তুমি আমার অধিকার ( সিজন 2),শেষ পার্ট

তুমি আমার অধিকার ( সিজন 2),শেষ পার্ট
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ

গত পার্টের পর থেকে

নিলয়ঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম যা যা । ভাই আপনাকেও নিরার সাথে কিছুটা বুজাপোড়া করে নিতে হবে কারণ এইখানে আপনার শুদ্ধ ভালোবাসা লুকিয়ে আছে । আপনাকে আপনার আবেগটাকে কন্টোল‌ করতে হবে যেনো নিরার সামনে আপনি দুর্বল হয়ে না পড়েন ।

নিহাদঃ- ওকে ভাই সমস্যা নেই আমি শতভাগ চেষ্টা করমু

ওইদিকে অথৈ অন্তীকে সাজাচ্ছে ,

কিরে তুইইই আমাকে সাজাচ্ছিস কেনো, আমার নিলয় হাসপাতালে আর আমাকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে তুই সাজাচ্ছিস কেনো ।

অথৈঃ- নিলয় যখন চোখ মেলে তর কাদো কাদো চেহারা দেখবে তো সে আরো কষ্ট পাবে ( আসলে নিলয়ের কথা শুনলে অন্তী এমনি দুর্বল হয়ে যায়। তাই তখন বাস্তবিক বুজটা তার থাকে না)

( প্লানটা অন্তী ছাড়া সবাই জানে নিলয়ের ফ্যামিলি আর অন্তীর ফ্যামিলিও.)

হারুন সাহেব মেয়ের এমন কাহিনি দেখে লুকিয়ে লুকিয়ে হাসছে । আর অন্তীর আম্মু তো অন্তীর সামনে কেদে বুক ভাসিয়ে ফেলছে

হারুনঃ- আর কত কাদার অভিনয় করবা এখন এইদিকে আসো তো ( অন্তীর‌ আম্মুকে বললো )

অনেকদিন তো অভিনয় করছি তুমার সাথে থেকে আজকে একটু মেয়ের সাথে করি।

অন্তী আর অথৈ বের হয়ে গেলো,
ওই মামা জোরে চালাও অন্তী বলে উঠে,

এইদিকে নিরা আজ খুবইই দুঃখি মনে বসে আছে, কিছু ভালো লাগছে না তার মনে হচ্ছে এই স্বাধীন পৃথিবীতে পরাধীন হয়ে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। জিবনটা কেমন উলট পালট হয়ে গেলো তার.!! আচ্ছা সে যদি নিহাদের কাছে ফিরে যেতে চায় নিহাদ কি তাকে ভালোবাসবে আগের মতো তার সব ভুল গুলো মাফ করে দিয়ে ।
এইসব ভাবতেই, দরজা কড়া নাড়লো কেউ

“কে
আমি মন্টু দরজা খুলেন
“” ওহ তুইইই দাড়া খুলছি

– দরজা খুলে দিলো নিরা, কিরে কি ব্যাপার দুই তিনদিন তো তর কেনো খবর থাকে না

মন্টুঃ আছে আছে, তবে এক গ্লাস পানি দেন গলাটা শুকিয়ে গেছে তারপর বলি । নিরা জগ থেকে পানি ঢেলে এক গ্লাস পানি দিলো

“নিরাঃবলল এখন “”

মন্টু তারপর সব বললো তাকে, নিহাদ ভাই লেকের ধারে অপেক্ষা করতাছে আপনি কি যাবেন

নিরা কিছু একটা ভেবে হুম যাবো

মন্টুঃ- হুম সত্যি
নিরাঃ- সত্যি না তো কি, সে আমার পুরনো ভালোবাসা সে ডেকেছে আমার তো যাওয়া উচিত

মন্টুঃ- ওকে আপনি রেডি হন আমি বাহিরে অপেক্ষা করছি ।

লেকের ধারে আজকে অনেক মানুষ মনে হচ্ছে এইখানে আজকে অনুষ্ঠান হবে !! সবাই উপস্থিত কিন্তু প্রধান অতিথিরা এখনো আসেনি ।

মনির, আবির নিলয়, হদয় নিহাদ, একটু পর অন্তী অথৈ, নিরা মন্টুও চলে আসবে ।

হ্দয়কে গাছের সাথে বেধে রাখা হয়েছে তার গালটা লাল হয়ে আছে দেখে‌ মনে হচ্ছে কেউ সজোরে তাকে চড় মেরেছে একটু আগে

অন্তী দূর থেকে নিলয়কে দেখে নিলয় বলে ডাক দেয়
নিলয় অন্তীর ডাক শুনে পিছনের দিকে তাকায়

এইতো তার অন্তী চলে এসেছে, নিলয় হাত দুটি মেলে অন্তীকে ডাক দেয় অন্তী সোজা নিলয়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে, এইইই তুমার কিছু হয় নি তো আবির ভাইয়া বললো তুমি নাকি এক্সিডেন্ট করেছো । কিন্তু কিসের এক্সিডেন্ট করেছো তুমি তো দিব্যি সুস্থ কি ব্যাপার .সব বলবো তুমাকে আগে আরেকটা খেলা বাকি আছে সেটা হক…

-নিহাদ বসে আছে চুপচাপ আজকে তার প্রিয় মানুষটিকে সে নিজ হাতে ধরিয়ে দিবে । তবে অপরাধ করলে শাস্তি তো পেতেই হবে সে যেইই হক । তারপরও মনটাকে সে শান্ত করতে পারছে না

রিক্সা থেকে ভাড়া মিটিয়ে নিরা এদিকে ওদিক তাকিয়ে নিহাদকে খুজতে লাগলো ।

দূর থেকে কালো গেন্জি পড়া কেউ একজন বসে আছে, এটাই মনে হয় নিহাদ মন্টুও তো তাইই বললো

সে কাছে গিয়ে বললো
“” হাই “”

নিহাদ ঘুরে তাকিয়ে দেখলো নিরা চলে এসেছে, নিরা আসাতে তার খুশি হওয়ার কথা কিন্তু সেখানে সে খুশি নেই ।

দাড়িয়ে কেনো বসো ।

কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় শেষ করে নিহাদ বলে,

দেখো নিরা, আমরা জিবনে অনেক অন্যায় করি এবং তার শাস্তি পাই সেটা আগে হক পরে হক । জিবনে কেউ অপরাধ করে সাজা পায় নাই এমন কেউ‌ নেই । অপরাধ করলে একদিন না একদিন তাকে শাস্তি পেতে হবে । এখনিই সময় এসেছে তুমার পাপের পায়শ্চিত্ত করার ।

নিরাঃ- হুম আমি বুজতে পারছি তুমি কি বলছো আসলে আমি অনেক বড় অপরাধ করে ফেলছি জানি না কি শাস্তি হয় আমার আচ্ছা আমার একটি কথা তুমি কি আমাকে ভালোবাসো

নিহাদঃ- হুম ভাসি তবে আগে তুমার অপরাধের শাস্তি হওয়া দরকার আর আমি চাই তুমি এখন থেকে ভালো হয়ে যাও‌ নিজেকে শুধরে নেও

নিরাঃ- আমি শুধরে গেলে তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে
নিহাদঃ- হুম অব্যশই

নিরা নিহাদকে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়,

আমি তোমাকে ছাড়া এখন কিছু কল্পনা করতে পারিনি তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে আমার জিবনে অনেক কিছু ঘটে গেছে আমি কেমন জানি পরিবর্তন হয়ে গেছে । আমাকে সঠিক পথ দেখানের কেউ ছিলো না তখন । বিশ্বাস করো আমি এখন আর আগের মতো নেই আমি চেন্জ হতে চাইই ভালো মানুষ হতে চাই সারাটা জিবন তুমার সাথে থাকতে চাইইই

নিলয় আবির অথৈ অন্তী সবার কাছ থেকে নিরা মাফ চেয়ে নিলো।

মনিরের কাছে গিয়ে, মনিরের হাতে ধরে বলে আমাকে মাফ করে দিয়েন ভাইইই, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলছি

অন্তীর‌ কাছে গিয়ে- আসলে আমি তুমাকে হিংসা করতাম তুমাদের সুখ আমার সহ্য হচ্ছিলো না তাই আমি নিলয়কে ওইদিন অজ্ঞান করে তার ছবি নিয়ে অন্য একটা মেয়ের সাথে আপত্তিকর পিক তুলে তুমার কাছে পাঠিয়েছি যাতে তুমাদের সুংখের সংসার ভেঙ্গে যায় ।

হিংসা মানুষকে শেষ করে দেয়, যেমন আমাকে দিচ্ছে । আমি এখন আমার জন্য না হলো নিহাদের ভালোবাসার জন্য ভালো হতে চাইইইই তুমারা সবাই আমাকে মাফ করে দিয়ো ।

পুলিশকে খবর দেওয়া হয়ে গেছে,

__ নিরা আর হ্দয়কে এসিড মারার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে
তাদের দুজনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে
আদালতের রায় হিসাবে তাদের দুজনকে সাজা হিসাবে সর্বোচ্চ তিনবছর সশ্রম কারাদন্ড, আর ৫০ হাজার জরিমানা করা হয়েছে।

প্রিজন ভ্যানে নিরাকে উঠানো হলো
দূর থেকে নিহাদ একদৃষ্টিতে দেখছে নিরা নিহাদকে দেখে কান্না ভেঙ্গে পড়ে । নিহাদ নিরাকে সান্তনা দিয়ে বলে,

চিন্তা করো না এইবার আর তুমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। আমি অপেক্ষা করবো তুমার জন্য । তুমাকে নিজের অধিকার করে নিবো । আর মাসে মাসে তুমায় দেখতে আসবো ভালো থাকো ।

” অন্তীঃ- এই নেও‌ তুমার চা “”
নিলয়ঃ- আগে একটু কাছে আসো
অন্তীঃকেনো
নিলয়- আসো তো আগে

অন্তী আসতেই নিলয় অন্তীর গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলো।অন্তী গালে হাত দিয়ে বলে এটা কি হলো
নিলয়ঃ- হুম পাওনা ছিলে
অন্তীঃ- কিভাবে

নিলয়ঃ- গল্পের শুরুটা ছিলো চড় দিয়ে সেই সময় তুমি আমার কথা না শুনে বৃষ্টিতে ভিজলে আর এখন এটা হলো আমাকে এতদিন কষ্ট দেওয়ার জন্য আর ছবি গুলোর যাচাই‌ বাছাই না করে আমার ওপর অভিমান করার জন্য ”

অন্তীঃ- তাই‌ বুজি স্যার দেখা যাবে আজকে কতটুকু অধিকার দেখাতে পারেন আপনি এই বলে অন্তী নিলয়ের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো ।

শুরু হয়ে গেলো তাদের ভালোবাসার খুনসুটি

অপর দিকে মুষুল ধারায় বৃষ্টি পড়ছে, নিহাদ ভিজে ভিজে কারাগারের ফটকে অপেক্ষা করছে নিরার জন্য কারণ নিরার মুক্তির দিন আজ

একদিকে অধিকার নিয়ে খুনসুটি চলছে.

অপরদিকে, নিজের প্রিয় মানুষটাকে নিজের করে নেওয়ার অপেক্ষা চলছে.!!

~~ শেষ হলো খেলা~~
শুদ্ধ মানুষ হয়ে নিরা ফিরে আসবে তাহলে নিহাদের‌ কাছে ??
সেই‌ অপেক্ষা রইলাম

( সমাপ্ত )

( গল্পটা শুরু থেকে শেষ পযন্ত আপনাদের কাছে কেমন লাগলো জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here