❤️ ভালোবাসার নতুন_পরিচয়,পর্ব-০২,০৩
লেখিকা নিপু জামান
পর্ব_২
আমার যখন সেন্স ফিরলো তখন আমি দেখলাম আমি একটা রুমে শুয়ে আছি। আর পাশে মামিমনি বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর রুমটাও আমার কাছে অচেনা লাগছে। আমি মামিমনিকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,
মামিমনি আমি এটা কোথায় আছি।
কেনো তোমার কি কিছুই মনে নেই
একটু একটু মনে পরছে, আমি যখন গাড়িতে ছিলাম তখন সেন্সলেস হয়ে গেছিলাম।বাট রুমটা কার।
কার আবার হবে এইটা তো নিবিরের রুম আর আজ থেকে তোরও রোম
ওহ
তা মা এখন শরীর কেমন লাগছে।
হুম ভালোই কিন্তু বাসার সবাইকে মিস করছি।
পাগলি মেয়ে কালকেই তো সবার সাথে দেখা হবে আর তোর বাসায়ও যেতে পারবি।মন খারাপ করে না মা আয় খেতে আয় অনেক রাত হয়ে গেছে।
ওকে চলো।
এরপর আমি খেয়ে নিলাম।আর সবাই মিলে আমাকে নিবিরের রুমে ডুকিয়ে দিয়ে গেলো।
কিন্ত কে করবে অপেক্ষা। আমি এতো ভালো মেয়ে না যে কারও জন্য অপেক্ষা করবো আমি আমার মতো আমার জান্টুস ফোনটা নিয়ে গেম খেলছিলাম।প্রায় এক ঘন্টার মতো গেম খেললাম অথচ নিবিরের আসার কোন নামই নেই। মেজাজ টাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সালা গেলোটা কই। ও মামাতো জামাই আর কতো ওয়েট করাবি। ধুর ছাই কিছুই ভালো লাগেনা। আমার ধৈর্যের বাধ ভেংগে গেলো তাই আমি আবার ফোনে ফেইসবুক ব্যবহার করতে লাগলাম। প্রায় রাত দুইটায় দিকে নবাব সাহেব আসেন, এতোক্ষনে আমার চোখ ঘুমে কাতর হয়ে গেছে তাও জেগে ছিলাম তার জন্য।সে এসেই বলা স্টার্ট করলো,,
তুমি এখনো ঘুমাওনি যে
দেখতেই তো পাচ্ছেন যে ঘুমাইনি আবার জিজ্ঞস করেন।
সরি তা আমার জন্যই কি অপেক্ষা করছিলে নাকি।
নাহ আপনার জন্য কেন করবো বলেন পাশের বাসায় তো আমার প্রেমিক আছে দশ বারোটা তো তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম বুঝছেন।
ওকে রিলেক্স এতো রেগে কেন জাচ্ছো।
রাগার জিনিসে যে মানুষ হাসে আমার তো তা জানা ছিলো না তাই রেগে জাচ্ছি। আমার মনে হয় আপনার রাগ উঠলে আপনি হাসেন তাই না।
নাহ একদমই ভুল আমার রাগ উঠলে কি করি নিজেও জানিনা।
হইছে রাগ করলাম আমি আর আপনি রাগ নিয়ে গবেষণা স্টার্ট করছেন।
আচ্ছা বাবা থামো। তুমিতো দেখতেও পিচ্ছি আর সব কিছুই পিচ্ছির মতো আর কি আসা করবো তোমার থেকে বলো।
হ্যা আমি জানিতো যে আমি পিচ্ছি তা বিয়ে করার সময় মনে ছিলো না। তখন তো ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে আমাকে বিয়ে করতে চলে গিয়েছেন।
তোমাকে কে বললো যে তোমাকে আমি বিয়ে করতে চেয়েছি 😐
বলতে কেন হবে করছেনই তো। আবার কথা ঘুরান, আপনি যদি চাইতেন তাহলে বিয়েটা ভাংতে পারতেন। কিন্তু তা করলেন না 😭
এই মেয়ে কান্না থামাও। দেখো আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাইনি। তোমার আম্মুকে দাদাই মেনে নিছে তার কারন আমি। আমার সাথে তোমার বিয়ে দিবে বলেই তোমার আম্মু আর আব্বুকে মেনে নিয়েছে।
মানে কি কি বলছেন আপনি
হ্যা এইটাই সত্যি।আমার জিএফ আছে নাম স্নেহা। কিন্তু দাদাই ওকে মেনে নিবেনা বলেছে। তাই দাদাই এক ঢিলে দুই পাখি মারার প্লেন করেন। একদিকে মামুনিকেও পেলো আর একদিকে ভেবেছে আমার আর স্নেহার ভালোবাসা ভেংগে যাবে। কিন্তু দাদাইয়ের ধারনা ভুল।
বাহ বাহ এতো সুন্দর খেলা খেললো সবাই আমাকে নিয়ে। ভাবা যায় নিলান্তি তুই এইবার সত্যিই মানুষের প্রয়োজন হোলি
পর্ব:৩
পরদিন সকালে যখন ঘুম ভাংল তখন ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম সকাল নয়টা বাজে। কিন্তু আমার ধারনা ছিলো যে শশুড় বাড়িতে অনেক সকালে ডাকে। আর এইটা তো মামার বাড়ি প্লাস শশুড় বাড়ি তাই হয়তো অন্য নিয়ম।সে যাই হোক আমার দেখে কাজ নেই। আমি এই বাড়িতে থাকবো না। আজকে ভদ্র হয়ে থাকবো বাসার সবার সামনে আর মি.মামাতো জামাইয়ের ব্রেক আপ করাবো যেই ভাবেই হোক😁।এরপর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।আর দেখলাম মামিমনি খাবার বানাচ্ছে।আমি তার কাছে গেলাম।
মামিমনি কি করছো।
তোর সাথে আমার কোন কথা নেই বুঝছিস।
কেনো আমি কি করলাম।
কি করিস নাই বল।বিয়ে হয়েছে এখনো তুই আমাকে মামিমনি ডাকবি নাকি।
ওহ এই জন্য রাগ করলা ওকে কোন সমস্যা নেই আজকে থেকে তোমাকে আমি শাশুড়ি বলে ডাকবো 😁।
ওই ফাযিল মেয়ে এইটা কেমন কথা।
বুঝতে হবে এইটা তোমার ছেলের বউ এর কথা আর তা ছাড়া এইটা অনেক আনকমন বুঝছো। আমি তোমাকে শাশুড়ি ছাড়া অন্য কিছু ডাকবো না,,,না হলে কিন্ত আম্মুর কাছে চলে যাবো আর আসবো না এখানে।
আমাকে হোয়াইট মেইল করছিস তুই।
হ্যা গো শাশুড়ি দেখতেই তো পাচ্ছো। তা বাদ দাও ঝগরা করে লাভ নেই আমি তোমাকে তোমার কাজে হেল্প করতে আসছি। তো কিছু কাজ দাও আমাকে।
তুই পারিস নাকি কিছু যে তোকে কাজ দিবো। উল্টো আমার কিচেন ময়লা করে আমার কাজ বারাবি।
শাশুড়ি তুমি আমাকে এইটা বলতে পারলা আমি কোন কাজের না😑।
হ্যা মা পারলাম।তোমার আম্মু নিজেই আমাকে বলছে যে তুমি কিছু পারো না।
ওহ বুঝছি তোমরা ননদ আর ভাবি মিলে ঠিক করছো আমাকে অপমান করার। ভাল তো অনেক ভালো এরপর থেকে কখনো আসবো না তোমাকে হেল্প করতে হুহ।
আরে মা শুন রাগ কেন করছিস।
যাহ চলে গেলো মেয়ে। থাক আমি কাজ শেষ করে নেই পরে রাগ ভাঙাবোনি।
আমি এসে পরলাম আর নিচে গেলাম দেখলাম বাড়ির কিছু বাচ্ছারা খেলছে আর ওইদিকে নিবির কার সাথে জেনো কথা বলছে আর দেখে মনে হলো অনেক রেগে আছে। তাই আমি ওর কাছে গেলাম ওর রাগটাকে আরো বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
ও ফোনে কথা বলছিলো আর আমি ওর কানের সামনে গিয়ে একটা চিৎকার দিলাম। আমার চিৎকারের চোটে বেচারার হাত থেকে ফোন পরে গেলো তাতে আমার অনেক খুশি লাগছিলো। কিন্তু পরে ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাগে ওর চোখ লাল হয়ে আছে। আমি তখন ভয় পেয়ে গেলাম কারন যে কোন সময়ই ও আমার দিকে তেরে আসতে পারে। নিলান্তি বোন আমার তুই ভাগ না হোলে তোর এখন খবরই আছে। তাই আমি জেই না পিছনে ঘুরে দৌর দিতে যাবো তখনই নিবির আমার হাত ধরে ফেলে আর কিছু বুঝার আগেই আমাকে ঠাসস ঠাসস করে দুইটা থাপ্পর দেয়।আমার ভাবার বাইরে ছিলো যে ও এমন কিছু করবে। তাই আমি কান্না করে দিলাম কারন এই পর্যন্ত কেউই আমাকে থাপ্পর দেয়নি। আর কিছু ভাবার আগেই ও আমাকে থাপ্পর দিয়ে হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে আসে। আমি দেখেছিলাম ওইখানে যেই পিচ্ছিগুলা ছিলো তারাও দেখেছে যে ও আমাকে থাপ্পর দিয়েছে আর ওরা খেলা অফ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলো। নিবির আমাকে রুমে এনে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে।আর বলতে স্টার্ট করে,,,,
হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মাই ফোন। আন্সার মি। কি হলো চুপ করে আছো কেনো।
আমি চুপ করে গালে হাত দিয়ে কান্না করছিলাম।
এই পিচ্ছি কান্না থামাও বলছি। কান্না আর বাচ্ছামি ছাড়া কি কিছু পারো তুমি।
তুমি জানো তুমি এখন আমার কি করছো। আজকে স্নেহার বিয়ে।
কি বলছেন কি।
হ্যা ওর বাবা আমাদের সম্পর্কে সব জানত। আর আমাকে বলেছিলো যে আমি যদি আমার ফ্যামেলিকে রাজি করাতে পারি তাহলে আমাদের বিয়ে দিবে। আর কালকে আমাদের বিয়ে হওয়ার পর ওর বাবা কালকেই ওনার বসের ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে। আর একটু পর ওর বিয়ে। আমি ওকে বুঝাচ্ছিলাম জেনো বিয়েটা না করে আর তোমার জন্য আমার সব শেষ হয়ে গেলো।ও বলেছিলো তোমার সাথে আমি নাকি শুখে আছি আর আমি ওরে জেনো ভুলে জাই। কিন্তু এখন তো সব শেষ হয়ে গেলো। আমি যদি শুনি যে ওর বিয়ে হয়ে গেছে তাহলে দেখো তোমার কি করি আমি।
আমি সবটা শুনে হতভম্ভ হয়ে গেলাম।আর কান্না থামিয়ে দিলাম। কারন আমি বুঝতে পারছিলাম আমার অবস্থা খারাপ। কান্না থামিয়ে দোয়া পরতে পাগলাম জেনো স্নেহার বিয়ে না হয়। তাহলে আমি আমার বাড়িতে যেতে পারবো না সারা জীবন এই রাগি হনুমানের সাথে সংসার করতে হবে। এইটা কিছুতেই হতে পারে না 😭।তাই আমি দোয়া পড়া স্টার্ট করলাম জেনো স্নেহার বিয়ে না হয়। কিন্ত আমার ভিতরের জেই সত্তা আছে সে বলছিলো জেনো স্নেহার বিয়ে হয়। হাজার হলেও তো আমার মামাতো জামাই।
চলবে,,,