Mr_innocent,part_14,15

Mr_innocent,part_14,15
You_are_my_love_addiction
written_by_আশফিয়া_নুর_আরুশি
part_14

এরা চলে গেলো। এরা চলে যেতেই একটা গাছের পেছন থেকে একটা লোক বের হলো।
-” মজা করে নাও যত পারো। তোমাকে তো আমার কাছেই আসতে হবে।তুমি শুধু আমার শুধু আমাী আমার হলে তুমি যে কারো হতে পারবে না জানেমান আর মাফিয়া কিং তোমাকে যে এবার আমার মূখমুখি হতে হবে তোমার ব্যাপারে অনেক শুনেছি এখান সামনাসামনি দেখবো।
ডেভিল স্মাইল দিয়ে বললো লোকটি।

লোকটি সেখান থেকে চলে গেলো।

অন্যদিকে আরুশি এক ধ্যানে আইসক্রিম খাচ্ছে আর আদ্রিয়ান আরুশিকে আড়চোখে দেখছে আর হাসছে।

আরুশি আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেই দেখে আদ্রিয়ান হাসছে

-” হাসছেন কেন?
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো আরুশি।

-” তোমাকে যেকেউ দেখলে হাসবে। এভাবে বাচ্চাদের মতো কেউ আইসক্রিম খায় কি।”

-” মানে?”

-“আয়নায় একবার নিজেকে দেখ।”

আদ্রিয়ানের কথায় আরুশি আয়নায় তাকিয়ে দেখে ওর নাকে আইসক্রিম লেগে আছে।

-” এবার বুঝলে কেন হাসলাম?”

আরুশি ব্যাগে রুমাল খুজতে লাগলো পাশ থেকে আদ্রিয়ান আরুশিকে একটা রুমাল দিলো।আরুশি আদ্রিয়ানের হাত থেকে রুমালটা নিয়ে আইসক্রিম মুছে নিলো।

কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আদ্রিয়ান গাড়ি থামালো

-‘ আবার গাড়ি থামালেন কেন?”

-” বাহিরে তাকিয়ে দেখো।”

আদ্রিয়ানের কথায় আরুশি বাহিরে তাকিয়ে দেখলো ওর বাড়ি চলে এসেছে।

-” আমি গেলাম। ”

বলেই আরুশি গাড়ি থেকে নেমে পরলো। আর আদ্রিয়ানও আরুশির পেছন পেছন গাড়ি থেকে নামলো।

-” ঘরে গিয়ে আমাকে একটা ম্যাসেজ দিবে।”

-” আমার বয়েই গেছে।”

-” তুমি যতক্ষণ ফোন দিবে না ততক্ষণ আমি যাব না।। ”

আরুশি কিছু না বলে চলে গেলো___

আরুশি রুমে গিয়ে আগে ফ্রেশ হয়ে নিলো। ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।

আদ্রিয়ানের কথা মনে পরতেই
আরুশি বেলকনিতে গিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান ফোনের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে যেনো ওর ম্যসেজেরই অপেক্ষা করছে। পরক্ষণেই দুপুরের কথা মনে পড়ে গেলো আর চোখ বন্ধ করে নিলো তারপর চোখ খুলে মোবাইল হাতে নিয়ে আদ্রিয়ানকে ম্যাসেজ দিলো।

-” আমি ঘরে চলে এসেছি আপনি যেতে পারেন। ”

আরুশির ম্যাসেজ দেখে আদ্রিয়ান বেলকনির দিকে তাকিলো দেখলো আরুশি দাঁড়িয়ে আছে। আরুশিকে দেখে মুচকি হেসে আদ্রিয়ান চলে গেলো।

আদ্রিয়ানকে চলে যেতে দেখে আরুশিও নিজের রুমে চলে গেলো। রুমে এসে আরুশি আবার বিছানায় গা এলিয়ে দিলো আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমের দেশে চলে গেলো।

আদ্রিয়ান আবার ওই ঝিলের কাছে গেলো। ঝিলের কাছে গিয়ে বেঞ্চে বসলো আর বলতে লাগলো,

-” আমি জানি তুমি আমাকে ভালো বাসো কিন্তু তুমি তা বুঝতে পারছ না এ কই দিনে তোমার মনে আমার জন্য যে জায়গা আছে তা বুঝিয়ে দিবো তার জন্য তোমাকে কিছুটা কষ্ট পেতে হবে যে কাপকেক.)।আজকে তোমাকে অনেক কথা বলতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু বলতে পারলাম না কারন তুমি আমার উপর রেগেছিলে।তোমার কিছুই মনে নেই তাই না।

আধা ঘন্টার মতো ঝিলের কাছে থেকে আদ্রিয়ান বাড়ি চলে গেলো

বাড়ি এসে দেখলো আয়াশ আজমিরা এসে গেছে।

-” ভাইয়া তুমি কোথায় ছিলে?”(আজমিরা)

-” একটু কাজ ছিলো তোরা কখন ফিরলি?”(আদ্রিয়ান)

-” এই মাত্র।”(আয়াশ)

-” ওহহ চলো ডিনার করে নিবি। “(আদ্রিয়ান)

___________

ধ্রুব আর ইশিতা বাড়ি এসে দেখলো আরুশির ঘরে দরজা লাগানো। ইশিতা দরজায় টোকা দিলে আরুশি না খুলায় ওরা চলে গেলো আরুশিকে আর ডাকলো না।

গভীররাতে,,,,

হঠাৎ আরুশি ফোনে ম্যাসেজের টুন বেজে উঠলো। আরুশি বিরক্তি নিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো ম্যাসেজ এসেছে আর তাতে লেখা,
-” রেডি থেকো আমি আসছি তোমার নিজের করে পেতে।”

আরুশি ম্যাসেজটা দেখে নাম্বার চেক করে দেখে অচেনা নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে তাই ম্যাসেজ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরলো।

_____________
৪দিন পর
মাঝরাতে ঘুমের ঘোরে আরুশির মনে হলো ওই হাওয়ায় ভাসছে। তাই চোখ খুলে দেখে ও কারো কোলে আর যে তাকে কোলে নিয়ে আছে সে মাস্ক পড়ে আছে শুধু চোখ দেখা যাচ্ছে চোখ দুটো অনেক মায়া ভরা

-” আপনি কে আর আমাকে কোলে করে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??”

-“আমি কে তোমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি তা একটু পরই জানতে পারবে জানেমান ।”

বলেই লোকটি গাড়ির সামনে এসে আরুশিকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো আর নিজেও ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো।

-” আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”

-” ডার্ককুইনকে তার ডার্ক কিংডমে নিয়ে যাচ্ছি।”

-” ডার্ক কুইন কে?”

-” এখানে কে কে আছে?”

-” আমি আর আপনি! ”

-” কুইন কাদের বলে মেয়েদের নাকি ছেলেদের?”

-” ছেলেদের থুক্ক মেয়েদের? ”

-” এখানে মেয়ে কে?”

-” আমি। ”

-” তাহলে ডার্ককুইনও নিশ্চয় তুমি।”

-” আমি কেন ডার্ককুইন হতে যাবো? কে আপনি?

-” তুমি আমার ডার্ক কিংডমের কুইন তাই তোমাকে ডার্ককুইন বললাম।”

-” হুহহ আমি কোনো রাজ্যের রানি না। ”

-” কে বলেছে?? তুমি আমার রাজ্যের রানি।”

-” আর আলুপাম মাইরেন না।
এখন বলেন আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন না বললে আমি চিল্লাবো।”

-” দেখতেই পারবে আর একটু অপেক্ষা কর মাই কুইন।”

-” পারবো না অপেক্ষা করতে আমি যাবো না আপনার সাথে। আমাকে আমার বাড়ি দিয়ে আসুন তা নাহলে…. ”

-“তা না হলে কি?”

-“আমি গাড়ি থেকে লাফ দিবো।
বলেই আরুশি গাড়ি দরজা খুলতে চাইলো কিন্তু পারলো না।

আরুশি তার পাশে বসা লোকটির দিকে তাকিয়ে দেখলো লোকটি তার দিকে ডেভিল স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে।

-“কেন এমন করছেন? কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার?

-” নামো।”

-” কেন?”

-এক্স আমরা আমাদের গন্তব্য স্থানে এসে পড়েছি তাই আর তুমি এত প্রশ্ন কর কেন?”

-” হুহ।”

আরুশি গাড়ি থেকে নেমে দেখলো সামনে একটা বাড়ি কিন্তু ভালো ভাবে বাড়িটা দেখা যাচ্ছে না।

-” এটা কার বাড়ি?”

-” আমার আর তোমার বাড়ি।এখন ভিতরে চলো।”

আরুশি আর লোকটি বাড়িতে ঢুকলো। বাড়িতে ঢুকে লোকটি আরুশি চোখ বেধে দিলো
-“কি হলো আমার চোখ বাধছেন কেন?”

-“তোমাকে খুন করবো তাই।”

-“………”

একটা রুমে নিয়ে গিয়ে লোকটির আরুশির চোখের বাধন খুলে দিলো।রুমের চারপাশ দেখে আরুশির মূখ অটোমেটিকালি হা হয়ে গেলো

-” এটা কার রুম?”

-” আমার কেনো?”

-” আপনার কিন্তু এতে তো…..”

*” হুমমম আমার ঘরে শুধু আমার কুইন এর ছবি থাকবে আর যখন আমাদের লিটেল প্রন্সেস বা প্রিন্স হবে তখন ওদের ছবি লাগাবো।”

-” আপনি এসব কি বলছে আমাদের প্রিন্সেস বা প্রিন্স মানে??”

-” বোকা তোমার আর আমার বিয়ে হলে আমাদের বেবি হবে না ওদের কথাই বলছি। ”
টেডি স্মাইল দিয়ে বললো।

-“আপনি তো দেখছি ভবিষ্যৎ বাণী করনে। কিন্তু যতই ভবিষ্যৎ বাণী করুন না কেন আপনার সাথে আমার বিয়ে হবে না কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর কখনো বাসবোও না। ”

আরুশির মূখে এই কথা শুনে লোকটি রেগে যায় আর আরুশিকে রুমের দেওয়ালের সাথে জোরে চেপে ধরে এতো জোড়ে চেপে ধরায় আরুশির হাতের কাঁচের চুরি ভেঙে কিছু টুকরো হাতে ডুকে যায় কিন্তু লোকটি তা খেয়াল করে না আর বলতে থাকে,
-” আমাকে ভালোবাসবি না তো কাকে ভালোবাসবি ওই আদ্রিয়ানকে। ওর মধ্যে কি এমন আছে যা আমার মধ্যে নেই। বন্ধুর মতো আছিস বন্ধুর মতোই থাক। আদ্রিয়ানের থেকে দূরে থাকবি তা না হলে ওকে মারতে আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না।”
ডেভিল স্মাইল দিয়ে বললো লোকটি।

হঠাৎ লোকটি তার হাতে তরল কিছু অনুভব করলো তাই হাত সামনে নিয়ে দেখে হাতে রক্ত লেগে আছে। লোকটি আরুশির দিকে তাকিয়ে দেখে আরুশির চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আর হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে অঝরে।

আরুশির হাতে রক্ত দেখে লোকটি পাগলের মতো করতে থাকে আর আরুশিকে কোলে করে নিয়ে বেডে বসিয়ে দেয় আর ফাস্টেড বক্স নিয়ে এসে পরম যত্নে হাতে মলম লাগিয়ে দেয়।

-” সরি জানেমান নিজের অজান্তেই তোমাকে ব্যাথা দিয়ে ফেললাম তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না। এই দেখে কান ধরলাম আর কখনো তোমাকে কষ্ট দিব না প্লিজ জানেমান কেঁদো না তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না।”

বলতে বলতেই হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো

-” লোকটা নিজেই কষ্ট দিচ্ছে আর নিজেই মলম লাগিয়ে দিছে। এটাকে কি নাম দিব ভালোবাসা না পাগলামি।”
মনে মনে ভাবছে আরুশি।

-” কি ভাবছো জানেমান? ”

-” আব কিছু না তো। ”
আমতা আমতা করতে করতে বললো।

-” আচ্ছা চলো তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাই।”

-” কোথায় নিয়ে যাবেন?”

-” আগে চলোই না আমি জানি তোমার খুব পছন্দ হবে।”

-” তাই। ”

-” হুম চলো এখন।”

লোকটি আরুশির হাত ধরে টেনে একটি বাগানে নিয়ে গেলো। বাগানটিতে সাদা কালো গোলাপে ভরা

বাগানটা দেখে আরুশির মুখ দিয়ে অটোমেটিকেলি বেরিয়ে গেলো ‘বিউটিফুল’ শব্দটি।

-“এটা আপনার বাগান?”

-” হুম। ”

-” আচ্ছা আপনার রুমে আমার ছবি আবার আপনার বাগানেও আমার প্রিয় ফুল কেন?”

-” এই ফুল গুলো কি শুধু তোমারই প্রিয় নাকি আমারও প্রিয়।”

-” আচ্ছা তা না হয় বুঝলাম কিন্তু আপনার রুমে আমার ছবি কেন?”

-” আমার রুমে শুধু আমার কুইনে ছবি থাকবে আর তুমি আমার কুইন তাই তোমার ছবি আছে বুঝলে। এখন কথা বন্ধ করো আর চলো দোলনায় বসবে আসো।”

লোকটি আরুশিকে নিয়ে একটি দোলনার কাছে গেলো দোলনাটা অনেক সুন্দর করে গোলাপ দিয়ে সাজানো

-“এখানে বসো।”
লোকটির কথা মতো আরুশিকে দোলনায় বসলো

-“আপনি কোথায় যাবেন আর আমি বাসায় যাবো কখন?”

-” আমি এখানেই আছি আর বাসায় নিয়ে যাবো চিন্তা করতে হবে না। এখন চুপ চাপ দোলনায় বসে থাকো আর কোনো প্রশ্ন করলে
দোলনা থেকে ফেলে দিবো।”

আরুশি ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলো

আরুশিকে চুপ থাকতে দেখে লোকটি মুচকি হাসলো। লোকটি পাশ থেকে একটা হারমোনিয়াম নিয়ে গান গাইতে শুরু করলো

🎶Tu ata hei Sineme
Jab jab sasbe vartihu🎶

🎶Tere Dil ki galiyo se main harroj gojar tihu🎶

🎶Haoyao ki jese salti hetu Main ret jese orthihu🎶

🎶Kon tuje u payer karega mine Jase karthihu🎶

🎶Music🎶

Mere najar ka Safar tujpe he ake ruke

🎶Khene ko baki ha Kya
Khena thajo o Khe suke🎶

🎶Mere nigahe ha Tere nigaho pe tuje khabar Kya be khabar🎶

🎶Main tuje se he sup sup Kar Tere akha parte ho🎶

🎶Kon tuje u payer karega jese mine karti hu🎶

🎶Music🎶

গান শেষ হতেই লোকটি আরুশির পাশে গিয়ে বসলো। লোকটিকে পাশে বসতে দেখে আরুশি একটু সরে বসে জিজ্ঞেস করলো,
-” আপনি এতো সুন্দর হারমোনিয়াম বাজানো কোথা থেকে শিখেছেন? ”

-” আমার দাদুভাই শিখিয়েছে। ”

-” উনি কোথায় আর আপনার মা-বাবা কোথায়?”

-“দাদুভাই আছো কোথাও। আমার বাবা নেই মা থেকেও নেই
কথাটি বলতে গিয়ে লোকটির চোখ দিয়ে দুফুটো পানি গড়িয়ে পরলো কিন্তু আরুশির চোখে তা পড়লো না।

-” মা থেকেও নেই মানে?”

-” আমার মা পনেরো বছর ধরে কোমায়। ”

-” সরি আমি আপনাকে হার্ট করতে চাই নি।”

-” জানেমান তোমার কথায় আমি হার্ট হইনি।”

-“আচ্ছা আমি কি জানতে পারি আপনার মা কোমায় গেলো কিভাবে?”

-” হ্যাঁ কেন নয়।”
তাহলে শোনো

-“পনেরো বছর আগে আমি, মামুনি-পাপা, ছোট আব্বি-ছোট আম্মি আর তাদের ছেলে মানে আমার ভাই সবাই একসাথে থাকতাম……..

To be continue

#Mr_innocent
#You_are_my_love_addiction
#written_by_ #আশফিয়া_নুর_আরুশি
#part_15

____________
-“আচ্ছা আমি কি জানতে পারি আপনার মা কোমায় গেলো কিভাবে?”

-” হ্যাঁ কেন নয়।
তাহলে শোনো। ”

পনেরো বছর আগে আমি, মামুনি-পাপা, ছোট আব্বি-ছোট আম্মি আর তাদের ছেলে মানে আমার ভাই সবাই একসাথে থাকতাম।একদিন সবাই মিলে রাঙামাটি যাওয়ার প্লেন করি। রাঙামাটি যাওয়ার সময় আমার পরিবার সামনের গাড়িতে আর আমার ভাইয়ের পরিবার পেছনের গাড়িতে ছিলো।যাওয়ার সময় আমাদের গাড়ি কিভাবে যেন খাদে পড়ে যায় আমি আর আম্মু পেছনে বসায় আমি মাথা ব্যাথা পায় আমাকে বাঁচাতে গিয়ে মামুনি গুরুতর ভাবে আহত পায়। গাড়ি ব্লাস্ট করবে বুঝতে পেরে পাপা আমাদের গাড়ি থেকে ধাক্কা দেয়।আমরা পরে যাওয়ার পরই গাড়ি ব্লাস্ট করে আর আমার পাপা………
আমরা উপর থেকে নিচে পরে যাই। তারপর আমার কিছু মনে নেই। যখন সেন্স আসে তখন আমি নিজেকে হসপিটালের আবিষ্কার করি।একটা আঙ্কেল আর আন্টি আমাকে আর মামুনিকে রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পায়। আন্টির কাছে জানতে পারি মামুনি কোমায় চলে গিয়েছে।”

আরুশির কোনো সারা না পেয়ে লোকটি আরুশির দিকে তাকিয়ে দেখে আরুশি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে।

আরুশিকে ঘুমাতে দেখে লোকটি মুচকি হাসলো।পরক্ষনেই তার মূখের হাসি গায়েব হয়ে গেলো আর বললো,
-” আমি সব কিছু হারিয়েছি কিন্তু তোমাকে হারাতে পারব না জানেমান।প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেয়ো না।”

লোকটি আরুশি কোলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলো তারপর বাসায় গিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে নিজে চলে আসলো।

আরুশি ঘুম থেকে উঠে নিজেকে ওর রুমে আবিষ্কার করে।

-” আমি তো ওই বাগানে ছিলাম এখানে আসলাম কিভাবে?
মনে মনে ভাবলো আরুশি।
হঠাৎ ফোনের আওয়াজে আরুশি ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে।

ফোন হাতে নিয়ে দেখে ইশিতা ফোন করেছে।

-” আমি তো বাসায় আছি তাহলে এই ফোন দিচ্ছি কেন। ”

ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ইশিতা বললো,
-“আরু আমার খুব ইম্পরট্যান্ট মিটিং আছে তাই আমি চলে এসেছি। তোর জন্য খাবার রেডি করে রেখে এসেছি তুই খেয়ে নিস।”

-” ওকে বেবি। ”

-” বাই।”

-” বাই। ”

বলেই ফোন রেখে দিলো।

ফোন রেখে ফ্রেশ হয়ে নিলো। ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলো।নিচে এসে খেয়ে অফিসের জন্য বেরিয়ে পরলো আরুশি।

আরুশি অফিসে এসেই কফি বানাতে চলে যায়। কফি বানিয়ে নিয়ে আদ্রিয়ানের কেবিনে ডুকে দেখে আদ্রিয়ান চেয়ারে বসে আছে আর রিংকি আদ্রিয়ানের কোলে বসে আছে।

আসলে আদ্রিয়ান কাজ করছিলো তখনি হঠাৎ রিংকি আদ্রিয়ানের কেবিনে ঢুকে পড়ে আর জোড় করে আদ্রিয়ানের কোলে বসে পড়ে। আদ্রিয়ান উঠানোর চেষ্ঠা করেছিলো কিন্তু আরুশিকে দেখে চেষ্ঠা করা বন্ধ করে দেয়।

রিংকিকে আদ্রিয়ানের এতো কাছে দেখে আরুশির অনেক কষ্ট হয় সাথে অনেক রাগও হয়।

আরুশিকে দেখে রিংকি বললো,
-” হেই মেয়ে তোমাকে বলেছি না কেবিনে ডুকার সময় নক করে ডুকবে।”

আরুশি ভেবেছি আদ্রিয়ান কিছু বলবে কিন্তু আদ্রিয়ান চুপচাপ বসেছিলো

-“ওকে ম্যাম।”(আরুশি)

-” ওকে যাও নিজের কাজ করো।”(রিংকি)

-” স্যার আপনার কফি। “(আরুশি)

-” রাখো। আর রিংকি তুমি তোমার কেবিনে যাও।”(আদ্রিয়ান)

-” ওকে বেবি। “(রিংকি)

রিংকি চলে যেতেই আদ্রিয়ান আরুশির কাছে আসলো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরুশি কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। আরুশিকে বেরিয়ে যেতে দেখে আদ্রিয়ান স্বজোরে দেওয়ালে ঘুশি মারলো আর বুকস্লেফ থেকে সব বই ফেলে দিলো।

-” সরি কাপকেক আমি তোমাকে কষ্ট দিচ্ছি। কিন্তু তুমি যতটুকু কষ্ট পাচ্ছো তার থেকে আমি বেশি কষ্ট পাচ্ছি তোমাকে কষ্ট দিয়ে।”

রিসাদ আদ্রিয়ান কেবিনের সামনে দিয়েই যাচ্ছিলো হঠাৎ কিছু পরে যাওয়ার আওয়াজ শুনে আদ্রিয়ানের কেবিনে ডুকে দেখে স্লেফের বই সব নিচে পড়ে আছে আর আদ্রিয়ানের হাত থেকে রক্ত পরছে।আদ্রিয়ানের হাত থেকে রক্ত পরতে দেখে রিসাদ অবাক হলো না কারণ আদ্রিয়ানের রাগ উঠলে বা কষ্ট পেলে ওই নিজেকেই আঘাত করে।

রিসাদ গিয়ে আদ্রিয়ানকে চেয়ারে বসিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিতে দিতে বললো,
-“তুই যেই কাজটা করছি তাতে নিজেও কষ্ট পাচ্ছি আর মেয়েটাকেও কষ্ট দিচ্ছিস। ”

-” এটা না করলে ওই বুঝতে পারবে না যে ওই আমাকে ভালোবাসে।আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না রে।”

আদ্রিয়ানকে শান্তনা দিয়ে লাভ হবে না বুঝে রিসাদ ওখান থেকে চলে গেলো।

রিসাদ চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আরুশি এসে দেখলো পুরো রুম তছনছ হয়ে গেছে। আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে হাতে ব্যান্ডেজ করা। আরুশি কোনো কিছু না বলে রুম গোছাতে লাগলো

এভাবেই তিন দিন কেটে গেলো এই তিন দিনে আরুশি আদ্রিয়ানের সাথে একটুও কথা বলেনি কিন্তু মনে মনে কষ্ট পেয়েছে।

___________

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার দিন আদ্রিয়ান আর আরুশি,,,মিশমি আর আয়াশ,,,আজমিরা আর রিসাদ,,,,ধ্রুব আর ইশিতা এক সাথে জোড়ায় জোড়ায় বসেছে কিন্তু রিংকি একা বসেছে।আরুশি আদ্রিয়ানের পাশে বসতে চায় নি কিন্তু আদ্রিয়ান জোড় করে বসিয়েছে। আদ্রিয়ান এই তিন দিনে বুঝে গেছে যে আরুশি ওকে ভালোবাসে আর আরুশিও বুঝে গেছে ও আদ্রিয়ানকে ভালোবাসে কিন্তু এতো দিনের জমে থাকা অভিমানের জন্য কথা বলছে না।

সবাই সাজেক ভ্যালি পৌছালো।পুরোসময়টুকু আদ্রিয়ান আরুশিকে অনেক জ্বালিয়েছে কিন্তু আরুশি একটা কথাও বলেনি।

সবাই মিলে ডিসাইট করলো বাইক দিয়ে রিসোর্টে যাবে।
রিংকিকে বাকিদের সাথে কোনোভাবে গাড়ি দিয়ে রিসোর্ট পাঠিয়ে দিলো তারপর সবাই যার যার বাইক এ উঠে বসলো যার যার পার্টনার নিয়ে।

আাদ্রিয়ান আগে থেকেই বাইক বুক করে নিয়েছিলো তাই আর কারো অসুবিধা হয় নি।

আদ্রিয়ান,,আয়াশ,,ধ্রুব,,,রিসাদ ড্রাইভ করছে আর মেয়েরা পেছনে বসে আছে আধা ঘন্টা পর ওরা রিসোর্টে পৌছালো।

রিসোর্টে এসে সবাই যার যার রুমে চলে গেলো।

আদ্রিয়ান আর আরুশির রুম ফ্লোরের সবার শেষ প্রান্তে। দুজনের রুমের বেলকনি থেকে দুজনের রুম দেখা যায়।।

যে যার রুমে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। এভাবেই তাদের দিন চলে গেলো পরের দিন অনেক কাজ তাই সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো

____________
গভীর রাতে,,

ঘুমের মধ্যে আরুশির হঠাৎ করে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।তাই চোখ খুললো। চোখ খুলে চমকে গেলো,

আদ্রিয়ান ওর উপরে ঘাড় ঝুকে আছে। আরুশি চিৎকার করবে তার আগেই আদ্রিয়ান ওর মূখ চেপে ধরে বললো,
-“একদম চেচামেচি করবে না।”

*” উমমম উমম।”

-“ছাড়বো আগে বলো চেচামেচি করবে না।”

আরুশি আদ্রিয়ানের কথায় হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো তাই আদ্রিয়ান ছেড়ে দিলো।

আদ্রিয়ান ছেড়ে দিতেই আরুশি জোড়ে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে বললো,
-“আপনি আমার রুমে কেন কিভাবে আসলেন?”

আরুশির কথা শুনে আদ্রিয়ান বেলকনি দেখালো,

-” আপনি বেলকনি দিয়ে এসেছেন!”

-” হুমম।”

-” কিন্তু কেন?”

-” ঘুরতে যাব। ”

-” ঘুরতে যাবেন যখন রিংকি ম্যামকে নিয়ে জান আমি কেন?”

-” তোমার সাথে যাবো।”

-” কিন্তু আমি যাব না।”

-” যাবে না তাইতো।”

-” হ্যাঁ হ্যাঁ যাব না কি করবে। ”

-” ওকে দেখো তাহলে কি করি।”
বলেই ডেভিল স্মাইল দিয়ে আদ্রিয়ান আরুশিকে কোলে তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলো

-” কি হলো নামান আমায় নামান কোল থেকে।”

আদ্রিয়ান কিছুই বললো না আর আরুশি একের পর এক কিল-ঘুষি দিয়ে যাচ্ছে আদ্রিয়ানের বুকে৷

-” নামাবো কিন্তু যেতে হবে আমার সাথে। ”

-” আচ্ছা আচ্ছা যাব কিন্তু নামান।”

আদ্রিয়ান আরুশিকে নামিয়ে দিয়ে বললো,
-” এখন ঘরে গিয়ে দেখো তোমার রুমের সোফায় একটা ব্যাগ আছে আর তাতে একটা ড্রেস আছে ওটা পরে আসো। ”

-” ওকে।”

আরুশি রুমে গিয়ে ব্যাগ খুলে দেখলো কালো রঙের বাইক রাইড সুট।

আরুশি ওয়াসরুমে গিয়ে ড্রেস চেন্জ করে নিলো তারপর বাহিরে চলে গেলো চুপিসারে। বাহিরে এসে দেখে আদ্রিয়ান বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পরনে কালো বাইক সুট।

আরুশিকে দেখে আদ্রিয়ান বললো পারফেক্ট বাইক রাইডার।

-” হুহহহ।আমরা কোথায় যাবো।”

-” বাইক রাইড করবো ঘুরবো আইসক্রিম খাবো আকাশের তারা দেখবো।”

-” হয়েছে হয়েছে এখন চলুন।”

আরুশির কথা শুনে আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বাইকে বসলো আর আরুশিও আদ্রিয়ানের পেছনে বসলো।

-” আমাকে জড়িয়ে ধরো নাহলে পরে যাবে। ”

-” না ধরবো না।”

-” ওকে As ur wish.
ডেভিল স্মাইল দিয়ে আদ্রিয়ান বলেই বাইক স্টার্ট দিতেই আরুশি ভয়ে আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো
আর আযান মুচকি হাসলো।সারারাত এভাবেই কাটলো আনন্দের মধ্য দিয়ে। রাত দুটোই তারা রিসোর্টে ফিরে আসলো।

“চলবে”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here