চাঁহাত ১০ম পর্ব
আরশিয়া জান্নাত
সময় নদীর স্রোতের মতোই প্রবাহমান।ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে চলে কখনো পিছু ফিরে আসেনা।অতীতের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করেই মানুষ সুদূর ভবিষ্যতে পাড়ি জমায়,সাথে থাকে একরাশ স্মৃতি আর কিছু পিছুটান।বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আশা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।যার জীবনে আশা নেই ভরসা নেই, সে বেঁচে থেকেও মৃতের সমতুল্য।
চাঁহাতের পড়নে তাঁতের সবুজ শাড়ি, চুল একপাশে বেনী করা,চোখে হালকা কাজল,কানে ছোট ঝুমকা। ব্যাগ নিয়ে ডাইনিং এ বসলো।চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি আর ফ্রুটস খেয়েই রওনা দিলো ভার্সিটিতে।গাড়িতে বসে জানলার কাঁচ নামিয়ে সকালের মৃদু রোদ উপভোগ করতে লাগলো চাঁহাত।ক্যাম্পাসে ঢুকতেই স্টুডেন্টরা তাঁকে সালাম দিতে লাগলো।চাঁহাত হাসিমুখে সবাইকে রিপ্লাই করে টিচার্স রুমে চলে গেল।চাঁহাত এখন ক্যামিস্ট্রির প্রফেসর।ভালো রেজাল্টের ফলে ভার্সিটি তাকে লেকচারার হিসেবে অ্যাপয়েন্ট করে পরবর্তীতে প্রমোশন হয়।চাঁহাতের জীবন এখন অনেক বদলে গেছে।সেই অগোছালো দস্যি মেয়েটা এখন ক্লাসের কড়া টিচার নামেই পরিচিত।করিডরে দাঁড়িয়ে বেশকিছুক্ষণ সবাইকে দেখে ফাস্ট পিরিয়ডের ক্লাস নিতে চলে গেল সে।
বিকেলে বাড়ি না ফিরে হাতিরঝিলে বসে থাকা তাঁর রোজকার রুটিন।সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে আপনজনদের সময় দিতে চাঁহাতের বড্ড ভয় হয়।সবার থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারলেই হলো।শেষ কবে সবাই একসঙ্গে ডিনার করেছে মনে পড়েনা তাঁর।
দিলারা আজকেও অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে।ওমর ফারুক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে রুমে ঢুকলেন ঘুমানোর উদ্দেশে।চাঁহাত বাড়ি ফিরেই রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিয়ে ফ্লোরে শুয়ে থাকে।ফ্লোরে শুয়ে সিলিং এ তাকিয়ে শূন্যতায় হারিয়ে যায়।আচ্ছা জীবনটা কি এমন হবার ছিল?
:হ্যালো চাঁহাত।কেমন আছিস
:ভালো আছি তুই কেমন আছিস?
:আমি ভালোই আছি।শোন কাল তো ইরফানের বার্থডে তুই অবশ্যই সন্ধ্যায় চলে আসবি।এবার যদি হেরফের করিস আমি আর নীলয় কিন্তু খুব রাগ করবো।
:চেষ্টা করবো আসতে।
:চেষ্টা করবো বললে হবেনা তোকে আসতেই হবে।দীপু আর নুশু কানাডা থেকে ফিরেছে ওরাও থাকবে কাল।অনেকদিন পর সবাই একত্রিত হবো আশা করছি তুই ইগ্নোর করবিনা।
:হুম।রাখছি
ইরার ফোন রেখে মুচকি হাসলো চাঁহাত।
রিপা খাবার নিয়ে দরজায় নক করে বললো,ছোট আপা দরজা খুলেন আপনার খাবার আনছি।
চাঁহাত দরজা খুলে চুলের বেনী খুলতে লাগলো।
:সবাই খেয়েছে রিপা?
:হ্যাঁ ।
:তুই খেয়েছিস?
:হ্যাঁ।আপা আজকেও খালাম্মা আপনার জন্য অপেক্ষা করছিল।একটু আগে আগে আসতে পারেন না?
চাঁহাত কিছু না বলে স্যুপ খাচ্ছে।এই বাসায় এখন রিপা ছাড়া কারো সাথেই কথা হয় না চাঁহাতের।
রিপা কিছুক্ষণ তাঁর দিকে তাকিয়ে বলে,কিসব যে খান আমি বুঝিনা।এমন কম খেয়ে খেয়ে এতো চিকন হচ্ছেন দিনদিন।আপা একটু ভাত আনি?আজকে আপনার পছন্দের পাবদা মাছ রান্না করছি।
চাঁহাত মুচকি হেসে বললো,তুই প্রতিদিন ই আমার পছন্দের কিছু না কিছু রান্না করিস রিপা।
রিপা টলমলে চোখে বললো, যদি ভুলেও একদিন আপনার মন চায় খাইতে সেই আশায় আমি প্রতিদিন রান্না করি ছোট আপা!
চাঁহাত রিপার মাথায় হাত রেখে বললো,এতো কেন ভালোবাসিস রিপা?আমাকে ভালোবাসার কোনো দরকার নেই।আমার এখন ভালোবাসা সহ্য হয় না।যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের আমি এড়িয়ে চলি।
রিপা কিছু না বলে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে গেল।
।
ইরফানের জন্য বেশকিছু খেলনা আর চকোলেট কিনে চাঁহাত চললো ইরাদের বাসায়।চাঁহাতকে দেখে ইরা খুশিতে কান্না করে দিলো।জড়িয়ে ধরে বললো,কত্তদিন পর তোকে দেখেছি চাঁহাত!একই শহরে থাকি অথচ দেখা হয়না।ভাবা যায়?
:ইশ এতো কান্নাকাটি করার কি আছে।
নীলয় পাশ থেকে বললো,এখন তো কম ই কাঁদছে তুই না আসলে আরো বেশি কান্নাকাটি করে।
চাঁহাত ইরফানকে কোলে তুলে বললো,হ্যাপি বার্থডে বাবাই।ভালো আছো তো?
:ভালো আছি আন্টা।তুমি কেমন আছ।
:আমিও ভালো আছি।
তখনই দীপু আর নুশু বাসায় ঢুকলো।চাঁহাতকে দেখে নুশুর বুকটা কেঁপে উঠলো।এতোদিন পর চাঁহাতকে এমন দেখবে কল্পনাও করেনি নুশু।
:এতো শুকিয়ে গেছিস চাঁহাত?? খাওয়া দাওয়া করিস না নাকি?
চাঁহাত নুশুকে জড়িয়ে ধরে বললো,কেমন আছিস নুশু?
:ভালো আছি।এই দীপু দেখেছ চাঁহাত কি সুন্দর পরিপাটি হয়ে আছে?ইরা আমি তো চাঁহাতকে চিনতেই পারছিনা।
দীপু মুখ কালো করে অন্যদিকে ফিরে রইলো।তাঁর এতো প্রিয় বন্ধুটার এমন হাল সে দেখতে পারছেনা।
চাঁহাত দীপুকে বললো,কিরে বিদেশ গিয়ে ভুলে গেলি আমাকে?ফিরেও তাকাচ্ছিস না?
:আমরা তোকে ভুলিনি চাঁহাত তুই নিজেই আমাদের ভুলে গেছিস।
:পুরনো কথা ছাড়।চলো সবাই কেক কাটি।
কেক কেটে সবাই ডিনার করলো।ইরফান তার ফ্রেন্ডদের সাথে অনেক আনন্দ করলো।
নুশু আর ইরা দূর থেকে চাঁহাতকে দেখে বললো,দেখেছিস চাঁহাত কেমন হয়ে গেছে?এই সব হয়েছে আয়াজের জন্য।
নুশুঃ আমি কখনো ভাবিনি চাঁহাতের সাথে এমন হবে।ভালোই তো ছিল মেয়েটা।হাসি আড্ডায় বেশ তো চলছিল জীবন।কি থেকে কি হয়ে গেল!
দীপু : আয়াজকে যদি পেতাম জিজ্ঞাসা করতাম কেন সে এমন করলো।আমাদের চাঁহাতকে এভাবে কষ্ট দিয়ে কি লাভ হয়েছে তাঁর!
নীলয়ঃ কি বলবো বল সব হচ্ছে ভাগ্য।
ইরাঃ আন্টি রোজ ফোন করে বলে চাঁহাতকে সময় দিতে।কিন্তু চাঁহাত তো পালিয়ে বেড়ায়।কখনো দেখা করেনা।আজ তোদের কথা বলায় এসেছে।সিয়াম চাচ্চু ওর এসব দেখে লন্ডন চলে গেছে।সে রাগ করে দেশেই আসেনা।
সবাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিরব হয়ে গেল।
চাঁহাত এই জন্য কোথাও যায় না ,সবাই তাঁর জন্য কষ্ট পাচ্ছে এটা তার দেখতে ভালো লাগেনা।মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে এক মুঠো ঘুমের ঔষুধ খেয়ে মরে যেতে।শুধুমাত্র মহাপাপ বলে এখনো এই জীবনটা বয়ে চলছে সে।
ভালোবাসা বুঝি রংধনুর মতো।যখন আসে জীবনটা কানায় কানায় রাঙিয়ে দেয়।কিন্তু যেই না চলে যায় সব ধূসর কালো অন্ধকার হয়ে যায়।আগের রং ও যেন ধুয়ে মুছে সাথে করে নিয়ে যায়।আয়াজ আসবার আগে চাঁহাতের জীবনে তো ভালোই রঙ ছিলো।সে এসে তাতে দ্বিগুণ রং ঢেলে সব কেড়ে নিয়ে চলে গেছে।”আপনি আসলেই অনেক বড় অভিনেতা মিঃ আয়াজ আহমেদ!!”
🌿🌿🌿
প্যারিসের বিশ তলা অ্যাপার্টমেন্টের চৌদ্দতলায় আয়াজ থাকে।তার ঘুম ভাঙে দুপুরের দিকে।রাতে খাওয়া বিয়ার আর হুইস্কির বোতল পুরো ঘরে এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে।সিগারেট এর ফিল্টারে অ্যাশট্রে ভরে গেছে।আয়াজ উঠে মুখ ধুয়েই তেঁতুলের শরবত খেলো।মাথাটা মনে হয় ব্যথায় ফেঁটে যাবে।আয়াজের সারাটা দিন কাঁটে ফ্ল্যাটেই।বিকেলে বের হয়ে এলোমেলো রাস্তায় ঘুরে রাতে ফিরে আবার মদের নেশা।নিজেকে তাঁর উন্মাদ মনে হয়।এই এতো বড় পৃথিবীতে এতো মানুষের ভীড়ে সে কত একা!!
মেরাজঃ হ্যালো স্যার?
:হ্যাঁ বলো।
:স্যার মেডামের অবস্থা বেশি ভালোনা।উনাকে হসপিটালাইজ করানো হয়েছে।আপনি কি আসবেন?
আয়াজ বিকট শব্দে হেসে বললো,আমি দেশে গিয়ে কি করবো মেরাজ??ঐ দেশে আমার কেউ নেই।
ঐ দেশটাকে আমি ঘৃণা করি।প্রচুর ঘৃণা করি।
:স্যার অনেক তো হলো ।এবার তো আসুন।মেডাম মনে হয় না বেশিদিন বাঁচবে।আপনার শোকে শোকে উনি মৃত্যু শয্যায়ে চলে গেছেন।প্লিজ স্যার চোখের দেখাটা অন্তত দেখতে আসুন।বড় স্যারের অবস্থাও তেমন ভালোনা।
আয়াজ কিছু না বলে ফোন রেখে দিলো।তাঁর মা মৃত্যুশয্যায়ে ভাবতেই তাঁর চোখ ফেটে কান্না বেরিয়ে এলো।সে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলো,”আমার জীবনটা হেল করে দিয়ে কি শান্তি পেয়েছ?নিয়তির সামনে এভাবে হারিয়ে দিচ্ছ কেন কোন পাপের শাস্তি দিচ্ছো আমাকে??”
মেরাজ ফোন রেখে কান্না করতে লাগলো।তাঁর এতো প্রিয় স্যার টার আজ এই দশা মেনে নিতে পারছেনা সে।আয়াজ যাওয়ার পর সে তাঁর পরিবারটাকে আগলে রেখেছে।এতোগুলো বছর আয়াজের অপেক্ষায় আছে।ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এতো বড় হিরো আজ বিদেশে ধুকে ধুকে মরছে ভাবতেই চোখে বাঁধ ভাঙা অশ্রু বের হয়।মেরাজ চাঁহাতকে ফোন করে আয়েশার খবর জানায়।এই পরিবারের দুই ছেলেমেয়ে এখন বিদেশবিভুঁয়ে।চাঁহাত মেডাম ই পারে এখন সবটা সমালাতে।
চাঁহাত ব্যস্ত হয়ে হসপিটালে এলো,মেরাজ সাহেব আন্টির কি হয়েছে?উনি কোথায় এখন?
:চাঁহাত মেডাম উনার অবস্থা ভালোনা।উনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন।ডাক্তাররা বলেছেন চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে বাঁচার পসিবিলিটি নেই।
:হায় আল্লাহ কি বলছেন এসব?সুপ্তি আপুদের খবর দিয়েছেন?উনার এই কন্ডিশনে পরিবারের সবার থাকা উচিত।
:সুপ্তি মেডামরা আর্জেন্ট ফ্লাইটে রওয়ানা দিয়েছেন।কাল সকালের মধ্যে চলে আসবেন হয়তো।আর আয়াজ স্যার,,,
চাঁহাত মেরাজকে থামিয়ে বললো,আঙ্কেল কোথায়?
ওয়েটিং রুমে বসে আছেন।স্যার কোনো কথাই বলছেন না।শক টা সামলাতে পারছেন না বোধহয়।আপনি গিয়ে একটু কথা বলবেন মেডাম?
চাঁহাত ওমর ফারুক কে ফোন করে বললো,বাবা তুমি আর মা জলদি হসপিটালে আসো। আন্টির অবস্থা ভালোনা।তোমাদের সাপোর্ট দরকার।
সাদেক সাহেব চাঁহাত কে দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন,কি থেকে কি হয়ে গেল মামণি!আমার এতো সুন্দর সংসারটা একদম নষ্ট হয়ে গেল।তোমার আন্টিও আমাকে একা ফেলে চলে যাচ্ছে।আমি কিছুই করতে পারছিনা।
চাঁহাত অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে বললো,আন্টির কিচ্ছু হবেনা আঙ্কেল সব ঠিক হয়ে যাবে।আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।
ওমর ফারুক আর দিলারা এসে সাদেক সাহেবকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন।এতো বড় শহরটায় আজ তাদের আপনজন বলতে কেবল চাঁহাতদের ফ্যামিলিই আছে বোধহয়!
চাঁহাত নীচে এসে পার্কিং লটে বসে রইলো।আকাশে আজ কোনো তাঁরা নেই নিকষ কালো আঁধার।চাঁহাত দু হাত তুলে বললো,হে দয়াময় একটু দয়া করো আন্টিকে বাঁচিয়ে দাও।আর পরীক্ষা নিও না পরীক্ষা দিতে দিতে আমরা বড্ড ক্লান্ত!
আইসিওর সামনে বসে চাঁহাত পুরো রাত জেগে কাটিয়ে দিলো।আয়েশার সব স্মৃতি তাঁর সামনে ভাসছে।কত স্নেহ করতো তাঁকে!
আয়েশা:শোনো চাঁহাত বিয়ের পর তুমি একদম শাড়ি গয়না পড়ে বৌ বৌ হয়ে ঘুরবেনা।এখন যেমন আছ তেমন থাকবে।তোমার এই গেটাপ টা আমাদের সবার অনেক পছন্দ।
সুপ্তিঃ ওমা আমাদের একমাত্র ভাবীকে আমরা শাড়িতে দেখবোনা ?কি বলো তুমি এসব হুহ?দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র ভাই আমার তাঁর বৌকে একটু মনমতো সাজাবো না?
:উহু।ওর শাড়ি পড়তে ইচ্ছে হলে পড়বে।তবে আমাদের কারো মন রাখতে না।আমার এই মিষ্টি মেয়েটাকেই পছন্দ।এখন ও যেমন ই থাকুক।
:এসব ঠিক না মা।তুমি ওকে আমার চেয়ে বেশি আদর দেখাচ্ছ।চাঁহাত কি ম্যাজিক করেছ বলেতো ঘরে আসবার আগেই সবাই তোমার টিমে?আমার ভাই তো একা পড়ে যাবে।
সাদেক হাসতে হাসতে বললো,কার জন্য আফসোস করছিস খুকি তোর ভাই তো সেই টিমের ফাস্ট মেম্বার।হাহাহাহা
সুপ্তি আর আয়েশাও হাসতে শুরু করলো।
চাঁহাত আনমনেই হেসে দিলো।ধ্যান ভাঙতেই দেখে ভোর হয়ে গেছে।
:সিস্টার আমি কি আন্টির সাথে দেখা করতে পারি?
:এটা অসম্ভব মেডাম।উনি এখন সেন্সে নেই তাছাড়া আইসিউতে কাউকে এলাউ করা হয় না যতক্ষণ না ডক্টর পারমিশন দিবে।
চাঁহাত গ্লাসের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,আন্টি প্লিজ সুস্থ হয়ে উঠুন আপনাকে এমন দেখতে একদম ভালো লাগছেনা।
সুপ্তি হসপিটালে এসে চাঁহাতকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।তানহাজের পাশে তানহা কাঁদো কাঁদো মুখে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
সুপ্তিঃ চাঁহাত মা কি মারা গেছেন?আমরা আসতে দেরি করে ফেলেছি তাইনা?
চাঁহাতঃআপু শান্ত হোন।আপনি এভাবে ভেঙে পড়লে আঙ্কেলকে সামলাবে কে?
সুপ্তি কান্না থামিয়ে বললো ,হ্যাঁ তো বাবা কোথায়?জানো তো বাবা মাকে চোখে হারায়।উনার কিছু হয়ে গেলে বাবা বাঁচবেনা।
চাঁহাত তানহাকে আদর করে বললো,আমাকে চেনো তুমি?
তানহা মাথা নেড়ে বললো,হু তুমি আমার চাঁহাত মামানী।
চাঁহাতের বুক কেঁপে উঠলো।তানহাকে কোলে তুলে বললোঃ না আমি তোমার চাঁহাত আন্টি!
তানহাজ খুব গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
আয়াজ এয়ারপোর্টে বসে আছে।ফ্লাইট তিন ঘন্টা লেইট করেছে।বিরক্তিতে তাঁর মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে,”কেন কোনোকিছু ঠিকঠাক হচ্ছে না??সবকিছুতে এতো অশান্তি কেন!”
চলবে,,,,,