তুমি রবে নীরবে,পর্ব ৬,৭
অপরাজিতা টুয়া
পর্ব ৬
হসপিটালে রোগী দেখতে দেখতেই শরীর টা খারাপ লাগছিল একটু, জ্বর জ্বর লাগছে, মাথাটাও খুব ব্যাথা করছে সকাল থেকেই, একটু তাড়াতাড়িই বেরিয়ে পড়লো বাবাই।
রাস্তায় বেরিয়ে ফোন করলো সায়ন্তি কে, কোথায় তুই, একটু আয় না, শরীর টা খুব খারাপ লাগছে রে। এইরে আমি তো বাড়ি এসেছি রে সকালে, পরশু ফিরেই দেখা করবো তোর সঙ্গে বলেই কেমন যেন তাড়াতাড়ি করে আর কোনো কথা না বলেই ফোন টা কেটে দিলো সায়ন্তি।
অগত্যা বাড়ির দিকেই হাঁটা দিলো ও, বিয়ের পরে প্রায় মাস তিনেক হয়ে গিয়েছে, এখন অত টাও আর অসহ্য লাগেনা স্নেহা কে,আসলে উল্টো দিকের মানুষটার যদি কোন রিয়াকশন না থাকে, তাহলে এক তরফা আর কতটাই বা অসভ্যতা করতে পারে কেউ। তাই এখন অনেকটাই হাল ছেড়ে দিয়েছে বাবাই। তাছাড়া, মা এর সঙ্গে কথা বলতেও ইদানিং অস্বস্তি লাগছিলো ওর, ও বোঝেনা, মেয়ের কাছে সব শোনার পরেও মা ওকে কিছু বলে না কেনো, মায়ের ব্যবহারে ওর একটুও মনে হয়না যে মা স্নেহার সঙ্গে ওর এই ব্যাবহারের জন্য বিন্দুমাত্র রেগে আছে, উল্টে স্নেহা ফোন করেনা বলে কমপ্লেন করে ওর কাছে।
মাঝে মাঝে ওর মনে হয় স্নেহা বোধহয় মা বা মামনি কে কিছুই জানতে দেয় না এই সব কথা, নাহলে ওরা চুপ করে থাকতো না নিশ্চয়ই, অন্তত মা না বললেও মামনি তো বলতোই।
বাড়িতে ফিরে চাবি খুলে ঘরে ঢুকে দেখলো, স্নেহা সন্ধ্যে দেখাচ্ছে, কোনো কিছু না বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো ও। বেরিয়েই দেখলো, খাটের ওপর ওর বাড়িতে পরার জামা কাপড় বার করে রেখেছে স্নেহা, ড্রেস চেঞ্জ করে বিছানায় বসতে বসতেই চা আর মুড়ি মেখে রেখে খুব দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো ও।
ও ঘরে থাকলে প্রথম থেকেই ঘরে আসেনা স্নেহা, শুধু জিনিস গুলো বাবাই এর হাতের সামনে রেডী করে রাখে একদম। আজ তিন মাসে এর অন্যথা হয়নি কোনো দিনও। এখন এতটাই এসবে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে ও, যে মাঝে মাঝেই কোনো কোনো মুহূর্তে ওর মনে হয়, স্নেহা না থাকলে ওর চলবে কি করে, স্নেহা যেনো একদম অচল করে দিয়েছে ওকে।
বাজার হাট থেকে রান্না বান্না সব কিছু একা হাতে সামলায় স্নেহা, বাবাই শুধু মাসের প্রথমে টেবিলের ওপর সংসার চালানোর টাকা টা রেখে দিয়েই দায়িত্ব সারে ওর, তাও মুখে কোনো কথা না বলে। দিন দিন ও আরো বেশি করে স্নেহার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে বুঝতে পারে বাবাই।
মুড়ি, চা খেয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল বুঝতে পারেনি ও, ঘুম ভাঙলো স্নেহার ডাকে, খাবার নিয়ে এসেছে। উঠে বসে দেখলো শরীর টা আরো খারাপ লাগছে, কোনো রকমে একটু খেয়েই শুয়ে পড়লো সঙ্গে সঙ্গে। মাঝ রাতে খুব অস্বস্তি হচ্ছিলো, ঘুম টা ভেঙে গেছে, গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে, হটাৎ করেই গুলিয়ে উঠলো গা টা, বাথরুম পর্যন্ত যাবার আগেই বমি করে ফেললো খাটের ওপর।
ওর বমির আওয়াজে উঠে বসলো স্নেহা, কি হয়েছে উদগ্রীব শোনালো ওর গলাটা। স্নেহা উঠে এলো ওর কাছে, জলের বোতল টা বাড়িয়ে দিল ওর দিকে, হাতে জল নিয়ে ওর মুখে চোখেও ছিটিয়ে দিলো একটু, জল টা খেয়ে, একটু স্বস্তি লাগছিলো, কিন্তু বিছানা টা একদম নোংরা হয়ে গেছে, তুমি ড্রইং রুমে বসো একটু, আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি, খুব লজ্জা লাগছিল তখন।
ইস, কি কাণ্ড হলো, ওকে যদি কারোর বমি পরিষ্কার করতে হতো, তাহলে ও পারতো না, স্নেহাই বা কি করে করবে, আমি করে দিচ্ছি, স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলল বাবাই।
কিছু হবে না, তুমি বসো চুপ করে, না হলে আরো শরীর খারাপ লাগবে, আর কোনো তর্ক না করেই উঠে গেলো ও, সত্যিই ওর শরীর একদম দিচ্ছে না আর, ভীষণ খারাপ লাগছে, জ্বরের ওষুধ টা বার করে খেয়ে নিলো একটা।
একটু পরেই বিছানা পরিষ্কার করে ওকে শুতে ডাকলো স্নেহা, নিজে বোধহয় নোংরা চাদর টা বাথরুমে রাখতে গেলো, আর শরীর ভালো লাগছে না,খাটে শুয়ে পড়লো বাবাই।
মাথাটা অসহ্য যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে একদম, ছট ফট করতে করতেই স্নেহার গলা শুনতে পেলো, একটু জল পট্টি দিয়ে দেবো, জ্বর টা কমতো একটু, খুব ভয়ে ভয়ে বলছে ও। জল পট্টি দিতে হবে না, আমি ওষুধ খেয়েছি, জ্বর নেমে যাবে একটু পরেই, তুমি একটু মাথাটা টিপে দাও খুব ব্যথা করছে, আচ্ছা বলে পাশে বসলো স্নেহা। ঠান্ডা জলে ভেজা হাত টা কপালে রাখতেই চোখ টা আরামে বন্ধ হয়ে গেলো, আহ্, কি শান্তি, নিজের অজান্তেই হাত টা স্নেহার কোলের ওপর ফেললো ও।
মাথা ব্যাথা টা কমে আসছে ক্রমশ, সেই বাড়ি ছাড়ার পর আজ প্রথম বার জ্বরের সময় কেও ওর মাথায় হাত রাখলো, একদম ছোট বেলার কথা মনে পড়ছিলো, যখন জ্বর হলে রাত জেগে মা বা মামনি কেউ ওর মাথার কাছে বসে থাকতো।
মন টা নরম হয়ে যাচ্ছিলো, খুব খারাপ ব্যবহার করেছে স্নেহার সঙ্গে এতদিন, আর করবে না, মনে মনে স্থির করে নিচ্ছিল, আজ স্নেহা না থাকলে এই বিছানাতেই রাত কাটাতে হতো ওকে, সত্যিই তো ওর তো কোনো দোষ ছিলো না, এই বিয়েটা যেমন ও নিজে আটকাতে পারেনি, তেমনি স্নেহার ও নিশ্চয়ই ইচ্ছা ছিলো না, তাহলে বাপি, মামনির ওপরের রাগ টা ও স্নেহার ওপর কেনো দেখাচ্ছিলো এত দিন, নিজেরই খারাপ লাগছিলো এই মুহূর্তে।
স্নেহা এখনও বসে মাথা টিপে যাচ্ছে, ওর নিশ্চয়ই ঘুম পাচ্ছে, ওকে কি এবার শুয়ে পড়তে বলা উচিত নয়, নিজে হলে কি স্নেহার জন্য এগুলো করতো ও, নিজেই খুঁজছিলো উত্তর গুলো।
খুব ভালো লাগছে স্নেহা কে এখন, নিজের করা খারাপ কাজগুলোর জন্য ক্ষমা চাইতে ইচ্ছা করছে, খুব ইচ্ছে করছে ওর কোলে মাথাটা রাখতে, ভাবতে ভাবতে পাশ ফিরে ওর কোমর টা জড়িয়ে ধরে স্নেহার কোলে মাথাটা রেখে চোখ বন্ধ করলো বাবাই।
মাথা টিপতে টিপতে চোখ টা একটু বন্ধ হয়ে এসেছিলো স্নেহার, এই অবস্থায় ও টের পেল বাবাই ওর কোমর জড়িয়ে ধরে কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু সতর্ক হয়ে সোজা হয়ে বসলো স্নেহা, ও জানে এই জ্বরের ঘোরে করা জিনিসগুলো কাল সকালে আর মনে থাকবে না বাবাই এর, তখন উল্টে ওকেই দোষারোপ করবে ও, কারণ ও কোনো দিনই স্নেহা কে ওর খুব কাছে আসতে দেয়না, প্রথম দিন থেকেই এই কথাটা বলে দিয়েছিলো, সেই থেকে ও ও দূরত্ব বজায় রাখে সব সময়।
কিন্তু এখন ওর কি করা উচিৎ, ও কি মাথা টা সরিয়ে দেবে, সবে ঘুমিয়েছে, এতক্ষন মাথা ব্যাথায় ছট ফট করছিলো, সরাতে গেলে যদি ঘুম ভেঙে যায়, আবার সকালে ঘুম ভেঙে এইরকম দেখলেও তো ও স্নেহার ওপর রেগে যাবে, স্নেহা কোনো ডিসিশন নিতে পারছে না। যা হয় হোক ভেবে শেষ পর্যন্ত বসে থেকেই চোখ টা বন্ধ করলো শেষে।
চলবে
তুমি রবে নীরবে
পর্ব ৭
চোখের ওপর রোদ এসে পড়তেই ঘুম টা ভাঙলো, জ্বর নেই তবে খুব দূর্বল লাগছে, ভাগ্যিস আজ রবিবার, না হলে এখনই আবার হসপিটালে দৌড়াতে হতো, রবিবার মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাশ ফিরে আবার শুয়ে পড়লো বাবাই।
কাল রাতের কথা মনে পড়ছিলো, স্নেহা কে খুব জ্বালিয়েছে, ওর বমি শুদ্ধ পরিষ্কার করতে হয়েছে বেচারি কে, কোথায় আছে এখন কে জানে, খুব চা খেতে ইচ্ছা করছে। অন্যদিন চা এনে নিজেই ডাকে, আজ বোধহয় ওর শরীর খারাপ বলে আর ডাকেনি। নাহ! আর শুয়ে থাকা যাচ্ছে না,
নিজেই উঠে আজ ডাকলো স্নেহা, স্নেহা,
ডাক শুনেই ছুটে এলো স্নেহা, মুখটা কেমন যেনো ভয়ার্ত, বাবাই আজ পর্যন্ত কোনো দিনও ডাকেনি নিজে, তাই কেমন কেনো অপরাধী মুখ নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে, কিছু হয়েছে ভাবছে নিশ্চয়ই।
চা করোনি আজ?
আসলে তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তো তাই, ভয় ভয় গলায় বললো স্নেহা,
স্নেহার গলা টা শুনেই হাসি পেয়ে যাচ্ছিলো, ও খুব ভয় পেয়ে গেছে, বিরাট কিছু অশান্তির আশঙ্কা করছে বোধহয়,
বুঝেছি সেটা, চা দাও তাড়াতাড়ি, হাসি চেপে রাখলো ও।
স্নেহা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো, দৌড়ে বেরিয়ে গেলো চা করতে,কাল রাতে যে ও স্নেহাকে ইচ্ছা করেই জড়িয়ে ধরেছিলো সেটা বোঝেনি বোঝা গেলো, তাহলে এত ভয় পেতো না ওর ডাকে, বাবাই এর মজা লাগছিলো।
আস্তে আস্তে স্নেহা ওর মনে জায়গা করে নিচ্ছে বুঝতে পারছিল, এই সব কিছু হাতের কাছে না চাইতেই পেয়ে যাওয়া, জ্বরের সময় মাথায় একটা ঠান্ডা হাতের স্পর্শ ক্রমশ টানছিলো ওকে, একটা সুখী, সুন্দর সংসারের লোভ কোথায় যেনো জেগে উঠছে মনের মধ্যে টের পাচ্ছে এখন।
সায়ন্তি কে শরীর খারাপ বলে ফোন করলো কাল, আজ পর্যন্ত একটা খোঁজও নিলো না ওর, বাড়ি গেলে কি একটা ফোনও করা যায়না। অথচ টাকার দরকার হলেই কি সুন্দর ফোন করে ফেলে, একবারও ভাবে না, ওর সুবিধা, অসুবিধার কথা, ওর দিতে কোনো অসুবিধা হবে কিনা জানতেও চায়না কোনোদিনও।
অনেক সময় এরকম হয় যে বাড়িতে টাকা পাঠানোর পর, স্নেহা কে সংসারের জন্য দিয়ে ওর সেরকম আর হাতে থাকেনা, কিন্তু তাও মুখের ওপর না বলতে পারেনা ও।
মাঝে মাঝে ওকে যেনো শুধুই ইউজ করে সায়ন্তি, এরকম মনে হয় ওর। ওর রোজগারের পাশাপাশি বাবাই ই তো টানে ওর ফ্যামিলি কে এতদিন ধরে, তাও কোনো কৃতজ্ঞতা নেই ওর।
বাবাই সেই জন্যই বলেছিলো, দুজনেই তো চালাই তোর সংসার, তাহলে কেনো বিয়ের পরেও এই কাজটাই করতে পারবো না, কিন্তু সায়ন্তির রাজি না হবার কোনো কারণ এখনও স্পষ্ট হয়নি ওর কাছে। আদৌ ওকে ভালোবাসে কি সায়ন্তি, এই প্রশ্ন টা বেশ কিছুদিন ধরেই মনে হচ্ছে।
স্নেহা চা করে রেখে গেছে, চা খেতে খেতে এই কথাগুলো মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সায়ন্তি কে ফোন করলো বাবাই, ফোন টা সুইচড অফ।
বাড়িতে থাকলে ফোনও বন্ধ করে রাখে কেনো কে জানে, প্রতিবার একই জিনিস, বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে গেছে ও, অগত্যা, মেসেজ রেখে দিলো হোয়াটসঅ্যাপে।
ইচ্ছা করলেও এখন যোগাযোগ করতে পারবেনা ও, ওর বাড়ির আর কারো নম্বর ওর কাছে নেই, দিচ্ছি, দেবো করে দেয়নি আজ পর্যন্ত। এতো গুলো বছরে খুব বেশি দরকারও পড়েনি তেমন, তাই নেওয়া হয়নি আর, এখন একটু আপসোস হচ্ছিলো।
আগে মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে আসতো, এখন বিয়ের পর সেটাও বন্ধ হয়েছে, তবে বাবাই নিজেও চায়নি সেটা, এত টা দৃষ্টিকটু ব্যাবহার স্নেহার সঙ্গে করতে পারেনি। স্বামী তার বান্ধবী কে নিয়ে ফ্ল্যাটে বসে গল্প করছে, এটা কোনো স্ত্রীর পক্ষে মেনে নেওয়া যথেষ্ট কঠিন, এটা জানে ও, এত টা নিচে আর নামা সম্ভব ছিলনা ওর পক্ষে। তাই ও বাইরেই দেখা করে সায়ন্তির সঙ্গে।
এবার ফিরে এলে কথা বলতে হবে, এই ভাবে দু নৌকায় পা দিয়ে সারা জীবন চলা সম্ভব নয়। এটা ওদের সবার জন্যই খারাপ হচ্ছে, স্নেহার সারাজীবন টা এই ভাবে নষ্ট করার কোনো অধিকার নেই ওর, সেটাও বুঝতে পারছে এখন।
কিন্তু স্নেহা কে কি আর ডিভোর্স দিতে পারবে ও, কেমন যেনো সংশয় হচ্ছে এখন, অথচ, বিয়ের মাস খানেক পর্যন্ত ও সায়ন্তিকে বোঝতে চেষ্টা করেছে, বলেছে সায়ন্তি মনস্থির করলেই ও ডিভোর্সের জন্য কথা বলবে স্নেহার সঙ্গে, সায়ন্তি রাজি হয়নি।
এখনও রাজি হবে না ও জানেই, তাও যদি হয়? তাহলে, স্নেহা কে ডিভোর্সের কথা বলতে পারবে তো, স্নেহা এই ফ্ল্যাটের কোথাও নেই, এটা ভাবতেও যেনো ওর খারাপ লাগছে এই মুহূর্তে, স্নেহাকে কি ভালোবেসে ফেলছি, ওকে ডিভোর্স দিতে পারবো না ,এরকম মনে হচ্ছে কেনো, নিজেই চমকে উঠলো বাবাই।
কাল রাতে আর ফোন করা হয়নি মা আর মামনি কে, দুজনেই রেগে থাকবে জানে ও। যদি শরীর খারাপ বলি, তাহলে আবার কিছুক্ষণ ছাড়াই ফোন করতে থাকবে দুজনে, তাই কিছু বলা যাবেনা বাড়িতে, ভেবে ফোন টা তুলে নিলো, পর পর দুজনকেই ফোন করতে হবে এখন।
দুজনেরই প্রচুর অভিযোগ, মায়ের অভিযোগ স্নেহা ফোন করে না, কি হয়েছে আজই জানাস আমাকে, ও কি আমাদের ভুলে গেছে, আমরা কি ওর কেউ নই, বলেই যাচ্ছিলো মা। স্নেহার সঙ্গে কথা বলে জানাবে বললো বাবাই।
তাহলে ও ঠিকই ভাবে স্নেহা ফোনই করেনা বাড়িতে, সে আর কি অভিযোগ জানাবে বাবাই এর সম্বন্ধে, সারাদিন মেয়েটা এত চুপ করে থাকে কি করে কে জানে।
শুধু ব্যালকনি তে গিয়ে গাছের কাছে বসে ওকে কথা বলতে দেখছে বাবাই, গাছ গুলো যেনো ওর জীবন, প্রতিদিন কি যত্ন করে গাছ গুলোর। ফুল তুলে যখন ঠাকুরের সিংহাসন সাজায় মাঝে মাঝে তাড়াতাড়ি ফিরলে দেখে ও, খুব ভালো লাগে তখন ওকে বাবাই এর, কি মগ্ন হয়ে কাজ করে ও, বাবাই যে ঢুকেছে বুঝতে পারেনা অনেক সময়ই।
স্নেহা ব্রেকফাস্ট নিয়ে ঢুকলো ঘরে, এত বেশি পানকচুয়্যাল ও বাবাই অবাক হয়ে যায় মাঝে মাঝে, কোনো দিনও সময়ের নড়চড় হয়না একটুও। খাটের ওপর থালাটা রেখে বেরিয়ে যাচ্ছিলো,
দাঁড়াও শুনে দাঁড়িয়ে পড়লো স্নেহা। ফোন করোনা মা কে? মা বলছিলো একটু আগে,
একটু চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে কোনো উত্তর না দিয়েই বেরিয়ে গেলো স্নেহা। ও কি বিরক্ত হলো ফোনের কথা বলায়, আমি কি একটু বেশি ব্যাক্তিগত ব্যাপারে নাক গলিয়ে ফেলছি, এগুলোতো আমার বিষয় নয়, মা মেয়ের ব্যাপার, আমার ঢোকা উচিত নয় বোধহয়,আর এই ব্যাপারে কোনো কথা বলবে না ভেবে নিলো বাবাই।
চলবে