#একজন_রুশা,পর্ব ৫
ধারাবাহিক গল্প
নাহিদ ফারজানা সোমা
উত্তরা নিজেও আঘাত পেলো খুব। চিকিৎসক হিসেবে রুগীদের কাছে সে খুব প্রিয় ছিল। হাসপাতালে রোগীদের বিষয়ে সে যথেষ্ট দায়িত্বশীল ছিলো।আগে সপ্তাহে দুই দিন চেম্বার করতো। প্রতিদিন করতো না কারণ মুখে কিছু না বললেও সে বুঝতো, বাবা-মায়ের অনেক কষ্ট হচ্ছে। চারজন শিশুকে সামলানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজগুলো সেরে রফিক -রুশার খাওয়া-গোসলের ঠিকঠাক থাকতো না। বাবা-মা সারাজীবন কষ্ট করেছেন তাদের তিন ভাই -বোনের জন্য, আরামের ফুরসৎ পান নি, নিজেদের সব সাধ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছিলেন। এখন নাতিদের জন্য আরও ব্যস্ততা, আরও বাধ্যবাধকতা। আশফাকের পরিবার আশফাকের ছেলেদের কোনো দায় দায়িত্ব নেয়নি। তাদের নিজেদেরই বিরাট বিরাট সংসার। শ্রাবণীর পরিবারও তাই। তার মা কর্মজীবী। নাতিদের লালন পালন করার সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই তাঁদের নেই । উত্তরা খুব কষ্ট পেতো বাবা-মায়ের ঘানি টানা দেখে। তাই রোগী ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুরোধ, আবেদন,নিবেদন স্বত্বেও চেম্বার করতো না। বাসায় ফিরে এসে ছেলেদের এবং প্রায়ই ভ্রাতুষ্পুত্রদের দায়িত্ব নিয়ে নিতো মায়ের কাছ থেকে। এভাবেই চলছিল দিনগুলো। অসুস্থতা, ক্লান্তি, অবসাদও বাড়ছিল সেই সাথে। সমস্যা হলো,তার জ্বর থাকতো না, পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট ভালো আসতো। তাই তার অসুস্থতাকে অলসতা হিসাবেই বিবেচনা করা হতো। চিকিৎসা দেওয়ার সময় উত্তরা তার সর্বোচ্চ মেধা, শ্রম, বিবেক,ভালোবাসা ব্যয় করতো। কতোদিন হয়ে গেলো ,সে তার রোগীদের দেখেনা। উত্তরা তার চিকিৎসক জীবন খুব মিস করে। আবার তার রোগীরাও তাকে ভীষন ফিল করে।ভালোবাসা দিলে ভালোবাসা নাকি ফেরত পাওয়া যায়। উত্তরার কাছে রোগীরা চাকরি -চেম্বার ছাড়ার পরও যখন তখন ফোন করে। উত্তরাকে না দেখালে তারা স্বস্তি পাচ্ছে না।মন খচখচ করছে। ম্যাডাম যখন যেখানে তাদের চিকিৎসা করতে চান,তারা সেখানেই যাবে।
উত্তরার মন ব্যাকুল হয়ে যায়। মনে হয়, চেম্বারের অফার আছে যখন,সে রোগী দেখা শুরু করে দিক। না হয় সপ্তাহে তিনদিন। তিন-চার ঘন্টা সময় নিয়ে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা তাকে সাহসী হতে দেয় না।
অগত্যা সারাদিন বাসায়। দুই পুত্র, এক গৃহকর্মী। এর মধ্যে শুরু হলো ভয়াল কোভিড। আশফাক সকালে হাসপাতালে যায়, ফিরতে ফিরতে রাত। উত্তরা খুঁটে খুঁটে হাসপাতালের গল্প শোনে আশফাকের কাছে, মহামারীর ভয়াবহতার গল্প শোনে।
ঈস্, এই যুদ্ধে সে সামিল হতে পারলো না। আশফাক স্বান্তনা
দেয়,”তুমি বাসায় না থাকলে ছেলে দুটোর কি অবস্থা হতো বলোতো! ” বুবুন আর টুকুন আগে মায়ের অনুপস্থিতিতে মহানন্দে নানা-নানির বাড়ি থাকতো। কিন্তু এখন সে উপায় নেই। যতোদিন বাচ্চাদের জন্য রুশা-রফিকের দরকার ছিলো, ততোদিন আশফাক শ্বশুর বাড়ির কাছেই বাসা ভাড়া করে থেকেছে। বাচ্চাদের খাওয়া-দাওয়া, লেখাপড়া, স্কুলে আনা -নেওয়া, মোট কথা বাচ্চা সংক্রান্ত কোনো সমস্যার মুখোমুখি আশফাককে হতে হয় নি। উত্তরার অসুখ বা নিঃসঙ্গতার ব্যাপারেও আশফাক নির্বিকার। স্ত্রী -সন্তানদের সব দায়দায়িত্ব শ্বশুর বাড়ির উপরে চাপিয়ে দিয়ে আশফাক নিশ্চিন্ত। অসুস্থ উত্তরা চাকরি ছাড়ায় আশফাক নিজের বাড়ি করে চলে আসলো শ্বশুর বাড়ি থেকে বহুদূর। এখনতো উত্তরা বাসায় থাকবে, বাচ্চাদের দেখাশোনা তাদের মা ই করতে পারবে, কাজেই এখন শ্বশুরবাড়ির কাছে থাকার দরকার নেই। আশফাক ভালো ছেলে,যথেষ্ট ভালো,কিন্তু কিছু জটিলতা তার মধ্যে আছে। উত্তরার পিতৃ মাতৃভক্তি, বাবা-মা-ভাই-বোন,তাদের বাচ্চাদের প্রতি তীব্র ভালোবাসা আশফাক খুব সহজ ভাবে নিতো না। বিয়ের পরে নিজের পরিবারের প্রতি উত্তরার এতো টান থাকবে কেন? বিয়ের পরে বাপের বাড়ির উপরে টান থাকলে সেই মেয়ে
ভালো করে সংসার করতে পারে না, মন পড়ে থাকে বাপের বাড়িতে। উত্তরার স্বামীর প্রতি কর্তব্য ও ভালোবাসা, সন্তানদের প্রতি অপত্য টান ও তাদের দায়িত্ব পালন আশফাকের কাছে সবসময়ই অপ্রতুল মনে হয়। উত্তরা সম্পূর্ণ ভিন্ন চিন্তাধারার, জটিল, আত্মকেন্দ্রিক, পরছিদ্রান্বেষী শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের আপন করতে যেয়ে কতোটা মানসিক রক্তক্ষরণের শিকার হয়েছে বারবার, আশফাক সেটা বুঝেও বোঝে না। এই অকৃতজ্ঞতাও পারিবারিক ভাবে পাওয়া।
রুশা উত্তরাকে সাহস দেয়,বলে,”তুই আবার সবকিছু পারবি।শরীর ভালো করার জন্য তোর পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, তুই নিষ্ঠার সাথে তা কর। ভালো ভাবে চিকিৎসা করা। ইনশাআল্লাহ আবার তুই রুগী দেখতে পারবি। সুস্থ ভাবে চলাফেরা করতে পারবি। হাসি আনন্দে জীবন পার করতে পারবি। ছেলেদুটো তোর দুই রত্ন হবে,ইনশাআল্লাহ। ”
কতো স্বপ্ন দেখতো রুশা এই মেয়েকে নিয়ে। আর এখন তাকে নিয়ে একটাই স্বপ্ন, উত্তরার সুস্থ স্বাভাবিক জীবন।
ঈশানী বরাবরই দুর্দান্ত ছাত্রী। তার জীবনের নানা সিদ্ধান্ত সে নিজেই নিয়েছে। ক্লাসের সেকেন্ড গার্ল হওয়া স্বত্বেও সে বিজ্ঞান বা বাণিজ্য বিভাগ বেছে নেয়নি, তার পছন্দ ছিল কলা বিভাগ। ভালো ছাত্র-ছাত্রী মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করে না,এই ট্যাবু ঈশানী ভেঙে দিতে চেয়েছিলো।ঢাকা ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় প্রথম দিকে ছিলো ঈশানী।জীবনে কোনো প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় সে হারেনি। তার বাবার খুব ইচ্ছে ছিলো মেয়ে বিসিএস দিয়ে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যাক কিংবা অ্যাডমিন ক্যাডারে। এই মেয়ে বিসিএস এও ব্যর্থ হবে না। এদিকে রুশা,উত্তরা খুব চাইতো ঈশানী ডক্টরেট করুক, পোস্ট ডক্টরেট করুক, ভার্সিটির টিচার হোক। কিন্তু ঈশানীর ইচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তার লক্ষ্য ছিল বড় এনজিওতে কাজ করা,যেমন ইউএনডিপি, সেভ দ্য চিলড্রেন ইত্যাদি। অনেক বাধা বিপত্তি, সমালোচনা উপেক্ষা করে ঈশানী বেশ উন্নত মানের এনজিওতে ঢুকলো। তার বক্তব্য ছিল প্রথমেই তো খুব বড় এনজিওতে ঢোকা যায়না। ঈশানী এনজিও তে কাজ করতো খুব নিষ্ঠার সাথে, সে দ্রুত উন্নতি করতে লাগলো, কয়েকবার সে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেলো। এবং তারপরে সে তার কাঙ্ক্ষিত এনজিওতে জয়েন করলো উঁচু পোস্টে। অত্যন্ত সম্মানজনক, দায়িত্বশীল ও উচ্চ বেতনের পোস্ট।
ঈশানী ছাত্রী জীবন শেষ করে বিয়ে করলো একজন মেধাবী স্থপতিকে। উত্তরা তখন সুস্থ। রুশা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতো তার আশা পূর্ণ হয়েছে বলে। দুই কন্যা,এক পুত্রবধূ স্বাবলম্বী, সুপ্রতিষ্ঠিত। গৃহবধূও তার কাছে অশেষ শ্রদ্ধার। রুশা সব মানুষকেই সমান সম্মান করে। কিন্তু আমাদের সমাজে গৃহবধূকে বড়ই অবহেলা করা হয়। বাইরে কর্মজীবী নারীর তুলনায় গৃহবধূদের কাজ কোন অংশে কম নয়। কিন্তু সেই কাজের স্বীকৃতি নেই, সম্মান নেই, সম্মানী নেই। গৃহবধূ শুধু দিয়েই যাবে। রুশা চায় নি,তার মেয়েদের এই অবস্থা হোক। এটাও চায় নি, মেয়েরা চাকরি বাকরিকেই জীবনের ফার্স্ট প্রায়োরিটি মনে করুক, সংসারের বিষয়ে অন্ধ সেজে থাকুক।স্বাধীনতা বলতে রুশা বুঝে,মাথা উঁচু করে বাঁচা ও অপরকে বাঁচতে দেওয়া।স্বাধীনতার মানে তার কাছে ঔদ্ধত্য , স্বেচ্ছাচারিতা,স্বার্থপরতা নয়।
ঈশানী সন্তানসম্ভবা অবস্থায় কোন পরিচর্যা পায়নি।এটা রুশার বিরাট কষ্ট। সে বারবার মেয়েকে বাপের বাড়ি থাকতে বলেছিলো অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়। মেয়ে থাকেনি। অফিসের দূরত্ব ও ট্রান্সপোর্ট জনিত প্রব্লেম। ঈশানী শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। সকালে প্রায়ই না খেয়ে মেয়েটা অফিসের পথ ধরতো, ওখানে ক্যানটিনে কিছু খেয়ে নিত, দুপুরেও সেই বাইরে খাওয়া, সন্ধ্যাতে বাসায় ফিরে বেশির ভাগ দিন দেখতো খাবারের ব্যবস্থা নেই। বরং সে এসে
দ্রুত ফ্রেশ হয়ে চা-নাশতা বানিয়ে নিজে খেত,শ্বশুর -শাশুড়িকে দিতো। স্হপতি স্বামীর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। সে বলতে গেলে দিনে বাসাতেই থাকেনা। শাশুড়ির বাধা গৃহকর্মী রাখায় তীব্র আপত্তি, তাঁর গুপ্ত ইচ্ছা রান্নাবাড়া পুত্রবধূরাই করুক, হোক না তাঁর দুই পুত্রবধূ অত্যন্ত সফল কর্মজীবী, থাকুক না তাদের সকাল সন্ধ্যা অফিস, তারমধ্যে হোক না একজন গর্ভবতী। ঈশানী মা-বোনকে কিছুই বলতো না।”কি খেয়েছিস?” জানতে চাইলে হালকা গলায় বলতো,”ভালোই খেয়েছি। খাওয়া দাওয়ার প্রসঙ্গে কথা বলো না তো।” রুশা বা উত্তরা রান্না করা খাবার পাঠালে ঈশানী খুব রেগে যেতো। কড়া করে মা-বোনকে খাবার পাঠাতে নিষেধ করতো।
রুশা- রফিক কল্পনাও করেন নি,তাঁদের এতো আদরের মেয়ে
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় এতো কষ্ট করেছে। ঈশানীর শ্বশুর-শাশুড়ির প্রথম নাতি হতে যাচ্ছে, বৌএর একটু যত্ন, একটু বিশ্রাম, সবচেয়ে বড় কথা একটু সহানুভূতি দরকার,সেটা ঐ বাড়ির কেউ বুঝেনি। স্বয়ং ছোট জামাই বুঝে নি। অথচ, উচ্চবিত্ত ও অতি উচ্চ শিক্ষিত পরিবার।
শিক্ষা আসলে কি? কতোগুলো সার্টিফিকেট?
ঈশানীর ছেলে রুশার সব নাতিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর। সবচেয়ে বুদ্ধিমান। অতি রূপবান এই শিশুকে দাদির কাছে রেখে ঈশানী অফিস আরম্ভ করলো। সারারাত বাচ্চার জন্য জেগে থাকা,সারাদিন অফিস। বাসায় তখনও স্হায়ী গৃহকর্মী নেই। রুশা-রফিক মেয়েকে নিজেদের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই একই সমস্যা। অফিস অনেক দূরে হয়ে যায়।অফিসের গাড়ি এই রুটে আসবে না। আবার রফিক -রুশার ব্যক্তিগত গাড়িও সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে এর অফিস, ওর অফিস, এর স্কুল, ওর স্কুল এগুলো নিয়ে। কাজেই বাসার গাড়িতে ঈশানীকে প্রতিদিন অফিস থেকে আনা নেওয়া সম্ভব হবে না। ছোট জামাই জোবায়েরের গাড়িও মহা ব্যস্ত থাকে।
রুশা এখন ভাবে,ঈশানীর বিষয়টা খুব গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত ছিলো।মেয়ে তাদের কাছে অনেক কথাই লুকিয়েছে। তারাও ভেবেছিলো, মেয়ে অফিস -সংসার সব নিয়ে ভালোই আছে।
তারা যখনই বেড়াতে যেতো ,ভালোই আপ্যায়ন পেতো। ঈশানীও খুব হাসিখুশি থাকতো। তাই অতো দুশ্চিন্তা মনে আসেনি।
বাবুর ছয় মাস বয়সের দিকে ঈশানী কিছুটা অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলো। তার মনে হতে লাগলো,বাবুর কিছু আচরণগত সমস্যা আছে। উত্তরা হেসে উড়িয়ে দিলো। কিন্তু মায়ের মন মানলো না। কেউ কোন সমস্যা দেখতে পায়না, কিন্তু ঈশানী আর রফিক সাহেব এই দুইজনের মনে হয়, বাবুর কোন একটা সমস্যা আছে। ডাক্তার দেখানো হলো।দেখা গেলো, বাবুর মধ্যে অল্প হলেও অটিজম আছে। ডাক্তার দেখানোর সময় বাবুর দাদিও সাথেই ছিলেন। ডাক্তার সাহেব ঈশানী ও তার শাশুড়িকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন,কি করতে হবে,কি করা যাবেনা, কি খাওয়ানো খুবই ক্ষতিকর, কেমন করে বাবুর সাথে চোখে চোখ রেখে টেনে টেনে কথা বলতে হবে, কেমন করে কিছু ব্যায়াম করাতে হবে ইত্যাদি।
অফিসে যাওয়ার আগে,অফিস থেকে ঘরে পৌঁছেই ঈশানী ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়। বাস্তবিক অর্থে, ডাক্তার যা যা বলেছেন, সেগুলোর সবকিছুই ঈশানীকে একা করতে হয়। বাপের বাড়ি সে থাকতে চায়না, তার চাপা রাগ আছে পিত্রালয়ের বিষয়ে। হয়তো তার ব্যাপারে অবহেলা করা হয়েছে এটাই সে ভাবে। সে না হয় থাকতে চায়নি,কিন্তু বাবা-মা তো তার প্রেগন্যান্সির সময় আরও খেয়াল রাখতে পারতো,জোর করে নিজেদের কাছে রাখতে পারতো,তাহলে তো তাকে নয় মাস এমন অসহনীয় অবস্থায় থাকতে হতোনা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ক্ষুধার যন্ত্রণা তাকে অনুভব করতে হয়েছে বারবার। চাকরি করতে হয়েছে, বেতনের টাকা সংসারে ব্যয় করতে হয়েছে, রান্না করতে হয়েছে, ছুটা খালা প্রায় ফাঁকি দিতো আর ঈশানী নোংরা সহ্য করতে পারেনা, তাই তাকে বুয়া না আসলে ঘর ঝাড়ু দিতে হয়েছে, বাথরুম মাজতে হয়েছে, কাপড় ধুতে হয়েছে। কেন বাবা-মা বুঝেনি? ভাই-বোন দুজন কি করলো তার জন্য? কেউ কিছু করেনি ঈশানীর জন্য, তার বাবুর জন্য। অথচ ভাইয়া-আপুর চার ছেলেকে রুশা এক হাতে পেলেছেন। বোনপো,ভাইপোদের জন্য
ঈশানীও কম করেনি।
আসলে ঈশানী গভীর ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছিলো। অফিসের পাশাপাশি বাবুর যত্ন,ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি সব তাকে একা সামলাতে হচ্ছিল। তার অনুপস্থিতিতে যা করা দরকার,বাবুর জন্য তা করা হচ্ছিল না। দাদা-দাদির আদর-ভালোবাসার অভাব ছিল না বাবুসোনার জন্য, কিন্তু সচেতনতার অভাব ছিল।
সবদিক চিন্তা করে বাবুর সুস্হতার জন্য ঈশানী চাকুরি থেকে ইস্তফা দিল।
চলবে