাজে।

—আল্লাহ্ বলে কি!!!একটা বাজে তাও বলছে মাএ!!!

—হয়েছে আপনার আর রাত নিয়ে পরে থাকতে হবে না।এবার দেখো তো ড্রেসটা তোমার পছন্দ হয় কিনা???

মানহা পেকেট থেকে ড্রেস টা বের করে হা করে রইলো।কফি কালারের সুন্দর একটা গাউন।দেখতেই মনে হচ্ছে অনেক দামি।

মানহাকে এভাবে ড্রেস এর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরহাম বলল….
—ড্রেস তোমার পছন্দ হয়নি???

—পছন্দ হবে না কেনো।পছন্দ হয়েছে।কিন্তু….

—কিন্তু কি????(ভ্রু কুচকে)

—না মানে বলছিলাম কি,এতো দামি ড্রেস কেনো আমার জন‍্য আনতে গেলেন???আমি তো কোন পার্টিতে যাই না আর গেলেও বোরকা পরে যাই।শুধু শুধু….
মানহা ভয়ে ভয়ে কথাগুলো বলে মাথা নিচু করে রাখলো।

আরহাম গম্ভীর গলায় বলল….

—পার্টিতে যাও না তো কি হয়েছে।লোক দেখানোর জন‍্য কি তোমাকে দামি ড্রেস পরতে হবে নাকি।ড্রেস পরে কোন যায়গায় না গিয়ে শুধু আমার সামনে বসে থাকবে।আমাকে দেখালেই চলবে।

—দেখুন আপনি কিন্তু রেগে যাচ্ছেন।আমি কথাটা ওভাবে বলি নি।

আরহাম কোন কথা না বলে মানহার হাত ধরে ধরে বলল…

—আমি রাগ করিনি।এবার বলো ড্রেসটা পরবে তো???

—হুম…

—এবার ভিতরে যাও।

—বাসায় পৌচ্ছে জানাবেন প্লিজ।

আরহাম মুচকি হেসে বলল….
—ওকে বাই।

( ওদের মান-অভিমান ভেঙ্গে দিলাম।এবার খুশি তো….)

চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন‍্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here