অসম পর্ব ১০,১১,১২

অসম
পর্ব ১০,১১,১২
কলমে লিপিকা
১০

অনুপম নিতুকে মিররের সামনে নিয়ে এল।বেলজিয়াম মিররে ভেসে উঠলো দুটি প্রতিবিম্ব।
– এবার চোখ খুলো
নিতু চোখ খুলে দেখলো তার প্রতিবিম্ব পেছনে অনুপম
– পছন্দ হয়েছে, ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল অনুপম
– জোক করছো
– আমি যা মনে প্রানে বিশ্বাস করি সেটাই দেখছো। ইউ মে ওয়্যার দিস ড্রেস।এগুলো তোমার প্রতিবছরের বার্থডেতে কেনা, গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছেড়ে বলল তুমি শাওয়ার নিয়ে নাও, আমি দেখি ঝটপট কি খাবার তৈরী করা যায়।

লিভিং রুমে বসে আছে অনুপম হাতে সিগারেট, কি অদ্ভুত ভালো লাগায় ভিজে যাচ্ছে বারংবার। ইচ্ছে করছে সময়টা থামিয়ে দিতে, সূর্য লুকিয়ে ফেলতে যেন ভোর না হয়। এও তার জীবনে ছিল। সিগারেটটা এ্যাশট্রেতে গুজে দিয়ে বেডরুমের দরজা আস্তে করে খুলে নিতুর দিকে তাকালো, আলো আধাঁরিতে কি যে মায়াময় লাগছে, চোখ সরিয়ে নেয়া যায় না। সোফায় গিয়ে বসলো অনুপম যেখান থেকে নিতুকে দেখা যায়, সাইড ল্যাম্প জ্বেলে কিছু কাগজ নিয়ে লিখতে বসলো, মনোযোগহীন লেখা, বারবার চোখ চলে যাচ্ছে নিতুর দিকে, ভাবলো সত্যি তুমি, আমার এত কাছে, হাত বারিয়ে ছোঁয়া যায়।

স্লিপিং পিল খেয়ে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে নিতু, অনুপমের ভাঁজে ভাঁজে জমে থাকা ভালবাসার খাঁজ কেটে বয়ে যাচ্ছে নিতুর শ্বাস।

হিসেব ছাড়া রাতটা আজ বড্ড বেখেয়ালি।

নিতু চোখ পিটপিট করে আলোছায়ায় তাকালো অনুপমের দিকে, ঘোর লাগা চোখে নিতু বলল সাদাত!
চোখ তুলে তাকালো অনুপম, হাতের কলম থমকে গেছে নিশব্দ কাগজে।
নিতু ঘুম জরানো কন্ঠে বলল কতবার বলেছি অফিস বাসায় আনবে না,এলোমেলো হাতটা এগিয়ে দিয়ে বলল কাছে এস
দ্বিধা দন্ধে পরে গেল অনুপম।
নিতু আবার বলল এ–স
পাশে এসে বসলো অনুপম, সরে গিয়ে জায়গা করে দিল নিতু, তারপর আধো আধো করে বলল শুয়ে পর
একরাশ জরতা নিয়ে অনুপম শুয়ে পরলো, ভালবাসার এ আহ্বান উপেক্ষা করতে পারলো না, হোক না তা ভুল নামে ডেকে।
নিতু অনুপমকে জরিয়ে ধরে ফিসফিস করে বলল আদর করবে আমায়
আলোছায়া ঘরে নেমে এলো অন্ধকার, নিয়ন্ত্রণ হারালো অনুপম

লিভিং রুমে দু’হাতে মুখ ঢেকে বসে আছে অনুপম আসন্ন ঝড়ের অপেক্ষায়, সকালটাকে বড্ড অসহ্য লাগছিল, কি হতো ভোর না হলে। মুখ ঘসে প্রথমে হসপিটালে ফোন দিয়ে বলল দু ঘন্টা লেট হবে, তারপর ফার্মেসি ডট কমে যেয়ে মেডিসিন অর্ডার করলো।
অজানা ভয়ে বুকের ভিতরটা বারবার শুকিয়ে আসছে অনুপমের। দুহাত দুদিকে দিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো। অস্ফুট ভাবে বলল হাউ ক্যান আই ম্যানেজ হার?

ঘুম ভেঙে নিতু প্রথমে বুঝতে চেষ্টা করলো কোথায় সে তারপরই আবিষ্কার করলো বস্ত্র শূন্য , চাদর ছাড়া তার গায়ে কিছু নেই।

কিচেন, ডাইনিং খুঁজে অনুপমকে পেল লিভিং রুমে। চিৎকার করে বলল নিতু কেন এমন করলে
অনুপম চোখ তুলে আবার নামিয়ে নিল।
নিতু আবার বলল এজন্য এখানে এনেছিলে, ছিঃ, ঘেন্না করি তোমাকে
অনুপম উঠে এসে নিতুর হাত ধরলো, কিছু বলার আগেই এক ঝটকায় হাত ছারিয়ে নিতু বলল ছোঁবে না আমায়, এই তোমার ভালবাসা
এবার অনুপমও চিৎকার করে বলল এনাফ,যথেষ্ট হয়েছে , গলা নামিয়ে বলল আমি ইচ্ছে করে যাইনি, তুমি ডেকেছিলে আবার চিৎকার দিয়ে বলল মানুষ তো আমি, এঞ্জেল তো নই
কলিং বেল বেজে উঠল, চুপ হয়ে গেল দুজন।
শান্ত কন্ঠে অনুপম বলল ভিতরে যাও, আমি দেখছি

বেডরুমে গিয়ে ধপাস করে সোফায় বসে পরলো নিতু, এক সমুদ্র জল চোখে উথাল পাথাল ঢেউ

নিতুর চলে যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আস্তে করে দরজা খুলে দিল অনুপম , ডেলিভারি ম্যান দাড়িয়ে আছে হাতে মেডিসিনের প্যাকেট

ঘরে এসে একবার নিতুর দিকে তাকালো, কাবার্ড খুলে এপ্রোন নিয়ে নিতুর সামনে এসে দাড়ালো, টি টেবিলের উপর মেডিসিনের প্যাকেটটা রেখে বলল ব্রেকফাস্ট করে মেডিসিন নিয়ে নিও যদিও এইটিন আওয়ারস্ বলে কিন্তু যত তরাতারি নিবে ততই ভালো, আমি হসপিটালে যাচ্ছি

আর চোখে একবার প্যাকেটটার দিকে তাকালো নিতু তারপর ঢুকরে কেঁদে উঠলো

কান্নার শব্দে অনুপমের ভিতরটা ভেঙে গেলেও পিছু ফিরলো না, লক্ খুলে বেরিয়ে গেল আর মনে মনে বলল সরি!

চলবে

অসম
পর্ব ১১
কলমে লিপিকা

সকালে ব্রেকফাস্ট করা হয়নি লাঞ্চ টাইমও ওভার হয়ে যাচ্ছে। অনুপম চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে নিজেকে নিজে বলল আর থাকা যাচ্ছে না ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে। কেবিনের দরজা খুলে দেখতে পেল নেশাল উদ্বিগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে চোখ পরতে অনুপম বলল কোন সমস্যা
– মাম্মাকে ফোনে পাচ্ছি না
হাত ঘড়ির দিকে তাকালো অনুপম, তিনটা বাজে, অস্ফুট ভাবে বলল ওহ্ মাই গড
নেশালের কাঁধে হাত রেখে বলল আমি দেখছি
দ্রুত হেটে বেরিয়ে এল কার পার্কিং-এ। দশ মিনিটের রাস্তা দুই মিনিটে উড়ে এল।লক্ খুলে দ্রুত পায়ে বেডরুমের দরজায় এসে থামলো, দরজায় হেলান দিয়ে বুকে হাত দিল, কতগুলো বিট মিস করছে তা কেবল সেই জানে।

নিতু সোফায় এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে। চোখের কোলে এখনো কান্নার দাগ স্পষ্ট। হাফ ব্রেড আর মেডিসিনের খোলা প্যাকেট বড় অবহেলায় পড়ে আছে। নেশালকে ফোন করে আশ্বস্ত করল অনুপম ঘুমিয়ে আছে, টেনশন নিও না

ফোন পকেটে রেখে নিতুর পাশে হাটুগেরে বসে পরলো। নিতুর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কাতর কন্ঠে বলল সরি!আর হবে না, প্রমিস! প্লিজ! ট্রাস্ট মি
অনুপমের স্পর্শে নিতুর ঘুম ভেঙে গেছে অনেক আগে কিন্তু চোখ খুলল না, হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে পাশ ফিরে নিজেকে গুটিয়ে নিল।

প্রায় ছ’মাস ধরে অলকানন্দার bouquet আসে বাড়িতে। সাথে চিরকুট “নিতু সরি”
হিমি প্রথম প্রথম বেশ অবাক হলেও এখন অবশ্য গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। একদিন নেশালকে জিজ্ঞেস করেছিল bouquet কে পাঠায় তুমি জান
নেশাল বিছানায় আধশোয়া হয়ে ল্যাপটপে কাজ করছিল, হিমির কথায় প্রশ্ন সূচক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলল ঠিক বুঝতে পারছি না কি বলছো।
-মাম্মাকে রোজ রোজ যে bouquet পাঠায় না সেটা বলছি।
কে পাঠায় তুমি জান?
-অনুপম আঙ্কেল হতে পারে

তারপর থেকে এই অনুপমকে দেখার ভীষণ ইচ্ছে হিমির।মাম্মার সাথে এর সম্পর্ক ঠিক কেমন জানার আগ্রহ তার প্রবল।এমন একটা বিষয় কারো সঙ্গে শেয়ারও করতে পারে না।

আজ হঠাৎ ব্রেকফাস্ট টেবিলে নেশাল হিমিকে বলল দুপুরে লাঞ্চের ব্যবস্থা রেখ গেস্ট আসবে
-কে আসবে, জুস খেতে খেতে নিতু বলল
– অনুপম আঙ্কেল

শুরু হয়ে গেল হিমির অপেক্ষা। টান টান উত্তেজনা নিয়ে ওয়েট করছে। হঠাৎ হিমির মাথায় খেলে গেল আজতো কোন bouquet এল না

বারটা তিরিশ
কলিং বেল বেজে উঠল
সুফিয়া দৌড়ে এল দরজা খুলে দিতে। হিমি হাত দিয়ে ইশারা করে বারন করে নিজেই খুলে দিল দরজা।
মধ্যবয়সী একজন দাঁড়িয়ে আছে, ফ্রেন্চ কাট কাঁচাপাকা দারি, চুলেও পাক ধরেছে কিন্তু ভীষণ স্মার্ট।
-হায়! আমি অনুপম
মিষ্টি করে হেসে হিমি বলল আমি হিমি,ভিতরে আসুন
অনুপম অলকানন্দার bouquet টেবিলের উপর রেখে দিল।
হিমির চোখ এরাল না, মনে মনে বলল নিজেই নিয়ে এসেছে আজ,এত প্রেম, মুখে বলল বসুন না
অনুপম বসতে বসতে বলল নিতু আছে
-আছে
– দেখা করতে চাচ্ছি
– মাম্মাতো কারো সঙ্গে দেখা করে না
– আমার কথা বল
হিমি মুখ দিয়ে নখ কাটতে কাটতে নিতুর রুমের দিকে গেল

দশ মিনিট পর ফিরে এসে হিমি বলল মাম্মা বলছিল
অনুপম হিমিকে থামিয়ে দিয়ে বলল ওর ঘরটা কোন দিকে
হিমির চোখ বড় বড় হয়ে গেল, অনুপম হিমির রসগোল্লার মতো চোখ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বলল চল

হিমি গুটি গুটি পায়ে হেটে নিতুর রুমের সামনে এসে দাড়ালো,
অনুপমকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল এটা মাম্মার রুম
অনুপম ঘরে ঢুকে দরজা ভেজিয়ে দিল,
নব ঘুরিয়ে হিমি চরম অবাক হয়ে দেখলো দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।

চলবে

অসম
পর্ব ১২
কলমে লিপিকা

চারপাশে তাকিয়ে অনুপম দেখে নিল নিতু ঘরে নেই। বেলকনির দরজায় এসে থামলো, নিতু দাঁড়িয়ে আছে গ্রীল ধরে, খোলা চুলে মুখের একটা পাশ দেখা যাচ্ছে, ভীষণ স্নিগ্ধ সে অবয়ব। অনুপমের ভিতর ভয় আর ভাললাগা দুটোই কাজ করছে।আস্তে করে ডেকে উঠে অনুপম নিতুকে,
– নিতু!
না ফিরেই উত্তর দিল নিতু – কেন এসেছো
নিতুর কাছে এসে গ্রীলের উপর হাত রেখে বলল- না এসেতো পারব না, সে যত কঠিন শাস্তি হোক।
– এত কিছুর পরও
করুণ কন্ঠে অনুপম বলল -সরি!
নিতু যেন ক্ষোভে উতরে উঠলো – সরি? তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য সাদাত অভিমান করে চলে গিয়েছে
– এটা তোমার ভুল নিতু,তুমি জানতে his days were numbered. কেন কষ্ট পাচ্ছ ভুল ভেবে
নিতু ঢুকরে কেঁদে উঠলো – ও আমার সঙ্গে কথা না বলেই চলে গিয়েছে অনুপম,বুঝতে পারছ কতটা অভিযোগ ছিল
নিতুকে দু’হাতে আগলে অনুপম বলল – কথা বলার মত অবস্থায় ছিল কি,নিতুর চুলগুলো কানের পাশে গুজে দিয়ে বলল কেন সব জেনেও অবুঝ হচ্ছ
নিতু দু পা পিছিয়ে গিয়ে বলল- চলে যাও
– চলে যাবার জন্যতো আসিনি,অনুপম নিজের হাতের মুঠোয় নিতুর হাত নিয়ে বলল কেমন করে ক্ষমা পাব বলতে পার
হাত ছারিয়ে নিয়ে নিতু বলল আবার সুযোগ খুঁজছো
– প্লিজ! আর অপরাধী করো না, নিতে পারছি না
– ঘেন্না করি তোমায়
– সমস্যা নেই, শুধু দূরে ঠেলে দিও না
– আবার কথায় ভোলাতে চাচ্ছ
অনুপম হসে দিল পরিবেশটাকে নরমাল করার জন্য, বলল- দশ বছর ধরে চেষ্টা করছি পারছি কই
দাঁতে দাঁত চেপে নিতু বলল কখনও পারবে না
– cruel
– শুধু তোমার জন্য
– ভালবাসার শাস্তি বুঝি, আহা! তারা কতইনা ভাগ্যবান ভাল না বাসলেও তুমি তাদের প্রতি kind
নিতু নিজের অজান্তেই হেসে দিল, কপট রাগ দেখিয়ে বলল- কথার রাজা
– আর সেই রাজার একমাত্র রানী হচ্ছ তুমি
– আবার
অনুপম পিছন থেকে জরিয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল – ব্যাংকক থেকে সোজা তোমার কাছে এসেছি ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে
নিতু সহসা পিছন ফিরে বলল অসভ্য
অনুপম হেসে বলল আরে এতে অসভ্যতার কি আছে, সবসময় আজেবাজে চিন্তা, আমি লাঞ্চ করব
নিতু অনুপমকে ঠেলে ঘরের ভিতর নিয়ে এসে বলল- বাসায় যাও
– অভুক্তকে খাবার না দিলে গৃহস্থের অমঙ্গল হয়
– হোক
– ওকে, হাগ করো চলে যাব
-প্রমিস করেছিলে
– একসেপ্ট কিস এন্ড হাগ
টুপ করে নিতুর গালে কিস করে অনুপম, নিতুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে গেল।

সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে, ইলশেগুঁড়ি নয় উথাল পাথাল টাইপ বৃষ্টি, সেতারা নাস্তা করতে এসে বকুলকে ডাকল- বকুল
– জ্বি খালাম্মা
-অনু উঠেছে
-জ্বি না
-ডেকে আন
-ডাকতে হবে না চলে এসেছি, তোমার যন্ত্রণায় ঘুমানো যায় নাকি চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল অনুপম।
– নাস্তা করে নে, থেমে আবার বলল তোর সাথে কথা আছে
টেবিলের দিকে তাকিয়ে অনুপম দেখল বাহারি খাবার, বহুদিন এভাবে কেউ যত্ন করে খাওয়ায় না,চোখ আটকে গেল কাস্টার্ড এর পেয়ালায়
– কি দেখছিস
-কাস্টার্ড দেখে বাবার কথা মনে হচ্ছে
– মন খারাপ করা কথা বলবি নাতো,তুই বরং এটা দেখ
সেতারা ফোন এগিয়ে দিল অনুপমের দিকে
আর চোখে একবার তাকালো অনুপম
-মা এই ছবি বহুবার আমাকে সেন্ড করেছো
-আহা! দেখনা কি মিষ্টি
অনুপম রুটির টুকরোটা মুখের সামনে থেকে নামিয়ে প্লেটে রাখলো, সেতারার দিকে সরাসরি তাকিয়ে বলল তুমি কিন্তু জান আমি একজনকে ভালবাসি
-সেটাতো দশবছর ধরে বলছিস। ও মেয়ে আর কবে তোকে বিয়ে করবে
-তোমাকে ভাবতে হবে না, আমার উপর ছেড়ে দাও
– আমি সানজানার বাবার সাথে কথা বলেছি, উল্টা পাল্টা কিছু করবি না
-তুমি কি চাও আমি হোটেলে গিয়ে উঠি
-কি সব বলছিস, মাথা গেছে নাকি
– মা প্লিজ! বোঝার চেষ্টা করো
-তুই বোঝার চেষ্টা কর
তুহিন অনুপমের পিঠে চাপর মেরে বলল কি নিয়ে ঝামেলা করছিস
অনুপম বলল এই ঝড় বাদলের দিনে তুই কোথা থেকে এলি
চেয়ার টেনে বসল তুহিন, টি পট থেকে চা ঢেলে চায়ে চুমুক দিয়ে বলল তোকে নিয়ে মাওয়া যাব, ইলিশ খিচুড়ি খেতে
-রাতে যাব এখন মার সঙ্গে হসপিটাল যাচ্ছি
তুহিন সেতারাকে বলল আবার কোথায় জয়েন করেছেন, আমি না মানা করলাম চাপ নিতে
সেতারা বলল ও রকম কিছু না, এস.এস গ্রুপের একটা ক্যানসার হসপিটাল আছে, ওরা বিনামূল্যে সেবা দেয়, অনেক দিন থেকে ওদের সাপোর্ট করছি, নেশাল ফোন করে বলল মিটিং এটেইন করতে তাই যাচ্ছি
তুহিন অনুপমের দিকে চাপা হেসে বলল দোস্ত এখন বাংলা কোন মাস চলছেরে
– যা বৃষ্টি নামছে বর্ষাকাল মনে হচ্ছে, নির্বিকার ভঙ্গিতে অনুপম বলল
– আমার কিন্তু মনে হচ্ছে পৌষ মাস
আর চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে অনুপম আঁচ করতে চেষ্টা করলো সেতারা ওদের কথা খেয়াল করলো কিনা
তুহিনকে সেতারা বলল তোড়াকে বলিসতো সানজানাকে নিয়ে কফি খেয়ে যেতে
অনুপম বলল তোরাই তাহলে নাটের গুরু
তুহিন বলল আরে না, সানজানা তোড়ার কলিগ
অনুপম বলল মা যাওতো রেডি হও, চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে বলল তুহিন আমার রুমে আয়

রুমে এসে তুহিন বিছানায় পা ঝুলিয়ে শুয়ে পরলো,এক হাত মাথার নিচে রেখে বলল নিতুর সঙ্গে দেখা হয়েছে
-হুঁ, কাবার্ড খুলতে খুলতে বলল অনুপম
-কবে, বললি নাতো
-এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ওর ওখানে চলে গিয়েছিলাম,নীল রঙের একটি শার্ট বের করতে করতে অনুপম বলল
– দেখা করেছে?
-করতে চাইনি, আমি ওর বেডরুমে চলে গিয়েছিলাম
– কিহ্,শোয়া থেকে উঠে বসলো তুহিন
শার্টের ভাজ খুলে অনুপম বলল ভেবেছিলাম কনভিন্স করতে বেগ পেতে হবে কিন্তু হয়নি,দু’ঘন্টাতেই কিস্তিমাত
-দু’ঘন্টা বেড রুমে ছিলি
-দরজা লক্ করে ছিলাম হেসে বলল অনুপম
-কিভাবে কনভিন্স করলি,চুমু টুমু খেয়ে নাকি আরও —-
– কি যা তা বলছিস
– মধ্য বয়সী প্রেম দোস্ত,আজকালতো টিনএজরাই অনেক এডভান্স
-অনুপম ওয়ালেট প্যান্টের পিছনের পকেটে ঢোকাতে ঢোকাতে বলল হাতটা পর্যন্ত ধরতে দিতে চায় না তাহলে বোঝ কেমন প্রেম করছি
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here