#লেডি_হ্যাকারের_সাইকোগিরি,১০,১১
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১০
অন্যদিকে লেডি-হ্যাকার”Z”কাছে আসার জন্যই রওয়ানা হয়েছে।এদিকে ওভার পাওয়ারের লিডার আকাশের অবস্থা দেখে ঘাবড়ে আছে!
–ভাই আপনার তো অবস্থা খারাপ অনেক!চলেন আপানকে হসপিটালে নিয়ে যাই।আর তাছাড়া আপনাকে যারা জিম্মি করেছে,তাঁদের সবাইকেই তো জমের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি আমরা।
–আরে নাহ তার কোনো প্রয়োজন নেই।আমি ঠিক আছি।আর এখনো সবাই শেষ হয়নি।তোমরা শুধু চেলাপেলাকে মেরেছো,আসল গডফাদার এখনো বাকি আছে।আর সে অল্প কিছু সময়ের মাঝেই এখানে আসবে।আর সে আসা মানে আমার ট্রিটমেন্টের প্রয়োজনীয়তা শেষ মনে করো।তার সাথে হিসাব নিকাশ চুকাইলেই আমার শরীর আবার চাঙ্গা হয়ে যাবে।
–মানে কি ভাই?আর কিসের গডফাদার?
–মানে হলো এই সমস্ত লোককে যে পাঠিয়েছে,সে আসছে এখানে।
–ওহহহ আচ্ছা,তাহলে আমরাও অপেক্ষা করছি তার জন্য।দেখি কার কলিজাটা এতো বড় যে আপনাকে মারার জন্য লোক পাঠায়!আজকে তো তার শ্বাসনালী চেপে ধরবো সোজা।
আকাশ রক্তাক্ত অবস্থায় চেয়ারের উপরে রাজার মতন বসে আছে।আর তার চারপাশে ওভার পাওয়ারের লোকজন অস্ত্র হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।একটু পর লেডি-হ্যাকার চলে আসে।সে গাড়ি সাইড করে বাড়িতে প্রবেশ করে।সে তার মুখে কালো একটা মাক্স বেঁধে রেখেছে।যখনি সে বাড়ির দরজা দিয়ে প্রবেশ করে, তখনি সে দেখতে পায় সারা ফ্লোর রক্তে লাল হয়ে আছে!এই দৃশ্য দেখে তার কেমন যেনো একটা সন্দেহ হয়!তাও সে মনের ভিতরে সন্দেহ নিয়ে বাড়ির একদম ভিতরে প্রবেশ করে।সে বাড়ির যত ভিতরে প্রবেশ করে,ততোই ফ্লোরে পরে থাকা রক্তের পরিমাণ বেশি হতে থাকে!তার ভিতরে এবার ভয় কাজ করতে শুরু করে!কারন একে তো ফ্লোরে অধিক পরিমাণে রক্ত পরে আছে,তার উপরে তার লোকজন কাউকেই সে দেখতে পাচ্ছে না!সে তার লোকজনের তালাশ করতে শুরু করে।তার লোকজনের তালাশ করতে করতে সে একটা রুমের সামনে চলে যায়,যেটার ভিতরে আকাশ এবং তার আদেশ মেনে চলা ভয়ংকর পশু গুলা ঘাপটি মেরে বসে আছে।যখনি লেডি-হ্যাকার সেই রুমের দরজাটা খোলে,তখনি তার চোখ কপালে উঠে যায়!কারন সে দেখতে পায় কেউ একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পায়ের উপরে পা তুলে চেয়ারে বসে আছে,আর তার পাশে অনেক কয়টা দানব অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে!এই দৃশ্য দেখে লেডি-হ্যাকারের বুঝতে বাকি নেই যে কি ঘটেছে এখানে!সে উল্টো ঘুরে সোজা এক দৌড় মারে!
কারন তার জান বাঁচানো ফরজ এখন।লেডি-হ্যাকারের পিছু পিছু ওভার পাওয়ারের ছেলেপেলেও দৌড় মারে তাঁকে ধরার জন্য।কিন্তু লেডি-হ্যাকার ঘরের থেকে বের হয়ে বাহির থেকে ঘরের আসল দরজা লক করে দেয়।আর তাড়াতাড়ি গাড়ি স্টার্ট করে চটজলদি সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যায়।সে গাড়ি চালাচ্ছে আর তীব্র ভাবে হাঁপাচ্ছে!মনে হচ্ছে যেনো সে হাঁপাতে হাঁপাতেই দম আঁটকে মারা যাবে..
এদিকে আকাশ বসে বসে অট্টহাসি হাসছে!কারন আকাশ এবার পাকাপোক্ত ভাবে জেনে গেছে,যে সেই “M.B.Z” এই তার পিছনে লেগেছে।আর সমস্ত কিছু সেই করছে।তাই সে অট্টহাসিতে লুটিয়ে পড়ে।
ওভার পাওয়ার খালি হাতে আকাশের কাছে ফিরে আসে।
–ভাই দুঃখিত আমরা তাঁকে ধরতে পারিনি।সে অনেক সেয়ানা।সে দৌড়ে গিয়ে বাড়ির আসল দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দিয়েছে।পরে গাড়ি স্টার্ট করে তড়িৎগতিতে পালিয়েছে।
–আরেহ ঠিক আছে সমস্যা নেই।সেই মেয়ের বিষয়টা এবার আমি দেখে নিব।যাও এবার গিয়ে দরজার লক ভেঙ্গে ফেলো।আমার একটু হসপিটাল যাওয়া প্রয়োজন।
.
আকাশের কথা মতন দরজা ভেঙ্গে ফেলে ওভার পাওয়ারে সদস্য একজন।তারপর আকাশ সেখান থেকে বেরিয়ে একাই হসপিটাল চলে আসে।পরে ট্রিটমেন্ট করে দুপুরের দিকে বাসায় যায়।বাসার মানুষ তার অবস্থা সম্পর্কে জিগ্যেস করলে সে মিথ্যা কথা বলে তাঁদের,যে সে গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে।
.
এদিকে লেডি-হ্যাকার হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়ি এসে পৌঁছেছে।কিন্তু সে রক্তাক্ত অবস্থায় পায়ের উপরে পা দিয়ে বসে থাকা দানবটার কথা কোনো মতেই ভুলতে পারছে না!তাঁকে দেখে যেনো কোনে ভাবেই মানুষ মনে হয় নি তার!মনে হচ্ছিলো মানুষের রূপ ধারণ করে কোনো ভ্যাম্পায়ার বসে ছিলো তার সামনে!শুধু তাঁকে একা নয়,তার সাথে থাকা মানুষগুলোকেও ভ্যাম্পায়ারের মতন লাগছিলো!কেমন বিভৎস ছিলো সেই মানুষটা এবং তার সাথে থাকা লোক গুলোর চেহারা!সে একদম শান্ত হয়ে যায়”Z”এর ভয়াবহতা দেখে!
.
অপরদিকে আকাশক বাসায় এসে হালকা পাতলা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।তার শরীরে জ্বর এসেছে পড়েছে মা’র খাওয়ায়।সে এমন গভীর নিদ্রায় চলে গিয়েছে,যে দুনিয়াদারীর কোনো খবর নেই।
বিকাল হতেই বেহরোজ তাঁকে অনেক কয়টা ফোন দেয়।কিন্তু আকাশ তার ফোন ধরে না।কারন সে গভীর নিদ্রায় চলে গিয়েছে।আকাশ তার ফোন না ধরায় বেহরোজ তার বাড়িতে চলে যায়।সে আকাশের বাড়ি এসে জানতে পারে,যে আকাশ নাকি এক্সিডেন্ট করেছে গাড়ির সাথে।আকাশ এক্সিডেন্ট করেছে শুনে বেহরোজের চোখে পানি চলে আসে।
–আন্টি আকাশ এখন কোথায়?
আকাশের আম্মু বেহরোজকে আগ থেকেই চেনে।কারন তারা আগে একই সাথে লেখাপড়া করতো।আর সেই সুবাদে বেহরোজের আশা যাওয়া ছিলো আকাশের বাড়িতে।
–ঐ তো ঐ রুম টাতে।
বেহরোজ আকাশের রুমে চলে আসে।সে রুমে এসে দেখে আকাশ গভীর নিদ্রায় ঘুমিয়ে আছে।বেহরোজ তার পাশে এসে বসে আলতো করে হাত রাখে আকাশের মাথায়।তখনি সে অনুভব করে আকাশের সারা শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে!আকাশের এমন অবস্থা দেখে বেহরোজের তো পুরো দুনিয়াদারী উলট-পালট হয়ে গিয়েছে মতন অবস্থা!সে এবার চুপসে কান্না করে দেয় আকাশকে জড়িয়ে ধরে।আকাশ এখনো ঘুম।আর বেহরোজ তাঁকে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি ফেলছে আর তার ঠোঁটে,মুখে চুমু খাচ্ছে।এভাবে বেশ অনেকটা সময় কেটে যায়,কিন্তু আকাশের ঘুম ভাঙ্গে না।এরমধ্যে বেহরোজের হাজত লেগেছে ওয়াশরুমে যাওয়ার।তাই সে আকাশকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।তারপর আকাশের ওয়াশরুম তালাশ করতে থাকে।সে তালাশ করতে করতে ওয়াশরুম ভেবে অন্য একটা রুমের মধ্যে ঢুকে পরে।যেখানে আকাশের কম্পিউটার এবং নানান জিনিসপত্র রাখা আছে।রুমের অবস্থা দেখে বেহরোজের গা পুরো ঠান্ডা হয়ে যায়!কারন কেমন যেনো একটা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে রুমটার মাঝে!রুমের অবস্থা দেখে বেহরোজের কেন জানি সব কিছু নরমাল মনে হচ্ছে না!আর তাছাড়া রুমটার মধ্যে একের অধিকার কম্পিউটার আর ল্যাপটপ রয়েছে!এই জিনিসটা যেনো তাঁকে আরো ভাবাচ্ছে!সে মনে মনে চিন্তা করে…
–আকাশ তো আমায় বলেছিলো সে নতুন প্রোগ্রামিং শিখছে।তাহলে তার বাসায় এতোগুলা কম্পিউটার আর ল্যাপটপ কেন!নাহ আকাশের কথার সাথে কোনো কিছুর হিসাব এই তো মিলাতে পারছি না আমি!আর তার রুমের পরিবেশ টাও কেমন যেনো থমথমে!যেই থমথমে পরিবেশ টা কোনো ভয়ংকর গুহায় বা কোনো ভয়ংকর আস্তানায় গেলে মানুষের মনে অনুভব হয়!একদম ঠিক সেই রকম অনুভব হচ্ছে এখানটায় এসে!
নাহ কোনো একটা রহস্য তো আছে এই রুমের মাঝে!
বেহরোজ আসপাশটা ভালো ভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।হুট করেই সে আকাশের কম্পিউটারের উপরে হাত দিয়ে বসে।আর তখনি আকাশ তার কম্পিউটার রুমে চলে আসে।আর বেহরোজকে বলে…
–কিরে তুই এই রুমে কি করিস?আর কখন এসেছিস তুই?
–আরেহ আমি ওয়াশরুম ভেবে ভুলে এই রুমে চলে এসেছি।আর আমি তো এসেই সেই মাগরিবের সময়।
–তো আমায় ডাকিস নি কেন?
–আরেহ তুই গভীর নিদ্রায় ছিলি।তাছাড়া তোর সারা শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছিলো।তাই তোকে ডাকিনি।
আচ্ছা এখন চল এই রুম থেকে।আর এই রুমে কখনো আসিস না তুই।কারন এই রুমে আমি বাদে কেউই আসে না।
–কেন আমিও আসতে পারবো না বুঝি?
–নাহ,তোর ও অনুমতি নেই।
–বাপরে বাপ কি কঠোর মনের মানুষ তুই।
যাহ তোর রুমে আসবো না আমি।এবার চল দেখি ওয়াশরুমটা দেখা তুই আমাকে।
–হুম চল…
আকাশ বেহরোজকে তার রুমের ওয়াশরুম দেখিয়ে দেয়।আর বেহরোজ ফ্রেশ হতে চলে যায়।কিন্তু তার ভিতরে এখনো কেমন যেনো একটা ঘুটঘুটানি কাজ করছে!তার কেন জানি মনে হচ্ছে তার চোখ থেকে কোনো একটা কিছু আড়াল হয়ে আছে!এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে করতে বেহরোজ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বসে।আর আকাশ খাটে বসে আছে।রাতের বাজে দশটা।
–কিরে বেহরোজ এতো রাত হয়েছে তুই বাড়ি যাবি না?
–কেন এখানে থাকলে সমস্যা আছে নাকি?
–নাহ তা সমস্যা নেই।কিন্তু অনেক রাত হয়েছে তো।
–আরেহ রাত মাই ফুট…
আগে তোর চিন্তা কর।আমারটা আমি চলে যাবো সময় হলে।
আকাশ আর বেহরোজ কথা বলছে,তখনি আকাশের আম্মু আকাশের জন্য খাবার নিয়ে আসে।
–এই আকাশ একটু ভালো করে উঠে বস মা তোকে খাইয়ে দিচ্ছি।আর আমি ডক্টর থেকে ঔষধ এনেছি তোর জন্য।ডক্টর বলেছে টাইম মতন ঔষধ গুলো খাইয়ে দিতে তোকে।
.
তখনি বেহরোজ বলে উঠে…
–আন্টি খাবার গুলো আপনি আমায় দিন।আমি আকাশকে খাইয়ে দিচ্ছি।
–এই না তোর খাওয়াতে হবে না।আমি মায়ের হাতেই খাবো।
.
আকাশের কথা শুনে বেহরোজ চেতে যায়!
–এই বেটা খচ্চর একদম চুপ তুই।আমি বলেছি না তোকে খাইয়ে দিচ্ছি আমি।
–এই মামনী থাক আর রাগে না।এমনিতেই ছেলেটা অসুস্থ।তার উপরে রাগ দেখানো টা আর ঠিক হবে না।নাও তুমিই খাইয়ে দাও ওকে।
–তো আন্টি আপনার বদমাশ ছেলেটা সব সময় আমার কথার দ্বিমত কেন করে সে।আমি যাই বলি,তারই উল্টো করে সে…
–হয়েছে থাক।
নাও তুমিই খাইয়ে দাও।আর দ্বিমত করবে না সে তোমার কথার।
.
বেহরোজ আকাশের আম্মুর থেকে খাবারের প্লেট টা নিয়ে আকাশকে খাওয়াতে শুরু করে।আর তিনি চলে যায়।তবে চলে যেতে যেতে বেহরোজকে বলে…
–মা তুমি কিন্তু খেয়ে যাবে আমার এখান থেকে।আমি তোমার জন্য খাবারের রুমে অপেক্ষা করছি।
.
বেহরোজ আকাশকে খাইয়ে দিচ্ছে,আর আকাশ চোখ বড় বড় করে বেহরোজের দিকে তাকিয়ে আছে!কারন এই জীবনের প্রথম বেহরোজকে নিয়ে তার ভিতরে কেমন যেনো একটা ফিলিংস হচ্ছে….
–কি এই ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন আমার দিকে?
আকাশ থতমত খেয়ে যায় বেহরোজের কথা শুনে!
–নাহ এমনিই।
–হয়েছে নে পুরো খাবারটা শেষ কর।
–না,না,আমি আর খেতে পারবো না।ইতিমধ্যেই পেট লোড হয়ে গিয়েছে।আর খাওয়া সম্ভব না আমার পক্ষে।
–আচ্ছা আর দুই লোকমা খেয়ে নে।
–আচ্ছা ঠিক আছে…
গুনে গুনে দুই লোকমা খাইয়ে দেয় আকাশকে বেহেরোজ।পরে বাকি খাবার টুকু বেহরোজ নিয়ে আকাশের আম্মুর কাছে চলে যায়।
–মামনী এসেছো,নাও বসো আমার সাথে।
আর আকাশের এঁটো খাবার গুলো আমায় দাও।
–না,আন্টি সমস্যা নেই।আপনি এই মাঝেই আমায় খাবার বেড়ে দিন।
.
আকাশের আম্মু বেহরোজের কথা শুনে কয়েক সেকেন্ড তার দিকে তাকিয়ে থাকে।পরে একটা মুচকি হাসি দিয়ে আকাশের প্লেটেই তাঁকে খাবার বেড়ে দেয়।
আকাশের আম্মু ইতিমধ্যেই অনেক কিছু বুঝে নিয়েছে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেহরোজ আবার আকাশের রুমে যায়।
–আচ্ছা আকাশ আমি চলে যাচ্ছি।আবার কালকে আসবো।আর তুই সকালের ঔষধ টা ঠিক মতন খেয়ে নিবি।
–হুম খেয়ে নিব।আর তুই একটু কাছে আয় তো।
.
বেহরোজ কোনো কথা ছাড়াই আকাশের সামনে যায়।
–আরো কাছে আয়।পরে চোখটা বন্ধ কর একটু।
.
আকাশের কথা মতন বেহরোজ আকাশের কাছে গিয়ে চোখ বন্ধ করে।তখনি আকাশ বেহরোজ গলায় দু-হাত দিয়ে ধরে তার কপালে ঠোঁট চেপে ধরে।বেহরোজ পুরো রোবট হয়ে যায় আকাশের এমন আচরণে!কিন্তু সে আকাশকে কিছুই বলে!আকাশ দুই-তিন মিনিট পর বেহরোজকে ছেড়ে দেয়।আর বলে…
–সাবধানে বাড়ি যাস।আর রাস্তায় কোনো সমস্যা হলে আমায় ফোন করিস।
–ওরে আমার হিরো রে,নিজের শরীর এই ঠিক নাই,সে আবার আমার চিন্তা করছে।এই তুই নিজের চিন্তা কর।আমি আমার মতন ভালোভাবে চলে যাবো।
–হুম ঠিক আছে..
বেহরোজ আকাশের বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে সোজা নিজের বাসায় চলে যায়।নিজের বাসা বলতে তার খালার বাড়িতে।রাতের বাজে এগারোটা।সে বাসায় ঢুকতেই প্রধান,যে কিনা তার খালার হাসবেন্ড সে তাঁকে জিগ্যেস করে…
–কোথায় ছিলো এতোটা সময় মামনী তুমি?
–আকাশের বাসায়।সে গাড়ি এক্সিডেন্টে করেছে।তাই তার বাসায় গিয়েছিলাম তাঁকে দেখতে।
বেহরোজের মুখে আকাশের কথা শুনতেই প্রধান কেঁপে উঠে!আর বেহরোজ কে বলে…
–মামনী তোমায় একটা কথা বলার ছিলো…
–কি কথা আংকেল?
–তুমি সেই ছেলেটার সাথে আর সম্পর্ক রাখিও না।পারলে তার থেকে দূরে সরে এসো।তার থেকে দূরে সরে আসাটাই তোমার জন্য মঙ্গলের হবে।
–কি সমস্ত কথাবার্তা বলছেন আংকেল আপনি?
আমি কেন তার থেকে দূরে সরতে যাবো?আর দূরে সরায় কিসের মঙ্গল?
–কারন হলো সে কোনো সাধারন মানুষ না!সে হলো মানুষরূপী ভয়ংকর একটা নরপিশাচ!
প্রধানের কথা শুনে বেহরোজ চমকে উঠে!
সে তার আংকেলের কথার আগামাথা কিছুই যেনো বুঝে উঠতে পারছে না!
–মানে কি আংকেল?আর কি সব বলছেন আপনি আকাশের নামে?
–মানে হলো আকাশ ইন্টারনেট জগতের অনেক ভয়ংকর হ্যা…..
চলবে….?
ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।
#লেডি_হ্যাকারের_সাইকোগিরি
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১১
–কারন হলো সে কোনো সাধারন মানুষ না!সে হলো মানুষরূপী ভয়ংকর একটা নরপিশাচ!
প্রধানের কথা শুনে বেহরোজ চমকে উঠে!
সে তার আংকেলের কথার আগামাথা কিছুই যেনো বুঝে উঠতে পারছে না!
–মানে কি আংকেল?আর কি সব বলছেন আপনি আকাশের নামে?
মানে হলো আকাশ ইন্টারনেট জগতের অনেক ভয়ংকর হ্যাকার বলতে গিয়ে মুখ চেপে ধরে।কারন এতোটা সময় তার আকাশের ভয়াবহতার কথা মনে ছিলো না।যখনি সে হ্যাকার শব্দটা উল্লেখ করে,তখনি তার চোখের সামনে আকাশের ভয়ংকর চেহারাটা ভেসে উঠে।তাই সে হাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে।না হয় আকাশের কানে এই কথা গেলে তাঁকে আকাশ আস্তো গিলে খাবে।
–কি হলো আংকেল আকাশ কি?
–না,না সে কিছু না।সে অনেক ভালো একটা ছেলে।
–আংকেল তুমি কি লুকাচ্ছো আমার থেকে?
তুমি তো একটু আগেই আকাশের বদনাম করছিলে,তাহলে হুট করে এমন কি হলো সে তার নামে তারিফ করতে শুরু করলে।
–না,আসলে মামনী তার ভালো বলতে গিয়ে খারাপ বর্ণনা বেরিয়ে গেছে মুখ দিয়ে।
–আংকের আমি তোমার এখনকার কথাটা বিশ্বাস করতে পারছি না।আমি শিওর তুমি আমার কাছ থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছো!
–আরে নাহ রে পাগলি,সে অনেক ভালো ছেলে।আর তুই তার সাথে রিলেশন কন্টিনিউ কর।
বেহরোজ গভীর চিন্তায় পড়ে যায় তার আংকেলের মুখে এমনধারা কথা শুনে!
–আরেহ মামনী তুই এতো টেনশন নিস না।আমি বললাম তো সে অনেক ভালো ছেলে।যা এবার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে খাবার খেয়ে নে।
–না আংকেল আমি খেয়ে এসেছি।
–তাহলে ঠিক আছে যা ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়।
বেহরোজ তার রুমে চলে আসে।কিন্তু তার মনের ভিতরে অন্য রকম কিছু একটা ঘুরপাক খাচ্ছে!সে যেনো কোনো কিছুর এই হিসাব মিলাতে পারছে না!
–নাহ আমার মন বলছে,যে আমার চোখ থেকে কিছু একটা আড়াল হয়ে আছে!না হয়তো আকাশের কম্পিউটার রুমে যাওয়ার পর আমার গা শিউরে উঠলো কেন!আর এখন কেনই বা আংকেল আমার সাথে এমন অদ্ভুত আচরণ করলো!শুরুতে তো ঠিকই আকাশের নামে বদনাম করছিলো,তাহলে হুট করে এমন কি হলো,যে আকাশের নামে সুনাম করতে শুরু করলো!নাহ আমি শিওর যে আমার অগোচরে কিছু তো একটা হচ্ছে!আর সেটা কি,তা আমার খুঁজে বের করতে হবে।আর সেটা আমি খুঁজে বের করবোই।
যাই এবার ফ্রেশ হয়ে নেই।
.
বেহরোজ ফ্রেশ হতে চলে যায়।ফ্রেশ হয়ে এসে সে ঘুমিয়ে পড়ে।অন্যদিকে আকাশ বিছানায় শুয়ে শুয়ে লেডি-হ্যাকারের কথা ভাবছে।
–কতো বড় কলিজা সেই লেডি-হ্যাকারের,যে সে লোক পাঠিয়ে দেয় আমাকে মারার জন্য!আসলে সেই লেডি-হ্যাকার চায় টা কি!কি তার উদ্দেশ্য!আর আমার পিছনেই বা কেন সে পড়েছে!নাহ এর একটা সমাধান বের করা উচিৎ।তার আগে আমি একটু সুস্থ হয়ে নেই।পরে লেডি-হ্যাকারকে দেখছি।
.
আকাশ ও ঘুমিয়ে পড়ে।এভাবে তিনদিন কেটে যায়।
আকাশ এখন আগের চাইতে একটু সুস্থ।বেহরোজ প্রতিদিন এসে তার দেখাশোনা করে।কিন্তু তার মনের ভিতরে আকাশকে নিয়ে সন্দেহের বীজটা এখনো রয়ে গেছে।সে গোপনে গোপনে তালাশ করছে তার সন্দেহর আসল রহস্য বের করার জন্য।কিন্তু সে গত দিনে কিছুই বের করতে পারেনি।তার মনের সন্দেহ সন্দেহই রয়ে গেছে!এদিকে তার আবার চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার সময় ও হয়ে এসেছে।কিন্তু সে তার প্লান পরিবর্তন করে।সে মনে মনে ঠিক করে,যে তার মন থেকে যতোদিন সন্দেহ দূর হবে না,ততদিন সে এই ঢাকা শহরেই থাকবে।আজ তিনদিন পেরিয়ে চারদিন হতে চললো।আকাশ এখন কিছুটা সুস্থতা অনুভব করছে।তাই সে ঠিক করে নিয়মিত ক্লাসে যাওয়া শুরু করবে আবার।আর সে তাই করে।সে রীতিমতো ক্লাসে যাওয়া শুরু করে।
.
সুস্থতার দ্বিতীয় দিনের মাথায় সে ক্লাসে যায়।কয়েকটা ক্লাস করে পর ব্রেক দিয়েছি ত্রিশ মিনিটের জন্য।সে এবং তার কিছু ফ্রেন্ড বসে বসে ক্লাসের এক কোনায় আড্ডা দিচ্ছে।তখনি তার কানে খবর আসে,তার সব চাইতে কাছের ফ্রেন্ড সানিকে কারা যেনো কলেজের ভিতরে এসে বেধড়ক মারছে।এই খবর শুনে আকাশ এবং তার সব কয়টা ফ্রেন্ড সেদিকে দৌড়ে যায়।তারা সেখানে গিয়ে দেখতে পায় ছয়-সাতজন ছেলে মিলে সানিকে মারছে।আর তাঁদের সবার হাতে হকিস্টিক।
তাই আকাশের বাকি ফ্রেন্ডরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে পরে।কিন্তু আকাশের কাছে সেসবের কোনো পরোয়া নেই।সে একাই তার বন্ধুকে বাঁচাতে চলে যায়।আকাশ তাঁদের থেকে সানিকে ছুটিয়ে আনার চেষ্টা করছে।তখনি সানিকে যারা মারতে এসেছে,তাঁদের থেকে একটা ছেলে সানিকে মারা বাদ দিয়ে রেখে আকাশের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।আর গলা চওড়া করে কথা বলতে থাকে….
–এই বেটা তোর কতো বড় সাহস যে তুই আমাদের কাজে বা হাত দিস?
–ভাই গলাটা একটু নামিয়ে কথা বলো।
গলার আওয়াজ কিন্তু আমারো কম বড় না।আর আমিও জোর গলায় চেঁচিয়ে কথা বলতে পারি।
আকাশের কথা শুনে সেই ছেলেটা রেগে গিয়ে আবারো আকাশকে আরেকটা থাপ্পড় মারে।আকাশ এবারো চুপচাপ শান্ত গলায় সেই ছেলেটাকে একটা কথা বলে..
–ভাই বেশি ফড়ফড় করিস না,না হয় কিন্তু মারা পড়বি।আর আমায় থাপ্পড় মেরেছিস তো,সেটা ফল স্বরূপ তোর হাতটা আর থাকবে না।কব্জি থেকে কাটা পড়বে সেটা।
এবার ছেলেটা আকাশের কথা শুনে আরো রেগে যায়।
সে এবার বাকিদের ডেকে বলতে থাকে..
–এই তোরা সেই ছেলেকে মারা বাদ দিয়ে এদিয়ে আয় তো।এখানে এক ছাগলের বাচ্চা এসে চেচাচ্ছে,
তাঁকে একটু সাইজ করি।সে একটু বড় বড় কথা বলছে।সে হয়তো আমাদেট চিনে না ভালো করে।
সেই ছেলের কথায় সবাই সানিকে মারা বাদ দিয়ে আকাশের কাছে আসে।আর আকাশের কলার চেপে ধরে মারতে যাবে,তখনি আকাশের বাকি ফ্রেন্ড গুলা এগিয়ে আসে।যার কারনে তারা আর আকাশকে মারতে পারে না।কিন্তু তারা চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে থাকে….
–তোরা কিন্তু কাজটা ভালো করলি না।তোদের সব কয়টাকে আমরা দেখে নিব।তোরা কিন্তু জানিস না আমরা কার ছেলেপেলে।তোরা দল বেঁধে এসে আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছিস তো?তোরা খালি কিছু সময় ওয়েট কর।তারপর দেখ ট্রাক ভর্তি ছেলেপেলে এসে তোদের কাম তামাম করে দিয়ে যাবে।তোরা আমাদের সাথে পাঙ্গা নেওয়ার মজা বুঝতে পারবি একটু ওয়েট কর খালি।
এবার আকাশের রাগ উঠে যায় তাঁদের কথা শুনে!কারন ছেলে গুলা এতোটা সময় তার গায়ে আঘাত করেছে।কিন্তু এখন সে তার বন্ধুদেরকে শাসাচ্ছে।
–এই চামচিকার বাচ্চারা শোন,তোর যেই ভাইয়ের ছেলেপেলে হবি হ,কিন্তু আমাদের সাথে লাগার আগে কাফনের কাপড় রেডি করে সাথে নিয়ে আসিস।আর সাড়ে তিন হাত জায়গাও খুঁড়ে রেখে আসিস।না হয় মা’র খাওয়ার পর মাটির নিচে জায়গা মিলবে না তোদের।
আকাশের কথা শুনে ছেলেগুলা ভয়ংকর রকমের ক্ষেপে যায়!তাই তারা তাঁদের ছেলেপেলেকে ডেকে আনতে গেছে।এদিকে আকাশের বাকি বন্ধুরা আকাশকে বলে….
–এই আকাশ তুই খালি খালি পরে আবার কথা বাড়াতে গেলি কেন?এখন যদি সত্যিই ওরা আরো ছেলেপেলে ডেকে নিয়ে আসে,তাহলে আমাদের কি হবে ভাবতো একটু।
–আরেহ ব্রাদার তোরা টেনশন নিচ্ছিস কেন,তোদের এখনো দুনিয়া দেখার অনেক টুকুই বাকি আছে।তারা ছেলেপেলে নিয়ে আসবে ঠিক,কিন্তু জীবিত আর ফিরবে না।আর তোদের ও আমার সাথে লড়াই করতে হবে না।আমি একাই তাঁদের জন্য যথেষ্ট আলহামদুলিল্লাহ।
–আরেহ আকাশ বড় গলায় কথা বললেই কি হয় খালি?তুই একা তাঁদের এতো জনের সাথে মোকাবেলা করবি কি ভাবে?
–ভাই তোরা এসব নিয়ে চিন্তা করিস না।তোরা গিয়ে সানিকে সামলা।আর আমি একটু আসছি দুই মিনিট।
পরে বাকিটা আমি দেখে নিব।
.
তারপর আকাশ চলে যায়।সে তার কাজ শেষ করে একটু পর আবার তার বন্ধুদের কাছে ফিরে আসে।সবাই সানিকে নিয়ে ব্যস্ত।এদিকে কলেজের হেডস্যার এসে সবার সাথে চেঁচামেচি লাগিয়ে দিয়েছে।
–এই তোমরা লাগালাগি করতে গেলে কেন?দেখেছো কলেজের পরিবেশ পুরো বিগড়ে গিয়েছে।
–স্যার আমরা ইচ্ছা করে লাগিনি।তারাই তো সানিকে ধরে মারছিলো।তাই আমরা এগিয়ে গিয়েছি।
–লাগালাগি করোনি ভালো কথা,কিন্তু তাঁদের সাথে বড় গলায় কথা তো বলেছো।তারা এখন ছেলেপেলে ডেকে আনতে গেছে।কি ঘটতে চলেছে কিছু আইডিয়া আছে তোমাদের?
–স্যার ওসব নিয়ে আপনি চিন্তা করিয়েন না।
–নাহ চিন্তা করবো না।তোমরা তো একদম দানবীর হয়ে গিয়েছো,যে তোমরাই তাঁদের ছেলেপেলেকে সামলে ফেলবে।তোমরা কি জানো তারা কার ছেলেপেলে?
তারা হচ্ছে শহরের নাম করা নেতা জনির ছেলেপেলে।
–স্যার ওসব আমাদের দেখার সময় নেই।
মারতে আসলে জীবিত আর ফিরবে না।
–আকাশ তোমার বড় বড় লেকচার বন্ধ করো।আর আমি যেটা বলি সেটা মন দিয়ে শুনো।আমি চাইনা আমার কলেজে কোনো ঝামেলা হোক।তো আমি উপরে কথা বলছি।তারা মারতে আসলে তোমরা কোনো কিছুই করবে না।
–স্যার আপনি সবাইকে থামাতে পারলেও আমাকে পারবেন না।
–এই ছেলে তোকে আমি সোজা কলেজ থেকে বের করে দিব।
–ঠিক আছে স্যার বের করে দিয়েন।কিন্তু তার আগে তাঁদেরকে আমি উপরের টিকিট ধরিয়ে দিব।
.
আকাশের কথা শুনে কলেজের হেডস্যার রেগেমেগে সেখান থেকে চলে যায়।আর আকাশের বাকি বন্ধুরা আকাশকে বুঝাতে শুরু করে…
–বন্ধু তাঁদের থেকে আমরা সবাই না হয় মাফ চেয়ে নিব।
–ভাই মাফ চাইলে তোরা চা,কিন্তু আমি চাইবো না।কারন আমি বিনা কারনে নত হওয়ার মতন পাবলিক না।
.
আকাশের কথা শুনে তার বন্ধুরাও এবার তার বিরোধিতা শুরু করে।যে তারা মাফ চেয়ে সব কিছু ঠিকঠাক করবে।আর আকাশের যা ইচ্ছে হয় করতে।
ইতিমধ্যেই সেই ছেলেপেলে গুলা তাঁদের বিশাল দলবল নিয়ে কলেজে এসে হাঙ্গামা শুরু করে।তারা ভাংচুর করতে শুরু করেছে।আকাশের বন্ধুরা তাঁদের কাছে গিয়ে হাত জোর করে মাফ চাইতে শুরু করে।আর আকাশ ক্লাস রুমেই বসে আছে।
–ভাই আমাদের ভুল হয়ে গেছে।আমরা না জেনে আপনাদের সাথে পাঙ্গা নিয়েছি।
–না তোদের মাফ নাই।বিশেষ করে সেই ছেলেটার।যা গিয়ে তাঁকে ডেকে নিয়ে আয়।তাহলেই তোরা মাফ পাইলে পাইতে পারিস।
.
আকাশের একজন বন্ধু এসে আকাশকে ক্লাসরুম থেকে ডেকে নিয়ে যায়।ছেলেপেলে গুলা আকাশকে দেখে মারার জন্য সবাই আকাশের দিকে তেড়েফুঁড়ে আসে।ঠিক তখনি গোলাবৃষ্টি শুরু হয়।কারা যেনো ভয়ংকর ভাবে আকাশের দিকে গুলি ছুড়ছে।যারা আকাশকে মারতে এসেছে,তারা পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখে তাঁদের পিছনে অন্য একদম ছেলেপেলে দাঁড়িয়ে আছে।আর সেই ছেলেপেলে গুলা অন্য কেউ না।তারা হলো সেই ওভার পাওয়ারের ছেলেপেলে।
সবাই তাঁদের দিকে গুলি তাক করে আছে।এই দৃশ্য দেখে আকাশকে মারতে আসা ছেলেপেলে গুলা ভয় পেয়ে যায়!আর চুপচাপ সবাই জায়গার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে।
–কিরে মামুর বেটা তোরা না আমায় মারবি?আয় নে মার।বিশ্বাস কর আমি তোদের কিচ্ছুই করবো না।
.
কিন্তু কেউ জায়গা থেকে নড়ার মতন সাহস করতে পারছে না।তখনি আকাশ হেঁটে গিয়ে তাঁকে যারা মারতে এসেছে,তাঁদের একজনের কানে কানে বলে…
–ভাই চলে যা এখান থেকে।
.
আকাশের কথা শুনে তারা মাথা নিচু করে হাঁটা দেয়।অন্যদিকে আকাশ চোখের ইশারায় কিছু একটা বলে দিয়েছে তার ছেলেপেলেকে।ছেলেপেলে গুলা চুপচাপ কলেজ ত্যাগ করে চলে যায়।অন্যদিকে ওভার পাওয়ার ও তাঁদের পিছু নিয়েছে।আর আকাশ এবং তার বন্ধুরা সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে!আকাশের বন্ধুরা তার দিকে ভয়ানক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আর বাকি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা গোলাবৃষ্টির সময় ভয়ে সবাই যে যার ক্লাসে ঢুকে গিয়েছে।কিছুক্ষণ পর ওভার পাওয়ারের একজন এসে আকাশের হাতে একজনের একটা কাটা হাত ধরিয়ে দেয়।আর বলে…
.
–ভাই কারোর কোনো ক্ষতি করিনি,তবে আপনি যার দিকে ইশারা করেছেন,তার হাত উপড়ে নিয়েছি তার শরীর থেকে।
.
আকাশ হাতের দিকপ তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয়।আর অপরদিকে সেই ছেলেটা চলে যায়।এদিকে
আকাশের বন্ধুরা সেই কাটা হাত দেখে মহূর্তের মাঝেই চিনে ফেলে,যে এই কাটা হাত টা কার!তারা এবার আরো ভয়ানক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে!
–কিরে তোরা এভাবে ঘাবড়ে আছিস কেন?
.
আকাশের বন্ধুরা আতংকিত দৃষ্টিতে আকাশকে জিগ্যেস করে…
.
–ভাই কে তুই?আর সেই ভয়ানক ছেলে গুলো কারা?
.
আকাশ কোনো উত্তর দেয় না।সে হাসতে শুরু করে।
–ভাই বল না তুই কে?আর কে সেই ছেলেপেলে গুলা?
–আমি কে সেটা অন্য কোনো এক সময় জানিস।কিন্তু সেই ছেলেগুলার পরিচয় তোদেরকে দেই আমি।তোরা তো সবাই ওভার পাওয়ার নামক সিরিয়াল কিলারদের নাম শুনেছিস?যারা ডার্ক ওয়েবের ভয়ানক একটা টিম।যারা ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে কন্ট্রাক্ট নিয়ে মানুষকে টপকায়।
–হুম অবশ্যই শুনেছি।তারা তো অনেক ডেঞ্জারাস!তারা নাকি মুহূর্তের মধ্যেই মানুষকে মেরে বালি চাপা দিতে দ্বিধাবোধ করে না।
–হুম এরাই সেই ডার্ক ওয়েবের ওভার পাওয়ার।
যারা আমার জন্য কাজ করে।
.
আকাশের কথা শুনে তার বন্ধুরা ভয়ানক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে!মনে হচ্ছে যেনো তারা নিজের চোখের সামনে মৃত্যুর ফেরেস্তাকে দেখে নিয়েছে!
–এভাবে ভেটকি দিয়ে তাকাশ না!না হলে তোদের চোখ খুলে পরে যাবে।
–ভাই প্রিজ তোর পরিচয় টাও বল…
–সেটা অন্য কোনো এক সময়।
.
তারপর আকাশ সে হাত টাকে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ফিক্কা মেরে ফেলে দেয়।তারপর সে সেখান থেকে চলে আসে।আজকের মতন ক্লাস এখানেই শেষ।অবশ্য আর ক্লাস ও হবে না কলেজে।কারন ক্লাস করার পরিবেশ সেই বহু আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তাই সে বাসায় চলে এসেছে।আকাশ বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে কম্পিউটার নিয়ে বসে।যখনি সে কম্পিউটার ওপেন করে,তখন সে দেখতে পায় তার কম্পিউটার আর নিজের আয়ত্তে নেই!তার কম্পিউটারে লেডি-হ্যাকারের সেই আলফাব্যাট টা রান করছে!যেটা ছিলো”M.B.Z”….
এই দৃশ্য দেশে আকাশ পুরো “থ” হয়ে তাকিয়ে আছে কম্পিউটারের দিকে!
চলবে….?
ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।