চাঁহাত,৬ষ্ঠ পর্ব,৭ম পর্ব

চাঁহাত,৬ষ্ঠ পর্ব,৭ম পর্ব
আরশিয়া জান্নাত
৬ষ্ঠ পর্ব

বাতিঘর লাইব্রেরি থেকে কিছু বই নেওয়ার উদ্দেশ্যে মামার সঙ্গে বের হয়েছিল আয়াজ।এ ক’দিনে রাস্তাঘাট বেশ চেনা হয়ে গেছে তাঁর।ছোট মামার সাথে বের হওয়ার মজা হলো তিনি পায়ে হেঁটে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান।
“বুঝলে ভাগ্নে চিটাগং হচ্ছে হাঁটার শহর।এখানের রাস্তাগুলোতে রিকশায় চড়ার চেয়ে পায়ে হাঁটা মজা বেশি।ইসপাহানী মোড় থেকে হাঁটা শুরু করবে জামালখান,চকবাজার ঘুরে ফিরবে।দেখবে কত প্রশান্তি লাগে।।পথিমধ্যে কত কি চোখে পড়বে।”
বিশাল রাস্তার দুপাশে পাহাড়-গাছপালা।বেশ কয়েকটা স্কুল কলেজ ও চোখে পড়লো আয়াজের।মামা বলেছে এগুলো শহরের নামকরা স্কুল কলেজ।প্রীতিলতার ভাস্কর্য টাও চোখ এড়ালোনা।মামার কাছ থেকে সবকিছুর বেসিক গল্প শুনে শুনে বেড়ানোটা অসাধারণ ব্যাপার।শিল্পকলা থেকে শুরু করে লাল দীঘির পাড় যতোটুকু সম্ভব হেঁটেই বেড়িয়েছে,বাকিটা রিকশায়।সেই স্মৃতি এখনো স্পষ্ট চোখে ভাসে আয়াজের।সে চিটাগং এর সবকিছু চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে পারে,যেমন পেরেছে সেই কিশোরী চাঁহাতকে কল্পনা করে মনে রাখতে।
চাঁহাত! তাঁর কল্পনা জগতের সুপরিচিত সত্ত্বা।যার কথা ভেবে তাঁর ভোর হতো, যার কথা ভেবেই তাঁর রাতের ঘুম হতো।যাঁকে খুঁজে খুঁজে এতো মরিয়া হয়েছিল সে।অথচ সেই চাঁহাত তাঁকে মনেই রাখেনি।তাঁর স্মৃতিতে আয়াজের ছিটেফোঁটাও নেই হয়তো! অদ্ভুত অভিমানে ভেতরটা ভারী হয়ে গেল তাঁর।
সকালে ডাইনিং টেবিলে বসে আয়াজ বললো,
“মা আমি আজকে এখুনি চাঁহাতকে বিয়ে করতে চাই।তোমাদের কোনো আপত্তি আছে?”
সুপ্তি আর সাদেক সাহেব মিটমিটিয়ে হাসছে।আয়েশা ইমরোজ ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে।বিস্ময়ে মেরাজ এর চোখ কোটরের বাইরে চলে আসার উপক্রম।
“কথা বলছো না কেন?এখনই কাজী ডেকে কাবিন পড়ানোর ব্যবস্থা করো।আমি আর এক মিনিট ও হেরফের করবোনা”
মেরাজ আর নিজেকে সামলাতে পারলোনা, বলেই ফেললো,
“স্যার আপনাকে কালকেই শুটিং এর জন্য চলে যেতে হবে।এখন বিয়ে করাটা কি ঠিক হবে?আপনার বিয়ে নিয়ে মিডিয়ার সবার অনেক আগ্রহ…..
মেরাজকে থামিয়ে আয়েশা বললো,
মেরাজ ওমর ফারুক সাহেবকে কল করে আমার কাছে দাও তো।
: আস্সালামু আলাইকুম ফারুক সাহেব।
:ওয়ালাইকুম আস্সালাম জ্বি বলুন।
:আপনার মেয়ে চাঁহাতকে আমার ছেলের বৌ করে আনতে চাই আপনার কি কোনো আপত্তি আছে?
:মানে! আয়াজের জন্য চাঁহাতের কথা বলছেন?
:জ্বি।আয়াজকে আপনাদের পছন্দ তো?দেখুন আমাদের দেশে মিডিয়ায় কাজ করা মানুষের আলাদা ইমেজ আছে।নিজের ছেলে বলে বলছি না আয়াজকে আমি আশেপাশের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে রেখে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি।আমার দায়িত্ব ছিল কেবল শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়া।বাকিটা সে নিজে করেছে।
:আপনি আমাকে এসব বলে লজ্জিত করছেন।
:না না সেটা নয়।আমি আমার ছেলে সম্পর্কে অভিমত জানাচ্ছি।বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ মেয়েপক্ষকে অনেক কিছু প্রশ্ন করে।মেয়েকেও নানান কথা জিজ্ঞাসা করে।তেমনই আমি আমার ছেলের কথা আপনাকে বলছি।আপনি ওর খোঁজখবর নিয়ে দেখতে পারেন।আশা করি হতাশ হবেন না।
:তা নাহয় বুঝলাম,কিন্তু চাঁহাত এখনো ছোট।ও তো পড়াশোনার বাইরে কিছুই ভাবছেনা।আমি আমার মেয়ের মতের বিরূদ্ধে যাবোনা।
:আপনাদের মত থাকলে ওর সঙ্গে আমি কথা বলবো।আর পড়াশোনা নিয়ে ভাববেন না আমি কথা দিচ্ছি ও যদি দেশের বাইরে গিয়েও পড়তে চায় আমরা কেউ ওকে বাঁধা দেবোনা।

রিপা দৌড়ে চাঁহাতের রুমে গেল।হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,আপা আপা তাড়াতাড়ি উঠেন। অনেক বড় ঘটনা ঘইটা গেছে।
চাঁহাত ঘুম ঘুম কন্ঠে বললো,কি হয়েছে?
:আপনার বিয়ের আলাপ আইছে।নায়কে আপনারে দেইখা এক্কেরে খালাস।পারতেছে না এখনই বিয়ে কইরা লইয়া যাইতে!
:কি সব বলছিস তুই?
:আপা হাচা কইতাছি।নায়ক সাহেবের মা ফোন করছিল।আপনে তাড়াতাড়ি চলেন সবাই আপনারে ডাকতেছে।
খুশিতে রিপার হাত পা কাঁপছে।এতো বড় নায়ক ওর ছোট আপার বর হবে,ভাবতেই কেমন নাচতে ইচ্ছে করছে।সে আয়াজের সাথে ছবি তুলে গ্রামের সবাইকে দেখাতে পারবে।নায়ক আয়াজ এর সাথে ছবি থাকা কি চাট্টিখানি কথা!
চাঁহাতের দাদী ফাতেহা বেঁকে বসে আছেন।তাঁর ভাষ্যমতে নাটক সিনেমায় কাজ করা ছেলেরা জামাই হিসেবে খুবই জঘন্য।এরা কখন অভিনয় করে আর কখন সত্যি বলে বোঝা যায় না।তাছাড়া কত মেয়ের সাথে উঠাবসা দুইদিন পরপর ডিভোর্স আর বিয়ে।তাঁদের বিয়ে করতেও সময় লাগেনা ভাঙতেও সময় লাগেনা।
দিলারা তো খুশিমনেই মেনে নিয়েছে।ছেলেটা কত বিনয়ী, কত ভদ্র ,কি সোনার টুকরো ছেলে বলে বলেই পুরো রাত কাটিয়েছে।সকালে আয়েশার ফোনের কথা শুনে সে তো খুশিতে আটখানা হয়ে আছে।সিয়াম চুপচাপ বসে আছে।সে কি রিয়েক্ট করবে বুঝতে পারছেনা।
চাঁহাত পুরো ঘটনা শুনে হাই ভোল্টেজ এর শক খেল।
“মিস্টার হিরো কি আমাকে চমকাতে না পেরে এই ফন্দি এঁটেছেন!নাকি অন্য কোনো রহস্য আছে?”
🌿🌿🌿
চাঁহাত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করলো।কারো সঙ্গে কিছু না বলে ক্যাম্পাসে চলে গেল।ক্লাস শেষে ল্যাব করে হাতিরঝিলে বেশ খানিকক্ষণ বসে রইলো।চোখ বন্ধ করে প্রকৃতি অনুভব করতে করতে ডুব দিলো ভাবনার জগতে।
ইরা সকাল থেকেই চাঁহাতকে চুপচাপ দেখে ওর সাথেই হাতিরঝিলে এসেছে।
:হ্যাঁ রে তোর কি মন খারাপ?এরকম মনমরা হয়ে আছিস যে?
:না মন খারাপ না, ভাবছি!
:কি ভাবছিস খূব সিরিয়াল কিছু?Is everything okay?
চাঁহাত পা গুটিয়ে বেঞ্চিতে তুলে ইরার মুখোমুখি বসে বললো,
ধর তোকে খুব নামকরা হিরো বিয়ে করতে চায়।তুই কি করবি?
:যাচাই করবো হিরোটার ক্যারেকটার কেমন,মানুষ হিসেবে পছন্দ হলে রাজী হবো নাহয় না করে দিবো।
:সেলিব্রিটিদের লাইফস্টাইল বা তাঁদের ফ্যামিলি নিয়ে মিডিয়ার ওভার ইন্টারেস্ট প্যারা দিবে প্রচুর।সেটা নিয়ে কিছু ভাবলি না?
:আমাদের কাজ ই হচ্ছে অন্যের জীবনে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা সমালোচনা করা।সাধারণ ফ্যামিলির মানুষের পিছনেও কিন্তু অনেকে পড়ে থাকে।পাশের বাসায় কি হলো না হলো, কার মেয়ে কি করেছে, কার ছেলে কি করেছে সবকিছুতে অনেক আগ্রহ থাকে।সেখানে সেলিব্রিটিরা পাবলিক ফিগার তাঁদের নিয়ে মানুষের এক্সট্রা কনসার্ন থাকবে এটাতো স্বাভাবিক তাইনা?প্যারা তো সবখানেই আছে তাইনা?লাইফ প্যারাহীন তো হবেনা।
:হুম বুঝলাম।
:তা তুই হঠাৎ এসব বলছিস কেন?তোর কি কোনো আলাপ এসেছে নাকি?
চাঁহাত দীর্ঘশ্বাস ফেলে লেকে পাথর ছুড়লো….

আয়াজ অস্থিরভাবে পায়চারি করছে।একটু পরে সে রওয়ানা দিবে।তাঁর কিছুই ভালো লাগছেনা।এতোদিন খুঁজে না পাওয়ার চিন্তা মাথায় ঘুরতো এখন খুঁজে পেয়ে হারানোর ভয় মাথায় ঘুরছে।মেরাজ এসে বললো,স্যার আমাদের এখুনি বের হতে হবে।এক ঘন্টা পর ফ্লাইট…
আয়াজ তাঁর মায়ের সাথে কথা বলেই বেরিয়ে পড়লো।এই প্রথমবার শুটিং এ যাওয়ার আগে আয়াজের খুব কান্না পাচ্ছে।ইচ্ছে করছে চিৎকার করে সবাইকে বলতে “আমার মন ভালো নেই!!”

দীপু ঠিক করেছে আজ যেভাবেই হোক নুশুকে প্রপোজ করবে,এতে রেজাল্ট যাই আসুক।এভাবে একা একা বয়ে চলা আর সম্ভব হচ্ছেনা।রাজী না হলেও সমস্যা নেই বন্ধু হয়েই আজীবন থাকবে কিংবা শেষে বলবে ফান করছিল! বুকের মধ্যে অজানা ভয় আর শিহরণে হাত পা কাঁপছে তাঁর।
ওমর ফারুক তাঁর মেয়ের ভাবভঙ্গি বুঝতে পারছেন না।চাঁহাত একবারও আয়াজের ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলেনি তাই তিনিও বিষয়টা সরাসরি এখনো তুলেননি।মিসেস আয়েশা চাঁহাতের সাথে মিট করতে চেয়েছেন কিন্তু ওমর ফারুক এখনি রাজী হননি।তিনি কিছু দিন সময় নিয়েছেন।সে আগে চাঁহাতের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করবে তারপর অন্য কিছু।মেয়ের উপর কোনোরকম চাপ সৃষ্টি করতে চান না তিনি।
সিয়াম রুমে বসে পেইন্ট করছে এমন সময় চাঁহাত গিয়ে বললো,চাচ্চু আসবো?
সিয়াম হেসে বললো,আয়।
:কি আঁকছো?
:কালারফুল স্কাই!
:বাহ!
:তা কিছু বলবি?
:না কিছু বলবোনা এমনি এসেছি।
:চেরী তুই কি আপসেট?
:আমাকে দেখে আপসেট মনে হচ্ছে?
:তুই হচ্ছিস প্রজাপতি।তোর কাজ হচ্ছে উড়ে বেড়ানো।চুপচাপ স্থির থাকা তোকে মানায় না।
:চাচ্চু চলো তো লং ড্রাইভে যাই।দূরে কোথাও গিয়ে হাওয়া খেয়ে আসি।
সিয়াম পেইন্ট করা বন্ধ করে বললো,
:চল।

“দেখ দীপু তুই ভালো করেই জানিস আমি তোকে ফ্রেন্ডের বাইরে আর কিছু ভাবিনা।এখানে ভালোবাসার টপিক আসছে কেন?”
দীপু মাথা নীচুকরে দাঁড়িয়ে আছে।কিছুক্ষণ আগে ফুল নিয়ে নাতাশাকে প্রপোজ করতেই নাতাশা ঐসব বলা শুরু করেছে।
“কথা বলছিস না কেন?এরকম মাথা নীচু করেই বা দাঁড়িয়ে আছিস কেন স্ট্রেইঞ্জ!”
“ভার্সিটিতে এসে প্রথমদিন ই তোকে ভালো লেগেছে নুশু।তুই কি তা বুঝতি না?সবসময় আমি তোর পাশে ছিলাম সারাদিন তোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম,নীলয়রা কত মজা করতো এরপরও তুই কি বুঝিস নি আমি তোকে ভালোবাসি?মেয়েরা তো দশ মাইল দূর থেকেও বুঝতে পারে কে তাঁকে ভালোবাসে আমি তো তোর খুব কাছে ছিলাম তাও বুঝিস নি?”
“কিন্তু আমি তোকে ওভাবে ভাবিনি।আমার সবটা জুড়ে আয়াজের বাস।তুই জানিস আমি আয়াজ কে কতোটা ভালোবাসি।”
“আয়াজ তোর ফ্যান্টাসি!তোর মতো অনেকেই তাঁকে ভালোবাসে।এখন তুই কি তাঁর আশায় আমাকে রিজেক্ট করবি?”
“যতোদিন না আয়াজের বিয়ে হচ্ছে আমি অন্য কাউকে নিয়ে ভাবছিনা!”
“ওকে ফাইন।আমি আর কিছু বলবোনা।তোর যদি কখনও উত্তর হ্যাঁ হয় নির্দ্বিধায় বলে দিস।আমি তোর জন্য অপেক্ষা করবো।”
বলেই দীপু চলে গেলো।চোখ কেমন জ্বালা করছে তাঁর।ও তো জানতোই নুশু এমন কিছু বলবে, তাও মনের কোথাও একটা আশা ছিল নুশু হয়তো তাঁকে ফিরিয়ে দিবেনা।চোখের পানিতে সবকিছু কেমন ঝাপসৃ হয়ে আসছে।ইশ ছেলেদের চোখে পানি আসতে নেই!!
নীলয় আর ইরা দূর থেকে সব দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
🌿🌿🌿🌿
দেখতে দেখতে কেটে গেল অনেকগুলো দিন।
চাঁহাত ব্যস্ত তাঁর সেমিস্টার ফাইনাল নিয়ে আর আয়াজ ব্যস্ত শুটিং নিয়ে।
সুপ্তির বর তানহাজ লন্ডন থেকে ফিরেই জানালো সে সুপ্তিকে নিয়ে লন্ডনে ব্যাক করতে চায়।আয়েশা প্রথমে নাখোশ হলেও পরবর্তীতে রাজী হয়ে যায়।ছেলেটা সবসময় বাইরে বাইরে থাকে এখন মেয়েটাও দূরে চলে যাবে ভাবতেই মনে কেমন এক শূন্যতা অনুভব হয় তাঁর।তানহাজ শাশুড়ির মন বুঝতে পেরে বলে,
মা খুব শীঘ্রই আপনার পূত্রবধু আসতে চলেছে।আপনার একাকীত্ব ক্ষণস্থায়ী।টেনশন করবেন না।
আয়েশা ম্লান করে হেসে বললো,
কে জানে বৌমা রাজি হয় কিনা! আমিতো চাই আমার ঘর আলো করে সে চলে আসুক।
সুপ্তি বললো,এখন থেকেই বৌমা বাহ!দেখেছ চাঁহাত আসবার আগেই সবার মন কেমন জয় করে ফেলেছে??
তানহাজ হেসে বললো,পোড়া গন্ধ পাচ্ছি কেউ কি জ্বলছে নাকী?
সুপ্তি রাগী চোখে বললো,মোটেও না।আমার একটা মাত্র ভাইয়ের একটা মাত্র বৌ হবে।তাঁকে নিয়ে জ্বলবো কেন?
আয়েশা চিন্তিত গলায় বললো,হ্যাঁ রে অজু ফোন করেছিল?ছেলেটা এবার যেরকম মনমরা হয়ে গেছে।বারবার সেই মুখটা চোখে ভাসে।
:আহা মা চিন্তা করোনা তো।দেখবে ভাইয়ের সব মনখারাপের গল্প ভ্যানিস হয়ে যাবে।এতো বছর পর যখন ওর চাঁহাতকে খুঁজে পেয়েছে আল্লাহ নিশ্চয়ই ভালো কিছু প্ল্যান করে রেখেছে।যা হবে ভালোই হবে।
নাহিদের কাছ থেকে রোজ চাঁহাতের খবরাখবর রাখছে আয়াজ।চাঁহাতের ছবির দিকে তাকিয়ে আয়াজ বললো,আর মাত্র ক’টা দিন তারপর সব যন্ত্রণার উসুল নিবো আমি মিস চাঁহাত!

চলবে….

চাঁহাত
৭ম পর্ব
আরশিয়া জান্নাত

বেশ কয়েক বছর আগের কথা,চাঁহাত তখন সবে ক্লাস সেভেন এ ভর্তি হয়েছে।সদ্য কৈশোরে পদার্পণে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছিল তাঁর মাঝে।পাড়ার ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলা মেয়েটাকে হঠাৎ করে গৃহকন্যা বানিয়ে দিলো।দস্যিপনা তবুও কমেনি তাঁর সুযোগ পেলেই ব্যাট নিয়ে বের হয়ে যেতো, কখনও বা বৃষ্টিতে ফুটবল খেলতে।এ নিয়ে চাঁহাত তাঁর মা-দাদীর কম বকা শোনেনি!একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে দুই বেনুনী ঝুলিয়ে আইসক্রিম খেতে খেতে বাড়ি ফিরছিলো চাঁহাত।হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়।পাশের খেলার মাঠেই কিছু ছেলে ফুটবল খেলছিল তখন চাঁহাত গিয়ে তাঁদের সাথে ফুটবল খেলতে শুরু করে।খেলতে খেলতে কাদায় মাখামাখি হয়ে যায়।তারপর বাড়ির পথে রওয়ানা দেয়।পথেই কতগুলি বখাটে ছেলে চাঁহাতের পিছু নেয়।বৃষ্টির সময় রাস্তা প্রায় ফাঁকা, চাঁহাত ভয়ে দৌড়াতে থাকে হঠাৎ পিছু ফিরে দেখে একটা ছেলে সেই বখাটেগুলোকে মারছিল।কিন্তু ওরা সংখ্যায় বেশি বলে পেরে উঠছিল না,ছেলেটি বেশ কিছু আঘাত পায়।তাঁরপর চাঁহাত দৌড়ে গিয়ে সেও মারতে থাকে,পথচারী দুজন এসব দেখে তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেই বখাটেরা দৌড়ে পালায়।ততক্ষণে ঐ ছেলেটা সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়।চাঁহাত লোকগুলোর সাহায্য নিয়ে ঐ ছেলেটাকে হসপিটালে নিয়ে যায়।ওখানে গিয়ে বাসায় ফোন করে।ছেলেটির সেন্স ফিরলে তাঁর বাসার ফোন নাম্বার নিয়ে খবর পাঠানো হয়।দিলারা হসপিটালে গিয়ে সব শুনে ছেলেটিকে বার বার করে ধন্যবাদ জানায় ,ছেলের মামা হাজার বারণ করার পর ও জোর করে হসপিটালের বিল পে করে চাঁহাতকে নিয়ে চলে আসে।আসবার সময় চাঁহাত ছেলেটির দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার হাসি দিয়ে চলে আসে।
চোখ বন্ধ করে সেই ঘটনাই ভাবছিল চাঁহাত।তাঁর জীবনের প্রথম ভালো লাগার মানুষ ঐ ছেলেটা!এমন ভাগ্য ছেলেটার নাম পর্যন্ত জানেনা সে।চেহারাও ঠিকঠাক মনে নেই।এর কিছুদিন পরই তাঁরা সপরিবারে ঢাকায় চলে আসে।সেই ছেলেটার খোঁজ পাওয়ার কোনো অপশন ই থাকেনা আর।
চাঁহাত মনে মনে সবসময় চাইতো কোনো একটা মিরাক্যাল ঘটতো যদি!হঠাৎ করে সেই ছেলেটির সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়াটা কি বেশি কঠিন?

অলিতে গলিতে চেনা পরিচয়

ঠিকানার লেন দেন

হৃদয়ের কোনো ঠিকানা থাকেনা

কথাটা কি বুঝলেন?

একথা জেনেও হাঁটাহাটি করি

ভুতের গলিটা খুঁজি

তোমার দেখা পেয়ে যাবো আমি

হঠাৎ করেই বুঝি!

(তারপরের লাইনটা যেন কি???মাথা চুলকাতে থাকে চাঁহাত।)
আয়াজের আজ শুটিং শেষ।তাথৈ আর আয়াজ একসঙ্গে এয়ারপোর্টে যাচ্ছে।আয়াজ গাড়িতে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তখন তাথৈ বললো,
:আয়াজ দা আপনার সঙ্গে কাজ করে আমার সত্যি অনেক ভালো লেগেছে।আমার প্রথম মুভির অভিজ্ঞতা সুন্দর করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আয়াজ মুচকি হেসে বললো,
তুমি খুব টেলেন্টেড একটা মেয়ে।এই বয়সে দারুণ অভিনয় করেছ।আশা করছি তোমাকে পিছু ফিরে দেখতে হবেনা।তবে একটা কথা বলবো মন দিয়ে স্টাডি কন্টিনিউ করবে।ঐটা ছাড়া কিন্তু এই প্রফেশনে টিকতে কঠিন হবে।
:অবশ্যই।

চাঁহাত ক্যান্টিনে বসে শিঙারা খাচ্ছে।সামনেই দীপু ইরা আর নীলয় চোখ বড় বড় করে হা করে তাকিয়ে আছে চাঁহাতের দিকে।
ইরা: এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল তুই আজকে বলছিস আমাদের?
নীলয়: তার মানে সেদিন তোর খোঁজেই এসেছিল! ও মাই গড!!!!
দীপু: নুশু শুনলে তো হার্টফেইল করবে!
চাঁহাত রিল্যাক্স এ শিঙারা শেষ করে গরম চা এ চুমুক দিতে দিতে বললো,
তোরা এতো রিয়েক্ট করিস কিভাবে?আমারেও একটু ধার দে।আমার বাপ মায়ে তো আমার নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে বিরক্ত হয়ে আছে।
ইরা ভ্রু কুঁচকে বললো,তুই সেদিন এজন্য ঐসব জিজ্ঞাসা করছিলি? তাও কিছু বললিনা।অবুক তোর গলায় ছেলেদের মতো হাড় তো নাই তাও সব কথা পেটে রাখিস কিভাবে?
দীপু হেসে বললো,সবাই কি তোর মতো নাকি।পেটে কথা রাখলেই বদহজমে মরে যাবে?
নীলয় হো হো করে হেসে উঠলো,একদম ঠিক বলেছিস দোস্ত।
ইরা কটমট করে নীলয়ের দিকে তাকালো।
নীলয় প্রসঙ্গ পাল্টে বললো,তা চাঁহাত মেডাম আপনার মতামত কি?
ইরাঃ মতামত আর কি হবে।আয়াজ কে তো চাঁহাত সহ্য ই করতে পারেনা।ওকে বিয়ে করবে কিভাবে?
চাঁহাত বললো,আমার নায়ক ই পছন্দ না।এখানে বিশেষ কারো নাম নেই ইরা!সে আয়াজ হোক বা সালমান খান দুজনেই সেইম।
দীপুঃ তা আঙ্কেল আন্টিকে কিছু বলেছিস?
চাঁহাতঃ না।
ইরাঃ বলে দে।অপেক্ষা করালে প্রত্যাশা বাড়বে।
চাঁহাতঃ উনারা খোলাখুলি জিজ্ঞাসা করলে বলবো।রিপা বলেছে আজ নাকি হিরোর মা আসবে বাসায়।
নীলয়ঃ কথা বলে দেখ।হতে পারে যতোটা খারাপ ভাবছিস ততোটা হবেনা।তাছাড়া আয়াজ আহমেদ কিন্তু মানুষ হিসেবে যথেষ্ট ভালো যতদূর জানি আর কি!
দীপুঃ হ্যাঁ এটা সত্যি।আজ পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে কোনো হিরোইন খারাপ কথা বলতে পারেনি।দেখ একটা ধারণার উপর বেস করে কাউকে জাজ করা ঠিক হবেনা।তুই প্রয়োজনে কথা বল সময় নে।হতে পারে বাইরে মিডিয়ায় কাজ করাকে যতোটা খারাপ ভাবছিস ততোটা খারাপ না?
ইরাঃ হ্যাঁ মানুষকে পার্সোনালিটি দিয়ে জাজ কর।প্রফেশন দিয়ে না।
চাঁহাত চুপচাপ কিছুক্ষণ ভেবে উঠে দাঁড়ালো,আচ্ছা যাই তাহলে দেখি হিরোর মা কি বলে।
ইরা দীপু নীলয় জোরে বললো,অল দ্য বেস্ট।
চাঁহাতদের লনে বসে আছেন আয়েশা।চারদিকে গাছপালা দেখে মন জুড়িয়ে গেছে তাঁর।দিলারা খুব শৌখিন মানুষ বলা বাহুল্য,তাঁর রুচিবোধ অসাধারণ।বাড়িটাকে সে নিজে ডিজাইন করে বানিয়েছে।বকুল গাছের নীচে দোলনা,তার পাশেই রয়েছে বেলী আর কামিনী।পাখির কিচিরমিচির শব্দে কেমন গ্রাম গ্রাম ফিলিংস।আয়েশা চোখ বন্ধ করে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে যেন বহুকাল সে এমন সতেজ বাতাস পায়নি।দিলারা সার্ভেন্টকে নাস্তা সাজিয়ে রাখতে বলে আয়েশার পাশে গিয়ে বসে বললেন,দুঃখিত আপনাকে এভাবে একা বসিয়ে চলে গেলাম।চাঁহাত এর আসার সময় হয়ে গেছে এখনো কেন আসছেনা বুঝতে পারছিনা।
:ব্যস্ত হবেন না।আমি ঠিক আছি কোনো অসুবিধা নেই।।আপনাদের বাগানটা অনেক সুন্দর।এখানে বসে মনে হচ্ছে ভিতরের সব দূষিত বায়ু বেরিয়ে বিশুদ্ধ বায়ু ভেতরে ঢুকেছে।
দিলারা প্লেটে কয়েক পদের স্ন্যাকস দিয়ে আয়েশাকে দিয়ে বললো,
আমার ছোট থেকেই বাগানের প্রতি ঝোঁক ছিল।তাঁর উপর শ্বশুর পেয়েছি গাছপাগল! এখানের পুরনো বেশিরভাগ গাছ উনার লাগানো।
চাঁহাত কে গেইট দিয়ে ঢুকতে দেখেই আয়েশা দূর থেকেই তাকিয়ে রইলেন।গেটাপ এর ডিসঅর্ডার দেখেই শিওর হলেন এই মেয়েই চাঁহাত!
চাঁহাত মনের সুখে কানে ইয়ারফোন গুঁজে দু কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে হেলেদুলে বাড়িতে ঢুকলো।লনে যে কেউ তাঁর দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে সেদিকে তার ভ্রুক্ষেপ নেই।
রিপাঃ আপা আপনে এতোক্ষণে আসছেন।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে গার্ডেন এ যান।ঐখানে নায়কের মা অপেক্ষা করতেছে আপনার।
চাঁহাত হাত মুখ ধুয়েই গার্ডেনে চলে গেল।
দিলারা চাঁহাতকে দেখিয়ে বললো এই আমার মেয়ে চাঁহাত।চাঁহাত হাসিমুখে বললো,
:আস্সালামু আলাইকুম আন্টি।কেমন আছেন?
:ওয়ালাইকুম আস্সালাম।ভালো আছি তুমি কেমন আছ?
:আলহামদুলিল্লাহ ভালো।অনেক অনেক স্যরি আপনাকে এতোক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো।
:না না ঠিক আছে।
দিলারা তাঁদেরকে কথা বলতে বলে ভেতরে চলে গেল।
আয়েশা মিষ্টি করে হেসে চাঁহাতকে বললো,
পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
:আল্লাহর রহমতে ভালোই।
:আলহামদুলিল্লাহ।তুমি আমাকে চেন?
:হ্যাঁ।আপনি নায়ক আয়াজের মা!
:আমি কেন এসেছি তা জানো?
:স্পেসিফিক জানিনা।
:তোমাকে একটা গল্প বলতে এসেছি।আশা করি গল্পটা তোমার ভালো লাগবে।
চাঁহাত চিকেন রোল প্লেটে নিতে নিতে বললো, অবশ্যই প্লিজ বলুন।
:একদিন আমার ছেলে মামাবাড়ি থেকে ফিরেই বললো, মা মা আমি আমার প্রিন্সেস পেয়ে গেছি।আমি এই মেয়েকেই বিয়ে করবো!
মাত্র হাই স্কুল পার করা ছেলের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু আমি অবাক হলাম না।বুঝলাম আমার ছেলে প্রেমে পড়েছে।আমি স্বাভাবিক ভাবে তাঁর প্রিন্সেস এর গল্প শুনলাম।সে নাকি বেড়াতে গিয়ে রাস্তায় এক বাচ্চা মেয়েকে দেখেছে যে দুই বেনুনী ঝুলিয়ে আইসক্রিম খেতে খেতে বাড়ি ফিরছিল।মেয়েটিকে দেখেই তাঁর ভালো লেগে যায়,সে তাঁর পিছু নেয় তখনই শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি।সেই বৃষ্টিতে মেয়েটি ব্যাগ পত্র রেখে মাঠে ফুটবল খেলতে নেমে যায় …….

পুরো ঘটনা শুনে চাঁহাত বিষম খেলো।
আয়েশা পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলতে থাকলো,
আমি প্রথমে ভাবলাম অল্প বয়সের আবেগ কিছুদিন পর ভুলে যাবে।কিন্তু ছেলে আমার কিছুই ভুললো না।মেয়েটিকে খুঁজে পেতে ফের মামাবাড়ি গেল।সব জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজলো কোথাও পেলোনা।তাঁর কাছে কেবল মেয়েটির স্কুলের আইডি কার্ড ছিল।খোঁজ নিয়ে জানলো মেয়েটি স্কুল ছেড়ে দিয়েছে।তারপর সে গ্র্যাজুয়েট করলো বিদেশ থেকে পিএইচডি করলো,এক্টোর হলো অথচ সেই মেয়েটিকে ভুললো না।মনে মনে মেয়েটিকে খুঁজে চললো বছরের পর বছর।
আয়েশা এবার স্নিগ্ধ চোখে চাঁহাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
আমার ছেলেটি খুব লাজুক স্বভাবের।ছোটবেলায় ক্ষিদে পেলে লজ্জায় বলতে পারতোনা খাবার দিতে।সেই ছেলেটা সেদিন আমায় বললো, মা আমি এখুনি চাঁহাতকে বিয়ে করতে চাই তোমার কোনো আপত্তি আছে?

🌿🌿🌿🌿🌿

আয়াজ অস্থির ভাবে পায়চারি করছে।সুপ্তি আর তানহাজ বসে বসে আয়াজের কর্মকাণ্ড দেখছে।
আয়াজ চিন্তিত গলায় বললো,মা কে একবার ফোন করবি আপু?এতোক্ষণ লাগছে কেন আসতে?
:গেছে যে বেশিক্ষণ হয়নি তো!
:কি বলিস তিন ঘন্টা পঁচিশ মিনিট পনেরো সেকেন্ড হয়ে গেছে।এটা কম?
তানহাজ উঠে এসে আয়াজের কাঁধে হাত দিয়ে বললো,শালা মশাই এতো উতোলা হলে চলবে? অপেক্ষা যতো বেশি ফল ততো মিষ্টি ।
:হ্যাঁ ঠিক ।সবর কর ভাই সবুরে মেওয়া ফলে।
সাদেক সাহেব ফোন কানে রুমে ঢুকে বললেন,
আমার ছেলের মেওয়া ফলে একদম অমৃত হয়ে গেছে।
এই মেরাজ মেরাজ??
মেরাজ দৌড়ে এসে বললো ,জ্বি বড় স্যার।
:তোর হিরো স্যারের তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।শেডিউল চেক করে দেখ ছুটি আছে কিনা।
আয়াজ সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেল।

দিলারা আজ অনেক খুশি।সবাইকে ডেকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন।কাল চাঁহাতের ঘরোয়া ভাবে আংটি বদল হবে।সে তো কল্পনাই করেনি চাঁহাত রাজী হবে।মিসেস আয়েশা কি ম্যাজিক করলে কে জানে!!ওমর ফারুক বার বার করে চাঁহাতকে জিজ্ঞাসা করলেন কোনো প্রেশারে পড়ে বা ইমোশনালী এটাচ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়নিতো?
চাঁহাত প্রতিবার না বলেছে।সিয়াম চাঁহাতের রুমের দরজায় গিয়ে বললো,চেরী?
:হ্যাঁ চাচ্চু ভেতরে আসো।
:তোর কি হলো বলতে? হঠাৎ করে হিরোকে বিয়ে করতে রাজী হয়ে গেলি?
চাঁহাত সিয়ামের সামনে বসে বললো,গেস করো তো কি ম্যাজিক ঘটেছে?
:ডোন্ট টেল মি আয়াজ ই তোর সেই ভালোবাসা ?
চাঁহাত লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নাড়লো।
সিয়াম চিৎকার করে বললো,ও মাই গড।সিরিয়াসলি?? হোয়াট এ মিরাক্যাল!!!
চাঁহাত চোখ বন্ধ করে বললো,আমি এই মিরাক্যাল টা খুব করে চেয়েছিলাম চাচ্চু! আল্লাহ আমার উইশ পূরণ করেছে।

আয়াজ আয়েশার রুমে ঢুকতে গিয়েও ঢুকতে পারছেনা।এই নিয়ে দশবার মাকে জিজ্ঞাসা করা হয়ে গেছে “চাঁহাত কিভাবে রাজী হলো” আয়েশা কিছুতেই মুখ খুললেন না।সে গম্ভীর গলায় বলেছেন,রাজী হয়েছে এতেই আনন্দিত হও।কারণ জানতে চেয়ে অস্থির হয়োনা।
আয়াজ রুমে গিয়ে বেডে শুয়ে পড়লো।চোখ বন্ধ করে বললো,
“আমার জীবনের সব সুন্দর মুহূর্তগুলো তোমার সাথেই হোক মিস চাঁহাত!!”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here