Accounting_Teacher(Session 2) Last Part

Accounting_Teacher(Session 2)
Last Part
Written_by_Ritu_Rosni

কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?”
–ঋতুর কথায় শুভ্রের চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে।গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা বাই পাসের দিকে ছুটে চলেছে।
হাই স্পিডে গাড়ি চালিয়ে চলেছে।যেকোনো সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে।ঋতু ভয়ে চুপসে আসে।
মুখে হাত দিয়ে আছে কি বলতে কি বলে ফেলেছে।
শুভ্রের মাথায় শুধু ঋতুর বলা কথা গুলোর বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে।
এদিকে সবাই শুভ্র আর ঋতুকে খোজাখুজি করে না পেয়ে সবাই বাসায় চলে আসে।
,
শুভ্র আর ঋতু এখন বসে আছে কাজি অফিসে।
এসি চলছে ফুল ভলিউমে তারপরেও ঋতু ঘামছে।শুভ্রকে দেখতে ভয়ংকর লাগছে।একদম ক্ষ্যাপা পাগলের মতো মনে হচ্ছে শুভ্রকে।যেনো কিছু বললেই তেড়ে আসবে সে।
কেনো যে তখন রাগের মাথায় ঐ কথা গুলো বলতে গেলাম।
নিজেই এখন ফেসে গেলাম।আসলে সব দোষ আমারি।উনি নিষেধ করার পরেও ইহানের সাথে কথা বলতে গেলাম।
আসলে রাগ হচ্ছিল এনার সাথে দেখে তাই তো।
–স্যাররর প্লিজজ এমন করবেন না আমার সাথে।
প্লিজ আমায় যেতে দিন।
–একদম চুপচাপ এখানে বসে থাকবে।যা বলবো শুধু তাই করবা।
–বাসায় সবাই টেনশন করছে প্লিজ আমায় যেতে দিন।
–যাস্ট স্টপ।সিগনেচার টা করে দাও তাহলে বাসায় যেতে পারবে।
–নাহহহ,,আমি সই করবো না।
–দেখো ঋতু।আমায় তুমি রাগিয়ে সই করতে বাধ্য করো না।এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।
–জানি এখন আর কিছু বলেও কোনো লাভ হবে না।
এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুচছে আর অন্য হাত দিয়ে সই করছে।
শুভ্র ও কোনো কিছু না ভেবেই সই টা করে পেপারস কাজি সাহেবের হাতে ধরিয়ে দিল।
সব আনুষঙ্গিকতা শেষ করে বিয়ের কার্য সম্পূর্ণ হলো।
ঋতু ভাবছে এখন বাসায় গিয়ে কি বলবে।ওর মাকে গিয়ে কি জবাব দেবে কে জানে।
অনরবত চোখ দিয়ে পানি পরছে।বাসায় যদি না মেনে নেয়?
সোনা মা,আঙ্কেল এদের কে কি বলবে ঋতু?মুখ দেখাবে কি করে।
এখানে তো ঋতুর কোনো দোষ নেই।যা কিছু করেছে শুভ্র।
বাসার সামনে এসে গাড়ি পার্কিং করলো শুভ্র।ঋতুর পা দুটি যেনো অসার হয়ে আছে।চলতেই চাইছে না।মনে হচ্ছে পা যেনো কেউ কিছু একটা বেধে দিয়েছে।
ভয়ে ভেতরে যাওয়ার মতো সাহস পাচ্ছে না ঋতু।
,
সবাই শুভ্রদের বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে আছে।সেখানে ঋতুর মা,বোন ও উপস্থিত আছে।
কলিংবেল দেয়ার সাথে সাথেই দরজা খুলে দিল সোনা মা।
–কিরেেেে কোথায় হারিয়ে গেছিলি দুজন?
সবাই পাগলের মতো খুজছে তোদের।ও যেনো ছোট মানুষ কিন্তু তুই তো কল করে বলতে পারতিস শুভ্র।
–একসাথে এত প্রশ্ন করলে উত্তর দিবো কিভাবে?
–কোথায় হারিয়ে গেছিলি বিয়ে বাড়ি থেকে।
–কাজি অফিসে গেছিলাম বিয়ে করতে।আর কিছু জানার আছে?
শুভ্রের এমন উত্তরে সবাই হা হয়ে আছে।কি বলছে কি লোকটা।মনে হচ্ছে উনার কাছে এটা গর্বের বিষয়।কেমন বুক ফুলিয়ে বলছে দেখো।
কথাটা হজম করতে সবার সময় লাগলো।
–কিরে ঋতু মা,শুভ্র কি বলছে এসব?
–এই ঋতু শুভ্র কি বলছে এসব?চুপ করে আছিস কেনো তুই?উত্তর দে।
–উনি যা বলছে ঠিকই বলছে সোনা মা।কাপা কাপা স্বরে কথাটা ঋতু বলছে।ও জানেনা এরপরে ওর জন্য আর কি অপেক্ষা করছে সামনে।
উনি তো কথাটা বলেই পার পেয়ে গেলো।আর আমায় এখানে সবার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
—সোনা মা যেখানে ছিল সেখান থেকে এক পা দূরে চলে গেলো।হয়তো ভাবতে পারেনি এমন কিছু।
কি বলছিস কি তোরা এসব?একবার তো আমাদের জানাতে পারতিস তোরা।আমাদের জানালে কি আমরা মেনে নিতাম না?
পুরো ড্রয়িংরুম জুরো পিনপিন নিরাবতা চলছে।যেনো সবাই শোক পালন করছে।এক মাত্র ছেলের বিয়ে টা এভাবে হবে হয়তো মানতে পারছে না।
বাড়িতে এক বিয়ে শেষ হতে না হতেই আরেক টা।
শোভা তুই ঋতু কে তোর রুমে নিয়ে যা।
,
সবাই মিলে কি যুক্তি করলো জানি না।কিছুক্ষণ পরে শোভা এসে আমার পরনের শাড়ী খুলে একটা লাল রঙের জামদানি দিলো পরতে।হাল্কা সাজগোজ করিয়ে শুভ্রের রুমে বসিয়ে দিল।
বাড়ির পরিবেশ টা একদম থম থমে।এত সহজেই কি মেনে নেয়া যায়?হয়তো শুভ্রের রাগের ভয়ে এসব করছে।
আসার পর থেকে সোনা মা,আম্মা কেউ কথা বলছে না আমার সাথে।খুব রাগ হচ্ছে ঐ ব্যাটা বিটকেলের উপর।
ওর জন্যই তো আজ আমার এই অবস্থা। মনে হচ্ছে সামনে পেলে কেটে কুচি কুচি করতাম।আমিই মনে হয় একমাত্র বউ যে বাসর ঘরে বসে স্বামীকে কুচি কুচি করছি।
বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি বুঝতেই পারি নি।
সকালে এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়।এত সকালে আবার এলার্ম দিলো কে?আমি তো এলার্ম দিয়ে ঘুমাই না কখনো তাহলে কে দিল?
ওহহ তখন মনে পরলো আমি তো এখন শুভ্র স্যারের রুমে।রাত্রের কথা মনে পরে গেলো ব্যাটা জল্লাদ কখন এসেছিল রুমে?হয়তো আমি ঘুমিয়ে গেলে আর এলার্ম টাও উনিই দিয়েছে নিশ্চয়ই।পুরো রুমের কোথাও খুজে পেলাম না।
যেখানে খুশি সেখানে যাক তাতে আমার কি?আমি গোসল করে রেডি হয়ে নিলাম।
একটু পরেই শোভা এল রুমে।ঋতুপু কি করছো?
সরিিি ভাবী।
–ভাবী কিসের?
–বা রে তুমি আমার দশটা না পাশটা নও এক মাত্র ভাইয়ের বউ।সো ভাবী বলেই ডাকবো।
–বড্ড খই ফুটেছে মুখে তাই না?তা আমার ভাইয়া টা কোথায়?
–আর বলো না গো।ওর নাকি

কাজ পরে গেছে যার জন্য সকাল সকাল বেরিয়ে পরতে হলো।
রাত্রে আমায় আম্মার সাথে চলে যেতে বলেছে।
—ওওও!!কি আর করবি বল।মন খারাপ করিস না সোনা।
-আরে নাহহ মন খারাপ করবো কেন?
–ঠিক আছে।চল নিচে যাই সোনা মার কাছে।
–হু চলো যাই।
আমি কিচেনে সোনা মার পেছনে দাড়িয়ে আছি।সোনা মা আমায় দেখেও চুপ করে আছে।কিছু বলছে না।
খুব রেগে আছে।আর রেগে থাকাটাই স্বাভাবিক নয় কি.?
পেছন থেকে জরিয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম।
সোনা মা আর রেগে থাকতে পারলেন না।আমার চোখের পানি সোনা মা সহ্য করতে পারে না।
বাচ্চাদের মতো ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছিস কেনো?তোকে কেউ মেরেছে নাকি বকেছে?
–কাঁদবো না তো কি করবো?আমি বিয়ে করে মনে হয় পাপ করে ফেলেছি? তোমরা কেউ আমার সাথে কোনো কথা বলছো না😰আমার বুঝি কষ্ট হয় না তাই না?
–হয়েছে হয়েছে আর কাঁদতে হবে না তোকে।
–থ্যাঙ্কু শাশুড়ি মা।
তবে রে শয়তান মেয়ে দাড়া।

,
সবাই মেনে নিয়েছেন এখন।আর আমার #Accounting_Teacher থুক্কু জল্লাদ বর টার রাগ ভাঙ্গাতে কম কষ্ট করতে হয়নি।ব্যাটা আসলেই একটা আস্ত জল্লাদ।
তার ভালোবাসায় কখনো এট্টুখানি কম হলেই সে ডেভিলের মতো করে সেটা পুষিয়ে নেয়।
এখন মনে হয় শুভ্রের সেদিনের জোর করে বিয়েটা করা হয়তো ঠিকই ছিল।দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছি এই ডেভিল বর টা আমায় কতটা ভালোবাসে।আমিও কম বাসি না হুহ।
ওহ হ্যাঁ এখন সে আঙ্কেল থুক্কু শশুড় আব্বুর বিজনেস দেখা শুনা করে।আমি চাই না আমার বর টা ভার্সিটির ক্লাস নিতে যাক আর কোনো ডাইনী এনা ত্যানার নজর পরুক তার উপ্রে।
নজর দিয়েও কোনো লাভ নেই হুহহহ চোখ একদম গেলে দিবো।
ওহহ হ্যাঁ আপনাদের সু খবর টাই তো দেয়া হলো না।
অভি ভাইয়া ও শোভার কোল আলো করে ফুটফুটে একটা ছেলে বাবু হয়েছে।আমি আমার পছন্দের #অলক নাম রেখেছি।
খুব শীঘ্রই শুভ্র ঋতুর খবর ও পাবেন।😜

————-সমাপ্ত ——————-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here