My_Mafia_Husband❤,পর্ব:৩

My_Mafia_Husband❤,পর্ব:৩
লেখিকা: মিহু

“মেঘ কাউকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মিহুকে টেনে ওর গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেল। শহরের থেকে দূরে একটা বাংলো আছে মেঘের,,,,গাড়ি যেয়ে থামলো সেই বাংলোর সামনে। আশেপাশে কোনো বাড়ি-ঘর নেই,,,,জায়গাটা পুরো নির্জন। মিহি গাড়িতে যতক্ষণ ছিল একটা কথাও বলে নি,,,,চুপচাপ নিঃশব্দে কান্না করে গিয়েছে। বাংলোর সামনে আসলে দাড়োয়ান গেট খুলে দিল,,,,মেঘ গাড়িটা ভেতরে নিয়ে গিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে মিহুর হাত ধরে ওকে টেনে নামলো। তারপর টানতে টানতে ওকে ভেতরে নিয়ে গেল,,,,ওদের দেখে একজন বয়স্ক লোক মানে যিনি বাড়ির দেখাশোনা করেন তিনি (রহিম) এগিয়ে আসলো”


রহিম: স্যার আপনি এইহানে?

মেঘ: এখন থেকে কিছুদিন আমি এই বাড়িতেই থাকব

রহিম: আইচ্ছা স্যার,,,,স্যার এই মাইয়্যাডা কেডা?

মেঘ: ও,,,,ও আমার বউ মানে তোমার ম্যাডাম

মিহু: আমি আপনাকে আমার হাসবেন্ড হিসেবে মানি না

মেঘ: আমি তো মানি যে তুমি আমার ওয়াইফ আর তোমার উপর আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। রহিম চাচা আপনি চলে যান,,,,আজকে আপনার ছুটি

রহিম: আইচ্ছা স্যার

“রহিম চাচা চলে গেল। মেঘ মিহুর হাত ধরে হির হির করে টেনে ওকে উপরের একটা রুমে নিয়ে গেল। তারপর ধাক্কা দিয়ে ওকে বেডে ফালিয়ে দিল। মেঘ গেট লক করে এসে বেডে মিহুর পাশে বসলো,,,,মিহু মেঘের থেকে দূরে এক যেয়ে গুটিশুটি মেরে বসলো। তা দেখে মেঘের মেজাজ গেলো চরম ভাবে খারাপ হয়ে। মেঘ মিহুকে টান দিয়ে এক ঝটকায় নিজের কাছে নিয়ে আসলো”


মেঘ: যত চাইছি তোমাকে নিয়ে একটু ভালো থাকব,,,,ততোই তুমি আমাকে তোমার থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছো আর তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে বাধ্য করছো। আমাকে কি ভালোবাসা যায় না? কেন তুমি আমাকে ভালোবাসো না? [করুন কন্ঠে]

মিহু: না যায় না। আপনার মত একটা নরপিশাচকে কখনো ভালোবাসা যায় না। আপনার প্রতিটা স্পর্শে আমার গা ঘিন ঘিন করে,,,,তাই প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন

মেঘ: তোর গা ঘিন ঘিন করে তাই না আমার প্রতিটা স্পর্শে? এবার তোর পুরো শরীরে আমার স্পর্শ পাবি। তখন দেখব এই গা ঘিন ঘিন কিভাবে করে তোর

মিহু: একদম না আপনি আমার কাছেও আসবেন না ছাড়ুন,,,ছাড়ুন বলছি [কান্না করতে]

“মিহু মেঘকে ধাক্কিয়েও সরাতে পারছে না। মেঘ মিহুকে ধাক্কা দিয়ে বেডে শুইয়ে দিয়ে,,,,ওর ঠোঁটে আর গলায় উথাল-পাথালভাবে চুমু খেতে লাগলো। মিহু চিৎকার করছে আর বারবার মেঘকে সরানোর জন্য সমানে ধাক্কাচ্ছে,,,,কিন্তু মেঘ সেদিকে খেয়াল না করে ওর কাজ করছে। এমন সময় মিহু বলে উঠলো_________


মিহু: আপনি যদি এরকম করতে থাকেন তাহলে কিন্তু আমি নিজেকে শেষ করে দিব

“মিহুর কথা শুনে মেঘ রক্তচক্ষু নিয়ে মিহুর দিকে তাকিয়ে উঠে গেল। মিহু এখনো কান্না করছে”


মেঘ: আলমারিতে কিছু ড্রেস আছে,,,,সেগুলো নিয়ে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো

“মিহু কোনো কথার উওর না দিয়ে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাই দেখে এবার মেঘ ওকে ধমক দিলো”


মেঘ: কি হলো যাও [ধমক দিয়ে]

“মেঘের ধমক খেয়ে মিহু জামা-কাপড় না নিয়েই দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। মেঘের চোখ লাল হয়ে আছে,,,,ও মিহুকে ভালোবাসে তাই মিহুর কোনো ক্ষতি ও চায় না। আর মিহু ভিতু হলেও যদি এরকম কিছু করে ফেলে তাহলে? তাহলে তো ও শেষ হয়ে যাবে। তাই ও মিহুকে ছেড়ে দিয়ে বেলকনিতে চলে গেল। এদিকে মিহু ওয়াশরুমে ঢুকে ঝর্না ছেড়ে দিয়ে সমানে কান্না করছে আর ভাবছে,,,,আজকে যদি ওকে ওর ফ্যামিলিকে শেষ করার কথা না বলতো মেঘ তাহলে ও জীবনেও এই নরকে পা রাখতো না। এখানে ও কি করে থাকবে? ও মেঘকে মেনে নিত,,,,কিন্তু মেঘ যেভাবে অকারনে মানুষকে খুন করে তাতে ও মেঘকে মেনে নিতে পারবে না,,,,কখনো পারবে না। টানা এক ঘন্টা যাবৎ মিহু ওয়াশরুমে পানিতে ভিজছে। মেঘ দেখলো মিহু এখনো বের হয় নি,,,তাই মেঘ গেটে নক করলো। মিহুর কোনো সারা শব্দ না পেয়ে মেঘ এবার চিল্লিয়ে উঠলো। মিহু ভয় পেয়ে তাড়াতড়ি গেট খুলে বেরিয়ে এলো। মেঘ মিহুর দিকে তাকিয়ে দেখলো চোখ-মুখ লাল হয়ে ফুলে আছে। মিহু যে এতক্ষণ কান্না করছিল তা মেঘ বুঝতে পারছে। মেঘ খেয়াল করলো মিহু জামাকাপড় চেন্জ না করে ভেজা কাপড়েই বেরিয়ে এসেছে। মেঘ যেয়ে আলমারি থেকে জামাকাপড় আর টাওয়েল নিয়ে এলো। জামাকাপড় বেডে রেখে নিজে টাওয়েল দিয়ে মিহুর মাথা মুছে দিল। তারপর জামাকাপড় ধরিয়ে দিলো চেন্জ করে আসার জন্য। মিহু ওয়াশরুমে যেয়ে চেন্জ করে এলো”


মেঘ: (এই দু’বছর অনেক কষ্ট দিয়েছো আমায়,,,এবার তার শোধ আমি নেব তোমায় কষ্ট দিয়ে) মিহু!

মিহু: হুম

মেঘ: যাও রাতে খাওয়ার জন্য রান্না করো

মিহু: কিহ্? আমি আর রান্না? ইম্পসিবল। আর তাছাড়া আমি রান্না পারি না

মেঘ: এত কিছু আমি শুনতে চাই নি,,,,রান্না করতে বলেছি করবে ব্যাস

মিহু: পারব না😡

মেঘ: আমার লোকেরা তোমার ফ্যামিলির উপর সবসময় নজর রাখছে। তুমি কি চাও তোমার প্রাণ প্রিয় ভাই যে এখন তোমাকে হন্য হয়ে খুঁজছে তার কোনো ক্ষতি করে দেই আমি?

মিহু: আপনি আসলেই একটা নরপিশাচ। যে নাকি কোনো মানুষের প্রাণ নেওয়াটা খেলা খেলি মনে করে সে আর যাই পারুক না কেন কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না

মেঘ: আমি জানি আমি নরপিশাচ। এখন তুমি বলো রান্না করতে যাবে নাকি নিজের ভাইয়ের মৃত দেহ দেখবে?

মিহু: রা..রান্না করব

মেঘ: দ্যাট’স লাইক এ গুড গার্ল। যাও কিচেনে যেয়ে ঝটপট কিছু বানিয়ে নিয়ে আসো

মিহু: (রাগে ফুসতে ফুসতে কিচেনে চলে আসলাম। কিচেনে ভাবতে লাগলাম কি রান্না করা যায়। ফ্রাইড রাইসটা মোটামুটি পারি রান্না করতে ভাইয়া একবার করেছিল তখন দেখেছিলাম। সেটাই করি তাহলে আর কি। ফ্রিজ থেকে সবজি নিয়ে আসলাম। ছুরি দিয়ে সবজি কাটছি আর ভাবছি এই নরপিশাচটার সাথে জাপানের সেই প্রথম দেখা)

স্মৃতি অংশ_______________
.
“মিহু ওর ফ্রেন্ডসদের সাথে ঘুরতে বেরিয়েছে সাথে আছে নীল আর ওর আরও কিছু ফ্রেন্ড”

মিহু: ভাইয়া শপিংয়ে যাব

নীল: সেইদিন না শপিং করলি?

মিহু: আমি জানি না আমি আজকেও শপিং এ যাব কজ ওইদিন ভালোভাবে শপিং করতে পারি নি

নীল: আচ্ছা চল

“মিহু শপিংমলে ঢুকে এটা সেটা কেনাকাটা করছে। কেনাকাটা শেষ করে মিহু বিল পে করার জন্য টাকা দিল। তখনি একটা গুলি এসে মিহু যেই লোকটাকে টাকা দিয়েছিল তার মাথায় লাগলো। রক্ত আশেপাশে ছিটকে পড়েছে,,,তার মধ্যে কিছু রক্ত ছিটকে যেয়ে মিহুর জামায় পড়লো। মিহু নিজের সামনে একজন মানুষকে খুন হতে দেখে ওখানে শকড্ হয়ে দাড়িয়ে আছে। মিহু পুরো রোবট এর মত হয়ে গিয়েছে ওর মাথা কাজ করছে না। আশেপাশের লোকজন প্রায় সবাই ছুটোছুটি করছে পালানোর জন্য। নীল এসে মিহুর হাত ধরে টান দিল বাট মিহু নড়লো না দেখে নীল যেয়ে মিহুর সামনে দাড়ালো। বোনের জামায় রক্ত দেখে নীলও কিছুটা শকড্ হলো। কিন্তু তারপরও এখানে দাড়িয়ে থাকলে চলবে না দেখে নীল মিহুকে একটু জোরে ঝাঁকি দিল। মিহুর হুস ফিরে আসলো। মিহুর চোখে পানি টলটল করছে,,,,জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। তা দেখে নীল বুঝতে পারলো এই ঘটনা মিহুর ব্রেনে অনেক এফেক্ট করেছে যার কারনে ওর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। নীল তাড়াতাড়ি মিহুর হাত ধরে টানতে লাগলো। মিহু নীলের পেছন পেছন যাচ্ছে,,,,তখনি আরও একটা গুলির আওয়াজ আসলো মিহু নীলের পেছন পেছন যেতে খেয়াল করলো পাশে একটি লোক হাতে গান নিয়ে দাড়িয়ে আছে। লোকটি আর কেউ নয় মেঘ। মেঘের চোখ হঠাৎ মিহুর দিকে পড়লো। মিহুর ফেস দেখে বুঝলো অনেক ভয় পেয়ে আছে। আর হঠাৎ মেঘের চোখ গেল মিহুর জামায়। জামায় রক্ত লেগে আছে। মেঘের চোখ আবার মিহুর চোখে আটকে গেল। তখনি মিহু শপিংমল থেকে বেরিয়ে গেল। নীল মিহুকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো”


নীল: মিহু এখন ঠিক আছিস?

“মিহু কোনো কথা না বলে চুপচাপ বসে আছে”

নীল: মিহু!

মিহু: (নিশ্চুপ)

“নীল মিহুকে পানি খাওয়ালো তারপরও মিহু কোনো কথা বলছে না দেখে নীল ডক্টরকে কল করে বাসায় আসতে বললো। একটু পরই ডক্টর এসে মিহুর চেকআপ করলো”

ডক্টর: আমার মনে হয় ও খুব শকড্ পেয়েছে,,,,যার কারনে ওর ব্রেন কাজ করছে না

নীল: হ্যা

ডক্টর: ওর ব্রেনে খুব এফেক্ট করেছে ঘটনাটা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে আগের মত করতে হবে,,,,নাহলে ওর ব্রেন খুব বাজেভাবে ইন্জিউরড হয়ে যাবে

নীল: ডক্টর এখন কি করা উচিৎ?

ডক্টর: ওকে ঘটনার রিয়্যাকশন দিতে হবে

নীল: ওখে ডক্টর আমি দেখছি

“এদিকে মেঘ নিজের বাসায় যেয়ে ওর বিশস্ত লোক ড্যানি আর চার্লসকে মিহুর সমস্ত ইনফরমেশন বের করতে বললো। মেঘের চোখে মিহুর ফেসটা পুরো আটকে গিয়েছে। চোখ বন্ধ করলেই মিহুর ফেসটা ভেসে উঠছে বার বার”

“আজ প্রায় ৩ দিন পর মিহু স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে কিন্তু ওই ঘটনা ও এখনো ভুলতে পারে নি”


নীল: মিহু!

মিহু: হুম

নীল: চল বাহির থেকে ঘুরে আসি

মিহু: না আমি যাব না

নীল: আরে চল না প্লিজ

মিহু: প্লিজ ভাইয়া ভালো লাগছে না

নীল: থাক তুই তোর মত তুই কি আর আমাকে ভাই মানিস নাকি হুহ্

মিহু: শুরু হয়ে গিয়েছে ইমোশনাল মেলোড্রামা,,,,তুই আসলেই একটা শয়তান ছেলে,,,,থাক আর একটিং করতে হবে না চল

নীল: 😁😁😁😁চল

চলবে,,,,,,,,

কেমন হলো জানাবেন😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here