# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম 💖,পর্বঃ ২৭ ও অন্তিম পর্ব
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
ফ্রেশ হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই ড্রয়িং রুমের সোফায় আমার নজর গেল। বসে থাকা লোকদের দেখে আমি সিঁড়িতেই দাঁড়িয়ে গেলাম। কারণ, তাঁরা হলেন আমার মা, বাবা, ভাই,ভাবি আর একটা ছোট্ট বাচ্চা। তাদের দেখার পরে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। কতদিন পরে আজ সেই চেনা মুখ গুলো দেখতেছি। যদিও আমি লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের দেখেছি। কিন্তু সেই দিনের দেখা আর আজকের দেখার মধ্য অনেক পার্থক্য।
আমাকে দেখার পরে আমার আম্মু দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললোঃ কেমন আছিস বাবা? আমাদের কথা কি তোর একবারের জন্যও মনে পড়েনি? শরিরের অবস্থা কি করেছিস? ( মুখ চোখে চুমু খেতে খেতে)
আমিও আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললামঃ তোমাকে ছাড়া কি করে আমি ভালো থাকি আম্মু।
অনেক্ষণ ধরে কান্না করার পর আম্মু একটু শান্ত হলো। তবে আজকের এই কান্না হলো কোনো হারানো রত্ন কে ফিরিয়ে পাওয়ার কান্না। যেটা কষ্টের কান্না নয়, সেটা হলো সুখের কান্না।
আমি আম্মুকে নিয়ে আব্বুর আর যারা ছিল তাদের সামনে যাতেই আব্বু এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ আমাকে মাফ করে দাও বাবা। আমি বিনা দোষে তোমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি।(কান্না করতে করতে)
আমিও আব্বুকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ ছিঃ আব্বু কী বলতেছে এসব ছেলের কাছে কখনো বাবা মাফ চায়? আর আমি তোমাদের অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি।
সাহিদের আব্বু সাহিদের কথা শুনে আরো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতে লাগলো। মনে মনে ভাবতেছে, আমার ছেলে আমাদের এতো ভালোবাসে আর আমরা তার উপর একটা মিথ্যা অপবাদ চাপিয়ে দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি।
আমি আব্বু কে ছাড়িয়ে দিয়ে ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম। কতদিন পরে আজকে আমাদের দুই ভাইয়ের একসাথে দেখা। ভাইয়া কান্না করতে করতে বললোঃ প্লিজ সাহিদ তুই আমাদের ক্ষমা করে। আমরা না বুঝে তোকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি।
আমিঃ ভাইয়া আমি তোমাদের সকলকেই ক্ষমা করে দিয়েছি। কারো প্রতি আমার রাগ নেই। আমার যেকেউ হলে তাকে এই পরিস্থিতির স্বীকার হতে হতো। সো বাদ দাও এসব।
কি করবো বলেন তারা হয়তো না বুঝে আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। তারা ভুল বুঝে আমাকে কষ্ট দিয়েছে। কিন্তু আমার কাছে তাদের দেওয়া ভালোবাসার কাছে তাদের দেওয়া কষ্ট নিমিষেই হার মানিয়ে নিবে।
সেই ছোট্ট বেলায় আমি যখন স্কুলে পড়তাম, তখন আব্বু আমাকে তার ঘাড়ে করে স্কুলে দিয়ে আসতেন। যদিও গাড়ি ছিলো। আবার যখন স্কুল ছুটি থাকতো তখন তিনি আমাকে তার ঘাড়ে নিয়ে শিশুপার্কে নিয়ে যাতেন। আমার কে আনন্দ দেওয়ার জন্য নিজেই আমার সাথে খেলতেন।
আম্মুর কথা আর কি বলবো। আম্মু ও আমাকে ভাইয়ার থেকে বেশিই ভালোবাসাতো। যদিও একটা মিথ্যা কারণে তারা আমাকে ভুল বুঝেছিলো, কিন্তু আমার বাবা মায়ের জায়গায় যেকোনো বাবা মা থাকলে একই কাজ করতো। আমার মনেও তাদের প্রতি একটা অভিমান ছিল। যেই অভিমানের জন্য আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে পারিনি। কিন্তু গতকাল সামিয়ার কথার দ্বারা সেই অভিমান আমার মন থেকে দূরে চলে গেছে। যদি আমার ছেলে এইরুপ মিথ্যা নাটকের ( রিপার) সম্মুখীন হতো আর আমি সেই মুহূর্তে কী করতাম। নিশ্চয় এই রকমই করতাম, যেটা আমার বাবা মা আমার সাথে করেছে। এসব ভেবে বুঝলাম আসলে মা বাবার এখানে কোনো দোষ নেই। তাছাড়া তারাও অনেক কষ্ট পেয়েছে। জীবনের শেষ পর্যায়ে তাদের একটু হাসি খুশি রাখা প্রতিটা সন্তানেরা কর্তব্য।
এর পরে আমি ভাবির কাছে এসে বললামঃ ভাবি কেমন আছো?
ভাবি একটা মুচকি হেসে বললঃ আগে ভালো ছিলাম না। কিন্তু এখন আমার ভাইকে পেয়ে ভালো আছি। এই কি অবস্থা করেছো শরিরের ( কপালে চুমু দিয়ে)? আমার জা (সামিয়া কে উদ্দেশ্য করে) তোমার ঠিক মত সেবা যত্ন করে না নাকি?( সামিয়ার দিকে তাকিয়ে)
ভাবির কথা শুনে আমার বাসাতে হাসির রোল পড়ে গেল । আমি আর সামিয়া মাথা নিচু করে আছি।
আমি লজ্জা লজ্জা মাখা মুখে বললামঃ আরে ভাবি তেমন কিছু না।
ভাবিঃ বুঝি বুঝি দেবর জি সব বুঝি।
আমিঃ আচ্ছা ভাবী এই বাচ্চাটাকে ( ভাইয়ার কোলের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে) কে?
ভাবিঃ এটা হলো তোমার একমাত্র আদরের ভাতিজা আব্দুল্লাহ আল রাফি চৌধুরী।
আমিঃ বাহহ খুব সুন্দর তো।
ভাবিঃ দেখতে হবে ভাতিজা টা কার ?
আমি মুচকি হেঁসে বললামঃ হুমম।
আব্বুঃ এসব কথা এখন বাদ দিয়ে এখন বলো তোমরা বিয়ে কবে করেছো?
আব্বুর কথা শুনে তেমন অবাক হলাম না। কারণ যে কেউ আমাকে আর সামিয়া কে দেখে মনে করবে আমরা দুজনে হাজবেন্ড এবং ওয়াইফ।
আমি আব্বুকে বললামঃ আব্বু আমরা এখনো বিয়ে করিনি।
আব্বুঃ কীহহহ তাহলে সামিয়া এখানে কেন? ( আবাক হয়ে)
সামিয়াঃ আসলে আংকেল,,,,,,,,, ,,,,,,, এরপরে সামিয়া সব কিছু বললো।
আম্মুঃ যাক খুব ভালো। তাহলে আমরা ধুমধাম করে বিয়ে দিতে পারবো।
ভাবিঃ ঠিকই বলেছেন আম্মু। তাইতো বলি আমার দেবরজির শরির এমন কেন?
ভাবির কথা শুনে আবার সবাই হাসতে লাগলো। সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি মাথা নিচু করে মুচকি মুচকি হাসতেছে।
আমি লজ্জা পেয়ে সোফা থেকে উঠে আব্দুল্লাহ কে রেখে রুমের দিকে আসার জন্য পা বাড়াতেই আমার মেয়ে এসে(এতক্ষণ নেহার সাথে রুমে ছিলো) আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমিও ওকে কোলে নিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে বললামঃ কি হয়েছে আম্মু?
মিমঃ বাবাই এই লোতদুলো তে?
মিমকে আমি আমার আম্মুকে দেখিয়ে দিয়ে বললামঃ এটা হলো তোমার দাদি। ভাইয়াকে দেখিয়ে দিয়ে বললামঃ এটা তোমার বড় আব্বু। ভাবিকে দেখিয়ে দিয়ে বললামঃ এটা তোমার বড় আম্মু। আর ছোট বাচ্চাকে দেখিয়ে দিয়ে বললামঃ এটা হলো তোমার বড় ভাইয়া আব্দুল্লাহ আল রাফি।
এরপরে আমি আমার আব্বু কে দেখিয়ে দিয়ে বললামঃ এটা তোমার দাদু।
মিম খুশি হয়ে আমার কোল থেকে নেমে আব্বুর কোলে উঠে যায়ে বললোঃ তি মদালে আমাল দাদু আতে লে, আমালে ঘুলতে নিয়ে দাবে লে। আমালে চকলেত ( চকলেট টা একটু স্পষ্ট ভাবে বলতে পারে) তিনে দিবে লে,,,। ( হাত নাড়াতে নাড়াতে)
আমার আব্বুঃ কিন্তু তোমাকে তো চিনলাম না আপু (মিমকে)?
মিমঃ আমার নাম মিম হাতান। আমাল বাবাইয়েল নাম তাহিদ হাতান (সাহিদ হাসান) আল আমাল মামনিল নাম তামিয়া আততার ( সামিয়া আক্তার)। বুদেতো?
আমার আব্বু মিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললোঃ হ্যাঁ রে আমার পাকা বুড়ি আমি বুঝেছি।
আব্বুর কথা শুনে মিম খিলখিল করে হেসে দিলো। কেউ কখনো এইভাবে আদর করে কথা বলেনি।
আমি আব্বুকে বললামঃ আমি তোমাদের মিমের সম্পর্কে বলতেছি। মিম তুমি তোমার আন্টিকে ডেকে নিয়ে এসো তো আম্মু।( নেহার কয়েক দিন পর একটা এক্সাম আছে । সে জন্য নেহা এখন রুমে বসে থেকে পড়তেছে।)
মিম ওর দাদুর কোল থেকে নামতে নামতে বললোঃ আততা বাবাই।
মিম নেহাকে ডাকতে যাওয়ার পরে আমি মিমের সম্পর্কে আব্বু আম্মুকে সহ ভাইয়া ভাবিকে সব কিছু বলে দিলাম।
এরপরে আমি বললামঃ আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন মিমকে আমি আমার মেয়ে হিসেবে রাখব। কোনো দিন তাকে বাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবো না। আর তোমাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ তোমরা কখনো আমার মেয়েকে এসব কথা বলবে না।
আব্বুঃ ঠিক আছে। আর আমার নাতনি হিসেবে খুব পছন্দ হয়েছে।
আম্মুঃ আমারো।
ভাইয়াঃ বাবা আমি মিমকে নিয়ে কী ভেবেছি জানো?
আব্বুঃ কী?
ভাইয়াঃ মিমকে আমার রাফির বৌ বানাবো। কী বলো রাফির মা?
ভাইয়ার কথা সকলে হাসলাম। ভাবি হাসতে হাসতে বললোঃ ঠিকই বলেছো। বাড়িতেই বিয়াই বিয়ান পাবো।
ভাবির কথা শুনে আবার হাসতে লাগলাম। কতদিন পরে আজ পরিবারের লোকজন মন খুলে হাসতেছে। ভাবতেই ভালো লাগতেছে।
(পেইজটিকে লাইক দিয়ে ফলো)
আম্মু আমাকে বললোঃ বাবা তুই মিমকে ওর আন্টিকে ডাকতে পাঠালি ওর আন্টি কে?
আমিঃ আম্মু মিমের আন্টি হলো নেহা মানে আমার বোন । আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে একটা হাসপাতালে,,,,,,,,,,,,
এরপরে সব কিছু বললাম।
কথা শেষ হতেই দেখি নেহা মিমকে কোলে নিয়ে নিচে নামতেছে। নেহা এসে আমার পাশে বসলো।
আমি নেহাকে বললামঃ নেহা এটা হলো আমার আব্বু। এরপরে একে একে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম।
নেহা আমার আব্বুকে বললোঃ আসসালামুয়ালাইকুম আংকেল কেমন আছেন?
আমার আব্বুঃ কষে একটা চড় মারবো বেয়াদব মেয়ে আংকেল কী হ্যাঁ আজ থেকে বাবা বলে ডাকি বাবা বুঝেছিস?
নেহা আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বললোঃ হ্যাঁ বাবা বুঝেছি।
আব্বুঃ এই পাগলি মেয়ে আর কখনো কান্না করবি না।
এরপর আম্মু নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে আম্মু গলা থেকে একটা হার খুলে পড়িয়ে দিয়ে বললোঃ বাহ আমার মেয়েকে তো খুব মানিয়েছে।
নেহা অনেকদিন পরে এমন একটা মায়ের আদর পেয়ে নিজের আবেগ কে আর ধরিয়ে রাখতে না পেরে আম্মু কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে লাগলো।
( আরো বিভিন্ন ধরনের গল্প পড়তে চাইলে পেইজটিকে লাইক দিয়ে ফলো করেন)
আম্মু নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললোঃ আর যেন কখনো আমার মেয়েকে কান্না করতে না দেখি।
নেহা চোখের পানি মুছে বললোঃ ঠিক আছে আম্মু।
আম্মুঃ গুড গার্ল।
এরপরে ভাইয়া নেহাকে কাছে ডেকে পাশে বসিয়ে নেহাকে বললোঃ কোন ক্লাসে পড়িস বোন? আমি কিন্তু তোকে তুই করে বলবো।
নেহাঃ সমস্যা নেই ভাইয়া। আমি এবার মেডিকেল দ্বিতীয় বর্ষে।
ভাইয়া নেহার কপালে চুমু দিয়ে বললোঃ তাহলে আমাদের পরিবারের মধ্যে ডাক্তার আর মাস্টার আসলো।
ভাবীঃ ঠিকই বলেছো।(দাঁত কেলিয়ে হেসে)
ভাইয়া বললোঃ আমার ভাই যে আমাদের এতো কিছু উপহার দিবে তা ভাবতেই পারিনি। প্রথমে একটা ফুটফুটে মিষ্টি ভাতিজি। এখন আবার একটা বোন।
আম্মুঃ আমিও খুব খুশি হয়েছি এদের দুইজন কে পেয়ে।
আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর আমি মিম আর আব্দুল্লাহ আল রাফি কে আমার কাছে ডাকলাম।
দুজনেই আমার কাছে আসার পরে আমি মিমকে বললামঃ আম্মু এটা তোমার ভাইয়া। আর আব্বু এটা তোমার আপু। দুইজনে খেলা করো আচ্ছা।
মিমঃ আততা বাবাই।
মিমকে রাফি কে বললোঃ ভাইয়া তোমাল নাম তি?
রাফি মিমকে বললোঃ আমাল নাম আব্দুল্লাহ আল লাফি তৌওধলি। তোমাল?
একি আমার ভাতিজাও তো দেখি আমার মেয়ের মতো অস্পষ্ট ভাবে কথা বলে। বাহ এদের স্বামী স্ত্রীর তো দেখি এখন থেকেই মিল আছে 😎😎😎😎।
মিমঃ আমাল নাম মিম হাতান।
এরপরে ওরা দুজন বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে লাগলো। মিম বলতেছে আমাল বাবাই আমাতে চকলেত দেয় আদল তলে। রাফিও তার বাবাকে তাকে কি দেয় তা বলতেছে।
একটু পরে সামিয়া এসে আমাদের নাস্তা করার জন্য ডাকলো। আমরা সকলেই নাস্তা করতে বসলাম। সামিয়া আর ভাবি দাঁড়িয়ে থেকে খাবার প্লেটে তুলে দিচ্ছে। মিম আর রাফি ওদের দাদির কাছে বসেছে। ওদের খাইয়ে দিয়ে আম্মু নেহাকে খাইয়ে দিতে লাগলো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার সোফায় বসলাম।
( বিভিন্ন ধরনের গল্প পড়তে চাইলে স্বপ্নবিলাসী গল্পের সমাহার পেইজটিকে লাইক দিয়ে ফলো করেন)
আব্বু আমাকে বললোঃ সাহিদ তোদের সব কিছু প্যাক করে নে। আজ থেকে আমাদের সাথে থাকবি।রেডি হয়ে নে।
আমিঃ বাবা আমি তো এখন যেতে পারবো না আমার অফিস আছে।
আম্মুঃ আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা। কত দিন পরে তোকে কাছে পেয়েছি আর ছাড়তে চাচ্ছি না। তুই এখন আমাদের সাথে থাকবি।
আমিঃ কিন্তু,,,
আমাকে আর বলতে না দিয়ে ভাইয়া বললোঃ কোনো কিন্তু নয়। তুই আজ আমাদের সাথে যাচ্ছিস এটাই ফাইনাল। আর হ্যাঁ নেহা ফোন তুইও বের হ। আজ থেকে তুই আমাদের সাথে থাকবি।
সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দেখি করুন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মানে তার যাওয়ার মতামত আছে। এছাড়াও অনেক দিন হয়ে গেল সামিয়া বাসাতে যায়নি। আর নেহার ও একটা মা বাবার প্রয়োজন। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমি বললামঃ ঠিক আছে চলো।
আমি রুমে এসে প্রয়োজনীয় পোশাক গুলো আর কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্যাক করে নিলাম।এর পরে তিশাকে ফোন করে বললাম আমি একমাসের জন্য রাজশাহীতে যাচ্ছি অফিসটা সামলে রাখতে। আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাতে বললাম।
তিশা হ্যাঁ বললো।
আর আমার তিশার উপর যথেষ্ট বিশ্বাস আছে যে সে সব ভালো ভাবে দেখা শুনা করবে। এরপরে এতিমখানার ম্যানেজারের সাথে কথা বলে ল্যাকেজ নিয়ে নিচে আসলাম।
একটু পরে আমার মেয়ে ওর মা আর ওর আন্টি একসাথে নিচে আসলো।
বাসা থেকে বের হয়ে আমি দাড়োয়ান চাচাকে বলে গাড়ি নিয়ে বের হলাম রাজশাহীর উদ্দেশ্যে। আমার গাড়িতে আছে সামিয়া, নেহা আর ভাবী।
আর ভাইয়ার গাড়িতে আছে মা, বাবা, মিম,আব্দুল্লাহ আর ভাইয়া।
দীর্ঘক্ষণ ধরে ড্রাইভ করার পর পৌঁছে গেলাম প্রান প্রিয় বরেন্দ্র ভুমি রাজশাহীতে। বাসায় পৌছে আমি আমির রুমে গেলাম। ভাবি নেহাকে নেহার রুম দেখিয়ে দিলেন। আর সেখানে সামিয়া আর মিমও গেছে।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে আমি মিম আর সামিয়া বের হলাম সামিয়াদের বাসায়। নেহা আসেনি ওর শরীর ক্লান্ত। তাই রেস্ট নিচ্ছে।
(সবাই পেইজটিকে লাইক দিয়ে ফলো করেন।)
হবু শ্বশুর বাড়ি পৌঁছানোর পরে তাঁরা তাঁদের মেয়ে এবং সঙ্গে একটা কিউট নাতনি কে পেয়ে খুশি হয়ে গেছে।
শ্বশুর বাড়ি জামাই আদর পাওয়ার পরে আমি মিমকে নিয়ে আমার বাসায় আসলাম। সামিয়ার আসতে চেয়েছিল কিন্তু আমি নিয়ে আসিনি। কারণ, সামিয়ার মা বাবা তাদের মেয়েকে অনেক দিন পর আজকে পেয়েছে। তারাও ওর সাথে কিছু কথা বলবে আড্ডা দিবে এই জন্য আনিনি।
বাসায় এসে মিম রাফি কে দেখতে পেয়ে ওর সাথে গার্ডেনে খেলতে গেল। আমি একটু রেস্ট নিয়ে বের হলাম বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। তাদের একটা জায়গার ঠিকানা দিলাম।
আমি সেখানে পৌঁছানোর পরপরই ওরা দুজন মানে রাফি আর সিফাত আসলো। ওদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ ধরে আড্ডা দিলাম । আড্ডা দিতে রাত প্রায় আটটা বেজে গেল। ওদেরকে বিদায় দিয়ে কিছু ফুচকা আর কিছু চকলেট নিয়ে বাসায় আসলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতেই ভাবি এসে দরজা খুলে দিল। বাসায় ভিতরে ঢুকে দেখি সামিয়ার বাবা, সামিয়ার মা, আমার বাবা, আমার মা আর ভাইয়া সোফায় বসে থেকে কি যেন আলোচনা করতেছে।
আমি সামিয়ার মা বাবা কে সালাম দিয়ে সিঁড়িতে আমার রুমে যাওয়ার জন্য উপরে উঠতেই আব্বু আমাকে দাঁড়াতে বললো।
আমিও দাড়িয়ে গেলাম।
আব্বু আমাকে বললোঃ সাহিদ এই মাসের পাঁচ তারিখে তোমার আর সামিয়ার বিয়ে। এই বিষয়ে তোমার কোনো আপত্তি আছে?
আমিঃ না বাবা কোনো আপত্তি নেই।
সামিয়ার বাবাঃ আলহামদুলিল্লাহ। তাহলে তো আর সমস্যা নেই।
তাঁরা আরো কিছু কথা বললো তা আমি না শুনে আমার রুমে আসলাম। রুমে ঢুকে দেখি সামিয়া, নেহা, মিম আর রাফি বেডে বসে থেকে আমার ল্যাপটপে কী যেন দেখতেছে।
সামিয়া আমাকে দেখতে পেয়ে ল্যাপটপ রেখে আমাকে বললোঃ কোথায় গিয়েছিলে?
আমিঃ বন্ধুদের সাথে দেখা করতে।
সামিয়াঃ আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নাও।
আমি আর কথা না বলে ফ্রেশ হতে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে সামিয়া আর নেহাকে কিছু ফুচকা দিলাম আর কিছু রেখে নেহাকে তা ভাবিকে দেওয়ার জন্য বললাম।
আর চকলেট গুলো মিম আর রাফি কে দিলাম। ওদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে সকলে ডিনার করতে গেলাম।
দুই পরিবার খুব আনন্দ ডিনার সেরে ফেললাম। ডিনার শেষে সামিয়া, সামিয়ার মা বাবা ওরা ওদের বাসায় চলে গেল।
আমিও ওদের বিদায় দিয়ে রুমে আসলাম। জার্নি করার ফলে শরীরটা বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আর মিম ওর দাদা দাদির কাছে শুয়ে পড়েছে। আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সকলে মিলে বের হলাম শপিং মলের উদ্দেশ্য। কারণ বিয়ের আর মা দুই দিন বাকি। দীর্ঘ চার ঘন্টা সময় নিয়ে দুই পরিবারের শপিং করা শেষ হলো।
বাসায় এসে গোসল করে লাঞ্চ করে বের হলাম বন্ধুদের দাওয়াত দেওয়ার জন্য। ওদের দাওয়াত দিয়ে আবার রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশে। ঢাকা পোঁছে সরাসরি অফিসে গেলাম। অফিসে যায়ে সকল স্টাফকে দুই দিন ছুটি দিলাম। আর আমার বিয়ের দাওয়াত দিয়ে আসলাম।
এরপরে এতিমখানায় যায়ে বাচ্চাদের দেখে আবার রওনা দিলাম রাজশাহীতে। বাসায় আসতেই রাত হয়ে গেল। ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু কথা বলে রুমে আসলাম। রুমে এসে সামিয়া কে ফোন দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।
এইভাবে ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কেটে গেল একটা দিন। আজকে গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান টা বেশ আনন্দেই কেটে গেল। সামিয়া আর আমার এক জায়গায় হলুদ সন্ধ্যার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হলুদ সন্ধ্যা শেষে সামিয়ারা ওদের বাসায় চলে গেল। আর আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
আজকে আমার বিয়ে। ভাবতেই নিজেকে কেমন জানি বর বর লাগতেছে😏😏😏😏।
আমরা বাসা থেকে রওনা দিলাম সামিয়ার বাসার উদ্দেশ্যে। আমার গাড়িতে আছে নেহা, মিম, ভাবি, রাফি, সিফাত, ইকবাল, শাকিব আর রিয়াদ। হ্যাঁ ওরাও এসেছে।
সামিয়াদের বাসার গেটের সামনে যায়ে গাড়ি থামানোর। গাড়ি থেকে নেমে গেটের কাছে যাতেই আমার কয়েকটা শালিকা মানে সামিয়ার কাজিনরা গেটে ফিতা বেঁধে দিয়ে বললো, টাকা ছাড়া নাকি আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিবে না।
রাফি ওদের বললোঃ কত টাকা চায় আপনাদের?
ওদের মধ্যে একজনঃ পঞ্চাশ হাজার টাকা।
সিফাতঃ কিহহ,, এতো টাকা হবে না। কম করুন।
ওদের মধ্যে আরেকজনঃ না পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে।
আমার বন্ধুরা ওদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি করে অবশেষে বিশ হাজারে নিয়ে আসলো। আমি পকেট থেকে বিশ হাজার টাকা বের করে দিয়ে ফিতা কেটে ভিতরে ঢুকলাম। ভেতরে ঢুকতেই উপর থেকে আমাদের উপর ফুল পড়া শুরু হলো। আর এতোক্ষণ মিম নেহার কাছে ছিলো।
বিয়ের যাবতীয় কার্যকলাপ শেষ করে সামিয়ার মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠলাম। সামিয়া ওর মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় প্রচুর পরিমাণে কেঁদেছে। এর আগে কখনো এমন ভাবে কান্না করতে দেখিনি। আর হ্যাঁ বিয়েতে প্রিন্সিপাল স্যার মানে সামিয়ার মামাও এসেছিলেন।
গাড়িতে পুরো রাস্তা সামিয়া আমার কাঁধে মাথা রেখে কেধেছিলো ছিলো। আমিও তাকে নিষেধ করিনি। কারণ সে তার মা বাবাকে ছেড়ে। অন্যজনের কাছে চলে যাচ্ছে এতে কাঁদায় স্বাভাবিক।
বাসায় পৌছে গাড়ি থেকে নেমে দরজার কাছে যাতেই আম্মু এসে সামিয়া কে বরণ করে নিলো। নেহা আর ভাবি সামিয়া কে আমার রুমে নিয়ে গেল।
আর আমি বন্ধুদের সাথে ছাদে গেলাম। ছাদে বেশ কিছুক্ষণ ধরে আড্ডা দিতেই আম্মু এসে ডেকে গেলো রুমে যাওয়ার জন্য। আমি বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে ছাদ থেকে নেমে আসলাম।
আমার রুমের দরজার কাছে আসতেই দেখি ভাবি আর নেহা দাঁড়িয়ে আছে। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না কেন তারা দাঁড়িয়ে আছে। ওদের পাওয়াটা মিটিয়ে দিতেই ওরা দুজন আমাকে কিছু টিপস দিয়ে চলে গেল। আমি দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। আমাকে দেখে সামিয়া খাটে থেকে নেমে এসে আমার পায়ে সালাম দিতে গেলে আমি আটকিয়ে আমার সামনে দাড় করিয়ে বললামঃ আরে পাগলি তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় বুকে। ওযূ আছে তোমার?
সামিয়াঃ হ্যাঁ আছে।
আমি আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের করে দিয়ে বললামঃ ওয়াশরুমে যায়ে চেন্জ করে এসো।
সামিয়াঃ আচ্ছা।
সামিয়া ওয়াশরুমে যাওয়ার পরে আমি আমার ড্রেস চেঞ্জ করলাম। একটু পরে সামিয়া বের হলো। এর পরে দুজন দুরাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে আমাদের পার্থিব জীবনের জন্য দোয়া করলাম। এর পরে সামিয়া কে কোলে নিয়ে বেডের একপাশে বসিয়ে দিয়ে আমি ওর পায়ের কাছে বসে পকেট থেকে নেকলেস বের করে সামিয়া কে বললামঃ মনে আছে এই নেকলেসটির কথা?
সামিয়াঃ হ্যাঁ এটাতো তুমি মিমির জন্য কিনেছিলে।
আমিঃ নারে পাগলি এটা তোমার জন্যই কিনেছিলাম কিন্তু সেদিন তোমাকে রাগানোর জন্য মিথ্যা বলেছিলাম।
সামিয়া রেগে গিয়ে বললঃ কিহহহ আমি সেদিন কত কষ্ট পেয়েছিলাম জানো? দাঁড়াও আজকে দেখাচ্ছি মজা,,,,,
এরপরে সামিয়া আমাকে তার কাছে টেনে নিয়ে চার ঠোঁট এক করে দিলো। অতঃপর আমরা হারিয়ে গেলাম এক পবিত্র বন্ধনের মাধ্যমে ভালোবাসার অতল গভীরে।
ফজরে ঘুম ভাঙলো সামিয়ার ডাকে। ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। আবার ঘুম ভাঙলো আমার মেয়ের ডাকে।
মিমঃ বাবাই বাবাই ওতো দাদু তোমালে দাকে।
আমিঃ যাচ্ছি আম্মু। আচ্ছা আম্মু তোমার মামনি কোথায়?
মিমঃ মামনি বলআম্মুল তাথে লান্না কলতেছে।
আমিঃ ওহহহ আচ্ছা। আম্মু তুমি যাও আমি আসতেছি।
মিমঃ আততা বাবাই।
মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি সাড়ে নয়টা বেজে গেছে। হায় আল্লাহ লোকে কি বলবে এতক্ষণ ঘুমালে।
ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়ে নাস্তা করলাম। দুপুরের সময় শ্বশুর বাড়ি থেকে লোকজন আসলেন আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য।আমি, মিম আর সামিয়া বের হলাম তাদের সাথে যাওয়ার জন্য।
অতঃপর আম্মু আব্বুর থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিলাম শ্বশুড় বাড়িতে।
সেখানে পৌঁছে আমি সামিয়া আর মিম সামিয়ার রুমে গেলাম। একটু পরে শ্বাশুড়ি মা এসে নাস্তা করার জন্য ডেকে গেলেন।
বেশ ভালো ভাবেই কেটে গেল কয়েক দিন শ্বশুর বাড়িতে। আজকে বাসায় যাবো। তাই আমরা বের হলাম বাড়িতে যাওয়ার জন্য।
আমাদের বাসায় পৌছতে রাত হয়ে গেল। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে এসে ডিনার করে কিছুক্ষণ সকলের সাথে আড্ডা দিয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। আমি একপাশে মিম মাঝখানে আর অন্য পাশে।
আমাদের কে এভাবে থাকতে দেখে মিম আমার গলা ধরে বললোঃ বাবাই মামনিও তি আমাদেল তাথে থাকবে?
কোনোদিন আমাকে আর সামিয়া কে এই অবস্থায় মানে একই বেডে দেখে নি তো তাই বলতেছে।
আমি সামিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললামঃ হ্যাঁ আম্মু তোমার মামনি ও আমাদের সাথে থাকবে। নাহলে তোমার ভাইয়া হবে কি করে?
সামিয়াঃ যাহহ দুষ্টু মুখে কিছু আটকায় না।( লজ্জা পেয়ে)
মিমঃ তত্তি আমাল ভাইয়া হবে?
আমিঃ হ্যাঁ আম্মু।
মিম ওর মামনির গলা জড়িয়ে ধরে বললোঃ তি মদালে আমাল ভাইয়া হবেলে।(খুশি হয়ে)
সামিয়া মিমকে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে বললোঃ ঘুমাও মা অনেক রাত হয়েছে।
মিমঃ আততা মামনি।
এরপরে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বের হলাম। আড্ডা দিয়ে বাসায় এসে গোসল করে সামিয়া, মিম, নেহা, আর রাফি কে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। ভাবিকে আসতে বলেছিলাম কিন্তু আসবে না।
অনেক্ষণ ধরে ঘোরাফেরা করে বাসায় আসলাম।
আর এই ভাবে আনন্দের মাধ্যমে অতিবাহিত হলো একমাস।
আজকে সবাই একসাথে ডিনার করতেছি । আমি বললামঃ আব্বু আমরা ঢাকাতে যাবো।
আব্বুঃ কেন?(অবাক হয়ে)
আমিঃ আসলে আমার অফিস, হাসপাতাল আর একটা এতিমখানা আছে সেগুলো দেখি শুনা করার জন্য সেখানে থাকতে হবে।
আম্মুঃ না যাওয়া হবে না।
আমিঃ আম্মু বোঝার চেষ্টা করো আর আমি সপ্তাহে একদিন বা দুই দিন এসে থেকে যাবো।
আম্মু কোনো মতেই রাজি না। এছাড়া সবাই রাজি। আম্মুকে বোঝানোর পরে বললোঃ নেহা কে আমার কাছে রেখে যেতে হবে।
আমিঃ কিন্তু,,
আম্মুঃ কোনো কিন্তু নয়।
আমিঃ ঠিক আছে।
এরপরে নেহা কে টিসি নিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিলাম।
আর আমরা আজকে সকালে ঢাকা যাওয়ার জন্য বের হবো।
আব্বু, আম্মু সবার থেকে বিদায় নিয়ে বের হলাম ঢাকার উদ্দেশে। তবে আসার সময় নেহা আমাকে জড়িয়ে ধরে প্রচন্ড কান্না করেছিলো নেহা কে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাখে আসলাম। আমার মতে সে আমার মা বাবার কাছেই ভালো থাকবে।
দীর্ঘক্ষণ ধরে জার্নি করে ঢাকায় এসে পৌঁছলাম। গাড়ি পার্ক করে বাসায় ঢুকে রুমে যায়ে ফ্রেশ হলাম। এরপরে আসার সময় যে খাবার নিয়ে এসেছিলাম তা তিনজন খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
সন্ধ্যায় সামিয়ার ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম। এরপরে একটু ঘোরাফেরা করে তিশাকে ফোন দিয়ে কালকে অফিসে যাওয়ার কথা বললাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে অফিসে গেলাম।আর বাসায় সামিয়া আর মিম আছে। আর হ্যাঁ সামিয়া এখন জব করে না। এখন সংসার সামলায়।
অফিস শেষ করে বাসায় আসলাম।
এরপরে ওদের। মা এবং মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। আর এই ভাবে ঘোরাফেরা করে, অফিসে কাজ করে, মা বাবার সাথে কিছু সময় দেওয়ার মাধ্যমে কেটে গেল চার বছর।
আজকে সকালে আমরা রাজশাহীতে এসেছি। এখন সকলে ডিনার করার পর বসে থেকে আড্ডা দিচ্ছি।
হঠাৎ, তাওহিদ কান্না করতে করতে আমার কাছে এসে বললোঃ বাবাই আপু আমার তকলেত কেলে নিতে।
আমি মিমকে বললামঃ কি ব্যাপার আম্মু তুমি আমার আব্বুর থেকে চকলেট নিয়েছো কেন?
মিম ওর মায়ের কোলে বসতে বসতে বললোঃ না বাবাই আমি তাওহিদের চকলেট নেয়নি। তাওহিদ আমাকে দিয়েছে আমি খেয়ে নিয়েছি । এখন এসে আবার চাচ্ছে, আমি এখন কোথায় পাবো।
মিমের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো। আর তাওহিদ ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না করে দিলো। নেহা এসে তাওহিদ ওর কোলে নিয়ে বললোঃ কী হয়েছে আমার জামাইয়ের?
তাওহিদ কান্না করতে করতে বললোঃ দেতো তো থাথুলি মা আমার তকলেত আপু নিয়ে দিততে না।
ওহহহ কিছু বুঝলেন না তো বলতেছি , তাওহিদ হলো আমার আর সামিয়ার ছেলে বয়স তিন বছর। আমাদের বিয়ের এক বৎসর পর জন্ম গ্রহণ করে। আর আমার মেয়ের বয়স প্রায় আট বছর। একটু আগেই তাদের মধ্যে চকলেট নিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তবে তাদের দুই ভাইবোনের ভালোবাসা টা অনেক গভীর।
নেহা এখন একজন ডাক্তার। আর নেহার বিয়েও হয়েছে একজন ডাক্তারের সাথে। তাদের আছে দুই বছরের একটা কন্যা সন্তান। যার নাম মাইশা।
আর আমার ভাইয়ের একটা সন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফিই আছে। আর কোনো সন্তান নেয়নি।
সবাই মিলে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পরে মিম আর তাওহিদ ওদের দাদা দাদির রুমে গেল থাকার জন্য। আমি আর সামিয়া চলে আসলাম আমাদের রুমে। রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বেডে শুয়ে পড়লাম। একটু পরে সামিয়া এসে আমার বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললামঃ সামিয়া তুমি কি বলতে পারবে
আমাদের এই সুখের সংসারের মধ্যে মূল উক্তি কোনটা?
সামিয়াঃ হ্যাঁ পারবো।
আমিঃ বলো দেখি?
সামিয়াঃ আমাদের এই সুখের সংসারের মূল উক্তি
হলো——- “# EX গার্লফ্রেন্ড যখন ইংলিশ ম্যাম”
সমাপ্ত
💘💘 কেমন হয়েছে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আর এতো দিন সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ 💘💘💘