তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১৫

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৫

.
🍁
আমি চোখের সামনে রিদ খাঁনের লাল চোখ দেখতে পেয়ে জান যায় যায় অবস্থা মনে হচ্ছে এই বুঝি আমার জান কব্জচ করে নিবেন উনি,, আমি ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় পাশ থেকে রিদ খাঁনের ভাই আমার এক হাত নিজের হাতে মাঝে নিয়ে হাসি মুখে বলে উঠে……

.

—” মায়ুপাখি এই হল আমার ভাই রিদ খাঁন নামটা মনে হয় তুমি আগেও শুনেছো যায় হোক,,, আর রিদ ওহ হলো রিক্তা ইসলাম মায়া মানে আমার বউ….

.

উনার এমন বউ বলে আমাকে সম্মোধন করা সাথে সাথে রিদ খাঁন বসা অবস্থায় বাম হাতের রাখা পানির গ্লাসটা আবারও শক্ত ভাবে চেপে ধরে মুষ্টি বদ্ধ করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে থাকে এই মূহুর্তে,, হয়তো কোনো কারণে নিজের রাগটা প্রকাশ করতে চাইছে না নিজের ভাইয়ে সামনে,, তাই উনার টগবগিয়ে উঠা রক্ত লাল চোখে জোড়ার দৃষ্টি এখন টেবিলে ওপর নিক্ষেপ করা দাঁতে দাঁত চেপে,,,

.

রিদ খাঁনে ভাইয়ে কথায় মূহুর্তে মাথা গুড়িয়ে ওঠে আমার,, সামনে যমরাজ (রিদকে উদ্দেশ্য করে) প্রচন্ড রেগে বসে আছে ফ্রাইয়ার হয়ে,, আর আমার পাশে যমরাজের ভাই হাসি মুখে দাড়িয়ে আছে খুশিতে গদগদ হয়ে,, আমি একবার রিদ খাঁনের দিকে তাকাচ্ছি তো একবার রিদ খাঁনের ভাইয়ে দিকে তাকাচ্ছি,, এই দুই ব্যাক্তির মাঝে এই মূহুর্তে ভিষণ বাজে ভাবে ফেঁসে গেছি আমি. এক ভাইয়ের বউ হয়েও বউ হয়ে ওঠতে পারিনি আমি, আর অন্য ভাই যাকে আমি কখনো দেখিনি পযন্ত সে ব্যাক্তি আমাকে বিনা নোটিসে এমনই এমনই বউ বানিয়ে নিল তার , আল্লাহ কি সাংঘাতিক লোকরে এই দুই ভাই,, এই মূহুর্তে আমার রিদ খাঁনের ভাইকে পাগলা গারদে থেকে পালিয়ে আসা কোনো ভয়ানক রকমে পাগল আশিক মনে হচ্ছে,, ব্যাচারা প্রেমিকা সুর্গে এমন করছে, মনে হয় প্রমিকা উনার অল্প বয়সেই উানাকে ছেড়ে চলে গিয়ে ছিল তাই এখন মানসিক রোগী হয়ে গেছে,,, আহা ব্যাচারার ঠিক করে প্রেমটাও করতে পারলো নাহহহ ইশশশ কি কষ্ট,, এমন বুক ভরা আফসোস সাথে আবারও পাশ থেকে রিদ খাঁনের ভাই স্বাভাবিক কন্ঠে হাসি মুখে রিদ খাঁনকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” রিদ সরি আসলে সবকিছু এতো দ্রুত হলো যে তোকে কিছু বলতেই পারি, আজকেই সবকিছু ঠিকঠাক হলো মায়া সাথে, আবশ্য তুই আজকে বাসায় পৌছিয়ে জানতে পারতিস এই বিষয়ে,, আজকেই নানাভাই-নানুমা মায়াকে আমার জন্য ঠিক করে এসেছে ওদের বাড়িতে গিয়ে, সাথে আমারও যাওয়ার কথা ছিল ওদের বাসায় কিন্তুু তোর সাথে আমাদের কম্পানির জরুরি মিটিং ছিল বলে এখানে আসতে হয়েছে আমাকে,, সারাটা দিন ধরে অস্থিরতায় ভুগছিলাম মায়াকে এক পলক দেখার জন্য সাথে আমাদের স্পেশাল একটা দিনে আমি ওর পাশে থাকতে পারিনি তাই অনেকটাই খারাপ লাগাও কাজ করছিল নিজের মধ্যে,,, কিন্তুু হঠাৎ করেই ওকে এখানে দেখে আমি জাস্ট আবাক হয়ে যায়, তাই দ্রুত ওর সাথে কথা বলার জন্য এগোতেই মায়া পা স্লিপ করে তাই আগে ওকে বাচিয়ে তোর কাছে আসি,,, যাই হোক এখন বল ভাবি কেমন হয়েছে তোর…..

.
উনার এই কথায় আমার ওপর যেন বোম ফাটা মতো ছিল,, আমার উনার সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে আল্লাহ আর আমি কিছুই জানি নাহ, তাই উনার কথা গুলো বলার সাথে সাথে আমিও আমার পঞ্চ বান্ধবীরাও অবিশ্বাসহ গলায় এক সাথে চিৎকার করে বলে উঠি……

.
—” কিহহহহহহহহহ….

.
আমাদের এমন চিৎকারে চমকে উঠে সবাই আমাদের দিকে তাকায়, রিদ খাঁনের দৃষ্টি তখনো টেবিলের ওপর নিক্ষেপ করা ছিল,,, কিন্তু রিদ খাঁনের ভাই দ্রুত গতিতে আমাদের দিকে তাকায়,, আমাদের সবাইকে উনার দিকে অবাক হয়ে তাকাতে দেখে উনি হালকা হেসে ওঠে,,

.

রিদ খাঁনের ভাইয়ের কথা শুনে + উনাকে হাসতে দেখে মূহুর্তে চমকে উঠি আমি,, বিয়ের কথাটি মাথায় আসতেই খুশিতে চকচক করে উঠে আমার চেহেরাটা,, আমার না হওয়া বর আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিষয় ভাবেই খুশিতে নেচে উঠে আমার মন,, তাই এতক্ষণ কি হয়েছে এখানে সবকিছু মূহুর্তে ভুলে গিলে ফেলে খানিকটা এগিয়ে যায় উনার সামনে পরে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করে বসি….

.
—” এই আপনি আমার আজকের বরটা বুঝি,, যার সাথে আমার আজ আন্টি বদল হয়েছে…..

.

উনি আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমার এমন প্রশ্নে উনি উচ্চ স্বরে হেসে উঠে সাথে সাথেই,, পরে সেই হাসিটা ঠোঁটের মধ্যে বজায় রেখে আমাকে উদ্দেশ্য করে নিজের মাথাটা ওপর নিয়ে নাড়িয়ে সুমতি জানায় যার অর্থ হ্যাঁ উনিই আমার আজকের বরটা. উনার কথা শুনে মূহুর্তেই আমি খানিকটা লজ্জায় সিটিয়ে যায় উনার সামনে, আমাকে লজ্জা পেতে দেখে আমার পঞ্চ বান্ধবীরা হা হয়ে তাকিয়ে থাকে আমাদের দিকে , ওদের সাথে সাথে রেস্টুরেন্টে এর সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, আর রিদ খাঁন আগের থেকে আরও একধাপ বেশি রেগে বসে আছে,,

.

আমার পঞ্চ বান্ধবীরা হা হয়ে একবার উনার দিকে তো একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে,,, ওদের এমন তাকানোর মানে হলো ওরা আসলে বিষয়টি বুঝতে চাইছে কি হচ্ছে এখানে,,, আমি ওদের এমন তাকানোর মানে বুঝতে পেরেও কিছু না বলে নিজের মতো করে আবারও আমার না হওয়া বরের দিকে তাকিয়ে থেকে ঝটপট সুরে প্রশ্ন করে বলে উঠি…..

.
—” আচ্ছা আপনার নাম কিগো আমার নাহ হওয়া বর সাহেব….

.
আমার এমন কথায় সাথে সাথে আমার পঞ্চ বান্ধবীরা আমার ওপর তাদের দৃষ্টি নিক্ষেপ করে হা হয়ে, হয়তো আমার এমন বাণী শুনে আকাশ থেকে পরেছে এমন একটা ফেস বানিয়ে রেখেছে,,, আমি ওদের এমন রিয়াকশনের ধাপটা ওদের কাছেই রেখে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি ওনার দিকে,, আর উনি আমার এমন কথা আবারও হেসে উঠে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.
—” রুদ্র সের্ন, রুদ্র গ্রুপ অফ কোম্পানি নাম শুনেছো নিশ্চয় সেটার ওর্নার মানে মানিক পক্ষ আমি আর ডেডা(বাবা),,, আর রিদ আমার মামাতো ভাই হয়,, এবার বলুন আমার ম্যাডামের কিহ আমাকে পছন্দ হয়েছে হুমমম…… মজার ছলে

.

উনার কথা আমি ভালো করে তাকায় উনার দিকে এতোক্ষণ যাবত ভয়ে আর টেনশনে উনার দিকে ভালো করে খেয়াল করিনি কিন্তুু এবার আমি উনাকে ভালো করে খেয়াল করতেই চোখ জুড়িয়ে যায় আমার, অপূর্ব সুন্দর সৌন্দর্যর অধিকারী রুদ্র সের্ন,, গায়ের রংটা উজ্জ্বল ফর্সা চেহারার মধ্যে মায়া ভরপুর, হাইটা রিদ খাঁনকে চুই চুই মনে হয় এক ইঞ্চি কম হবে,, জিম করা বডি ফিটনেস,, সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি ব্যাক্তি,, সৌন্দর্য কোনো কমতি নেই উনার মধ্যে,,, তবে উনার থেকে রিদ খাঁনের দুটো জিনিসে জন্য আর্কশন বেশি করে তুলে সেটি হলো রিদ খানের মায়াবি নীল চোখ জোড়া, আর উনার joss personality টা মানে উনার এ্যার্টি্টিউট, রাগের কারণে উনাকে একটু বেশিই সুন্দর লাগে,,,

.
আমি উনাকে ভালো করে দেখার পর চোখে মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে আস্তে করে বলে উঠে…..

.
—” হুমমম,

.
আমাকে এমন লজ্জা পেতে দেখে হালকা হেসে বলে উঠে…..

.

—” তাই, তবে আমার কিন্তুু ম্যাডামকে বেশ পছন্দ হয়েছে যাকে বলে পাগল করা টাইপ,,,

.
রুদ্র সের্ন এর কথায় আমি নিজের মাথাটা নিচু করে হালকা লাজুক হাসলাম আমার এমন হাসিটা সবার পছন্দ হলেও একজনের হয়তো পছন্দ হয়নি আর সেটা হলো রিদ খাঁন,, আমি সুমতি জানিয়ে হাসার সাথে সাথে রিদ খাঁনের হাতে চেপে ধরে থাকা গ্লাসটা আরও শক্ত করে চেপে ধরে মূহুর্তেই ভেঙ্গে গুলিয়ে ফেলে, হাতে চাপ দিয়ে গ্লাসটি ভাঙ্গার সাথে সাথে অসংখ্য কাঁচের টুকরো উনার হাতে ডুকার কারণে হাত দিয়ে অঝোর ধারা রক্ত ঝরতে লাগে সাথে পুরো টেবিল রক্তে ভেসে যায় মূহুর্তেই,,,

.
উনার হাতে এতো রক্ত দেখে মূহুর্তেই আমি কেঁপে ওঠি ভয়ে,, কাঁপা অবস্থায় টায় জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে কাতর চোখে তাকিয়ে থাকি উনার দিকে, উনি তখনো রাগে কটমট করতে করতে নাক ফুলিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে শক্ত ভাবে,,,,

.
উনাকে এমন করতে দেখে রুদ্র সের্ন দ্রুত রিদ খাঁনের দিকে এগিয়ে যেতেই রিদ খাঁন একটা উঁচু করে থামিয়ে দেয় নিজের ভাইকে, পরে চোখে মুখ শক্ত রেখেই গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে…..

.

—” আমি ঠিক আছি রুদ্র, তোকে হাইপার হতে হবে নাহ আমার জন্য,,,, তবে যাকে হাইপার হওয়ার দরকার তাকে আমি নিজেই হাইপার করবো ডোন্ট ওয়ারি,, এখন বাজে কথা গুলো শেষ হয়ে থাকলে কাজে আসা যাক, এখানে টাইম পাস করতে আসিনি আমি, সো ফালতো বিষয় গুলো রেখে কাজ করা যাক,,,,,,

.
আমার যাহও উনার জন্য মন থেকে একটা খারাপ লাগা মানে দুঃখী দুঃখী ভাব আসছিল উনার হাতে অবস্থা দেখে, কিন্তু উনার কথায় মূহুর্তে সব খারাপ লাগা ভাবটা সরে গিয়ে এক ঝুলি রাগ ভর করে উনার জন্য, উনি সবসময় আমাকে অপমান করে কথা বলে,, এখনো তাই করেছে আমাকে ফালতু বলে তাই সেই রাগের বশবতী হয়ে কিছু বলতে যাব তার আগে পাশ থেকে রুদ্র সের্ন উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…….

.
—” রিদ এমন করে কথা বলছিস কেন ভাই, আর আমি আজকে কোনো রকম কাজ করতে পারবো না, আমার মায়াবতীকে নিয়ে বাকিটা সময় কাটাবো তাই সরি তোর কথা এই মূহুর্তে শুনতে পারছি না,,,

কথা গুলো বলেই আসিফ এর দিকে তাকায় রুদ্র পরে আসিফকে (রিদের বডিগার্ড) উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.
—” আসিফ রিদকে নিয়ে এখন ডক্টর এর কাছে যেতে হবে আমাদের সাথে চলো ওকে হসপিটাল রেখে মায়াকে নিয়ে বের হবো আমি,,,

.

রুদ্র এমন কথা গম্ভীর মুখে বলে উঠে রিদ খাঁন….

.

—” No need anybody helps, you just goo, i take care of my Self,,,

.

উনার এমন স্বাভাবিক কন্ঠে কথা গুলো শুনে কপাল কুচকে এলো আমার, উনাকে যখনই স্বাভাবিক কন্ঠে কিছু বলতে দেখি তখনই আমার মাথার ওপর বোম ফোটে, এবার না জানি কিহহ বোম ফাটায় আমার মাথায় আল্লাহ, উনার এমন গম্ভীর মুখের কথা শুনে রুদ্র কপাল কুচকে বলে উঠে…..

.
—” are you sure….
.

—” yeah

.

উনার কথা রুদ্র নিশ্চিত হয়ে আমাকে ও আমার পঞ্চ বান্ধবীদের নিয়ে বের হয়ে যায় রেস্টুরেন্টেন থেকে,,, আমি সবার পিছন পিছন আস্তে করে হেঁটে যেতে যেতে উনাকে এক পলক দেখার জন্য পিছন ঘুরে আবারও তাকায় উনার দিকে,,, উনার দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল উনার টগবগিয়ে উঠা রক্ত লাল চোখ,, আমার তাকানো সাথে সাথে উনি নিজের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেই,,

.
উনাকে এমন করতে দেখে আমিও কিছু বুঝে উঠে পারিনি হঠাৎ এমন করার কারণটা,, তাই আস্তে করে আমি নিজেও সামনে দিকে ঘুরে হাটতে থাকি,, সাথে ভাবতে থাকি রিদ খাঁন আমার লাইফে আসার পর থেকেই রোজ কিছু না কিছু অদ্ভুত বিষয় ঘটছেই আমার সাথে তাই জানি না আবার কাল কি হয় আমার সাথে,, এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে আবারও হাটতে হাটতে পিছনে ফিরে তাকায় উনার দিকে আমার তাকানোর সাথে সাথে আবারও চোখাচোখি হয় দুজনের মধ্যে, উনি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে……….

গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136

.

চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here