তুমি_আমার অধিকার ( সিজন 2),পার্টঃ4,5

তুমি_আমার অধিকার ( সিজন 2),পার্টঃ4,5
লেখক সাব্বির আহাম্মেদ
পার্টঃ4

পরের দিন,

– আবির অথৈ,নিলয় অন্তী সবাই বাস উঠে বসলো, উদ্দেশ্য কক্সবাজার যাবে ।

আবিরঃ- নিলয় তর‌ মনে আছে তুই যখন একবার এক্সিডেন্ট করেছিস, তার কিছুদিন পর আমরা এই বাসে কিন্তু কক্সবাজার গিয়েছি ‌…

নিলয়ঃ- হুম আমার মনে আছে, এইগুলো কি আর ভুলা যায়।

– বাস ছেড়ে দিবে, এই মূহর্তে এইইইইইইইই বাস থামো এই বাস থামো বলে কে যেনো খুব জোরে চিৎকার করে উঠলো ।

বাসের ডাইভার, হেল্পপার সবাই তো অবাক, সুপার ভাইজার পিছনে তাকিয়ে দেখলো যাত্রী সবাই উঠেছে কি না ।

নিলয় ব্যাপারটা কি তা দেখতে বাস থেকে নামলো..

ওই যে বাদামওয়ালা মনির, সে তার বউ সাথে একটা বাচ্ছা ।

মনিরঃ- স্যার আপনে যে কক্সবাজার যাচ্ছেন, আমাদেরকে তো বলেন নাই

নিলয় জিহ্বা কামড় দিয়ে বলো, আমি ব্যাপারটা ভুলে গেছি তবে যাক তুমরা যে এসেছো এতে আমি অনেক খুশি হয়েছি এখন জলদি বাসে উঠে পড়ো ।

– বাস চলা শুরু করলো,

মনিরঃ-ভাবি আপনি যদি না বলতেন তাহলে তো আমরা আসতে পারতাম না, আপনাকে ধন্যবাদ

অন্তী মুচকি হেসে বলে, সমস্যা নেই যান আপনাদের সিটে গিয়ে বসেন ।

নিলয়ঃ- এইইই তুমি বমির ট্যাবলেট খেয়ে উঠেছো..

অন্তীঃ- না,
নিলয়ঃ- কেনো ??
অন্তীঃ- ভুলে গেছি !!
নিলয়ঃ- কি বলো তুমি বুমি করো, তুমি জানো সেটা তারপরও কেনো বুমির ট্যাবলেট খেয়ে আসলা না হুম(রাগ করে কথাটা বললো নিলয়)

চোখটা বুজে নিলয় ঘুমানের চেষ্টা করছে, খুব রাগ উঠেছে তার এখন !!

– অন্তী তা বুজতে পারছে । ঝির ঝির করে বৃষ্টি নামছে, অন্তী গুন গুন করে গেয়ে উঠে,,

বাদলা দিনে মনে পড়ে, ছেলেবেলার গান,
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান!!

– অপর দিকে, নিরা আর হ্দয়

আচ্ছা তুমি কিন্তু আমাকে এখনো বলো নাই, তুমি কিভাবে এসেছো ।

হ্দয়ঃ- আস্তে আস্তে সব বলবো, আর রাতে ঘুম হয়েছে কেমন!

নিরাঃ- হুম ভালো হয়েছে, তবে কাল রাতে বৃষ্টি হওয়াতে টিনের চালের আওয়াজে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেছে কিছুটা,

আচ্ছা এই বাসাটা কার,

হ্দয়ঃ- আমার খালার, ওনার কেনো ছেলে নেই তাই আমাকে খুব আদর করে আর আমিও মাঝে মাঝে আসি !!

নিরা হ্দয় কথা বলতে বলতে এখন কালকে রাতের ওই জায়গায় চলো আসলো !!

হ্দয়ঃ- চা খাবে…

নিরা মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো,

হ্দয় দুকাপ চা এনে নিরাকে দিয়ে বললো, তারপর কোথায় যাবে বা কি করবে কিছু কি ভেবেছো ।

নিরাঃ- আপতত কেনো কিছু ভাবা হয় নাই তবে কক্সবাজার যাবো চিন্তা করছি !!

হ্দয় লাফিয়ে বলো ওয়াও তাই নাকি, কবে যাচ্ছো আর সাথে কে যাচ্ছে !!

নিরাঃ- যাবো আজকেই তবে আমার তো কেউ নেই, সাথে আর কে যাবে ।

হ্দয় কিছুটা কাশি দিয়ে বলে কিছু মনে না করলো একটা কথা বলি,

নিরা হ্দয়ের দিকে তাকিয়ে বলে – হুম বলো কি বলবা !!

হ্দয়ঃ- তুমি চাইলে আমি তোমার সাথে যেতে পারি, কারাগারে থেকে মনে ঝং ধরে গেছে, কোথার থেকে ঘুরে আসতে পারলে মনটা ভালো লাগবে ।

নিরা তো মনে মনে এটাই চাচ্ছে, তবে সে হ্দয়কে কিছু বুজতে না দিয়ে বলে, তোমাকে বিশ্বাস করবো কি ভাবে ??

হ্দয়- মাথাটা নিচু করে বলে, জানি আমি যা করেছি তুমার সাথে তার জন্য কখনো তুমি মাফ করবে না, তবে একবার সুযোগ দেও আমাকে বিশ্বাস করো, প্রমিস তুমি যা বলবে তা করবো পাক্কা ।

নিরাঃ- ঠিক আছে, তুমি যেহেতু আগের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত তুমাকে আরেকটা সুযোগ দেওয়া যেতে পারে তবে আমি যা করতে বলবে করবে তো ।

হ্দয়ঃ- হুম করবো একশোতে একশো করবো বলো কি কাজ.??

নিরাঃ- আপতত এখন কেনো কাজ নেই তুমার, আমরা তাহলে কিছুক্ষণ পর রওয়ানা দিবো তুমি আর দেরি না করে এক্ষুণি এই ঠিকানা গিয়ে কক্সবাজারের দুইটা টিকেট কেটে আসো ।

হ্দয়ঃ- সত্যি আমি তোমার সাথে যাচ্ছি তাহলে, তুমি তাহলে আমাকে বিশ্বাস করছো ওকে ঠিক আছে আমি যাচ্ছি !!

হ্দয় চলে গেলো টিকেটের উদ্দেশ্যে….

নিরা মুচকি হেসে বলে বোকা একটা, তুইইই কি ভেবেছিস তোকে আমি এতো সহজে ছেড়ে দিবো ।

আমি ছাড় দেই কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেই না । একে একে সবাইকে আমি আমার খেল দেখাবো, সময় আসুক ।

নিরা একজনের থেকে ফোনটা নিয়ে, কল করলো একজনকে

হ্যালো,
-হুম নিরা বলো

খেলা রেডি, আমি তুমাকে যখনি বলবো তখনি তৈরি থাকবা!

– হুম আমি তৈরি । আর তুমি কক্সবাজার আসছো কখন??

নিরাঃ- হুম আজকে রওয়ানা দিবো, আর সাথে একটা বলদ নিয়ে আসছি । ওকে দিয়ে খেলাটা খেলবোবতারপর ছুড়ে ফেলে দিবো..

ফোনটা রেখে নিরা লম্বা একটা শ্বাস নেয়, তারপর বলে উঠে

আহ অনেকদিন পর, পুরোনা খেলা খেলতে যাচ্ছি, কি শান্তি লাগছে আমার কাছে !!

( নিরা মনে মনে একটা খেলা সাজিয়ে রেখেছে এইবার, তারইই খেলার পুতুল হয়তো হ্দয় আর হ্দয় আসলো তার আগের কৃতকর্মের জন্য নিরার কাছে । নিরাও মাফ করার অভিনয় করেছে কিন্তু হ্দয় তা বুজতে পারি নি)

চলবে..

#তুমি_আমার_অধিকার ( সিজন 2)
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ5

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের নাম কক্সবাজার, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভৃমি, নৈসগির্ক সৌন্দর্যের আধার আমাদের এই কক্সবাজার !!

– হ্যালো হয়েছে,
হুমমমম অপর পাশ থেকে তুমি কোথায়,

– আমি সৈকত হোটেলের সামনে জলদি ওইটা নিয়ে চলে আসো,

কিছুক্ষণ পর একজন কিছু একটা হাতে নিয়ে নিরার দিকে এগিয়ে আসছে, এই যে ধরো তুমার জিনিস এটা বানাতে আমার ঘাম ছুটে গেছে,

নিরাঃ- এটা কি এসিড!!
ছেলেটিঃ- এটার নাম হলো সালফাউরিক এসিড, এটি একটি রাসয়ানিক যৌগ, যা একটি শক্তিশালী খনিজ এসিড এবং অম্ল।সালফাউরিক এসিড পানিতে দ্রবণীয়।এটি যেখানে ফেলবে জ্বলে যাবে।

নিরা-ওকে ধন্যবাদ তুমাকে

আজকে যেভাবে হক কাজটা শেষ করতে হবে, এর মধ্যে হ্দয় আসলো ।

ওহ আমাদের দেশটা যে কত সুন্দর, না ঘুরলে বুজা যায় না তাই‌না,

নিরা মনযোগ না দিয়ে হুম বলে‌। আচ্ছা শুনো আজকে তুমাকে একটা কাজ করতে হবে !!

হ্দয়ঃ- কি কাজ!!
নিরাঃ- রুমে আসো তুমাকে সব বুজিয়ে বলছি !!

-বারান্দায় চেয়ারে বসে আছে নিলয় আর অন্তী
সমুদ্রের বিশাল গর্জন শুনা যাচ্ছে, পাখিদের কিচিরমিচর শব্দে পরিবেশটা আরো রোমান্স হয়ে উঠছে

নিলয় তার হাতের বইটা রেখে অন্তীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,

কি হলো তুমি কাছে আসতাছো কেনো ??
নিলয়ঃ- আমি কাছে আসবো না তো অন্য কেউ আসবে নাকি!
অন্তীঃ- তার জন্য কি এখন আসতে হবে নাকি, একদম কাছে আসার চেষ্টা করবে না। এই সুন্দর আবহাওয়াতে তুমার এই পাগলামি আমি সহ্য করবো না।

নিলয়ঃ- তাই নাকি, ওকে দেখা যাক কে করে এই বলে নিলয় কাছে আসতে যাবে??

অপর পাশ থেকে কে যেনো বিকট জোরে চিৎকারে ওমা গো আমার শরীরটা জ্বলে গেলো বললো।নিলয় অন্তী আবির মনির সকলে দৌড়ে গেলো গিয়ে দেখে মনিরের বউ মাটিতে গড়াগড়ি করছে । পাশের ঝোপ থেকে কে যেনো খুব জোরে দৌড় দিলো

নিলয়ঃ- ওইই আবির ধর ধর ধর, পালিয়ে যাচ্ছে সে !!

রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নিরা আগে থেকে বসা ছিলো, হ্দয় দৌড়ে এসে বলে এইইই ডাইভার তাড়াতাড়ি চলললল ( হাপাতে হাপাতে কথাটা বললো সে)

এইদিকে সবাই মনিরের বউকে ধরাধরি করে শহরের প্রাইম হাসপাতালে নিয়ে গেলো। অসহ্য যন্তনা, সে কুকড়ে যাচ্ছে, এই মূহর্ত মৃত্যু হলোও সে শান্তি পেতো । মনির এক হাতে তার ছেলে আরেক হাতে তার বউয়ের হাত ধরে বলে তুমার কিছু হবে না আমি আছি তো !!

নিরাদের গাড়ি সরু রাস্তা ছেড়ে হাইওয়ে, চলা শুরু করলো । হ্দয়কে এখন শান্ত দেখে নিরা বললো- কি কাজটা কি হয়েছে ??

-হুম হয়েছে তবে অন্ধকারে তো ভালো করে বুজা যায় না ।

নিরাঃ-নীল শাড়ি ওয়ালা মেয়েটাকে দিছো ??

হ্দয়ঃ- হুম দিয়েছি, তারা সবাই আশে পাশে থাকায়,একবারে কাছে গিয়ে দেখতে পারি নি তার মুখটা। তবে একশো পার্সন শিউর ওইটা অন্তী ছিলো ।

নিরা মুচকি হেসে সিটে খুব আরাম করে বসে, জানালার দিকে তাকিয়ে বলে- আহ আজ কি যে আমার শান্তি লাগছে হ্দয় তুমাকে বলে বুজাতে পারবো না । বলো কি চাও আমার কাছ থেকে তুমি??

হ্দয়ঃ- কিচ্ছু চাই না শুধু তুমার ভালোবাসা চাইই
নিরাঃ- আরে ভালোবাসা এটা কেনো বিষয় নাকি, তুমি চাইলে অন্য কিছু চাইতে পারো চেয়ে দেখো ??

হ্দয় মনে মনে বলে এই সুযোগ আর হাত ছাড়া করা যাবে না, চেয়ে নেই – আজকে রাতটা আমি তুমাকে চাইইইই

নিরাঃ- ওক্কে তাইইই হবে, তুমি আমাকে আজকে আমাকে এতো খুশির সংবাদ দিলা। তার জন্য এটা কিছু না।

এইদিকে মনিরের বউকে কক্সবাজার থেকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, শরীরের 75% শতাংশ পুড়ে গেছে তার । তাই শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে তার চিকিৎসা চলবে,

তারা সকলে কিছুই বুজতে পারছে না, এই ঘৃর্ণিত কাজটা কে করলো আর কেনো করলো ??

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here