তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১৪

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৪

উনার এমন কাজে মনে হচ্ছে উনি প্রথমেই আমাকে এখানে আসতে দেখেছেন, হয়তো আমিই উনাকে লক্ষ করিনি, তাই আমি চারপাশে চোখ বুলিয়ে তাদের এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে আবারও নিজে মতো করে বলে উঠি,,,,

.

—” শুন এতো ভাব নিতে হবে না ঠিক আছে, আমি তোর কাছে কখনোই যাচ্ছি নাহ, আমি আমার পথে বেচে নিয়েছি তাই তোর আজাইরা স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে যাবে হুহহহ এই দিলাম তোকে অভিশাপ……

.

আমার এমন সব কথা গুলো বলার পরও রিদ খাঁনের কোনো রিয়াকশন না দেখে কপাল কুচকে এলো আমার আজব প্রাণী একটা যখন কিছু করি না তখন আমাকে শুধু শুধু টর্চার করে বেড়ায়, আর এখন আমি ইচ্ছা করেই উস্কানিমূলক কথা বলছি কিন্তু বান্দার সামান্য মাত্রও রাগ হচ্ছে না উল্টো আমার দিকে তাকানোর প্রয়োজন বোধ ও মনে করছে না, আচ্ছা এই প্যারাবাসি আমার অত্যাচার করে এখন ভালো হয়ে গেলো নাতো, হুমম এমনটাই হতে পারে হয়তো এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে ভালো হয়ে গেছে,,, আহা অবশেষে আমার কপালে আবার শান্তি নামক সুখটা ঝাপটাতে ঝাপটাতে ফিরে এলো আমার জীবনে আহা যাহ রিদ খাঁন নামক ভয়ানক গুন্ডাবাসির জন্য হারিয়ে গেয়েছিল, উফ আল্লাহ জোর বাঁচাহ বাঁচালো আমায়,,,

.

রিদ খাঁন ভালো হয়ে গেছে বিষয়টি মাথায় আসতেই স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে আমি, পরে নিজেকে ঠিকঠাক করে বসে সবার দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল সবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যাহ আমার দিকে নিক্ষেপ করা, আমি সবার এমন দৃষ্টি দেখে খানিকটা নড়েচড়ে বসতেই পাশ থেকে রুপা বলে উঠে…..

.
—” এই তোর কি হয়েছে, এমন পাগলামো করে কথা বলছিস কেন….

.
রুপার এমন কথায় স্বাভাবিক সোজাসাপটা ভাবেই বলে উঠি……

.

—” কেন কোনো সংবিধানের থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে যে মায়া পাগলামো করে কথা বলতে পারবো নাহ,,,

.
আমার এমন তেড়া উত্তরে থমথমে খেয়ে যায় রুপা তাই আমাকে আর কিছু না বলে মূহুর্তে চুপ করে যায় ওহ, রুপাকে আমি এমন করে বলতে দেখে হালকা হেঁসে উঠে সাব্বির ভাইয়া, পরে হাসি মুখে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” তাহ লিখা থাকবে কেন, আর এই পাগলামোতেই তোমার আসল পরিচয়,, তাই তুমি তোমাতে বেঁচে থাকো এই পাগলামোর সাথেই,,, আমার এমন পাগলামোটাই চাই তোমার সাথে সাথে,,,

—” মানে… ভ্রু কুঁচকে

.
আমার এমন প্রশ্নে থমথমে খেয়ে যায় সাব্বির ভাইয়া, কি বলেছে বুঝতে পেরেই ঝটপট তাড়া দিয়ে আবারও বলে উঠে….

.

—” আচ্ছা যায় হোক আমাকে এবার যেতে হবে, আমি উঠি এবার, আর এখানে একটা কাজে এসেছিলাম মাঝেই তোমাদের সাথে দেখা হয়ে গেলো, আচ্ছা যাই আমি ভার্সিটিতে তো আমাদের দেখাতে হচ্ছেই, আসি গাইস,,,

.

কথা গুলো বলেই আমাদের কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তাড়া করে উঠে চলে যায়,, উনার এমন চলে যাওয়াতে আমারা কেউ কিছু বুঝতে না পেরে একে অপরকে দেখে ঠোঁট উল্টায় আমি, কি হয়েছে কিছুই বুঝতে না পেরে আবারও সামনে দিকে তাকায় সাব্বির ভাইয়া চলে যাওয়ার দিকে,,

.

সাব্বির ভাইয়া চলে যেতেই আমি কুড়মুড়িয়ে উঠি তাই নিজেকে হালকা ফ্রেশ করা জন্য আমার পঞ্চ বান্ধবীকে বলে ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগলাম, ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে বের হয়ে খানিকটা এগিয়েই যেতেই আমার পা স্লিপ করে উল্টো দিকে পরে টেবিলে সাথে বারি খেতেই কেউ একজন শক্ত হাতে আমার কমড় জরিয়ে ধরে আমার পড়া থেকে বাচিয়ে নেয়, আমি তখনো ভয়ে চোখ মুখ হিচকে বন্ধ করে রাখি, কিন্তুু তখনো আমার সামনের মানুষটা কাতর দৃষ্টিতে আমার চোখে মুখে দিকে তাকিয়ে ছিল যাহ আমি না তাকিয়েই বুঝতে পারি তার এমন চাহনি, ব্যাক্তিটি খানিকটা থেমে সাথে সাথে আমাকে টেনে ওপরের তুলে নিতেই আমি হুমড়ি খেয়ে পড়লাম সামনের ব্যাক্তিটি বুকে,, আমি ব্যাক্তিটি বুকে পড়তেই যে খুব যত্ন সহকারে আমাকে আঁকলে নেই তার বুকের মধ্যে,, তার এমন করে ধরা অস্থির বোধ করছিলাম আমি কিন্তুু ব্যাক্তিটির এতে কোনো হেলদোল দেখতে পারছি না আমি উল্টো আমার এমন মনে হচ্ছে যে আমার এমন করে হঠাৎ পড়ে যাওয়া বিষয়টিতে প্রচন্ড রকম ভাবে ভয় পেয়েছে এই ব্যাক্তিটি,,

.

ব্যাক্তিটি এমন করে আমাকে নিজের সাথে চেপে ধরায় খানিকটা নড়েচড়ে ওঠি আমি কিন্তুু এতো তার কোনো রকম হেলদোল নেই তাই ব্যাক্তিটিকে নিজের কাছ থেকে দূত সরিয়ে দেওয়ার জন্য ধাক্কা দিব এমন সময় পাশ থেকে বিকট শব্দ কানে আসে আমাদের,,,

.

শব্দটি কানে আসতেই আমার সাথে সাথে ব্যাক্তিটিও চমকে উঠে দ্রুত আমাকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে পাশে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ খাঁনের হিংস্র চেহেরা,, উনাকে এমন হিংস্র ভাবটা দেখে মূহুর্তেই আমি ভয়ে সিটিয়ে যায় কারণ আমি জানি উনি কতটা ভয়ানক, আর কখন না আবার আমায় উনার রাগের বশবতী হতে হয়,, তাই এই মূহুর্তে আমার চুপ থাকায় শ্রেয় মনে হচ্ছে আর রিদ খাঁন এ-ই অসময়ে শুধু শুধু কেন রাগ করলো কিছু বুঝতে পারছি না আমি, তাই আমি একবার ফ্লোরে দিকে তো একবার উনার দিকে তাকাচ্ছি, কারণ উনি প্রচন্ড জোরে একটা গ্লাস ফ্লোরে ছুড়ে মারে, আর এতেই বিকট শব্দে সাথে সাথে উপস্থিত সবাই তাকায় উনার দিকে,,, আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে আমার সামনের ব্যাক্তিটি ঝটপট দ্রুত গতিতে রিদ খাঁনের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে শান্তনা দিতে আপন মনে বলে উঠে….

.

—” কুল ভাই আমার, এতোটা হাইপার হচ্ছিস কেন তুই, কিহ হয়েছে তোর সেটা বলবি তো, ঝামেলা হয়েছে কারও সাথে, আসিফ কি হয়েছে এখানে, আর আমার এখান থেকে যেতে যেতেই কি হলো হুমমম…(আসিফ কে উদ্দেশ্য করে)

.

কথা গুলো বলেই ব্যাক্তিটি রিদ খাঁনকে জোর করেই আবারও সোফায় বসিয়ে দেয়,, কিন্তু রিদ খাঁন তখনো চোখ লাল লাল করে আমার দিকে তাড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে এখনি আমাকে আস্তা গিলে খাবে পানি ছাড়ায় আর আমি উনার এমন দৃষ্টি দেখে ভয়ে কাচুমাচু করতে থাকি…….

.

রিদ খাঁনকে ভাই বলে সম্মোধন করতেই আমি মূহুর্তে চমকে উঠি, কারণ রিদ খাঁনের ভাই এই লোকটা যে আমাকে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচালো আল্লাহ, কিন্তুু অদ্ভুত বিষয় হলো দুই ভাইয়ের ব্যবহারে বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলাদা একজন যতটা আগুন গরম স্বভাবের অন্য ভাই ততটাই ঠান্ডা স্বভাবের মানে পানির মতো,,

.

দুই ভাইয়ের দুই বৈশিষ্ট্য দেখে আবাক হলাম আমি কিন্তুু এই মূহুর্তে আবাক হওয়ার চেয়ে ভয়টাই পাচ্ছি বেশি রিদ খাঁনের জন্য তাই নিজের আবাক হওয়ার ভাবটা পিছনে ফেলে ভালোই ভালোই এখান থেকে কেটে পারার জন্য আস্তে করে ভয়ে ভয়ে খানিকটা এগিয়ে যেতেই পাশ থেকে রিদ খানের ভাই আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…….

.

—” মায়ুপাখি তুমি কোথায় যাচ্ছো, তুমি আমার কাছে এসো আমি তোমাকে আমার ভাই রিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি…..

.

কথা গুলো বলেই উনি দ্রুত সামনে এগিয়ে আমার আমার একটা হাত শক্ত করে চেপে ধরে নিয়ে গেলো রিদ খাঁনের সামনে,, সবটা এতে দ্রুত হলো যে আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি,, আর সবচেয়ে বড় কথা হলো রিদ খাঁনের ভাই আমার নাম কিভাবে জানে, উনার কথা শুনে মনে হচ্ছে উনি আমার সাথে পূর্ব পরিচিত,, খুব গভীর ভাবে চিনে আমাকে,, আচ্ছা উনাকে তো আমি আগে কখনোই দেখিনি আর রিদ খাঁন যে আমার সম্পর্কে উনার ভাইয়ে সাথে কিছুই বলেনি তা উনার কথায় বুঝা যাচ্ছে কারণ উনি নিজেই আমাকে রিদ খাঁনের সাথে পরিচয় করাতে চাচ্ছেন,,

.
আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝেই উনি আমাকে টেনে রিদ খাঁনের সামনে দাঁড় করায়,, আমি চোখের সামনে রিদ খাঁনের লাল চোখ দেখতে পেয়ে জান যায় যায় অবস্থা মনে হচ্ছে এই বুঝি আমার জান কব্জচ করে নিবেন উনি,, আমি ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় পাশ থেকে রিদ খাঁনের ভাই আমার এক হাত নিজের হাতে মাঝে নিয়ে হাসি মুখে বলে উঠে……

.

—” মায়ুপাখি এই হল আমার ভাই রিদ খাঁন নামটা মনে হয় তুমি আগেও শুনেছো যায় হোক,,, আর রিদ ওহ হলো রিক্তা ইসলাম মায়া মানে আমার বউ….

.
(কালকে এই গল্পটি আরও একটা পার্ট দিব ইনশাল্লাহ)
.

চলবে………..

.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here