তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১৭

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৭

.
🍁
কারও এমন কন্ঠ কানে আসতেই আমি চমকে পিছন ঘুরে তাকাতেই চোখে পড়ল ভয়ংকর প্যারাবাসিকে মানে রিদ খাঁনকে,, রিদ খাঁনকে চোখের সামনে দেখার সাথে সাথেই আমি লাফ দিয়ে ওঠে দাঁড়ায় বসা থেকে গাড়ি ছাঁদের ওপরই,, আমি ওঠে দাঁড়িয়ে সাথে সাথে এক চিৎকার করে বলে উঠি…..

.
—-” আপনিইইই…..

.

উনাকে এই মূহুর্তে এখানে দেখে অবাকের উচ্চ স্তরে পৌঁছে যায় আমি,, আর আমার আপনি বলার সাথে সাথে উনি রাগে দাঁত কিরমিরিয়ে উঠে, আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে…..

.
—” নেমে এসো….

.
উনার রাগি দৃষ্টি সাথে রেগে উঠা স্বরে কথায় আমি খানিকটা ভয় পেয়ে যায়,, না জানি এখন আবার কি করে এই লোক, এই মূহুর্তে সাংঘাতিক ভয়ে বাস করছি আমি এই গুন্ডা বালকের জন্য,, রিদ খাঁনের রাগে চাপা সুরে কথা গুলো শুনে আমি একটা শুকনো ঢুক গিলে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে নেমে উনার সামনে দাড়িয়ে পরি, আমি উনার সামনে দাঁড়াতেই উনি আমাকে এক পলক ওপর থেকে নিচ পযন্ত চোখ বুলিয়ে নেয় রাগী দৃষ্টিতে, উনার এমন দৃষ্টি দেখে আমি ভয়ে কাচুমাচু করতে থাকি, উনি আমাকে এমন করতে দেখে খানিকটা রেগে চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠে……

.
—” পাগলামো করতে করতে এখানেও চলে এসেছো মরতে,,, এতো কিছুর পরেও তোমার কলিজা কেঁপে ওঠে না আমার সামনে আসতে, ভয়টা এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেছে তোমার হুমম…..

.
উনার এমন শক্ত গলার কথা শুনে আমি জানি ভরকে গেলাম মূহুর্তের আর সেই ভরকে যাওয়া অবস্থায় উনার দিকে ভিতু চোখে তাকায় আমি, এই মূহুর্তে উনাকে যতটা না ভয় পাচ্ছি একটু পরেই হয়তো আমার সেই ভয়টা কেটে যাবে, আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো কখনোই আমি মনে ধরে রাখতে পারি না, তাই একটু পরেই আমাকে আঘাত করা মানুষটার সাথে স্বাভাবিক হয়ে ওঠি নানান রকমে পাগলামোতে আর এটাই আমার বড় সমস্যা,,, আর আমার এই সমস্যাটি যাহ এই মূহুর্তে রিদ খাঁন নামক অপদার্থটি হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন,,

.
উনার দিকে আমি ভিতু ভাবে তাকিয়ে থেকে নিজের চোখটা যখন নিচে নামিয়ে নিতে যাব তখনই চোখে পড়ল উনার সেই রক্ত মাখা হাতটি, যাহ এখনো আগে অবস্থায় আছে তবে একটু পরিবর্তন হয়েছে সেটি হল এখন আর উনার হাত থেকে রক্ত ঝরছে না তবে হাতে থাকা রক্ত গুলো শুকিয়ে লেপ্টে রয়েছে হাতের চারদিকে, আমি উনার হাতটি দেখার সাথে সাথে চমকে উঠে দ্রুত বলে ওঠি…..

.
—” একি আপনি এখনো হাতের বেন্ডেজ করেনি কেন অনেকটাই তো কেটে গেছে…..

.
কথাটা বলেই আমি দ্রুত গতিতে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে উনার রক্ত মাখা হাতটি ধরতে যবো তার আগেই উনি এক ঝটকায় নিজের হাতটি সরিয়ে নেয় আমার থেকে, আমি উনাকে এমন করতে দেখে কিছু বলতে যাবো তার আগেই উনি আমাকে কিছুই বলতে না দিয়ে খানিকটা অভিমান সাথে রাগ মিশ্রিত গলায় আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..

.
—” কেটে ফেলি বা রেখে দেয় আমার হাত আমি বুঝবো কি করবো তোমাকে দেখতে হবে না,, সাথে নিজের অবস্থানটাও বুঝে কথা বলো……

.

—” আরেহ……

উনি উনার কথা গুলো শেষ করেই আমার কোনো রকম কথা না শুনেই চলে গিয়ে রাস্তার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে পড়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুঁজছে খুব সম্ভবত কারও কাছ থেকে হেল্প নেওয়ার জন্য রাস্তা গাড়ি খুঁজে চলছে,, আমি উনাকে এমন করতে দেখে দৌড়ে গিয়ে উনার পাশে দাঁড়িয়ে পরি উনার মতো করে ভাব নিয়ে,, পরে উনাকে দেখে কপি করে উনি যেদিকে তাকাচ্ছে যেমন বগিতে আমি সেদিকে তাকাচ্ছি ঠিক তেমন বগিতেই,, আমাকে এমন করতে দেখে উনি ভ্রুঁ কুঁচকে তাকান আমার দিকে আমিও উনার মতো করে ভ্রুঁ কুঁচকে উনার দিকে তাকাইতে রিদ খাঁন মূহুর্তে রেগে আমার দিকে তেড়ে আসতেই আমি দুকদম পিছিয়ে যায়,,,,,

.
আমাকে পিছিয়ে যেতে দেখে উনি থেমে যায় পরে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু না বলে আবারও সামনের দিকে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে আগের মতো করে গাড়ি অনুসন্ধান করতে লাগে শূন্য রাস্তা মাঝে,,

.
আমি উনার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে আস্তে করে উঠে বসি গাড়ির ডিক্রিতে পরে গোল গোল চোখে চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে আবারও তাকায় উনার দিকে, উনার দিকে নিজের দৃষ্টি স্থির রেখে খানিকটা উচ্চ স্বরে বলে ওঠি………

.
—” এই যে শুনছেন আমার খুব ক্ষুদা লেগেছে আপনি খাবার অডার করুন না প্লিজ….

.
আমার এমন খাবার কথা শুনে যেন উনি মূহুর্তের তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে আর সেই জ্বলে উঠা রেশ ধরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..

.

—” ক্ষুদা লাগলে আসো আমাকে খাও , কি খাবা আমাকে,,,
.

উনার এমন অফারে আমার চোখ মুখ খুশিতে চকচক করে ওঠে কিন্তুু পর মূহুর্তেই কিছু একটা ভেবে আফসোস সুরে বলে উঠি……

.

—” ইশশশ আমি তো কখন থেকে এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম কিন্তু এখন আমার কপালটাই খারাপ আর মানুষ তো আর খাওয়া যায় না, তাই আপনাকেও খাব নাহ সাথে আপনি অনেক শক্তও হবেন, তাই আমার জন্য সফট কিছু খাবার অডার করুন না প্লিজ আমি বাড়িতে গিয়ে আপনার সব কয়টা টাকা দিয়ে দিব সত্যি বলছি,.
.

আমার এমন কথায় যেন উনার রাগটা আরও বাড়িয়ে দেয় উনি সেই রাগের বশবতী হয়ে চাপা সুরে দাঁতে দাঁত পিষে বলে উঠে…..

.

—” ওহ তাই , আচ্ছা আমি শক্ত হলে আশেপাশে কতো সফট খাবার লতা পাতা পরে আছে ঐ গুলো খাও তুমি তোমার জন্য এই গুলাই বেস্ট ও মজাদার হবে,,,

.

—” আপনি ক্ষেয়েছেন বুঝি…..
.

—” এই গুলা মানুষে খাই না, তবে এটা তোমার জন্য বেস্ট…. (বেঙ্গ করে)

.

–” ছিই এই গুলা মানুষ না ক্ষেলে আমি কেন খাব,,, (নাহুচ সুরে)

.

—” সেটাই তো আমি কখন বললাম এই গুলা মানুষ খাই, আমি তো বললাম এই গুলা তুমি ক্ষেতে পারো, তোমার জন্য বেস্ট তোমার খাবার এই গুলো…..

.
উনার এমন কথায় আমি মূহুর্তেই রেগে যায় তাই উনার দিকে তাকিয়ে থেকে কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠি…..

.

—” মানে এই আমাকে আপনার মানুষ মনে হয় না,,,

.

—” কেন কোনো সন্দেহ আছে তোমার….. (ভ্রুঁ কুঁচকে)

.

—” এই আপনার সমস্যা কি হ্যা,,, (উচ্চ স্বরে)

.

—” সমস্যা, সমস্যা রানী তুমি, যেখানেই যাবে সেখানেই সমস্যা বস্তুটি তোমার পিছন পিছন নিয়ে ছুটবে,,, কখনো ভুলেও এটি নিতে ভুলো নাহ তুমি, আর যায় হোক সমস্যা বিষয়টি তোমার সাথে থাকা চাই ব্যাস….. (তেজ দেখিয়ে)

.

—” বললেই হলো, আপনি সমস্যা রাজা তাহলে, যখন থেকে আমার জীবনের এসেছেন তখন থেকে শুধু আমার জীবনে অদ্ভুত আর কষ্টই পেয়েছি আপনার কাছ থেকে আমি,,,

.
আমার এমন কথায় যেন মূহুর্তের নিজের চেপে রাখা রাগটা আর ধরে রাখতে পারেনি তাই সাথে সাথে আমার দিকে তেড়ে এসে আমার গাল শক্ত করে চেপে ধরে গাড়ি সাথে পরে আমার দিকে হিংস্র ভাবে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে,,,

.

—” আর আমার কষ্টটা, সেটা কে দেখবে তোর জন্য যে আমি কতটা ভয়াবহতায় ভুক্তভোগী হচ্ছি সেটা, যে আগুন চারদিকে লাগিয়েছিস তুই সেটা কে নেভাবে বল,, তুই কখনো বুঝতে চেয়েছিস আমার জায়গায়টা, আরে আমি তো তোকে…..

.
সম্পূর্ণ কথাটা শেষ করার আগেই কি যেন ভেবে মূহুর্তেই চুপ করে যান উনি, পরে আমার চোখে মুখে দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ ছেড়ে দিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে পরে সামনের দিকে তাকিয়ে থেকে পরে আকাশে দিকে তাকিয়ে থেকে জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে………

.
—” ফোনটা সাথে করে নিয়ে আসেনি, তাই আমরা এখানে আটকা পরে আছি, কাউকে খবর দিতে পারছি না আমাদেরকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাছাড়া নিরজন এলাকা আশেপাশে কাউকে দেখতেও পারছি না হেল্প নেবার জন্য,,,

.
উনি এখন কি বললেন সেটা আমার মাথায় ঢুকে নি আমার কানে শুধু উনার বলা আগের কথা গুলো বাজছে, উনারও কষ্ট আছে, আমি উনার জায়গায়টা বুঝতে পারছি না, আর পরে কথাটা উনি কি বলতে চেয়ে ছিলেন যেটা হঠাৎ করেই থেমে গেলো, উনার না বলা কথাটি সম্পূর্ণ শুনার জন্য আমি উনার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কৌতূহলী হয়ে বলে উঠি…..

.
—” আপনি আমাকে কি, সেটা বলছেন না কেন….

আমার এমন কথায় উনি আমাকে কিছু না বলে সামনে দিকে হাটতে থাকে, উনাকে সামনের দিকে হাটতে দেখে আবারও আমি উনার পিছন পিছন ছুটতে থাকি আমার করা প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আশায়, উনার কোনো হেলদোল না দেখে আমি বিরক্তি নিয়ে বলে ওঠি……..

.

—” কি হলো বলছেন না কেন আপনি আমাকে কি,
আর আজ আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে যেতে পারবেন না, আমি যেতে দিব না,,,

.
—” আমি বাধ্য নয় কোনো কিছুতে,,( শান্ত ভাবে)

.

—” আপনি বাধ্য, আপনি সবকিছুতেই বাধ্য আমার কাছে কারণ আমি আপনার বিয়ে করা বউ…… (রেগেমেগে)

.

আমার এমন কথায় উনার কোনো ভাবান্তর হল না উনি সামনের দিকে হেঁটে যেতে যেতেই আমাকে উদ্দেশ্য করে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে…..

.

—” মনে আছে তাহলে সেটা তোমার, যে তুমি কারও বিয়ে করা বউ………

.

.

চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here