গল্পঃ দ্যা ডার্ক আইল্যান্ড,পর্বঃ_৫

গল্পঃ_দ্যা_ডার্ক_আইল্যান্ড,পর্বঃ_৫
লেখাঃ_IH_Abid
.
বায়োজিদ লিসাকে কিছু বলল না৷ নিচে নেমে আসলো৷ বায়োজিদ খাটে শুইলো৷ বুঝলো রহস্যের জটলা খুব গভীর। এমন কিছু যা কেউ আগে কখনো ভাবে নাই৷
মুনা তার ঝাড়ুতে করে উড়ে সোজা জ্যাক ক্রো এর গুহার ভেতর আসলো৷
— আসো আসো মুনা। মাই উইচ কুইন। আমার ডাইনী রানী৷
— রাখো তোমার ফাও কথা।
— কি হলো। মাথা খারাপ নাকি।
— হ্যা মাথা খারাপ। আমার রক্ত লাগবে।
— কিসের রক্ত?
মুনা একটা হাসি দিলো৷ তার বিশাল লকলকে জিহবাটা বের করে নিজের ঠোট নিজে চাটলো।
— একটা ফর্সা যুবতী মেয়ের রক্ত৷ আমার রুপ জৌলস ধরে রাখতে৷ আমার শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য৷ তুমি ভুলে গেছো।
— আচ্ছা আচ্ছা। আর আমারো একটা নারী দেহ দরকার। সেটার ভেতর আমি শয়তানি প্রেতদের আটক করবো৷
— যাই করো। আমার রক্ত লাগবে৷ ফর্সা যুবতী নারীর রক্ত৷ সেই রক্ত দিয়ে আমার গোসল কর‍তে হবে৷ না হয়, না হয় আমার রুপ লাবন্য নষ্ট হয়ে যাবে।
— ও,, সোনা ডার্লিং। এমন বলতে নেই।
— আমি কি করতে আছি৷
— আচ্ছা শোনো। ওইযে বলেছিলাম না। এ দ্বীপে কিছু মানুষ আসছে বাইরে থেকে৷ ওদের মধ্যে একটা মেয়ে আছে। অনেক সুন্দরী আর ফর্সা৷ চামড়ার উপর দিয়েই রক্ত দেখা যায়৷ মনে হয় খোচা দিলেই বের হয়ে যাবে রক্ত। ওকে আমার চাই৷
— আচ্ছা সোনা পাবা তাকে। আসলে নতুন মানুষ তো। তাই তাদের উপর আক্রমণ করছিনা৷ কিছুদিন থাকুক৷ আটকে পরুক৷ আমি পুরা এমন জাদু করে দিয়েছি যে তারা বাইরের কোন নেটওয়ার্ক বা ট্র‍্যাকিং ডিভাইস কাজ করবেনা৷ তাই তাদের যাওয়ার জায়গাও নাই৷ তারা বলতে গেলে এখানে আটকা পরে গেছে৷
তাই সমস্যা নাই। তাদের ধরতে আমার সমস্যা হবে না। আফটার অল আমি একজন ম্যাজিশিয়ান আর তারা সাধারণ মানুষ৷
— আচ্ছা গ্রিন ক্রিস্টালের কি খবর?
— সেটাই তো সমস্যা সেটা কোথায় আছে আমি জানিনা। যদি একবার পেয়ে যাই তাই আর চিন্তা নাই। আমার শক্তি বহু গুনে বেড়ে যাবে৷ বলা হয়ে থাকে ওই গ্রিন ক্রিস্টালের উপর যার রক্ত পরবে সেটা একাকী তার হাতের ভেতর দিয়ে শরীরে ঢুকে যাবে৷ আর সে ম্যাজিক্যাল পাওয়ার সবটা তার শরীরে বিরাজ করবে৷
— আচ্ছা জ্যাক আমি চললাম৷ কিন্তু আমার রক্ত চাই সেটার ব্যাবস্থা করো।
— আচ্ছা করবো। চিন্তা করোনা৷। আমি আছিতো৷
মুনা তার ঝাড়ুতে বসে উড়ে চলে গেলো৷ জ্যাক ক্রো তার আসনে বসে রইলো৷
এসময় কিছু জম্বি আসলো জ্যাক ক্রোএর কাছে তারা কথা বলতে পারেনা৷ শুধু গরগর শব্দ করে৷ জ্যাক ক্রো ঠিকই বুঝেছে তারা কি চায়
তারা বলছে — আমরা নতুন মানুষদের আহার হিসাবে চাই৷ আমদের এরিয়া বাড়ানো হোক যেন আমরা তাদের ধরতে পারি
— অবশ্যই তোমরা খাবার পাবে৷ আমার জম্বি সেনা। তবে কিছুদিন পর৷ ততদিনে সাধারণ কবর খুরে খেতে থাকো খাবার৷ আমি শীঘ্রই তোমাদের এরিয়া বারিয়ে দিবো৷
কিন্তু জম্বিগুলা চেচামেচি আর গরগর শুরু করে দিলো৷ তারা এখনি কিছু খেতে চায়৷ জ্যাক বলল আচ্ছা দিলাম এরিয়া বাড়িয়ে৷ তোমাদের জংগলের কাছে একটা স্পট আছে সেখানে তোমরা যেতে পারবে আর খেতে পারবে৷ সেখানে ৩ জন বিদেশী আছে। যাও তোমরা। জম্বিগুলো চলে গেলো৷
সে রাতেই ১ নাম্বার স্পটে সরাসরি আক্রমণ করলো জম্বিরা লিউক( ফিনল্যান্ড) আর টরিকে ( বেলজিয়াম)টেনে হিচড়ে তারা নিয়ে যাচ্ছে। তারা ঘুমিয়ে ছিলো। হঠাৎ তারা তীব্র শব্দ পায়৷ জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখে নিচে দিয়ে মানুষ সদৃশ্য কিছু একটা কিন্তু তারা মানুষ নয়৷ যেন কবর থেকে উঠে আসা কোন জ্যান্ত লাশ৷ জম্বিদের জোরে জোরে আঘাতে মুহুর্তেই দর্জা ভেঙ্গে গেলো৷ লিউক আর টরি দুজন দোতালায় লুকিয়ে ছিলো৷ জম্বিরা ঢুকে তন্ন তন্ন করে খুজতে লাগলো৷ লিউক আর টরি ছাদে যেতে নিয়েছিলো৷ কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হলো না৷ জম্বিরা আগেই তাদের ধরে ফেললো৷ ধরে কামড় বসিয়ে দিলো৷ ছিড়ে খাওয়া শুরু করল গায়ের মাংস৷ । এদিকে গার্ড ঘুমিয়ে ছিলো। সে কিছুই বুঝতে পারছিলোনা৷ চেচামেচির শব্দ পেয়ে সে উঠে আসলো হাতের বন্ধুক৷ নিয়ে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছে। চোখের সামনে দেখতে পেলো জম্বিগুলা লিউক আর টরিকে টেনে নিয়ে আসছে হেচড়ে হেচড়ে৷ তাদের নিয়ে বেরুচ্ছে৷ গার্ড চিতকার দিল৷ সাথে গুলি করার জন্য বন্ধুক উচালো৷ কিন্তু ট্রিগার চাপ দেয়ার আগেই একটা জম্বি তার হাতে কামড় বসিয়ে দিলো৷ গার্ড কোনমতে নিজেকে ছাড়িয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পাললো। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারলো না ৷ সে শরীরে কেমন যেন অদ্ভুত যন্ত্রণা অনুভব করছে। নিজের হাতের দিকে তাকালো যেখানে কামড় দিয়েছে সে জায়গাটা কালো হয়ে আসছে৷ সব কালো হয়ে রগ ভেঙ্গে যাচ্ছে৷ তার শরীরটা পচে যাচ্ছে যেন৷ নিজের উপর আর নিয়ন্ত্রণ নাই৷ হাতের বন্ধুকটা পরে গেলো৷ সে ঘুরে দারালো৷ চোখের মনিগুলো সাদা হয়ে গেলো৷ গার্ডও এবার জম্বিদের পেছন পেছন হাটা শুরু করল কারন সে নিজেও এখন তাদের একজন৷
বায়োজিদ ঘুম থেকে জাগলো৷ কিন্তু এটা সে কোথায়৷ সে তার রুমে ঘুমিয়েছিলো। কিন্তু সে এখানে কিভাবে আসলো। তার পিস্তলটাও খুজে পাচ্ছেনা৷ বায়োজিদ এদিক ওদিক তাকালো৷ সে একটা সুনসান জায়গায় দাঁড়ানো। তার সামনে একটা পুরানো জমিদার বাড়ি৷ কিন্তু এখানে কিভাবে আসলো সে৷ বায়োজিদ সামনে হেটে যাচ্ছে লোহার গেট ধাক্কা দিয়ে ঢুকলো দরজাটা ভাঙ্গা৷ বায়োজিদ সামনে হেটে গেলো। বাড়িটার দরজাটা ধাক্কা দিলো৷ ধাক্কা দিতেই বিশ্রি লাশের গন্ধ টের পেল৷ সে তার পকেট থেকে ছোট ফ্ল্যাশ লাইটটা বের করল৷ লাইট জ্বালিয়ে সামনে গেলো৷ ফ্লোরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ৷ বায়োজিদ বুঝতে পারছে তার আশেপাশে কেউ আছে। খুব কাছাকাছি। এমনকি নিশ্বাসের শব্দটাও সে টের পাচ্ছে। বায়োজিদ হেটে যাচ্ছে। হঠাৎ কিছু একটার সাথে হোচট খেয়ে পরার মত অবস্থা। সে টর্চ ফেলিয়ে দেখলো একটা ৭/৮ বছর বয়সী বাচ্চার লাশ পড়ে আছে৷ লাশটা পোকায় খাচ্ছে। কয়েক জায়গায় হাড় দেখা যাচ্ছে। বায়োজিদ মুখ চেপে সরে পরল৷ টর্চটা হাল্কা ডিস্টার্ব দিতে লাগলো৷ বায়োজিদ টর্চ নাড়াচাড়া করছে। এমন সময় টর্চটা মেঝেতে ধরলো। সেই বাচ্চার লাশটা গায়েব৷ হঠাৎ তার পাশে একটু দূরেই বাচ্চাটা দাঁড়িয়ে আছে৷ হাতে একটা বিশাল ছুড়ি নিয়ে। বায়োজিদকে দেখে হাসছে৷ মেয়েটা ছুড়ি নিয়ে এক পা দু পা আগাচ্ছে৷ বায়োজিদ পেছাচ্ছে৷ বয়োজিদ সিড়ি দিয়ে উঠছে। মেয়েটাও হামাগুড়ি দিয়ে উঠছে আর বায়োজিদকে কোপ দেয়ার চেষ্টা করছে তবে কোপ দিতে ব্যার্থ হচ্ছে৷ এভাবে বায়োজিদ উপরে উঠে এলো৷ উপরে উঠে দেখলো মেয়েটা সিড়িতে নেই। উপর থেকে নিচে ফ্লোরের দিকে তাকালো৷ এসময় আচমকা মেয়েটা ঝাপিয়ে পরলো বায়োজিদের উপর৷ বায়োজিদ একটা মেয়েটার ছুড়ি ধরা হাত চেপে ধরে আছে৷ বায়োজিদ উঠে দাড়লো। মেয়েটার গলা আর এক হাত চেপে ধরে আছে৷ বায়োজিদ উপর থেকে ঢিল দিয়ে ছুড়ে ফেললো মেয়েটিকে৷ বায়োজিদ দেখলো মেয়েটিকে ফ্লোরে পরার সাথে সাথে ফাটা ডিমের মত ফেটে গেলো। ডিম যেরকম ফাটে খোসে একেকটিকে ভেতরের কুসুম ছরিয়ে যায়। মেয়েটার গায়ের মাংসও একেকদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলো৷ পুরা ফ্লোর কালো রক্তে ভরে গেলো৷ বায়োজিদ আরেকটা রুমে গেলো৷ এখানে কিছু বাচ্চাদের খেলনা পেলো৷ বায়োজিদ আবার একটা শব্দ পাচ্ছে যেন কেউ জোরে জোরে ছুড়ি ধার দিচ্ছে৷ বায়োজিদ সামনে হেটে গেলো.৷ …
.
.

( চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here