#Revenge,পর্ব ১৬,১৭ শেষ
#Tisha_Khan_Nabila
১৬
·
·
ছাদে দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে মাহি। চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। বাম হাত দিয়ে বারবার পানি মুচছে। আর বারবারই অবাধ্য পানিরা পড়ছে..!!
মাহিঃ আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি মিশান। আমি বাধ্য ছিলাম এটা যদি না করতাম। তাহলে তোমাকে মেরে ফেলতো মিশান। আমি কি করে এরকম হতে দিতাম?? বড্ড ভালবাসি যে তোমাকে। আমার হাত পা বাধা মিশান আই এম হেল্পলেস। পারিনা কাউকে আটকে রাখতে ভালবেসে। সবাই হারিয়ে যায় নয়তো চলে যায়..!!
বলে কান্নায় ভেঙে পড়লো মাহি..!!
মাহিঃ মাম্মা কেন চলে গেলে তোমরা?? আমাকে একা রেখে কেন গেলে?? পাপা তুমি ও চলে গেলে। আর ভাইয়াটা ও চলে গেলো আমি কি এত পচা?? আমাকে কেন নিয়ে গেলেনা তোমরা?? আমি আর পারছি না ৬টা বছর। হ্যা ৬টা বছর বুকে পাথর রেখে দুরে থেকেছি। আমার জন্য মিশান ও দুরে ছিলো ওর পরিবার থেকে। আমি দোষী আমি দায়ী এসবের জন্য..!!
মিশান আর আয়াশ বসে ভাবছে কে হতে পারে??
মিশানঃ ব্রো আমি বুঝতে পারছি না। কে হতে পারে?? কে ক্ষতি করতে চায় আমাদের??
আয়াশঃ আমিও বুঝতে পারছি না রে..!!
মিশানঃ তাহলে এবার কি করবো??
আয়াশঃ ভাবতে হবে..!!
মিশানঃ তুমি বসে বসে ভাবো..!!
আয়াশঃ আর তুই??
মিশানঃ আমি তোমার ছেলের কাছে যাই..!!
আয়াশঃ কোথায় অংশ??
মিশানঃ আছে মেবি কিউটির কাছে..!!
আয়াশঃ মিষ্টি তোর ভাবী হয়..!!
মিশানঃ হাহ কে বলবে ভাবী?? ওকে আমি কিউটিই বলবো ওকে??
বলে মিশান বেরিয়ে নিচে গেলো..!!
।
।
।
।
।
।
রাইমা খাঁনঃ কোথায় ছিলি তুই??
মিশানঃ ব্রোর রুমে চ্যাম্প কোথায়??
নাবিলাঃ তুমি ওকে চ্যাম্প বলো কেন??
মিশানঃ কারন তোমার ছেলে আসলেই চ্যাম্প..!!
নাবিলাঃ চ্যাম্প রিশান বলে..!!
মিশানঃ রিশান কে??
নাবিলাঃ সে অনেক কাহিনী..!!
এরমাঝে অংশ নেমে এলো..!!
মিশানঃ হেই চ্যাম্প..!!
অংশ দৌড়ে এসে মিশানের কোলে উঠে বললো..!!
——-চাচ্চু..!!
নাবিলাঃ বাবা অংশ চাচ্চু কে চিনে গিয়েছো??
অংশঃ হামমমম মাম্মা..!!
আয়াশ নিচে আসতেই অংশ নেমে গেলো। আয়াশের কাছে গিয়ে নিজের ছোট ছোট হাত দিয়ে। আয়াশের পা ধরে টানছে আয়াশ অবাক হয়ে তাকালো। কারন অংশ ওর কাছে কখনো যায় না। নাবিলা ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে..!!
অংশঃ পাপা কোলে..!!
আয়াশ বিশ্বাস করতে পারছে না। অংশ ওকে পাপা বলছে ওর কোলে উঠতে চাইছে। আয়াশ চট করে অংশ কে কোলে নিয়ে। অংশর সারা মুখে চুমু দিয়ে বললো..!!
——অংশ তুমি আমাকে পাপা বলছো??
অংশঃ পাপা কে তো পাপাই বলবো তাইনা?? চাচ্চু বলেছে তুমিই আমার আসল পাপা..!!
আয়াশঃ মিশান??
মিশানঃ হামমম কিউটিতো বলবে না। তোমাদের তো যুদ্ধ চলছে তাই আমিই বললাম..!!
আয়াশঃ থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাই..!!
মিশানঃ ভাই কে থ্যাংক ইউ বলছো ব্রো??
আয়াশ হেসে দিলো..!!
*এবার যা করার করতে হবে..!!
নাবিলাঃ ওকে আমি রুমে যাচ্ছি..!!
বলে নাবিলা চলে গেলো। রাত ১২টা অংশ ঘুমিয়ে পড়েছে। নাবিলা আস্তে উঠে ড্রয়িংরুমে গেলো। মিশান আর আয়াশ বসে গল্প করছে। নাবিলা গিয়েই বললো..!!
——আয়াশ একটু পানি নিয়ে এসো না..!!
আয়াশ হা করে তাকিয়ে আছে..!!
নাবিলাঃ কি হলো যাও..!!
আয়াশঃ তুমি আমার সাথে কথা বলছো??
নাবিলাঃ হ্যা বলছি তো??
আয়াশঃ কিছুনা..!!
বলে পানি আনতে গেলো। মিশান উঠে রুমে যেতে গেলেই নাবিলা সামনে দাড়ালো..!!
মিশানঃ কি হলো??
নাবিলা কোনো কথা না বলেই। একটা পিস্তল বের করে মিশান কে গুলি করলো। মিশান বুকে হাত দিয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে বললো..!!
——কিউটি এএএএটা কককি কককরলে??
ততক্ষণে আয়াশ দৌড়ে চলে এলো..!!
আয়াশঃ মিশান মিষ্টি এটা কি করলে??
নাবিলা আয়াশ কেও গুলি করলো। আয়াশ আর মিশান দুজনেই নিচে পড়ে গেলো। গুলির শব্দে রাইমা খাঁন আর রায়হান খাঁন ও চলে এসেছে। নাবিলা পাগলের মতো হাসতে হাসতে বললো..!!
——এটাকেই বলে রিভেন্জ। এখন হলো রিভেন্জ পুরন..!!
·
·
·
চলবে……..
#Revenge (অন্তিম পর্ব ১৭)
#Tisha_Khan_Nabila
·
·
·
আয়াশ আর মিশান নিচে পড়ে আছে। রাইমা খাঁন দৌড়ে নিচে এলো। আর রায়হান খাঁন স্তব্ধ এমন ঘটনায়। নিজের দুই ছেলে কে এভাবে দেখে..!!
রাইমা খাঁনঃ এটা কি করলে তুমি??
নাবিলাঃ রিভেন্জ নিলাম..!!
রাইমা খাঁনঃ ওরা তোমার কি ক্ষতি করেছিলো?? আমার ছেলে দুটোকে কেন মারলে?? আয়াশ ওঠ বাবা মাম্মা কে ক্ষমা করে দে। ছোটবেলায় তোকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বিশ্বাস কর মাম্মা আর এমন করবে না। ওঠ সোনা মিশান ওঠ। মাম্মা কে রেখে চলে যাবি তোরা?? আমরা কি নিয়ে বাঁচবো?? এমন করিস না প্লিজ ওঠ তোরা..!!
রায়হান খাঁন নিচে এসে। ঠাস করে নাবিলা কে একটা থাপ্পর মেরে বললো..!!
——-এটা কি করে করতে পারলে?? নিজের ছেলের কথাটাও ভাবলে না?? অংশ যে বাবা হারা হয়ে যাবে এটা ভেবেছো তুমি??
নাবিলাঃ সেটা না হয় আমি ভাববো..!!
রায়হান খাঁনঃ আমি তোমাকে পুলিশে দেবো..!!
এরমাঝে অংশ ও নিচে এলো। আয়াশ আর মিশান কে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে গেলো..!!
অংশঃ পাপা, চাচ্চু কি হয়েছে তোমাদের??
নাবিলাঃ অংশ ওরা মারা গিয়েছে বুঝেছো??
অংশঃ পাপা কোলে নাও..!!
নাবিলাঃ অংশ তোমাকে কি বলেছি বোঝোনি?? ওরা মারা গিয়েছে রুমে যাও তুমি..!!
অংশঃ চাচ্চু ওঠো না..!!
ঠোট উল্টে কাঁদতে কাঁদতে বললো। তখনি শুনতে পেলো কলিং বেলের আওয়াজ। নাবিলা বাঁকা হেসে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতেই হুরমুর করে ভেতরে কয়েকজন ঢুকে পড়লো..!!
রায়হান খাঁনঃ আপনারা কারা??
——-অলোক আই এম অলোক..!!
বলতে বলতে একটা ছেলে এলো। নাবিলা ছেলেটা কে চিনতে পারলো না। অলোক ভেতরে ঢুকে বললো..!!
——-হোয়াট ইজ দিস তিশা?? ওদের কেন মারলে তুমি?? আমার স্বীকারদের তুমি মেরে ফেললে?? দিস ইজ নট ফেয়ার রাইট?? এখন আর কি করার আছে?? মেরেই যখন ফেলেছো। এখন তোমার বোন মাহি কে আমি বিয়ে করবো। আর আমার ভাই আদিত্য কে তুমি..!!
নাবিলাঃ আদিত্য মানে কোন আদিত্য??
——-কামঅন আমাকে চিনতে পারছো না??
আদিত্য ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো। নাবিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে..!!
রাইমা খাঁনঃ আদি তুমি??
নাবিলাঃ মানে এসবের সাথে তুমিও জড়িত??
আদিত্যঃ আসলে আমি এসবে পড়তে চাইনি। কিন্তুু বিদেশ থেকে ফিরে যখন জানলাম। আয়াশ তোমাকে বিয়ে করে নিয়েছে। সাথে সাথে মাথা গরম হয়ে গেলো। তাই আর পারলাম না ভাল মানুষ হয়ে থাকতে..!!
নাবিলাঃ এই অলোক তোমার ভাই??
আদিত্যঃ হ্যা কাজিন..!!
নাবিলাঃ কেন করলে তোমরা এমন??
অলোকঃ ভালবেসে করেছি যা করেছি। মাহি কে আমি ভালবাসি কিন্তুু কি হলো?? এই মিশান ওকে ছিনিয়ে নিলো। তাই মাহি কে ব্লাকমেল করে। মিশান কে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে। মিশান কে ছেড়ে দিতে বলি। আর ও বেচারী মিশান কে এতটা ভালবাসে। যে ভয় পেয়ে মিশান কে ছেড়ে দেয়। আর এই দেবদাস মরে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তুু ও পরিকল্পনা করার আগেই। আমি ওর গাড়ির ব্রেক ফেল করে দেই। আর সেদিন ওর এক্সিডেন্ট হয়। ভেবেছিলাম এটা টপকে গিয়েছে। কিন্তুু না সেই আবার ফিরে এলো..!!
আদিত্যঃ আর আয়াশ তোমাকে মারতে চায়নি। আমি ওকে দিয়ে এসব করিয়েছি। তোমাকে যখন আমি পাবোনা কাউকে পেতে দেবোনা। সেদিন আমি এসেছিলাম এই বাড়িতে। তোমরা দেখোনি শুধু আন্টি দেখেছিলো রাইট আন্টি??
রাইমা খাঁনঃ হ্যা ও এসেছিলো..!!
আদিত্যঃ আয়াশের খাবারে আমি ড্রাগস দেই। এটা এমন একটা ড্রাগস যেটা শরীরে গেলে। মানুষ আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যায়। হলোও তাই আয়াশ তোমাকে ফেলে দিলো। আর এই যে রিভেন্জ রিভেন্জ খেলা খেলছো। একচুয়েলি তোমরা খেলছো না। আমরা তোমাদের দিয়ে খেলাচ্ছি..!!
।
।
।
।
।
।
হঠাৎ কেউ এসে আদিত্য কে ঘুষি মারে। আদিত্য তাকে দেখে হা করে বলে..!!
——-তুই??
আয়াশঃ হ্যা আমি মরিনি..!!
আদিত্যঃ এটা কি করে হতে পারে??
মিশানঃ প্লান কি একা তোরাই করতে পারিস??
অলোকঃ তুইও বেঁচে আছিস??
মিশানঃ আমরা বেঁচে আছি বাট তোরা বাঁচবি না..!!
অলোকঃ দাড়িয়ে কি দেখছিস মার ওদের..!!
নিজের লোকদের বলে। রায়হান খাঁন গিয়ে পুলিশে কল করে দেয়। মিশান আর আয়াশ মারামারি করেই যাচ্ছে। এরমাঝে অলোক অংশর মাথায় পিস্তল ধরে..!!
অংশঃ পাপা, চাচ্চু..!!
মিশান আর আয়াশ থেমে যায়..!!
নাবিলাঃ অংশ..!!
অলোকঃ অনেক হয়েছে হিরোগীরি। আর একবারও যদি হাত তুলিস। তাহলে একে মেরে ফেলবো..!!
আয়াশঃ অলোক আমার ছেলে কে ছাড়..!!
মিশানঃ তোদের শএুতা আমাদের সাথে। অংশ কে কেন টানছিস??
আয়াশঃ ছাড় বলছি আমার ছেলে কে..!!
আদিত্যঃ একে মেরে ফেল..!!
নাবিলাঃ নাহহহ প্লিজ ওকে ছাড়ো..!!
আয়াশঃ আমার ছেলের গায়ে। একটা আচর ও যদি লাগে। কসম আল্লাহর তোদের জানে মেরে ফেলবো..!!
অলোক শয়তানি হাসি দেয়। হঠাৎ একটা গুলি এসে অলোকের হাতে লাগে। অলোক নিচে পড়ে যায়। অংশ দৌড়ে নাবিলার কাছে চলে যায়। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে পুলিশ..!!
আদিত্যঃ পুলিশ কে খবর দিলো??
রায়হান খাঁনঃ আমি দিয়েছি. অফিসাস এদের নিয়ে যান..!!
অলোকঃ এটা ঠিক করলেন না আপনি..!!
পুলিশ ওদের নিয়ে চলে যায়..!!
আয়াশঃ মাহি তোকে বাঁচাতে তোকে ছেড়েছিলো..!!
মিশান ধপ করে সোফায় বসে পড়ে। আয়াশ গিয়ে মিশানের পাশে বসে..!!
আয়াশঃ কি রে কি ভাবছিস??
মিশানঃ আমি ওকে ভুল বুঝলাম। ওকে একবারও বোঝার ট্রাই করলাম না। কি করে করতে পারলাম এটা??
নাবিলাঃ তোমাদের কাজই তো এটা। প্রথমে ভুল বুঝবে পরে বলবে কি করে করতে পারলাম এটা??
বলে অংশ কে নিয়ে রুমে চলে গেলো..!!
আয়াশ, মিশানঃ ☹☹
রাইমা খাঁনঃ মাহি কে সরি বলে দে। আর তোরা এত বড় নাটক কি করে করলি??
রায়হান খাঁনঃ জানিস কত ভয় পেয়েছিলাম??
আয়াশ, মিশানঃ সরি পাপা, সরি মাম্মা..!!
রাইমা খাঁন অবাক। আর ছলছল চোখে বললো..!!
——আয়াশ তুই আমাকে মাম্মা বললি??
আয়াশঃ আমার ছেলের মতো বলি। মাম্মা কে মাম্মাই তো বলবো তাইনা??
রাইমা খাঁন হেসে দিলো। আয়াশ ওনাকে জড়িয়ে ধরলো। উনিও জড়িয়ে ধরে বললো..!!
——সরি বাবা আমাকে ক্ষমা করে দে..!!
আয়াশঃ নো মাম্মা ক্ষমা আমার চাওয়া উচিত। তুমি এত বছরে তো এতবার ক্ষমা চেয়েছো। তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করিনি। বাজে বিহেভ করেছি আই এম সরি..!!
মিশানঃ আমি কি ভেসে এসেছি??
আয়াশঃ তুই ভেসেই এসেছিস..!!
মিশানঃ তাইনা??
রাইমা খাঁন মিশান কেও জড়িয়ে ধরলো। অংশ দৌড়ে আবার নিচে নেমে এসে বললো..!!
——দীদা আমিও আদর খাবো..!!
অংশ কে কোলে নেয় রাইমা খাঁন..!!
নাবিলাঃ কি পাজী ছেলে আবার চলে এসেছে..!!
পরেরদিন সকালে গাল ফুলিয়ে। নদীর পাড়ে বসে আছে মিশান পাশেই মাহি। মাহি মুখ টিপে হাসছে মিশান আমতা আমতা করে বললো..!!
——ক্ষমা করে দাও প্লিজ..!!
মাহিঃ কিসের ক্ষমা??
মিশানঃ সরি মাহি আমি বুঝতে পারিনি। এসব তুমি বাধ্য হয়ে করেছো..!!
মাহিঃ তা বুঝবে কেন?? ভালবাসলে ঠিকই বুঝতে..!!
মিশানঃ নো ভালবাসি আমি তোমাকে। অনেক বেশী ভালবাসি প্লিজ ক্ষমা করে দাও..!!
মাহি মিশান কে জড়িয়ে ধরে বললো..!!
——ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিত। আমার এটা করা উচিত হয়নি। তোমাকে বলে দেয়া উচিত ছিলো। বাট আমি হেল্পলেস ছিলাম। আই এম সরি মিশান..!!
মিশানঃ চুপ..!!
মিশান শক্ত করে মাহি কে জড়িয়ে ধরলো..!!
।
।
।
।
।
।
লোহার শিক দিয়ে নিজের হাত পোরাচ্ছে আয়াশ। নাবিলা রুমে এসে এটা দেখে থমকে গেলো। দৌড়ে এসে শিকটা ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে বললো..!!
——এটা কি করছো তুমি?? পাগল হয়ে গিয়েছো নাকি??
আয়াশঃ হ্যা পাগল হয়ে গিয়েছি। তোমার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছি। কেন ক্ষমা করতে পারছো না আমাকে??
নাবিলাঃ পারবো না ক্ষমা করতে..!!
আয়াশঃ ওকে করো না..!!
বলে আয়াশ নিজের প্যান্ট থেকে। বেল্ট খুলতে শুরু করলো নাবিলা অবাক হয়ে বললো..!!
——-এটা ছাড়া আর কি পারো তুমি?? আমাকে মেরে ক্ষমা নিতে চাও তুমি??
আয়াশ মুচকি হাসলো। এরপর বেল্টটা খুলে নিজের শরীরে আঘাত করতে শুরু করলো। নাবিলা অবাকের উপর শকড ও হলো..!!
নাবিলাঃ এটা কি করছো তুমি??
আয়াশঃ বলো ক্ষমা করেছো আমাকে। মিষ্টি আমি জানি আমি অন্যায় করেছি। কিন্তুু আমিতো ক্ষমাও চেয়েছি প্লিজ ক্ষমা করে দাও..!!
নাবিলাঃ আয়াশ পাগলামি করো না..!!
আয়াশ বেল্ট ফেলে দিয়ে বললো..!!
——ও তুমি ক্ষমা করবে না??
নাবিলা চুপ করে আছে। আয়াশ আলমারি থেকে পিস্তল বের করে। নিজের মাথায় ধরলো..!!
নাবিলাঃ আয়াশ কি করছো??
আয়াশঃ তোমার জীবনের প্রবলেম তো আমি। তাই এই প্রবলেমটা কে শেষ করে দিচ্ছি আমি..!!
বলে ট্রিগারে চাপ দিতে গেলেই। নাবিলা গিয়ে পিস্তল নিচে ফেলে। আয়াশ করে একটা থাপ্পর মেরে বলে..!!
——কি মনে করো নিজেকে?? যখন যা ইচ্ছে করবে?? এতটা পাগলামি কেন করো তুমি??
আয়াশঃ আর করবো না ব্যাস একবার ক্ষমা করে দাও..!!
মিশান রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে..!!
——-হ্যা কিউটি ক্ষমা করে দাও..!!
নাবিলাঃ মাহি আপু তুমি??
মাহিঃ আমাদের মধ্যে সব ঠিক হয়ে গিয়েছে..!!
আয়াশঃ বিয়ে কবে করছো??
মিশানঃ ব্রো তোমার হাতে কি হয়েছে??
নাবিলাঃ উনি হাত পুড়িয়েছে। আমার থেকে ক্ষমা পেতে..!!
বলে ব্যান্ডেজ করতে বসে। হাত ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বলে..!!
——ক্ষমা করবো আরো ১মাস পর..!!
আয়াশঃ এ্যা..!!
নাবিলাঃ এ্যা না হ্যা..!!
৬বছর পর..!!
পুরনো একটা কবরের সামনে। দাড়িয়ে আছে অংশ, নাবিলা। আর দুরে দাড়ানো আয়াশ..!!
অংশঃ মাম্মা পাপার কি হয়েছিলো?? কেন চলে গেলো আমাদের রেখে??
নাবিলাঃ তোমার পাপার ক্যান্সার হয়েছিলো বাবা..!!
অংশঃ ক্যান্সার??
নাবিলাঃ হামমমমম চলো..!!
নাবিলা অংশ কে নিয়ে গাড়ির কাছে গেলো। কবরটা রিশানের ৫বছর আগে। ক্যান্সার হয়ে রিশান মারা গিয়েছে। এর জন্যই রিশান সেদিন বলেছিলো। আমি তোমাকে সত্যিটা বলবো না। কারন রিশান নাবিলা কে টেনশনে ফেলতে চায়নি। রিশান জানতো ওর ক্যান্সার। নাবিলা গাড়িতে তাড়াতাড়ি উঠে গেলে আয়াশ বলে..!!
——মিষ্টি আস্তে এই অবস্থায় সাবধানে চলতে হয়..!!
নাবিলাঃ আমি জানি হু..!!
বলে গাড়িতে উঠলো। অংশ কে গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। এই অবস্থায় বলার কারন হচ্ছে নাবিলা ৫মাসের প্রেগন্যান্ট। ওরা বাড়ি গিয়ে পৌছাতেই। মিশান আর মাহির ৫বছরের মেয়ে। আরাধ্যা এলো এসেই অংশ কে বললো..!!
——তুমি কোথায় গিয়েছিলে??
অংশঃ তোকে বলবো কেন??
আরাধ্যাঃ আমাকেই তো সবটা বলবে..!!
অংশঃ কেন তুই কে??
আরাধ্যাঃ আমি তোমার বউ..!!
সবাই হেসে দিলো মাহি আর মিশান। ৬বছর আগেই বিয়ে করেছে। অংশ বড় বড় চোখ করে তাকালো। আরাধ্যা চোখ টিপ মারলো। অংশ কাশতে কাশতে পানি খেয়ে এসে বললো..!!
——এসব কে শিখিয়েছে তোকে??
আরাধ্যাঃ পাপা কে দেখি। মাম্মা কে চোখ মারে..!!
মাহিঃ দেখলে তো??
মিশানঃ এই মেয়ে এসব কি বলছো??
অংশঃ সিরিয়াসলি চাচ্চু?? তুমি আন্টি কে চোখ মারো?? এই জন্যই তোমার মেয়েও ডাফারের মতো চোখ মারে..!!
আরাধ্যাঃ কি বললে তুমি??
অংশঃ শুনলিতো কি বললাম..!!
আরাধ্যা অংশ কে তাড়া করলো। অংশ সারা বাড়ি ছুটছে পেছনে আরাধ্যা..!!
—(সমাপ্ত)—